গ্গীক্যুভীল্হাভ্লী 1 বিচিত্র প্রবন্ধ । শ্রীরবী প্রনাথ ঠাকুর । মূল ১০১ বাধাই ১॥০ টাকা । গ্রকাঁশক-_ শস্ুহাসচন্দ্র মজুমদার | ২০ কর্ণওয়ালিস্‌ স্রাটু, কলিকাতা, মজুমদার লাইত্রেরি । শপ কাক), আজ 45৮ উজ ৯৮০৭ ০৫৯০০ ০ এ ৯৬ ২8০০৫ পনর চিপ রাত এত ১১৪৪ কলিকাতা, ২০ নং কর্ণওয়ালিস্‌ ট্রট দিনময়ী প্রেসে ৪ হব্চিরণ মান্না ছারা মুদ্রিত । গদাগ্রন্থাবলী, ১ম ভাগ শ্িিল্িজ জ্রন্লজ্দ | সন১৩১৪, ?বশাখ । চাগ্চগ্রন্থাবলশর উপস্বত্ব বোলপুর ব্রক্ষচধ্যাশ্রমকে উৎ্সর্প ককা হইয়াছে | সুচী বিষয় । লাইব্রেরি ( বালক ) মাতৈঃ ( বঙ্গদর্শন ) পাগল (& রঙ্গমঞ্চ (এ) কেকাধ্বনি (এ) বাঁজেকথা (ঞঁ) পনেরোআন! (এ), নববর্ষা (এ) পরনিন্দা ( এ) বসন্তযাপন (এ) অসম্ভবকথা ( সাধনা) .. , কুত্বগৃহ (বালক ) বাজপথ (নবজীবন ) 'ন্দির । বঙ্গদর্শন ) 'ছাটনাগপুর (বালক ) ... নরোজিনীপ্রয়াণ (ভারতী ) £ রোপ-যাত্রী (সাধন! ) ... পঞ্চতৃত (8) সৌনর্য্যের সনবনধ ৮ নরনারী ঠ পলীগ্রাসে ৩০ ৩৬ 8২ ৪৭ ৫২ ৬৩৬ ৩৯ ৮/৬ বিষয়। | পৃ মমুষা মন অখণ্ড গদ্য ও পদা কাব্যের তাৎপধ্য প্রাঞ্জলত! কৌতুকহান্ত কৌতুকহান্তের মাত্রা দৌন্দধাসম্বক্ধে সন্তোষ ভদ্রতার আদশ অপূর্ববরামায়ণ বৈজ্ঞানিককৌতুহল জলপথে ঘাটে স্থলে বন্ধুস্থতি-_ সতীশচন্ত্র রায় 2. এ ৬ 9 | পাঠকগণ মন্থু গ্রহ পূর্বক নিপ্নলিখিত ভ্রদগ্ুলি সংশোধন করিয়া লই- বেন। অক্ষরের সামান্ত ভূলগুলির গ্রতি লক্ষা করা হইল ন!। স্তুদ্ধ। ১০ পৃষ্ঠা শেষ ছত্রে এই এই ভন্ঠয ১৪ পৃষ্ঠা ২৩ ছত্র গারে সংলগ্ন ৭৪ পৃষ্টা ১৩ ছত্র । তাহা কোন প্রকাণ্ড ৭৪ পৃষ্ঠা ১৮ ছত্র সত্য দ্রষ্টার ৮৩ পৃষ্টা ১৫ ছত্র পাল ঝুলাইয়। ৯৮ পৃষ্ঠা শেষ ছত্র ফিরেছু গিয়ে পিছুপি ১১২ পৃষ্ঠা ২৪ ছত্র উদ্ধযুখী ১৬৬ পৃষ্ঠা ১৮ ছত্র স্বাধীনতার পীড়ন বিঘঞ্জ মুখে ভৃত্যের আনন্দহাৰা ২৩০ পৃষ্ঠা ১০ ও ১১ ছত্র কিন্ত কারণ হাসির শুদধ। এন জন্য গায়ে গায়ে সংলগ্ন কোন গ্রকাণ্ড মত্য-দ্রষ্টার পাল ফুলাইয়া ফিরে গিয়ে চুপিচুপি উর্দমুখ টঁ অধীনতার পাড়ন ভত্যের আনন্দহারা বিষণ্ন মুখে কিন্তু হাসির কারণ অশুদী | ২৪৪ পৃষ্ঠা ৪ ছত্র বনবাম-- প্রতিজ্ঞাপূরণ *** ২৭৩ পৃষ্ঠা ২১ ছত্র বহু ছেলের মা ১৭৯ পৃষ্টা “ঘাটে” প্রবন্ধের ১৫ ছত্রে উচু ৩০৪ “সতীশচন্দ্র রায়” প্রবন্ধে ৯ ছত্রে তাহারা এ ২২ ছত্রে গ্রদপটি শুবী। বনবাস-প্রতিজ্জ বছু-চছেলের মা উবু তাহার প্রদীপ ১ পয শি বনু) . টন লাইব্রেরি। মহাসমুদ্্ের শত বৎসরের কল্লোল কেহ বদি.এমন: করিয়া বীধিয়া রাখিতে পারিত যে সে ঘুমাইয় পড়া শিশুটির মত চুপ করিয়! থাঁকিত, তৰে সেই নীরব মহাশবের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত। এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্থির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বীধা পড়িয়া আছ। ইহারা সহসা যদি বিদ্রোহী হইয়া উঠে, নিস্তব্ধতা তাডিয়া ফেলে, অক্ষরের বেড়া দগ্ধ করিয়া একেবারে বাহির হইয়া আসে! হিমালয়ের মাথার উপরে কঠিন বরফের মধ্যে যেমন কত কত বন্তা বাধা আটে তেম্নি এই লাইব্রেরির মধ্যে মানব হৃদয়ের বন্তা কে বীধিয়া রাখিয়াছে! বিহ্যাৎকে মানুষ লোহার তার দিয়া বীধিয়াছে, কিন্তু কে জানিত মানুষ শব্বকে নিঃশব্ের মধ্যে বাধিতে পারিবে ! কে জানিত সঙ্গীতকে, ধদয়ের আশাকে, জাগ্রত আত্মার আননাধবনিকে, আকাশের দৈববাণীকে সে কাগজে মুড়িয়া রাখিবে? কে জানিত মানুষ অতীতকে বর্তমানে বন্দী করিবে! অতলম্পর্শ কাল-সমুস্রের উপর কেবল এক একখানি বই দিয়া সীকো বাধিয়! দিবে | লাইব্রেরির মধ্যে আমরা সহ পথের চৌমাধার উপরে দীড়াইয় আছি। কোনো পথ অনন্ত সমুদ্রে গিয়াছে, কোনে! পথ অনস্ত শিখরে উঠিয়ে, কোনে পথ মানৰ হৃদয়ের অতলম্পর্শে নামিয়াছে। যেষে বিচিত্র প্রবন্ধ । দিকে ইচ্ছা ধাবমান হও, কোথাও বাধা পাইবে না। মানুষ আপনার পরিত্রাণকে এতটুকু জায়গার মধ্যে বীধাইয়! রাখিয়াছে। শঙ্ঘের মধ্যে যেমন সমুদ্রের শব্ধ শুন] যায়, তেমনি এই লাইব্রেরির মধ্যে কি হৃদয়ের উত্থান পতনের শব্দ গুনিতেছ ? এখানে জীবিত ও মৃত ব্যক্তির হৃদয় পাশাপাশি একপাড়ায় বাস করিতেছে । বাদ ও প্রতিবাদ এখানে দুই ভাইয়ের মত এক সঙ্গে থাকে । সংশয় ও বিশ্বীস, সন্ধান ও আবিফার এখানে দেহে দেহে লগ্ন হইয়া বাস করে। এখানে দীর্ঘ প্রাণ ও স্বর্ন প্রাণ পরম ধৈর্য্য ও শান্তির সহিত জীবন যাত্রা নির্বাহ করিতেছে, কেহ কাহাকেও উপেক্ষা করিতেছে না । কত নদী সমুদ্র পর্বত উল্লজ্বন করিয়। মানবের ক এখানে আসিয়া পৌছিয়াছে-_কত শত-বৎসরের প্রান্ত হইতে এই স্বর আসিতেছে । এস এখানে এস, এখানে আলোকের জন্মসঙ্গীত গান হইতেছে । অমৃত লোক প্রথম আবিষ্কার করিয়া যে যে মহাপুরুষ যে-কোনোদিন আপনার চারিদিকে মানুষকে ডাক দিয়া বলিয়াছিলেন--তোমরা সকলে অমৃতের পুত্র, তোমরা দ্রিব্যধামে বাস করিতেছ-_সেই মহাপুরুষদের কণ্ঠই সহস্র ভাষায় সহত্র বৎসরের মধ্য দিয়া এই লাইব্রেরির মধ্যে প্রতিধবনিত হুইতেছে। এই বঙ্গের প্রান্ত হইতে আমাদের কি কিছু বলিবার নাই ? মানব- সমাজকে আমাদের কি কোনে! সংবাদ দিবার নাই? জগতের একতান সঙ্গীতের মধ্যে বঙ্গদেশই কেবল নিস্তব্ধ হইয়া থাকিবে! আমাদের পদপ্রান্তস্থিত সমুদ্র কি আমাদিগকে কিছু বলিতেছে না? আমাদের গঙ্গা কি হিমালয়ের শিখর হইতে কৈলাসের কোন গান বহন করিয়। আনিতেছে না? আমাদের মাথার উপরে কি তবে অনস্ত নীলাকাশ নাই ? সেখান হইতে অনন্তকালের চিরজ্যোতিত্ময়ী নক্ষত্রলিপ্রি কি কেহ মুছিয় ফেলিয়াছে? পা সিসি সিল স্পিাসিসসিপাসিাছি এ ২ রি শসা % ম! ভৈঃ। ৩ ্ লািিস্সিলউিিসপসপসিামিতি উস দেশ বিদেশ হইতে অতীত বর্তমান হইতে প্রতিদিন আমাদের কাঁছে। মানবজাতির পত্র আসিতেছে, আমরা কি তাহার উত্তরে ছুটি চার্ট চটি ডটি ইংরেজি খবরের কাগজ লিখিব! সকল দেশ অসীমকালের পটে নিজ নিজ নাম খুদিতেছে বাঁঙালীর নাম কি কেবল দরখাস্তের দ্বিতীয় পাতেই লেখ! থাকিবে ! জড় অনৃষ্টের সহিত মানবাত্বার সংগ্রাম চলিতেছে, 'সৈনিকদিগকে আহ্বান করিয়া পৃথিবীর দিকে দিকে শূক্গধবনি বাজিয়া উঠিয়াছে, আমরা কি কেবল আমাদের উঠোনের মাচার উপরকার লাউকুম্ড়া লইয়া মকদ্দম! এবং আপীল চালাইতে থাকিব ! বনুবৎসর নীরব থাকিয়! বঙ্গদেশের প্রাণ ভরিয়া উঠিয়াছে। তাহাকে আপনার ভাষায় একবার আপনার কথাটি বলিতে দাও । বাঁডাঁলী কণ্ঠের সহিত মিলিয়া বিশ্বসঙ্গীত মধুরতর হইয়। উঠিবে। ১২৯২। মা ভৈঃ। মৃত্যু একটা প্রকাণ্ড কালো কঠিন কষ্টিপাঁথরের মত। ইহারই গায়ে কষিয়। সংসারের সমস্ত খাঁটি সৌঁণার পরীক্ষা হইয়া! থাকে। তুমি দেশকে যথার্থ ভালবাস-_তাঁহার চরম পরীক্ষা তুমি দেশের জন্ত মরিতে পার কিনা। তুমি আপনাকে যথার্থ ভালবাস তাহারো৷ চরম পরীক্ষা। আপনার উন্নতির জন্ত প্রাণ বিসর্জন করা তোমার পক্ষে সম্ভবপর কি না। এ এমন একটা! বিশ্বব্যাপী সার্বজনীন ভয় পৃথিবীর মাথার উপরে যদি না ঝুলিত, তবে সত্যর্শমথ্যাকে, ছোট-বড়-মাঝারিকে বিশুদ্ধভাবে তুল! করিয়! দেখিবার কোন উপায় থাকিত না । | ৪. বিচিত্র প্রবন্ধ। এই মৃত্যুর তুলায় যে সব জাতির তৌল হুইয় গেছে, তাহার! পাস্‌- মার্কা পাইয়াছে। তাহারা আপনাদিগকে প্রমাণ করিয়াছে, নিজের কাছে ও পরের কাছে তাহাদের আর কিছুতেই কুস্িষ্ত হইবার কোন কারণ নাই। মৃত্যুর দ্বারাই তাহাদের জীবন পরীক্ষিত হইয়া গেছে। ধনীর যথার্থ পরীক্ষা দানে; যাহার প্রাণ আছে, তাহার যথার্থ পরীক্ষা প্রাণ দিবার শক্তিতে । যাহার প্রাণ নাই বলিলেই হয়, সে-ই মরিতে কুপণত। করে। ষে মরিতে জানে সুখের অধিকার তাহারই ; যে জয় করে, ভোগ কর! তাহাকেই সাজে । যে লোক জীবনের সঙ্গে স্ুথখকে, বিলাসকে, ছুই হাতে আৰড়িয়। থাকে, স্থখ তাহার সেই স্বণিত ক্রীতদাসের কাছে নিজের সমস্ত ভাগ্ডার খুলিয়া দেয় না, তাহাকে উচ্ছিষ্টমাত্র দিয় দ্বারে ফেলিয়া রাখে । আর মৃত্যুর আহ্বানমাত্র যাহারা তুড়ি মারিয়া চলিয়া যায়, চির আদূত সুথের দিকে একবার পিছন ফিরিয়া তাকায় না, স্থুথ তাহাদিগকে চায়, সুখ তাহারাই জানে । যাহারা সবলে ত্যাগ করিতে পারে, তাহারাই প্রবলভাবে ভোগ করিতে পারে। যাহার! মরিতে জানে না, তাহাদের ভোগবিলাসের দীনতা-ক্ুশতা-ত্বণ্যতা গাড়িজুড়ি এবং তক্মা-চাপরাশের ছ্বারা ঢাকা পড়ে না। ত্যাগের বিলাসবিরল কঠোরতার মধ্যে পৌকরুষ আছে। যদি স্বেচ্ছায় তাহ বরণ করি, তবে নিজেকে লজ্জা হইতে বাচাইতে পারিব। এই ছুই রাস্তা আছে--এক ক্ষত্রিয়ের রাস্তা, আর এক ব্রাঙ্গণের রাপ্তা। যাহার! মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে, পৃথিবীর স্ুখসম্পদ তাহাদেরি। যাহারা, জীবনের সুখকে অগ্রাথ করিতে পারে, তাহাদের আনন মুক্তির । এই ছুয়েতেই পৌরুষ। গ্রাণটা দিব, এ কথা বলা যেমন শক্ত-_নুখটা চাই না, এ কথা বলা তাহ! অপেক্ষ! কম শক্ত নয়। পৃথিবীতে যদি মনুষ্যত্বের গৌরবে মাখা মা ভৈঃ। /€ তুলিয়া চলিতে চাই, তবে এই ছুয়ের একটা! কথা যেন বলিতে পারি। হয় বীর্যের সঙ্গে বলিতে হইবে__পচাই !” নয়, বীর্য্যেরই সঙ্গে বলিতে হইবে-_“চাই না!” পচাই” বলিয়া কাদিব, অথচ লইবার শক্তি নাই; “চাই না” বলিয়া পড়িয়া থাকিব, কারণ চাহিবার উদ্ভম নাই ; এমন ধিক্কার বহন করিয়াও যাহারা বাচে, যম তাহাদিগকে নিজগুণে দয়! করিয়া না সরাইয়া লইলে তাহাদের মরণের আর উপায় নাই। বাঙালি আজকাল লোকসমাজে বাহির হইয়াছে। মুস্কিল, এই যে, জগতের মৃত্যুশীলা হইতে তাহার কোন পাঁস নাই। সুতরাং তাহার কথাবার্তা যতই বড় হোক, কাহারো কাছে সে খাতির দাবী করিতে. পারে না। এইজন্ত তাহার আস্ষীলনের কথায় অত্ন্ত বেস্থর এবং নাকিস্তুর লাগে। না মরিলে সেটার সংশোধন হওয়া শক্ত । পিতামহের বিরুদ্ধে আমাদের এইটেই সব চেয়ে বড় অভিযোগ । সেই ত আজ তাহার! নাই, তবে ভালমন্দ কোন-একটা অবসরে তাহারা রীতিমত মরিলেন না কেন 1 তহীরা যদি মরিতেন, তবে উত্তরাধিকার- স্ত্রে আমরাও নিজেদের মরিবার শক্তিসম্বন্ধে আস্থা রাখিতে পারিতাম। তাহার! নিজে না খাইয়াও ছেলেদের অন্নের সঙ্গতি রাখিয়া গেছেন, গুধু মৃত্যুর সঙ্গতি রাখিয়া যান নাই। এত-বড় ছূর্ভাগ্য, এত-বড় দীনতা আর কি হইতে পারে! ইংরেজ আমাদের দেশের যোদ্ধৃজাঁতিকে ডাকিয়া বলেন, “তোমরা! লড়াই করিয়াছ-__ গ্রীণ দিতে জান) যাহারা কখনো! লড়াই করে নাই, কেবল বকিতে জানে, তাহাদের দলে ভিড়িয়া তোমরা কন্গ্রেস্‌ ব্ুরিতে যাইবে 1” তর্ক করিয়া ইহার উত্তর দেওয়া যাইতে পারে। কিন্তু তর্কের বারা নাজ্জা যায় না। বিশ্বকম্ধা। নৈয়ায়িক ছিলেন না, সেইজন্য পৃথিবীতে অযৌক্তিক ব্যাপার পদে পর্দে দেখিতে পাওয়া যার়। সেইজন্ত ৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । জা খিক ঈপদিপাসসিপািলাসিাাসটিপিপাসপসদিরিসপসিলা দিসি তাপ পাসিপিসপসিপাস্পিস্পসিলাসপাসিলী সপ স্পিসিপাস্পিস্পসপিিপাস্পস্পিস্পিসিপাস যাহার! মরিতে জানে না, তাহারা শুধু যুদ্ধের সময়ে নহে, শাস্তির সময়েও পরস্পর ঠিক সমানভাবে মিশিতে পারে না) যুক্তিশান্ত্রে ইহা অসঙ্গত, অর্থহীন, কিন্তু পৃথিবীতে ইহ সত্য। অতএব, আরাম-কেদীরায় হেলান্‌ দিয়া পোলিটিকাল্‌ নুখস্বপ্নে যখন কল্পনা করি--সমস্ত ভারতবর্ষ এক হইয়া মিশিয়া যাইতেছে, তখন মাঝখানে এই একট! ছুশ্িস্তা উঠে যে, বাঙালির সঙ্গে শিখ আপন ভাইয়ের মত মিশিবে কেন? বাঙালি বি.-এ. এবং এম্‌.-এ. পরীক্ষায় পাস্‌ হইয়াছে বলিয়া? কিন্তু যখন তাহার চেয়ে কড়া পরীক্ষার কথা উঠবে, তখন সার্টিফিকেট বাহির করিব কোথা হইতে? শুদ্ধমাত্র কথায় অনেক কাঁজ হয়, কিন্তু সকলেই জানেন চিড়ে ভিজাইবার সময় কথা দধির স্থান অধিকার করিতে পারে না) তেমনি যেখানে রক্তের প্রয়োজন, সেখানে বিশুদ্ধ কথা তাহার অভাব পূরণ করিতে অশক্ত। অথচ যখন ভাবিয়! দেখি-_-আমাদের পিতামহীরা স্বামীর সহিত সহমরণে মরিয়াছেন, তখন আশ! হয়-_মরাঁটা তেমন কঠিন হইবে না। অবশ্ত, তাহারা সকলেই স্বেচ্ছাপূর্বক মরেন নাই। কিন্তু অনেকেই যে মৃত্যুকে শ্বেচ্ছীপূর্বক বরণ করিয়াছেন, বিদেশীরাও : তাহার সাক্ষ্য দিয়াছেন। কোন দেশেই লোকনিবিশেষে নির্ভয়ে ও স্বেচ্ছায় মরে না। কেবল ত্বরর একদল মৃত্যুকে যথার্থভাবে বরণ করিতে পারে-_-বাকি সকলে কেহ ৰা দলে ভিড়িয়া মরে, কেহ বা! লজ্জায় পড়িয়া মরে, কেছ বা দস্তরের তাড়নায় জড়ভাবে মরে। মন হইতে ভয় একেবারে যায় না। কিন্তু ভয় পাইতে নিজের কাছে, ও পরের কাছে লজ্জা কর! চাই। শিগুকাল হুইতে ছেলেদের এমন শিক্ষা ঘেওয়৷ উচিত, যাহাতে ভয় পাইলেই তাহারা অনায়াসে অকপটে '্বীকার না করিতে পারে। এমন শিক্ষা পাইলে লোকে জজ্জায় পড়িয়া | ট ০ ঃ 1 ও | ণ এনা সপ ৯০৯ পালি পছ লাই পা পাপাপািপাি লাস সপি্পিসপাসপস্পস্পসিল স্পা পাপা িসিলা ৬ * পপ সপি্মিপরিপরি সাহস করে। যদি মিথ্যা গর্ঝ করিতে হয়, তবে, আমার সাহস আছে, এই মিথ্যাগর্বই সব চেয়ে মার্জনীয়। কারণ, দৈন্যই বল, অজ্ঞতাই বল, মুঢ়তাই বল, মন্ুষ্যচরিত্রে ভয়ের মত এত-ছোট আর কিছুই নাই। ভয় নাই বলিয়া যে লোক মিথ্যা অহঙ্কারও করে, অন্তত তাহার লজ্জা আছে, এ সদ্‌গুণটারও প্রমাণ হয়। নির্ভীকতা যেখানে নাই, সেখানে এই লজ্জার চষ্চা করিলেও কাজে লাগে। সাহসের ন্যায় লজ্জাও লোককে বল দেয়। লোৌকলজ্জায় প্রাণবিসর্জন করা কিছুই অসম্ভব নয় | অতএব আমাদের পিতামহীর! কেহ কেহ লোকলজ্জাতেও প্রাণ দিয়াছিলেন, এ কথা স্বীকার করা যাইতে পারে। প্রাণ দিবার শক্তি তীহাদের ছিল, _লজ্জীয় হোক, প্রেমে হোক্‌, ধর্মোৎসাহে হোক, প্রাণ তাহার! দিয়াছিলেন, এ কথা আমাদিগকে মনে রাখিতে হইবে। বস্তুত দল বীধিয়া মর! সহজ। একাঁকিনী চিতাগ্রিতে আরোহণ করিবার মত বীরত্ব যুদ্ধক্ষেত্রে বিরল। বাংলার সেই প্রাণবিসর্জজনপরীয়ণ| পিতামহীকে আজ আমরা প্রণাম করি। তিনি যে জাতিকে স্তন দিয়াছেন, স্বর্গে গিয়৷ তাহাকে বিস্থৃত হইবেন না। হে আধ্যযে, তুমি তোমার সন্তানদিগকে সংসারের চরমভয় হইতে উত্তীর্ণ করিয়। দাও! তুমি কখনো৷ স্বপ্নেও জান নাই যে, তৌমার আত্মবিস্ৃত বীরত্ব দ্বারা তুমি পৃথিবীর বীরপুরুষদিগকেও লজ্জিত করিতেছ। তুমি ঘেমন দিবাবসানে সংপারের কাজ শেষ করিয়! নিঃশবে পতির পালস্কে আরোহণ করিতে,-_দীম্পত্যলীলার অব্ূমানদিনে সংসারের কাধ্ধযক্ষেত্র হইতে বিদায় লইয়া তুমি তেমনি, সহজে বধূবেশে সীমস্তে মঙ্গলসিন্দূর পরিয়া পতির চিতায় আরোহণ করিম়াছ। মৃত্যুকে ভূমি সুন্দর করিয়াছ, গুভ করিয়াছ, পবিত্র করিয়াছ_চিতাকে তুমি বিবাহশধ্যার গ্ভায় আনন্ধময়, কল্যাণময় করিয়াছ। বাংলাদেশে পাবক ৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । রই গবি্র জীবনাহিতিারা গৃত হইয়াছে- আজ হইতে এই কথা জামরা শরণ করিব। আমাদের ইতিহাস নীরব, কিন্তু অগ্নি আমাদের ঘরে ঘরে তোমার বাণী বহন করিতেছে । তোমার অক্ষয়-অমর শ্মরণনিলয় বলিয়া সেই অগ্নিকে, তোমার সেই অস্তিমবিবাহের জ্যোতিঃ- চৃত্রময় অনস্ত পষ্টবসনখানিকে আমরা প্রত্যহ প্রণাম করিব। সেই অগ্নিশিখা তোমার উদ্ভতবান্রূপে আমাদের প্রত্যেককে আশীর্বাদ করুক । মৃত্যু যে কত সহজ, কত উজ্জ্বল, কত উন্নত, হে চিরনীরব স্বর্গবাসিনি, অগ্নি আমাদের গৃহপ্রাঙ্গণে তোমার নিকট হইতে সেই বার্তা বহন করিয়া অভয়ঘোষণা করুকৃ! ১৩০৯। পাগল । পশ্চিমের একটি ছোট সহর। সম্মুখে বড়রাস্তার পরপ্রাস্তে খোড়ো চালগুলার উপরে পাঁচ-ছয়টা তালগাছ বোবার ইঙ্লিতের মত আকাশে উঠিয়াছে, এবং পোড়ো বাড়ীর ধারে প্রাচীন তেঁতুলগাছ তাহার লঘুচিন্বণ ঘন পল্পবভার, সবুজ মেঘের মত, স্তূপে স্তপে স্ফীত করিয়া রহিয়াছে। চালশুন্ত ভাঙা ভিটার উপরে ছাগছানা চরিতেছে। পশ্চাতে মধ্যাহ্ব- আকাশের দিগন্তরেখা পর্য্স্ত বনশ্রেণীর শ্ঠামলতা । আজ এই সহরটির মাথার উপর হইতে বর্ষা হঠাৎ তাহার কালে অবগ্ুঞ্ঠন একেবারে অপসারিত করিয়া দিয়াছে। আমার অনেক জরুরী লেখা পড়িয়া আছে-_তাহার! পড়িয়াই রহিল। জানি, তাহা ভবিষ্যতে পরিতাপের কারণ হইবে; তা৷ হউক্‌, সেটুকু ্বীকার করিয়া লইতে হইবে। পূর্ণতা কোন্‌ মৃত্তি ধরিয়া হঠাৎ কখন্‌ 'পাঁগল। এ আপনার আতাস দিয়া বায়, তাহা ত আগে হইতে কেহ জানিয়া প্রস্তুত হইয়া থাকিতে পারে নাকিন্ত যখন সে দেখ! দিল, তখন তাহাকে 'ঁধুহাতে অভার্থনা করা যায় না। তখন লাভক্ষতির আলোচনা যে করিতে পারে, সে খুব হিসাবী লোক-_সংসারে তাহার উন্নতি হইতে থাকিবে-__কিন্ক হে নিবিড় আযাঢ়ের মাঝখানে একদিনের জ্যোতির্য় অবকাঁশ, তোমার শুভ্র মেঘমাল্যথচিত ক্ষণিক অভ্যুদয়ের কাছে আমার সমস্ত জরুরী কাজ আমি মাটি করিলাম_-আজ আমি ভবিষ্যতের হিসাব করিলাম না--আজ আমি বর্তমানের কাছে বিকাইলাম ! দিনের পর দিন আসে, আমার কাছে তাহারা কিছুই দাবী করে না)-_তখন হিসাবের অঙ্কে ভূল হয় না, তখন সকল কাজই সহজে করা যাঁয়। জীবনট! তখন একদিনের সঙ্গে আর-একদিন, এক কাজের সঙ্গে আর-এক কাজ দিব্য গীঁথিয়া-গাগিয়া অগ্রসর হয়, সমস্ত বেশ সমানভাবে চলিতে থাকে । কিন্তু হঠাৎ কোনো খবর ন! দিয়া একটা বিশেষ দিন সাতসমুদ্রপারের রাজপুত্রের মত আসিয়া উপস্থিত হয়, প্রতিদিনের সঙ্গে তাহার কোনো মিল হয় না_-তখন মুহূর্তের মধ্যে এতদ্দিনকাঁর সমস্ত “খেই” হারাইয়া যায়--তখন বীধা-কাজের পক্ষে বড়ই মু্িল ঘটে। কিন্ত এই দিনই আমাদের বড়দিন ;__-এই অনিয়মের দিন, এই কাজ নষ্ট করিবার দিন। যে দিনটা আসিয়! আমাদের 'প্রতিদিনকে বিপর্য্যস্ত করিয়া! দেয়-_সেই দিন আমাদের আনন্দ। অন্তদিনগুলো বুদ্ধিমানের দিন, সাবধানের দিন,_আর এক-একটা দিন পূরা পাগুলামির কাছে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করা। পাগলশব্টা আমাদের কাছে ত্বণার শব নহে। ক্ষ্যাপা নিমাইচক আমর! ক্ষ্যাপ বলিয়া ভক্তি করি-__-আগাদের কষা দেবতা মহেঙ্বর | প্রতিভা ক্ষ্যাপামির একপ্রকার বিকাশ; কি না, এ কথ! ইয়া সুরোপে নি বিচিত্র প্রবন্ধ । পিট পিপি পাপ পিপিপি পা পিক বাদাস্থবাদ চলিভেছে--কিন্তু আমরা এ কথা স্বীকার করিতে কুিত হই না। প্রতিভা ক্ষ্যাপামি বই কি, তাহা নিয়মের ব্যতিক্রম, তাহ! উলটুপালট্‌ করিতেই আদে--তাহ! আজিকার এই খাপ্ছাড়া, সৃটিছাড়া টিনের মত হঠাৎ আমিয়া যত কাজের লোকের কাজ নঙ করিয়া দিয়া যায়-_কেহ ব! তাহাকে গালি পাঁড়িতে থাকে, কেহ বাঁ তাহাকে লঙইয়া, নাচিয়া-কুঁদিয়া অস্থির হইয়া উঠে! ভোলানাথ, যিনি আমাদের শাস্ত্রে আননময়, তিনি সকল দেবতার, মধ্যে এমন খাপছ্ছাড়ী! দেই পাগল দিগম্বরকে আমি আঁজিকার এই ধৌত নীলাকাশের রৌদ্রপ্লীবনের মধ্যে দেখিতেছি। এই নিবিড় মধ্যাহ্রের হৎপিণ্ডের মধ্যে তাহার ডিমিডিমি ডমরু বাজিতেছে। আজ মৃত্যুর উলঙ্গ শুত্রমূর্তি এই কর্মনিরত সংসারের মাঝখানে কেমন নিস্তত্ধ হইয়া দাড়াইয়াছে !--সুন্দর শাস্তচ্ছবি ! ভোলানাথ, আমি জানি, তুমি অদ্ভূত। জীবনে ক্ষণেক্ষণে অদ্ভুত রূপেই তুমি তোমার ভিক্ষার ঝুলি লইয়! ্লাড়াইয়াছ । একেবারে হিসাব- কিতাৰ নাস্তানাবুদ করিয়! দিয়াছ। তোমার নন্দিভৃঙ্গির সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। আজ তাহারা তৌমার দিদ্ধির প্রসাদ যে একফৌটা' আমাঁকে দেয় নাই, তাহ! বলিতে পারি না ইহাতে আমার নেশা ধরিয়াছে, সমস্ত ভগুল হইয়া গেছে_-আজ আমার কিছুই গোছালো নাই। আমি জানি, সুখ প্রতিদিনের সামগ্রী, আনন্দ গ্রত্যহের অতীত । স্থথ শুরীরের কোথাও পাছে ধুলা লাগে বলিয়া সঙ্কুচিত, আনন্দ ধুলায় গড়াগড়ি দিয়। নিখিলের সঙ্গে আপনার ব্যবধান ভাঙিয়া চুরমার করিয়া দেয়--এইজন্য সুখের পক্ষে ধূ্গা হেয়, আননোর পক্ষে ধুল! ভূষণ । সুখ» কিছু পাছে সারায় বলিয়া ভীত, আনন্ধ, যথাসর্বন্ক বিতরণ করিয়া পরিতৃপ্ত; এই খ্রইজগ্ত সুখের পক্ষে রিষ্কতা দারিদ্র্য, আননোর পক্ষে পাগণ। ১১ দারিত্র্যই পথ্য | লুখ, ব্যবস্থার বন্ধনের মধ্যে আপনার দ্রীরুকে, সতর্বভাবে রক্ষ! করে ; আনন্দ, সংহারের মুক্তির মধ্যে আপন সৌনর্ধ্যকে উদারভাবে প্রকাশ করে; এইজন্ত সুখ বাহিরের নিয়মে বন্ধ, আনন্দ সে বন্ধন ছিন্ন করিয়া আপনার নিয়ম আপনিই হৃটি করে। হখ, ন্বধাটুকুর জন্ তাকাইয় বসিয়া থাকে ; আনন্দ, ছুঃখের বিষকে অনায়াসে পরিপাক করিয়া! ফেলে,_-এইজন্ত, কেবল ভালটুকুর দিকেই সখের পক্ষপাত__আর, আনন্দের পক্ষে ভালমন্দ দইই সমান। এই সৃষ্টির মধ্যে একটি পাগল আছেন, যাহা-কিছু অভাবনীয়, তাহ! থামথ! তিনিই আনিয়া উপস্থিত করেন । তিনি কেন্দ্রীতিগ, “সেটি, ফ্যুগল্” _তিনি কেবলি নিখিলকে নিয়মের বাহিরের দিকে টানিতেছেন। নিয়মের দেবতা! সংসারের সমস্ত পথকে পরিপূর্ণ চক্রপথ করিয়। তুলিবার চেষ্টা করিতেছেন, আর এই পাগল তাঁহাকে আক্ষিপ্ত করিয়! কুগুলী আকার করিয়া তুলিতেছেন। এই পাগল আপনার খেয়ালে সরীক্যপের বংশে পাঁধী এবং বানরের বংশে মানুষ উদ্ভাবিত করিতেছেন । যাহা হইয়াছে, যাহা আছে, তাহাকেই চিরস্থায়িরূপে রক্ষা করিবার জন্য সংসারে একট! বিষম চেষ্টা রহিয়াছে__ইনি সেটাকে ছারখার করিয়া-দিয়!, যাহা নাই, তাহারই জন্য পথ করিয়া দিতেছেন। ইহার হাতে বাঁশী নাই, সামন্ত সুর ইহার নহে, পিনাক বাজিয়া উঠে, বিধিবিহিত যজ্ঞ নষ্ট হইয়! যায়, এবং কোথ। হইতে একটি অপূর্বতা উড়িয়া'আসিয়া জুড়িয়া বসে। পাগলও ইহারি কীত্তি এবং গ্রতিভাও ইহারি কীর্তি। ইহার টানে যাহার তাঁর ছি'ড়িয়া যায, সে হয় উন্মাদ, আর যাহার তার অস্রুতপূর্ব স্বরে বাজিয়া উঠে, সে হইল প্রতিভাবান! পাগলও দশের বাহিরে, প্রতিভাবান্ও তাই-_কিন্ক পাগল বাছিরেই থাকিয়া! যায়, আর প্রতিভাবান দশকে একাদশের কে ঠায় টানিয়া-আনিয়! দশের অধিকার বাড়াইয়া দেঁন। ১২ বিচিত্র প্রবন্ধ । লাস সাপটি লো শুধু পাগল নয়, শুধু প্রতিভাবান্‌ নয়, আমাদের প্রতিদিনের একরপ্ত তুচ্ছতার মধ্যে হঠাৎ ভয়ঙ্কর, তাহাঁর জলজ্জরটাকলাঁপ লইয়া, দেখা দেয়। সেই ভয়ঙ্কর, প্রকৃতির মধ্যে একটা অপ্রত্যাশিত উৎপাত, মান্থুষের মধ্যে একট! অসাধারণ পাপ আকারে জাগিয়৷ উঠে। তখন কত ম্থখমিলনের জাল লণ্ডভও, কত হৃদয়ের সম্বন্ধ ছারখার হইয়া যায়! হে রুদ্র, তোমার ললাটের যে ধবকধ্বক অগ্মিশিখার স্ফুলিঙ্গমাত্রে অন্ধকারে গৃহের প্রদীপ জলিয়। উঠে--সেই শিখাতেই লোকালয়ে সহশ্রের হাহীধ্বনিতে নিশীথ- রাত্রে গৃহদাহ উপস্থিত হয়। হায়, শত্তৃু, তোমার নৃতো, তোমার দক্ষিণ ও বাম পদক্ষেপে সংসারে মহাপুণ্য ও মহাপাপ উৎক্ষিপ্ত হইয়া উঠে। সংসারের উপরে প্রতিদিনের জড়হস্তক্ষেপে যে একটা সাঁমান্ততার একটানা আবরণ পড়িয়া যায়, ভাঁলমন্দ ছুয়েরই প্রবল আঘাতে তুমি তাহাকে ছিন্ন- বিচ্ছিন্ন করিতে থাক ও প্রাণের প্রবাহকে অপ্রত্যাশিতের উত্তেজনায় ক্রমাগত তরঙ্গিত করিয়া শক্তির নব নব লীলা ও সৃষ্টির নব নব মৃষ্তি গ্রকাশ করিয়া তোল। পাগল, তোমার এই রুদ্র আনন্দে যোগ দিতে আমার ভীত হ্রদয় যেন পরাজ্মুখ নাহয়! সংহারের রক্তআকাশের মাঝখানে তোমার রবিকরোদ্দীপ্ত তৃতীয়নেত্র যেন ফুবজ্যোতিতে আমার অন্তরের অন্তরকে উদ্ভীদিত করিয়া তোলে! নৃত্য কর, হে উন্মাদ, নৃত্য কর! সেই নৃত্যের ঘূর্ণবেগে আকাশের লক্ষকোটিযৌজনব্যাপী উজ্জ্বলিত নাহারিকা ষখন ভ্রাম্যমাণ হইতে থাকিবে-তথন আমার বক্ষের মধ্যে ভয়ের আক্ষেপে যেন এই রুত্রসঙ্গীতের তাল কাটিয়া নাযায়! হে মৃত্যু্যয়, আমাদের সমস্ত ভাল এবং সমস্ত মন্দের মধ্যে তোমারই জয় হউক! ৃ আমাদের এই ক্ষ্যাপাদেবতার আবির্ভাব যে ক্ষণে ক্ষণে, তাহা নহে-_ স্থষ্টির মধ্যে ইছার পাগ্লামি অহরহ লাগিয়াই আছে--আমরা ক্ষণে ক্ষণে 'তাহার পরিচয় পাই মাত্র। ব্সহরহই জীবনকে মৃত্যু নবীন করিতেছে, পাগল। ১৩. তালকে মন্দ উজ্জল করিতেছে, তুচ্ছকে অভাবনীয় মূল্যবান করিতেছে । যখন পরিচয় পাই, তখনি রূপের মধ্যে অপরূপ, বন্ধনের মধ্যে মুক্তির, প্রকাশ আমাদের কাছে জাগিয়া উঠে। . আজিকার এই মেঘোম্ুস্ত আলোকের মধ্যে আমার কাছে সেই অপরূপের মৃত্তি জাগিয়াছে ! সম্মুখের এ রাস্তা, এ খোড়োচাল'দেওয়া মুদীর দৌকান, এঁ ভাঙ| ভিটা, এ সরু গলি, এ গাছপালাগুলিকে প্রতি- দিনের পরিচয়ের মধ্যে অত্যন্ত তুচ্ছ করিয়। দেখিয়াছিলাম। এইজন্ত উহার আমাকে বন্ধ করিয়া ফেলিয়াছিল--রোজ এই কটা জিনিষের, মধ্যেই নজরবন্দী করিয়া! রাখিয়াছিল। আজ হঠাৎ তুচ্ছতা একেবারে চলিয়৷! গেছে । আজ দেখিতেছি, চির-অপরিচিতকে এতদিন পরিচিত বলিয়া দেখিতেছিলাম, তাল করিয়া দেখিতেছিলামই "না । আজ এই যাহা-কিছু, সমস্তকেই দেখিয়া শেষ করিতে পারিতেছি না। আজ দেই সমস্তই আমার চারিদিকে আছে, অথচ তাহারা আমাকে আটক করিয়া রাখে নাই--তাহারা প্রত্যেকেই আমাকে পথ ছাড়িয়! দিয়াছে । আমার পাগল এইথানেই ছিলেন,__সেই অপূর্ব, অপরিচিত, অপরূপ, এই মুদির দোকানের খোঁড়োচালের শ্রেণীকে অবজ্ঞা করেন নাই--কেবল, যে আলোকে তাহাকে দেখা যায়, সে আলোক আমার চোখের উপরে ছিল না। আজ আশ্চর্য এই যে, এ সন্মুথের দৃশ্ত, এ কাছের জিনিষ" আমার কাছে একটি বহুম্থদুরের মহিমা লাভ করিয়াছে । উহার সঙ্গে গোৌরীশঙ্করের তুষারবেষ্টিত দুর্গমতা, মহাসমুদ্রের তরলচঞ্চল দুত্তরত| আপনাদের সঙ্জাতিত্ব জাপন করিতেছে । এম্নি করিয়া হঠাৎ একদিন জানিতে পারা যায়, যাহার সঙ্গে * অত্যন্ত ঘরকরপ। পাতাইয় বসিয়াছিলাম, সে আমার ধরকন্নার বাহিরে।. আছি' যাহাকে গ্রতিমুহূর্তের বীধা-বরাদ্দ বলিয়া নিতান্ত নিশ্চিন্ত হইয়া ছিলাম, তাহার মত দুর্লভ ছুরায়ত্ত জিনিষ কিছুই নাই। আঙ্গি ১৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । লিন্পাস্টিলাসদিলী ৯৫ ৯ ৯১৯ মিলা পিপি পোস্ত পনি রা পসরা পো বাপ্পি পাসপািিসপা লামপাসাস্টিপী পপি যাহাকে ভালরূপ জানি মনে করিয়৷ তাহার চারিদিকে সীমানা! আঁকিন্া- দিয় খাতিরজ্জম| হইয়া বসিয়। ছিলাম, সে দেখি, কখন্‌ একমুহুর্তের মধ্যে সমস্ত সীমানা পার হইয়৷ অপূর্ধবরহস্তময় হইয়া উঠিয়্াছে। যাহাঁকে নিয়মের দিক্‌ দিয়া, স্থিতির দিক্‌ দিয়া বেশ ছোটোখাটো, বেশ দস্তরসঙ্গত, বেশ আপনার বলিয়াই বোধ হইয়াছিল, তাহাকে ভাঙনের দিক্‌ হইতে, এ শশানচারী পাগলের তরফ হইতে হঠাৎ দেখিতে পাইলে মুখে আর বাক্য সরে না-_-আশ্তর্য্ ! ওকে! যাহাকে চিরদিন জানিয়াছি, সেই একে! যে একদিকে ঘরের, সে আর-একদিকে অন্তরের, ষে একদিকে কাজের সে আর-একদিকে সমস্ত আবশ্তকের বাহিরে, যাহাকে একদিকে স্পর্শ করিতেছি, সে আর-একদিকে সমস্ত আয়ত্ের অতীত--যে একদিকে সকলের সঙ্গে বেশ খাপ্‌ খাইয়া গিয়াছে, সে আর-একদিকে ভয়ঙ্কর থাপছাড়া, আপনাতে আপনি ! প্রতিদিন ধাহাকে দেখি নাই, আজ তাহাকে দেখিলাম, প্রতিদিনের হাত হইতে মুক্তিলাভ করিয়া বাচিবাম। আমি ভাবিতেছিলাম, চারিদিকে পরিচিতের বেড়ার মধ্যে প্রাত্যহিক নিয়মের দ্বারা আমি বীধা_-আজ দেখিতেছি, মহা অপুর্যের কোলের মধ্যে চিরদিন আমি খেলা করিতেছি। আমি ভাবিয়াছিলাম, আপিসের বড়সাহেবের মত অত্যন্ত "একজন স্ুুগন্তীর হিসাবী লোকের হাতে পৃড়িয়া সংসারে প্রত্যহ আঁক পাঁড়িয়া বাইতেছি-আজ সেই বড় সাহেবের চেয়ে যিনি বড়, সেই মন্ত বেহিসাবী পাগলের বিপুল উদার অট্রহাস্ত জলে-স্থলে-আকাশে সপ্তলোক ভেদ করিয়! ধ্বনিত শুনিয়া হাঁফ ছাড়িয়া বাঁচিলাম। আমার খাতাপত্রৎসমস্ত রহিল! আমার জরুরি-কাঁজের বোঝা এ স্ৃষ্টিছাড়ার পায়ের কাছে ফেলিয়। দিলাম_-তীহার তাগুবনৃত্যের আঘাতে তাহা চু্ণচর্ণ হইয়া ধুলি হইয়া উড়িয়া যাক্‌! . ১৩১১। রজমব্ড। ভরতের নট্যিশান্ত্ে নাট্যমঞ্চের বর্না আছে। তাহাতে দৃশ্তপটের কোন উল্লেখ দেখিতে পাই না। তাহাতে যে বিশেষ ক্ষতি হইয়াছিল, এরূপ আমি বোধ করি নী। কলাবিস্তা যেখানে একেশ্বরী, সেইথানেই তাহীর পূর্ণগৌরব। সতীনের সঙ্গে ঘর করিতে গেলে তাহাকে খাটো হইতেই হইবে। বিশেষত সতীন যদি গ্রবল হয়। রাষায়ণকে যদি সুর করিয়া পড়িতে হয়, তবে আদি- কাঁও হইতে উত্তরকাও পর্য্যন্ত সে স্ুরকে চিরকাল সমান একঘেয়ে হইয়| থাকিতে হয়; রাগিণী-হিসাবে সে বেচারার ফোনকালে পদোন্নতি ঘটে না। যাহা উচ্চদরের কাব্য, তাহা আপনার সঙ্গীত আপনার নিয়মেই জোগাইপা থাকে, বাহিরের, সঙ্গীতের সাহাধ্য অবজ্ঞার সঙ্গে উপেক্ষা করে। যাহা উচ্চ অঙ্গের সঙ্গীত, তাহা আপনার কথা আপনার নিয়মেই বলে) তাহা কথার জন্ত কালিদাস-মিল্টনের মুখাপেক্ষা করে না__-তাহা নিতান্ত তুচ্ছ তোম্তানা-নানা লইয়াই চমৎকার কাঁজ চালাইয়| দেয়। ছবিতে) গানেতে, কথায় মিশীইয়া ললিতকলার একটা বারোয়ারি ব্যাপার করা যাইতে পাঁবে-_কিস্ত মে কতকটা! খেলা-হিসাবে-_তাহা হাটের জিনিষ-_তাহাকে রাজকীয় উৎসবের উচ্চ আসন দেওয়া যাইতে পারে না। কিন্ত শ্রাব্যকাব্যের চেয়ে দৃশ্তকাব্য স্বভাবতই কতকটা পরাধীন বটে। বাহিরের সাহায্যেই নিজেকে সার্থক করিবার জন্য সে বিশেষভার্বে সথষ্ট। সেষে অভিনয়ের জন্ত অপেক্ষা করিয়া আছে, এ কথা তাহাকে স্বীকার করিভেই হয়। ্‌ আমরা এ কথা শ্বীকার করি না। সাধবী স্ত্রী যেমন স্বামীকে ছাড়া ১৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । শসটিলাস্মিপীস্টিপাপাসপিসসসি পাস্তা আর কাহাকেও চায় না, তাল কাব্য তেমনি ভাবুক ছাড়া আর কাহারে অপেক্ষা করে না। সাহিত্য পাঠ করিবার সময় আমর! সকলেই মনে, মনে অভিনয়, করিয়া থাকি-_-সে অভিনয়ে যে কাব্যের সৌন্দর্য্য খোলে না, সে কাব্য কোন কবিকে যশস্বী করে নাই। বরঞ্চ এ কথা বলিতে পার যে, অভিনয়বিস্তা নিতান্ত পরাশ্রিত। ।. সে অনাথা নাটকের জন্য পথ চাহিয়৷ বসিয়া থাকে । নাটকের গৌরব অবলম্বন করিয়াই সে আপনার গৌরব দেখাইতে পারে। স্ত্রণ স্বামী যেমন লোকের কাছে উপহাস পায়, নাটক তেমনি যদি অভিনয়ের অপেক্ষ। করিয়া আপনাকে নানাদিকে খর্ব করে, তবে সেও সেইরূপ উপহাসের যোগ্য হইয়া উঠে। নাটকের ভাবখান। এইরূপ হুওয়। উচিত যে,_“আমার যদি অভিনয় হয় ত হউক্‌, না হয়ত অভিনয়ের পোড়াকপাল-_আমার কোনই ক্ষতি নাই 1” যাহাই হউক, অভিনয্বকে কাব্যের অধীনতা স্বীকার করিতেই হয়। কিন্তু তাই বলিয়া সকল কলাবিগ্ভারই গোলামি তাহাকে করিতে হইবে, এমন কি কথা আছে! যদ মে আপনার গৌরব রাখিতে চায়, তবে, যেটুকু অধীনত! তাহার আত্মগ্রকাশের জন্ত নিতাত্তই না৷ হইলে নয়, সেই- টুকুই সে যেন গ্রহণ করে ;-_তাহার বেশি সে যাহা কিছু অবলম্বন করে, তাহাতে তাহার নিজের অবমানন! হয়। ইহা বল! বাহুল্য, নাট্যোক্ত কথাগুলি অভিনেতার পক্ষে নি আবন্তক । কবি তাহাকে যে হাদির কথাটি জোগান, তাহা লইয়াই তাহাকে হাসিতে হয়; কবি তাহাকে যে কান্নার অবসর দেন, তাহা লইয়াই কীরদিয়! সে দর্শকের চোখে জল: টানিয়া আনে। কিন্তু ছবিটা! কেন? তাহা অভিনেতার পশ্চাতে ঝুলিতে থাকে--অভিনেত৷ তাহাকে সষ্টি করিয়! তোলে না; তাহা আঁকামাত্র ;- আমার মতে. তাহাতে অভিনেতার, অক্ষমতা, কাপুরুষতা৷ গ্রকীশ' পার।' এইক্ধপে যে উপাকে, রলমঞ্চ। * ১৯৭ ািলাসিসিশসিল সিএ দর্শকদের মনে বিভ্রম উৎপাদন করিয়। সে নিজের কাজকে সহজ করিয়। তোলে, তাহা চিত্রকরের কাছ হইতে ভিক্ষ। করিয়া আনা । তা ছাড়া যে দর্শক তোমার অভিনয় দেখিতে আসিয়াছে, তাহার কি নিজের সম্বল কাঁণা-কড়াও নাই? সেকি শিপু? বিশ্বাস করিয়া তাহার উপরে কি কৌন বিষয়েই নির্ভর করিবার জে। নাই? যদি তাহা সত্য হয়, তবে ভবল্‌ দাম দিলেও এমন সকল লোককে টিকিট বেচিতে নাই। এ ত আদালতের কাছে সাক্ষ্য দেওয়া নয় যে, প্রত্যেক কথাটাকে হলফ করিয়া প্রমাণ করিতৈ হইবে? যাহারা বিশ্বাস করিবার জন্ত-_ আনন্দ করিবার জন্ত আসিয়াছে, তাহাদিগকে এত ঠকাইবার আয়োজন কেন? তাহারা নিজের কল্পনাশক্তি বাড়ীতে চাবি বন্ধ করিয়া আসে নাই। কতক তুমি বৌঝাইবে, কতক তাহারা বুঝিবে, তোমার সহিত তাহাদের এইরূপ আপোষের সম্বন্ধ । ছুষ্যস্ত গাছের গুঁড়ির আড়ালে দীড়াইয়া৷ সখীদের সহিত শকুস্তলার কথাবার্তা শুনিতেছেন। অন্ত উত্তম। কথাবার্তা বেশ রসে জমাইয়! বলিয়া যাও! আস্ত গাছের গুঁড়িটা৷ আমার সম্মুখে উপস্থিত না থাকিলেও সেট! আমি ধরিয়া লইতে পারি--এতটুকু স্থজনশক্তি আমার আছে। হুষ্যস্ত-শকুস্তল৷ অনসুয়া-প্রিয়ংবদার চরিত্রান্ুরূপ প্রত্যেক হাবভাৰ এবং কণ্ঠস্বরের প্রত্যেক ভঙ্গী একেবারে প্রত্যক্ষবৎ অনুমান করিয়া লওয়। শক্ত সুতরাং সেগুলি যখন প্রত্যক্ষ বর্তমান দেখিতে পাই, তখন হৃদয় রূসে অভিষিক্ত হস্ব কিন্তু দ্রটো গাছ বা একটা ঘর বা একটা নদী কল্পন! করিয়া লওয়! কিছুই শক্ত নয়, সেটাও আমাদের হাতে না ক্বাখিয়া চিত্রের দ্বারা উপস্থিত করিলে আমাদের গ্রতি ঘোরতর অবিশ্বাস প্রকাশ কর! হয়। আমাদের দেশের যাত্র/ আমার এজন্ত তাল লাগে। বাত্রার অভি- ২ ১৮ বিচিত্র প্রবন্ধ নয়ে দর্শক ও অভিনেতার মধ্যে একটা গুরুতর ব্যবধান নাই । পরম্পরের বিশ্বা ও আহ্কুল্যের প্রতি নির্ভর করিয়া কাজটা বেশ স্ৃদয়তার সহিদ্ধ স্থুসম্পন্ন হইয়া উঠে। কাব্যরস, যেটা আসল জিনিষ, সেইটেই অভি- নয়ের সাহায্যে ফোয়ারার মত চারিদিকে দর্শকদের পুলকিত চিত্তের উপর ছড়াইয়া পড়ে। মালিনী যখন তাহার পুষ্পবিরল বাগানে ফুল খুঁজিয়া বেলা করিয়া দিতেছে, তখন সেটাকে সপ্রমাণ করিবার জন্য আসরের মধ্যে আস্ত আস্ত গাছ আনিয়া ফেলিবার কি দরকার আছে-_-একা| মালিনীর মধ্যে সমস্ত বাগান আপনি জাগিয়া উঠে। তাই যদি না হইবে, তবে মালিনীরই বা কি গুণ, আর দর্শকগুলোই বা কাঠের মুস্তির মত কি করিতে বসিয়া আছে? ্‌ শকুস্তলার কবিকে যদি রঙ্গমঞ্চে দৃশ্ঠপটের কথা ভাবিতে হইত, তবে তিনি গোড়াতেই মুগের পশ্চাতে রথ ছোটান বন্ধী করিতেন। অবশ্ঠ, তিনি বড় কবি-_রথ বন্ধ হইলেক্ট যে তাহার কলম বন্ধ হইত, তাহা নহে _-কিস্ক আমি বলিতেছি, যেটা তুচ্ছ তাহার জন্য যাহা বড় তাহা! কেন নিজেকে কোন অংশে খর্ব করিতে যাইবে? ভাবুকের চিত্তের মধ্যে রঙ্গমঞ্চ আছে, সে রঙ্গমঞ্চে স্থানীভাব নাই। সেখানে যাছকরের হাতে দৃশ্তুপট আপনি রচিত হইতে থাকে । সেই মঞ্চ, সেই পটই নাট্যকরের লক্ষ্যস্থল, কোন কৃত্রিম মঞ্চ ও কৃত্রিম পট কবিকল্পনার উপযুক্ত হইতে পারে না। অতএব যখনধ্দুষ্যস্ত ও সারথি একই স্থানে স্থির ধীড়াইয়া বর্ণনা ও অভিনয়ের দ্বারা রথবেগের আলোচনা করেন, সেখানে দর্শক এই অতি জামা কথাটুকু অনায়াসেই ধরিয়া লন যে, মঞ্চ ছোট, কিন্তু কাব্য ছোট নয়; অতএব কাব্যের খাতিরে মঞ্চের এই অনিবার্ধ্য ক্রুটিকে প্রসন্নচিত্ে তাহারা মার্জন! করেন এবং নিজের চিত্রক্ষেত্রকে সেই ক্ষুদ্রীয়তনের মধ্যে গ্রসারিত করিয়া দিয়া মঞ্চকেই মহীয়ান্‌ করিয়া তোলেন। কিন্ত রঙ্গমঞ্চ । ১৯. অঞ্চের খাতিরে কাব্যকে যদি খাট হইতে হইত, তবে এ কয়েকটা! হতভাগ্য কাষ্ঠথণ্ডকে কে মাপ করিতে পারিত ? শকুন্তলা-নাটক বাহিরের চিত্রপটের কোন অপেক্ষা রাখে নাই বলিয়া আপনার চিত্রপউগুলিকে আপনি স্থষ্টি করিয়া লইয়াছে। তাহার কঙ্থা- শ্রম, তাহার স্বর্গপথের মেঘলোক, তাহার মারীচের তপোবনের জন্ত সে আর কাহীরো উপর কোন বরাত দেয় নাই। সে নিজেকে নিজে সম্পূর্ণ করিয়া তুলিয়াছে। কি চরিত্রন্থজনে, কি ম্বভাবচিত্রে নিজের কাব্যসম্পদের উপরেই তাহার একমাত্র নির্ভর । আমর! অন্ত প্রবন্ধে বলিয়াছি, ফুরোপীয়ের বাস্তব সত্য নহিলে নয় । করনা যে কেবল তাহাদের চিত্তরঞ্জন করিবে তাহা নয়, কাল্পনিককে অবিকল বাস্তবিকের মত করিয়া বালকের মত তাহাদিগকে তুলাইবে। কেবল কাব্যরসের প্রাণদায়িনী বিশল্যকরণীটুকু হইলে চলিবে না, তাহার সঙ্গে বাস্তবিকতার আস্ত গন্ধমাদনটা পধ্যন্ত চাই। এখন কলিষুগ, স্কতরাং 'গন্ধমাদন টানিয়া আনিতে এঞ্রিনিয়ারিং চাই-_তাহার ব্যয়ও সামান্য নহে। বিলাতের ই্টেজে স্তদ্ধমাত্র এই খেলার জন্য যে বাজে খরচ হয়, ভারতবর্ষের কত অভ্রভেদী ছূর্ভিক্ষ তাহার মধ্যে তলাইক্া যাইতে পারে। | প্রাচ্যদেশের ক্রিয়া-কর্ম খেলা-আনন্দ সমস্ত সরল-সহজ। কলা- পাঁতীয় আমাদের ভোজ সম্পন্ন হয় বলিয়া ভোজের যাহা প্রকৃততম আনন _ অর্থাৎ বিশ্বকে অবারিতভাবে নিজের ঘরটুকুর মধ্যে আমন্ত্রণ করিয়া আনা__সম্ভবপর হয়। আয়োজনের ভার যদি জটিল ও অতিরিক্ত হইত, তাবে আদল জিনিষটাই মারা যাইত। ৪. বিলাতের নকলে আমরা যে থিয়েটার করিয়াছি, তাহা ভারাক্রান্ত একটা স্ফীত পদীর্থ। তাহাকে ন্ডানো শক্ত, তাহাকে আপামর সকলের স্বারের কাছে আনিয়! দেওয়া দুঃসাধ্য )-_তাহাতে লক্ষ্মীর পেচাই সরন্বতীর ২৪ ._ বিচিত্র প্রবন্ধ । পাম্পিস্পাস্পিস্িস্িপীিসসপিসসি পসপিপসটশিশিসাসিপাসসিপসিসপান পন্মকে প্রায় আচ্ছন্ন করিয়া আছে। তাহাতে কৰি ও গুণীর প্রতিভার” চেয়ে ধনীর মূলধন ঢের বেশি থাক চাই। দর্শক যদি বিলাতি ছেলে- মানুযিতে দীক্ষিত না হইয়া থাকে এবং অভিনেতার যদি নিজের প্রতি ও কাব্যের প্রতি যথার্থ বিশ্বান থাকে, তবে অভিনয়ের চারিদিক হইতে তাহার বহুমুল্য বাজে জঞ্জালগুলো ঝাঁট দিয়! ফেলিয়৷ তাহাকে মুক্তিদান ও গৌরবদান করিলেই সহৃদয় হিন্দুসস্তানের মত কাজ হয়। বাগানকে যে অবিকল বাগান আঁকিয়াই খাড়া করিতে চুহইবে এবং স্ত্রী-চরিত্র অন্ক- ত্রিম স্ত্রালোককে দিয়াই অভিনয় করাইতে হইবে, এরূপ অত্যন্ত সুদ বিলাতি বর্ধরতা পরিহার করিবার সময় আিয়াছে। মোটের উপরে বল! যাইতে পারে যে, জটিলত| অক্ষমতারই পরিচয় বাস্তবিকতা৷ কাচপোকার মত আর্টের মধ্যে প্রবেশ করিলে তেলা- পোকার মত তাহার অন্তরের সমন্ত রস নিঃশেষ করিয়া ফেলে এবং যেখানে অজীর্ণবশত যথার্থ রসের ক্ষুধার অভাব, সেখানে বহুমূল্য বা প্রাচ্য ক্রমশই ভীষণরূপে বাড়িয়া চলে-_-অবশেষে অন্নকে সম্পূর্ণ আচ্ছন্': করিয়। চাটুনিই স্তপাকার হইয়া উঠে। ১৩০৪ কেকাধ্বনি। হঠাৎ গৃহপালিত ময়ূরের ডাঁক শুনিয়৷ আমার |বন্ধু বলিয়া উঠিলেন-_ . আমি এ ময়ুরের ডাক সহ করিতে পারি না) কবিরা কেকারবকে কেন ঘে তাহাদের.কাব্যে স্থান,.দিয়াছেন,£বুঝিবার.জো*নাই। কবি যখন বসস্তের,কুহুন্বর এবং & বর্ধার কেকা--ছুটাকেই :. সমান কেকাধ্বনি। ২১ আদর দিয়াছেন, তখন হঠাৎ মনে হইতে পারে, কবির বুঝিবা কৈবল্যদশা প্রাপ্তি হইয়াছে, তাহার কাছে ভাল ও মন্দ, ললিত ও কর্কশের ভেদ লুপ্ত। কেবল কেকা কেন, ব্যাঙের ডাক এবং বিল্লীর বঙ্কারকে কেহ মধুর বলিতে পারে না। অথচ কবিরা এ শবগুলিকেও উপেক্ষা করেন নাই। প্রেয়পীর কণ্ঠম্বরের সহিত ইহাদের তুলনা করিতে সাহস পান নাই, কিন্তু ষড় খতুর মহাসঙ্গীতের প্রধান অঙ্গ বলিয়! তাহারা ইহাদিগকে সন্মান দিয়াছেন। একপ্রকারের মিতা আছে, তাহা নিঃসংশয় মিষ্ট, নিতান্তই মিষ্ট। তাহা নিজের লাঁলিত্য সপ্রমাঁণ করিতে মুহূর্তমাত্র সময় লয় না। ইন্ত্িয়ের অসন্দিগ্ধ সাক্ষ্য :লইয়া, মন তাহার সৌনরধ্য শ্ীকার করিতে কিছুমাত্র তর্ক করে না। তাহা আমাদের মনের নিজের আবিষ্কার নহে-- ইন্জ্িয়ের নিকট হইতে পাওয়া; এইজন্য মন তাহাকে অবজ্ঞা করে) বলে, ও নিতীস্তই মিষ্ট, কেবলি মি্ট। অর্থাৎ উহার মিষ্টতা বুবিতে অন্তঃকরণের কোন প্রয়োজন হয় ন1, কেবলমাত্র ইন্দরিয়ের দ্বারাই বোঁঝা যায়। যাহার! গানের সমজ্দাঁর, এইজন্তই তাহার! অত্যন্ত উপেক্ষা প্রকাশ করিয়! বলে, অমুক লোক মিষ্ট গান করে। ভাবটা এই যে, মিষ্ট গায়ক গানকে আমাদের ইন্দ্রিয়সভায় আননয়! নিতান্ত স্থলভ প্রশংসা! দ্বারা অপমা- নিত করে;-_মার্জিত রুচি ও শিক্ষিত মনের দরবারে সে প্রবেশ করে প্া। যে লৌক পাটের অভিজ্ঞ যাচনদার সে রসসিক্ত পাট চায় না) সে বলে, 'ামাকে শুকৃনো পাট দাও, তবেই আমি ঠিক ওজনটা বুঝিব। গানের উপযুক্ত সমজ্দার বলে, বাঁজে রস দিয় গানের বাজে গৌরব বাড়'ইও নাঁ, _ আমাকে শুক্‌নো মাঁল -দাও, তবেই আমি ঠিক ওজনটি পাইব, আমি খুসি হইয়| ঠিক দাঁমটি চুকাইয়া দিব। বাহিরের বাজে মিষ্টতায় আসল জিনিষের মূল্য নামাইয়া দেয়। -হ্২ বিচিত্র প্রবন্ধ পাম্প সিনা সস পাসিপাসমিপাসপাসীসএ্ডিলাস্পামিপাসপাসপপাসিপাসিল সপাস্টিলামপিসছিলামিপাসিপািল পি পাস লাস পা্ছিলা সি যাহা সহজেই মিষ্ট, তাহাতে অতি শীঘ্ব মনের আলম্ত আনে, বেশি- ক্ষণ মনোযোগ থাকে না। অবিলম্বেই তাহার সীমায় উত্তীর্ণ হইয়া মন বলে, আর কেন ঢের হইয়াছে ! এই জন্ত যে লোক যে বিষয়ে বিশেষ শিক্ষা লাভ করিয়াছে, সে তাহার গোড়ার দিকৃকার নিতান্ত সহজ ও ললিত অংশকে আর খাতির করে না। কারণ সেটুকুর সীমা সে জানিয়া৷ লইয়াছে; সেটুকুর দৌড় যে বেশিদুর নহে, তাহা সে বোঝে ; এইজন্য তাহার অন্তঃকরণ তাহাতে, জাগে না। অশিক্ষিত সেই সহজ অংশটুকুই বুঝিতে পারে, অথচ তখনো সে তাহার সীমা পায় না-_এইজন্তই দেই অগভীর অংশেই তাহার একমাত্র আনন্দ। সমজ্দারের আনন্দকে সে একটা কিন্তৃত' ব্যাপার বলিয়া মনে করে, অনেকসময় তাহাকে কপটতার আড়স্কর বলিয়াও গণ্য করিয়া! থাকে। এইজন্যই সর্বপ্রকার কলাবিগ্যাসম্বন্ধে শিক্ষিত ও অশিঙ্গিতের আনন ভিন্ন ভিন্ন পথে যায়। তখন এক পক্ষ বলে, তুমি কি বুঝিবে! আর এক পক্ষ রাগ করিয়া বলে, যাহা বুঝিবার তাহা কেবল তুমিই বৌঝ, জগতে আর কেহ বোঝে না! একটি সুগভীর সামঞ্জস্তের আনন্দ, সংস্থান-সমাবেশের আনন্দ, সরবর্তীর সহিত বোগ-সংযোগের আনন্দ, পার্বন্তীর সহিত বৈচিত্র্যসাধনের আনন্দ--এইগুলি মানসিক আনন্দ । ভিতরে প্রবেশ না করিলে, না বুঝিলে,। এ আনন্দ ভোগ করিবার উপায় নাই। উপর হইতেই চট্ট করিয়া যে সুখ .পাওয়া যায়, ইহা তাহা অপেক্ষা স্থায়ী ও গভীর । এবং এক হিসাঁবে তাহা অপেক্ষা ব্যাপক । যাহা অগভীর, লোকের শিক্ষাবিস্তারের সঙ্গে-_ অভ্যাসের সঙ্গে ক্রমেই তাহা ক্ষয় হইয়া তাহার রিক্তত! বাহির হইয়া! পড়ে। যাহা গভীর, তাহা! আপাতত বহুলোকের কেকাধ্বনি। ২৩ পস্পাস্নদ পাস সিসি পাপা সিবাসপিসপাসিপাসপাাসটিপাসিসপিসসিপসপাসিপাস, গম্য না ৷ হইলেও বন্ৃকাল তাহার পরমাযু থাকে-_তাহার মধ্যে যে একটি শ্রেষ্টতার আদর্শ আছে, তাহা সহজে জীর্ণ হয় না। জয়দেবের “ললিতলবঙ্গলতা” ভাল বটে, কিন্তু বেশিক্ষণ নহে। ইন্দ্রিয় তাহাকে মন মহারাজের কাছে নিবেদন করে, মন তাহাকে একবার স্পর্শ করিয়াই রাখিয়! দেয়-_-তখন তাহা ইন্দ্রিয়ের ভোগেই শেষ হইয়া যায়। ললিতলবঙ্গলতার পার্থ কুমারসম্তবের একটা প্লোক ধরিয়া দেখা যাকৃ £-- সস্পীনমি পপি পান পা উপ 1 দপাাসছিপাসমপাছি সি আবর্জজিত| কিঞ্চদিব গুনাত্যাং বানো বসান তন্ুণাকরাগম্‌। গধাাপ্তপু্ান্ত বকাবনজ। মঞ্চারিণা গল্লবিনী লতেব | ছন্দ আলুলারিত নহে, কথাগুলি যুক্তাক্ষরবহুল,-তবু ভ্রম হয়, এই শ্লোক ললিতলবঙ্গলতার অপেক্ষা কানেও মিষ্ট শুনাইভেছে। কিন্তু তাহা ভ্রম। মন নিজের স্থজনশক্তির দ্বারা উন্ধিরস্ুথ পূরণ করিয়া দিতেছে । যেখানে লোলুপ ইন্দিরগণ ভিড করিয়া না দীড়ার, ও মন এইরূপ জনের অবসর পায়। “পধ্যাপ্তপুপ্পস্তবকাবনমা” ইহার মধ্যে লয়ের যে উতবান-জ্গাছে, কঠোরে কোমলে বথামথরূপে মিশ্রিত হইয়া ছন্দকে যে দোলা দিয়াছে, ভাহা জর়দেবী লয়ের মত অতিপ্রত্যক্ষ নহে তাহা নিগুঢ়; মন তাহা আলগ্তভরে পড়িয়া পায় না, নিজে আবিফার করিয়া লইয়! খুসি হয় | এই শ্লোকের মধ্যে যে একটি ভাবের সৌন্দর্য, তাহাঁও আমাদের মনের সহিত চক্রান্ত করিয়া অশ্রতিগম্য একটি সঙ্গীত রচনা করে__সে সঙ্গীত সমস্ত শবসঙ্গীতকে ছাড়াইয়া৷ চলি যায়, মনে হয়, যেন কান জুড়াইয়! গেল_কিন্তু কান জুড়াইবার কথা নহে, ,আনসী মায়ায় কানকে প্রতারিত করে । আমাদের এই মীয়াবী মনটিকে স্থজনের অবকাশ না প্লিলে, সে ২৪ , বিচিত্র গ্রবন্ধ | নসর সপ্ন ৯-পাস সা িপানপস্পাসপাস্পিসিপ কোন মিষ্টতাকেই বেশিক্ষণ মিষ্ট বলিয়া গণ্য করে না। সে উপযুক্ত উপকরণ পাইলে কঠোর ছন্দকে ললিত, কঠিন শব্কে কোমল করিয়! তুলিতে পারে। সেই শক্তি খাটাইবার জন্য সে কবিদের কাছে অনুরোধ প্রেরণ করিতেছে। কেকারব কানে শুনিতে মিষ্ট নহে, কিন্তু অবস্থাবিশেষে, সময়- বিশেষে মন তাহাকে মিষ্ট করিয়া শুনিতে পারে, মনের সেই ক্ষমতা আছে। সেই মিষ্টতার স্বরূপ, কুহুতানের ' মিষ্টতা হইতে স্বতন্্। নব- বর্ষাগমে গিরিপাদমূলে লতাঁজটিল প্রাচীন মহারণ্যের মধ্যে যে মন্ততা উপস্থিত হয়, কেকারব তাহীরি গান। আধা়ে শ্ামায়মান তমাল-তালী- বনের 'দ্বিগুণতর ঘনারিত অন্ধকারে, মাতৃত্তন্তপিপাস্ ইউদ্ধবাহু শতসহন্র শিশুর মত অগণ্য শাখাগ্রশাখার আন্দোলিত মন্্ররমুখর মহোলীসের মধ্যে রহিয়া রহিয়! কেকা তারস্বরে যে একটি কাস্তক্রেস্কার ধ্বনি উত্থিত করে, তাহাতে প্রবীণ বনম্পতিমণ্ডলীর মধ্যে আরণ্য মহোৎ্সবের প্রাণ জাগিয়। উঠে। কবির 'কেকারব সেই বর্ষার গান,কান তাহার মাধুর্য জানে না, মনই জানে । সেইজন্যই মন তাহাতে অধিক মুগ্ধ হয়। মন তাহার সঙ্গে সঙ্গে আরেো। অনেকখানি পায় ;--সমস্ত মেঘাবৃত আকাশ, ছায়াবৃত অরণ্য, নীলিমাচ্ছর গিরিশরিখর, বিপুল মৃঢ় প্রকৃতির অব্যক্ত অন্ধ আনন্দরাশি। ূ | বিরহিণীর বিরহবেদনার সঙ্গে কবির কেকারব এইজন্ই জড়িত। তাহা! শ্রুতিমধুর বলিয়া পথিকবধুকে ব্যাকুল করে না_তাহা' সমস্ত বর্ষার মন্ষ্োদঘাটন করিয়া দেয়। নরনারীর প্রেমের মধ্যে একটি অত্যন্ত আদিম প্রাথমিক ভাব আছে-_তাহা বহিঃপ্রক্কৃতির অত্যন্ত নিকটবর্তী, তাহা জল- স্থল আকাশের গায়ে সংলগ্ন । বড়খতু আপন পুষ্পপর্য্যায়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রেমকে নানীরঙে রাঙাইয়। দিয়া যায়। যাহাতে পল্লবকে স্পন্দিত, নদীকে তরঙ্গিত, শন্ত শীর্ষকে হিল্লোলিত করে, তাহা ইহাকেও অপূর্ব কেকাধ্বনি | ২৫. স্টপ পাপা লা লালা সিসি পাস চাঞ্চল্যে আন্দোলিত করিতে থাকে । পূর্ণিমার কোটাল ইহাকে ন্বীত করে এবং সন্ধ্যাত্রের রক্তিমায় ইহাকে লজ্জীমপ্ডিত বধূবেশ পরাইয়া দেয়। এক-একটি খতু যখন আপন সোনার কাঠি লইয়া প্রেমকে স্পর্শ করে, তখন সে রোমাঞ্চকলেবরে না৷ জাগিয়৷ থাকিতে পারে না। সে অরণ্যের পুষ্প- পল্পবেরই মত প্ররুতির নিগৃঢুষ্পর্শাধীন। সেই জন্য যৌবনাবেশবিধুর কালিদাস ছয় খতুর ছয় তারে নরনারীর প্রেম কি কি স্থরে বাজিতে থাকে, তাহাই বর্ণনা করিয়াছেন_-তিনি বুঝিয়াছেন, জগতে খত আবর্তনের সর্বপ্রধান কাজ প্রেম-জাগান ;-_ফুল-ফুটানো প্রভৃতি অন্য সমন্তই তাহার আহ্ৃষঙ্গিক । তাই যে কেকাঁরব বর্ষাখতুর নিখাদ স্থর, তাহার আঘাত বিরহবেদনার ঠিক উপরে গিয়াই পড়ে । বিগ্যাপতি লিখিয়াছেন-__ মত্ত দাদুরী ডাকে ডাহকী ফাটি যাওভ ছাতিয়।। এই ব্যাঙের ডাক নববর্ষার মত্তভাবের সঙ্গে নহে, ঘনবর্ষার নিবিড় ভাবের সঙ্গে বড় চমতকার খাপ খায়। মেঘের মধ্যে আজ কোন বর্ণ বৈচিত্র্য নাই, স্তরবিষ্তাস নাই,শচীর কোন প্রাচীন কিস্করী আকাশের প্রাঙ্গণ মেষ দিয়া সমান করিয়া লেপিয়া দিয়াছে, সমস্তই কৃষ্ণধূসর বর্ণ। নানাশস্ত- বিচিত্রা পৃথিবীর উপরে উজ্জল আলোকের তুলিকা পড়ে নাই বলিয়। বৈচিত্র ফুটিয়া ওঠে নাই। ধানের কোমল মস্থণ সবুজ, পাটের গাঢ় বর্ণ এবং ইক্ষু হরিদ্রাভা একটি বিশ্বব্যাপি-কালিমায় মিশিয়া আছে। বাতাস নাই। আসন্ন-বৃষ্টির আশঙ্কায় পঞ্চিল পথে লোক বাহির হয় নাই। মাঠে বহুদিন পূর্বে ক্ষেতের কাজ সমস্ত শেষ হইয়া গেছে। পুকুরে পাঁড়ির সমান জল। এইরূপ জ্যোতিহীন, গতিহীন, কর্মহীন, বৈচিত্র্যহীন, কালিমালিপ্ত একা- কারের দিনে ব্যাঙের ডাক ঠিক স্থরটি লাগাইয়া থাকে। তাহার স্বর এ বর্ণহীন মেঘের মত, এই দীপ্তিশুন্য আলোকের মত, নিস্তদ্ধ ২৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । সিসি পিসি নিবিড় বর্ষাকে ব্যাপ্ত করিয়া রিয়া দিতেছে) বর্ধার গণ্ডিকে আরো! "ঘন করিয়া চারিদিকে টানিয়া দিতেছে । তাহা নীরব্তার অপেক্ষাও এক- ঘেয়ে। তাহা নিভৃত কোলাহল। ইহার সঙ্গে বিল্লীরব ভালরূপ মেশে ; কাঁরণ যেমন মেঘ, যেমন ছায়া, তেমনি বিল্লীরবও আর-একটা আচ্ছাদন- বিশেষ; তাহা ম্বরমগুলে অন্ধকারের প্রতিরূ্প ; তাহা বর্ষা-নিশীথিনীকে সম্পূর্ণতা দান করে। ১৩০৮ । পিচ বাজে কথা অন্ত খরচের চেয়ে বাজে খরচেই মান্থুষকে যথার্থ চেনা যাঁয়। কারণ, মানুষ ব্যয় করে বীধা নিয়ম অনুসারে, অপব্যয্ করে নিজের খেয়ালে । যেমন বাঁজে খরচ, তেমনি বাজে কথা। বাজে কথাতেই মানুষ আপনাকে ধরা দেয়। উপদেশের কথা যে রাস্তা দিয়া চলে, মনু আমল হইতে তাহা বাধা, কাজের কথা যে পথে আপনার গো-যান টানিয়া আনে, সে পথ কেজো সম্প্রদায়ের পায়ে পায়ে তৃণপুষ্পশৃদ্ধ চিহ্রি হইয়া গেছে । বাজে কথ! নিজের মত করিয়াই বলিতে হয়। এইজন্ত চীণক্য ব্যক্তিবিশেষকে যে একেবারেই চুপ করিয়া যাইতে বলিয়াছেন, সেই কঠোর বিধানের কিছু পরিবর্তন করা যাইতে পারে; আমাদের বিবেচনায় চাণক্যকথিত উক্ত ভদ্রলোক “তাবচ্চ শোভতে' যাবৎ তিনি উচ্চ অঙ্গের কথা বলেন, যাবৎ তিনি আবহমান কালের পরীক্ষিত সর্বজনবিদিত সত্য ঘোষণায় প্রবৃন্ত থাকেন_কিস্ত তখনি তাহার বিপদ্‌ খনি তিনি সহজ কথা নিজের ভাষায় বলিবার চেষ্টা করেন। যে লোক একটা বলিবার বিশেষ কথা না থাকিলে কোন কথাঃ এ কথা। ৭ পাটি পা পাপা লি তিশা, পাপা পাম পাসিপািপসিপস্বিণ সসিলাপানলা পালি স্পস্ট শ » লা সপাছরসিপাসপি পোসািলাসিলী* লস পাল বলিতে পারে না) হয় বেদবাক্য বলে, নয় চুপ করিয়া থাকে; হে চতুরানন, তাহার কুটুষ্ষিতা, তাহার সাহচর্য্য, তাহার প্রতিবেশ_- শিরসি মা লিখ, মা লিখ, মা লিখ! পৃথিবীতে জিনিষমী ত্রই প্রকাশধর্্সী নয়। কয়লা আগুন ন1 পাইলে জলে না, স্ফটিক অকারণে ঝকৃঝকৃ করে। কয়লায় বিস্তর কল চলে, স্কটিক হার গিয়া প্রিয়জনের গলায় পরাইবার জন্ত । কয়লা আবস্তাক, স্কটিক মৃল্যবান্। এক একটি ছুলভ মানুষ এইরূপ স্ফটিকের মত অকারণ ঝল্মল্‌ করিতে পারে। সে সহজেই আপনাকে প্রকাশ করিয়া থাকে-_তাহার কোন বিশেষ উপলক্ষ্যের আবশ্তক হয় না। তাহার নিকট হইনে কোন বিশেষ প্রয়োঞ্জন সিদ্ধ করিয়া লইবার গরজ কাহারো থাকে না _সে অনায়াসে আপনাকে আপনি দেদীপ্যমান করে, ইহ দেখিয়াই আনন্দ। মানুষ, প্রকাশ এত ভালবাসে, আলোক তাহার এত প্রিয় যে, আবশ্তককে বিসঙ্জঈন দিয়া, পেটের অন্ন ফেলিয়াও উজ্জ্রলতার জন্য লালারিত হইয়া উঠে। এই গুণটি দেখিলে, মানুষ যে পতঙ্গতেঠ, সে সম্বন্ধে সনোহ থাকে না। উজ্জল চক্ষু দেখিয়া যে জাতি অকারণে প্রাণ দিতে পারে, তাহার পরিচয় বিস্তারিত করিয়া দেওয়! বাহুল্য । কিন্তু মকলেই পতঙ্গের ডান! লইয়া জন্মায় নাই। জ্যোঁতির মোহ সকলের নাই। অনেকেই বুদ্ধিমান, বিবেচক। গুহা" দেখিলে তাহার! গতীরতার মধ্যে তলাইতে চেষ্টা করেন, কিন্তু আলো! দেখিলে উপরে উড়িবার ব্যর্থ উদ্ঘমমাত্রও করেন না। কাব্য দেখিলে ইহারা প্রশ্ন করেন ইহার মধ্যে লাভ করিবার বিষয় কি আছে, গন্প শুনিলে অষ্টাদশ সংহিতার সচ্চিত মিলাইয়। ইহারা ভূয়সী গবেষণার সহিত বিশ্তদ্ধ ধর্মমন্তে ছুয়ো বা বাহবা দিবার জন্ত গ্রস্তত হইয়া বসেন। যাহা অকারণ, যাহা ্মনীবশ্তক, তাহার প্রতি ইহাদের কোন লোভ নাই। ২৮ বিচিত্র প্রবন্ধ | যাহারা আলোক-উপাস্ক, তাহারা এই সম্প্রদায়ের প্রতি অঙ্থরাগ 'প্রকাশ করে নাই। তাহারা ইহাদিগকে যে সকল নামে অভিহিত করিয়াছে, আমরা তাহার অনুমোদন করি না। বররুচি ইহার্দিগকে "্অরমিক বলিয়াছেন, আমাদের মতে ইহা কুচিগহিত। আমর! ইহাদিগকে যাহা মনে করি, তাহা মনেই রাখিয়া দিই। কিন্তু প্রাচীনের মুখ সাম্লাইয়! কথা কহিতেন না-_তাহার পরিচয় একটি [সংস্কতশ্লোকে পাই । ইহাতে ৰল! হইতেছে, সিংহনথরের দ্বারা উৎপাটিত একটি গজমুক্তা বনের মধ্যে পড়িয়াছিল, কোন ভীলরমণী দূর হইতে দেখিয়। ছুটিয়! গিয়! তাহা তুলিয়া 'লইল--যখন .টিপিয়া দেখিল তাহা .পাকা কুল নহে, তাহ মুক্তা মাত্র তখন দুরে ছুঁড়িয়া ফেলিল। ম্প্টই বুঝা যাইতেছে, প্রয়োজনীয়তা- বিবেচনায় ধাহারা সকল জিনিষের মূল্যনির্ারণ করেন, শুদ্বমাত্র সৌন্দর্য্য ও উজ্জ্লতাঁর বিকাশ ধাহাদিগকে লেশমাত্র বিচলিত করিতে পারে না, কবি বর্ধরনারীর সহিত তাহাদের তুলনা দিতেছেন। আমাদের বিবেচনায় কবি ইহাদের সম্বন্ধে নীরব থাকিলেই ভাল করিতেন--কারণ, সঁহারা ক্ষমতাশালী লোক, বিশেষত, বিচারের ভার প্রায় ইহাদেরই হাতে । ইহার গুরুমহীশয়ের কাজ করেন। যাহারা সরম্বতীর কাব্যকমলবনে বাস করেন, তাহারা! তটবর্তী বেত্রবনবাসীদ্দিগকে উদ্ে- জিত না করুন, এই আমার প্রার্থন!। | সাহিত্যের যথার্থ বাজে রচনাগুলি কোন বিশেষ কথা বলিবার স্পর্ধা রাখে না । সংস্কৃতসাহিত্যে মেঘদূত তাহার উজ্জল দৃষ্টাস্ত। তাহা! ধর্মের কথা নহে, কর্মের কথ! নহে, পুরাণ নহে, ইতিহীস নহে। যে অবস্থায় মানুষের চেতন-অচেতনের বিচার লোপ পাইয়া যায়, ইহা সেই অবস্থার প্রলাপ। ইহাকে যদি কেহ বদরীফল মনে করিয়া পেট তরাইবাঁর আশ্বাসে তুলিয়! লন, তবে তখনি ফেলিয়া দিবেন। ইহাতে প্রয়োজনের কথ! কিছুই নাই। ইহা নিটোল মুক্তা, এবং ইহাতে বাজে কথা। ২ পিপিপি সা পিসি বিরহীর বিদীর্ণ হৃদয়ের রক্তচিহ কিছু লাগিয়াছে, কিন্তু সেটুকু মুছিয় ফেলিলেও ইহার মুল্য কমিবে না। ইহার কোন উদ্দেশ্ত নাই বলিয়াই এ কাব্যখানি এমন শ্বচ্ছ, এমন উজ্ভ্রল। ইহা একটি মায়াতরী )--কল্পনার হাঁওয়ায় ইহার সজল মেঘ- নির্শিতি পাল ফুলিয়া উঠিয়াছে এবং একটি বিরহীর হৃদয়ের কামনা বহন করিয়া! ইহা অবারিতবেগে একটি অপরূপ নিরুদ্দেশের অভিমুখে ছুটিয়া চলিয়াছে-_আর-কোন বোঝা ইহাতে নাই। টেনিস্‌ন্‌ যে 1৫1৩ €69:5, যে অকারণ অশ্রবিন্দুর কথা বলিয়াছেন,. মেঘদুত সেই বাজে চোখের জলের কাব্য। এই .কথা শুনিয়া অনেকে: আমার সঙ্গে তর্ক করিতে উদ্ভত হইবেন |. অনেকে বলিবেন, ক্ষ যখন গ্রভূশাপে তাহার প্রেয়পীর নিকট হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়াছে, তখন মেঘদুঠের অশ্রধারাকে অকারণ বলিতেছেন কেন? আমি তর্ক করিতে চাই না--এ সকল কথার আমি কোন উত্তর দিবনা। আমি জোর করিয়া বলিতে পারি, ্ যে যক্ষের নির্বাসন প্রভৃতি ব্যাপার, ও সমন্তই কালিদাসের বানানো,__কাব্যরচনার ও একটা উপলক্ষমাত্র। এ ভার! বীধিয়। তিনি এই ইমারত গড়িয়াছেন_ এখন আমরা এ ভারাটা ফেলিয়া দিব। আসল কথা, “রম্যাণি বীক্ষ্য মধুরাং্চ নিশম্য শব্দান্” মন অকারণ বিরহে:বিকল হইয়া উঠে, কালিদাস অন্তত্র তাহা শ্বীকার করিয়াছেন ;-_আধাটের প্রথমদিনে অকম্মাৎ ঘনমেঘের ঘটা দেখিলে আমাদের মনে এক শ্ৃ্টিছাড়৷ বিরহ জাগিয়! উঠে, মেঘদুত সেই অকারণ বিরহের অমুলক প্রলাপ । তা যদি না হইত,তবে বিরহী মেঘকে ছাড়িয়া বিছ্যুৎকে দত পাঠাইত। তবে পূর্বমেঘ এত রহিয়া-বসিয়া,এত ঘুরিয় ফিরিয়া, এত যুখীবন প্রফুল্ল করিয়া, এত জনপদবধূর উত্াক্ষণ্ত দৃষ্টির, ।কটাক্ষপাতগ্লুটিয়া'লইয়া,চলিত না। কাব্য'।পড়িবারঃ সময়ও যদি হিসাবের খাত খুলিয়৷ রাখিতেই হয়, ৩৯ বিচিত্র প্রবন্ধ । যদি কি লাভ করিলাম, হাতে হাঁতে তাহার নিকাশ চুকাইয়া লইতেই হয় তবে স্বীকার করিব মেঘদূত হইতে আমরা একটি তথ্য লাত করিয়া! পুলকিত হইয়াছি। সেটি এই যে, তখনো মানুষ ছিল এবং তখনো! আষাটের প্রথম দিন যথানিয়মে আমিত। কিন্তু অসহিষ্ণ বররুচি ধাহাদের প্রতি অশিষ্ট বিশেষণ প্রয়োগ করিয়াছেন তাহারা কি এরূপ লাভকে লীভ বলিয়াই গণ্য করিবেন? ইহাতে কি জ্ঞানের বিস্তার, দেশের উন্নতি, চরিত্রের সংশোধন ঘটিবে? অতএব, যাহা অকারণ যাহা অনাবশ্তক, হে চতুরানন, তাহ রসের কাব্যে রসিকদের জন্যই ঢাকা থাকুক-যাহা আবশ্তক, যাহা হিতকর, তাহার ঘোষণার বিরতি ও তাহার খরিদৃদারের অভাব হইবে না! ১৩৯০%। পনেরো-আনা। ষে লোক ধনী, ঘরের চেয়ে তাহার বাগান বড় হইয়। থাকে। খর অত্যাবশ্যক ; বাগান অতিরিক্ত- না হইলেও চলে। সম্পদের উদারতা অনাবগ্তকেই আপনাকে সপ্রমাণ করে। ছাগলের যতটুকু শিং আছে, তাহাতে তাহার কাজ চলিয়া যার, কিন্তু হরিণের শিঙের পনেরো আনা অনাবশ্তকতা৷ দেখিয়া আমর! মুগ্ধ হইয়| থাকি। ময়ূরের লেজ যে কেবল রংচঙে জিতিয়াছে, তাহা নহে-_তাহার বাহুল্যগৌরবে শালিক-খঞ্জন- ফিঙার*পুচ্ছ লজ্জায় অহরহ অস্থির। যে মানুষ আপনার জীবনকে নিঃশেষে অত্যাবশ্তুক করিয়! তুলিয়াছে, সে ব্যক্তি আদর্শপুরুষ সন্দেহ নাই, 'কিন্ত সৌভাগ্যক্রমে তাহার আদর্শ অধিক লোকে ,অনুসরণ করে না)_যদি করিত, তবে মনুষ্যসমাজ পনেরো-আনা। গু এমন একটি ফলের মত হইয়া উঠিত, যাহার বীচিই সমস্তটা, শীস একে- কারেই নাই। কেবলই যে লোক উপকার করে, তাহাকে ভাল না বলিয়া থাকিবার জো নাই, কিন্তু যে লোকটা বাহুল্য, মানুষ তাহাকে ভালবাসে । ৃ কারণ, বাহ্ুল্যমান্থষটি সর্বতোভাবেই আপনাকে দিতে পারে। পৃথিবীর উপকারী মানুষ কেবল উপকারের সঙ্কীর্ণ দিক্‌ দিয়াই আমাদের একটা অংশকে স্পর্শ করে )--সে আপনার উপকারিতার মহত প্রাচীরের স্বার| আর-সকল দিকেই ঘেরা; কেবল একটি দরজা খোলা, সেখানে আমরা হাত পাতি, সে দান করে। আর, আমাদের বাহুল্যলোকটি কোন কাজের নহে, তাই তাহার কোন প্রাচীর নাই। সে আমাদের সহীয় নহে, সে আমাদের সঙ্গিমাত্র। উপকারী লোকটির কাছ হইতে আমরা অর্জন করিয়া আনি, এবং বাহুল্যলোকটির সঙ্গে মিলিয়! আমরা খরচ করিয়া থাকি। যে আমাদের খরচ করিবার সঙ্গী, সেই আমাদের বনধু। বিধাতার প্রসাদে হরিণের শিং ও ময়ূরের পুচ্ছের মত সংসারে আমরা অধিকাংশ লোকই বাহুল্য, আমাদের অধিকাংশেরই জীবন জীবনচরিত লিখিবার যোগ্য নহে, এবং সৌভাগাক্রমে আমাদের অধিকাংশেরই মৃত্যুর পরে পাথরের মুত্তি গড়িবার নিক্ষল চেষ্টায় টাদার খাত৷ দ্বারে'দ্বারে কীদিয়া ফিরিবে না। মরার পরে অল্প লোকেই অমর হইয়া থাকেন, ব্ পৃথিবীটা বাসযোগ্য হইয়াছে। ট্ণের সব গাঁড়িই যদি রিজার্ভ গাড়ি হইত, তাহা হইলে সাধারণ প্যাসেঞ্জারদের গতি কি হইত? একে তবড় লোকের! একাই একশো-_অর্থাৎ যতদিন বাচিয়। থাকেন, ততদিন অস্তত তীহাদের তক্ত ও নিনদুকের স্বদয়ক্ষেত্রে শতাধিক লোকের জায়গা! জুড়িয়। খাকেন--তাহার পরে, আবার, মরিয়াও তাহারা স্থান ছাড়েন না। ৩২ | বিচিত্র প্রবন্ধ । ছাড়া দুরে যাক্‌, অনেকে মরার সুযোগ লইয়া অধিকার বিস্তার করিয়াই থাকেন। আমাদের একমাত্র রক্ষা এই যে, ইহাদের সংখ্যা অল্প), নহিলে কেবল সমাধিস্তস্তে সীমান্ঠ ব্যক্তিদের কুটারের স্থান থাকিত না।, পৃথিবী এত সঙ্কীর্ণ যে, জীবিতেব সঙ্গে জীবিতকে জায়গার জন্তে লড়িতে হয়। জমির মধ্যেই হউক্‌ বা হৃদয়ের মধ্যেই হউকৃ, অন্য পাঁচজনের চেয়ে একটুখানি ফলাও অধিকার পাইবার জন্ত কত লোকে জালজালিয়াতি করিয়া ইহকাঁল-পরকাল খোয়াইতে উদ্তত। এই যে জীবিতে-জীবিতে লড়াই, ইহা! সমকক্ষের লড়াই, কিন্তু মৃতের সঙ্গে জীবিতের লড়াই বড় কঠিন। তাহারা এখন সমস্ত দুর্বলতা, সমস্ত খণ্ডতার অতীত, তাহারা কল্পলোকবিহারী--আমর৷ মাধ্যাকর্ষণ, কৈশিকাকর্ষণ, এবং বনুবিধ আকর্ষণবিকর্ষণের দ্বার! পীড়িত মর্ত্যমান্ৃষ, আমর! পারিয় উঠিব কেন? এইজন্তই বিধাতা অধিকাংশ মৃতকেই বিস্থৃতিলোকে নির্বাসন দিয়! থাকেন,__সেখানে কাহারো স্থানীভাব নাই। বিধাতা! যদি বড়-বড় মৃতের আওতায় আমাদের মত ছোট-ছোট জীবিতকে নিতান্ত বিমর্ষ- মলিন, নিতান্তই কোণথেঁষা করিয়! রাখিবেন, তবে পৃথিবীকে ,এমন উজ্জল সুন্দর করিলেন কেন, মানুষের হৃদয়টুকু মানুষের কাছে এমন একাস্তলোভনীয় হইল কি কারণে? নীতিজ্ঞের৷ আমাদিগকে নিন্দা করেন। বলেন, আমাদের জীবন. বৃখ! গেল। তাহার! আমাদিগকে তাড়না করিয়া বলিতেছেন--উঠ, জাগ, কাজ কর, সময় ন& করিয়ে না! কাজ ন। করিয়া অনেকে সময়: নষ্ট করে সন্দেহ নাই--কিন্ধ কাজ করিয়া! যাহার! সময় নষ্ট করে, তাহার! কাজও নষ্ট করে, সময়ও নষ্ট ,করে। তাহাদের পদভারে পৃথিবী কম্পান্বিত এবং তাহাদেরই সচে্তার, হাত হইতে অমহায় সংদারকে রক্ষা করিবার জন্ত ভগবান বলিয়াছেন-_- “সন্ভবামি ঘুগ্নে যুগে।” পনেরো-আনা। ৩৬. সাসটিস্পস্পস্িি সিসি সি ০ এসপি জীবন বৃথা গেল! বৃথ। ধাইতে দাও! অধিকাংশ জীবনই বৃথ। যাইবা জন্য হইয়াছে! এই পনেরো-আনা অনাবস্ীক জীবনই বিধাতার শষ্য সপ্রমাণ করিতেছে । তাহার জীবনভাগারে যে দৈন্য নাই, ব্যর্থ প্রাণ আমরাই তাহার অগণা সাক্ষী। আমাদের অফুরাণ অজত্রতা, আমাদের অহেতুক বাহুল্য দেখিয়। বিধাতার মহিমা ন্মরণ কর। বাঁশী যেমন আপন শুন্ততার ভিতর দিয়! সঙ্গীত প্রচার করে, আমর! সংসারের পনেরো- আনা আমাদের ব্যর্থতার দ্বারা বিধাতার গৌরব ঘোষণা করিতেছি। বুদ্ধ আমাদের জন্যই সংসার ত্যাগ করিয়াছেন, থৃষ্ট আমাদের জন্ত প্রাণ দিয়াছেন, খধিরা আমাদের জন্য তপস্ত। করিয়াছেন এবং সাধুরা আমা- দের জন্য জাগ্রত রহিয়াছেন । জীবন বৃথা গেল ! যাইতে দাও! কারণ, যাওয়। চাই। যাওয়াটাই একটা সার্থকতা । নদী চলিতেছে--তাহার সকল জলই আমাদের স্ীনে এবং পানে এবং আমন ধানের ক্ষেতে ব্যবহার হইয়া যায় না। তাহার অধিকাংশ জলই কেবল প্রবাহ রাখিতেছে। আর-কোন কাজ না করিয়া কেবল প্রবাহরক্ষা! করিবার একটা! বৃহৎ-দার্থকতা আছে। তাহার যে বল আমর! খাল কাটিয়৷ পুকুরে আনি, তাহাতে স্নান করা চলে, কিন্তু তাহা পাঁন করে না) তাহার যে জল ঘটে করিয়া আনিয়! আমর! জালায় ভরিয়। রাখি, তাহা পান কর! চলে, কিন্তু তাহার উপরে আলো-ছায়ার উৎসব হয় না । উপকারকেই একমাত্র সাফল্য বলিয়া জ্ঞান কর কুপণতার কথা, উন্দেগ্তকেই একমাত্র পরিণাম বলিয়! গণ্য করা দীনতার পরিচয়। আমর! সাধারণ পনেরোঁআনা, আমরা নিজেদের যেন হেয় বলিয়া নাজ্ঞান করি। আমরাই সংসারের গতি। পৃথিবীতে, মানুষের হৃদকবে আমাদের জীবন্বত্ব। আমরা কিছুতেই দখল রাখি না, আকৃড়িয়া থাকি না, আমর! চলিয়া যাই। সংসারের সমস্ত কলগান আমাদের ছানি, কাদি, তালবাসি। রন্ধুর সঙ্গে ক্মকারণ খেলা করি; শুজনের হজে অন[বক আলাপ করি; দিনের অধিকাংশ সময়ই চানিপাশের লোকের 'সহিত উদ্দেঞ্জহীনভাবে যাপন করি, তার পরে ধুম রুরিয়া ছেলের বিবাহ দিনা তাহাকে আপিসে গ্রবেশ করাইয়া' পৃথিবীতে কোন ধ্যাতি না রাখিরা মরিয়া-পুড়িয়া ছাই হইয়া যাই- আমরা রিপুজ সংসারের বিচিত্র তরঙ্গলীলার অঙ্গ ; আমাদের ছোটখাট হাসিকোতুকেই লমস্ত জনপ্রবাহ ঝল্মল্‌ করিতেছে, আমাদের ছোটথাট আলাপে-বিলাগে সমধ্ত সমাজ মুখরিত হইয়া আছে। আমরা যাহাকে ব্যর্থ বলি, প্ররুতির,অধিকাঁংশই তাই। হ্্যকিরণের বেশির ভাগ শুন্তে বিকীর্ণ হয়, গাছের মুকুল অতি অন্পই ফল পর্য্যন্ত টিকে। কিন্তু সে যাহীর ধন তিনিই বুঝিবেন। .সে ব্যয় অপব্যয় কি না, বিশ্বকর্মার খাত! না দেখিলে তাহার বিচার করিতে পারি ন1। আঙ্গরাও তেমনি অধিকাংশই পরস্পরকে সঙ্গদান ও গতিদান ছাড়া _আবর-কোন কাজে লাগি না) সেজন্স নিজেকে ও অন্তকে কোন দোয় না দিয়া, ছটফট ন। করিয়া, প্রফুল্ল হাস্তে ও প্রসন্নগানে সহজেই অথ্যাত 'সবসানের মধ্যে যদি শাস্তিলাভ করি, তাহা! হইলেই সেই উদ্দেশ্তহীনতার স্বধ্যেই যথার্থভাবে জীবনের উদ্দেশ্ সাধন করিতে পাবি। বিধাতা বদি আমাকে ব্যর্থ করিয়াই স্থষ্টি করিয়। থাকেন, তবে আজি নন্ত ) কিন্ত যদি উপদেষ্টার তাড়নায় আমি মনে করি আমাকে উপকার করিতেই হইবে, কাজে লাগিতেই হইবে, তবে যে উৎকট ব্যর্থতার থ্রি করি, তাহা আমার ত্বকৃত। তাহার জবাবদিহী আমাকে করিতে হইবে। পরের উপক্ধার ফরিতে সকলেই 'জন্মাই নাই--অতএর উপকার না করিলে লজ্জ/ নাই। মিশনারী হুইয়্! চীন উদ্ধার করিতে না-ই গেলাম) স-দেশে খাকিযাশেয়াল শিক্ষা্স করিয়া ও খোদদৌডে ক্রু! খেলিয়!। পনেরো-আনা। ৬% দিন-কাটানকে হি বার্থতা বল, তবে তাহা ভীন-উদধারচেষ্টার মত এমন লোমহর্ষক নিদারুণ বার্থত! নহে। সকল ঘাস ধান হয় ন1। পৃথিবীতে ধাসই প্রায় সমস্ত, ধান অল্লই। কিনতু ঘাস যেন আগনার স্বাভাবিক নিষবলতা লইয়া বিলাগ না করে_- লে যেন স্মরণ করে যে, পৃথিবীর শুফধূলীকে সে শ্টামলতার দ্বার! আচ্ছ্র করিতেছে, রোড্রতাপকে সে চিরএরসর় দিতার ঘারা কোমণ করিয়া লইতেছে। বোধ করি ঘাসজাতির মধ্যে কুশতৃণ গায়ের নোরে ধালট হইবার চেষ্টা করিয়াছিল-_বোধ করি, সামান্ত ঘাস হইয়া না থাকিবার জন্য, পরের প্রতি একান্ত মনোনিবেশ করিয়া জীবনকে সার্থক করিবার জন্য তাহার মধ্যে অনেক উত্তেজনা জন্মিয়াছিল--তবু সে ধান্ত হইল না। কিন্ত সর্লদা পরের প্রতি তাহার তীক্ষলক্ষ্য নিবিষ্ট করিবার একাগ্র চেষ্টা কিরূপ, তাহা পরই বুঝিতেছে। মোটের উপর এ'কথা বলা যাইতে পারে যে, এরূপ উগ্র পরপরায়ণত! বিধাতার অভিপ্রেত নহে। ই অপেক্ষ। সাধারণ তৃণের খ্যাতিহীন, শ্নগ্ধ-সুন্দর, বিনত্-কোমল নিক্ষলত ভাল। র সংক্ষেপে বলিতে গেলে মানুষ ছুই শ্রেণীতে বিতক্ত---পনেরো-আনা এবং বাকি এক-আনা। পনেরো-আনা শান্ত এবং এক-আনা অশান্ত । পনেরো-আন! অনাবশ্তক এবং এক-আনা আবশ্তক। বাতাসে চলনশীল জলনধর্মী অক্সিজেনের পরিমাণ অল্প, স্থির-শান্ত নাইটোজেন্ই অনেক। ঘদ্দি তাহ(র উপ্টা হয়, তবে পৃথিবী জলিয়া ছাই হয়। তেমনি সংসারে ধখন কোন-একদল পনেরো-আনা, এক-আনার মতই অশান্ত ও আব্তক হইয়। উঠিবার উপক্রম করে, তখন জগতে আর কল্যাণ নাই, তখন যাহাদের অদৃষ্টে মরণ আছে, 'তাহাদিগকে মরিবার অন্ত প্রস্তত হইতে হইবে। ১৯৩৪৯। ্‌ নববর্ষা। যৌবনে নিজের অন্ত পাই নাই, সংসারেরও অস্ত ছিল না। আমি কি যে হইব, না হইব,কি করিতে পারি, না পারি, কাজে ভাবে অন্ুভাকে আমার প্রকৃতির দৌড় কতদূর, তাহা নির্দিষ্ট হয় নাই, সংসারও অনির্দিষ্ট রহস্তপুর্ণ ছিল। এখন নিজের সম্বন্ধে সকল সম্ভাবনার সীমায় আসিয়া পৌছিয়াছি ; পৃথিবীও সেই সঙ্গে সন্কুচিত হইয়া গেছে। এখন ইহ! আমারি আপিমঘর, বৈঠকখানা, দরদালানের সামিল হইয়া পড়িয়াছে। সেই ভাবেই পৃথিবী এত বেশি অভ্যস্ত পরিচিত হইয়া গেছে যে, তুলিয়। গেছি এমন কত আপিসঘর, বৈঠকখানা, দরদাঁলান, ছায়ার মত এই পৃথিবীর উপর দিয়া গেছে, ইহাতে চিহবও রাঁখিতে পারে নাই।, কত প্রো নিজের মাম্লা-মকদ্দমার মন্ত্রগৃহকেই পৃথিবীর ধরব কেন্দ্রস্থল গণ্য করিয়৷ তাকিয়ার উপর ঠেসান্‌ দিয়া বসিয়াছিল, তাহাদের নাম তাহাদের তন্মের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে উড়িয়া গেছে, সে এখন আর খু'টিয়া পাইবার জো নাই-তবু পৃথিবী সমান বেগে হৃর্ধ্যকে প্রদক্ষিণ করিয়া চলিতেছে। কিন্তু আযাঢ়ের মেঘ প্রতি বংসর যখনি আসে, তখনই তাহার, নৃতনত্বে রসাত্রাস্ত ও পুরাতনত্ে পুণ্তীভূত হইয়া আসে। তাহাকে আমরা ভুল করি না, কারণ, সে আমাদের ব্যবহারের বাহিরে থাকে । আমার সঙ্কোঁচের সঙ্গে সে সন্কৃচিত হয় না। যথন বন্ধুর দ্বারা বঞ্চিত, শক্রর দ্বারা পীড়িত, ছুররৃষ্টের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হইয়াছি, তখন যে কেবল হৃদয়ের মধ্যে বেদনার চিহ্ু লাগিয়াছে, ললাটের উপর বলি অঙ্কিত হইয়াছে, তাহা নহে, ষে পৃথিবী আমার চারিদিকে স্থির হইয়! দীড়াইয়! আছে, আমার, আঘাতের দ্বাগ তাহার উপর পড়িয়াছে। তাহার জলম্থল আমার বেদনায় বিক্ষত, আমার দুশ্চিন্তায় চিহ্রিত। আমার উপর যখন অস্ত্র আসিয়া নববর্যা। . ৩৭ পা্িসপসমপস সস সস পিস পড়িয়াছে, তখন ঘামার চারিদিকের পৃথিবী সরিয়া৷ ধঁড়ায় নাই, শর আমাকে ভেদ করিয়া তাহাকে বিদ্ধা করিয়াছে। এমনি করিয়া ংবার আমার স্খছুঃখের ছাপ লাগিয়া পৃথিবীটা আমারই বলিয়া চিন্তিত হইয়া গেছে। মেঘে আমার কোন চিহ্ নাই। সেপথিক আসে যায়, থাকে ন|। ূ আমার জরা তাহাকে স্পর্শ করিবার অবকাশ পায় না। , আমার আশী- 'নৈরাশ্য হইতে সে বহুদুরে | এই জন্ত, কালিদাস উজ্জপ্নিনীর প্রাসাদ-শিখর হইতে যে আধাটের মেঘ দেখিয়াছিলেন, আমরাও সেই মেঘ দেখিয়াছি, ইতিমধ্যে পরিবর্তমান মানুষের ইতিহাস তাহাকে স্পর্শ করে নাই। কিন্তু সে অবস্তী, সে বিদিশা কোথায়? মেঘদূতের মেঘ প্রতিবংসর চিরনূতন চিরপুরাতন হইয়। দেখা দেয়, বিক্রমাদিত্যের বে উজ্জয়িনী মেঘের চেয়ে দৃঢ় ছিল, বিনষ্ট স্বপ্নের মত তাঁহাকে আর ইচ্ছা করিলে গড়িবার জো নাই। মেঘ দেখিলে "স্থথিনোহপ্যন্যথাবৃত্তি চেতঃ” সুখিলোকেরও আনমনা ভাব হয়, এইজগ্তই । মেঘ মনুষালোকের কোন ধার ধারে না বলিয়া, মানুষকে অভ্যন্ত গণ্তীর বাহিরে লইয়৷ যায়। মেঘের সঙ্গে আমাদের প্রতিদিনের চিন্তা, চেষ্টা, কাঁজকর্মের কোন সম্বন্ধ নাই বলিয়া, সে আমাদের মনকে ছুটি দেয়। মন তখন বীধন মানিতে চাহে না, প্রতৃশাপে নির্বাসিত যক্ষের বিরহ তখন উদ্দাম হইয়া উঠে। প্রতুড়ত্যের সম্বন্ধ, সংসারের সম্বন্ধ ; মেঘ সংসারের এই সকল প্রয়োজনীয় সম্বন্ধগুলাকে ভূলাইয়! দেয়, তখনি খবদয় বাঁধ ভাঙিয়া আপনার পথ বাহির করিতে 'চেষ্টা করে। মেঘ আপনার নিত্যনৃতন চিত্রবিন্াসে, অন্ধকারে, গর্জনে, বর্ষণে, চেনা পৃথিবীর উপর একটা প্রকাণ্ড অচেনার আভাস নিক্ষেপ করে,_ একটা বহুদূর কালের এবং বুদুর দেশের নিবিড় ছায়া! ধনাইয়া তোলে,£_ বৌধ হয়। কর্মপাশবনধ প্রিয়তম যে আঁসিতে পারে না, পথিফবধূ তখন এ কথা আর মানিতে চাহে না। সংসারের কঠিন নিয়ম সে জানে, কিন্তু 'জ্ঞানে জানে মাত্র) সে নিয়ম যে এখনো বলবান্‌ আছে, নিবিড় বর্ষায় দিনে এ কথা তাহার হ্বদয়ে প্রতীতি হয় না। সেই কথাই ভাবিতেছিলাম, ভোগের দ্বারা এই বিপুল পৃথিবী-_এই চিরকালের পৃথিবী, আমার কাছে খর্ব হইয়া গেছে । আমি তাহাকে যতটুকু পাইয়াছি, তাহাকে ততটুকু বলিয়াই জানি, আমার ভোগের বাহিরে তাহার অস্তিত্ব আমি গণ্যই করি না। জীবন শক্ত হইয়া! বাধিয় গেছে, সঙ্গে সঙ্গে সে নিজের আবশ্তক পৃথিবীটুকুকে টানিয়া আঁটিয়া লইয়াছে। নিজের মধ্যে এবং নিজের পৃথিবীর মধ্যে এখন আর কোন রহস্ত দেখিতে পাই না বলিয়াই শাস্ত হুইয়৷ আছি; নিজেকে: সম্পূর্ণ জানি মনে করি এবং নিজের পৃথিবীটুকুকেও সম্পূর্ণ জানিয়াছি 'বলিয়! স্থির করিয়াছি। এমন সময় পূর্বদিগন্ত স্নিগ্ধ অন্ধকারে আচ্ছন্ন করিয়া কোথা হইতে সেই শত-শতাবা পূর্বেকার কালিদাসের মেঘ আসিয়া উপস্থিত হয়! সে আমার নহে, আমার পৃথিবীটুকুর নহে; সে আমাকে কোন্‌ অলকা- পুরীতে, কোন্‌ চিরযৌবনের রাজ্যে, চিরবিচ্ছেদের বেদনায়, চিরমিলনের আশ্বাসে, চিরসৌন্বর্্যের কৈলাসপুরীর পথচিহ্বহীন তীর্থাভিমুখে আকর্ষন করিতে থাকে! তখন, পৃথিবীর যেটুকু জানি সেটুকু তুচ্ছ হইয়া যায়, যাহা জানিতে পারি নাই তাহাই বড় হইয়! উঠে, যাহা পাইলাম না তাহাকরেই লব্ধ জিনিষের চেয়ে বেশি সত্য মনে হইতে থাকে । জানিতে পারি, আমার জীবনে, আমার শক্তিতে, অতি অল্পই অধিকার করিতে, পারিয়াছি, যাহা বৃহৎ তাহাকে ন্পর্শও করি নাই। আমার নিত্যকর্মক্ষেত্রকে নিত্যপরিচিত সংসাঁরকে আচ্ছন্ন করিয়া দিয়া স্জলমেধ-মেছুর পরিপুধ নববর্ধা আমাকে অগ্াত ভীবলোকেক ধবর্ধা। তক মধ্যে সমস্ত বিধিবিধানের বাহিরে একেবারে একাকী দীড় করাইয় দেক, __গৃথিবীর এই কষ্ট! বৎসর কাড়িরা লইয়া আমাকে একটি প্রকাণ্ড পরমাষুর বিশালত্বের মাঝখানে স্থাপন করে ) আমাকে রামগ্গিরি আশ্রমের অনশৃন্ঠ শৈলশৃঙ্গের শিলাতলে সঙ্গিহীন ছাড়িয়া দেয়। সেই নির্জন শিখর, এবং আমার কোন এক চিরনিকেতন, অন্তরাত্মার চিরগম্যস্থান অলকাপুরীর মাঝখানে একটি সুবৃহৎ-স্ুন্দর-পৃথিবী পড়িয়া আছে মনে পড়ে )-নদীকলধ্বনিত, সান্ুমৎপর্বতবস্ধুর, জম্মৃকুপ্রচ্ছীগান্ধকীর, নব- বারিসিঞ্িত-যৃখীস্তগন্ধি একটি বিপুল পৃথিবী । হৃদয় সেই পৃথিবীর বনে বনে গ্রামে গ্রামে শৃঙ্গে শৃঙ্গে নদীর কুলে কুলে ফিরিতে ফিরিতে, অপরিচিত সুন্বরের পরিচয় লইতে লইতে, দীর্ঘ বিরহের শেষ মোক্ষ- স্থানে যাইবার জন্ত মানসোৎক হংসের স্তায় উত্স্থুক হইয়া উঠে। খেবদূত ছাড়। নববর্ধার কাব্য কোন সাহিত্যে কোথাও নাই। ইহাতে বর্ষার সমস্ত অন্তর্বেদনা নিত্যকালের ভাষায় লিখিত হইয়া গেছে। প্রকৃতির সাংবসরিক মেঘোৎ্মবের অনিব্ধচনীয় কবিত্গাথা মানবের ভাষায় বাঁধ! পড়িয়াছে। পূর্বমেবে বৃহৎ-পৃথিবী আমাদের কল্পনার কাছে উদবাটিত হইয়াছে । আমরা সম্পন্ন গৃহস্থটি হইয়া আরামে সন্থোষের অদ্ধনিমীলিতলোচনে যে গৃহটুকুর মধ্যে বাদ করিতেছিলাম, কালিদাসের মেঘ “আধাটস্ত প্রথম- দিবসে” হঠাৎ আপিয়৷ আমাদিগকে সেখান হইতে ঘরছাড়। করিয়া দিল। আমাদের গোয়ীলঘর-গোলীবাড়ীর বহুদুরে যে আবর্তচঞ্চল। নর্মরদা ্রকুটি রচনা বাঁরিয়া চলিয়াছে, যে চিত্রকূটের পাদকুঞ্ গ্রফুল্প নব নীপে বিকুশিত, উদয়নকথাকোবিদ গ্রামবুদ্ধদের দ্বারের নিকট যে চৈত্য-বট গুকফাক- লীতে মুখর, তাহাই আমাদের পরিচিত ক্ষুদ্র সংসারকে নিরম্ত করিয়! ধিচিত্র সৌন্দর্যের চিরসত্যে উদ্ভাসিত হইয়া দেখা.দিয়াছে। বিরহীর ব্যগ্রতাতেও কবি পথসংক্ষেপ করেন নাই। আঁধাঢ়ের 8.৬. বিচিত্র গ্রবন্ধ | ০ নীলাভ-মেঘচ্ছায়াবূত নগ-নদী-নগর-জনপদের উপর দিয়া রহিয়! বহিয়া ভাবাবিষ্ট অলসগমনে যাত্রা করিয়াছেন। . যে তাহার যুগ্ধনয়নকে অভ্য- খুন! করিয় ভাকিয়াছে, তিনি তাহাকে আর “না” বলিতে পারেন নাই। পাঠকের চিত্তকে কৰি বিরহের বেগে বাহির করিয়াছেন, আবার পথের সৌনর্য্ে মন্থর করিয়া তুলিয়াছেন। যে চরম স্থানে মন ধাবিত হইতেছে, তাহার সুদীর্ঘ পথটিও মনোহর, সে পথকে উপেক্ষা করা যায় ন]। বর্ষায় অভ্যস্ত পরিচিত সংসার 'হুইতে বিক্ষিপ্ত হইয়৷ মন বাহিরের দিকে যাইতে চায়, পূর্বমেঘে কবি আমাদের সেই আকাঁজ্ষাকে উদ্বেলিত করিয়া তাহারই কলগান জাগাইয়াছেন- আমাদিগকে মেঘের সঙ্গী করিয়া অপরিচিত পৃথিবীর মাঝখান দিয়া লইয়া চলিয়াছেন ! সে পৃথিবী 'অনান্রাতং পুষ্পম্‌*, তাহা আমাদের প্রাত্যহিক ভোগের দ্বারা কিছুমীত্র মিন হয় নাই, সে পৃথিবীতে আমাদের পরিচয়ের প্রাচীরদ্বারা কল্পনা কোনখানে বাধা পায় না। যেমন এ মেঘ, তেমনি সেই পৃথিবী । আমার এই স্ুখদুঃখ-ক্লান্তিঅবসাদের জীবন তাহাকে কোথাও স্পর্শ করে নাই। প্রৌট়বয়সের নিশ্চয়তা বেড়া দিয়া ঘের দিয়া তাহাকে নিজের বাস্তবাগানের অন্তভূক্ত করিয়া লয় নাই। অজ্ঞাত নিথিলের সহিত নবীন পরিচয়, এই হইল পূর্বমেঘ। নব মেঘের আর একটি কাজ আছে । সে আমাদের চারিদিকে একটি পরম- নিভৃত পরিবেষ্টন রচনা করিয়া, “জননান্তরসৌহৃদানি” মনে করাইয়! দেয় _ অপরূপ সৌন্দর্ধ্যলৌকের মধ্যে কোন একটি চিরজ্ঞাত চিরপ্রিয়ের জন্ত মনকে উত্তলা করিয়া তোলে। রি ূর্বমেঘে বহুবিচিত্রের সহিত সৌনর্যযের পরিচয় এবং উত্তরমেথে সেই একের সহিত আননের সম্মিলন । পৃথিবীতে বহর মধ্য দিয়! সেই সুখের যাত্রা, এবং শ্বর্লোকে একের মধ্যে সেই অভিসারের পরিণাম ! নববধা। ৪১ নববর্ধার দিনে এই বিষযকর্শের ক্ষুদ্র সংসারকে কে না বলিবে নির্বা- সন! প্রস্ুর অভিশাপেই এখানে আটকা পড়িয়া আছি। মেঘ আসিয়া বাহিরে যাত্র! করিবার জন্য আহ্বান করে, তাহাই পূর্বমেঘের গান এবং যাত্রার অবসানে চিরমিলনের জন্ট আশ্বাস দেয়, তাহাই উত্তরমেঘের সংবাদ । সকল কবির কাব্যেই গুঢ় অভ্যন্তরে এই পূর্বমেঘ ও উত্তরমেঘ আছে। সকল বড় কাব্যই আমাদিগকে বুহতের মধ্যে আহ্বান করিয়া আনে ও নিভৃতের দিকে নির্দেশ করে। প্রথমে বন্ধন ছেদন করিয়! বাহির করে, পরে একটি ভূমার সহিত বাঁধিয়া দেয়। প্রভাতে পথে লইয়৷ আসে, সন্ধ্যায় ঘরে লইয়া যায় । একবার তানের মধ্যে আকাশ- পাতীল ঘুরাইয়৷ মমের মধে। পূর্ণ আনন্দে দীড় করাইয়া দেয়। যেকবির তান আছে, কিন্তু কোথাও সম নাই, যাহার মধ্যে, কেবল উদ্যম আছে, আঙাস নাই, তাহার কবিত্ব উচ্চকাব্যশ্রেণীতে স্থায়ী হইতে পারে না। শেষের দিকে একটা কোথাও পৌছাইয়৷ দিতে হইবে, এই ভরপাতেই আমরা আমাদের চিরাভ্যস্ত সংসারের বাহির হইয়া কবির সহিত যাত্র। করি,__পুশ্পিত পথের মধ্য পিয়া আনিরা। হঠাৎ. একটা শূন্ত- গহ্বরের ধারের কাছে ছাড়িয়া দিলে বিশ্বাঘাতকতা করা হয়। এইজন্ত কোন কবির কাব্য পড়িবার সময় আমর! এই দুটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি, তাহার পূর্বমেঘ আমাদিগকে কোথায় বাহির করে এবং উত্তরমেঘ কোন্‌ মিংহ্ঘারের সন্ুথে আনিয় উপনীত করে। ১৩৪০৮ । পরনিন্দা । পরনিন্দা পৃথিবীতে এত "প্রাচীন এবং এত ব্যাপক যে, সহসা ইহার বিরুদ্ধে একটা যে-সে মত প্রকাশ করা ধুষ্টতা হইয়া পড়ে । নোনা জল পানের পক্ষে উপযোগী নহে, একথা শিশ্তুও জানে-_ কিন্তু যখন দেখি, সাত সমুদ্রের জল নুনে পরিপূর্ণ; যখন দেখি, এই নৌন৷ জল সমস্ত পৃথিবীকে বেড়িয়া আছে, তখন এ কথী বলিতে কোন- মতেই সাহস হয় না যে, সমুদ্রের জলে নুন না থাকিলেই ভাল হইত। নিশ্চয়ই ভাল হইত নাহয় ত লবণজলের অভাবে সমস্ত পৃথিবী পচিয়া উঠিত। | তেমনি, পরনিন্দা সমাজের কণায় কণায় যদি মিশিয়! না থাঁকিত, তবে নিশ্চয়ই একটা বড়রকমের অনর্থ ঘটিত। উহা লবণের মত সমস্ত ংসারকে বিকার হইতে রক্ষা করিতেছে। পাঠক বলিবেন, “বুঝিয়াছি। তুমি যাহা বলিতে চাও, তাহা অত্যন্ত পুরাতন । অর্থাৎ নিন্দার ভয়ে সমাজ প্রকৃতিস্থ হইয়। আছে।” এ কথা যদি পুরাতন হয়, তবে আনন্দের বিষয়। আমি ত বলিয়াঁছি, যাহা পুরাতন, তাহ! বিশ্বাসের যোগ্য । বস্তত নিন্দা ন! থাকিলে পৃথিবীতে জীবনের গৌরব কি থাঁকিত? একটা ভাল কাঁজে হাত দিলাম, তাহার নিন্দা কেহ করে না-_সে ভাল কাজের দাম কি! একটা ভাল কিছু লিখিলাম, তাহার নিন্দুক কেহ নাই, ভাল £ন্থের পক্ষে এমন মন্খাস্তিক অনাদ্র কি হইতে পারে! জীবনকে ধর্চ্চায় উৎসর্গ করিলাম, যদি কোন লোক তাহার মধ্যে গুঢ় মন্দ অভিপ্রায় ন! দেখিল, তবে সাধুতা যে নিতান্তই সহজ হইয়! পড়িল! মহত্বকে পদে পদে নিন্দার কীটা মাড়াইয়৷ চলিতে হয়। ইহাতে যে হার মানে, বীরের সাগতি সে লাভ করে না। পৃথিবীতে নিন্দা দোষীকে সংশোধন করিবার জন্ত আছে তাহা নহে, মহতকে গৌরব দেওয়া তাঁহার, নিন্া-বিরোধ গায়ে বাজে না, এমন কথা অল্প লোকই বলিতে পারে। ফোন সহ্ৃদয় লোক ত বলিতে পারে না। যাহার হৃদয় বেশি, তাহার ব্যথা পাইবার শক্তিও বেশি। যাহার হৃদয় আছে, সংসারে সেই লোকই কাজের মত কাজে হাত দেয়। আবার লোকের মত কাঁজ দেখিলেই নিন্দার ধার চারগুণ শাণিত হইয়। উঠে। ইহাতেই দেখা যায়, বিধাতা যেখানে অধিকাঁর বেশি দিয়াছেন, সেইখানেই ছুঃখ এবং পরীক্ষা অত্যন্ত কঠিন করিয়াছেন । বিধাতার সেই বিধানই জয়ী হউক! নিন্দা, ছুঃখ, বিরোধ যেন ভাল লোকের, গুণী লোকের ভাগ্যেই বেশি করিয়া জোটে। যে ষথার্থরূপে ব্যথা ভোগ করিতে জানে, সেই যেন ব্যথা পায় ! অযোগ্য ্ুদ্র ব্যক্তির উপরে যেন নিন্দাবেদনার অনাবশ্তক অপব্যয় না হয়! সরলহৃদয় পাঠক পুনশ্চ বলিবেন-_“জানি, নিন্দায় উপকার আছে। যেলোৌক দোষ করে, তাহার দোষকে ঘোষণা করা ভাল; কিন্তু যে করে না, তাহার নিন্দায় সংসারে ভাল হইতেই পারে না। মিথ্যা- জিনিষটা কোন অবস্থাতেই ভাল নয় |” | এ হইলে ত নিন্দা টিকে না। প্রমাণ লইয়া দোষীকে দোষী সাব্যস্ত করা, সে ত হইল বিচার । সে গুরুভার কয়জন লইতে পারে, এবং এত সূময়ই ব| কাহার হাতে আছে 1? তাহা ছাড়া পরের সম্বন্ধে এত অতিরিক্ত মাত্রায় কাহারো গরজ নাই। যদি থাকিত, তবে পরের পক্ষে তাহ! একে- বারেই অসহ্‌ হইত। নিন্দুককে সহ্‌ করা যায়, কারণ, তাহারএনিন্দু- কতাকে নিন্দা করিবার স্থখ আমারো হাতে আছে, কিন্তু বিচারককে সহ করিবেকে? | _ বস্তৃত আমর! অতি সামান্ত প্রমাণেই নিন্দা করিয়া থাকি, নিন্দার সেই লাঘবতাটুকু না থাকিলে সমাজের হাড় গুঁড়া হইয়া যাইত। নিন্দীয় 8৪. বিচিত্র-প্রবন্ধ। রায় চূড়াত্ত রায় নহে-__নিন্দিত ব্যক্তি ইচ্ছা! করিলে তাহার প্রতিবাদ ন! করিতেও পারে। এমন কি, নিন্দীবাক্য হাসিয়া উড়াইয়। দেওয়াই স্ুবুদ্ধি বলিয়া গণ্য । কিন্তু নিন্দা যদি বিচারকের রায় হইত, তবে স্ববুদ্ধিকে উকীল'মোক্তারের শরণ লইতে হইত। বাহার! জানেন, তাহার! স্বীকার করিবেন, উকীল-মোক্তারের সহিত কারবার হাসির কথা নহে। অতএব দেখা যাইতেছে, সংসারের প্রয়োজন হিসাবে নিন্দীর যতটুকু গুরুত্ব আব- শ্তক তাহাও আছে, যতটুকু লঘুত্ব থাকা উচিত তাহারো' অভাব নাই। পূর্বে যে পাঠকটি আমার কথায় অসহিষ্ণু হইয়া উঠিয়াছিলেন, তিনি নিশ্চয়ই বলিবেন-_তুচ্ছ অন্থুমানের উপরেই হুউক বা নিশ্চিত প্রমাণের উপরেই হউকৃ, নিন্দা যদি করিতেই হয় তবে ব্যথার সহিত করা! উচিত-_ নিন্দায় স্থখ পাওয়া উচিত নহে ।” এমন কথা যিনি বলিবেন, তিনি নিশ্চয়ই সহৃদয় ব্ক্তি। সুতরাং তাহার বিবেচনা করিয়া দেখা উচিত-_নিন্দায় নিন্দিত ব্যক্তি বাথা পায়, আবার নিন্দুকও যদি বেদনা বোধ করে, তবে সংসারে দুঃখবেদনার পরিমাণ কিরূপ অপরিমিতরূপে বাঁড়িয়। উঠে! তাহা হইলে নিমন্ত্রণসভা! নিস্তব্ধ, বন্ধুদভা বিষাদে শ্রিয়মাণ, সমালোচকের চক্ষু অশ্রপ্নাত এবং তাহার পাঠকগণের হৃদ্গহ্বর হইতে উষ্ণ দীর্ঘশ্বাস ঘনঘন উচ্ছ(সিত। আশা করি, শনিগ্রহের অধিবাসীদেরও 'এমন দশা নয় ! ' তা ছাঁড়া স্থখও পাইব না অথচ নিন্দাও করিব, এমন ভয়ঙ্কর নিন্দুক 'মন্ুযাজাতিও নহে। মানুষকে বিধাতা এতই সৌখীন করিয়া স্ষটি করিয়াছেন যে, যখন সে নিজের পেট ভরাইয়া প্রাণরক্ষা করিতে যাঁই- তেছে, তখনও ক্ষুধানিবৃত্তি ও রুচিপরিতৃপ্থির যে সুখ, সেটুকুও তাহার চাঁই-_সেই মানুষ টামভাড়া করিয়া বন্ধুর বাড়ী গিয়া পরের নিন্দা করিয়া আসিবে অথচ তাহাতে "সুখ পাইবে না, যে ধশ্নীতি এমন অসম্ভব প্রত্যাশা! করে তাহ! পুজনীয়, কিন্তু পালনীয় নছে। পরনিন্দা ৪৫ : আবিষ্কারমাত্রেরই মধ্যে স্থথের অংশ আছে। শিকার কিছুমাত্র নখের হইত না, যদি মুগ যেখানে-সেখানে থাকিত এবং ব্যাধকে দেখিয়া গলাইয়া না যাইত। মুগের উপরে আমাদের আক্রোশ আছে বলিয়াই ষে তাহাকে মারি তাহা নহে, সে বেচারা গহন বনে থাকে এবং সে. পলায়নপটু বলিয়া! তাহাকে কাজেই মারিতে হয়। ৃ মানুষের চরিত্র, বিশেষত তাহার দোষগুলি, ঝোপঝাপের মধ্যেই থাকে এবং পায়ের শব্ধ গুনিলেই দৌড় মারিতে চায়, এইজন্যই নিন্দার এত স্থখ। আমি নাড়ী-নক্ষত্র জানি, আমার কাছে কিছুই গোপন নাই, নিন্দুকের মুখে এ কথা গুনিলেই বোঝা যায়, সে ব্যক্তি জাঁত-- শিকারী। তুমি তোমার যে অংশটা! দেখাইতে চাও না, আমি সেই- টাকেই তাড়াইয়া ধরিয়াছি। জলের মাছকে আমি ছিপ ফেলিয়া! ধরি ১ আকাশের পাথীকে বাণ মারিয়! পাড়ি, বনের পণ্ডকে জাল পাতিয়া বাঁধি _ইহা কত স্থখের! যাহা লুকায় তাহাকে বাহির করা, যাহা পালায় তাহাকে বাধা, ইহার জন্তে মানুষ কি না করে! দুর্লভতার প্রতি মানুষের একটা মোহ আছে। সে মনে করে, যাহা স্থলভ তাহ! খাটি নহে, যাহা! উপরে আছে তাহা আবরণমাত্র, যাহ! লুক'- ইয়া আছে তাহাই আসল। এইজন্ভই গোপনের পরিচয় পাইলে সে আর-কিছু বিচারনা করিয়া প্রকৃতের পরিচয় পাইলাম বলিয়! হঠাৎ খুসি হইয়। উঠে। এ কথ! সে মনে করে না যে উপরের সত্যের চেয়ে নীচের সত্য যে বেশি সত্য তাহা নহে)-এ কথা তাহাকে বোঝানো শক্ত যে, সত্য যদি বাহিরে থাকে তবুও তাহা সত্য, এবং ভিতরে যেটা আছে সেট! যদি সত্য না হয়, তবে তাহা অসত্য। এই মোহবশতই কাব্যের সরল সৌনধ্য অপেক্ষা তাহার গভীর তত্বকে পাঠক অধিক, সত্য বলিয়। মনে করিতে ভালবাসে এবং বিজ্ঞ লোকেরা নিশাচর পাপকে আলোকচর সাধুতার অপেক্ষা! বেশি বাস্তব বলিয়া তাহার গুরুত্ব অন্গভক ৬ বিচির প্রবন্ধ । করে। এইন্বন্ঠ মানুষের নিন্দ! গুনিলেই মনে হুয় তাহার প্রত রিচ পগা গেল। পৃথিবীতে অতি অন্ন লোকের সঙ্গেই আমাকে ঘরকল্ধা ক্রিতে হয়, অথচ এতশত লোকের প্রকৃত পরিচয় লইয়া আমার লাভটা কি? কিন্তু প্রকৃত পরিচয়ের জন্ত ব্যগ্রতা মানুষের স্বভাবসিদ্ধ ধর্-- সেটা মনুষ্যত্বের প্রধান অঙ্গ_--অতএব তাহার সঙ্গে বিবাদ করা চলে নাঃ _ কেবল যখন ছুঃখ করিবার দীর্ঘ অবকাশ পাওয়া যায়, তখন এই ভাবি যে, যাহা সুন্দর, যাহা সম্পূর্ণ, যাহা ফুলের মত বাহিরে বিকশিত হইয়া দেখা দেয়, তাহা বাহিরে আসে বলিয়াই বুক্ধিমান্‌ মানুষ ঠকিবার ভয়ে তাহাকে বিশ্বাস করিয়া তাহাতে সম্পূর্ণ আনন্দ ভোগ করিতে সাহস করে ন। ঠকাই কি সংসারের চরম ঠক! না! ঠকাই কি চর্ম লাভ! কিন্তু এ সকল বিষয়ের ভার আমার উপরে নাই,__মনুষ্যচরিত্র আঙ্মি জন্মিবার বন্ুপূর্কেই তৈরি হইয়া গেছে। কেবল এই কথাটা আমি বুঝিবার ও বুঝাইবার চেষ্টায় ছিলাম যে, সাধারণত মানুষ নিন করিয়া যে সুখ পায়, তাহা বিদ্বেষের স্থথ নহে । বিদ্বেষ কখনই সাধারণভাবে স্থথকর হইতে পারে না এবং বিদ্বেষ সমস্ত সমাজের স্তরে স্তরে পরিব্যাপ্ত হইলে ষনে বিষ হজম করা সমাজের অসাধ্য । আমরা বিস্তর ভাললোক, নিরীহলোককেও নিন্দা করিতে শুনিয়াছি, তাহার কারণ এমন নহে যে, সংসারে ভাললোক, নিরীহলোক নাই 7 তাহার কারণ এই যে, সাধারপত্ত নিন্দার মূল প্রত্রবণটা মন্দভাব নয় | কিন্তু বিদ্বেষমূলক নিন্দা সংসারে একেবারে নাই, এ কথা৷ লিখিতে গেলে সত্যঘুগের জন্ত অপেক্ষা করিতে হয়। তবে সে নিন্দা সম্বযে অধিকণকথা বলিবার নাই। কেবল প্রীর্থন! এই যে, এন্সপ নিন্দা যাহার স্বভীবসিদ্ধ, সেই ছুর্ভাগাকে যেন দয়া করিতে পারি! ১৩০৯। বদন্তযাপন। এই মাঠের পারে শালবনের নৃতন কচিপাতার মধ্য দিয়া বমস্তের হাওয়া দিয়াছে। অভিব্যক্তির ইতিহাসে মানুষের একট! অংশ ত গাছপালার সঙ্গে জড়ানো আছে। কোন এক সময়ে. আমরা যে শীখামূগ ছিলাম, আমাদের প্রকৃতিতে তাহার যথে্ট পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু তাহারও অনেক আগে কোনো! এক আদিযুগে আমর! নিশ্চয়ই শীখী ছিলাম, তাহা কি ভুলিতে পারিয়াছি? সেই আদিকালের জনহীন মধ্যান্ আমাদের ডালপালার মধ্যে বদস্তের বাতাস কাহাকেও কোন খবর না দিয়া যখন হঠাৎ হু করিয়া আদিয়। পড়িত, তখন কি আমর! প্রবন্ধ লিখিয়াছি, না, দেশের উপকার করিতে বাহির হইয়াছি? তখন আমরা সমস্ত দিন খাড়া দীড়াইয়! মুকের 7ত মূঢ়ের মত কীপিয়াছি-_আমাদের সর্বাঙ্গ ঝর্বর্‌ মর্মর্‌ করিয়। পাগলের মত গান গাহিয়াছে- আমাদের শিকড় হইতে আরম্ভ করিয়া প্রশাখাগুলির কচি-ডগ! পর্য্স্ত রসপ্রবাহে ভিতরে ভিতরে চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছে। নেই আদিকালের ফাল্গন-চৈত্র এম্নিতর বসে ভরা৷ আলম্যে এবং অর্থহীন প্রলাপেই কাটিয়৷ যাইত। দেজন্ত কাহারো কাছে কোন জবাবদিহি ছিল না। যদি বল, অন্ুতাপের দিন তাহার পরে আমিত--বৈশাখ-জোষ্ঠের খরা চুপ করিয়! মাথা পাঁতিয়৷ লইতে হইত-_মে কথা মানি। যেদিনকার যাহা, দেদিনকাঁর তাহা এম্‌নি করিয়াই গ্রহণ করিতে হয়। রসের দিনে ভোগ, দাহের দিনে ধৈর্য্য যি সহজে আশ্রয় করা যায়, তবে সান্বনার বর্ধাধার৷ যখন দশদিক পুর্ণ করিয়া ঝরিতে আরম্ভ করে, তখন তাহা! ষজ্জায় মজ্জায় পুরাপুরি টানিয়৷ লইবার সামর্থ্য থাকে। | কিন্ধু এ সব কথ! বলিবার অভিপ্রায় আমার ছিল না। লোকে ৪৮ বিচিত্র প্রবন্ধ। টিপিপি আপামর সপাাস্াসপিসপিসিপাপিস্পিসিসির উপাসপিিপাসপািতসপাসপসপাসপ সিসি সন্দেহ করিতে পারে, রূপক আশ্রয় করিয়া! আমি উপদেশ দিতে বসিয়াছি। সন্দেহ একেবারেই অদুলক বলা যায় না। অভ্যাস খারাপ হুইয়া গেছে। আমি এই বলিতেছিলাম যে, অভিব্যক্তির শেষ কোঠায় আসিয়া, পড়াতে মানুষের মধ্যে অনেক ভাগ ঘটিয়াছে। জড়ভাগ, উদ্ভিদ্ভাগ, পশুভাগ, বর্ধরভাগ, সভ্যভাগ, দেবভাগ ইত্যাদি। এই ভিন্ন ভিন্ন ভাগের একএকটা৷ বিশেষ জন্মথতু আছে। কোন্‌ খতুতে কোন্‌ ভাগ, পড়ে, তাহা নির্ণয় করিবার ভার আমি লইব না। একটা দিদ্ধাস্তকে শেষ পর্যন্ত মিলাইয়া দিব পণ করিলে বিস্তর মিথ্যা বলিতে হয়। বলিতে, রাজি আছি; কিন্তু এত পরিশ্রম আজ পারিব না । আজ, পড়িয়া-পড়িয়া, সমুখে চাহিয়া-চাহিয়৷ যেটুকু সহজে মনে আমিতেছে, সেইটুকুই লিখিতে বসিয়.ছি। দীর্ঘ শীতের পর আজ মধ্যাহ্ে প্রান্তরের মধ্যে নববসত্ত নিশ্বসিত হইয়া উঠিতেই নিজের মধ্যে মন্থুযুজীবনের ভারি একট অসামগ্রস্ত অন্থুভব করিতেছি। বিপুলের সহিত, সমগ্রের সহিত তাহার স্থুর মিলিতেছে না। শীতকালে আমার উপরে পৃথিবীর যে সমস্ত তাগিদ ছিল, আজও ঠিক সেই সব তাগিদূই চলিতেছে। খতু বিচিত্র, কিন্ত কাজ সেই একই । মনটাকে খতুপরিবর্তনের উপরে জয়ী করিয়া তাহাকে ভসাড় করিয়া যেন মস্ত একটা! কি বাহাছুরী আছে! মন মস্ত লোৌক-_ সেকিনাপারে! সে দক্ষিণে হাওয়াকেও সম্পূর্ণ অগ্রাহ্থ করিয়া হন্হন্‌ করিয়! বড়বাজারে ছুটিয়া চলিয়া যাইতে পারে! পারে স্বীকার করিলাম, কিন্তু তাই বলিয়াই কি সেটা তাহাকে করিতেই হইবে! তাহাতে, দক্ষিণে বাতাস বানায় গিয়৷ মরিয়া থাকিবে না, কিন্তু ক্ষতি! কাহার হইবে? | টি এই ত অক্পদিন হইল, আমাদের আমলকী-মউল ও শালের ডাল, বসস্তযাপন। | ৪৯ হইতে খস্থস্‌ করিয়া কেবলি পাতা থসিয়া পড়িতেছিল-_ফান্তুন দৃরাগত পথিকের মত যেম্নি ঘারের কাছে আসিয়া একটা হাঁফ ছাড়িয়া বসিয়াছে মাত্র, অম্নি আমাদের বনশ্রেণী পাতাখসানর কাজ বন্ধ করিয়া দিয়া একেবারে রাতারাঁতিই কিসলয় গজাইতে স্বরু করির! দিয়াছে । আমর! মান্য, আমাদের সেটি হইবার জো নাই। বাহিরে চারি- দিকেই যখন হাওয়া বদল, পাত! বদল, রং বদল, আমরা তখনও গরুর গাড়ির বাহনটার মত পশ্চাতে পুরাতনের ভারাক্রান্ত জের সমানভাবে টানিয়া লইয়া! একটানা রাস্তায় ধূল! উড়াইয়! চলিয়াছি। বাহক তখনো! যে লড়ি লইয়া পাঁজরে ঠেলিতেছিল, এখনো! সেই লড়ি ! হাতের কাছে পণ্রিকা নাই__অন্ুমানে বোধ হইতেছে, আজ ফান্তুনের প্রায় ১৫ই কি ১৬ই হইবে-_বসম্তলক্মী আজ ষোড়শী কিশোরী। কিন্ত তবু আজও হণ্তীয় হপ্তায় খবরের কাগজ বাহির হইতেছে--পড়িয়া দেখি, আমাদের কর্তৃপক্ষ আমাদের হিতের জন্য আইন তৈরি করিতে সমানই ব্যস্ত এবং অপর পক্ষ তাহারই তন্নতনন বিচারে প্রবৃত্ত । বিশ্ব- জগতে এইগুলাই যে সর্কোচ্চ ব্যাপার নয়__বড়লাট-ছোটলাট, সম্পাদক ও সহকারী সম্পাদকের উৎকট ব্যন্ততাকে কিছুমাত্র গণ্য না করিয়! দক্ষিণসমুদ্রের তরঙ্গোসবসভ। হইতে প্রতিবত্সরের সেই চিরন্তন বার্তাবহ নবজীবনের আনন্দসমাচার লইয়া ধরাতলে অক্ষয় প্রাণের আশ্বাস নূতন করিয়া প্রচার করিতে বাহির হয়, এটা মানুষের পক্ষে কম কথা নয়, কিন্তু এ সব কথ! ভাবিবার জন্য আমাদের ছুটি নাই। সেকালে আমাদের !মেঘ ডাঁকিলে অনধ্যায় ছিল,_বর্যার সময় প্রবাসীর! বাড়ী ফিরিয়া আসিতেন। বাদ্‌লার .দিনে যে পড়া যায়” না, ব| বর্ধার সময় বিদেশে কাজ করা! অসম্ভব, এ কথা বলিতে পারি না-মান্ুষ স্বাধীন ব্বতত্ত্, মানুষ জড়গ্রক্কতির আচলধরা নয়। কিন্তু জোর আছে বলিয়াই বিপুল প্রকৃতির সঙ্গে ক্রমাগত বিদ্রোহ করিয়াই ।চলিতে হইবে, ৫৪ বিচিত্র প্রবন্ধ | ৯ ৯াসপাসপাস্পা্পদপাসাসিপািতা্পাসিবািপাসিলাসিপাসি পাাসিপাসসিপাসিপাছিল এ্রমন কি কথা আছে! বিশ্বের সহিত মানুষ নিজের কুটুস্িতা ক্বীকার করিলে, আকাশে নবনীলাঞ্জন মেঘোঁদয়ের খাতিরে পড়া বন্ধ ও কাজবন্ধ করিলে, দক্ষিণে হাওয়ার প্রতি একটুখানি শ্রদ্ধা রক্ষা করিয়া আইনের সমালোচন! বন্ধ রাখিলে মানুষ জগৎচরাচরের মধ্যে একট। বেস্থুরের মত বাজিতে থাকে না। পাঁজিতে তিথিবিশেষে বেগুন, শিম, কুম্মা্ড নিষিদ্ধ আছে-_আরো৷ কতকগুলি নিষেধ থাক! দরকার,_ কোন্‌ খতুতে থবরের কাগজ পড়া অবৈধ, কোন্‌ খতুতে আপিস্‌ কামাই না করা মহাপাতক, অরসিকের নিজবুদ্ধির উপর তাহা! নির্ণয় করিবার ভার না দিয় শান্ত্রকারদের তাহা একেবারে বাধিয়া দেওয়। উচিত। বসন্তের দিনে যে বিরহিণীর প্রাণ হাহা করে, এ কথা আমরা প্রাচীন কাব্যেই পড়িয়াছি--এখন এ কথা লিখিতে আমাদের সক্কোচ বোধ হয়, পাছে লৌকে হাসে। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের মনের সম্পর্ক আমর! এম্নি করির়াই ছেদন করিয়াছি । বসন্তে সমস্ত বনে-উপবনে ফুল ফুটিবার সময় উপস্থিত হয়__-তখন তাহাদের প্রাণের অজত্রতা, বিকাশের উৎসব। তখন আত্মদানের উচ্ছীসে তরুলত৷ পাগল হইয়৷ উঠে_তখন তাহাদের হিসাবের বৌধমাত্র থাকে না; যেখানে দুটা ফল ধরিবে, সেখানে পঁচিশটা মুকুল ধরাইয়া বসে। মানুষই কি কেবল এই অজশ্তার শ্রোত রোধ করিবে? মে আপনাকে ফুটাইবে না, ফলাইবে না, দান করিতে চাহিবে না, কেবলি কি ঘর নিকাইবে, বাঁসন মাজিবে-ও যাহাদের সে বালাই নাই, তাহার! বেল! চারটে পর্যন্ত পশমের গলীবন্ধ ঝুবিবে? আমরা কি এতই একান্ত মানুষ ? আমরা কি বসন্তের নিগুঢ় রসসধার-বিকশিত তরুলতাপুষ্পপল্পবের কেহই নই? তাহারা যে আমাদের ঘরের আডিনাকে ছায়ায় ঢাকিয়া, গন্ধে ভরিয়া, বাহু দিয়া ঘেরিয়া ্রাড়াইয়া আছে; তাহারা কি আমাদের এতই পর যে, তাহার! যখন ফুলে ফুটিয়। উঠিবে, আমর! তখন চাঁপকান পরিয়। আপিসে যাইব--. বসভযাপন। ৫১ কোন অনিকর্চিনীয় বেদনায় আমাদের হৃৎপিও তরুপললবের মত কীপিয়া উঠিবে না? আমি ত আজ গাছপালার সঙ্গে বহু গ্রাচীনকালের আত্মীয়তা স্বীকার করিব। ব্যস্ত হুইয়! কাঁজ করিয়! বেড়ানই যে জীবনের অদ্বিতীয় সার্থকতা, এ কথা আজ আমি কিছুতেই মানিৰ না। . আজ আমাদের সেই যুগান্তরের বড়দিদি বনলক্মীর ঘরে ভাইফৌটার নিমন্ত্রণ ।.. সেখানে আজ তরুলতার সঙ্গে নিতান্ত ঘরের লোকের মত মিশিতে হইবে__আজ ছায়ায় পড়িয়া! সমস্তদ্িন কাটিবে__মাটিকে আজ দুই হাত ছড়াইয়৷ আকৃড়াইয়! ধরিতে হইবে-বসস্তের হাঁওয়া যখন বহিবে, তখন তাহার আনন্দকে যেন আমার বুকের পাঁজরগুলার মধ্য দিয়া অনায়াসে হুহু করিয়া বহিয়া যাইতে দিই-_সেখাঁনে সে যেন এমনতর কোন ধ্বনি না জাগাইয়া তোলে, গাছপালারা. যে ভাষা না বোঝে। এমনি করিয়। চৈত্রের শেষপর্য্যস্ত মাটি, বাতাস ও আকাশের মধ্যে জীবনটাকে কীচা করিয়! সবুজ করিয়! ছড়াইরা দিব-__আলোতে-ছায়াতে চুপ করিঘা পড়িয়া থাকিব। কিন্তু, হায়, কোন কাজই বন্ধ হয় নাই_হিসাবের খাতা সমানই খোঁল। রহিয়াছে । নিয়মের কলের মধ্যে কর্মের ফাদের মধ্যে পড়িয়া গেছি--এখন বসন্ত আসিলেই কি, আর গেলেই কি ! মনুয্যসমাজের কাছে আমার সবিনয় নিবেদন এই যে, এ অবস্থাটা ঠিক নহে। ইহার সংশোধন দরকার। "বিশ্বের সহিত স্বতন্ত্র বলিয়াই যে মানুষের গৌরব, তাহা নহে। মানুষের মধ্যে বিশ্বের সকল বৈচিত্র্যই আছে বলিয়া মানুষ বড়। মানুষ জড়ের সহিত জড়, তরুলতার সঙ্গে” তর- লতা, মৃগপক্ষীর সঙ্গে মৃগপক্ষী | প্রবৃতি-রাজবাড়ীর নান! মহলের নান! দ্রজাই তাহার কাছে খোল1'। কিন্তু খোল! থাকিলে কি হইবে? এক এক খতৃতে এক এক মহল হইতে যখন উৎসবের নিমন্ত্রণ আসে, তখন ৫২ বিচিত্র প্রবন্ধ । মানুষ যদি গ্রাহ্য না করিয়৷ আপন আড়তের গদিতে পড়িয়া থাকে, তবে এমন বৃহৎ অধিকার সে কেন পাইল? পুরা মানুষ হইতে হইলে তাহাকে সবই হইতে হইবে, এ কথা না মনে করিয়া মানুষ মনুষ্যত্বকে বিশ্ব- বিদ্রোহের একটা সঙ্কীর্ণধবজান্বরূপ খাঁড়া করিয়! তুলিয়! রাখিয়াছে কেন ? কেন সে দত্ত করিয়া বারবার এ কথা বলিতেছে, আমি জড় নহি, উত্ভিদ্‌ নহি, পশু নহি, আমি মানুষ _-আমি কেবল কাজ করি ও সমালোচনা। করি, শাসন করি ও বিদ্রোহ করি! কেন সে এ কথা বলে না, আমি সমস্তই, সকলের সঙ্গেই আমার অবারিত যোগ আছে-_স্বাতন্তযের ধ্বজা আমার নহে! হায়রে সমাজপাড়ের পাঁখি ! আকাশের নীল আজ বিরহিণীর চোখ, ছুটির মত স্বপ্লাবিষ্ট, পাতার সবুজ আজ তরুণীর কপোলের মত নবীন, বসস্তের বাতাস আজ মিলনের আগ্রহের মত চঞ্চল__তবু তোর পাখা-ছুটাঁ আজ বন্ধ, তবু তৌর পায়ে আজ কর্মের শিকল ঝন্বন্‌ করিয়। বাজিতেছে; এই কি মানবজন্ম ! ১৩০৯। অসম্ভব কথা । এক যে ছিল রাজা। তন ইহার বেশী কিছু জানিবার আবশ্তক ছিল না। কোথাকার রাজা, রাজার নাম কি, এ সকল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়। গল্পের প্রবাহ রোধ করিতাম না। রাজার নাম শিলাদিত্য কি শালিবাহন, কাশী কাঞ্চি কনোজ কোশল অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গের মধ্যে ঠিক কোন্থানটিতে তাহার পতি ৫৩ পাপা রাজত্ব, এ সকল ইতিহাস ভূ তৃগোলের তর্ক আমাদের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ ছিল;- আসল যে কিং শুনিলে অন্তর পুলকিত হইয়৷ উঠিত এবং সমস্ত হৃদয় এক মুহুর্তের মধ্যে বিহ্যদ্বেগে চুম্বকের মত আকৃষ্ট হইত, সেটি হইতেছে--এক যে ছিল রাজা। এখনকার পাঠক যেন একেবারে কোমর বাঁধিয়া বসে। গোঁড়াতেই ধরিয়! লয় লেখক মিথ্যা কথা বলিতেছে। সেইজন্য অত্যন্ত সেয়ানার মত সুখ করিয়া জিজ্ঞাসা করে__-“লেখক মহাশয়, তুমি যে বলিতেছ এক যে ছিল রাজা, আচ্ছা! বল দেখি, কে ছিল সেই রাজা !” | লেখকেরাঁও সেয়াঁনা হইয়া উঠিয়াছে; তাহার! প্রকাণ্ড প্রত্বতত্ব- পঙ্িতের মত মুখমণ্ডল চতুণুণ মণ্ডলাকাঁর করিয়া বলে, “এক যে ছিল রাজা, তাহার নাম ছিল অজাতশক্র 1” পাঠক চোক টিপিয়া জিজ্ঞাসা করে, “অজাতশক্র? ভাল, কোন্‌ 'অজাতিশক্র বল দেখি 1” লেখক অবিচলিত মুখভাব ধারণ করিয়া বলিয়া যার, “অজাতশক্র ছিল তিনজন একজন খুষ্টজন্মের তিন সহঅ বৎসর পূর্বে জন্মগ্রহণ করিয়া ছুই বংসর আটমাস বয়ঃক্রম কালে মৃত্যুমুখে পতিত হন। ছুঃখের বিষয়, তাহার জীবনের বিস্তারিত বিবরণ কোন গ্রন্থেই পাওয়া যায় না।৮ অবশেষে দ্বিতীয়.অজাতশক্র সম্বন্ধে দশজন এঁতিহাঁসিকের দশ বিভিন্ন মত সমালোচিনা শেষ করিয়া! যখন গ্রন্থের নাঁয়ক তৃতীয় অজাতশক্র পধ্যস্ত আসিয়া পৌছায়, তখন পাঠক বলিয়। উঠে, “ওরে বাস্রে, কি পাণ্ডিত্য! এক গল্প শুনিতে আসিয়া কত শিক্ষাই হইল! এ লোকটাকে, আর অবিশ্বীস কর! যাইতে পারে না! আচ্ছা লেখক মহাঁশয়, তার পরে কি হুইল !» হায়রে হায়, মান্গষ ঠকিতেই চীয়, ঠকিতেই ভালবাসে, অথচ পাছে +কেহ নির্কোধ মনে করে এ ভয়টুকুও যোৌলআনা আছে) এইজন্ প্রীণপথে ৫8 বিচিত্র প্রবন্ধ । টিয়ার রাত সেয়ান! হইবার চেষ্টা করে। তাঁহার ফল এই ছে লই লেকালটা ঠকে কিন্তু বিস্তর আড়ম্বর করিয়া ঠকে। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ইনি না, তাহা হইলে মিথা। জবাব গনিতে হইবে না ।” বালক সেইটি বোবে, দে কোন প্রশ্ন করে না। এইজন্য রূপকথার স্ননর মিথ্যাটুকু শির মত উলঙ্গ, সত্যের মত সরল, সগ্ভ উৎসারিত উৎসের মত স্বচ্ছ--আর এখনকার দিনের চতুর মুখন্পরা মিথ্যা। কোথাও যদি তিলমাত্র ছিদ্র থাকে অম্নি ভিতর হইতে সমস্ত ফীকি ধরা গড়ে, পাঠক বিমুখ হয়, লেখক পালাইবার পথ পায় না। শিশুকাঁলে আমরা যথার্থ রসজ্জ ছিলাম, এইজন্য যখন গণ্প শুনিতে বসিয়াছি তখন জ্ঞানলাভ করিবার জন্য আমাদের তিলমাত্র আগ্রহ উপস্থিত হইত না, এবং অশিক্ষিত সরল হৃদয়টি ঠিক বুঝিত আসল কথাটি কোন্টুক। আর এখনকার দিনে এত বাহুল্য কথাও বকিতে হয়, এত অনাব্তক কথারও আবশ্যক হ্ইয়া পড়ে! কিন্তু অবশেষে সেই আসল কথাটিতে গিয়া দাড়ায়__-এক যে ছিল রাজা। বেশ মনে আছে সেদিন সন্ধ্যাবেলা ঝড়বৃষ্টি হইতেছিল। কলিকাতা সহর একেবারে তাসিয়া গিয়াছিল। গলির মধ্যে একহাটু জল। মনে একাস্ত আশা ছিল, আজ আর মাষ্টার আসিবে না। কিন্ত তবু তাহার আসার নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভীতচিত্তে পথের দিকে চাহিয়া বারান্দায় চৌকি লইয়া বসিয়া আছি। যদি বৃষ্টি একটু ধরিয়া আসিবার উপক্রম হয়, তবে একা গ্রচিত্ে প্রার্থনা করি, হে দেবতা আর একটুখানি ! কোনমতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পার করিয়া দাও! তখন মনে হইত পৃথিবীতে বৃষ্টির আর কোঁন আবশ্ক নাই কেবল একটিমাত্র সন্ধ্যায় মগরপ্রান্তের একটিমাত্র ব্যাকুল বালককে মাষ্টারের করাল হস্ত হইতে রক্ষা কর! ছাঁড়ী। পুরাকালে কোন একটি নির্বাসিত যক্ষও ত মনে অসম্ভব কথা। | ৫৫. করিয়াছিল, আষাঁড়ে মেঘের বড় একটা কোন কাজ নাই, অতএব রামগিরিশিখরের একটিমাত্র বিরহীর ছুঃখকথা বিশ্বপার হইয়া অলকার মৌধবাতায়নে কোন একটি বিরহিণীর কাছে লইয়া যাওয়া তাহার পক্ষে কিছুমাত্র গুরুতর নহে) বিশেষতঃ পথটি যখন এমন সুর্য এবং তাহার হারয়বেদনা এমন হঃসহ ॥ বালকের প্রার্থনামতে না হোঁক, ধৃমজ্যোতিঃসলিলমরুতের বিশেষ কোন নিয়মানুসারে বৃষ্টি ছাড়িল না । কিন্তু হায় মাষ্টারও ছাঁড়িল না। গলির মোড়ে ঠিক সময়ে একটি পরিচিত ছাতা দেখা দিল_-সমস্ত আশা- বাম্প এক মুহূর্তে ফাটিয়া বাহির হা আমার বুকটি যেমন পাঁজরের মধ্যে মিলাইয়া গেল। পরপীড়ন পাপের যদি যথোপধুক্ত শান্তি থাকে তবে নিশ্চয় পরজন্মে আমি মাষ্টার হইয়া এবং আমার মাষ্টার মহাশয় ছাত্র হইয়া জন্মিবেন। তাহার বিরুদ্ধে একটি আপন্তি এই যে, আমাকে মাষ্টার মহাশয়ের মাষ্টার হইতে গেলে অতিশয় অকালে ইহসংসার হইতে বিদায় লইতে হয়--অতএব আমি তাহাকে অগ্তরের সহিত মার্জনা করিলাম । ছাঁতাটি দেখিবামাত্র ছুটিরা অন্তঃপুরে প্রবেশ করিলাম । মা তখন . দিদিমার সহিত মুখামুখী বদির| প্রদীপালোকে বিস্তি খেলিতেছিলেন। ঝুপ করিয়া একপাশে শুইয়া পড়িলাম। মা জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হইয়াছে?” আমি মুখ হাড়ির মত রর কহিলাম, “আমার অস্থুখ করিয়াছে, আজ আর আমি মাষ্টীরের কাছে পড়িতে যাইব না।” আশা! করি, অপ্রাপ্তবয়স্ক কেহ আমার এ লেখা পড়িবে না, এবং স্কুলের কোন দিলৈকৃশন বহিতে আমার এ লেখা উদ্ধৃত হইবে না। কারণ, আমি যে কাঁজ করিয়াছিলাম তাহী নীতিবিরুদ্ধ এবং পেঁজন্য কোঁন শাস্তিও পাই নাই। বরঞ্চ আমার অভিপ্রায় সিদ্ধ হইল । ম! চাকরকে বলিয়া দিলেন _-“আজ তবে থাক্‌, মাষ্টারকে যেতে বলে” দে।” ৫৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । জটিল পাস ছীঈি লস্টলা্িলা প্াপাস্পিন্পাসিপাসিপসিস্পি সিিসটতি পসসিপা্পিস্পিস্সিপিিসসিি কিন্ত তিনি যেরূপ নিরুদ্িমচিতে বিস্তি খেলিতে লাগিলেন, তাহাতে বেশ বুঝা গেল যে, মা তাহার পুত্রের অনস্থুথের উৎকট লক্ষণগুলি মিলাইয়! দেখিয়া! মনে মনে হাসিলেন ; আমিও মনের স্থথে বালিশের মধ্যে মুখ গুঁজিয়া খুব হাসিলাম - আমাদের উভয়ের মন উভয়ের কাছে অগোচর রহিল না। কিন্ত সকলেই জানেন, এ প্রকারের অস্থখ 'অধিকক্ষণ স্থায়ী করিয়। রাখা রোগীর পক্ষে বড়ই দু্ধর। মিনিটখানেক না যাইতে যাইতে দিদিমাকে ধরির৷ পড়িলাম_দিদিমা, একটা গুলু বল। ছুই চারিবার কোন উত্তর পাওয়া! গেল না। মা বলিলেন) ,“রোস্‌ বাছা, খেলাটা আগে শেষ করি 1” মামি কহিলান, “ন|, মা, খেলা তুমি কাল শেষ কোরো আজ দিদিমাকে গল্প বল্‌তে বল না 1” মা কাগছ্ ফেলির! দরিয়া কহিলেন, “যাও খুড়ি! উহার সঙ্গে এখন কে পারিবে!” মনে মূনে হয় ত ভাবিলেন-_-আমার ত কাল মাষ্টার আসিবে না, আমি কাঁলও খেলিতে পারিব। আমি দিদিমার হাত ধরিয়া টানিয়া লইয়। একেবারে নশার্রির মধ্যে বিছানার উপরে গিয়া উঠিলাম। প্রথমে খানিকটা পাশ-বালিশ জড়াইয়া, পা ছুঁড়িয়া নড়িরাচড়িয়া মনের আনন্দ স্বরণ করিতে গেল--তার পরে বলিলাম-- গল্প বল। তথনো ঝুপ্ঝুপ্‌ করিয়া বাহিরে বৃষ্টি পড়িতেছিল-_দিদিম| মৃদুস্বরে আরম্ভ করিলেন-_ এক বে ছিল রাজা । তাঁহার এক রাণী। আঃ, বাচা গেল। স্ুয়ো এবং ছুযো রাণী শুনিলেই বুকটা কীপিয়া উঠে__বুঝিতে পারি দুয়ো হতভাগিনীর বিপদের আর বড় বিলম্ব নাই। পূর্ব হইতে মনে বিষম একটা উৎকঠা চাপিয়া থাকে। পে্পাাসপিসপিসপাসাসিপাসিসিপিসাসাাসিসিসিসপাস্িন্পাসিপাস্পসপাস্পাস্পিস্পিস্পিসপিস্পিিপািসপাস্পিিসপাসিপিলাস পাপা পিসি যখন শোনা গেল আর কোন চিন্তার বিষয় নাই, কেবল রাজার পুত্র সন্তান হয় নাই বলিয়৷ রাজা ব্যাকুল হইয়। আছে এবং দেবতার নিকট প্রার্থনা করিয়া কঠিন তপস্তা করিবাঁর জন্ত বনগমনে উদ্যত হইয়াছে, তখন হাপ ছাড়িয়া বাঁচিলাম। পুত্রসন্তান না হইলে যে, দুঃখের কোন কারণ আছে তাহা আমি বুঝিতাম না) আমি জানিতাম যদি কিছুর জন্তে বনে যাইবার কখনো! আবশ্তক হয় সে কেবল মাষ্টারের কাছ হইতে পালাইবার অভিপ্রায়ে। রাণী এবং একটি বালিকা-কন্তা ঘরে ফেলিয়া রাজা তপস্তা করিতে চলিয়া গেল। এক বৎসর ছুই বৎসর করিয়া ক্রমে বারো! বর হইয়া যাঁয় তবু রাজার আর দেখ! নাই। এ দিকে রাজকন্তা৷ ষোড়ণী হইয়া উঠিয়াছে। বিবাহের বয়স উত্তীর্ণ হইয়া গেল। কিন্তু রাজ! ফিরিল না। মেয়ের মুখের দিকে চায়, আর রাণীর মুখে অন্জল রুচে না । আহা, আমার এমন সোনার মেয়ে কি চিরকাল আইবড় থাকিবে? ওগো আমি কি কপাল করিয়াছিলাম? অবশেষে রাণী রাজাকে অনেক অন্ুনর করিয়া বলিয়া পাঠাইলেন, আমি আর কিছু চাহি না, তুমি একদিন কেবল আমার ঘরে আসিয়া খাইয়া যাও। রাজ। বলিলেন, আচ্ছা । রাঁণী ত সেদিন বহ্যত্বে চৌষটি ব্যপ্রন স্বহস্তে রাঁধিলেন এবং সমস্ত সোনার থালে ও রূপার বাটিতে সাজাইয়! চন্দন কাঠের পিঁড়ি পাতিযা দিলেন! রাজকন্যা চামর হাঁতে করিয়। দীড়াইলেন । | রাজা আজ বারো! বৎসর পরে অস্তঃপুরে ফিরিয়া আসিয়া খাইতে বমিলেন। বাজকন্ত। রূপে আলো! করিয়া দীড়াইয়া চামর করিতে লাগিলেন। ৫৮ বিচিত্র প্রবন্ধ | ৯ পসসস্সিসসপস্পাসপানদলাসপসপসসপশস মেয়ের মুখের দিকে চায় আর খাওয়া হয় নাঁ। শেষে রানীর, দিকে চাহিয় তিনি জিজ্ঞাস! করিলেন, ই গে রাণী এমন সোনার প্রতিমা লক্ষ্মী ঠীকুরুণটির মত এ মেয়েটি কে,গা? এ কাহাদের মেয়ে? রাণী কপালে করাঘাত করিয়া কহিলেন, হা আমার পোড়া কপাল! উহাকে চিনিতে পারিলে না? ও যে তোমারি মেয়ে। রাজা বড় আশ্চর্য্য হইয়া বলিলেন-_ আমার সেই মেদিনকার এতটুকু মেয়ে আজ এত বড়টি হইয়াছে? রাণী দীর্ঘনিশ্বীম ফেলিয়া! কহিলেন-_তা” আর হইবে না? ব্ল কি, আজ বারো! বসর হইয়া গেল! রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন-_মেয়ের বিবাহ দাঁও নাই? রাণী কহিলেন-_তুমি ঘরে নাউ উহার বিবাহ কে দেয়? আমি কি নিজে পাত্র খুঁজিতে বাহির হইব ? রাজা গুনিয়া হঠাৎ ভারি শশব্যন্ত হইয়া উঠিয়া! বলিলেন-_রোস, আমি কাল সকাঁলে উঠিয়া রাজদ্বারে যাহার মুখ দেখিব তাঁহারই সহিত উহার বিবাহ দিয়া দিব। রাঁজকন্তা চামর করিতে লাগিলেন। তাহার হাতের বালাঁতে চূড়িতে ঠূঠীং শব্দ হইতে লাগিল। রাজার আহার হইয়া গেল। পরদিন ঘুম হইতে উঠিয়া বাহিরে আসিয়া রাজা দেখিলেন একটি ব্রাহ্মণের ছেলে রাঁজবাঁড়ির .বাহিরে জঙ্গল হইতে গুকৃন! কাঠি সংগ্রহ করিতেছে | তাঁহার বয়স বছর সাত আট হইবে ! রাজ! বলিলেন, ইহাঁরই সহিত আমার মেয়ের বিবাহ দ্িব। রাজার হুকুম কে লঙ্ঘন করিতে পারে ! তখনি ছেলেটিকে ধরিয়া তাহার সহিত ক্লাজকন্ার মালা বদল করিয়! দেওয়া হইল। আমি এই জা়গাটাতে দিদিমার খুব কাছে ঘেঁষিয়! গিয়া নিরতিশয় অসম্ভব কথা। ৫৯ ০০ ওস্থক্যের সহিত জিজ্ঞাস! করিলাম-তাঁর পরে ? নিজেকে সেই সাত আট বৎসরের সৌভাগ্যবান্‌ কাঠকুড়ানে শ্রাঁক্ষণের ছেলের স্থলাভিষিক্ত করিতে কি একটুখানি ইচ্ছা যাঁ় নাই? যখন সেইঞরাতে ঝুপ্ঝুপ্‌ বৃষ্টি পড়িতে- ছিল, মিটুমিটু করিয়া প্রদীপ জলিতেছিল এবং গুন্গুন্‌ শ্বরে দিদিমা মশারির মধ্যে গল্প বলিতেছিলেন, তখন কি বালকহৃদয়ের বিশ্বীসপরায়ণ রহস্তময় অনাবিষ্কত এক ক্ষুদ্র প্রান্তে এমন একটি সম্ভবপর ছৰি জাগিয়া উঠে নাই যে, সেও একদিন সকাল বেলায় কোথায় এক রাজার দেশে রাঁজীর দরজায় কাঠ কুড়াইতেছে, হঠাৎ একটি সোণার প্রতিমা লক্ষীঠাকরুণটির মত রাঁজকন্তাঁর সহিত তাহার মাল! বদল হইয়া গেল; মাথায় তাহার সিথি, কাঁণে তাহার দুল, গলায় তাহার কণ্ঠী, হাতে তাহার কাঁকণ, কটিতে তাহার চন্দ্রহার এবং আল্তাঁপরা ছুটি পার নূপুর ঝুম্‌ ঝুম্‌ করিয়া বাজিতেছে ! কিন্তু আমার সেই দিদিমা যদি লেখকজন্ম ধারণ করিয়া আজ- কালকার সেয়ান! পাঠকদের'কাছে এই গল্প বলিতেন তবে ইতিমধ্যে তাহাকে কত হিসাঁব দিতে হইত? প্রথমতঃ রাজা যে বার বৎসর বনে বসিয়া থাকে এবং ততদিন রাজকন্যার বিবাহ হয় না, একবাঁক্যে সকলেই বলিত ইহা অসম্ভব । সেটুকু যদি কোন গতিকে গোলমালে পার পাইয়া যাইত কিন্তু কন্ঠার বিবাহের জায়গায় বিষম একট! কলরব উঠিত। এক ত, এমন কখন হয় নাঁ, দ্বিতীয়তঃ, সকলেই আশঙ্কা করিত ব্রাঙ্গণের ছেলের সহিত ক্ষত্রিয় কন্ঠার বিবাহ ঘটাইয়! লেখক নিশ্চয়ই ফীকি দিয়া" সমাজবিরুদ্ধ মত প্রচার করিতেছেন। কিন্তু পাঠকরা তেমন ছেলেই নয়, তাহারা তাঁহার নাতি নয় যে, সকল কথা চুপ করিয়া শুনিয়া যাইবে ।, তাহারা কাগজে সমালোচন! করিবে । অতএব একান্তমনে প্রার্থনা করি, দিদিমা! যেন পুনর্বার দিদিমা! হইয়াই জন্মগ্রহণ করেন, হতভাগ্য নাতিটার মত তাঁহাকে গ্রহদোষে যেন লেখক হইতে না হয়। ও বিচিত্র প্রবন্ধ । আমি একেবারে পুলকিত কম্পান্বিত হৃদয়ে জিজ্ঞাস করিলাম, তার পরে? | দিদিমা বলিতে লাগিলেনস্ত-তার পরে রাজকন্ঠা৷ মনের ছুঃখে তাহার সেই ছোট স্বামীটিকে লইয়৷ চলিয়া গেল। অনেক দূরদেশে গিয়া একটি বৃহৎ অট্টালিকা নির্মাণ করিয়া সেই ব্রাহ্মণের ছেলেটিকে আপনার সেই অতি ক্ষুদ্র স্বামীটিকে, বড় যত্বে মানুষ করিতে লাগিল! _আমি একটুখানি নড়িরা-চড়িয়া পাশবালিশ আর একটু সবলে জড়াইয়া ধরিয়। কহিলাম, তার পরে? দিদিমা কহিলেন, তার পরে ছেলেটি পু'থি হাঁতে প্রতিদিন পাঠশালে যায়। . এমনি করিয়! গুরুমহাশয়ের কাঁছে নাঁনা বিগ্ভা শিখিয়া ছেলেটি ক্রমে যত বড়াহ্‌ইয়! উঠিতে লাগিল ততই তাহার সহপাঠীরা তাহাকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, এ যে সাতমহল বাঁড়িতে তোমাকে লইয়া! থাকে সেই মেয়েটি তোমার কে হয়? ব্রাহ্মণের ছেলে ও ভাবিয়! অস্থির__কিছুতেই ঠিক করিয়া বলিতে পাঁরে না মেয়েটি তাহার কে হয়! .একটু একটু মনে পড়ে একদিন সকালে রাজবাড়ির দ্বারেস সম্মুখে শুকৃনা কাঠ কুড়াইতে 1গয়াছিল-কিস্ত সেদিন কি একটা মস্ত গোলমাঁলে কাঠকুড়ানো৷ হইল না। সে অনেক দিনের কথা, সে কি কিছু মনে আছে? এমন করির|: চারি পাঁচ বসুর যায়। ছেলেটিকে রোজই তাহার সঙ্গীরা জিজ্ঞাসা করে . আচ্ছা ওঁ যে সাঁতমহল৷ বাড়িতে পরমাঁরূপনী মেয়েটি থাকে ও তোমার কে "হয়? ব্রাহ্মণ একদিন পাঠশালা! হইতে মুখ বড় বিমর্ষ করিয়া আসিয়া ব্রাজকন্তাকে কহিল, আমাকে আমার পাঠশালা পোড়োর৷ প্রতিদিন জিজ্ঞাসা করে যে সাতমহলা বাড়িতে যে পরম! গুন্দরী মেয়েটি থাকে অসম্ভব কথা। ৬১ সে তোমার কে হয়? আমি তাহাঘ কোন উত্তর দিতে পারি না। তুমি আমার কে হও, বল! রাজকন্তা বলিল, আঁজিকার দিন থাক্‌ দে কথ! আর এক দিন বলিব। ্রাঙ্মণের ছেলে প্রতিদিন পাঠশালা হইতে আসিয়া জিজ্ঞাসা করে, তুমি আমার কে হও ? রাজকন্তা প্রতিদিন উত্তর করে, সে কথা আজ থাক্‌ আর এক দিন বলিব। এমনি করিয়া আরো চার পাঁচ বৎসর কাটিয়া যায়। শেষে ব্রাহ্মণ একদিন আসিয়া বড় রাগ করিয়া বলিল-আজ যদি তুমি নাব্ল তুমি আমার কে হও তবে আমি তোমার এই সাতমহলা বাড়ি ছাড়িয়া, চলিয়৷ যাইব । তখন রাজকন্া কহিলেন-_আচ্ছা' কাল নিশ্চয়ই বলিব। পরদিন ব্রাহ্মণ-তনয় পাঠশালা হইতে ঘরে আসিয়াই রাজকন্তাকে, বলিল--আজ বলিবে বলিয়াছিলে, তবে বল? রাঁজকন্তা বলিলেন, আজ রাত্রে আহার করিয়া 'যখন তুমি শয়ন করিবে তথন বলিব। ব্রাহ্মণ বলিল__আচ্ছা। বলিয়া হুর্ধ্যাস্তের অপেক্ষায় প্রহর গণিতে লাগিল। এদিকে রাজকন্তা সোনার পালক্কে একটি ধব্ধবে ফুলের বিছানা পাঁতিলেন, ঘরে সোনার প্রদীপে সুগন্ধ তেল দিয়! বাতি :জাঁলাইলেন, এবং চুলটি বীধিয়া নীলাম্বরী কাপড়টি পরিয়৷ সাঁজিয়! বসিয়া! প্রহর গণিতে. লাগিলেন, কথন রাত্রি আসে। রাত্রে তাহার স্বামী কৌন মতে আহার শেষ করিয়া! শয়নগৃহে সোনার, পালক্কে ফুলের বিছানায় গিয়। শয়ন করিলেন। ভাঁবিতে লাগিলেন, আজ শুনিতে পাইব এই সাতমহল। বাঁড়িতে যে স্ুন্দরীটি থাকে সে আমার, কে হয়। রাজকন্যা তাহার স্বামীর পাত্রে প্রসাদ খাইয়। ধীরে ধীরে শয়নগৃহে: ৬২ বিচিত্র প্রবন্ধ। প্রবেশ করিলেন । আজ বছুদিন পরে প্রকাশ করিয়া বলিতে হুইবে এই সাতমহলা অডীদিকার একমাত অধী্রী আমি তোমার কে ₹ই/ তগিয়! বিছানায় প্রবেশ করিয়া-কি দেখিলেন ! ফুলের মধ্যে সাপ ছিল, তাহার স্বামীকে কখন্‌ দংশন করিয়াছে । স্বামীর মৃত দেহথানি অলিন হইয়া সোণার পালস্কে পুষ্পশয্যায় পড়িয়া আছে। -_ আমার ষেন বক্ষঃম্পন্দন হঠাৎ বন্ধ হইয়। গেল। আমি রদ্বস্বরে বিবর্ণমুখে জিজ্ঞাসা করিলাম-_তার পরে কি হইল! দিদিমা বলিতে লাগিলেন-_তার পরে-_কিন্ত সে কথার আর কাজ কি? সে যে আরে! অসন্তব! গল্পের প্রধান নায়ক সর্পাধাতে মারা গেল, তবুও তার পরে? বালক তখন জানিত না, মৃত্যুর পরেও একটা তার পরে থাকিতে পারে বটে, কিন্তু সে তার-পরের উত্তর কোন দিদিমার দিদিমাও দিতে পারে না। বিশ্বাসের বলে সাবিত্রী মুত্যুরও অন্ুগমন করিয়াছিলেন। শিশুরও প্রবল বিশ্বীস, এই জন্য সে মৃত্যুর অঞ্চল ধরিয়া ফিরাইতে চার, কিছুতেই মনে করিতে পারে না যে, তাহার মাষ্টারবিহীন একসন্ধ্যাবেলাকার এত সাধের গল্পটি হঠাৎ একটি সর্পাঘাতেই মারা গেল!, কাজেই দিদিমীকে সেই মহাপরিণামের চিরনিকদ্ধ গৃহ হইতে গল্পটিকে আবার ফিরাইয়া আনিতে হয়। কিন্তু এত সহজে সেটি সাধন করেন, এমন অনায়াসে; কেবল হয় ত একটা কলার ভেলায় ভাপাইয়া দিয়া গুটি হই মন্ত্র পড়িয়! মাত্র-_বাহাতে সেই ঝুপ্রুপ্‌ বৃষ্টির রাত্রে স্তিমিত প্রদীপে বালকের মনে মৃত্যুর মুস্তি অত্যন্ত অকঠোর হইয়া আসে, তাহাকে. এক্‌ রাত্রের জুখনিদ্রীর চেয়ে বেণী মনে হয় না। গলপ যখন ফুরাইয়া যায়, আরামে শ্রান্ত ছুটি চক্ষু আপনি মুদিয়া আসে, তখনো ত শিশুর কুত্র প্রাণটকে একটি স্গিগ্ক নিস্তব্ধ নিম্তরঙ্জগ আোতের মধ্যে সুযুণ্তির ভেলায় করিয়া ভাঁসাইয়! দেওয়া হয়, তার পরে তোরের বেলায় কে ছুটি মার়ামন্ত্র পড়িয়া! তাহাকে এই জগতের মধ্যে জাগ্রৎ করিয়া তোলে ! রুদ্ধ গৃহ। ১৩ কিন্তু যাহীর বিশ্বাস নাই, যে ভীরু এ সৌনরধ্যরসাস্বাদনের জন্যও এক ইঞ্চি পরিমাণ অসভবকে লঙ্ঘন কারিতে পরাুখ হর, তাহার কাছে কোর্ন কিছুর আর তার-পরে নাই, সমন্তই হঠাৎ অসময়ে এক অসমান্তিতে সমাপ্ত হইয়া! গেছে । ছেলেবেলায় সাতসমুদ্র পার হইয়া! মৃত্যুকেও লঙ্ঘন করিয়া গল্পের যেখানে যথার্থ বিরাম, সেখানে স্নেহময় মুমিষ্টস্বরে শুনিতাম-- আমার কথাটি ফুরোলো, নটে গাছটি মুড়োলে| | এখন বয়স হইয়াছে, এখন গল্পের ঠিক মাঝখানটাতে হঠাৎ থামিয়! গিয়৷ একটা! নিষ্ঠুর কঠিন কণ্ঠে শুনিতে পাই__ আমার কথাটি ফুরোলে! ন!॥ নটে গাছটি মুড়োলে। না। কেন্রে নটে মুড়োলি নে কেন, তোর গরুতে-- দুর হৌক গে, এ নিরীহ প্রাণীটি নাম করিয়া কাজ .নাই, আঁবার কে কোন্‌ দিক হইতে গায়ে পাঁতিয়া লইবে। ১৩০৩। রুদ্ধ গৃহ। বৃহৎ বাঁড়ির মধ্যে কেবল একটি ঘর বন্ধ। তাহার তালাতে মরিচা ধরিয়াছে-_তাহার চাবি কোথাও খুঁজিয়া গাওয়া যায় না। সন্ধ্যুবেল! সে ঘরে আলে! জলে না, দিনের বেল! সে ঘরে লৌক থাকে না-_-এমন কতদিন হইতে কে জানে ! নে ঘর খুলিতে ভয় হয়, অন্ধকারে তাহার সমুখ দিয়া চলিতে গা স্থম্ছম্‌ করে। যেখানে মানুষ হাঁসিয়৷ মানুষের সঙ্গে কথা কয় না, ৬৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । _ স্েইখানেই আমাদের যত ভয়। যেখানে মানুষে মানুষে দেখাগ্ডনো হয়, সেই পবিব্রস্থানে ভয় আর আসিতে পারে না। দুই থানি দরজা ঝাপিয়৷ ঘর মাঝখানে ফঁড়াইয়া আছে। দরজার উপর কান দিয়! থাকিলে ঘরের ভিতর হইতে যেন হু হু শব্দ শুনা যাঁয়। এ বর বিধবা। একজন কে ছিল সে গেছে, সেই হইতে এ গৃহের দ্বার রুদ্ধ। সেই অবধি এখানে আর কেহ আসেও না, এখান হইতে আর কেহ যায়ও না। সেই অবধি এখানে যেন মৃত্যুরও মৃত্যু হইয়াছে । এ জগতে অবিশ্রাম জীবনের প্রবাহ মৃত্যুকে হু হু করিয়! ভাঁসাইয়া লইয়! যায়, মৃত কোথাও টি'কিয়া থাকিতে পারে না। এই ভয়ে সমাধি- ভবন ক্লুপণের মত মৃতকে চোরের হাত হইতে রক্ষা করিবার জন্য পাষাণ প্রাচীরের মধ্যে লুকাইয়া রাখে, ভয় তাহার উপরে দিবারাত্রি পাহারা দিতে থাকে । মৃত্যুকেই লোকে চোর বলিয়া নিন্দা করে, কিন্তু জীবনও যে চকিতের মধ্যে মৃত্যুকে চুরি করিয়া আপনার বহুবিসৃত পরিবারের মধ্যে বাটিয়৷ দেয় সে কথার (কেহ উল্লেখ করে ন]। পৃথিবী মৃত্যুকেও কোলে করিয়া লয় জীবনকেও কোলে করিয়া রাখে--পৃথিবীর কোলে উভয়েই ভাই বোনের মত খেল! করে। এই জীবনমৃত্যুর প্রবাহ দেখিলে, তরঙ্গভঙ্গের উপর ছায়া-আলোর খেল! দেখিলে আমাদের কোন ভয় থাকে না, কিন্তু বদ্ধ মৃত্যু রুদ্ধ ছায়া দেখিলেই আমাদের ভয় হয়। মৃত্যুর গতি যেখানে আছে, জীবনের হাত ধরিয়া মৃত্যু যেখানে একতালে নৃত ৯ করে, সেখানে মৃত্যুরও জীবন আছে, সেখানে মৃত্যু ভয়ানক নহে; কিন্তু চিহ্নের মধ্যে আবন্ধ গতিহীন মৃত্যুই প্রক্ত মৃত্যু, তাহাই ভয়ানক। এই জন সমাধিভূমি ভয়ের আবাসস্থল। পৃথিবীতে যাহা আসে তাহাই যায়। এই প্রবাহেই জগতের স্সথ্যরক্ষা হয়। কণামাত্রের যাতায়াত বন্ধ হইলে জগতের সামকন্ত রুদ্ধ গৃহ। ৬৫ ভঙ্গ হয়। জীবন যেমন আসে, জীবন তেমনি যায় ; মৃত্যুও যেমন আসে মৃত্যুও তেমনি যায়। তাহাকে ধরিয়া রাখিবার চেষ্টা কর কেন? হদয়টাকে পাষাণ করিয়া সেই পাষাণের মধ্যে তাহাকে সমাহিত করিয়! রাখ কেন? তাহ! কেবল অস্বান্থ্যের কারণ হইয়া উঠে। ছাড়িয়া দাও তাহাকে যাইতে দাও --জীবনমৃত্যুর প্রবাহ রোধ করিও না। হৃদয়ের ছুই দ্বারই সমান খুলিয়া! রাখ । প্রবেশের দ্বার দিয়া সকলে প্রবেশ করুক, প্রস্থানের দ্বার দিয়া সকলে প্রস্থান করিবে। গৃহ ছুই দ্বারই রুদ্ধ করিয়া রাখিয়াছে। যেদিন দ্বার প্রথম রুদ্ধ হইল সেই দিনকার পুরাতন অন্ধকার আজও গৃহের মধ্যে একলা! জাগিয়া আছে। গৃহের বাহিরে দিনের পর দিন রাত্রির পর রাত্রি আসিতেছে, গৃহের মধ্যে কেবল সেই একুটি দিনই বসিয়া আছে। সময় সেখানে চারিটি ভিত্তির মধ্যেই রুদ্ধ। পুরাতন কোথাও থাকে না, এই ঘরের মধ্যে আছে। এই গৃহের অন্তরে বাহিরে সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ টির | বাহিরের বার্তা অন্তরে পৌছায় না, অন্তরের নিঃশ্বাস বাহিরে আসিতে পায় না। জগতের প্রবাহ এই ঘরের দুই পাশ দিয়! বহিয়া যায়। এই গৃহ যেন বিশ্বের সহিত নাড়ির বন্ধন ছেদন করিয়াছে । দ্বার রুদ্ধ করিয়৷ গৃহ পথের দিকে চাহিয়া আছে। যখন পূর্ণিমার টাদের আলে! তাহার দ্বারের কাছে হত্য! দিয়! পড়িয়া থাকে, তখন তাহার দ্বার খুলিব-খুলিব করে কি না কে বলিতে পারে! পাশের স্বরে যখন উৎসবের আনন্ধ্বনি উঠে তখন কি তাহার অন্ধকার যাইতে চায় না? এ ঘ্বর কি.ভাবে চাহে, হিরিএারনিতি ক্ছুই বুঝিতে পারি না। ছেলের! যে-একদিন এই ঘরের মধ্যে খেলা করিত, মেই কোলাহ্লময় দিন এই গৃহের নিশীথিনীর মধ্যে পড়িয়া আজ কাদিতেছে। এই গৃের ৬৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । মধ্যে যেসকল ন্েহ-প্রেমের লীলা হইয়া গিয়াছে, সেই ন্নেহ-প্রেমের উপর সহসা কপাট পড়িয়া গেছে এই নিস্তব্ধ গৃহের বাহিরে দীাড়াইয়। আমি তাহাদের ক্রনন শুনিতেছি। স্নেহ প্রেম বদ্ধ করিয়! রাখিবার অন্ত হয় নাই। মানুষের কাছ হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া লইয়া তাহাকে গোর দিয়া রাখিবার জন্য হয় নাই। তাহাকে জোর করিয়৷ বাঁধিয়া রাখিলে সংসারক্ষেত্রের জন্য সে কীদে। তবে এ গৃহ রুদ্ধ রাখিও নাঁদ্বার খুলিয়া দাও। হৃুর্য্যের আলো দেখিয়া মানুষের সাঁড়! পাইয়া চকিত হইয়া ভয় প্রস্থান করিবে। সুখ এবং ছুঃখ, শোক এবং উৎসব, জন্ম এবং মৃত্যু পবিত্র সমীরণের মত ইহার বাতায়নের মধ্যে দিয়া চিরদিন যাঁতীয়াত করিতে থাঁকিবে। সমস্ত জগতের সহিত ইহার যোগ হইয়া! যাইবে। ১২৯২। রাজপথ । আমি রাজপথ। আমার এক মুহূর্তের [জন্তও বিশ্রাম নাই। এতটুকু বিশ্রীম নাই যে, আমার এই কঠিন শুষ্ক শষ্যার উপরে একটি মাত্র কচি ঘাস উঠাইতে পারি; এতটুকু সময় নাই যে আমার শিয়রের কাছে অতি ত্র একটি নীলবর্ণের বনফুল ফুটাইতে পারি ! কথা কহিতে পারি না, অথচ জন্ধভাবে সকলি অন্গুতব করিতেছি। রাত্রিদিন পদশব্ব ; কেবলি পদশব | _ পৃথিবীর কোন কাহিনী আমি সম্পূর্ণ গুনিতে পাই না। আজ শতশত বৎসর ধরিয়া আমি কত লক্ষ লোকের কত হাঁসি কত গান কত রাজপথ । ৬৭ কথা শুনিয়| আসিতেছি) কিন্তু কেবল খানিকটা! মাত্র শুনিতে পাই। বাকিটুকু গুনিবার জন্ত যখন কাণ গাতিয়। থাকি, তখন দেখি সে ' এলোক আর নাই । সমান্তি ও স্বার়িঘ হয়ত কোথাও আছে, কিন্ত আমিত দৌখিতে পাই না। একাটি চরণচিহ্নও ত আমি বেশীক্ষণ ধরিয়া রাখিতে পারি না। অবিশ্রাম চিহ্ন পড়িতেছে, আবার নুতন পদ আসিয়া অন্ত পদের চিচ্ন মুছিয়া যাইতেছে । আমি কাহারও লক্ষ্য নহি, আমি সকলের উপায় মাত্র। আমি কাহারও গৃহ নহি, আমি সকলকে গৃহে লইয়৷ যাই। যাহাদের গৃহ নুদূরে অবস্থিত, তাহারা আমাকেই অভিশাপ দেয়? আমি যে পরম ধৈষ্যে তাহার্দিগকে গৃহের দ্বার পর্ধ্স্ত পৌছাইয়া দিই তাহার জন্ত কৃতজ্ঞতা .কই পাই।. গৃহে গিয়। বিরাম, গৃহে গিয়া আনন্দ, গৃহে গিয়। সথখসম্মিলন, আর আমার উপরে কেবল শ্রান্তির ভার, কেবল অনিচ্ছাকৃত শ্রম, কেব্ল বিচ্ছেদ । ছোঁট ছোট কোমল পাঁ-গুলি যখন আমার উপর দিয়! চলিয়া যায়, তখন আপনাকে বড় কঠিন বলিয়া মনে হয়) মনে হয় উহাদের পায়ে বাজিতেছে! কুসুমের দলের ন্যায়! কোমল হইতে সাধ যায়! রাধিক! ৰলিয়াছেন-_ | “যাই ধাহা অরুণ-চর্ণ চলি যাতা, তাহা তাহ ধরণী হই এ মঝু গাত] 1” অরুণ চরণগুলি এমন কঠিন ধরণীর উপরে চলে কেন! কিন্তু বদি না চলিত, তবে কোথাও শ্তামল তৃণ জন্মিত না ! ব্ছ দিন হইল, এমনি একজন কে তাহার কোমল চরণ ছুখানি লইয়া! প্রতিদিন: অপরাহে বহুদূর হইতে আপদিত-ছোট ছটি নূপুর বপুতুন্থ করিয়া তাহার পায়ে কীদিয়! কাদিয়া বাজিত। যেখানে & ৮ বিচিন্ প্রবন্ধ। বীধান বটগাছের বামদ্দিকে আমার একটি শাখা লোকাঁলয়ের দিকে চলিয়। গেছে, সেখানে সে শ্রাস্তদেহে গাছের তলায় চুপ করিয়। দীড়াইয়া থাকিত! আর-একজন কে দিনের কাজ সমাপন করিয়৷ অন্ত মনে সেই সময়ে লোকালয়ের দ্রিকে চলিয়া যাইত। সে চলিয়৷ গেলে বালিকা শ্রান্তপদে আবার যে পথ দিয়! আসিয়াছিল, সেই পথে ফিরিয়া যাইত। বালিকা যখন ফিরিত তখন জানিতাম অন্ধকার হইয়! আসিয়াছে। তখন গোধূলির কাকের ডাক একেবারে থামিয়া যাইত ; পথিকের আর বড় কেহ চলিত না। সন্ধ্যার বাতাসে থাকিয়া থাকিয়৷ বাশবন ঝর্বর্‌ ঝর্ঝর শব্দ করিয়া উঠিত। এমন কতদিন, এমন প্রতিদিন, সে ধীরে ধীরে আসিত ধীরে ধীরে যাইত। একদিন ফান্তন মাসের শেষাশেষি অপরাহে যখন বিস্তর আত্রমুকুলের কেশর বাতাসে ঝারিয়া৷ পড়িতেছে- তখন আর-একজন যে আসে সে আর আসিল না। সে দিন জনেক রাত্রে বালিক। বাড়িতে 1ফরির়। গেল। যেমন মাঝে মাঝে গাছ হইতে |শুফ পাত ঝরিয়া পড়িতেছিল, তেমনি মাঝে মাঝে দুই এক ফৌট। অশ্রজল আমার নীরস তপ্ত ধুলির উপরে পড়িয়া মিলাইতেছিল। আবার তাহার পরদিন অপরাহে বালিকা সেইথানে সেই॥তরুতলে আসিয়। 'দ্ীড়াইল কিন্তু সেদিনও আর-একজন আসিল না। আবার রাত্রে সে ধীরে ধীরে বাঁড়িমুখে ফিরিল। কিছু দূরে গিয়। আর & মে চলিতে .পারিল না। আমার উপরে ধুলির উপরে লুটাইয়া পড়িল। ছুই বাহুতে মুখ ঢাকিয়া বুক ফাটিয়! কাদিতে লাগিল! ক্কে গে৷ মা, আজি এই বিজন রাত্রে আমার বক্ষেও কি কেহ আশ্রয় লইতে আসে! এমন কত পদশব্ব নীরব হইয়। গেছে, আমি কি এত মনে করিয় রাখিতে পারি] আমার কি আর একদড শোক করিবার অবসর মন্দির । ৬৯ কি প্রথর রৌদ্র! উহ্-হছুহ! এক একবার নিশ্বাস ফেলিতেছি আর তপ্তধূলা স্থনীল আকাশ ধুসর করিয়া উড়িয়া যাইতেছে । ধনী দরিদ্র, সখী দুঃখী, জর! যৌবন, হাসি কান্না, জন্ম মৃত্যু সস্তই আমার উপর দিয়! একই নিশ্বীসে ধূলির আৌতের মত উড়িয়া চলিয়াছে। পথের হানিও নাই কান্নাও নাই। গৃহই অতীতের জন্ত শোক করে, বর্তমানের জন্য ভাবে, ভবিষ্যতের আশাপথ চাহিয়। থাকে। পথ প্রতি বর্তমান নিমেষের শত সহস্র নৃতন অভ্যাগতকে লইয়াই ব্যস্ত। এমন স্থানে নিজের পদগৌরবের প্রতি বিশ্বাস করিয়া অত্যন্ত সদর্পে পদক্ষেপ করিয়া কে নিজের চির-চরণ-চিহ্‌ রাখিয়া যাইতে প্রয়াস পাইতেছে! আমি কিছুই পড়িয়া থাঁকিতে দিই না, হাঁসিও না, কানীও সা। আমিই কেবল পড়িয়া আছি। ১২৯১ । মন্দির। উড়িষ্যায় তূবনেশ্বরের মন্দির যখন প্রথম দেখিলাম, :£তখন মনে হইল, একটা যেন কি নূতন গ্রন্থ পাঠ করিলাম । বেশ বুঝিলাম, এই পাথর- গুলির মধ্যে কথা আছে; সে কথা বহুশতা্দী হইতে স্তম্ভিত বলিয়া, মৃক বলিয়া, হৃদয়ে আরো! যেন বেশি করিয়া আঘাত করে। খক্‌-রচয়িতা খষি ছন্দে মন্্রচনা করিয়া গিয়াছেন, এই মন্দিরও পাথরের মন্ত্র; হৃদয়ের কথা দৃষ্টিগোচর হইয়া আকাশ জুড়িয়া স্বীড়াইয়াছে। মানুষের হৃদয় এখানে কি কথা গাথিয়াছে ? ভক্তি কি রহস্ প্রকাশ থু. বিচিত্র প্রবন্ধ । করিয়াছে? মানুষ অনস্তের মধ্য হইতে আপন অস্তঃকরণে এমন কি বাণী পাইয়াছিল, যাহার প্রকাশের প্রকাণ্ড চেষ্টায় এই শৈলপদমূলে' বিস্তীর্ণ প্রান্তর আকীর্ণ হইয়া রহিয়াছে? এই যে শতাধিক দেবালয়-_যাহার অনেকগুলিতেই আজ আর সন্ধ্যারতির দীপ জলে না, শঙ্খঘণ্টা নীরব, যাহার খোদিত প্রস্তরথগ্ড গুলি ধুলিলুষ্টিত__ইহারা কোনো একজন ব্যক্তিবিশেষের কল্পনাকে, আকার দিবার চেষ্টা করে নাই। ইহারা তখনকার সেই অজ্ঞাত যুগের ভাষাভারে আক্রান্ত । এই দেবালয়শ্রেণী তাহার নিগুঢ় নিস্তব্ধ চিন্তশক্তির দ্বারা দর্শকের অস্তঃকরণকে সহসা যে ভাবান্দোলনে উদ্বোধিত করিয়া তুলিল, তাহার আকম্মিকতা, তাহার সমগ্রতা, প্রকাশ কর! কঠিন-_বিশ্বেষণ করিয়া, খণ্ড-থণ্ড করিয়! বলিবাঁর চেষ্টা করিতে হইবে । মানুষের ভাষা! এইখানে পাথরের কাছে হার মানে--পাথরকে পরে-পরে বাক্য গাঁথিতে হয় না, সে স্পষ্ট কিছু বলে না, কিন্তু যাহা-কিছু বলে, সমস্ত একসঙ্গে বলে--এক পলকেই সে সমস্ত মনকে অধিকার করে-_স্থতরাং মন যে কি বুঝিল, কি শুনিল, কি পাইল, তাহা ভাবে বুঝিলেও ভাষায় বুঝিতে সময় পায় না, অবশেষে স্থির হইয়া ক্রমে ক্রমে তাঁহাকে নিজের কথায় বুঝিয়া লইতে হয়।” দেখিলীম, মন্দিরভিত্তির সর্ধাঙ্গে ছবি খোদ! ! কোথাঁও অবকাশমাত্র নাই। যেখানে চোঁথ পড়ে এবং যেখানে চোখ পড়ে না, সর্ধ্বত্রই- শিল্পীর নিরলস চেষ্টা কাঁজ করিয়াছে। ছবিগুলি বিশেষভাবে পৌরাণিক ছবি নয়; দশ অবতাঁরের লীলা বা স্বর্দলৌকের দেবকাহিনীই যে দেবালয়ের গাঁয়ে লিখিত হইয়াছে, ভাহাঁত বলিতে পারি না। মাচ্ছষের ছোটবড় ভালমন্থ প্রতিদিনের ক্ষটনা-_ভাহার খেলা ও কাজ, যুদ্ধ ও শাস্তি, ঘর ও বাহির, বিচিন্ত মন্দির। ৭১. আলেখোর দ্বারা মন্দিরকে বেষ্টন করিয়া আছে। এই ছ্বিগুলির মধ্যে "আর কোন উদ্দেশ্ত দেখি না, কেবল এই সংসার যেমন ভাবে চলিতেছে, তাহাই আঁকিবার চেষ্টা। সুতরাং চিত্রশ্রেণীর ভিতরে এমন অনেক জিনিষ চোখে পড়ে, যাহ! দেবাঁলয়ে অঙ্কনযোগ্য বলিয়! হঠাৎ মনে হয় না। ইহার মধ্যে বাছাবাছি কিছুই নাই-_তুচ্ছ এবং মহৎ, গোপনীয় এবং ঘোষণীয়, সমস্তই আছে। কোনো! গির্জার মধ্যে গিয়। যদি দেখিতাম, সেখানে দেয়ালে ইংরেজ- সমাজের প্রতিদিনের ছবি ঝুলিতেছে £--কেহ খান! খাইতেছে, কেহ ডগৃকার্ট হাকাইতেছে, কেহ হুইষ্ট খেলিতেছে, কেহ পিয়ানো বাঁজাইতেছে, কেহ সঙ্গিনীকে বাহুপাঁশে বেষ্টন করিয়া পক্কা নাচিতেছে, তবে হতবুদ্ধি হইয়া ভাবিভাম, বুঝি-বা স্বপ্ন দেখিতেছি_-কারণ, গিজ্জা সংসারকে সর্ধতোভাবে মুছিয়াঁফেলিয়া আপন স্বর্গীয়তা প্রকাশ করিতে চেষ্টা করে। মানুষ সেখানে লোকালয়ের বাহিরে আসে-_তাহা যেন যথাসম্ভব মর্ত্যসংস্পর্শবিহীন দেবলোকের আদর্শ। তাই, ভূবনেশ্বর-মন্দিরের চিত্রাবলীতে প্রথমে মনে বিস্ময়ের আঘাত লাগে। স্বভাবত হয় ত লাঁগিত না, কিন্তু আশৈশব শিক্ষায় আমরা স্বণ্মর্ত্কে মনে মনে ভাগ করিয়া রাখিয়াছি। সর্বদাই সন্তর্গণে ছিলাম, পাছে দেব-আদর্শে মানবভাবের কোন আচ লাগে; পাছে দেবমানবের মধ্যে যে পরমপবিভ্র সুদূর ব্যবধান, ক্ষুদ্র মানব তাহ জেশমাত্র লঙ্ঘন করে। এখাঁনে মানুষ দেবতার একেবারে যেন গাঁয়ের উপর আদিয়া পড়ি- যাছে__তাঁও যে ধলা ঝাঁড়িয়া আসিয়াছে, তাও নয়। গতিশীল, কর্ধব- রত, ধূলিলিপ্ত সংসারের প্রতিকৃতি নিঃসঙ্কোচে সমুচ্চ হইয়া উঠিয়া দেবতার প্রতিমূর্তিকে আচ্ছন্ন করিয়! রহিয়াছে । মন্দিরের ভিতরে গেলাম-_সেখানে একটিও চিত্র নাই, আলোক ৭২ বিচিত্র প্রবন্ধ। (শাসক ০০ নাই, অনলস্কত নিভৃত অস্ফকটতার মধ্যে দেবমূত্তি নিম্তন্ধ বিরাজ করিতেছে । ইহার একটি বৃহৎ অর্থ মনে উদয় না হইয়া থাঁকিতে পারে না। মানুষ এই প্রস্তরের ভাষায় যাহা বলিবার চেষ্টা করিয়াছে, তাহা সেই বু দূরকাল হইতে আমার মনের মধ্যে ধবনিত হইয়া! উঠিল | সে কথা এই__দেবতা দূরে নাই, গির্জায় নাই, তিনি আমাদের মধ্যেই আছেন। তিনি জন্মমৃত্যু, স্থখছুঃখ, পাপপুণ্য, মিলনবিচ্ছেদের মাঝথানে স্তর্বতীবে বিরাজমান । এই সংসারই তাহার চিরস্তন মন্দির । এই সজীব-সচেতন বিপুল দেঁবাঁলয় অহরহ বিচিত্র হইয়া রচিত হইয়া উঠিন্তেছে। ইহা কোনকালে নূত্তন নহে; কোনকালে পুরাতন হয় না। ইহার কিছুই স্থির নহে, সমস্তই নিয়ত পরিবর্তমান-_-অথচ ইহার মহৎ এক্য, ইহার সত্যতা, ইহার নিত্যত৷ নষ্ট হয় না, কারণ এই চঞ্চল বিচিত্রের মধ্যে এক নিত্যসত্য প্রকাশ পাঁইতেছেন। ভারতবর্ষে বুদ্ধদেব মাঁনবকে বড় করিয়াছিলেন। তিনি জাতি মানেন নাই, যাঁগযজ্ঞের অবলম্বন হইতে মানুষকে মুক্তি দিয়াছিলেন, দেবতীকে মানুষের লক্ষ্য হইতে অপশ্যত করিয়াছিলেন। তিনি মানুষের আত্মশক্তি প্রচার করিয়াছিলেন। দয়া এবং কল্যাণ তিনি স্বর্গ হইতে প্রার্থনা করেন নাই, মানুষের অন্তর হইতেই তাহ! তিনি আহ্বান করিয়াছিলেন। | এমনি করিয়া রন্ধার দ্বারা, ভক্তির দ্বারা মানুষের অন্তরের জ্ঞান, শক্তি ও উদ্যমূকে তিনি মহীয়ান্‌ করিয়া তুলিলেন। মানুষ যে দীন দৈবাঁধীন হ্বীনপদার্থ নহে, তাহা তিনি ঘোষণা করিলেন। এমন সময় হিন্দুর চিত্ত জাগ্রত হইয়া কহিল-_সে কথা ষথার্থ-_ মানুষ দীন নহে) হীন নহে; কারণ, মানুষের যে শক্তি_যে শক্তি মান্থষের মুখে ভাষা দিয়াছে, মনে ধী দিয়াছে, বাহুতে নৈপুণ্য দিয়াছে, জা ২ মি বদধদেব যে অনরভেট মসি্রকে চালনা করিতেছে, তাহাই মধ্যে তাহার দেবতা লা হইয়া গেল। মানাধর মে করিলেন, নবপ্রবদ্ধ হিন্দু তাহারই প্রতিষ্ঠা, আমাপের গ্রতিমুহ্টীন। বৌদ্ধ হিুধর্থের অন্তত নবহিনুধশ্ের মশ্কথা ইইয়তার প্রকাশ, সংসারের মধ্যে দেবতার মধ্যে ড়া গড়িল_-দ্খদুঃখের মধ্যে দেবতার সঞ্চার, ইহাই মাহযের/ শনেহীতির সর্গা। শাক্তের শক্তি, বৈষ্ঞবের প্রেম ঘরের নিকটনতী হইয়া দেখা ( স্ু্র কাজেবর্মে শির গ্রততাকষ হাত, চদার চে! করি মধ্যে িবযগ্রেমের গ্রতক্ষ লীলা অত্যন্ত দৈর্বিশকির অধিকারী! এই দেবতার আবির্ভাবে ছোট-বড়র ভেদ আহার ইতিহাস রহিগল। সমাজে যাঘার৷ ্বিত ছিল, তাহারাও উপনিষদে একাঁয়। অভিমান করিল গ্রারুত পুরাণগুলিতে | যিনি এক, তিনি আছে-- বরের মন্দির দেবুক্ষ ইবস্তে|দিবিভিতযেক+_ করিতেছে -যিটকাশে বৃক্ষের স্ায় স্তব্ধ হইয়া আছেন। তুবনে- মাছেন। জনমন্ত্রকেই আর একটু বিশেষভাবে এই বজিয়া উচ্চারণ আবর্তিত হইীএক, তিনি এই মানবসংসারের মধ্যে স্তব হইয়া ছায়ায় সংসাহ্যুর যাতায়াত আমাদের চোখের উপর দিয়া কেবলি ৭৫ -ইহারই ছে, মুখহঃখ উঠিতেছে-পড়িতেছে, পাপ-পুণ্য আলোকে- মান। এভিত্বি খচিত করিয়া দিতেছে, সমস্ত বিচিত্র_সমস্ত চঞ্চল, পরিবর্তনধন্তরে নিরলঙ্কার নিভৃত, যেখানে মিনি এক, তিনিই বর্ত- মর) বং অস্ির-সমুদয়, যিনি স্থির তঁহারই শীস্তিনিকেতন,_এই রম্পরা, যিনি নিত্য তাহারই চিরগ্রকাশ। দেবমানব, সব ... সপ্ষ্ম-ইহাই প্রস্তরের ভাষায় ধ্বনিত। সা ১৯ পাপাশ্পি্পটিপশ শে এইরূপ ক রে ॥ “বা হপর্ণা সর্ট) ৃ তয়োরন্তঃ পি ৫৬৮ ে ঈ তাহার ছুই সুন্দর পক্ষী একত্র সংযুক্ত ঠা, ন থাকিয়া মধ্যে একটি স্বাছু পিপ্নল হা রে তাহা দেখিতেছে। জীবাত্মা-পরমাত্মীর এরূপ রে এত অনায়াসে, এত সহজ উপমা কোথায় বলা হইয়াছে! জীবের সহি | ছে সেই 'বহাকে প্রত্যক্ষ চোখের উপর দেখিয়া কথা নি হই ।-রগাচারী কৰি উপমার জন্য আকাশ-পাতাল ই নীম টা ্ বনের ছুটি সুন্দর ডানাওয়ালা পাখীর মং দি হানে প্র গারে-গায়ে মিলাইয়া বসিয়া থাকিতে : ( * [রা না উপমার ঘটা করিয়া এই নিগৃঢ় তত্বকে রহ বড যেমন নতি, ্‌ করেন নাই। ছুটি ছোট পাখী যেমন শ্পষ্টবূপে গে রাহাত দৃশ্তমান, তাহার মধ্যে নিত্যপরিচয়ের সরলতা ঁিইযাই সত ইভা বৃহৎ উপমায় এমনটি থাকিত না। উপদাটি কষুিপ্ত সান, রি বৃহৎ করিয় প্রকাশ করিয়াছে--বৃহৎ সত্য দ্রষ্টার যে র্‌ ক্ষুদ্র সরল উপমাতেই যথার্ঘভাবে ব্যক্ত হইয়াছে। গাছে্হহাগ ইহারা ছুটিই পাখী, 'ডানায়-ডানায় সংযুক্ত হর শি, আর সখা, ইহারা এককুক্ষেই পরিষক্ত--ইহার মধ্যে একজন যে 8 সাক্ষী, একজন চঞ্চল, আর একজন '্তব্ধ। ক । তুবনেশ্বরের মন্দিরও যেন এই মন্ত্র বহন করিতেছে-_ ধ্ তে মানবসতকে মুছিয়া ফেলে নাই-_তাহা ছুই পাখীকে করিয়া ঘোষণা করিয়াছে । মন্দির । ৭৫ কিন্তু তুবনেশ্বরের মন্দিরে আরো! যেন একটু বিশেষত্ব আছে। খধি-: কবির উপমার মধ্যে নিভূত অরণ্যের একাস্ত নির্জনতার ভাবটুকু রহিয়া গেছে। এই উপমার দৃষ্টিতে প্রত্যেক জীবাত্মা যেন একাকিরূপেই পরমাত্মবার সহিত সংযুক্ত। ইহাতে যে ধ্যানচ্ছৰি মনে আনে, তাহাতে দেখিতে পাই যে, যে-আমি ভোগ করিতেছি, ভ্রমণ করিতেছি সেই- আমির মধ্যে শীস্তং শিবমগ্বৈতম্‌স্তব্নভাবে আবিভূতি। কিন্ত এই একের-সহিত-একের সংযোগ ভুবনেশ্বর-মনিরে লিখিত, নহে। সেখানে সমস্ত মানুষ তাহার সমস্ত কর্ণ, সমস্ত ভোগ লইয়া, তাহার তুচ্ছবৃহৎ সমস্ত ইতিহাস বহন করিয়া, সমগ্রভাবে এক হইয়া আপনার মাঝখানে অন্তরতররূপে, সাক্ষিরূপে, ভগবান্‌কে প্রকাশ করিতেছে । নির্জনে নহে-যোগে নহে-_সজনে, কর্ধের মধ্যে। তাহা .স্ুশ্টরকে। লোকালয়কে দেবাঁলয় করিয়। ব্যক্ত করিয়াছে-_তাহা সমষ্টিরূপে ধানবকে দেবত্বে অভিষিক্ত করিয়াছে। তাহা প্রথমত ছোটবড় সমস্ত মানবকে আপনার প্রস্তরপটে এক করিয়া সাজাইয়াছে তাহার পর দেখাইয়াছে, পরম এক্যটি কোন্খানে, তিনি কে। এই ভূমা এঁক্যের মন্তরতর আবির্ভাবে গ্রত্যেক মাঁনব সমগ্র মানবের সহিত মিলিত হইয়া শ্মান্। পিতার সহিত পুত্র, ভ্রাতীর সহিত ভ্রাতা, পুরুষের মহিত স্ত্রী *তবেনীর সহিত গ্রতিবেণী, একজাঁতির সহিত অন্ত জাতি, এককালে দহিত অন্ত কাল, এক ইতিহাসের সহিত অন্য ইতিহাস দেবতা স্মাঘার। একাত্ম হুইয়! উঠিয়াছে। ছোটনাগপুর। রাত্রে হাবড়ায় রেলগাঁড়িতে চড়িলীম। গাঁড়ির ঝাঁকানিতে নাড়া থাইয়া ঘুমটা যেন ঘোলাইয়া যাঁয়। চেতনায় ঘুমে, স্বপ্নে জাগরণে, খিচুড়ি পাকাইয়া যায়। মাঝে মাঝে আলোর শ্রেণী, ঘণ্টাধ্নি, কোলাহল, বিচিত্র আওয়াজে ্টেষণের নাঁম হাকা, আবার ঠং ঠংঠং তিনটে ঘণ্টার শবে মুহুর্তের মধ্যে সমস্ত অস্তহিত, সমস্ত অন্ধকার, সমস্ত নিস্তব্ধ, কেবল স্তিমিততাঁর! নিশীথিনীর মধ্যে গাঁড়ির চাকার আবিশ্রীম শফ। সেই শবের তালে তালে মাথার ভিত্তরে সৃষ্টিছাঁড়া স্বপ্নের দল সমস্ত রাত্রি ধরিয়া নৃত্য করিতে থাকে । রাত চারটের সময় মধুপুর টেষণে গাড়ি বদল করিতে হইল। অন্ধকার মিলাইয়া আঁদিলে পর. গ্রভাতের আলোকে গাড়ির জানলায় বদি়া বাহিরে চাহিয়া দেখিলাম | গাঁড়ি অবিশ্রাম অগ্রসর হইতে লাগিল। ভাঁঙা মাঠের এক-এক জায়গায় শুষ্ক নদীর বালুকা-রেখা দেখা যায়; গেই নদীর পথে বড় বড় কালো কালো৷ পাঁথর পৃথিবীর বস্কালের মত বাহির হইয়া পড়িয়াছে। মাঁৰে মাঝে একেকটা মুগ্ডের মত পাহাড় দেখা যাইতেছে, দুরের পাহাড়গুলি ঘন নীল, যেন আকাশের নীল মেঘ খেলা করিতে আঁসিরা পৃথিবীতে ধরা পড়িয়াছে; আকাশে উড়িবার জন্য যেন পাখা তুলিয়াছে কিন্ত বাধা আছে বলিয়া! উড়িতে পারিতেছে না; আকাশ হইতে তাহার স্বজাতীয় মেঘেরা আসিয়া তাহার সঙ্গে কোলাকুলি করিয়া 'যাইতেছে। এ দেখ, পাঁথরের মত কালো, ঝীকৃড়া চুলের ঝুঁটি বাধা মানুষ হাতে একগাছা লাঠি লইয়া দীড়াইয়া ৷ দুটো মহিষের ঘাড়ে একটা লাঙল যৌড়া, এখনো চাষ আরম্ত হয়নি, তাঁহারা স্থির হইয়া! রেলগাঁড়ির দিকে তাকাইয়া আছে । মাঝে মাঝে এক একটা জায়গা দ্বৃতকুমারীর ছোটনাগপুর। পণ ১ বেড়া দিয়া ঘেরা, পরিষ্কার, তকৃতক করিতেছে, মাঝখানে একটি বাধান ইদারা। চারিদিক বড় শু দেখাইতেছে। পাতলা লম্বা শুক্‌নে! শাদা ঘাসগুলো৷ কেমন যেন পাকাচুলের মত দেখাইতেছে। বেঁটে বেঁটে পত্রহীন গুন্সগুলি শুকাইয়া বীকিয়া কালো হইয়া গেছে। দূরে দূরে এক একটা তালগাছ ছোট্ট মাথা ও একখানি দীর্ঘ পা লইয়া দীড়াইয়া আছে। মাঝে মাঝে একেকটা অশথ গাছ আমগাছও দেখা যায়। শুফক্ষেত্রের মধ্যে একটিমাত্র পুরাতন কুটারের চালশুন্ত ভাঙা ভিত্তি নিজের ছায়ার দিকে চাহিয়া দীড়াইয়! আছে। কাছে এক্‌টা মস্ত গাছের দগ্ধ গুঁড়ির খানিকটা। সকালে ছয়টার সময় গিরিধিষ্টেষণে গিয়া পৌছিলাম। আর রেল- গাড়ি নাই। এখাঁন হইতে ডাঁকগাঁড়িতে যাইতে হইবে। ডাকগাড়ি মানুষে টানিয়া লইয়া যায়। একে কি আর গাঁড়ি বলে? চারটে চাঁকার উপর একটা ছোট খাঁচা মাত্র। সব্বপ্রথমে গিরিধি ডাঁকবাংলায় গিয়া শ্ানাহার করিয়া লওয়া গেল। ডাকবাংলার যত্দুরে চাই. ঘাসের চিহ্ন নাই। মাবে মাঝে গোটাকত গাছ আছে। চারিদিকে যেন রাঙীমাটার ঢেউ উঠিয়াছে। একটা! রোগা টাটু ঘোড়া গাছের তলায় বীধা, চারিদিকে চাহিয়া কি যে খাইবে তাহ! ভাবিয়া পাইতেছে না, কোন কাঁজ না থাকাতে গাছের গুঁড়িতে গা ঘষিয়া গা চুল্কাইতেছে। আরেকটা গাছে একট! ছাগল লম্বা দড়িতে বীধা, সে বিস্তর গবেষণায় শাকের মত এক্টু এক্টু সবুজ উত্ভিদ-পদার্থ পট পটু করিয়া ছি'ড়িতেছে। এখান হইতে যাত্রা কর! গেল। পাহাড়ে রাস্তা। সম্মুখে পশ্চাতে চাহিয়া দেখিলে অনেক দুর পর্যস্ত দেখা! যায়। গুফ শৃহ্য স্ববিস্তৃত ্রান্তরের মধ্যে সাপের মত আঁকিয়া বাকিয়া ছায়াহীন সুদীর্ঘ পথ রৌদ্র গুইয়। আছে। একবার কষ্টেশ্রষ্টে টানিয়া ঠেলিয়া গাড়ি চড়াওরান্তার: ৮ বিচিত্র প্রবন্ধ | উপর তুলিতেছে, একবার গাড়ি গড়গড়, করিয়া ভ্রুতবেগে ঢালুরাস্তায় নামিয়। যাইতেছে । ক্রমে চলিতে চলিতে আশেপাশে পাহাড় দেখা দিতে লাগিল। লম্বা লম্বা সরু সরু শালগাছ। উইয়ের টিবি। কাঁটা গাছের গুঁড়ি। স্থানে স্থানে একেকটা পাহাড় আগাগোড়া কেবল দীর্ঘ সরু পত্রলেশশূন্ত গাছে আচ্ছন্ন । উপবাসী গাছগুলো তাহাদের শুষ্ক শীর্ণ অস্থিময দীর্ঘ আঙুল আকাশের দিকে তুলিয়া আছে; এই পাহাড় গুপাকে দেখিলে মনে হয় যেন ইহারা সহস্র তীরে বিদ্ধ হইয়াছে, যেন ভীক্মের শরশয্যা হইয়াছে । আকাশে মেঘ করিয়! আসিয়া অল্প অন্ন বৃষ্টি আস্ত হইয়াছে। কুলির! গাড়ি টানিতে টানিতে মাঝে মাঁঝে বিকট চীৎকার করিয়৷ উঠিতেছে। মাঝে মাঝে পথের নুড়িতে হচটু খাইয়া গাড়িটা অত্যন্ত চমকিয়া উঠিতেছে। মাঝের এক জায়গাঁয় পথ অবসান হইয়া বিস্তৃত বালুকাশধ্যায় একটি ক্ষীণ নদীর রেখা দেখা দিল। নদীর নাম জিজ্ঞাস করাতে কুলিরা কহিল “বড়াঁকর নদী |» টানাটানি করিয়া গাঁড়ি এই নদীর উপর দিয়া পার করিয়া আবার রাস্তায় তুলিল। রাস্তার ছুই পাশে ডোবাতে জল দড়াইয়াছে ; তাহাতে চার পাঁচটা মহিষ পরস্পরের গায়ে মাথা রাখিয়া অদ্ধেক শরীর ডুবাইয়৷ আছে, পরম আলম্তভরে আমাদের দিকে এক একবার কটাক্ষপাত করিতেছে মাত্র । যখন সন্ধ্যা আসিল, আমরা গাড়ি হইতে নামিয়া হাটিয়া চলিলাম। অদূরে ছুইটি পাহাড় দেখা যাইতেছে তাঁহীর মধ্যদিয়া উঠিয়া নামিয়া পথ গিয়াছে । যেখানেই চাহি, চারিদিকে :লৌক নাই, লোকালয় নাই, শস্য নাই, চয! মাঠ নাই; চারিদিকে উ'চুনীচু পৃথিবী নিস্তব্ধ নিঃশব কঠিন সমুদ্রের মত ধুধু করিতেছে । দিক্‌ দিগন্তরের উপরে গোধুলির চিকৃচিকে সোনালি আধারের ছায়া আসিয়া পড়িয়াছে। কোথাও জনমানব জীবজন্ত নাই বটে, তবু মনে হয় এই স্ুবিস্তীর্ঘণ ভূমিশযায় 'েন কোন্‌ এক বিরাট পুরুষের জন্ত নিন্রার আয়োজন হইতেছে । কে ছোটনাগপুর | দ৯ যেন প্রহরীর স্যার মুখে আঙুল দিয়! দীড়াইয়া, তাই সকলে ভয়ে নিঃশ্বাস রোধ করিয়া আছে। দূর হইতে উপছায়ার মত একটি পথিক ঘোড়ার পিঠে বৌঝ দিয়া আমাদের পাশ দিয়া দরীরে ধীরে চলিয়া গেল। রাত্রিটা কোনমতে জাগিয়া ঘুমাইয়৷ পাশ ফিরিয়! কাটিয়া গেল। জাগিয়! উঠিয়া দেখি বামে ঘনপত্রময় বন। গাছে গাছে লতা, ভূমি ' নানাবিধ গুল্সে আচ্ছন্ন। বনের মাথার উপর দিয়া দূর পাঁহীড়ের নীল- শিখর দেখা যাইতেছে । মন্ত মন্ত পাথর। পাথরের ফাটলে এক একটা গাছ; তাহাদের ক্ষুধিত শিকড়গুলে! দীর্ঘ হইয়! চারিদিক হইতে বাহির হইয়! পড়িয়াছে, পাঁথরখানাকে বিদীর্ণ করিয়া তাহারা! কঠিন মুঠি দিয়া থাস্ক আকড়িয়া ধরিতে চায় । . সহসা বামে জঙ্গল কোথায় গেল! সুদুর বিস্তৃত মাঠ। দুরে গরু চরিতেছে, তাহাদিগকে ছাগলের মত ছোট ছোট দেখাইতেছে। মহিষ কিন্বা গরুর কীধে লাউল দিয় পপর লা্গুল মলি! চাষারা চাষ করিতেছে। চষ| মাঠ বামে পাহাড়ের উপর সোপানে সোপানে থাকে থাকে উঠিয়াছে। | বেলা তিনটার সময় হাজারিবাগের ডাক বাংলায় আগিয়! পৌছিলাম। প্রশস্ত প্রান্তরের মধ্যে হাজারিবাগ সহরটি অতি পরিষ্কার দেখা যাইতেছে । সাহরিক ভাব বড় নাই। গলি ঘু'জি, আবর্জনা, নর্দামা, ধেঁসার্ধেসি, গোলমাল, গাড়ি ঘোঁড়া, ধুলো কাঁদা, মাছি মশা, এ সকলের প্রীুর্ভাব বড় নাই। মাঠ পাহাড় গাছপাঁলার মধ্যে সহরটি তকৃতক্‌ করিতেছে। একদিন কাটিয়া গেল। এখন ছুপুর বেল! । ডাঁকবাংলার বারান্দার সম্মুখে কেদারায় একলা চুপ করিয়া বসিয়া আছি। আকাশ স্থনীল। ছুই খণ্ড শীর্ণ মেঘ শাদা পাঁল তুলিয়া চলিয়াছে। অল্প অল্প বাতাঁদ আসিতেছে । একরকম মেঠো মেঠো ঘেসো ঘেসে! গন্ধ পাওয়া ষাইতেছে। বারান্থীর চালের উপর একটা কাঠবিড়ালি। ছুই শালিখ বারান্দায় আসিয়া চকিতভাবে পুচ্ছ নাচাইয়া৷ .লীফাইতেছে। পাশের ৮০ বিচিত্র প্রবন্ধ [ রাস্তা দিয়া গরু লইয়া যাইতেছে তাহাদের গলার ঘণ্টার ঠং ঠৃং শব্ধ শুনিতেছি। লোকজনেরা কেউ ছাতা মাথায় দিয়া কেউ কাধে মোট লইয়া কেউ ছুয়েকটা গরু তাড়া্য়া, কেউ: এক্টা ছোট টাট্টর উপর চড়িয়া রাস্তা দিয়া অতি ধীরেস্থস্থে চলিতেছে; কোলাহল নাই, ব্যস্ততা নাই, মুখে ভাবনার চিন্ নাই। দেখিলে মনে হয় এখানকার মানবজীবন দ্রুত এঞ্জিনের মত হাঁসফাঁস করিয়া! অথবা গুরুভারাক্রাস্ত গরুর গাড়ির চাকার মত অর্দতনাদ করিতে করিতে চলিতেছে না । গাছের তলা দিয়! দিয়া একটুখানি শীতল নির্বর যেমন ছায়ায় ছায়ায় কুল্কুল্‌ করিয়া যায়, জীবন তেমূনি করিয়! যাইতেছে । সমুখে এ আদালত। কিন্তু এখানকার আদালতও তেমন কঠোরমৃর্ত নয়। ভিতরে যখন উকিলে উকিলে শামলায় শীমলায় লড়াই বাঁধিয়াছে তখন বাহিরের অশখগাছ হইতে ছুই পাপিয়ার অবিশ্রাম উত্তর প্রত্যুত্তর চলিতেছে। বিচারপ্রার্থী লোকের! আমগাছের ছায়ায় বদিয়। জটলা করিয়া হাহা করিয়৷ হীসিতেছে, এখান হইতে শুনিতে পাইতেছি। মাঝে মাঝে আদালত হইতে মধ্যাহের ঘণ্টা বাঁজিতেছে। চারিদিকে যখন জীবনের মৃদুমন্দ গতি, তখন এই ঘণ্টার শব্ধ গুনিলে টের পাওয়৷ যায় যে শৈথিল্যের আ্োতে সময় ভাসিয়! যায় নাই, সময় মাঁবখানে ফীড়াইয়৷ গ্রতিঘণ্টায় লৌহক্ে বলিতেছে “আর কেহ জাগুক্‌ না জাগুক্‌ আমি জাগিয়া আছি!” কিন্তু লেখকের অবস্থা ঠিক মেন্ধপ নয়। আমার চোখে তন্্রা আদিতেছে। ১২৯২। মরোজিনী প্রয়াণ । +১৯৯৯২২০ ( অসমাপ্ত বিবরণ ) ১১ই জ্যৈষ্ঠ শুক্রবার। ইংরাজি ২৩শে মে ১৮৮৪ খুষ্টাৰ। আজ শুভলগ্নে “সরোজিনী” বাশ্ীয় পোত তাহার ছুই সহচরী লৌহতরী ছুই পার্খে লইয়৷ বরিশালে তাহার কর্মস্থানের উদ্দেশে যাত্র! করিবে। যাত্রীর দল বাঁড়িল। কথা ছিল আমরা তিন জনে যাইব-_তিনটা বয়ঃপ্রাপ্ত পুরুষ মানষ। সকালে উঠিয়া জিনিষ পত্র বীঁধিয়া প্রস্তুত হইয়া আছি, পরম-পরিহসনীয়া শ্রীমতী ভ্রাতৃজায়া ঠাকুরাণীর নিকটে মনানমুখে বিদায় লইবার জন্য সমস্ত উদ্ভোগ করিতেছি এমন সমর শুনা গেল তিনি সসন্তানে আমার্ের অনুবন্তিনী হইবেন। তিনি কার মুখে শুনিরাছেন যে আমরা যে পথে যাইতেছি, সে পথ দিয়া! বরিশালে যাইব বলিয়া অনেকে বরিশীলে যায় নাই এমন শুনা গিয়াছে; আমরাও পাছে সেইরূপ ফীঁকি দিই এই সংশয়ে তিনি অনেকক্ষণ ধরিয়। নিজের ডান হাতের পাঁচটা ছোট ছোট মরু সরু আঙ,লের নথের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া! বিস্তর বিবেচনা করিতে লাগিলেন, অবশেষে ঠিক আটটার সময় ৪ নখাগ্ হইতে যতগুলো বিবেচনা ও যুক্তি সংগ্রহ সম্ভব সমস্ত নিঃশেবে আকর্ষণ, করিয়া! লইয়৷ আমাদের সঙ্গে গাড়িতে উঠিয়। বফিলেন। সকাল বেলায় ॥কলিকাতার রাস্ত। যে বিশেষ স্বদৃশ্ত তাহা নহে, বিশেষতঃ 'চিৎপুর রোড। সকাল বেলাকার প্রথম সুর্যকিরণ পড়িয়াছে, ৮২ বিচিত্র প্রবন্ধ। ১সপাস্পিস্পিপ স্লিপ পাস সস শ্যাক্র' গাড়ির আন্তাবলের মাথায়”_আর এক সার বেলোয়ারি ঝাড় ওয়ালা মুসলমানদের দৌঁকানের উপর। গ্যাস-ল্যাম্পগুলোর গানে স্র্যের আলো এমনি চিক্মিক করিতেছে সেদিকে চাহিবার জো নাই। সমস্ত রাত্রি নক্ষত্রের অভিনয় করিয়া তাহাদের সাধ মেটে নাই, তাই সকাল বেলায় লক্ষ যোজন দূর হইতে সৃর্ধ্যকে মুখ ভেঙাইয়া অতিশয় চক্চোকে মহত্বলাভের চেষ্টায় আছে। টামগাড়ি শিষ দিতে দিতে চলিয়াছে, কিন্ত এখনো যাত্রী বেণী জোটে নাই। মুযুনিসিপালিটির শকট কলিকাতার আবর্জনা বহন করিয়া, অত্যন্ত মন্থর হইয়া চলিয়া! যাইতেছে । ফুটুপাথের পার্খে সারি সারি শ্যাকরা গাড়ি আরোহীর অপেক্ষায় দীঁড়াইয়া ; সেই অবসরে অশ্বচন্মীবৃত চতুষ্পদ কষ্কালগুলা ঘাড় হেট করিয়া অতন্ত শুকনো ঘাসের আঁটি অন্তমনস্কভাবে চিবাইতেছে ; তাহাঁদের সেই পাঁর- মাধিক ভাব দেখিলে মনে হয় যে অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া তাহার! তাহাদের সন্ুথস্থ ঘাসের আটির সঙ্গে সমস্ত জগৎসংসারের তুলনা করিয়া সারবত্া ও সরসতা! সম্বদ্ধে কোন প্রভেদ দেখিতে পায় নাই। দক্ষিণে মুলমানের দোকানের হৃতচর্ম খাসীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কতক দড়িতে ঝুলিতেছে, কতক খণ্ড খণ্ড আকারে শলাকা আশ্রয় করিয়া অগ্রিশিখার উপরে ঘুর খাইতেছে এবং বৃহতকায় রক্তবর্ণ কেশবিহীন শ্মশ্দলগণ বড় বড় হাতে মস্ত মস্ত রুটা সেঁকিয়! তুলিতেছে । কাবাবের দোকানের পাশে ফুঁকো ফানুষ নিশ্াণের জায়গা, অনেক ভোর হইতেই তাঁহাদের চুলায় আগুণ জালান হইয়াছে । ঝাঁপ খুলিয়া কেহ বা হাত মুখ ধুইতেছে, কেহ বা দোকানের সম্মুখে ঝাঁট দিতেছে, দৈবাৎ কেহ বা লাল কলপ্দেওয়৷ দাড়ি লইয়া চোখে চসমা আঁটিয়া একখানা পাঁসী কেতাব পড়িতেছে। সম্মুখে মম্জিদ্‌; একজন অন্ধ ভিক্ষুক মম্জিদের সিঁডির উপরে হাত পাতিয়! ঈাড়াইয়া আছে। গঙ্গার ধারে কয়লাঘাটে গিয়া পৌছান গেল। সমুখ হইতে ছাঁউনি- ওয়ালা বাধা নৌকাগুলা দৈতযদের পায়ের মাপে বড় বড় চটিজুতার মত সরোজিনী প্রয়াণ । ৮৩ দেখাইতেছে। মনে হইতেছে, তাহারা যেন হ্ঠাৎ প্রাণ পাইয়া অন্ধপস্থিত চরণগুলি শ্মরণ করিয়া চট্চট্‌ করিয়া চলিবাঁর প্রতীক্ষায় অধীর হই! পড়িয়াছে। একবার চলিতে পাইলে হয়, এইরূপ তাহাদের ভাব। একবার উঠিতেছে, যেন উঁচু হইয়া ভাঙার দিকে চাহিয়া দেখিতেছে কেহ আসিতেছে কি না,_আবার নাঁমিয়া পড়িতেছে। একবার আগ্রহে অধীর হইরা জলের দ্রিকে চলিয়া যাইতেছে, আবার কি মনে করিয়। আত্মম্বরণ পূর্বক তীরের দিকে ফিরিয়া আসিতেছে । গাড়ি হইতে মাটিতে পা দিতে না! দিতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাঝি আমাদের উপরে আসিয়! পড়িল। এ বলে আমার নৌকায়, ও বলে আমার নৌকায়, এইরূপে মাঝির তরঙ্গে আমাদের তন্থুর তরী একবার দক্ষিণে, একবার বামে, একবার মাঝখানে আবর্তের মধ্যে ঘুধিত হইতে লাগিল। অবশেবে অবস্থার তোড়ে, পুর্ব জন্মের বিশেষ একটা কি কর্মাফলে বিশেষ একটা নৌকার মধ্যে গিয়া! পড়িলাম। পাল তুলির। নৌকা ছাড়িয়া দ্িল। গঙ্গায় আজ কিছু বেণা ঢেউ দিয়াছে, বাতাসও উঠিয়াছে। এখন জোয়ার। ছোট ছোট নৌকাগুনি আজ পাল ঝুলাইয়৷ ভারি তেজে চলিয়াছে ; আপনার দ্েমাকে আপনি কাত হইয়া পড়ে বা! একটা মন্ত ট্রামার ছুই পাশে ছুই লৌহতরী লইয়া আশপাশের ছোট খাট নৌকাগুলির প্রতি নিতান্ত অবজ্ঞাভরে লোহার নাকটা আকাশে ভুলিয়া গাঁ গা শব্দ করিতে করিতে সধুম নিশ্বাসে আমাদের দিকে ছুটিয়া আসিতেছে । মনোযোগ দিয়। দেখি আমাদেরই জাহাজ-_রাখ্‌ রাঁথ থাম থাম্‌! মাঝি কহিল-_“মহাঁশয় ভয় করিবেন না, এমন ঢেরবার জাহাজ ধরিয়াছি।” বলা বাহুল্য এবারও ধরিল। জাহাজের উপর হইতে একটা! পিঁড়ি নাঘাইয়া দ্বিল। ছেলেদের প্রথমে উঠান গেল, তাহার পর আমার ভাজ ঠাকুরাণী যখন ব্হু কষ্টে তাহার স্থল-পন্ন-পা-ছুখানি জাহাজের উপর তুলিলেন তখন আমরাও মধুকরের মত তাহারি পশ্চাতে উপরে উঠিয়া! পড়িলাম। ৮৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । জর. যদিও আত এবং বাঁতীস প্রতিকূলে ছিল, তথাপি আমাদের এই গজবর উর্ধে বৃংহিতধ্বনি করিতে করিতে গজেন্্রগমনের মনোহারিতা৷ উপেক্ষা করিয়া চত্বারিংশ তুরঙ্গ-বেগে ছুটিতে লাগিল। আমরা ছয় জন এবং জাহাজের বৃদ্ধ কর্তা বাবু এই সাত জনে ঘিলিয়া জাহাজের কামরার সম্মুখে খানিকটা খোলা জায়গায় কেদাঁরা লইয়া বসিলাম । আমাদের দাথার উপরে কেবল একটী ছাত আছে। সম্মুখ হইতে হুহু করিয়া বাতাস আসিয়া কানের কাছে সেঁ! সেঁ। করিতে লাগিল, জামার মধ্যে প্রবেশ করিয়া তাহাকে অকন্মাৎ ফুলাইয়া তুলিয়। ফর্‌ ফর আওয়াজ করিতে থাকিল এবং আমার ভ্রানৃ- জায়ার সুদীর্ঘ স্্স্যত টুলগুলিকে বার বার অবাধ্যতাঁচরণে উৎসাহিত করিয়া তুলিল। তাহারা না কি জাত-সাপিনীর বংশ, এই নিমিত্ত বিদ্রোহী হইয়া বেণী বন্ধন এড়াইয়া পুজনীয়! ঠাকুরাণীর নাসাবিবর ও মুখরন্ধের মধ্যে পথ অনুসন্ধান করিতে লাগিল; আবার আর কতকগুলি উদ্ধমুখ হইয়া আস্ফালন করিতে করিতে মাথার উপর রীতিমত নাগলোকের উৎদৰ বাধাইয়া দিল; কেবল বেণী নামক অজগর সাপটা শত বদ্ধনে বন্ধ হইয়া, শত শেলে বিদ্ধ হইয়া, শত পাঁক পাঁকাইয়া নিজ্জীব ভাবে খোঁপা আকারে ঘাড়ের কাছে কুগুলী পাকাইয়া রহিল। অবশেষে কখন এক সমরে দাদা কীধের দিকে মাথা নোয়াইয়া' ঘুমাইতে লাগিলেন, বৌঠাকুরাণীও চুলের দৌরাস্্য বিস্মৃত হইয়! চৌকির উপরে চ্ষু মুদিলেন। জাহাজ অবিশ্রীম চলিতেছে । টেউগুলি চারিদিকে লাফাইয়া: উঞ্জিতেছে__তাহাদের মধ্যে এক একটা সকলকে ছাড়াইয়া শুভ্র ফনাঁ ধরিয়া হঠাঁৎ জাহাঁজের ডেকের উপর যেন ছোবল মারিতে আসিতেছে__ গঞ্জন করিতেছে, পশ্চাতের সঙ্গীদের মাথা! তুলিয়া ডাকিতেছে_স্পর্ধা করিয়া ফুলিয়া ফুলিয়া চলিতেছে--মাথার উপরে হৃর্্যকিরণ দীপ্তিমান চোখের মত জলিতেছে--নৌকাগুলাকে কাৎ করিয়া ধরিয়া তাহার মধ্যে কি সরোজিনী প্রয়াণ । ৮৫ আছে দেখিবার জন্ত উচু হইয়া ঈীড়াইয়! উঠিতেছে, মুহূর্তের মধ্যে “কৌতুহল পরিতৃপ্ত করিরা নৌকাটাকে ঝাকানী দিয়া আবার কোথায় তাহারা চলিয়া বাইতেছে। আপিসের ছিপৃছিপে পান্সীগুলি পালটুকু ফুলাইয়া আপনার মধুর গতির আনন্দ আপনি যেন উপভোগ করিতে করিতে চলিতেছে) তাহারা মহৎ মাস্তল-কিরীটী জাহাজের গাভী্যয উপে্গা করে, টিমারের পিনাক ধ্বনিও মান্য করে না, বরঞ্চ বড় বড় জাহাজের মুখের উপর পাল ছুলাইয়া হাসিয়া রঙ্গ করিয়া চলিয়া যায় জাহাঁজও তাহাতে বড় অপমান জ্ঞান করে না। কিন্তু. গাধাবোটের ব্যব্হার স্বতন্্, তাহাদের নড়িতে তিন ঘণ্ট1, তাহাদের চেহারাটা নিতান্ত স্ুলবুদ্ধির মত-_তাহারা নিজে নড়িতে অসমর্থ হইয়া অবশেষে জাহাজকে সরিতে বলে-_তাহারা গায়ের কাছে আসিয়া পড়িলে সেই, স্পদ্ধী অসঙ্ক বোধ হয়। এক সময় শুনা গেল আমাদের জাহাজের কাণ্ডেন নাই। জাহাজ ছাড়িবার পূর্ব রাত্রেই সে গা -ঢাকা দিয়াছে। শুনিয়া আমার ভাজঠাকুরাণীর ঘুমের ঘোর একেবারে ছাড়িয়া গেল-তাহার সহসা মনে হইল যে, কাপ্তেন বখন নাই তথন নোডঙরের অচল-শরণ অবলম্বন করাই শ্র্রেয়। দাদা বলিলেন তাহার আবশ্তটক নাই, কাথ্েনের নীচেকার লোকের! কাগ্চেনের চেয়ে কোন অংশে নান নহে। কর্তাবাবুরও সেইরূপ মত। বাকী সকলে চুপ করিয়া রহিল কিন্তু তাহাদের মনের ভিতরটা, আর কিছুতেই প্রসন্ন হইল না। তবে, দেখিলাম নাকি জাহাজটা সত্য সত্যই ১লিতেছে+ আর, হীক-ডাকেও কাণ্ডেনের অভাব সম্পূর্ণ ঢাকা পড়িয়'ছে, তাই চুপ মারিয়া রহিলাম। হঠাৎ জাহাজের হ্বদয়নের ধুক-ধুক শব বন্ধ হইফা গেল--কল চলিতেছে না নোঙর ফেল, নোঙর ফেল বলিয়া শব্দ উঠিল-_-নোঙর ফেলা হইল। কলের এক জার্‌গায় কোথায় একটা! জোড় খুলিয়! গেছে__সেটা মেরামত করিলে তবে জাহাঁজ চলিবে। ৮৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । মেরামত আরম্ত হইল। এখন বেলা! সাঁড়েদশটা, দেড়টার পূর্বে মেরামত সমাণ্ড হইবার সম্ভাবনা নাই । বসিয়া বসিয়া গঙ্গাতীরের শোভা দেখিতে লাগিলাম। শান্তিপুরের' দক্ষিণ হইতে আন্ত করিয়া গঙ্গাতীরের যেমন শোভ1 এমন আর কোথায় আছে! গাছপালা! ছায়া কুটার__নয়নের আনন্দ অবিরল সারি সারি ছুইধারে বরাবর চলিয়াছে- কোথাও বিরাম নাই। কোথাও বা তটভূমি সবুজ ঘাসে আচ্ছন্ন হইয়! গন্গার কোলে আঁসিয়৷ গড়াইয়া৷ পড়িয়াছে, কোঁথাঁও বা" একেবারে নদীর জল পধ্যন্ত ঘন গাছপালা লতাজালে' জড়িত হইয়া ঝুঁকিয়া আসিয়াছে-_-জলের উপর তাহাদের ছায়া অবিশ্াম ছুলিতেছে ; কতকগুলি ক্ধ্যকিরণ সেই ছায়ার মাঝে মাঝে বিকমিক করিতেছে, আর বাকী কতকগুলি, গাছ পালার কম্পমান কচি মস্যণ' সবুজ পাতার উপরে চিকৃচিক্‌ করিয়া উঠিতেছে। একটা-বাঁ নৌকা তাহার কাছাকাছি গাছের গু'ড়ির সঙ্গে বাঁধা রহিয়াছে, সে সেই ছায়ার নীচে, অবিশ্রীম জলের কুলকুল শব্দে, মুছ মুছু দোল খাইয়া বড় আরামের ঘুম ঘুমাইতেছে। তাহার আর এক পাশে বড় বড় গাছের অতি ঘনচ্ছায়ার মধ্য দিয়! ভাঁউা ভাঙা বাঁকা একটা পদচিহ্কের পথ জল পর্যন্ত নামিস্বা আসিয়াছে। সেই পথ দিয়া গ্রামের মেয়েরা কলসী কীখে করিয়া জল লইতে নামিতেছে, ছেলের! কাদার উপরে পড়িয়া জল ছোড়াছুড়ি করিয়া সাতার কাটিয়া ভারি মাতাঁমাতি করিতেছে। প্রাচীন ভাঙা ঘাটগুলির' কি শোভা ! মানুষেরা বে এ ঘাট বাঁধিয়াছে তাহা এক রকম ভুলিয়া! যাইঁতৈ হয়; এও যেন গাছপালার মত গঙ্গাতীরের নিজস্ব । ইহার বড় বড় ফাটলের মধ্য দিয়া অশথগাছ উঠিয়াছে, ধাপগুলির ইটের ফাক দির! ঘ|স গজাইতেছে__বহু বৎসরের বর্ধার জলধারার গাঁয়ের উপরে শেয়ালা' পড়িয়াছে-- এবং তাহার রং চারিদিকের শ্তামল গাছপালার রঙের সহিত কেমন সহজে মিশিয়া গেছে। মানুষের কাঁজ ফুরাইলে প্রকৃতি নিজের সরোজিনী প্রয়াণ । ৮৭ হাতে সেটা সংশোধন করিয়া দিয়াছেন; তুলি ধরিয়া এখানে ওখানে নিজের রং লাগাইয়া দিয়াছেন। অত্যন্ত কঠিন সগর্ধ ধবধবে পারিপাট্য নষ্ট করিয়া, ভাঙ্গাচোরা বিশৃঙ্খল মাধুর্য স্থাপন করিয়াছেন। গ্রামের যে সকল ছেলে মেয়েরা নাহিতে বা জল লইতে আসে তাহাদের সকলেরই সঙ্গে ইহার যেন একটা কিছু সম্পর্ক পাতান আছে--কেহ ইহার নাতনী, কেহ ইহার মা মাসী। তাহাদের দাদামহাশয় ও দিদিমার! যখন এতটুকু ছিল তখন ইহারই ধাপে বসিয়া খেল! করিয়াছে, বর্ধার দিনে পিছল খাইয়া পড়িয়া গিয়াছে । আর সেই যে যাঁত্রাওয়াল! বিখ্যাত গাঁয়ক অন্ধ শ্রীনিবাস সন্ধাবেলায় ইহার পৈঠার উপর বদিপ্। বেহাল! বাজাইয়া গৌরী রাগিণীতে “গেল গেল দিন” গাহিত ও গাঁয়ের দুই চারিজন লোক আশে পাঁশে জম! হইত, তাহার কথা আজ আর কাহারও মনে নাই। গঙ্গা- তীরের ভগ্ন দ্রেবালয়গুলিরও যেন বিশেষ কি মাহাত্মা আছে। তাহার মধ্যে আর দেবপ্রতিমা নাই। কিন্তু মে নিজেই জটাজুটবিলম্বিত অতি পুরাতন খধির মত অতিশয় ভক্তিভাজন ও পবিত্র হইয়া উঠিয়াছে। এক এক জায়গায় লোকালয়--সেখানে জেলেদের নৌকা সারি সারি বাধা রহিয়াছে। কতকগুলি জলে, কতকগুলি ডাঙায় তোলা, কতকগুলি তীরে উপুড় করিয়া মেরামত করা হইতেছে; তাহাদের পাঁজর দেখা যাইতেছে । কুঁড়ে ঘরগুলি কিছু ঘন ঘন কাছাকাছি- কোন কোনটা বাকাচোর! বেড়া দেওয়া--ছুই চাঁরিটি গরু চরিতেছে, গ্রামের ছুই একটা শীর্ণ কুকুর নিষ্কন্মীর মত গঙ্গার ধারে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে ; একট! উলঙ্গ ছেলে মুখের মধ্যে আঙুল পুরিয়া৷ বেগুনের ক্ষেতের সম্মুখে চাইয়া অবাঁক্‌ হইয়া আমাদের জাহাজের দিকে চাহিয়া আছে। হাড়ি ভাসাইয়া লাঠি-বীধা ছোটি ছোট জাল লইয়! জেলের ছেলের! ধারে ধারে চিংড়িমাছ ধরিয়া বেড়াইতেছে। সমুখে তীরে বটগাছের জালবদ্ধ শিকড়ের নীচে হইতে নদীশ্রোতে মাটি ক্ষয় করিয়া! লইয়া! গিয়াছে--ও সেই শিকড়গুলির ৮৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । পপি পপপসপসসসপসপসসকস্সপপস্পপপসপনপপ্পা্০ চারিটি হাড়িকুড়ি ও একটা চট লইয়া তাহারই মধ্যে বাস করে। আবার আর এক দিকে চড়ার উপরে বহুদূর ধরিয়া কাশ বন--শরৎকালে যখন ফুল ফুটিয়া উঠে তখন বায়ুর প্রত্যেক হিল্লোলে হাঁসির সমুদ্রে তরঙ্গ উঠিতে থাকে। বে কারণেই হউক গঙ্গার ধারের ইটের পাঁজাগুলিও আমার দেখিতে বেশ ভাল লাগে ;-_তাহা্দের আশেপাশে গাছপালা থাঁকে না__ চারিদিকে পোঁড়ো জায়গা এবড়ো খেবড়ো--ইতস্ততঃ কতকগুলা ইট খসিয়া পড়িয়াছে__অনেকগুলি ঝামা ছড়ান__স্থানে স্থানে মাটি কাটা-_ এই অনুর্ধ্রতা বন্ধুরতার মধ্যে গাঁজাগুলেো! কেমন হতভাগোর মত দীড়াইা থাকে । গাছের শ্রেণীর মধ্য হইতে শিবের ছাদশ মন্দির দেখা যাইতেছে ; সমুখে ঘাট, নহবৎখাঁনা হইতে নহবৎ বাঁজিতেছে। তাহার ঠিক পাশেই খেয়াঘাট । কচি ঘাট, ধাপে ধাপে তাল গাছের গুঁড়ি দিয়া বাঁধান। আরো দক্ষিণে কুমারদের বাড়ী, চাল হইতে কুমড়া ঝুলিতেছে। একটা প্রোঢ়া কুটারের দেয়ালে গোবর দিতেছে-_ প্রাঙ্গণ পরিফাঁর, তকৃতক্‌ করিতেছে-_কেবল এক প্রান্তে মাচার উপরে লাউ লতাইয়া উঠিয়াছে, আর এক দিকে তুলসীতলা | সৃর্্যান্তের নিস্তরঙ্গ গঙ্গায় নৌকা! ভাসাইয়! দিয়া গঙ্গার পশ্চিম পারের শোভা যে দেখে নাই সে বাংলার সৌন্দর্য্য দেখে নাই বলিলেও হয়। এই পবিত্র শান্তিপূর্ণ অনুপম সৌন্দধ্যচ্ছবির বর্ণনা সস্তবে না। এই স্বর্ন মান সন্ধ্যালোকে দীর্ঘ নারিকেলের গাছগুলি, মন্দিরের চূড়া, আকাশের পটে আঁকা নিস্তব্ধ গাছের মাথাগুলি, গ্থিরজলের উপরে লাবপ্যের মত সন্ধ্যার আভা-_ন্ুুমধুর বিরাম, নির্বাপিত কলরব, অগাধ শান্তি-সে সমস্ত মিলিয়া নন্দনের একখানি মরীচিকার মত ছায়াপথের পরপারবত্তী সুদুর শান্তি-নিকেতনের একখানি ছবির মত *শ্চিম দিগন্তের ধার-টুকৃতে আ্বাকা দেখা যায়। ক্রমে সন্ধ্যার আলো! মিলাইয়! যায়, বনের মধ্যে এবিকে ওদিকে এক একটী করিয়া প্রদীপ সরোজিনী প্রয়াণ । ৮৯ জলিয়৷ উঠে, সহসা দক্ষিণের দিক হইতে একটা বাতাস উঠিতে থাকে-_ পাতা ঝর্ঝর্‌ করিয়া কীপিয়। উঠে, অন্ধকারে বেগবতী নদী বহিয়া যাঁয়, কুলের উপরে 'অবিশ্রাম তরঙ্গ আঘাতে ছল্ছল্‌ করিয়া শব্দ হইতে থাঁকে-_ আর কিছু ভাল দেখা যায় না, শোন! যায় না__কেবল ঝিঝি পোকার 'শব্ব উঠে__-আর জোনাকিগুলি অন্ধকারে জলিতে নিভিতে থাকে । আরো! রাত্রি হয়। ক্রমে কৃষ্ণপক্ষের সপ্তমীর চাদ ঘোর অন্ধকার অশথ গাছের মাথার উপর দিয়া ধীরে ধীরে আকাশে উঠিতে থাকে। নিয়ে বনের শ্রেণীবদ্ধ অন্ধকার, আর উপরে ম্লান চন্দ্রের আভা । খানিকটা আলো! অন্ধকার-ঢালা গঙ্গার মাঝখানে একটা জায়গায় পড়িয়া তরঙ্গে তরঙ্গে ভাঙিয়া ভাঙিয়া যার। ও-পারের অস্পষ্ট বনরেখার উপর আর-খাঁনিকট! আলো পড়ে-_সেই টুকু আলোতে ভাল করিরা কিছুই' দেখা যায় না; 'কেবল ও-পারের স্থদুরতা ও অন্ফ,টতাকে মধুর রহস্তময় করিয়া তোলে । এ-পারে নিদ্রার রাজ্য আর ও-পারে স্বপ্নের দেশ বলিয়া মনে হইতে থাকে । এই থে সব গঙ্গার ছবি আমার মনে উঠিতেছে, এ কি সমস্তই এইবার- কার ষ্টামার-যাত্রার ফল? তাহা নহে। এ সব কত দ্িনকার কত ছবি, মনের মধ্যে আকা রহিয়াছে । ইহারা বড় সুখের ছবি, আজ ইহাদের চারিদিকে অএ্রজলের স্টিক দিয়! বীঁধাইয়া রাখিয়াছি। এমনতর শোভা আর এ জন্মে দেখিতে পাইব না। মেরামত শেষ হইয়া গেছে--যাত্রীদের শ্নানাহার হইয়াছে, বিস্তর কোলাহল করিয়া নোউর তোলা হইতেছে। জাহাজ ছাড়া হইল। বামে মুচিথোলার নবাবের প্রকাণ্ড খাচা। ডান দিকে শিবপুর বটানিঞ্কেল গার্ডেন। হত দক্ষিণে যাইতে লাগিলাম, গঙ্গা ততই চওড়া হইতে লাগিল। বেলা ছুটো তিনটের সময় ফলমূল সেবন করিয়া সন্ধ্যা 'বেলায় কোথার গিয়। থাঁমা বাইবে তাহারি আলোচনায় প্রবৃত্ত হওগ! 'গেল। আমাদের দক্ষিণে বামে নিশান উড়াইয়া অনেক জাহাজ গেল ৯০ বিচিত্র প্রবন্ধ । | আসিল -_তাহাদের সর্ব গতি দেখিয়া আমাদের উৎসাহ আরও বাড়িয়া উঠিল। বাতাস যদিও উল্টা বহিতেছে, কিন্তু আ্োত আমাদের অনুকূল। আমাদের উৎসাহের সঙ্গে সঙ্গে জাহাজের বেগও অনেক বাড়িয়াছে। জাহাজ বেশ ছুলিতে লাগিল। দূর হইতে দেখিতেছি এক একটা মস্ত ঢেউ ঘাড় তুলিয়া আমিতেছে, আমরা! সকলে আনন্দের সঙ্গে তাহার জন্য প্রতীক্ষা করিয়া আছি-_তাঁহাঁর৷ জাহাজের পাশে নিক্ষল রোষে ফেনাইয়৷ উঠিয়৷ গর্জন করিয়া জাহাঁজের লোহার পাঁজরায় সবলে মাথা' চুকিতেছে, হতাশ্বীস হইয়া দুই পা পিছাইয়! পুনশ্চ আসিয়া আঘাত করিতেছে, আমরা সকলে মিলিয়া তাহাই দেখিতেছি। হঠাৎ দেখি কর্তী বাবু মুখ বিবর্ণ করিয়া কর্ণধারের কাছে ছুটিয়া যাইতেছেন। হঠাঁং রব উঠিল, এই 'এই- রাখ. রাখ, থাম্‌ থাম্‌। গঙ্গার তরঙ্গ অপেক্ষা গ্রচণ্ডততর বেগে আমাদের সকলেরই হ্বদগ্ন তোলপাঁড় করিতে লাগিল । চাহিয়া দেখি সম্মুখে আমাদের জাহাজের উপর সবেগে একটা লোহার বয়া ছুটিয়া আসিতেছে, অর্থাৎ আমরা বয়ার উপরে ছুটিয়া চলিতেছি। কিছুতেই সামলাইতে পারিতেছি না। সকলেই মন্ত্মুগ্ধের মত বয়াটার দিকে চাহিয়া আছি। সে জিনিষটা মহিষের মত ঢু উদ্ভত করিয়া আসিতেছে । অবশেষে ঘা মারিল। (৩) কোথার সেই অবিশ্রীন জলকল্লোল, শত লক্ষ তরঙ্গের অহৌরাত্র উৎসব, কোথায় সেই অবিরল বনশ্রেণী, আঁকাশের সেই অবারিত নীবিমা, ধরণীর নবযৌবনে পরিপূর্ণ হৃদযোক্ছাসের ন্তায় সেই অনন্তের দিকে চির-উচ্ছ'সিত বিচিত্র তরুতরঙ্গ, কোথায় সেই প্ররুতির শ্ঠামল ন্েহের মধ্যে প্রচ্ছন্ন শিশু লোকালয়গুলি-_-উদ্দে দেই চিরস্থির আকাশের নিম্নে সেই চিরওঞ্চলা আোতম্বিনী !__চিরস্তন্বেরে সহিত চিরকোলাহলময়ের, সর্ধত্রসমানের সহিত “চিরবিচিত্রের, নির্বিকারের, সরোজিনী প্রয়াণ ৯১ সহিত চিরপরি বর্তনশীলের অবিচ্ছেদ প্রেমের মিলন কোথায়! এখানে কুরুকিতে ই টেতে, ধূলিতে নাসারদ্ধে, গাড়িতে ঘোড়াতে হৃঠ-যোগ চলিতেছে । এখানে চারিদিকে দেয়ালের সহিত দেয়ালের, দরজার সহিত হুড়কার, কড়ির সহিত বরগার চাঁপকাঁনের সহিত বোঁতাঁমের আটাআটি মিলন। পাঠকেরা বোঁধ করি বুঝিতে পারিরাছেন, এতদিন সরেজমিনে লেখা চলিতেছিল _-সরে-জমিনে না হউক সরে-জলে বটে-এখন আমরা ডাডার ধন ডাঙার ফিরিয়া আসিয়াছি। এখন সেখানকার কথা এখানে, পূর্বেকার কথা পরে লিখিতে হইতৈছে--ন্থতরাঁং এখন যাহা লিখি তাহার ভূলচুকের জন্য দায়ী হইতে পারিব না। এখন মধ্যাহন। আমার সমুখে একটা ডেক্স, পাঁপোঁষে একটা কালে! মোটা কুকুর ঘুমাইতেছে - বারান্দায় শ্িকৃলি-বীধা একটা বাদর লেজের উকুন বাছিতেছে, তিনটে কাক আলিসাঁর উপরে বসিয়া অকারণ টেঁটা- ইতেছে এবং একএক-বাঁর খপ্‌ করিয়া বাঁদরের ভুক্তাবশিষ্ট ভাঁত এক- চঞ্চু লইয়া ছাতের উপরে উড়িপ্না বপিতেছে। ঘরের কোণে একটা প্রাচীন হর্দ্মোনিয়ম* বাছ্ের মধ্যে গোটাকতক ইছুর খটু খটু করিতেছে। কলিকাতা! সহরের ইমারতের একটা শুঞ্ক কঠিন কামরা, ইহারি মধ্যে আমি গঙ্গার আবাহন করিতেছি_-তপঃক্ষীণ জহু,মুণির শু পাকস্থলীর অপেক্ষা এখানে ঢের বেণী স্থান আছে। আর, স্থান-সন্কীর্ণতা বলিয়। কোনো পদার্থ প্রকৃতির মধ্যে নাই। সে আমাদের মনে। দেখ-_বীঞ্জের মধ্যে অরণ্য, একটী জীবের মধ্যে তাহার অনন্ত বংশ পরম্পরা । ক্জামি যে এ ট্টীফেন সাহেবের এক বোতল ব্লুব্রাক কালী কিনিয়া আনিরাছি, উহারি প্রত্যেক ফৌটার মধ্যে কত পাঠকের স্ুযুপ্তি মাঁদার-টিংচার আকারে বিরাজ করিতেছে । এই কালীর বোঁতল দৈবক্রমে যদি সুযোগ্য হাতে পড়িত তবে ওটাকে দেখিলে ভাঁবিতান, স্থষ্টির পুর্ববন্তী অন্ধকারের এ শপ সিপাাসি পাখিপাস্দিপাসটি পিসি পালানো পাস্পিী পিপাসা স্পিপা নস্ট ৯২ বিচিত্র প্রবন্ধ মধ্যে এই বিচিত্র আলোকিময় অমর জগৎ যেমন প্রচ্ছন্ন ছিল, তেমনি এ এক বোতল অদ্ধকারের মধ্যে কত আলোকময় নৃতন স্ষ্ট প্রচ্ছন্ন আছে। একটা বোতল দেখিয়াই এত কথা মনে উঠে, যেখানে '্টীফেন সাহেবের কালীর কারখানা সেখানে দীড়াইয়া একবার ভাবিলে বোধ করি মাথা ঠিক রাখিতে পারি না। কত পুঁথি, কত চটি, কত যশ, কত কলঙ্ক, কত জ্ঞান, কত পাগলামী, কত ফাঁসির হুম, যুন্ধের ঘোধণা, প্রেমের লিপি কালো কালো হইয়া আ্োত বাহিয়৷ বাহির হইতেছে! এ স্রোত যখন সমস্ত জগতের উপর দিয়া বহিয়া গিয়াছে_তখন--দুর হউক্‌ কালী যে ক্রমেই গড়াইতে চলিল, ষ্টীফেন সাহেবের সমস্ত কারখানাটাই দৈবাৎ যেন উপ্টাইয়া পড়িয়াছে ;-_এবারে ব্লটিং কাগজের কথা মনে পড়িতেছে।--আোত ফিরানো যাক। এস এবার গঙ্গার শোতে এস। সত্য ঘটনার ও উপন্যাসে প্রভেদ আছে, তাহার সাক্ষ্য দেখ, আমাদের জাহাজ বয়ায় ঠেকিল তবু ডুবিল ন1-_-পরম বীরত্ব সহকারে কাহাকেও উদ্ধার করিতে হইল না-_ প্রথম পরিচ্ছেদে জলে ডুবিয়া মরিয়া ষড়বিংশ পরিচ্ছেদে কেহ ডাঙায় বাঁচিয়া উঠিল না। না ডুবিয়! সুখী হইয়াছি সন্দেহ নাই, কিন্তু লিখিয়া সুখ হইতেছে না । পাঠকেরা নিশ্চয়ই অত্স্ত নিরাশ হইবেন, কিন্তু আমি যে ডুবি নাই সে আমার দোষ নর়,* নিতান্তই অদৃষ্টের কারখানা । অতএব আমার প্রতি কেহ না রুষ্ট হন এই আমার প্রার্থনা । মরিলাম না বটে কিন্তু ঘমরাঁজের মহিষের কাছ হইতে একটা রীতিমত টু খাইর| ফিরিলাম। সুতরাং সেই ঝাঁকানীর কথাটা স্মরণফলকে খোদিত হইয়া! রহিল। খানিকক্ষণ অবাঁক্‌ ভাবে পরস্পরের মুখ চাওয়া- চাওয়ি কর। গেল-_-সকলেরই মুখে একভাঁব, সকলেই বাক্যব্য়্ করা নিতান্ত বাহুল্য জ্ঞান করিলেন। বৌঠাকক্ণ বৃহৎ একটা চৌকির মধ্যে কেমন একরকম হুইমা বপিয়। রহিলেন। তীঁহার ছুইটা ক্ষুদ্র আনুষঙ্গিক সরোজিনী প্রয়াণ । ৯৩ আমার ছুই পার্থ জড়াইয়৷ ফীড়াইয়া রহিল। দাঁদা কিয়ৎক্গণ ঘন ঘন গৌফে তা” দিয়া কিছুই দিদ্ধান্ত করিতে পাঁরিলেন না । কর্তাবাবু রুষ্ট হইয়া! বলিলেন, “সমস্তই মাঝির দোষ,” মাঝি কহিল, তাহার অধীনে যে ব্যক্তি হাল ধরিয়াছিল তাহার দোধ। সে কহিল-হালের দোঁষ। হাঁল কিছু না বলিয়া অধোবদনে সটান জলে ডুবিয়া রহিল-_গঙ্গা দ্বিধা হইয়া তাহার লজ্জা রক্ষা করিলেন । এই খানেই নোঙর ফেল! হইল। যাত্রীদের উৎসাহ দেখিতে দেখিতে হাস হইয়া গেল_-সকাল বেলায় যেমনতর মুখের ভাব, কল্পনার এঞ্জিন- গঞ্জন গতি ও আওয়াজের উৎকর্ষ দেখা গিয়াছিল, বিকালে ঠিক তেমনটি দেখা গেল না। আমাদের উৎসাহ নোউরের সঙ্গে সঙ্গে সাত হাত জলের নীচে নামিয়া পড়িল। একমাত্র আনন্দের বিষয় এই ছিল যে, আমা. দিগকেও অতদুর নামিতে হয় নাই। কিন্তু সহসা তাহারই সন্তাবন! সম্বন্ধে চৈতন্য জন্মিল। এ সম্বদ্ধে আমরা যতই তলাইয়া ভাবিতে লাগিলাম, ততই 'আঁমাদের তলাইবার নিদারুণ সম্ভাবনা মনে মনে উদয় হইতে লাগিল। এই সময় দিনমণি অস্তাঁচলচুড়াবলম্মী হইলেন। বরিশালে. যাইবার পথ অপেক্ষা বরিশীলে না যাইবার পথ অত্যন্ত সহজ ও সংঙ্গিপ্ত এ বিষয়ে চিন্তা করিতে করিতে দাঁদা জাহাজের ছাতের উপর পায়চারি করিতে লাগিলেন। একটা মোটা কাছির কুওলীর .উপর বসিয়! এই ঘনীভূত অন্ধকারের মধ্যে হাম্তকৌতুকের আলো! জালাইবার চেষ্টা করিতে, লাগিলাম--কিস্তু বর্যাকালের দেশলাই কাঠির মত সে গুল ভাল করিয়া, জলিল না। অনেক ঘর্ষণে থাকিয়৷ থাকিয়া অমনি এক্টু একটু মক মারিতে লাগিল। যখন সরোজিনী জাহাজ তীহার যাত্রীনমেত গঙ্গা- গর্ভের পঙ্কিল বিশ্রীম-শয্যায় চতুর্ববর্গ লাঁভ করিয়াছেন, তখন খবরের কাগজের 9৪ ৪০০1৩।)এর কোটায় এক্টা মাত্র প্যারাগ্রাফে চারিটা মাত্র লাইনের মধ্যে কেমন সংক্ষেপে নির্বাণ মুক্তি লাভ করিব সে বিষয়ে পিপি ৯৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । ৮ পম্পপীিপাাশিপাপিশস পে পস্পিপাসি পাস পটপসপপা পাপা সিপাপপসপিপাসপপা সস । সপসসপাপাস্সপপসপত সস শপ পিসিপাস্পিপািশ সপ পিশস্পিসীপেসপীরসিপিপীসিপাঁী তি 'নাঁনা কথ! অনুমান করিতে লাগিলাম। এই সম্বাদটা এক চামচ গরম চাঁয়ের সহিত অতি ক্ষুদ্র একটা বটিকার মত কেমন অবাধে পাঠকদের গলা দিয়া নামিয়া যাইবে, তাহা করনা কর! গেল। বন্ধুর! বর্তমান 'লেখকের সথ্ধন্ধে বলিবেন__“আহা কত বড় মহদাশয় লোকটাই গেছেন গো১এমন আর হইবে না!” এবং লেখকের পুজনীয়া ত্রাতিজায়া সম্বন্ধে বলিবেন-__-“আহা, দোষে গুণে জড়িত মানুষটা ছিল-যেমন তেমন হোক্‌ তবুত ঘরটা জুড়ে ছিল!” ইত্যাদি ইত্যা্ি। জাতার মধ্য হইতে যেমন বিমল শুভ্র ময়দা পিষিয়া বাহির হইতে থাকে, তেমনি বৌঠাকুরাণীর চাঁপা ঠোঁট জোড়ার মধ্য হইতে হাসিরাশি ভাঙিয়া বাহির হইতে লাগিল । আঁকাশে তারা উঠিল - দক্ষিণে বাতাস বহিতে লাগিল। খালাসীদের নমাজ পড়া শেষ হইয়া গিরাছে। একজন ক্ষ্যাপা খালাসী তাহার তারের যন্ত্র বাজাইয়া, এক মাথা 'কৌকড়া ঝাক্ড়া চুল নাড়াইয়!, পরম উৎনাহে গান গাহিতেছে। ছাতের উপরে বিছানায় যে-যেখানে পাইলাম শুইয়া পড়িলাম__মাঝে মাঝে এক একটা অপরিশ্ষট হাই ও স্ুপরিস্কট নাঁসাঁধবনি শ্রতিগোচর হইতে লাগিল। বাঁক্যালাপ বন্ধ। মনে হইল 'যেন একটা বৃহৎ দুঃস্বপ্ন পক্ষী আমাদের উপরে নিস্তন্ধভাবে চাপিয়! আমাদের কয়জনকে কয়টা ডিমের মত তা” দিতেছে । অমি আর থাকিতে পারিলাম না। আমার মনে হইতে লাঁগিল মধুরেণ সমাপয়েৎ। যদি এমনই হয়_-কোন সুযোগে যদি একেবারে কুঠির শেষ কোঠায় আসিয়া পড়িয়! থাকি, যদি জাহাজ ঠিক বৈতরণীর পর পারের ঘাটে গিয়াই থামে__ তবে বাজন! বাজাইরা দাও- চিত্রগুপ্তের মজ.লিষে হাড়ি মুখ লইয়া যেন 'বেরদিকের মত দেখিতে না হই। আর, যদ্দি সে জায়গাটা অন্ধকারই হয় তবে এখান হইতে অন্ধকার সঙ্গে-করিয়া রাণীগঞ্জে কয়লা! বহিয়! লইয়। যাইবার বিড়ম্বনা কেন? তবে বাঁজাও। আমার রুপ ত্রটা সেতারে বঙ্কার দিল। ঝিনি ঝিনি ঝিন্‌ ঝিন্‌ ইমন্‌ কল্যাণ বাঁজিতে লাগিল । সরোঁজনী প্রয়াণ। ৯৫ তাহার পর দিন অনুসন্ধান করিয়া অবগত হওয়৷ গেল, জাহাজের এটা ওটা সেটা অনেক জিনিষেরই অভাব। সে গুলি না থাঁকিলেও জাহাঁজ চলে বটে কিন্তু যাত্রীদের আবশ্যক বুৰিয়া চলে না, নিজের খেয়ালেই চলে। কলিকাঁতি৷ হইতে জাহাজের সরগ্রাম আনিবার জন্ত লোক পাঠা- ইতে হইল। এখন কিছু দিন এই খানেই স্থিতি। গঙ্গার মাঝে মাঝে এক-এক বার না ফাড়াইলে গঙ্গার মাধুরী তেমন উপভোগ করা যায় না। কারণ, নদীর একটা প্রধান সৌন্দর্য গতির সৌনাধ্য। চারিদিকে মধুর চঞ্চলতা, জোয়ার ভাটার আনাগোনা, তরঙ্গের উখান পতন, জলের উপর ছায়ালোকের উৎসব--গঙ্গার মাঝ- খানে একবার স্থির হইয়! না ঈাঁড়াইলে এ সব ভাল করিয়! দেখা যায় না। আর, জাহাজের ইাস-ফ সানি, আগুনের তাপ, খালাসীদের গোলমাল, মারাবদ্ধ দানবের মত দীপ্তনেত্র এগ্সিনের গৌ-ভরে সনশ্বাস খাটুনি, ছুই পাশে অবিশান আবর্িত দুই সহঅবাহু চাকার সরোধ ফেন উদগার- এ সকল, গঙ্গার প্রতি অত্যন্ত অত্যাচার বলিয়া বোধ হয়। তাহা ছাড়া গঙ্গার সৌন্দধ্য উপেক্ষা করিয়া ছুটিয়া চল! কাধ্যতৎপর অতিসভ্য উনবিংশ শতাঁীকেই শোভা পার কিন্তু রসজ্ঞের ইহা সহ হয় না। এ যেন আঁপিসে যাইবার সময় নাকে মুখে ভাত গৌঁজা। অন্নের অপমাঁন। যেন গঙ্গা- বাত্রার একটা সংক্ষিপ্ত সংস্করণ গড়িয়া তোলা । এ বেন মহাভারতের স্ুচিপত্র গলাধঃকরণ করা । আমাঁদের জাহাজ লৌহশৃঙ্খল গলায় বাঁধিয়া খাঁড়া দীঁড়াইরা রহিল। স্রোতম্ষিনী খর-প্রবাহে ভাসিয়া চলিয়াছে। কখন তরঙ্গসঞ্কুল, কণ্পন শান্ত, কোথাও সন্কীর্ণ, কোথাও প্রশস্ত, কোথাও ভাঙন ধরিষাছে, কোথাও চড়া পড়িয়াছে। এক এক জায়গার কুল কিনার। দেখা যায় না। আমাদের সম্মুখে পরপার মেঘের রেখার মত ৰেখা যাইতেছে। চারিদিকে জেলেডিডি ও পাঁলতোল! ন্রেকা। বড় বড় জাহাজ প্রাচীন পৃথিবীর ৯৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । পাপ বুহদাকার সরীস্থপ জলজন্তুর মত ভাসিয়া চলিয়াছে। এখন বেল! পড়িয়া আসিয়াছে । মেয়েরা গঙ্গার জলে গা ধুইতে আসিয়াছে রোদ্‌ পড়িয়া আসিতেছে । বীশবন, খেজুর বন, আম বাগান ও ঝোঁপঝাপের ভিতরে ভিতরে এক একটা গ্রাম দ্রেখা বাইতেছে। ডাঙীয় একটা বাছুর আড়ি করিয়া গ্রীব! ও লাঙ্গুল নানা ভঙ্গীতে আশ্ষালন পূর্বক একটা বড় স্টীমারের সঙ্গে সঙ্গে ছুটিয়াছে। গুটিকতক মানব-সন্তান ডাগায় দাঁড়াইয়া হাততালি দিতেছেন ) যে চণ্দুখানি পরিয়। পৃথিবীতে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন, তাহার বেশী পোষাক পরা আবশ্তক বিবেচনা করেন নাই। ক্রমে অন্ধকার হইয়া আদিল। তীরের কুটীরে আলে! জলিল। সমস্ত দিনের জাগ্রত আলল্ত, সমাপ্ত করিয়া! রাত্রের নিদ্রায় শরীর মন সমর্পণ করিলাম । ১২৯১ যুরোপ-যাত্রী। তখন সুরধ্য অন্তপ্রায়। জাহাজের ছাদের উপর হালের কাছে দাড়িয়ে ভারতবর্ষের তীরের দ্রিকে চেয়ে রইলুম। সমুদ্রের জল সবুজ, তীরের . রেখা নীলাভ, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। সন্ধ্যা রাত্রির দিকে এবং জাহাজ সমুদ্রের মধ্যে ক্রমশই অগ্রসর হচ্চে। ৰামে বোম্বাই বন্দরের এক দীর্ঘরেখ। এখনো! দ্রেখা যাচ্চে ; দেখে” মনে হ'ল আমাদের পিতৃপিতামহের পুর্লাতন জননী সমুদ্রের বহুদূর পধ্যন্ত ব্যাকুলবাহু বিক্ষেপ করে” ডাক্‌চেন, বল্চেন আসন্নরাত্রিকালে অকুল সমুদ্রে অনিশ্চিতের উদ্দেশে যাস্নে! এখনো ফিরে আয় ! ক্রমে বন্দর ছাড়িয়ে গেলুম। সন্ধ্যার মেখাৰৃত দ্যান সমুদ্রের অনন্ত শয্যায় দেহ বিস্তার কর্লে। আকাশে তাঁরা নেই। কেবল দুরে মুরোপ-যাত্রী। ৯৭ লাইট-হাউসের আলো জলে” উঠল) সমুদ্রের শিয়রের কাছে সেই কম্পিত দীপশিখা যেন ভাসমান সন্তানদের জন্তে ভূমিমাতার আঁশঙ্কীকুল জাগ্রত” ৃষ্টি। তখন আমার হৃদয়ের মধ্যে এ গানটা ধ্বনিত হতে লাগল “সাধের তরণী আমার কে দিল তরঙ্গে” ! জাহাজ বোম্বাই বন্দর পার হয়ে গেল। ভাস্ল তরী সদ্ধেবেলা, ভাবিলাম এ জলখেলা, মধুর বহিবে বায়ু ভেসে যাব রঙ্গে ।_- কিন্ত সী-সিকৃনেসের কথা কে মনে করেছিল ! বখন সবুজ জল ক্রমে নীল হয়ে এল এবং তরঙ্গে তরীতে মিলে? গুরুতর আন্দোলন উপস্থিত করে” দিলে, তখন দেখলুম সমুদ্রের পক্ষে জলখেল! বটে কিন্তু আমার পক্ষে নর়। তাবলুম এই বেল! মানে মানে কুঠরির মধ্যে ঢুকে কন্বলটা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়িগে। যথাসত্বর ক্যাবিনের মধ্যে গ্রবেশ করে” কাধ হতে কম্বলটি একটি বিছানার উপর ফেলে” দরজা বন্ধ করে” দিলুম। ঘর অন্ধকার । বুঝ লুম, আলো নিবিয়ে দিয়ে দাদা তার বিছানায় শুয়েচেন। শারীরিক দুখ নিবেদন করে” একটুখানি স্নেহ উদ্রেক কর্বার অভিগ্রায়ে জিজ্ঞাসা কর্লুম "দাদা, ঘুমিয়েচেন কি ?” হঠাৎ নিতান্ত বিজাতীয় মোটা গলার কে একজন হুভ্ম্কার দিয়ে উঠল “ছুজ ছ্যাট!” আমি বন্ুম প্বাসরে! এ ত দাদা নয়” তৎক্ষণাৎ বিনীত অনুতপ্তস্বরে জ্ঞাপন কর্লুম “ক্ষমা করবেন দৈবক্রমে ভুল কুঠরিতে প্রবেশ করেচি।” অপরিচ্চিত কণ্ঠ বল্লে “অল. রাইট্‌!” কম্বলটি পুনশ্চ তুলে নিয়ে কাতর শরীরে সঙ্কুচিত চিত্তে বেরোতে গিয়ে দেখি দরজা খুঁজে পাইনে। বাকা তোরঙ্গ লাঠি বিছানা! প্রভৃতি বিচিত্র জিনিষের মধ্যে খট্‌ খট্‌ শবে হাতড়ে বেড়াতে লাগলুম। ইছুর কলে পড়লে তার মানসিক ভাব কিরকম হয় এই ৯৮ বিচির এবন / েসপিপাসপিস সপপপাপপিশাশিলাপিি শীট শিলী পাসপিপীসপিাদিলাপপাস্িপািপািটি পিসি অবসরে কতকটা বুঝতে পারা যেত, কিন্ত তার সঙ্গে সঘুদ্রপীড়ার সংযোগ হওয়াতে ব্যাপারট! অপেক্ষাকৃত জটিল হয়ে পড়েছিল। এদিকে লোকটা কি মনে করচে! অন্ধকারে পরের ক্যাবিনে ঢুকে বেরোবার নাম নেই--খটু খট্‌ শব্দে দশ মিনিট কাল জিনিষপত্র হাতড়ে বেড়ান_-এ কি কোন সদ্বংশীয় সাধুলোকের কাজ! মন যতই ব্যাকুল শরীর ততই গলদ্ঘর্ম এবং কগাগত অস্তরিন্দ্িয়ের আক্ষেপ উত্তরোত্তর অবাধ্য হয়ে উঠচে। অনেক অনুসন্ধানের পর বখন হঠাৎ ছার উদ্ঘাটনের গোলকটি, সেই মস্থণ চিক্কণ শ্বেতকাচনিম্মিত দ্বারকর্ণটি হাতে ঠেকল, তখন মনে হল এমন প্রিরম্পর্শস্ুখ বহুকাল অনুভব করা হয় নি। দরজা খুলে বেরিয়ে পড়ে” নিঃসংশয়চিত্তে তার পরবন্তা ক্যাবিনের দ্বারে গিরে উপস্থিত। গিরেই দেখি, আলো জ্বলচে ; কিন্ত মেজের উপর পরিত্যক্ত গাউন্‌ পেটিকোট প্রভৃতি স্ত্রীলোকের গাত্রা- বরণ বিক্ষিপ্ত। আর অধিক কিছু দৃষ্টিপথে পড়বার পূর্বেই পলায়ন করলুন। প্রচলিত প্রবাদ অনুনারে বার বার তিনবার ভ্রম করবার অধিকার সকলেরই আছে, কিন্তু তৃতীয়বার পরীক্ষা করতে আমার আর সাহন হল না, এবং সেরূপ শক্তিও ছিল না। অবিলম্বে জাহাজের ছাতে গিয়ে উপস্থিত হলুম। সেখানে বিহ্বলচিত্তে জাহাজের কাঠরার পরে ঝুঁকে পড়ে” আভ্যন্তরিক উদ্বেগ এক দফা লাঘব কর! গেল। তার পরে বহুলাঞ্রিত অপরাধীর মত আস্তে আস্তে কম্বলটি গুটিয়ে তার উপর লজ্জিত নতমস্তক স্থাপন করে” একটি কাঠের বেঞ্চিতে শুয়ে গড়লুম। কিন্তকি সর্বনাশ! একার কন্বল! এতআমার নয় দেখছি ! যে স্থুখনুপ্ত বিশ্বস্ত ভদ্রলোকটির ঘরের মধ্যে রাত্রে প্রবেশ করে” দশমিনিট- কাঁল অনুসন্ধান কাধ্যে ব্যাপৃত ছিলুম নিশ্চয় এ তারই । একবার ভাবলুম ফিরেচু গিয়ে পিচুপি তার কথ্ধল স্বস্থানে রেখে আমারটি নিয়ে আমি; সা, সপ পপ রুরোপ-যাত্রী । ৯৯ কিন্তু যদি তার ঘৃম ভেঙে যায়! পুনর্ধার বদি তার ক্ষমা প্রার্থনা করবার আবশ্যক হয় তবে সেকি আর আমাকে বিশ্বাস করবে! যদি বা করে, তবু এক রাত্রের মধ্যে দু'বার ক্ষমা প্রার্থনা! করলে নিদ্রাকাতর বিদেশীর ুষ্টায় সহিষ্তার প্রতি অতিমাত্র উপদ্রব করা হবে না কি!__আরো একটা ভয়ঙ্কর সম্ভাবনার কথা মনে উদয় হল। দৈববশতঃ দ্বিতীয়বার 'যে ক্যাবিনের দ্বারে দিয়ে পড়েছিলুম তৃতীপবারও যদি ত্রমক্রমে সেইখানে গিয়েই উপস্থিত হই এবং প্রথম ক্যাবিনের ভদ্রলোকটির কম্বলটি সেখানে (রেখে সেখানকার একটি গাত্রাচ্ছাদন তুলে নিয়ে আসি তাহলে কিরকমের একটা রোমহর্ষণ প্রযাদ-প্রহেলিক! উপস্থিত হয়! আর কিছু নয়, পরদিন প্রাতে আমি কার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে যাৰ এৰং কে আমাকে ক্ষমা করবে! প্রথম ক্যাবিনচারী হতবুদ্ধি ভদ্রলোকটিকেই বা কি ব্ল্ব এবং দ্বিতীর ক্যাবিনবাপিনী বজ্রাহতা ভদ্ররমণীকেই বা কি 'বোঝাব ! ইত্যাকার বহুবিধ দুশ্চিন্তায় তীব্রতাম্কুটবাসিত পরের কম্বলের উপর কা্ঠাসনে রাত্রি বাঁপন করলুম । ২৩ আগষ্ট। আমার স্বদেণীর সঙ্গী বন্ধুটি .সমস্ত রাত্রির সুখনিডা- বসানে প্রাতঃকালে অত্যন্ত প্রফুল্ল পরিপুষ্ট সুস্থ মুখে ডেকের উপর দর্শন দিলেন। আমি তাঁর দুই হস্ত চেপে ধরে” বরুম, ভাই, আদার ত এই অবস্থা !-_শুনে তিনি আমার বুদ্ধিবৃত্ভতির উপর কলঙ্ক আরোপণ করে, হাঁস্যমহকারে এমন ছুটো৷ একটা বিশেবণ প্রয়োগ করলেন যা বিদ্যালয় পরিত্যাগের পর থেকে আর কখনো শোনা হয়নি। সমস্ত রজনীর দুঃখের পর প্রভাতের এই অপমানটাও নিরুত্তরে সহা কর্লুম। অবশৈষে তিনি দয়াপরবশ হয়ে আমার ক্যাবিনের ভূত্যটকে ডেকে দিলেন। তাকেও আবার একে একে সমস্ত ঘটনাটি খুলে বল্তে হল। প্রথমে সে কিছুই বুঝতে পারলে না, মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। সে বেচারার 'দোঁষ দেওয়। যাঁয় না। তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতায় নিঃসন্দেহ এরকম নিযে বিচিত্র প্রবন্ধ । ঘটনা আর কখনো ঘটেনি, সুতরাং শোন্বামাত্রই ধারণা হওয়া কিছু কঠিন বটে। অবশেষে বন্ধুতে আমাতে মিলে” যখন অনেকটা পরিক্ষার, করে” বোঝান গেল, তখন সে ধীরে ধীরে সমুদ্রের দিকে একবার মুখ ফেরালে এবং ঈষৎ হাসলে ; তার পর চলে” গেল। কম্বলের কাহিনী অনতিবিলম্বেই সমাপ্ত হল। কিন্তু সী-সিক্নেস্‌ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পেতে লাগল। সে ব্যাধিটার যন্থণা অনভিজ্ঞ স্থলচরদের কিছুতে বোঝানো বেতে পারে না । নাড়িতে ভারত- বর্ষের অন্ন আর তিলমাত্র অবশিষ্ট রইল না । বুরোপে প্রবেশ কর্বার পূর্বের সমুদ্র এই দেহ হতে ভারতবর্ষটাকে ঘেন ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিরে একে- বারে সাফ করে” ফেলবার চেষ্টা করচে। ক্যাবিনে চার দিন পড়ে” আছি ।, ২৬ আগষ্ট। শনিবার থেকে আর আজ এই মঙ্গলবার পধ্যন্ত কেটে গেল। জগতে ঘটন। বড় কম হ্য়নি-_্র্্য চারবার উঠেছে এবং তিনবার অন্ত গেছে; বৃহৎ পৃথিবীর অসংখ্য জীব দত্তধাবন থেকে দেশ-উদ্ধার পর্য্যন্ত বিচিত্র কর্তবোর মধ্যে দিয়ে তিনটে দিন মহা ব্যস্তভাবে অতিবাহিত করেচে-_জীবনসংগ্রীম, .প্রাকৃতিক নির্বাচন, আত্মরক্ষা, বংশরক্ষা প্রভৃতি জীবরাজ্যের বড় বড় ব্যাপার সবেগে চল্ছিল-_কেবল আমি শধ্যাগত জীবন্মত হ'য়ে পড়ে” ছিলুম। আধুনিক কবিরা কখনও মুক্তুকে অনন্ত কখনও অনস্তকে মুভর্ত আখ্যা দিয়ে প্রচলিত ভাষাকে নানাপ্রকার বিপরীত ব্যায়াম-বিপাকে প্রবৃত্ত করান্। আমি আমার এই চারটে দিনকে বড় রকমের একটা মৃদ্র্ বল্ব, না এর প্রত্যেক মুহর্তকে একটা ঘুগ বলব স্থির' কর্‌তে পারচিনে । যাই হোঁক্‌ কষ্টের সীম! নেই। মানুষের মত এত বড় একটা উন্নত জীব যে সহসা এতটা উতকট ছুঃখ ভোগ করে তার একটা মহৎ নৈতিক কিম্বা আধ্যাত্মিক কারণ থাঁকাই উচিত ছিল) কিন্তু জলের উপরে কেবল খানিকটা ঢেউ ওঠার দরুণ জীবাস্মার এতাধিক পীড়া যুরোপ-যাত্রী। ১০১ নিতান্ত অন্যায় অসঙ্গত এবং অগৌরবজনক বলে” বোধ হয়। কিন্তু জাগতিক নিয়মের প্রতি দোষারোপ করে কোন ন্ুখ নেই, কারণ, সে নিন্দাবাদে কারে! গাঁয়ে কিছু ব্যথা বাঁজে না এবং জগৎ-রচনার তিলমাত্র সংশোধন হয় না! । যন্তণাশব্যার অচেতনপ্রায় ভাবে পড়ে আছি। কখন কখন ডেকের উপর থেকে পিয়ানোর সঙ্গীত মুছু মুছ্ব কর্ণে এসে প্রবেশ করে, তথন স্মরণ হয়, আমার এই সঙ্ধীর্ণ শয়ন-কারাগারের বাইরে সংসারের নিত্য আননদক্রোত সমভাবে প্রবাহিত হচ্চে। বহুদুরে ভারতবর্ষের পূর্ব সীমায় আমার সেই সঙ্গীতধবনিত স্লেহমধুর গৃহ মনে পড়ে। স্তখস্বাস্থাসৌন্ন্যময় জীবজগৎকে অতিদুরবন্তা ছারারাজ্যের মত বোধ হ্য়। মধ্যের এই সুদীর্ঘ মরুপথ অতিক্রম করে" কখন্‌ সেখানকার জীবন-উৎসবের মধ্যে ফিরে ঘেতে পারব, এই কথাই কেবল ভাবি। মঙ্গলবার প্রাতে যখন শরীরের মধ্যে প্রাণটা ছাড়া আর ভৌতিক পদার্থ কিছুই অবশিষ্ট ছিল না, তখন আমার বন্ধু অনেক আশ্বাস দিয়ে আমাকে জাহাজের “ডেক্‌” অর্থ।ৎ ছাদের উপর নিয়ে গেলেন। সেখানে লম্বা বেতের চৌকিটির উপর পা ছড়িয়ে বসে” পুনর্ধার এই মর্ত্য পুথিবীর স্পর্শ এবং নব্জীবনের আন্বাদ লাভ করা গেল। | জাঁহাঁজের বাত্রীদ্ের বর্ণনা কর্তে চাইনে। অতি নিকট হ'তে কোন মসীলিপ্ত লেখনীর স্ুচ্যগ্রভাগ যে ভাবের প্রতি তীক্ষ লক্ষ্য স্থাপন করতে পারে এ কথা তার! স্বপ্নেও না মনে করে' বেশ বিশ্বন্তচিত্তে ডেকের উপর বিচরণ করচে, টুংটাং শব্দে পিয়ানো বাজাচ্ছে, বাজি রেখে হারজিং খেলছে, ধুমশালার় বসে” তাস পিটচ্চে ; তাদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমর! তিন বাঙালী তিন লম্বা চৌকিতে জাহাজের একটি প্রান্ত সম্পূর্ণ অধিকার করে, অবশিষ্ট জনগণের প্রতি অত্যন্ত গৰাস্তবৃষ্টপাত করে? থাকি। ১০২ বিচিত্র প্রবন্ধ । জাহাজে বন্ধুটির সঙ্গে দীর্ঘ দিন দুঙনে মুখোমুখি চৌকি টেনে বসে” পরম্পরের স্বভাব চরিত্র জীবনবৃত্তান্ত এবং স্ব্টির যাবতীয় স্থাবর জঙ্গম এবং হুল ও স্থুল সত্তা সম্বন্ধে যার যা-কিছু বক্তব্য ছিল সমস্ত নিঃশেষ করে” ফেলেচি। আমার বন্ধু চুরোটের ধোঁয়া এবং বিবিধ উডভীয়মান. কল্পনা একত্র মিশিয়ে সমস্তদিন অপূর্ব ধূমলোক স্যজন করেচেন। সেগুলোকে যদি মন্ত একটা ফুলো রবাঁরের থলির মধ্যে বেঁধে রাখ বার' কোন সুযোগ থাকৃত তা হলে সমস্ত মেদিন'কে বেলুনে চড়িয়ে একেবারে ছায়াপথের দিকে বেড়িয়ে নিয়ে আসা যেতে পারত। | একদিকে বন্ধুর যেমন কাব্যাকাঁশে উধাও হয়ে ওড়বার উগ্ঘন, অন্ঠদিকে তেম্নি তন্ন তন্ন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের প্রবৃন্তি। কিন্তু আক্ষেপের বিষয়, এই অনুসন্ধানের প্রবৃত্তিটা অধিকাংশ সচপ্নেই তার চুরোটের পশ্চাতে ব্যাপৃত থাকে । তার তামাকের থলি, সিগারেটের কাগজ এবং দেশালাইয়ের বাক্স মুহূর্তে মুহুর্তে হারাচ্চে, অসম্ভব স্থানে তার সন্ধান হচ্চে এবং সম্ভব স্থান থেকে তাকে পাওয়। যাচ্চে। পুরাণে পড়া যায়, ইন্দ্রের একটি প্রধান কাজ হচ্চে, ধিনি যজ্ঞ করেন বিপ্ন ঘটিয়ে তার যক্ঞনাশ করা, যান তপস্যা করেন অপ্দরী পাঠিয়ে তার তপস্তা ভঙ্গ করা । আমার বোধ হয় সেই পরশ্রীকাতর ইন্দ্র আমার বন্ধুর বৃদ্িবৃত্তিকে সর্বঘাই বিক্ষিপ্ত করে" রাখ্বার অভিপ্রায়ে ভার কোন এক সুচতুরা কিন্নরীকে তামাকের থলিরূপে আমার বন্ধুর পকেটের মধ্যে প্রেরণ করেচেন। ছলনাপ্রিয় ললনার মত তীর পিগারেট মুহুমুহ কেবলি লুকঝৌচ্চে এবং ধর! দ্িচ্চে এবং তাঁর চিত্তকে অহণিণি উদ্ভ্রান্ত করে? তুল্চে। আমি তাকে বারম্বার সতর্ক করে" দিয়েছি যে, বদি তীর মুক্তির কোন ব্যাঘাত থাকে সে তীর চুরোট। মহধি ভরত মৃত্যুকালেও হরিণ- শিশুর প্রতি চিত্তনিবেশ করেছিলেন বলে পরজন্মে হরিণশাবক হ'ব ন্মগ্রহণ করলেন। আমার সর্বদাই আশঙ্কা হয়, আমার বন্ধু জন্মান্তরে, যুরোপ-যাত্রা । ১০৩ বন্মদেশীয় কোন্‌ এক ক্বকের কুটারের সন্গুখে মন্ত একটা তামাকের ক্ষেত হয়ে উদ্ভূত হবেন। বিনা প্রমাণে তিনি শান্পের এ সকল কথা বিশ্বাস করেন না, বরঞ্চ তর্ক করে” আমারও সরল বিশ্বাস নষ্ট করতে চান এবং আমাকে পর্যন্ত চুরুট ধরাতে চেষ্টা করেন, কিন্তু এ পর্য্যন্ত কৃতকাধ্য হ'তে পারেন নি। ২৭। ২৮ আগষ্ট। দেবান্ুরগণ সমুদ্র মন্থন করে? সমুদ্রের মধ্যে যা কিছু ছিল সমস্ত বাহির করেছিলেন। সমুদ্র দেবেরও কিছু করতে পারলেন না, অস্থরেরও কিছু করতে পারলেন না, হতভাগ্য দুর্বল মানুষের উপর তাঁর প্রতিশোধ তুল্চেন। মন্দর পর্বত কোথায় জানিনে এবং শেষ নাগ তদবধি পাতালে বিশ্রাম করচেন, কিন্তু সেই সনাতন মন্থনের ঘৃর্ণী-বেগ যে এখনো সমুদ্রের মধ্যে রয়ে গেছে তা' নরজঠরধারীমাত্রেই অনুভব করেন। ধীরা করেন না তারা বোঁধ করি দেবতা অথবা অস্গুরবংশীয় । আমার বন্ধুটিও শেষোক্ত দলের অর্থাৎ তিনিও করেন না। আমি মনে মনে তাতে ক্ষন হয়েছিলুম। আমি যখন বিনঘভাবে বিছানায় পড়ে” পড়ে” অনবরত পূর্বোক্ত শাস্তীয় বর্ণনার সত্যতা সশরীরে সপ্রমাণ করছিলুম তিনি তখন স্বচ্ছন্দে আহারামোদে নিযুক্ত ছিলেন এটা 'আমার চক্ষে অত্যন্ত অসাধু বলে' ঠেকেছিল। শুয়ে শুয়ে ভাবতুম এক একটা লোক আছে শাক্সবাক্য ব্রহ্ষবাঁক্যও তাদের উপর খাঁটে না। প্রাীন মন্তনের সমসাময়িক কাঁলেও যদি আমার এই বন্ধুটি সমুদ্রের কোথাও বর্তমান থাকৃতেন তাহলে লক্ষী এবং চন্দ্রটর মত ইনিও দিব্য অনাময় সুস্থ শরীরে উপরে ভেসে উঠতেন, কিন্তু মন্থনকানী উভয় পক্ষের মধ্যে কার ভাগে পড়তেন আমি সে কথা বলতে চাইনে। রোগশযা। ছেড়ে এখন ণডেকে” উঠে বসেচি, এবং শরীরের যন্ত্রণা দূর হয়ে গেছে) এখন সমুদ্র এবং আমার সঙ্গীটির সধন্ধে সমস্ত শাস্ত্রীয় ১০৪ . বিচিত্র প্রবন্ধ | স্পস্ট জপ সাকা পপ মত এবং অশাহীর এনোানিনা সন্দৃ ভিবোঠিত হয়েছে। এন বি বর্তমানে আমি তীদের কিছু অধিক পক্ষপাতী হয়ে পড়েছি । এ কটা দিন দিনরাত্রি কেবল ডেকেই পড়ে আছি। তিল মাত্র কাল বন্ধুবিচ্ছেদ হয় নি। ২৯ আগষ্ট। আজ রাত্রে এডেনে পৌছব। সেখানে কাল প্রাতে জাহাজ বদল করতে হবে। সমুদ্রের মধ্যে ছুটি একটি করে পাহাড় পর্বতের রেখা দেখা বাচ্চে। জ্যোত্ম্া রাত্রি। এডেন বন্দরে এসে জাহাজ থাম্ল। আহারের পর রহস্তালাপে প্রবৃত্ত হবার জন্যে আমরা ছুই বন্ধু ছাতের এক প্রান্তে চৌকি ছুটি সংলগ্ন করে” আরামে বসে আছি। নিস্তরঙ্গ সমুদ্র এবং জ্যোত্ন্াবিমুগ্ধ পর্বতবেষ্টিত তটচিত্র আমাদের আলন্ত-বিজড়িত অদ্ধ- নিমীলিত নেত্রে স্বপ্ন-মরীচিকার মত লাগচে। এমন সময় শোনা গেল এখনি নূতন জাহাজে চড়তে হবে। সে জাহাজ আজ রাত্রেই ছাঁড়বে। তাঁড়াতাড়ি ক্যাবিনের মধ্যে প্রবেশপূর্ববক স্তপাকার বিক্ষিপ্ত জিনিষপত্র যেমন তেমন করে, চর্মপেটকের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিয়ে তার উপরে তিন চার জনে ফীড়িয়ে নির্দয় ভাবে নৃত্য করে, বনুকষ্টে চাবি বদ্ধ করা গেল। ভূত্যদের যথাযোগ্য. পুরষ্কার দিয়ে ছোট বড় মাঝারি নানা আকারের বাক্স তোরঙ্গ বিছানাপত্র বহন করে” নৌকা- | রোহণপুর্বক নৃতন জাহাজ “ঘ্যাসীলিয়া” অভিমুখে চন্্ুম। অনতিদুরে মাস্তলকণ্টকিত ম্যাসীলিয়া তার দীপালোকিত ক্যাবিন- গুলিনি সুদীর্ঘশ্রেণীবদ্ধ বাতায়ন উদঘাটিত করে, দিয়ে পৃথিবীর আদিম কালের অতি প্রকাণ্ডকার সহত্রচক্ষু জলজন্তর মত স্থির সমুদ্রে জ্যোংশ্গালোকে নিস্তৰ ভাবে ভাম্চে। সহসা সেখান থেকে ব্যাণ্ড বেজে উঠল। সঙ্গীতের ধ্বনিতে এবং শিস্তব্ধ জ্যোতানিণীথে মনে হ'তে লাগল, অর্দরাত্রে এই 'আরবের উপকূলে আরব্য উপন্টাসের মত কি একটা মায়ার রাও ঘট্‌বে। ষুরোপ যাত্রী । | ১০৫ এ শী পশিশাশিস্পিিপিপাস্পা টা পাপী্াশিপাশীশশিিশাশাশিশিশাস্শিটিশিলী ম্যাদালিরা অঠেলিয়া থেকে বাত? নিয়ে আস্‌চে । কুতুহলী নরনারীগণ ডেকের বারান্দা ধরে সকোতুকে নব্যাতীসমাগম দেখচে। কিন্তু সে রাত্রে নৃতনত্ব সম্বদ্ধে আমাদেরই তিনজনের সব চেয়ে জিত। বহুকষ্টে জিনিষপত্র উদ্ধীর করে” ডেকের উপর যখন উঠ লুম মুহূর্তের মধ্যে এক- জাহাঁজ দৃষ্টি আমাদের উপর বর্ধিত হ'ল। যদি তার কোন চিহ্ন দেবার ক্ষমতা থাঁকত তাহলে আমাদের সর্ধাঙ্গ কটা কালে! ও শীল ছাপে ভরে, যেত। জাহাজটি প্রকাণ্ড। তার সঙ্গীতশীল! এবং ভোজন হের ভিত্তি শ্বেত প্রস্তরে মণ্ডিত। নিছ্যতের আলো এবং ব্যাণ্ডের বাগে উৎসবময়। অনেক রাত্রে জাহাজ ছেড়ে দিলে। ৩০ আগষ্ট । আমাদের এ জাহাজে ডেকের উপরে আর রঃ দোতলা ডেকের মত আছে। সেটি ছোট এবং অপেক্ষাকৃত নির্জন । সেইথানেই আমরা আশ্রপ্স গ্রহণ করলুম। আমার বন্ধুটি নীরব এবং অন্যমনস্ক। আমিও তদ্রপ। দূর সমুদ্র- তীরের পাহাড়গুলো৷ রোদে ক্লান্ত এবং ঝাপসা দেখাচ্ছে, একটা মধ্যাহ্ন- তন্দ্ার ছার! পড়ে? যেন অস্পষ্ট হয়ে এসেচে। খানিকটা ভাঁবচি, খানিকটা লিখি, খানিকটা ছেলেদের খেলা! দেখচি। এ জাহাজে অনেকগুলি ছোট ছোট ছেলে মেয়ে আছে; আজকের দিনে বেটুকু চাঞ্চল্য সে কেবল তাদেরই মধ্যে। জুতো মোজা খুলে" ফেলে" তাঁরা আমাদের ডেকের উপর কমলালেবু গড়িয়ে খেলা করচে-_তাঁদের তিনটি পরিচারিকা বেঞ্চির উপরে বসে" নতমুখে নিস্তব্বভাবে শেলাই করে" যাচ্চে, এবং মাঝে মাঝে কটাক্ষপাতে যাত্রীদের অবস্থা পর্য্যবেক্ষণ করচে। বহুদূরে একআধটা জাহাজ দেখা যাচ্চে। যেতে যেতে মাঝে মাঝে সমুদ্রে এক একটা পাহাঁড় জেগে উঠে, অনুর্বর কঠিন কালো দগ্ধ তপ্ত জনশূন্য । অন্যমনস্ক প্রহরীর মত সমুদ্রের মাঝখানে দীড়িয়ে তারা ১৩৬ | বিচিত্র প্রবন্ধ । ৃ তি উদ্দাসীনভাবে তাঁকিয়ে আছে, সাম্নে দিনে কে আমচে কে যাচ্ছে তার প্রতি কিছুমাত্র খেয়াল নেই। এইরকম করে, ক্রমে সুধ্যান্তের সময় হল। “কাদ্ল্‌ অফ. ইণ্ডোলেন্স” অর্থাৎ আলস্তের আলয়, কুঁড়েমির কেল্লা যদ্দি কাকেও বলা যায় সে হচ্ছে জাহাজ । বিশেষতঃ গরম ধিনে, প্রশান্ত লোহিতসাগরের উপরে । অস্থির ইংরাজতনয়রাও সমস্ত বেলা ডেকের উপর আরাম-কেদারায় পড়ে" ভ্রর উপরে টুপি টেনে দিয়ে দিঝা-স্বপ্নে তলিয়ে রয়েচে। চল্বার মধ্যে কেবল জাহাজ চল্চে এবং তাঁর ছুই পাঁশের আহত নী জল নাড়া পেয়ে অলস আপ- তির ক্ষীণ কলম্বরে পাশ কাটিয়ে কোন মতে একটুখানি মাত্র সরে" বাচ্ে। সুর্য অন্ত গেল। আকাঁশ এবং জলের উপর চমতকার রং দেখা দিয়েচে। সমুদ্রের জলে একটি রেখা মাত্র নেই। দিগন্তবিস্তৃত অটুট জলরাশি যৌবন-পরিপূর্ণ পরিপ্দুট দেহের মত একেবারে নিটোল এবং স্ডোল। এই অপার অখণ্ড পরিপূর্ণতা আকাশের এক প্রান্ত থেকে আঁর এক প্রান্ত পর্যন্ত থম্থম্‌ করচে। বৃহৎ সমুদ্র হঠাঁৎ যেন এমন একটা জায়গায় এসে থেমেচে যার উদ্মে আর গতি নেই, পরিবর্তন নেই ) যা, অনন্তকাল অবিশ্রাম চাঞ্চলোর পরম পরিণতি, চরম নির্ধাঁণ। সৃর্য্যাস্তের সময় চিল আকাশের নীলিমার যে একটি সর্বোচ্চ সীমার কাছে গিয়ে সমন্ত বৃহৎ পাখা সমতলরেখায় বিস্তৃত করে” দিয়ে হঠাৎ গতি বন্ধ করে" দেয়, চিরচঞ্চল সমুদ্র ঠিক যেন সহসা সেইরকম একটা পরম প্রশান্তির শেষ সীমায় এসে ক্ষণেকের জন্তে পশ্চিম অন্তাচলের দিকে মুখ তুলে' এক্কেবারে নিস্তব্ধ হয়ে ঠাড়িয়েচে। জলের বে চমৎকার বর্ণবিকাশ হয়েচে সে আকাশের ছায়া কি সমুদ্রের আলো ঠিক বলা যাঁর না। যেন একটা মাহেন্্ক্ষণে আকাশের নীরব নিনিমেষ নীল নেত্রের দৃষ্টিপাতে হঠাৎ, সমুদ্রের অতলম্পর্শ গভীরতার নধ্যে থেকে একটা আকস্মিক প্রতিভার দীপ্তি তি পেয়ে তাকে অপূর্ব মহিমান্বিত করে' তুলেচে। 'যুরোপশ্যান্রী। ১০৭. সধ্যা হয়ে এল। ঢং টং চং ঢং ঘণ্টা বেজে গেল। সকলে বেশভৃঘ! পরিবর্তন করে' সাদ্ধভোজনের জন্যে সজ্জিত হতে গেল। আধবণ্া পরে আবার ঘণ্টা বাজল। নরনারীগণ দলে দলে ভোজনশালায় গ্রবেশ করুলে। আমরা তিন বাঙালী একটি স্বতন্ত্র ছোট টেবিল অধিকার করে" বদ্পুম। আমাদের সামনে আর একটি টেবিলে ছুটি মেয়ে একটি উপাসক- সম্প্রদায়ের দ্বারা বেষ্টিত হরে খেতে বসেচেন। চেয়ে দেখ্পুম তাদের মধ্যে একটি যুবতী আপনার যৌবনশ্রী বহুল পরিমাণে উদ্দাটিত করে দিয়ে সহাস্ত মুখে আহার এবং :আলাপে নিযুক্ত আছেন। তার শুন শুগোল স্চিকণ গ্রীবাবক্ষবাহুর উপর সমস্ত বিছ্যুৎ- প্রদীপের অনিমেষ আলো এবং পুরুবনগুলীর বিস্মিত সকৌতুক দৃষ্টি বর্ধিত হচ্ছিল। একটা অনাবৃত আলোক-শিখা দেখে' দৃষ্টিগুলো বেন কালো কালো৷ পতঙ্গের মত চারিদিক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে লক্ষ দিনে পড়ছে । এমন কি অনেকে মুখ ফিরিয়ে ফিরিয়ে তাকে নিরীক্ষণ করছে এবং তাই নিয়ে ঘরের সর্ধত্র একটা হাস্তকৌতুকের তরঙ্গ উঠেছে। অনেকেই সেই যুবতীর পরিচ্ছদটিকে “ইপ্ডেকোরাস্‌” বলে" উল্লেখ করচে। কিন্ত আমাদের মত বিদেশা লোকের পক্ষে তাঁর বেমাক্র বেআদবীট| বোঝা একটু শক্ত । কারণ, নৃত্যশালার এ রকম কিম্বা এর চেয়ে অনাবৃত বেশে গেলে কারে! বিম্ময় উদ্রেক করে না। কিন্তু বিদেশের সমাঁজনীতি সধন্ধে বেশি উৎসাহের সঙ্গে কিছু বলা তাল নয়। আমাদের দেশে দেখা যায় বাসরঘরে এবং কোন কোন বিশেষ উপলক্ষে মেয়ের! যেমন অবাধে লঙ্জাহীনতা প্রকাশ করে অন্ত কোন সভায় তেমন করলে সাধারণের কাছে দৃষ্য হত সন্দেহ নেই। ৩১ আগষ্ট । আজ রবিবার। প্রাঃকালে উঠে” উপরের ডেকে চৌকিতে বসে” সমুদ্রের বায়ু সেবন করচি, এমন সময় নীচের ডেকে খুষ্টানদের উপাসনা আরম্ভ হল। যদিও জানি এদের মধ্যে অনেকেই ১০৮ বিচিত্র প্রবন্ধ চে শুক্কভাঁবে অভ্যন্ত মন্ত্র আউড়ে কলটেপ! আর্ণিনের মত গান গেয়ে যাচ্ছিল-_ কিন্ত তবু এই যে দৃশ্ত-_এই যে গুটিকতক চঞ্চল ছোট ছোট মনুষ্য অপার সমৃদ্রের মাঝখানে স্থির বিনম্রভাবে দাড়িয়ে গম্ভীর সমবেত কগে এক চির-অজ্ঞাত অনন্ত র্হস্তের প্রতি ক্ষুদ্র মানবহৃদয়ের ভক্তি উপহা'র প্রেরণ করচে, এ অতি আশ্চর্য | কিন্ত এর মধ্যে হঠাৎ এক একবার অটহান্ত শোনা যাচ্চে। গত- রাত্রের সেই ডিনার-টেবিলের নারিকাটি উপাসনায় বোগ না দিয়ে উপরের ডেকে বসে” তীরি একটি উপাসক যুবকের সঙ্গে কৌতুকাঁলাপে নিমগ্ন আছেন। মাঁঝে মাঝে উচ্চ হান্ত করে' উঠচেন, আবার মাঝে মাঝে গুন্গুন্‌ স্বরে ধর্মসঙ্গীতেও যোগ দিস্েন। আমার মনে হ'ল সরল ভক্তমগুলীর মাঝখানে সয়তান পেটিকোট পরে” এসে মানবের উপাসনাকে পরিহান করচে। ১ সেপ্টেম্বর । সন্ধ্যার পর আহারান্তে উপরের ডেকে আমাদের বথান্থানে আশ্রর গ্রহণ কর! গেল। মুছু শাতল বারুতে আমার বন্ধু ঘুমিয়ে পড়েচেন এবং দাদা অলসভাবে ধূমসেবন করচেন, এমন সময়ে নীচের ডেকে নাচের বাজনা বেজে উঠল। সকলে মিলে” জুড়ি জুড়ি ূর্দৃত্য আরম্ভ হল। . তখন পূর্বদিকে নব কৃষ্ণপক্ষের পূর্ণপ্রায় চন্ত্র বীরে ধীরে উদয় হচ্চে। এই তীরবেখাশূন্ত জলময় মহামরুর পূর্ব্ীমান্তে চন্দ্রের পাণুর কিরণ পড়ে” একটা "অনাদি অনন্ত বিঘাদে পরিপূর্ণ হরে উঠেছে। চাদের উ্নয়পথের ঠিক নীচে থেকে আমাদের জাহাঁজ পধ্যন্ত অন্ধকার সমুদ্রের মধ্যে প্রশস্ত দীর্ঘ আলোকপথ বিকৃঝিক্‌ করচে। জ্যোৎঙ্গাময়ী সন্ধ্যা কোন এক অলৌকিক বৃত্তের উপরে অপূর্ব শুভ্র রজনীগন্ধার মত আপন প্রশান্ত সৌন্দধ্যে নিঃশব্দে চতুর্দিকে প্রক্ষ,টিত হয়ে? উঠছে। আর মানুষগুলে! পরস্পরকে জড়াজড়ি করে” ধরে” পাগলের মত তীব্র আমোদে বুরোপ-যাত্রী। ১০৯. শাসক পসপাপেসপ সপ সপ পপ ঘুরপাক, খাচ্ছে, হাপাচ্ছে, উত্তপ হয়ে” উঠচে, সর্ধাঙ্গের রক্ত উচ্ছ,সিত হয়ে মাথার মধ্যে ঘুরচে, বিশ্বজগত আদি স্যষ্টিকালের বাম্পচক্রের মত চারিদিকে প্রবল বেগে আবন্তিত হচ্চে। লোঁকলোকান্তরের নক্ষত্র স্থিরভাবে চেয়ে রয়েচে এবং -দূরদুরাস্তরের তরঙ্গ ম্লান চন্দ্রীলোকে গম্ভীর, সমস্বরে অনন্তকালের পুরাতন সামগাথা গান করচে। ৩ সেপ্টেম্বর । বেলা! দশটার সময় স্ুুয়েজথালের প্রবেশমুখে এসে জাহাজ থাম্ল। চারিদিকে চমৎকার রঙের খেলা । পাহাড়ের উপর রৌদ্র, ছায়া এবং নীল বাষ্প। ঘননীল সমুদ্রের প্রান্তে বালুকাতীরের রৌদ্রদুঃসহ গা, পীত রেখা । খালের মধ্যে দিয়ে জাহাজ সমস্ত দিন অতি বীরগতিতে চলচে। দু'ধারে তরুহীন বালি। কেবল মাঝে মাঝে এক একটি ছোট ছোট কোটাঘর বন্ধত্ববর্ধিত গুটিকতক গাছে- পালায় বেষ্টিত হয়ে বড় আরাম- জনক দেখাচ্ছে। অনেক রাতে আধখান। টান উঠল । ক্ষীণ চন্দ্রীলোকে দুই তীর অস্পষ্ট ধধ করচে। রাত ছুটো তিনটের সময় জাহাজ পোর্টসৈয়েদে নোঙর করলে । ৪ সেপ্টম্বর। এখন আমরা ভূমধাসাগরে, যুরোপের অধিকারের মব্যে। বাতাসও শীতল হয়ে” এসেচে, সমূদ্রও গাঢ়তর নীল। আজ রাত্রে আর ডেকের উপর শোওয়া হল না। ও সেপ্টেম্বর। খাবার ঘরে খোল! জান্লার কাছে বসে? বাড়ীতে চিঠি লিখছি। একবার মুখ তুলে বামে চেয়ে দেখলুম “আয়োনিয়ান্” দ্বীপ দেখা দিয়েচে। পাহাড়ের কোলের মধ্যে সমুদ্রের ঠিক ধাকেই মনুষ্যরচিত ঘনসন্লিবিষ্ট একটি শ্বেত মৌচাকের মত দেখা যাঁচ্চে। এইটি হচ্চে জান্তিসহর :78001)। দূরথেকে মনে হচ্চে বেন পর্ধতটা তার' প্রকাণ্ড করপুটে কতকগুলো শ্বেত পুষ্প নিয়ে সমু্রকে অঞ্জলি দেবার উপক্রম করচে। | ১১০ বিচিত্র প্রবন্ধ । ডেকের উপর উঠে” দেখি আমরা ছুই শৈলশ্রেণীর মাঝখান দিয়ে সঙ্থীর্ণ সমুদ্রপথে চলেছি । আকাশে মেঘ করে” এসেছে, বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, ঝড়ের সম্ভাবনা । আমাদের সর্ধোচ্চ ডেকের টাদোয়া খুলে ফেলে দিলে । পর্বরতের উপর অত্যন্ত নিবিড় মেঘ নেমে এসেছে ; কেবল দূরে এক্টিমাত্র পাহাড়ের উপর মেঘছিদ্রমুক্ত “সন্ধালৌকের একটি দীর্ঘ রক্রবর্ণ ইঞ্গিত- অনলি এসে স্পর্শ করেছে, অন্য সবগুলো আসন্ন ঝটকা'র ছায়ায় আচ্ছন্ন । কিন্ত ঝড় এল না । একটু প্রবল বাতাঁস এবং সবেগ বৃষ্টির উপর দিয়েই সমস্ত কেটে গেল। ভূমধ্যসাগরে আকাশের অবস্থা অত্যন্ত অনিশ্চিত । শুন্লুম, আমরা নে পথ দিয়ে যাচ্চি এখান দিয়ে জাহাজ সচরাচির যায় না। জীয়গাটা নাকি ভারি ঝোটো। রাত্রে ডিনারের পর যাত্রীর! কাঁপ্তেনের স্বাস্থ্যপানি এবং গুণগান করলে। কাল বিন্দিসি পৌছব। জিনিষপত্র বাঁধতে হবে। ৭ সেপ্টেম্বর । আজ সকালে ব্রিন্দিসি পৌছন গেল। মেলগাঁডি প্রস্তুত ছিল, আমরা গাঁড়িতে উঠলুম। গাড়ি যখন ছাড়ল তখন টিপ্টিপ্‌ করে' বৃষ্টি আরম্ত হয়েচে। আহার করে? এসে একটি কোণে জান্লার কাছে বসা গেল। প্রথমে, দুইধারে কেবল আঙউ্,রের ক্ষেত। তাঁর পরে জলপাইয়ের বাঁগান। জলপাইয়ের গাছগুলো নিতান্ত বাঁকাচোরা, গ্রন্থি ও ফাটল- বিশিষ্ট, বলি-অস্কিত, বেঁটেখাটো রকমের; পাতাগুলো উদ্ধমুখ ; প্রকৃতির হাঁতের কাঁজে যেমন একটি সহজ অনায়াসের ভাঁব দেখ! যাঁয়, এই গাঁছ- গুলোয় তার বিপরীত। এর! নিতান্ত দরিদ্র লক্ষীছাড়া, বহু কষ্ট বু চেষ্টায় কায়ক্লেশে অষ্টাবক্র হয়ে ঈাঁডিয়ে আছে ; এক একটা এমন বেঁকে ঝুঁকে পড়েছে যে পাথর উচু করে? তাদের ঠেকো দিয়ে রাখতে হয়েছে। বামে চথা মাঠঞ্ত শাদা শাদা ভাঙা ভা! পাথরের টুকরো চষা মাটির মধ্যে মধ্যে উৎক্ষিপ্ত। দক্ষিণে সমুদ্র | সমুদ্রের একেবারে ধারেই এক একটি যুরোপ-্যাত্রী। ১১১ পস্পিপিসস্পিসপাস্পিসপিপান্পাসপাস্িপাস্পস্প সপ আপাসিশিসপস্পিিসপিপসসিপিসস সপ স্সপসপ্পস্সিপ পিপাসা পিসী €ছাট ছোট সহ্র দেখা দিচ্চে। চ্চচড়া-মুকুটিত শাদা ধব্‌ ধরবে নগবীটি একটি পরিপাটি তন্বী নাগরীর মত কোলের কাছে সমুদ্র-দর্পণ রেখে নিজের মুখ দেখে হাস্চে। নগর পেরিয়ে আবার মাঠ। ভুটার ক্ষেত, আঙুরের ক্ষেত, ফলের ক্ষেত জলপাইয়ের বন; ক্ষেতগুলি খণ্ড প্রস্তরের বেড় | মাঝে মাঝে এক একটি বাধী কৃপ। দূরে দূরে ছুটো একটা সঙ্গীহীন ছোট শাদা বাঁড়ি। ষ্যান্তের সময় হয়ে এল। আমি কোলের উপর এক থোলো৷ আঙুর নিয়ে বসে" বসে” এক আধটা করে? মুখে দিচ্চি। এমন মিষ্ট টম্টসে, স্থগদ্ধ আঙর ইতিপূর্বে কখন খাইনি। মাথায় বৃডীন্‌ রুমাল বীধা এ ইতালীয়! যুবতীকে দেখে আমার মনে হষ্টে, ইতাঁলীয়ানীরা এখানকার আউ,রের গুচ্ছের মত, অম্নি একটি বৃত্তভরা অজজ স্থৃডোল সৌন্দধ্, যৌবনরসে অমূনি উৎপূর্ণ__এবং এ আঙরেরই মত তাঁদের মুখের রং অতি বেশি শাদা নয়। : এখন একটা উচ্চ সমুদ্ূতটের উপর দিয়ে চলেচি। আমাদের ঠিক নীচেই ডানদিকে সমুদ্র। ভাঁঙাচোর! জমি ঢালু হয়ে জলের মধ্যে প্রবেশ করেচে। গোটা চার পাঁচ পালমোড়া নৌক৷ ডাঙাঁর উপর তোলা । নীচেকার পথ দিয়ে গাধার উপর চড়ে' লোক চলেচে। সমুদ্রতীরে কতকগুলো গরু চরচে-_কি থাচ্চে তারাই জানে )--মাঝে মাঝে কেবল কতকগুলো শুকনো খড়কের মত আছে মাত্র। ৮ সেপ্টেম্বর। কাল আউড্রির়াটিকের সমতল শ্রীহীন তীরভূমি দিয়ে আস্ছিলুম আজ শন্তাষ্তামলা লম্বাডির মধ্যে দিয়ে গাড়ি চল্চে। চাগিথিকে আঙ্,র, জলপাই, ভুট্টা ও তুঁতের ক্ষেত। কাল যে আঙরের লতা দেখা গিয়েছিল সে গুলো ছোটো ছোটো গুল্সের মত। আজ দেখি, ক্ষেতময় লম্বা লম্বা কাঠি পৌতা, তারি উপর স্কুলগুচ্পূর্ণ দ্রাক্ষালতা লতিয়ে উঠেচে। ১১২ বিচিত্র প্রবন্ধ । ক্রমে পাহাড় দেখা দিচ্চে। পাহাড়ের উপর থেকে নীচে পর্য্যন্ত দ্রাক্ষাদণ্ডে কণ্টকিত হয়ে উঠেচে, তারি মাঝখানে এক একটি লোকালয় । রেলের লাইনের ধারে দ্রাক্ষাঁক্ষেত্রের প্রান্তে একটি ক্ষুদ্র কুটার? এক হাতে তারি একটি ছুয়ার ধরে এক হাত কোমরে দিয়ে একটি ইতালিয়ান যুবতী সকৌতুক কৃষ্ণনেত্রে আমানের গাড়ীর গতি নিরীক্ষণ করচে। অনতিদুরে একটি ছোট বাঁলিকা একটা! প্রখরশূঙ্গ প্রকাণ্ড গরুর গলার দড়িটি ধরে” নিশ্চিন্ত মনে চরিয়ে নিয়ে বেড়াচ্চে। তার থেকে আমাদের বাঙ্গাল দেশের নব দম্পতির চিত্র মনে পড়ল। মস্ত একটা চষমা-পরা দাঁড়িওয়ালা গ্র্যাজুয়েটপঙ্গব, এবং তারি দ়িটি ধরে? ছোট একটি বাঁরো-তেরো বৎসরের নোলকপরা৷ নববধূ) জন্তটি দিব্যি পৌষ মেনে চরে বেড়ীচ্চে, এবং মাঁঝে মাঝে বিক্ষারিত নয়নে কতর প্রতি দৃষ্টিপাত করচে। ট্যুরিন্‌ ষ্টেশনে আসা গেল। এদেশের সামান্ট পুলিবম্যানের সাজ দেখে অবাঁক্‌ হতে হয়। মন্ত ঢুড়াওয়ালা টুপি, বিস্তর জরিজরাও, লম্বা তলোয়ার, _সকল কটিকেই সম্রাটের জ্োষ্টপুভ্র বলে” মনে হর। দক্ষিণে বামে তুষাররেখাঙ্কিত সুনীল পর্বতশ্রেণী দেখা দিয়েচে। বামে ঘনচ্ছায়। শ্িঞ্চ অরণ্য। যেখানে অরণ্যের একটু বিচ্ছেদ পাওয়া যাঁচ্চে সেইথানেই শশ্তক্ষেত্র তরুশ্রেণীও পর্বত সমেত এক একটা নব নব আশ্চর্ধ্য দৃশ্ঠ খুলে যাচ্চে। পর্ধতশৃঙ্গের উপর পুরাতন ছুর্গশিখর, তল- দেশে এক একটি ছেঁটি ছোট গ্রাম। যত এগোচ্চি অরণ্যপর্বত ক্রমশঃ ঘর্ন হয়ে আস্চে । মাঝে মাঝে যে গ্রামগুলি আম্চে সেগুলি তেমন উদ্ধত শুভ্র নবীন পরিপাটি নয়; একটু যেন স্নান দরিদ্র নিভৃত; একটি আধটি র্চের চূড়া আছে মাত্র; কিন্ত কল কারখানার ধুমোদগারী সি উর্দযুখী ইষ্টকশুণ্ড ন্ট ক্রমে অল্পে অন্নে পাহাড়ের উপরে ওঠা যাঁচ্চে। পার্কত্যপথ মাপের যুরোপ যাত্রী । ১১৩ সপেশ্পাশিস শা পা পিপিপি পেস মত একে বেঁকে চলেচে) ঢালু পাহাড়ের উপর চষা ক্ষেত মোপানের মত থাকে থাকে উঠেচে। একটি গিরিনদী স্বচ্ছ সফেন জলরাশি নিয়ে সন্কীর্ণ উপলপথ দিয়ে ঝরে, পড়চে। গাড়িতে আলো! দিয়ে গেল। এখনি মণ্ট সেনিসের বিখ্যাত দীর্ঘ রেলোয়ে সুড়ঙ্গের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। গহ্বরটি উত্তীর্ণ হতে প্রায় আধঘণ্টা লাঁগল। এইবার ফ্রান্স। দক্ষিণে এক জলআোঁত ফেনিয়ে ফেনিয়ে চলেচে। ফরানী জাতির মত দ্রুত চঞ্চল উচ্ছ,সিত হাস্তপ্রিয় কলভাষী। ফ্রান্সের প্রবেশদ্ারে একবার একজন কর্ষুচারী গাড়িতে এসে জিজ্ঞাসা করে গেল আমাদের মাশুল দেবার যোগ্য জিনিষ কিছু আছে কি না-_ আমরা বলুম, না। আমাদের একজন বুদ্ধ সহ্বাত্রী ইংরেজ বল্লেন, ] 0011 1081167-৮009 81707 9. সেই আোত এখনো আমাদের ডান দিক দিয়ে চলেচে। তার পূর্ব- তীরে “ফাঁর” অরণ্য নিয়ে পাহাড় দাড়িয়ে আছে। চঞ্চল নিঝ'রিণী বেঁকে চুরে ফেনিয়ে ফুলে নেচে কলরব করে' পাথরগুলোকে সর্বাঙগ দিয়ে ঠেলে রেলগাড়ীর সঙ্গে সমান দৌড়বার চেষ্টা করচে। মাঝে মান্মে এক একটা লোঁভার সাঁকো মুষ্টি দিয়ে তার ক্ষীণ কটিদেশ পরিমাপ করবার চেষ্টা করচে। এক জারিগার জলরাশি খুব সঙ্কীর্ণ হয়ে এসেচে) ছুই তীরের শ্রেণীবদ্ধ দীর্ঘ বুক্ষগুলি শাখার শাখায় বেষ্টন করে' দুরন্ত আোতকে অন্তঃপুরে বন্দী করতে বৃথা চেষ্টা করচে। উপর থেকে বঝরণা এসে সেই প্রবাহের সঙ্গে মিশচে। বরাবর পূর্বতীর দিয়ে একটি পার্বত্য পথ সমরেখায় জোতের সঙ্গে বেকে বেকে চলে গেছে । এক জায়গায় আমা- দের সহচরীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হল। হঠাৎ সে দক্ষিণ থেকে বাঁমে এসে এক অজ্ঞাত সন্ীর্ণ শৈলপথে অন্তহিত হয়ে গেল। শ্তামল তৃণাচ্ছন্ন পর্বতশ্রেণীর মধ্যে এক একটা পাহাঁড় তৃণহীন সহশ্র ১১৪ বিচিত্র প্রবন্ধ রেখাঙ্কিত পাবাঁণ-ক্কাল প্রকাশ করে নগ্রভাবে ঈীড়িয়ে আছে ; কেবল সকার মাঝে মাঝে এক এক জায়গায় খানিকটা করে' অরণ্যের খণ্ড আবরণ রয়েচে। প্রচ সংগ্রামে একট। দৈত্য সহশ্র হিং নখের বিদারণরেখা রেখে যেন ওর ঠ্ঠামল ত্বক অনেকখানি করে, আচিড়ে ছিড়ে নিয়েচে। আবার হঠাৎ ডান দিকে আমাদের সেই পূর্ববসর্গিনী মূহর্তের জন্তে দেখা দিবে বামে চলে গেল। একবার দক্ষিণে একবাঁর বামে, একবার ন্তরালে। বিচিত্র কৌতুকচাতুরবী। আবার হরর ত যেতে বেতে কোন্‌ এক পর্বতের আড়াল থেকে সহসা কলহাস্তে করতালি দিয়ে আচম্কা দেখা দেবে। সেই জলপাই এবং দ্রাক্ষাকুপ্ত অনেক কমে” গেছে। বিবিধ শস্তের ক্ষেত্র এবং দীর্ঘ সরল পপ্লার গাছের শ্রেণী। ভুূটা, তামাক, নানাবিধ শাক শব্জি। মনে হর কেবলি বাগানের পর বাগান আস্চে। এই কঠিন পর্বতের মধ্যে মানুষ বহুদিন থেকে বহু বত্রে প্রকৃতিকে বশ করে? তার উচ্ছ লতা হরণ করেচে। প্রত্যেক ভূমিখণ্ডের উপর মানুষের কত 'গ্রয়াস প্রকাশ পাঙ্চে। এদেশের লোকেরা বে আপনার দেশকে ভাল- বাদ্‌বে তাতে আর কিছু আশ্চর্য নেই। এরা আপনার দেশকে আপনার যত্বে জাঁপনার করে নিরেচে। এখানে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের বহুকাল থেকে একটা বোঝাপড়া হয়ে আম্চে, উভয়ের মধ্যে ক্রমিক আদান প্রন্ধান টল্চে, ভারা পরস্পর স্থুপরিচিত এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ । একদিকে প্রকাও প্ররূতি উদাসীন ভাবে দাড়িয়ে আর একদিকে বৈরাগ্য- বৃদ্ধ মানব উদাসীন ভাবে শুয়ে--ফুরোপের সে ভাব নয়। এদের এই সুন্দরী ভূমি এদের একান্ত দাধনার ধন, একে এরা নিয়ত বহু আদর করে রেখেচে। এর জন্যে যদি গ্রাণ না দেবে ত কিসের জন্তে দেবে! এই প্রেরসীর প্রতি কেউ তিলমাত্র হস্তক্ষেপ করলে কি আর সহ্য হয়? কিন্তু এ কি চমৎকার চিত্র! পর্বতের কোলে, নদীর ধারে, হদের যুরোপ যাত্রী । ১১৫ তীরে পপ্লীর-উইলোবেষ্টিত কাননশ্রেণী। নিষ্ষণ্টক নিরাপদ নিরাময় ফলশস্তপরিপূর্ণ প্রকৃতি প্রতিক্ষণে মানুষের ভালবাসা পাঁচ্চে এবং মানুষকে ছিগুণ ভালবাস্চে। মানুষের মত জীবের এইত যোগা আবাঁসম্থান। সান্তযের প্রেম এবং মানুষের ক্ষমতা যদি আপনার চতুর্দিককে সংঘত সুন্দর সমুজ্জ্ল করে” না তুলতে পারে তবে তরুকোটির-গুহাগহ্বর-বনবাসী জন্থর সঙ্গে তার প্রভের কি? ৮ দেপ্টে্বর। পথের মধ্যে আমাদের প্যারিসে নাববার প্রন্তাৰ হচ্চে। রাত ছু'টোর সময় আমাদের জাগিরে দিলে। টেন ব্দল করতে হবে। জিনিবপত্র বেঁধে বেরিয়ে পড়লুদ। বিষম ঠাগ্ডা। অনতিদূরে আমাদের গাড়ি দাড়িয়ে। কেবলমাত্র একট এগ্ষিন, একটি ফার্টক্লাদ্‌ এবং একটি বেক্ভ্যান্। আরোহীর অপ্যে আমরা তিনটি ভারতবধীয়। রাত তিনের সমর প্যারিসের জনশূন্য বুহৎ ষ্টেশনে পৌছন গেল। স্ুপ্টোখিত দুই একজন “মাসির” আলো হস্তে উপস্থিত। অনেক হাঙ্গাম করে" নিদ্রিত কান হৌস্‌কে জাগি তার পরীক্ষা থেকে উন্টীর্ণ হয়ে কট! গাড়ি ভাড়। করলুম। তথন প্যারিস ভার সমস্ত দার রু্ধ করে? স্তন্ধ রাজপথে দীপশ্ণী জালিয়ে রেখে নিদ্রাঘগ্ন । আমরা হোটেল টা্িনৃতে আসাদের শরনকক্ষে প্রবেশ করনুম। পরিপাটি, পরিচ্ছন্ন, বিদ্যাঢুজ্জল, নানি কাপেটাত্বত, চিত্রিতভিন্তি, নীলববনিকা প্রচ্ছন্ন শয়নশালা ; বিহগপক্ষস্বকোমল শুন শব্যা। বেশ পরিবর্তন র্নক : শরনের উদ্যোগ করবার সময় দেখা গেল আমাদের জিনিষপত্রের মধ্যে আর এক জনের ওভারকোটু গাত্রবর্থ। 'আনর। তিনজনেই পরম্পন্ধের জিনিষ িশনে? সুতরাং হাতের কাছে বে- কোন অপরিচিত বন্ত পাওরা ঘাঁয় দেইটেই আমারের কারো-না কারে ত্বির কৰে” অনংশরে সংগ্রহ করে? আনি | অবখেবে নিঙগের নিজের জিনিৰ পৃখন্ পৃথক করে" নেবার পত্র যখন হুটে। চারটে উন্নত সাঁনগ্রা পাও। ৯১৬ বিচিত্র প্রবন্ধ | যায়, তখন তা” আর পূর্বাধিকারীকে ফিরিয়ে দেবার কোন সুযোগ থাকে না। ওভারকোট্টি রেলগাড়ি থেকে আঁনা হয়েচে; যার কোট সে বেচারা বিশ্বস্তচিত্তে গভীর নিদ্রায় মগ্ন। গাড়ি এতক্ষণে সমুদ্রতীরস্থ ক্যালে নগরীর নিকটবন্তী হয়েচে। লোকটি কে, এবং সমস্ত বৃটিশ: রাঁজ্যের মধ্যে তার ঠিকানা কোথায়, আমর! কিছুই জানিনে। মাঝের থেকে তার লম্বা কুত্তি এবং আমাদের পাঁপের ভার স্বদ্ধের উপর বহন করে বেড়াচ্চি__প্রায়শ্চিত্তের পথ বন্ধ। মনে হচ্চে, একবার নে লোকটির কম্বল হরণ করেছিলুম এ কুত্তিটিও তাঁর। কারণ, রেলগাড়িতে সে ঠিক আমাদের পরবন্তী শয্যা অধিকার করেছিল । সে বেচারা বৃদ্ধ, শীতপীড়িত, ৰাতে পঙ্গু, আংলো-ইগ্ডিয় পুলিস অধ্যক্ষ। পুলিসের কাজ করে? মানব- চরিত্রের প্রতি সহজেই তাঁর বিশ্বাস শিথিল হয়ে এসেছে, তাঁর পরে যখন দেখবে এক যাত্রায় একই রকম ঘটনা একই লোকের দ্বারা গভীর রাত্রে ছুইদুইবার সংঘটন হল তখন আর যাই হোক কখনই আমাকে সে বাক্তি সুশীল সচ্চরিত্র বলে ঠাওরাবে না। বিশেষতঃ কাল গ্রত্যবে বিটিশ চ্যানেল পার হবার সময় তীব্র শাতবাযু যখন তার হৃতকৃত্তি জীণ দেহকে কম্পান্ষিত করে” তুলবে ভখন সেই সঙ্গে মনুাজাতির সাধুতার প্রতিও তার বিশ্বাস চতুপ্তণ কম্পিত হতে থাকবে। গ্রাতঃকালে আমরা তিন জনে প্যারিসের পথে পদব্রজে বেরিয়ে পড়লুম ৷ প্রকাণ্ড রাজপথ দোকান বাগান প্রাসাদ প্রস্তরমু্তি ফোয়ারা: লোকজন গাড়িঘোড়ার মধ্যে অনেক ঘুরে ঘুরে এক ভোজন-গৃহের বিরাট *স্কটিকশালার প্রান্তটেবিলে বসে” অল্প আহার করে” এবং বিস্তর মূল্য দিয়ে ঈফেল স্তত্ত দেখতে গেলেম। এই লৌহ্তস্ত চাঁরি পায়ের উপরে ভর দিয়ে এক কাঁননের মাঝখানে দাড়িয়ে আছে। কলের দৌলায় চড়ে, এই স্তম্ভের চতুর্থ তলায় উঠে নিম্নে সমস্ত প্যারিসটাকে খুব একটা বড় ম্যাপের মত প্রসারিত দেখতে পেলুম। যুরোপ-্যাত্রী। ১১৭, মিটি বলা বাহুল্য, এমন করে, একদিনে তাঁড়াতাড়ি চক্ষু দ্বারা বহিভাগ লেহন করে' প্যারিসের রসাম্বাদন কর! যায় না। এ যেন, ধনীগৃহের মেয়েদের মত বদ্ধ পাঙ্কির মধ্যে থেকে গঙ্গাঙ্গান করার মত-_কেবল নিতান্ত তীরের কাছে একটা! অংশে একডুবে যতখানি পাওয়া বায়। কেবল হাপানিই সার। ১০ সেপ্টেম্বর। লগ্ন অভিমুখে চন্ুম॥ সন্ধ্যার সময় লগ্নে পৌছে ঢই একটা হোটেল অন্বেষণ করে" দেখা গেল স্থানাভাব। অবশেষে একটি ভদ্র পরিবারের মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ কর! গেল। ১১ সেপ্টেম্বর । সকালবেলায় আমাদের পুরাতন বন্ধুদের সন্ধানে বাহির হওয়া গেল। প্রথমে, লগুনের মধ্যে আমীর একট পুর্বপরিচিত বাড়ির দ্বারে গিক্কে আঘাত করা গেল। যে দাসী এসে দরজা খুলে দিলে তাকে চিনিনে। তাকে ভিজ্ঞাসা করলুম আমার বন্ধু বাড়িতে আছেন কিনা। সেবল্লে তিনি এ বাড়িতে থাকেন নাঁ। জিজ্ঞাসা করলুম, কোথায় থাকেন? সে বল্লে, আমি জানিনে, আপনারা ঘরে এসে বন্গন আমি জিজ্ঞাসা করে আস্চি। পূর্বে বে ঘরে আমরা আহার করতুম সেই ঘরে গিয়ে দেখলুম সমপ্ত ব্দল হয়ে গেছে-_মেখানে টেবিলের উপর খবরের কাগজ এবং বই--নে ঘর এখন অতিথিদের প্রতীক্ষাশাল! হয়েছে। খানিকক্ষণবাদে বাসী একটা কার্ডে লেখ! ঠিকানা এনে দিলে । আমার বন্ধু এখন লণ্ডনের বাইরে কোন্‌ এক অপরিচিত স্থানে থাকেন। নিরাশ হ্বদয়ে আমার সেই পরিচিত বাড়ি থেকে বেরলুম। | মনে কল্পনা উদয় হল, মৃত্যুর বহুকাল পরে আবার যেন পৃথিবীতে ফিরে এসেচি। আমাদের সেই বাড়ির দরজার কাছে এসে ছারীকে জিজ্ঞাসা করলুম_ সেই অমুক এখানে আছে ত? দ্বারী উত্তর করলে-না-সে অনেক দিন হল চলে গেছে।-চলে গেছে? সেও ১১৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । পিপি, চলে গেছে । আমি মনে করেছিলুম কেবল আগিই চলে গিয়েছিলুম,, পৃথিবী-স্্দ্ধ আর সবাই আছে। আমি চলে যাওয়ার পরেও সকলেই আপন আঁপন সময় অনুসারে চলে গেছে। তবে ত সেই সমস্ত জানা লোকেরা আর কেহ কারো ঠিকানা খুঁজে পাবে না! জগতের কোথাও তাদের আর নিদিষ্ট মিলনের জায়গা রইল না। টীাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবচি এমন সমরে বাঙির কর্ভী বেরিয়ে এলেন - জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কে হে। আনি নমস্কার করে? ব্লুম, আজে, আমি কেউ না, আমি বিদেশী।-কেমন করে' প্রমাণ করব এবাড়ি আদার এবং আমাদের ছিল! একবার ইচ্ছে হল, অন্তঃণুরের সেই বাগানটা দেখে আসি; আমার সেই গাছগুলো কত বড় হর়েছে। আর সেই ছাতের উপরকার দক্ষিণমুখো কুঠরি, আর সেই ঘর এবং সেই ঘর এবং সেই আর একটা ঘর। আর সেই যে ঘরের সম্মুখে বারাগডার উপর ভাঙা টবে গোটাকতক জীর্ণ গাছ ছিল-_সেগুলেো! এত অকিঞ্চিংকর যে হয়ত ঠিক তেমনি রয়ে গেছে, তাঁদের সরিয়ে ফেলতে কারো মনে পড়েনি! আর বেশিক্ষণ কল্পনা করবার সমর পেলুম না। লওনের স্বর্গপথে যে পাতীল-বাঁশপঘান চলে, তাই অবলম্বন করে" বাসায় ফেরবার চেষ্টা করা গেল। কিন্তু পরিণামে দেখতে পেলুম পৃথিবীতে সকল চেষ্টা সফল হয় না। আমরা ছুই ভাই ত গাড়িতে চড়ে” বেশ নিশ্চিন্ত বসে আছি; এমন সময় গাঁড়ি যখন হ্যামার্ম্মিথ নামক দুরবন্তী ষ্টেশনে গিয়ে থাম্ল তখন আমাদের বিশ্বস্ত চিন্তে ঈষৎ সংশয়ের, সঞ্চার হল। একজনকে জিজ্ঞাসা করাতে সে স্পষ্ট বুঝিরে দিলে আমাদের গম্যস্থান যেদিকে এ গাড়ির গম্স্থান সেদিকে নয়। পুনর্ধার, তিন্চার ষ্টেশন ফিরে গিয়ে গাড়ি বদল করা আবশ্ঠক। তাই করা গেল।; অবশেষে গম্য ষ্টেশনে নেমে রাস্তায় বেরিয়ে আমাদের বাসা খুঁজে পাই নে। বিস্তর গবেষণার পর বেলা সাঁড়ে তিনটের সময় বাড়ি ফিরে ঠাণ্ডা যুরোপ-যাত্রী। ১১৯ টিফিন খাওয়া! গেল। এইটুকু আত্মজ্ঞান জন্মেছে যে, আমরা ছুটি ভাই লিভিংষ্টোন অথবা! ষ্র্যান্লির মত ভৌগোলিক আবিফণারক নই ) পৃথিবীতে যদি অক্ষয় খ্যাতি উপাঁক্জন করতে চাই ত নিশ্চয়ই অন্ত কোন দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। ১২ সেপ্টেম্বর । আমাদের ঘন্ধুর একটি গুণ আছে তিনি যতই কল্পনার চর্চ| করুন না কেন, কখনও পথ ভোঁলেন না। সুতরাঁং তাকেই আমাদের লণ্ডনের পাগডাপদে বরণ করেছি । আমরা যেখানে যাই তীকে সঙ্গে টেনে নিয়ে যাই, এবং তিনি যেখানে যান আমরা কিছুতেই তাঁর সঙ্গ ছাঁড়িনে। কিন্তু একটা আশঙ্কা আছে এ রকম অবিচ্ছেগ্ভ বন্ধুত্ব এ পৃথিবীতে সকল সময় সমাদৃত হয় না। হায়! এ সংদারে কুস্থুমে কণ্টক, কলানাথে কলঙ্ক এবং বন্ধুত্বে বিচ্ছেধ আছে-কিন্তু, ভাগ্যিন্‌ আছে! আজ বন্ধুপহায় হয়ে নিশ্চিন্তমনে সহর ঘোরা গেল। ন্টাশনাল, গ্যালারতে ছবি দ্রেখতে গেলুম। বড় ভয়ে ভয়ে দেখজুম। কোন ছবি পুরোপুরি ভাল লাগতে দিতে ছিধা উপস্থিত হয়। সন্দেহ হয়, কোন প্রকৃত সদজদারের এ ছবি ভাল লাগ! উচিত কি না। আবার বে ছা ভাল লাগে ন! তাঁর সন্বন্ধেও মুখ ফুটে কোন কথা বলতে পারিনে । ১৯ সেপ্টেম্বর । এখানে রাস্তায় বেরিয়ে সুখ আছে। সুন্দর মুখ চোঁখে পড়বেই। শ্রীযুক্ত দেশানুরাগ যদি পারেন ত আমাকে ক্ষমা করবেন, ইংরাজ মেয়ে স্থন্দরা বটে। শুভানুধ্যায়িরা শঙ্কিত এবং চিন্তিত হবেন, এবং প্রিয় বরস্তেরা পরিহাস করবেন কিন্তু এ কথা আমাকে স্বীকার করতেই হবে সুন্দর মুখ আমার স্বন্দর লাগে। তাই যদি না লাগত বিধাতার উদ্দেশ্ঠই ব্যর্থ হত । সুন্দর হওয়া এবং মিষ্ট করে? হাঁস! মানুষের একট পরমীশ্চর্ধ্য ক্ষমতা । আমার ভাগ্যক্রমে এ হাসিটা এদেশে এসে কিছু বাহুল্য পরিমাণে দেখতে পাই। এমন অনেক সময় হয়, রাজপথে কোন নীলনয়না পান্থরমণীর যেমন সম্ুখবন্তী হই অম্নি সে আমার মুখের দিকে ১২০ বিচি প্রবন্ধ । চেয়ে আর হাস সম্বরণ করতে পারে না। তখন তাকে ডেকে বলে" দিতে ইচ্ছা করে, "সুন্দরি, আমি হাপি ভালবাসি বটে, কিন্তু এতটা নয়। তা ছাড়া বিশ্বাবরের উপর হাঁসি বতই স্ত্মিষ্ট হোক্‌ না কেন, তারো৷ একটা যুক্তি- সঙ্গত কারণ থাঁকা চাই; কারণ, মানুষ কেব্লমাত্র যে সুন্দর তা নয়, দানুষ বুদ্ধিমান জীব। হে নীলাজনয়নে, আমি ত ইংরাজের মত অসভ্য খাটো কুত্তি এবং অসঙ্গত লম্ব৷ ধুটুনি টুপি পরিনে, তবে হাস কি দেখে, ? আমি স্ব কি কুশ্রী সে বিষয়ে কোন প্রসঙ্গ উখ্বাপন কর! রুচিবিরুদ্ধ _ কিন্তু এটা আমি খুব জোর করে ব্লতে পারি বিদ্রপের তুলি দিয়ে বিধাতা- পুরুষ আমার মুখমণ্ডল অঙ্কিত করেন নি। তবে যদি রংটা কালে! এবং চুলগুলো কিছু লম্বা দেখে হাসি পায় তাহলে এই পর্যন্ত বলতে পারি, প্রক্কৃতিভেদে হান্তরসসন্বদ্ধে অদ্ভূত কচিভেদ লক্ষিত হয়। তোমরা বাঁকে “হিউমার্” বল, আমার মতে কালে! রঙের সঙ্গে তার কোন কার্যাকারণ সম্বন্ধ নেই। দেখেছি বটে, তোমাদের দেশে মুখে কালী মেখে কাফ্রি দেজে নৃত্যগীত কর! একটা কৌতুকের মধ্যে গণ্য হয়ে থাকে। কিন্তু, কনক-কেশিনি, সেটা আমার কাছে নিতান্ত হদয়হীন বর্ধরত! বলে? বোধ হয়।” ৬ অক্টোবর । এখনো আমাদের প্রবাসের সময় উত্তীর্ণ হয় নি, কিন্তআমি আর এখানে পেরে উঠচিনে। বল্তে লজ্জা বোধ হয়, আমার এখানে ভাল লাগচে না । সেটা গর্বের বিষয় নয়, লজ্জার বিষয়__ সেটা আমার স্বভাবের ক্রটি। যখন কৈফিয়ৎ সন্ধান করি তখন মনে হয় যে, যুরোপের যে ভাবটা আমাদের মনে জীজ্জল্যমান হয়ে উঠেছে, সেটা সেখানকার সাহিত্য পড়ে”। অতএব সেটা হচ্চে আইডিয়াল, যুরোপ। অন্তরের মধ্যে প্রবেশ না করলে সেটা প্রত্যক্ষ করবার ছো নেই। তিন মাস, ছ"মাস কিন্বা ছ”বংসর এখানে থেকে আমরা যুরোপীয় সভ্যতার কেবল হাতপা! নাড়া দেখতে যুরোপ-যাত্রী / ১২১ পাই মাত্র। বড় বড় বাড়ি, বড় বড় কারখানা, নান! আমোদের জায়গা ) লোক চল্চে ফিরছে, বাচ্চে আস্চে, খুব একটা! সমারোহ । সে যতই বিচিত্র যতই আশ্চর্য হোক না কেন, তাতে দর্শককে শ্রান্তি দেয়; কেবলমাত্র বিম্ময়ের আনন্দ চি্তকে পরিপূর্ণ করতে পারে না বরং তাতে মনকে সর্বদা বিক্ষিপ্ত করতে থাকে । অবশেষে এই কথা মনে আসে-_আচ্ছা ভালরে বাপু, আমি মেনে 'নিচ্চি তুমি মন্ত সহর, মস্ত দেশ, তোমার ক্ষমতা এবং গ্রশ্ব্যের সীম! নেই। আর অধিক প্রমাণের আবগ্তক নেই। এখন আমি বাড়ি যেতে পারলে বাচি। সেখানে আমি সকলকে টিনি, সকলকে বুঝি; সেখানে সমস্ত বাহ্াবরণ ভেদ, করে? মনুষ্যত্বের আস্বাদ সহজে পাই। সহজে উপভোগ করতে পারি, সহজে চিন্তা করতে পারি, সহজে ভালবাস্তে পারি। যেখানে আদল মানুষটি আছে সেখানে বদি অবাধে যেতে পারতুম, তাহলে এখানকে আর প্রবাস বলে" মনে হত না। এইখানে কথামালাঁর একটা গল্প মনে পড়ছে | একটা চতুর শৃগাল একদিন স্তুবিজ্ঞ বককে আহারে নিমন্ত্রণ করেছিল। 'ৰূক সভায় গিয়ে দেখে বড় বড় থালা সুমিষ্ট লেহ্য পদার্থে পরিপূর্ণ । প্রথম শিষ্ট সপ্তাৰণের পর শৃগাল বললে “ভাই, এস, আরম্ভ করে” দেওয়া যাক!” বলেই তংক্ষণাৎ অবলীলাক্রমে লেহন করতে প্রবৃত্ত হল। বক তার দীর্ঘ চঞ্চু নিয়ে থালার মধ্যে বই ঠোকর মারে মুখে কিছুই তুলতে পারে না। অবশেষে চেষ্টার নিবৃত্ত হয়ে স্বাভাবিক অটল গান্তীষ্য অবলম্বনপূর্ব্বক সরোবরকুলের ধ্যানে নিমগ্র হল। শাল বোধ করি মাঝে মাঝে কটাক্ষপাত করে বলছিল “ভাই খাচ্ড না যে! এ কেবল তোমাকে মিথ্যা কষ্ট দেওয়াই হল। তোমার যোগ্য আয়োজন হয় নি!” বক বোধ করি মাথা নেড়ে উত্তর দিয়েছিল “আহা সে কি কথা! রদ্ধন অতি পরিপাটি হয়েছে! কিন্তু শরীরগতিকে আজ আমার কেমন ক্ষুধা ৯২২ বিচিত্র প্রবন্ধ বোধ হচ্চে না!” পরদিন বকের নিমন্তুণে শৃগাল গিয়া দেখেন, লব! ভাড়ের মধ্যে বিবিধ উপাদেয় সামগ্রী সাজানো রয়েছে। দেখে লোভ হয় কিন্ত তার মধ্যে শৃগালের মুখ প্রবেশ করে না। বক অনতিবিলম্বে চঞ্চুচালনা করে; ভোঁজনে প্রবৃত্ত হল। শৃগাল বাহিরের থেকে পাত্রলেহন এবং ছুটো একটা উৎক্ষিপ্ত খাদ্যথণ্ডের স্বাদগ্রহণ করে' নিতান্ত ক্ষুধাতুর ভাঁবে বাড়ি ফিরে গেলে। জাতীয় ভোজে বিদেশীর অবস্থা সেই রকম। থাগটা উভয়ের পক্ষে সমান উপাদেয় কিন্তু পাত্রটা তফাৎ। ইংরাজ যদি শুগাল হয় তবে তার স্থবিস্তৃত শুত্র রজত থালের উপর উদঘাটিত পায়সান্ন কেবল চক্ষে দর্শন করেই আমাদের ক্ষুধিতভাবে চলে? আস্তে হয়, আর আমরা যদি তপস্বী বক হই, তবে আমাদের গগভীর পাথরের পাত্রটার মধ্যে কি আছে শৃগাল তা ভাল করে” চঙ্গেড দেখতে পায় না-দুর থেকে ঈবৎ ঘাণ নিয়েই তাকে ফিরতে হয়। প্রত্যেক জাতির অতীত ইতিহাস এবং বাহিক আচার ব্যবহার তার নিজের পক্ষে স্থবিধা কিন্তু অন্য জাতির পঙ্ষে বাঁধা । এই জন্য ইংরাজ সমাজ যদিও বাহাতঃ সাঁধারণসমক্ষে উদবাটিত কিন্তু আমরা চক্র অগ্রভাগটুকুতে ভার ছুই চার ফোটার স্বাদ পাই মাত্র, ক্ষুধা নিবৃত্তি করতে পাঁরিনে। সর্ধজাতীয় ভোজ কেবল সাহিত্য-ক্ষেত্রেই সম্ভব । সেখানে, যার লম্বা চঞ্চু সেও বঞ্চিত হয় না, যার লোল জিহ্বা সেও পরিতৃপ্ত হয়। | “কারণটা সাধারণের হুদয়গ্রাহী হোক্‌ বা না হোক্‌, এখানকার লোকের সঙ্গে হৌ-ডু-যুডু বলে”, হা করে” রাস্তায় টা পর্যটন করে+, থিয়েটার দেখে', দৌকান ঘুরে”, কল কারখানার তথ্য নির্ণয় করে এমন কি সুন্দর মুখ দেখে” আমার শ্রান্তি বোধ হয়েছে । অতএব স্থির করেছি এখন বাড়ি ফিরব ।-- যুরোপ-্যাত্রী। ১২৩ ৭ অক্টোবর । “টেমসত জাহাঁজে একটা ক্যাবিন স্থির করে, আস! গেল। পণ্ড জাহাজ ছাড়বে । ৯ অক্টোবর । জাহাজে ওঠা গেল। এবারে আমি একা । আমার সঙ্গীরা বিলাতে রয়ে গেলেন। আমার নির্দিষ্ট ক্যাবিনে গিয়ে দেখি সেখানে এক কক্ষে চার জনের থাকবার স্থান; এবং আর এক জনের" জিনিবপত্র একটি কোণে রাশীকৃত হয়ে আছে। বাক্স তোরঙ্গের উপর নামের সংলগ্নে লেখা আছে “বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস 1” বলা বাহুল্য, এই লিখন দেখে" ভাবী জঙ্গস্থথের করপনায় আমার মনে অপরিগের নিবিড়াননের সঞ্চার হয় নি। ভাব লু, কোথাকার এক ভারতবর্ষের রোদে ঝলসা এবং শুকনো খট্থটে হাড়-পাকা অত্যন্ত ঝাঁঝালো ঝুনো আযংলোইগডিয়ানের সঙ্গে আমাকে এক জাহাজে পুরেচে। যাদের মধ্যে শত হস্ত ব্যবধান যথেষ্ট নয় এইটুকু ক্যাবিনের মধ্যে ভাদের দুজনের স্থান সংকুলান হবে কি করে" ১ গালে হাত দিয়ে বসে' এই কথা ভাবচি, এমন সগর়ে এক অল্প বয়স্ক সুশ্রী আইরিশ ঘুৰক ঘরের মধ্যে টরকে আমাকে সহাশ্ত মুখে শুভ প্রভাত অভিবাদন করলেন-মুত্র্তের মধ্যে আমার সমস্ত আশঙ্কা! দূর হয়ে গেল। সবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ইনি ভারতবর্ষে যাত্রা করচেন। এর শরীরে ইংলগবাঁসী ইংরাজ্জের স্বাভাবিক সহদয় ভদ্রতার ভাব এখনো সম্পূর্ণ অন্ষুপ্জ ররেচে। ১০ অক্টোবর । সুন্দর প্রাতঃকাল। সমুদ্র স্থির। আঁকাশ পরি- ক্বার। কৃুর্ধ্য উঠেচে। ভোরের বেলা কুয়াশার মধ্যে দিয়া আমাদের ডান দিক থেকে অল্প অল্প তীরের চিহ্ন দেখা বাঁচ্ছিল। অল্পে অন্নে কুয়শীর যবনিকা উঠে গিয়ে ওয়াইট দীপের পার্কত্য তীর এবং ভেপ্টনর সহর ক্রমে ক্রমে প্রকাশ হয়ে পড়ল। এ জাহাজে বড় ভিড়। নিরিবিলি কোণে চৌকি টেনে যে একটু লিখব তাঁর জো নেই, সুতরাং সম্মুখে যা-কিছু চোখে পড়ে তাই চেয়ে চেয়ে দেখি। ১২৪ বিচিত্র প্রবন্ধ ইংরাজ মেয়ের চোখ নিয়ে আমাদের দেশের লোক প্রায়ই ঠাট্রা করে, বিড়ালের চোখের সঙ্গে তার তুলনা করে' থাকে । কিন্তু, এমন সর্বদাই দেখা যায়, তারাই যখন আবার বিলাতে আদে তখন স্বদেশের হরিণ- নয়নের কথাটা আর তাদের বড় মনে থাকে না। অভ্যাসের বাধাটা একবার অতিক্রম করতে পারলেই এক সময়ে যাকে পরিহাস কর! গিয়েছে আর এক সময় তার কাছেই পরাভব মানা নিতান্ত অপন্ভব নয় - ওটা স্পষ্ট স্বীকার করাই ভাল। যতক্ষণ দূরে আছি কোন বাঁলাই নেই, কিন্তু লক্ষ্যপথে প্রবেশ করলেই ইংরাজ সুন্দরীর দৃষ্টি আমাদের অভ্যাসের আবরণ বিদ্ধ করে অন্তরের মধ্যে প্রবেশ করে। ইংরাজ স্ুুনয়নার চোখ মেঘমুক্ত নীলাকাশের মত পরিষ্কার, হীরকের মত উজ্জল এবং ঘন পল্লবে আচ্ছন্ন, তাতে আবেশের ছায়া নেই। অন্য কারো সম্বন্ধে কিছু বলতে চাইনে, কিন্তু একটি ঘুগ্ধহৃদয়ের কথা৷ বলতে পারি, সে নীলনেত্রের কাছেও অভিভূত এবং হরিণনয়নকেও কিছুতেই উপেক্ষা করতে পারে না। 'কৃষ্ কেশপাশও সে মুটের পক্ষে বন্ধন এবং কনককুন্তলও সামান্ত দৃঢ় নয়। সঙ্গীত সম্বন্ধেও দেখা যায়, পূর্ব্বে যে ইংরাজী সঙ্গীতকে পরিহান করে' আনন্দ লাভ করা গেছে, এখন ততপ্রতি মনোবোগ করে" ততোধিক বেশি আনন্দ লাভ করা বার। এখন অভ্যাসক্রমে যুরোপীয় সঙ্গী- তের এতট্কু আস্বাদ পাওয়া গেছে বার থেকে নিদেন এইটুকু বোঝ! গেছে বে বদি চর্চা করা যায় তা৷ হলে ঝুরোপীয় সঙ্গীতের মধ্যে থেকে পরিপূর্ণ রস পাওয়া ঘেতে পারে । আমাদের দেশী সঙ্গীত যে আমার ভাল লাগে সে কথার বিশেষ উল্লেখ করা বাহুল্য । অথচ দুয়ের মধ্যে যে সম্পূর্ণ জাতিভেন আছে তার আর সন্দেহ নেই | আজ অনেক রাত্রে নিরালায় একলা দীড়ির়ে জাহাের কাঠর৷ ধরে' সমূদ্রের দিকে চেয়ে অন্যমন্ফ্ষভাবে গুন্‌ গুন্‌ করে একটা দিশি যুরোপ-যাত্রী ১২৫ রাগিণী ধরেছিলুম। তখন দেখতে পেলুম অনেক দিন ইংরাঁজী- গান গেয়ে গেয়ে মনের ভিতরটা যেন শ্রান্ত এবং অতৃপ্ত হরে ছিল। হঠাৎ এই বাংলা সুরটা পিপাসার জলের মত বোধ হল।, সেই সুরটি সমুদ্রের উপর অন্ধকারের মধ্যে যে রকম প্রসারিত, হল, এমন আর কোন সুর কোথাও পাওয়া যায় বলে” আমার' মনে- হয় না। আমার কাছে ইংরাজি গানের সঙ্গে আমাদের গুনের এই প্রধান প্রভেদ ঠেকে যে, ইত্রাজি সঙ্গীত লোকালয়ের সঙ্গীত, আর' আমাদের সঙ্গীত প্রকাণ্ড নির্জন প্রক্তির অনিষ্ট অনির্ধচণীর বিবাদের! সঙ্গীত | কানাড়া৷ টোডি গ্রভ্ুতি বড় বড় রাগিণীর মধ্যে ঘে গভীরতা এবং কাতরতা আছে সে যেন কোন ব্যক্তিবিশেষের শয়- নে ধেন অকুল অপীমের প্রান্তবন্ত; এই সঙ্গীহীন বিশ্বজগতের | ১৭ অক্টোবর । বিকালের দিকে জাহাজ মণ্টা দীপে পৌছল। কঠিন দুর্গপ্রাকারে বেষ্টিত অগ্টীলিকাঁখচিত তরুগুল্লাহীন সহর। এই শ্তামল পৃথিবীর একটা অংশ যেন ব্যাধি হয়ে কঠিন হয়ে গেছে। দূর থেকে দেখে' নাবতে ইচ্ছে করে না। অবশেষে আমার নববন্ধুর অনু- রোধে তার সঙ্গে একত্রে নেবে পড়া গেল। সমুদ্রতীরে থেকে স্ুড়ঙ্গপথের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ঘাটের মত উঠেছে, তারি সোপান বেয়ে সহরের মধ্যে উঠ্‌লুম। অনেকগুলি গাইডপা্ডা আমাদের ছেঁকে ধরলে। আমার বন্ধু বনুকষ্টে তাঁদের তাড়িয়ে দিলেন। কিন্ত একজন কিছুতেই আমাদের সঙ্গ ছাড়লে না। বন্ধু তাঁকে বারবার ঝেঁকে ঝেঁকে গিয়ে বল্গেন-- শ্চাইনে তোঁমাকে”_-«একটি পয়সাও দেব না”তবু সে সন্ধ্যা পাতটা পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে লেগে ছিল। তাঁর পরে যখন .তাকে নিতান্তই তাড়িয়ে দিলে তখন সে ম্ানমুখে চলে গেল। আমার তাকে কিছু দেবার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সঙ্গে স্বর্ণসদ্র ছাড় আর কিছুই ছিল না। বন্ধ বল্লেন লোকটা গরীৰ সন্দেহ নেই কিন্তু কোন ইংরাঁজ হলে এমন করত ১২৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । না 1- আসলে মানুষ পরিচিত দোষ গুরুতর হলেও মাজ্জনা করতে পারে কিন্তু সামনি অপরিচিত দোষ সহা করতে পারে না। এই জন্তে এক জাতীয়ের পক্ষে আর এক জাতীয়কে বিচার করা কঠিন। 'মণ্টা” মহরটা দেখে” মনে হয় একটা অপরিণত বিকৃত যুরোগীর সহর। পাথরে বাধানো সরু রাস্ত| একবার উপরে উঠচে একবার নীচে নাম্চে।, সমস্তই দুর্গন্ধ েঘাথেঘি অপরিষ্ণার। রাত্রে হোটেলে গিয়ে খেলুম। অনেক দাম দেওয়া গেল, কিন্তু খাঠদ্রবা অতি কদর্যা। আহারান্তে, পহরের মধ্যে একটি বাঁধানো চক্‌ আছে, সেইখানে ব্যাড বাছ্ধ শুনে রাত দশটার সময় জাহাজে ফিরে' আসা গেল। ফেরবার সময় নৌকাওর়ালা আমাদের কাছ থেকে স্তাষা ভাড়ার চেয়ে কিছু বেশি দায়ের চেষ্টার ছিল। আমার বন্ধ এদের অসৎ ব্যবহারে বিষন রাগা- ন্বিত। তাতে আমার মনে পড়ল এবারে লগুনে প্রথম যেদিন আমর! দ্ুই ভাই গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলুম গাড়োয়ান পাচ শিলিং ভাড়ার জায়গা আমাদের কাছে বারো শিলিং ঠকিয়ে নিয়েছিল । ১৯ অক্টোবর, আজ সকালে জাহাজ বখন ব্রিন্দিশি পৌছল তখন ঘোর বৃষ্ট। এই বৃষ্টিতে একদল গাইরে বাজিয়ে হার্প বেয়ালা ম্যাপ্ডোলীন্‌ নিয়ে ছাতা নাথায় জাহাজের সম্মুখে বন্দরের পথে দীড়িয়ে গান বাজনা জুড়ে দিলে । বৃষ্টি থেমে গেলে বন্ধুর সঙ্গে ব্রিশ্দিশিতে বেরোন গেল। সহর ছাড়িয়ে একটা খোলা জায়গায় গিয়ে পৌছলুম ! আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, পাহাড়ে রাস্তা শুকিয়ে গেছে, কেবল ছুইধারে নাঁলায় মাঝে মাঝে জল দীড়িয়ে আছে। রাস্তার ধারে গাছে চড়ে” ঢ্ুটো খালি-পা ইটালিয়ান ছোকরা! ফিগ গেড়ে খাচ্ছিল; আমাদের ডেকে ইসারায় জিজ্ঞাসা করলে তোমরা! খাবে কি- আমরা বুম, না। খানিক বাদে দেখি তারা ফলবিশিষ্ একটা ছিন্ন অলিভ শাখা নিয়ে এসে উপস্থিত। জিজ্ঞাসা করলে, অলিভ, যুরোপ-যাত্রী। ১২৭ ্পািপাস্সিণ সপাসিপনিপাসিাসিপাসি শী নিপিসিতা খাবে? আনরা অনম্মত হলুম। তার পরে ইসারায় তামাক প্রার্থনা করে' বন্ধুর কাছ থেকে কিঞ্চিৎ তামাক আদার করলে । তামাক খেতে থেতে দুজনে বরাবর আমাদের সঙ্গে সঙ্গে চলল। আমরা পরম্পরের ভাষা জানিনে_ আমাদের উভয় পক্ষে প্রবল অঙ্গভঙ্গিদারা ভাব প্রকাশ চল্তে লাগল। জনশূন্য রাস্তা ক্রমণঃ উচ্চ হয়ে শস্যন্ষেত্রের মধ্য দিয়ে বরাবর চলে” গিয়েছে । কেবল মাঝে মাঝে এক একটা ছোট বাড়ি, জান্লার কাছে ফিগকল শুকোতে দিয়েছে। এক এক জায়গায় ছোট ছোট শাখাপথ বক্রগতিতে একপাশ দিয়ে নেমে নীচে কোথায় অদৃষ্ঠ হয়ে গেছে । ফেরবার মুখে একটা গোরস্থানে ঢোকা গেল। এখানকার গোর নৃতন রকমের দেখলুন। অর্ধিকাংশ গোরের উপরে এক-একটি ছোট ঘর গেঁথেছে। সেই ঘর পৰা দিয়ে ছবি দিয়ে রডীন্‌ জিনিষ দিরে নানা রকমে সাজানো, বেন বুঠ্যর একটা খেলাঘর এর অধ্যে কেমন একটি ছেলে- মানবী আছে --সৃত্যুটাকে বেন বথেষ্ট খাতির করা হচ্ছে না। গোরস্কানের একজারগায় নিঁড়ি দিয়ে একটা নাটির নীচেকার ঘরে নাবা গেল। সেখানে সহজ নহত্র মড়ার নাথা অতি সুশৃঙ্খল ভাবে স্তপাকারে সাজানো । তৈথুরলঙ্গ বিশ্ববিজয় করে একদিন এইরকম একটা উৎকট কৌতুকবৃগ্ত বেখেছিেন। আমার সঙ্গে সঙ্গেই নিশিদিন বে একটা কঙ্কাল চলে' বেড়ান্চে এ মুণ্ডগুলো৷ দেখে তার আক্কতিটা মনে উদয় হল। জীবন এবং সৌন্দধ্য এই অসীম জীবলোকের উপর একটা চিত্রিত পদ্দা ফেলে রেবেছে_কোন নিঠ,র দেবত। বদি হঠাৎ একদিন দেই লাবণামর চর্নববনিক| সমস্ত নরনংসার থেকে উঠিয়ে ফেলে, আহলে অকন্মাৎ দেখতে পাওয়া বার আরক্ত অবরপল্নবের অন্তরালে গোপনে বসে' বসে" শু শ্বেত দন্তপংক্তি সমস্ত পৃথিবী ছুড়ে বিকট বিজপের হস্ত করছে। পুরোণৌ বিষয়! পুরোপো কথা! এ নরকপাল অবলম্বন করে” নীতিজ্ঞ পণ্ডিতের! অনেক বিভীবিকা! প্রচার করেচেন__কিন্ত অনেক- ১২৮ বিচিত্র প্রবন্ধ ক্ষণ চেয়ে চেয়ে দেখে আমার কিছুই ভয় হল না! শুধু এই মনে হল,, সীতাকুণ্ডের বিদীর্ণ জলবিম্ব থেকে যেমন খাঁনিকটা তপ্ত বাষ্প বেরিয়ে যায়, তেমনি পৃথিবীর কত যুগের কত দুশ্চিন্তা, ছুরাঁশা, অনিদ্রা ও শিরঃগীড়া এঁ মাথার খুলিগুলৌর_এঁ গোলাকার অস্থিবুদবুদ্গুলোর মধ্যে থেকে অব্যাহতি পেছেছে ! এবং সেই সঙ্গে এও মনে হল, পৃথিবীতে অনেক ডাক্তার অনেক টাঁকের ওষুধ আবিষ্কার করে” চীৎকার করে" মরচে,, কিন্ত এ লক্ষ লক্ষ কেশহীন মস্তক তত্প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীন, এবং দন্ত- মার্জনওয়ালারা বতই প্রচুর বিজ্ঞাপন প্রচার করচে এই অস্খখ্য দন্তশ্রেণী তার কোন খোঁজ নিচ্চেন। | যাই হোক্‌, আপাতিতঃ আমার এই কপাঁলফলকটার মধ্যে বাঁড়ির চিঠির প্রত্যাশা সঞ্চর্ণ করচে। যদি পাওয়া যায় তা হলে এই খুলিটার মধ্যে খানিকটা! খুসির উদর হবে, আর যদি না পাই তা হলে এই অস্থি- কোঁটরের মধ্যে ছুঃখ নামক একটা! ব্যাপারের উদ্ভব হবে _ঠিক মনে হবে আমি কষ্ট পাচ্চি। ২৩ অক্টোবর । স্থয়েজ খালের মধ্যে দিয়ে চলেছি । জাহাজ অতি মন্থর গতিতে চলেচে। উজ্জল উত্তপ্ত দিন। একরকম মধুর আলস্তে পুর্ণ হয়ে আছি। যুরোপের ভাব একেবারে দূর হরে গেছে। আমাদের সেই রৌদ্রতপ্ত শান্ত দরিদ্র ভারতবর্ষ, আমাদের সেই ধরাপ্রান্তবন্তী পৃথিবীর অপরিচিত নিভৃত নদীকলধ্বনিত ছায়াম্ুপ্ত বাংলা দেশ, আমার সেই অরর্ণ্য গৃহপ্রিয় বাল্যকাল, কল্পনাক্লিষ্ট যৌবন, নিশ্চেষ্ট নিরুণ্ঠম চিন্তাপ্রিয় জীবনের স্থৃতি এই সূর্ধকিরণে, এই তপ্ত বাযুহিল্লোলে সুদুর মরীচিকার মত আমার দৃষ্টির সম্মুখে জেগে উঠছে। | ডেকের উপরে” গরের বই পড়ছিনু। মাঝে একবার উঠে” দেখলুম, ছু'ধারে ধৃসরবর্ণ বালুকাতীর _জলের ধারে ধারে একটু একটু বনঝাউ- যুরোপ-বাত্রী | ১২৯ এবং অর্দানুষ্ষ তৃণ উঠেছে । আমাদের ডানদিকের বালুকা-রাশির মধ্যে দিয়ে একদল আরব শ্রেণীবদ্ধ উট বৌঝাই করে? নিয়ে চলেচে। প্রখর সুরযযালোক এবং ধূসর মরুভূমির মধ্যে তাঁদের নীল কাপড় এবং সাদা পাগড়ি দেখা যাচ্চে। কেউবা! এক জায়গায় বাঁলুকাগহ্বরের ছায়ায় পা ছড়িয়ে অলস ভাবে শুয়ে আছে--কেউ বা নমাঁজ পড়চে, কেউ বা নাসারজ্ছু ধরে” অনিচ্ছুক উট্‌কে টানাটানি করচে। সমস্তটা মিলে খররৌদ্র আরব-মরুভূমির একখণ্ড ছবির মত মনে হল। ২৪ অক্টোবর । আমাদের জাহাজের মিসেন্কে দেখে একটা নাট্যশালার ভগ্রাবশেষ বলে? মনে হয়। সেখানে অভিনয়ও বন্ধ, বাসের পক্ষেও সুবিধা নয়। রমণীটি খুব তীক্ষধার_-যৌবনকালে বোধ করি অনেকের উপর অনেক খরতর শর চালনা করেছে। যন্িও এখনো! নাকে মুখে কথ! কয় এবং অচিরজাত বিডালশাবকের মত ক্রীড়াচাতুরী- শালিশী, তবু কোন যুবক এর সঙ্গে ছুটো কথ! বলবার জন্যে ছুতো অন্বেষণ করে না, নাচের সময় আহ্বান করে না, আহারের সময় সযস্ে পরিবেষণ করে না। তার চঞ্চলতার মধ্যে শ্রী নেই, প্রথরতার মধ্যে জ্যোতি নেই, এবং প্রৌঢতার সঙ্গে রমণীর মুখে যে একটি ম্নেহমন্ন সুপ্রসন্ন ্থগ্রভীর মাতৃভাৰ পরিস্ফ,ট হয়ে ওঠে তাঁও তার কিছুমাত্র নেই। ওদিকে আবার মিস্‌ অমুক এবং অমুককে দেখ! কুমারীদয় অবি- শ্রাম পুরুষসমাজে কি খেলাই খেলাচ্চে! আর কোন কাজ নেই, আর কোন ভাবনা নেই, আর কোন সুখ নেই,_মন নেই, আত্ম! নেই, কেবল চখে মুখে হাসি এবং কথা এবং উত্তর-প্রত্যুত্তর। ২৬ অক্টোবর । জাহাঁজের একটা দিন বর্ণন! করা যাঁক্‌। সকালে ডেক্‌ ধুয়ে গেছে, এখনো ভিজে রয়েছে। ছুইধাঁরে ডেকৃ- চেয়ার বিশৃঙ্খলভাবে পরস্পরের উপর রাশীরুত। খালিপায়ে রাতি-কাপড়- পরা পুরুষগণ কেউবা বন্ধুসঙ্গে কেউবা একলা মধ্যপথ দিয়ে হুহু করে” ১৩০ বিচিত্র প্রবন্ধ। পি বেড়াচ্চে। ক্রমে যখন আটটা বাজল এবং একটি আঁধটি করে মেয়ে উপরে উঠতে লাগল তখন একে একে এই বিরলবেশ পুরুষদের অন্তধ্ণান | স্নানের ঘরের সম্মুখে বিষম ভিড় ! তিনটি মাত্র ন্নানাগার ; আমরা অনেকগুলি দ্বারস্থ। তোয়ালে এবং স্পঞ্জ হাতে দ্বারমোচনের অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছি। দশ মিনিটের অধিক স্নানের ঘর অধিকার করবার নিয়ম নেই। ন্নান এবং বেশভূষ| সমাপনের পর উপরে গিয়ে দেখা যায় ডেকের উপর পদচারণশীল প্রভাতবাযুসেবী অনেকগুলি স্ত্রীপুরুষের সমাগম হয়েচে। ঘন ঘন টুপি উদ্ঘাটন করে” মহিলাদের এবং শিরঃকম্পে পরিচিত বদ্ধু- বান্ধবদের সঙ্গে শুভপ্রভাত অভিবাদনপুর্ববক গ্রীষ্মের তারতম্য সন্বন্ধে পরস্পরের মতামত ব্যক্ত করা! গেল । নরটার ঘণ্টা বাজল। ব্রেক্ফাষ্ট প্রস্তত। বুভুক্ষ নরনারীগণ সৌপানপথ দিয়ে নিয্কক্ষে ভোজনবিবরে প্রবেশ করলে। ডেকের উপরে আর জনপ্রাণী অবশিষ্ট রইল না । কেবল সারিসারি শূন্য্বদয় চৌকি উদ্ধমুখে প্রভু্দের জন্তে অপেক্ষা করে” রইল। ভোজনশাঁল! প্রকাণ্ড ঘর। মাঝে ছুইসার লম্বা টেবিল, এবং তার ুইপার্থে খণ্ড খণ্ড ছোট ছোট টেবিল। আমরা দক্ষিণ পার্খে একটি ক্ষুদ্র টেবিল অধিকার করে, সাতটি প্রাণী দিনের মধ্যে তিনবার ক্ষুধা নিবৃত্তি করে? থাকি। মাংস রুটি ফলমূল মিষ্টান্ন মদিরাঁয় এবং হাস্তা- কৌতুক গন্প-গুজবে এই অনতি উচ্চ স্ুপ্রশস্ত ঘর কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। | আহারের পর উপরে গিয়ে যে যার নিজ নিজ চৌকি অন্বেষণ এবং যথাস্থানে স্থাপনে ব্যন্ত। চৌকি খুঁজে পাওয়া দ্বায়। ডেক্‌ ধোঁবার সময় কার চৌকি কোথায় ফেলেচে তার ঠিক নেই। তারপর চৌকি খুঁজে নিয়ে আপনার জায়গাটুকু গুছিয়ে নেওয়া বিষম যুরোপ-যাত্রী। ১৩১ ব্যাপার। যেখানে একটু কোণ, যেখানে একটু বাতাস, যেখানে একটু রৌদ্রের তেজ কম, যেখানে যার অভ্যাস সেইখানে ঠেলেচুলে টেনেটুনে পাশ কাটিয়ে পথ করে' আপনার চৌকিটি রাখতে পারলে সমস্ত দিনের মত নিশ্চিন্ত । তারপরে দেখা বায় কোন চৌকিহারা মলানমুখী রমণী কাতরভাবে ইতস্ততঃ দৃষ্টিপাত করচে, কিবা কোন বিপদ্গ্রস্ত অবলা! এই চৌকি-অরণ্যের মধ্যে থেকে নিজেরটি বিগ্রিষ্ট করে' নিয়ে অভিপ্রেত স্থানে স্থাপন করতে পারচে না-তখন পুরুষগণ নারীসহানত্রতে চৌকি-উদ্ধারকার্যে নিযুক্ত হয়ে স্ুশিষ্ট ও সুমিষ্ট ধন্যবাদ অর্জন করে, থাকে । তাঁর পরে থে ঘার চৌকি অধিকার করে' বসে? বাওয়া যাঁয়। ধৃমসেবি- গণ, হয় ধূমকক্ষে নয় ডেকের পশ্চান্ভাগে সমবেত হয়ে পরিতৃপ্ত মনে ধূমপান, করচে। মেয়ের! অর্ধনিলীন অবস্থাত্ব কেউ বা নবেল পড়চে, কেউবা শেলাই করচে; মাঝে মাঝে দুই একজন যুবক ক্ষণেকের জন্যে পাঁশে বলে” মধুকরের মত কানের কাছে গুন্‌ গুন করে' আবার চলে" যাচ্ছে। আহার কিঞ্চিৎ পরিপাঁক হ্বামাত্র এক দলের মধ্যে কয়টুদ্‌ খেলা! আরন্ত হল। দুই বাল্তি পরস্পর হতে হাত দশেক দূরে স্থাপিত হল। দুই জুড়ি স্বীপুরুব বিরোধী পক্ষ অবলম্বন করে' পালাক্রমে স্ব স্ব স্থান থেকে কল্দীর বিড়ের মত কতকগুলি রজ্জুচক্র বিপরীত বান্তির মধ্যে ফেলবার চেষ্ট। করতে লাগল । যে পক্ষ সর্ধাগ্রে একুশ করতে পাঁরবে তারই জিত। মেয়ে খেলোদ্াড়েরা কখনো জয়োচ্ছবাসে কখনো নৈরাহ্যে উদ্ধকণ্ঠে চীৎকার করে? উঠচেন। কেউ বা দীড়িয়ে দেখচে, কেউবা গণনা করচৈ, কেউবা খেলায় যোগ দিচ্চে, কেউবা আপন আপন পড়ায় কিন্ব! গল্পে নিবিষ্ট হয়ে আছে। একটার সময় আবার ঘণ্টা । আবার আহাঁর। আহারাস্তে উপরে ফিরে এসে ছুইন্তর থাগ্ভের ভারে এবং মধ্যান্থের উত্তাপে আলম্ত অত্যন্ত ১৩২ 'বিচিত্র প্রবন্ধ । স্পসিল সপসিপা উপাস্সি ঘনীভূত হয়ে আদে। সমুদ্র প্রশান্ত, আকাশ সুনীল মেঘমুক্ত, অল্প অল্ বাতাস দিচে। কেধীারায় হেলান্‌ দিয়ে নীরবে নভেল পড়তে পড়তে অর্ধিকাংশ নীলনয়নে নিদ্রাবেশ হয়ে আন্চে। কেবল ছুই একজন দাবা, ব্যাক্গ্যামন্‌ কিবা ডুকট্‌ খেলছে, এবং ছুই একজন অশ্রান্ত অধ্যবসায়ী যুবক সমন্ত দিনই কয়ট.স্‌ খেলায় নিযুক্ত। কোন রমণী কোলের উপর কাগজ কলম নিয়ে একাগ্রমনে চিঠি লিখচে, এবং কোন শিল্পকুশলা কৌতুকপ্রিয়। যুবতী নিদ্রিত সহ্বাত্রীর ছবি আঁকতে চেষ্টা করচে। ক্রমে রৌদ্রের প্রথরতা হাঁস হয়ে এল। তখন তাপকিষ্ট ক্লান্তকায়গণ নীচে নেমে গিয়ে রুটিমাখনমিষ্টান্ন সহযোগে চা-রস পাঁন করে' শরীরের জড়তা পরিহারপুর্ববক পুনর্বার ডেকে উপস্থিত। পুনব্বার যুগল মুগ্তির * সোতসাহ পদচারণা এবং মৃদুমন্দ হাশ্তালাপ আরম্ত হল। কেবল দ্ু'চার জন পাঠিকা উপন্যাসের শেষ পরিচ্ছেদ থেকে কিছুতেই আপনাকে বিচ্ছিন্ন করতে পাঁরচে না,_দিবাবসানের ম্লান ্সীণালোকে একাগ্রনিবিষ্ দৃষ্টিতে নায়ক নাস্সিকার পরিণাম অনুসরণ করচে। দক্ষিণে জলস্ত কনকাঁকাঁশ এবং অগ্নিবর্ণ জলরাশির মধ্যে স্র্য অস্ত গেল এবং বামে ুত্যান্তের কিছু পূর্ব হতেই চন্দ্রোদয় হয়েচে। জাহাজ থেকে পূর্ব্িগন্ত পর্যন্ত বরাবর জ্যোত্মা-রেখা বিক্বিক. করচে। পূর্ণিমার সন্ধ্যা নীল সমুদ্রের উপর আপনার শুভ্র অঙ্গুলি স্থাপন করে” আমাদের সেই জ্যোৎন্বাপুলকিত পুর্ববতারতবর্ষের পথ নির্দেশ করে” দিচ্চে। জাহাজের ডেকের উপরে এবং কক্ষে কক্ষে বিচ্যুদ্দীপ জলে” উঠল । ছঁটার সময় ডিনারের প্রথম ঘণ্টা বাজল। বেশ পরিবর্তন উপলক্ষে সকলে স্ব স্ব কক্ষে প্রবেশ করলে। আধঘণ্টা পরে দ্বিতীয় ঘণ্টা বাজল। ভোঁজনগৃহে প্রবেশ করা গেল। সাঁরিসারি নরনারী বসে গেছে। কারে! বা কাঁলো৷ কাপড়, কারো! রভভীন কাপড়, কারো বা শুত্রবক্ষ অর্ধ- অনাবৃত। মাথার উপরে শ্রেণীবদ্ধ বিদ্যুৎ-আলোক জলচে। গুন্গুন্‌ যুরোপ-যাত্রী। ১৩৩ আলাপের সঙ্গে কাটাচামচের টুং টুং ঠৃং ঠূং শব্দ উঠ্‌চে, এবং বিচিত্র খাছ্ছের পর্যায় পরিচারকের হাতে হাতে নিঃশব শোতের মত যাতায়াত করচে। আহারের পর ডেকে গিয়ে শাতল বায়ু সেবন। কোথাও বা যুবক- যুবতী অন্ধকার কোণের মধ্যে চৌকি টেনে নিয়ে গুন্গুন্‌ করচে, কোথাও বা দু'জনে জাহাজের বারান্দা ধরে? ঝুঁকে পড়ে” রহস্তালাঁপে নিমগ্ন, কোন কোন জুড়ি গল্প করতে করতে ডেকে আলোক ও অন্ধকারের মধ্য দিয়ে দ্রুতপদে একবার দেখা দিচ্চে, একবার অপৃশ্ঠ হয়ে যাচ্চে, কোথাও বা একধারে পাঁচসাত জন স্ত্রীপুরুষ এবং জাহাজের কর্মচারী জটলা করে, উচ্চ-হান্তে প্রমোদকল্লোল উচ্ছ।সিত করে? তুলচে। অলঙ পুরুষরা কেউবা বসে' কেউবা দায়ে কেউবা অর্ধশয়ান অবস্থায় চুরট খাচ্ছে, কেউবা ম্মোকিং ফেলুনে কেউবা নীচে খাবার ঘরে হইস্কি-সোডা পাশে রেখে চারজনে দল বেঁধে বাজি রেখে তান খেলচে। ওদিকে সঙ্গীত- 'শালায় সঙ্গীতপ্রিয় ছু'চার জনের সমাবেশ হয়ে গান বাজনা এবং মাঝে মাঝে করতালি শোনা যাচ্চে । ৰ ক্রমে সাড়ে দশটা বাজে,_-মেয়েরা নেবে যায়,ডেকের উপরে আলো হঠাৎ নিবে যায়, _ডেক্‌ নিঃশব্দ নিজ্ঞন অদ্ধকার হয়ে আসে, এবং চারিদিকে নিশীথের নিস্তব্ধতা, চন্ত্রালোক এবং অনন্ত সমুদ্রের অশ্রীস্ত কলধবনি পরিস্ফ,ট হয়ে ওঠে। ২৭ অক্টোবর। লোহিত সমুদ্রের গরম ক্রমেই বেড়ে উঠচে। ডেকের উপর মেয়েরা সমস্ত দিন ভৃষাতুরা হরিণীর মত ক্রিষ্ট কাতির হয়ে রন্েচে। তারা কেবল অতি ক্লান্তভাবে পাখা নাড়চে, ম্মেলিং সন্ট, শু কচে, এবং সকরুণ যুবকের! বখন পাশে এসে কুশল জিজ্ঞাসা করচে তখন নিমীলিত- প্রায় নেত্রপল্লব ঈষৎ উন্মীলন করে' ম্লানহান্তে কেবল গ্রীবাতঙ্গী ছারা আপন সুকুমার দেহলতার একান্ত অবসন্নতা ইঙ্গিতে জানাচ্চে। যতই ১৩৪ বিচিত্র প্রবন্ধ | পরিপূর্ণ করে' টিফিন্‌ এবং লেবুর সরবৎ খাচ্চে ততই জড়ত্ব এবং ক্লান্তি বাড়ে, নেত্র নিদ্রানত ও সব্ধশরীর শিথিল হয়ে আদ্চে। | ২৮ অক্টোবর । আজ এডেনে পৌছন গেল। ২ নবেশ্বর। ভারতবর্ষের কাছাকাছি আসা গেছে। কাল বোঁ্াই পৌছবার কথা । আজ সুন্দর সকালবেলা । ঠাণ্ডা বাতাস বচ্চে-_সমুদ্র সফেন তরঙ্গে নৃত্য করচে, উজ্জল রৌদ্র উঠেচে) কেউ কয়ট স্‌ খেল্চে, কেউ নবেল পড়চে, কেউ গল্প করচে ? ম্যুজিক সেলুনে গান চল্চে, ম্মোকিং সেলুনে তাস চল্চে, ডাইনিং সেলুনে খানার আয়োজন হচ্চে, এবং একটি সঙ্কীর্ঘ ক্যাবিনের মধ্যে আমাদের একটি বৃদ্ধ সহযাত্রী মরচে। সন্ধ্যা আটটার সময় ডিলন্‌ সাহেবের মৃত্যু হল। আজ সন্ধ্যার সময় একটি নাটক অভিনয় হবাঁর কথ ছিল। ৩ নবেম্বর ।”: সকালে অস্ত্যেষ্ট অনুষ্ঠানের পর. ডিলনের মৃতদেহ সমুদ্রে নিক্ষেপ.করা হল আজ আমাদের সমুদ্র্যাত্রার শেষ দিন। অনেক রাত্রে জাহাজ বোম্বাইবন্দরে পৌছল। ৪ নবেম্বর।'. . জাহাজ ত্যাগ করে' ভারতবর্ষে নেমে এখন সংসারটা মোটের: উপরে বেশ ' আনন্দের স্থান বোধ হচ্চে। কেবল একটা গোল বেখেছিল্‌--টাকাকড়িসমেত আমার ব্যাগটি জাহা- জের ক্যাবিনে ফেলে'' এসেছিলুম। তাতে করে” সংসারের আকৃতির হঠাৎ অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হোটেল থেকে অবিধন্বে জাহাজে ফিরে গিয়ে সেটি সংগ্রহ করে' এনেছি। এই ব্যাগ. ভূলে যাবার সম্ভাবনা কাল চকিতের মত একবার মনে উদ্নয় হয়েছিল। মনকে তখনি সাবধান করে" দিলুম ব্যাগটি যেন না ভোলা হয়। মন বললে, ক্ষেপেছ! আমাকে তেমনি লোক পেয়েছ !__আজ সকালে তাকে বিলক্ষণ একচোঁট ভর্খসনা করেচি__ ১৩৫ যুরোপ-যাঁধী। সে নতমুখে নিরুত্তর হয়ে রইল। তার পর যখন ব্যাগ ফিরে পাওয়া গেল তখন আবার তার পিঠে হাত বুলতে বুলতে হোটেলে ফিরে এসে সান করে' বড় আরাম বোধ হচ্চে! এই ঘটন! নিয়ে আমার স্বাভাবিক বুদ্ধির প্রতি কটাক্ষপাত করে পরিহাস করবেন সৌভাগাক্রমে এমন প্রিয়বন্ধু কেউ উপস্থিত নেই। সুতরাং রাত্রে যখন কলিকাঁতামুখী গাড়িতে চড়ে” বস! গেল, তখন যদ্দিও আমার বালিশটা ভ্রমক্রমে হোটেলে ফেলে এসেছিলুম তবু আমার সুখনিদ্রার বিশেষ ব্যাঘাত হয় নি। পঞ্চভূত। পরিচয়। রচনার সুবিধার জন্য আমার পাঁচটি পরিপার্ধিককে পঞ্চভূত নাম দেওয়া যাক্‌। ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম। একটা গড়া নাম দিতে গেলেই মানুষকে বদল করিতে হয়। তলো- য়ারের যেমন খাপ, মানুষের তেমন নামটি ভাষায় পাওয়া অসম্ভব । বিশেষত; ঠিক পাঁচ ভূতের সহিত পাঁচটা মানুষ অবিকল মিলাইব কি করিয়া? আমি ঠিক মিলাইতে চাহি না। আমি ত আদালতে উপস্থিত হইতেছি না। কেবল পাঠকের এজলাসে লেখকের একটা এই ধর্মশপথ আছে, যে, সত্য বলিব। কিন্তু সে সত্য বানাইয়া বলিব। এখন পঞ্চভূতের পরিচয় দিই । শ্রীযুক্ত ক্ষিতি আমাদের সকলের মধ্যে গুরুভার। তাহার অধিকাংশ বিষয়েই অচল অটল ধারণা । তিনি যাহাকে প্রত্যক্ষভাবে একটা দৃঢ় আকারের মধ্যে পান, এবং আবশ্তক হইলে কাজে লাগাইতে পারেন তাহা- কেই সত্য বলিয়া জানেন। তিনি বলেন, যে সকল জ্ঞান আবশ্যক তাহারই ভাঁর বহন করা যথেষ্ট কঠিন। বোঁঝা ক্রমেই ভারী এবং শিক্ষা ক্রমেই দুঃসাধ্য হইয়া উঠিতেছে। প্রাচীনকালে যখন জ্ঞান বিজ্ঞান এত স্তরে স্তরে জমা হয় নাই, মানুষের নিতান্তশিক্ষণীয় বিষয় যখন যংসামান্ত ছিল, তখন সৌধীন শিক্ষার অবসর ছিল। কিন্তু এখন আর ত সে অবসর নাই। ছোট ছেলেকে কেবল বিচিত্র বেশবাম এবং অলঙ্কারে আচ্ছন্ন করিলে কোন ক্ষতি নাই, তাহার খাইয়াদাইয়া আর কোন কর্ম নাই। পঞ্চভূত। ৯ কিন্ত তাই বলিয়া, ব্যঃপ্রাপ্ত লোক, যাহাকে করিয়া-কণ্সিয়া, নড়িয়া-চড়িয়া, উঠিয়া ইাটিয়া ফিরিতে হইবে, তাহাকে পায়ে নূপুর, হাতে কন্ধণ, শিখায় 'ময়ুরপুচ্ছ দিয়া সাজাইলে চলিবে কেন? তাহাকে কেবল মালকৌচ। এবং শিরন্ত্রাণ আটিরা দ্রতপদ্দে অগ্রসর হইতে হইবে। এই কারণে সভ্যতা হইতে প্রতিদিন অলঙ্কার খসিয়। পড়িতেছে। উন্নতির অর্থই এই, ক্রমশঃ আবশ্তকের সঞ্চয় এবং অনাবশ্যকের পরিহার । শ্রীমতী অপ্‌ (ইহাকে আমরা আোতদ্বিনী বলিব) ক্ষিতির এ তর্কের কোন রীতিমত উত্তর করিতে পারেন না। তিনি কেবল মধুর কাঁকলীতে ুরিয়া ফিরিয়া বলিতে থাকেন-নাঁ, না, ও কথা কখনই সত্য না। ও আদার মনে লইতেছে না, ও কখনই সম্পূর্ণ সত্য হইতে পারে না। কেবল বারবার “না না, নহে নহে”। তাহার সহিত আর কোন ঘুক্তি নাই কেবল না না, নহে নহে। আমি অনাবশ্তককে ভালবাসি, অতএব অনাবশ্তকও আবশ্তক। অনাবশ্তক আমাদের আর কোন উপকার করে না, কেবলমাত্র আমাদের ম্নেহ, আঁমাঁদের ভালবাসা, আমাদের করুণা, আমাদের স্বার্থবিসঙ্জনের স্পৃহা উদ্রেক করে, পৃথিবীতে সেই ভালবাসার আবশ্তকতা কি নাই? শ্রীমতী আোতম্বিনীর এই অনুনয় প্রবাহে শ্রীযুক্ত ক্ষিতি প্রায় গলিয়া যান, কিন্তু কোন যুক্তির দ্বারা তাহাকে পরাস্ত করিবার সাব্য কি? শ্রীমতী তেজ ( ইহাকে দীপ্তি নাম দেওয়া গেল) একেবারে নিষাসিত অনিলতার মত ঝিকৃমিক্‌ করিয়া উঠেন এবং শাণিত সুন্দর সুরে ক্ষিতিকে বলেন, ইদ্‌! তোমরা মনে কর পৃথিবীতে কাজ তোমরা কেবল একটাই কর! তোমাদের কাজে যাহা আবশ্যক নয় বলিয়া ছবটিরা ফেলিতে চাও, আনাদের কাঙ্জে তাহা আবপ্তক হইতে পারে। তোমাদের আচার- ব্যবহার, কথাবার্ডী, বিশ্বাস, শিক্ষা এবং শরীর হইতে অলঙ্কারমাত্রই তোমর! ফেলিয়া দিতে চাও, কেন না, সভ্যতার ঠেলাঠেলিতে স্থান এবং ১৩৮ বিচিত্র প্রবন্ধ | সময়ের বড় অনটন হইয়াছে । কিন্তু আমাদের যাহা চিরন্তন কাস, এ অলঙ্কারগুলো ফেলিয়! দিলে তাহা একপ্রকার বন্ধ হুইয়! যায়। আমাদের কত টুকিটাকি, কত ইটি-উটি, কত মিষ্টতা, কত শিষ্টতা, কত কথা, কত, কাহিনী, কত ভাব, কত ভঙ্গী, কত অবসর সঞ্চয় করিয়া তবে এই. পৃথিবীর গৃহকার্ধ্য চালাইতে হয়! আমর! মিষ্ট করিয়! হাসি, বিনয় করিয়।৷ বলি, লজ্জা করিয়া কাঁজ করি, দীর্ঘকাল যত্ব করিয়া যেখানে যেটি পরিলে শোভা পাঁয় সেটি পরি, এই জন্যই তোঁমাদের মাঁতাঁর কাজ, তোমাদের স্ত্রীর কাঁজ এত সহজে করিতে পারি। যদি সত্যই সভ্যতার, তাড়ায় অত্যাবস্তক জ্ঞানবিজ্ঞান ছাড়া আর সমস্তই দূর হইয়া! যায়, তবে, একবার দেখিবার ইচ্ছা আছে অনাথ শিশুসস্তানের এবং পুরুষের মত এত বড় অসহায় এবং নির্বোধ জাতির কি দরশাটা হয়! শ্রীযুক্ত বায়ু ( ইহাকে সমীর বলা যাক্‌) প্রথমটা -একবার হাসিয়া সমস্ত উড়াইয়া দ্রিলেন। তিনি বলিলেন, ক্ষিতির কথা ছাড়িয়া দাও). একটুখানি পিছন হঠিয়া, পাশ ফিরিয়া, নড়িয়া-চিয়া একটা সত্যকে, নান দিক, হইতে পর্যবেক্ষণ করিতে গেলেই উহার চলংশক্তিহীন মাঁনদিক রাঁজ্যে এমনি একটা ভূমিকম্প উপস্থিত হয়, যে, বেচারার বহুবত্নির্ষিত। পাকা মতগুলি কোনট! বিদীর্ণ, কোনটা ভূমিসাৎ হইয়া যায়। কাজেই ও ব্যক্তি বলে, দেবতা হইতে কীট পর্যন্ত সকলি মাটি হইতে উৎপন্ন ৮ কাঁরণ মাটির বাহিরে আর কিছু আছে স্বীকার করিতে গেলে আবার মাটি হইতে অনেকখানি নড়িতে হয়। *্রীযুক্ত ব্যোম কিয়ৎকাল চক্ষু মুদিয়া বলিলেন_ঠিক মানবের কথা দি বল, যাঁহা অনাবশ্তক তাহাই তাহার পক্ষে সর্বাপেক্ষা আবশ্তক। ষে কোন-কিছুতে সুবিধা হয়, কাঁজ চলে, পেট ভরে, মানুষ তাহাকে প্রতিদিন দ্বণা করে। এই জন্ত ভারতের খবিরা ক্ষুধাতৃষ্ণা শীতগ্রীনস একেবারেই উড়াইয়া দিয়া মনুষ্যত্বের স্বাধীনতা প্রচার করিয়াছিলেন ।, পঞ্চভৃত ] ১৩৯ বাহিরের কোন কিছুরই যে অবশ্ঠ-প্রয়োজনীয়তা আছে ইহাই জীবাত্মার পক্ষে অপমানজনক | অত্যাবশ্যকটাকেই যদি মাঁনব-সভ্যতার সিংহাসনে রাজা করিয়া বসানো হয় এবং তাহার উপরে যদি আর কোন সম্াটকে স্বীকার না করা যায়, তবে, সে সভ্যতাকে শ্রেষ্ঠ সভ্যতা৷ বলা যায় না। ব্যোম যাহা বলে তাহা কেহ মনোযোগ দিয় শোনে না। পাছে তাহার মনে গাঘাত লাঁগে এই আশঙ্কায় আোতম্বিনী যদিও তাঁহার কথা! প্রণিধানের ভাবে শোনে, তবু মনে মনে ত্রাহাকে বেচারা! পাঁগল বলিয়া বিশেষ দয়া করিয়া! থাঁকে। কিন্তু দীপ্তি তাহাকে সহিতে পারে না। অধীর হইয়া! উঠিয়া মাঝখানে অন্য কথা পাঁড়িতে চায়। তাহার কথা ভাল বুঝিতে পারে ন! বলিয়া তাহার উপর দীপ্তির যেন একটা! আন্তরিক বিদ্বেষ আছে । কিন্তু ব্যোমের কথা আঁমি কখন একবারে উড়াইয়া দিই নাঁ। আমি তাঁহাকে বলিলাম, খষিরা কঠোর সাধনায় যাহা নিঞ্জের নিজের জন্য করি- য়াছিলেন, বিজ্ঞান তাহাই সর্বসাধারণের জন্য করিয়া দিতে চায়। ক্ষুধা- তৃষ্ণা, শীতগীক্ম এবং মানুষের প্রতি জড়ের যে শত শত অত্যাচার আছে, বিজ্ঞান তাহাই দূর করিতে চায়। ভড়ের নিকট হইতে পলায়নপুর্ববক তপোবনে মনুষ্যত্বের মুক্তিসাধন না করিয়! জড়কেই ক্রীতদাস করিয়া তৃত্যশাঁলায় পুষিয়৷ রাখিলে এবং মনুষ্যকেই এই প্রকৃতির প্রাসাদে রাজ- ব্ূুপে অভিষিক্ত করিলে আর ত মানুষের অবমাননা থাকে না। অতগ্জব স্থায়ীরূপে জড়ের বন্ধন হইতে মুক্ত হইয়! স্বাধীন আধ্যাত্মিক সভ্যতায় উপনীত হইতে গেলে মাঝখানে একটা দীর্ঘ বৈজ্ঞানিক সাধনা অতিবাহিত করা নিতান্ত আবশ্তক। . ক্ষিতি যেমন তীর বিরোধী পক্ষের কোন যুক্তি খণ্ডন করিতে বসা নিতান্ত বাহুল্য জ্ঞান করেন, আমাদের ব্যোমও তেমনি একটা কথা বলিয়! চুপ মারিয় থাকেন, তাহার পর যে যাহা বলে তীহার গান্তীধ্য নষ্ট ১6৩ বিচিত্র প্রবন্ধ | করিতে পারে না। আমার কথাও তাহাকে স্পর্শ করিতে পারিল না। ক্ষিতি যেখানে ছিল সেই খানেই অটল হইয়া রহিল এবং ব্যোমও আপনার প্রচুর গৌফদাঁড়ি ও গান্তীর্যের মধ্যে সমাহিত হইয়া রহিলেন। এই ত আমি এবং আমার পঞ্চভৃত সম্প্রদায়। ইহার মধ্যে শ্রীমতী দীপ্তি একদিন প্রাতকালে আমাকে কহিলেন, "তুমি তোমার ডায়ারি রাখনা কেন?” ঙ মেয়েদের মাথায় অনেকগুলি অন্বসংস্কার থাকে, শ্রীমতী দীপ্তির মাথায় তন্মধ্যে এই একটি সংস্কার ছিল যে, আমি নিতান্ত যে-সে-লোক নহি; বল! বাহুল্য এই সংস্কার দূর করিবার জন্য আমি অত্যধিক প্রয়াস পাই নাই। সমীর উদার চঞ্চলভাবে আমার পৃষ্ঠে চপেটাঘাত করিয়া বলিলেন “লেখ না হে!” ক্ষিতি এবং ব্যোম চুপ করিয়! রহিলেন। 'আমি বলিলাম, ডায়ারি লিখিবার একটি মহদ্দোষ আছে। দীপ্তি অধীর হইয়া বলিয়া উঠিলেন, তা থাক, তুমি লেখ! শ্রোতত্বিনী মৃছুত্বরে কহিলেন, কি দৌষ, শুনি ! 'আমি কহিলাম-_ডায়ারি একটা কৃত্রিম জীবন। কিন্তু বখনি উহাকে রচিত করিয়া তোলা যাঁয়, তখনি ও আমাদের প্রকৃত জীবনের উপর কিয়ৎ পরিমাণে আধিপত্য না করিয়া ছাড়ে না। ভিতরে একটা লোক প্রতিদিন সংসারের উপর নানা চিন্ত|, নান। কাজ গাখিয়! গাঁখিয়। এক অনাবিষ্কৃত নিয়মে একটি জীবন গড়িয়া চলিয়াছে। সঙ্গে সঙ্গে ডায়ারি লিখিয়া গেলে ধার একটি লোক গড়িয়া আর একটি দ্বিতীয় জীবন খাড়া কর! হয়। ক্ষিতি হাঁসিয়৷ কহিল--ডায্ারিকে কেন যে দ্বিতীয় লীবন বলিতেছ্ছ আমি ত এ পধ্যন্ত বুঝিতে পারিলাম না । | ৃ :. আমি. কহিলাম, আমার কথা এই, জীবন একদিকে একটা পথ ক্মাকিয়া চলিতেছে, তুমি যদি ঠিক তাঁর পাশে কলম হস্তে তাহার পঞ্চভৃত। ১৪১, পাসপীপিসপিতান্পিিস্পিিিপসপিপিসছি অন্রূপ আর একটা রেখ! কাটিয়া যাও, তবে ক্রমে এমন অবস্থা! আসিবার সম্ভাবনা, যখন বোঝা শক্ত হইরা ঈ্াড়াইবে, তোমার কলম তোমার জীবনের সমপাতে লাইন কাটিয়া য'য়, না, তোমার জীবন তোমার কলমের লাইন ধরিয়। চলে। জীবনের গতি স্বভাবতই রহস্তময়, তাহার মধ্যে অনেক আত্মথণ্ডন, অনেক ন্বতোবিরোধ, অনেক পূর্বাপরের অনামগ্রস্ত থাকে । কিন্তু লেখনী স্বভাবতই একট! সুনির্দিষ্ট পথ অবলম্বন করিতে চাহে । সে, সমস্ত বিরোধের মীমাংসা করিয়া, সমস্ত অসামপ্রীস্ত সমান করিয়া, কেবল একটা মোটামুটি রেখা টানিতে পারে। সে একটা ঘটনা দেখিলে তাহার যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্তে উপস্থিত না হইয়া থাকিতে পারে না। কাজেই তাহার রেখাটা সহজেই তাহার নিজের গড়া সিদ্ধান্তের দিকে অগ্রসর হইতে থাকে, এবং জীবনকেও তাঁহার সহিত মিলাইয়া আপনার অন্ুবস্তী করিতে চাহে । কথাটা ভাল করিয়া বুঝাইবার জন্য আমার ব্যাকুলতা দেখিয়া শআোতম্ষিনী দয়ার্রচিত্তে কহিল-বুঝিয়াছি তুমি কি বলিতে চাও। স্বভাবতঃ আমাদের মহাপ্রাণী তাহার অতি গোপন নির্সমাণশালার বসিয়! এক অপূর্ব নিয়মে আমাদের জীবন গড়েন, কিন্তু ডায়ারি লিখিতে গেলে ছুই ব্যক্তির উপর জীবন গড়িবার ভার দেওয়া হয়। কতকটা জীবন অনুসারে ডাঁয়ারি হয়, কতকটা ডায়ারি অনুসারে জীবন হয়। আোতন্বিনী এমনি সহিষুটভাবে নীরবে সমনোযৌগে সকল কথা শুনিয়া যায় যে, মনে হয় যেন বহুযত্বে সে আমার কথাটা বুঝবার চেষ্টা করিতেছে-_কিন্তু হঠাৎ আবিষ্কার করা যার যে, বহুপুর্বেই সে আম্দর কথাটা ঠিক বুঝিয়া লইয়াছে। আমি কহিলাম--সেই বটে। দীপ্তি কহিল-_তাহাতে ক্ষতি কি? ইহার উত্তরে আমার অনেক কথা বলিবার ছিল, কিন্তু দেখিলাম, পাম্প স্পিস্পিাসপি। স্পিপিপপাপপ পপি ১৪২ বিচিত্র প্রবন্ধ । ০০ সাসিপিসিপাস্টলাসি পীস্পাসিশািপাসিলাশিপাসটিাস্শাটিলাসিশি পাস্পিপাপপাাসসি পাশাপাশি আৌতন্বিনা একটা কি বলিবার জন্ত ইতস্তত: করিতেছে, এমন সময় যদি আমি আমার বক্তত| আরম্ভ করি তাহা হইলে সে তৎক্ষণাৎ নিজের কথাটা! ছাড়িয়া দিবে। আমি চুপ করিয়। রহিলাম। কিরৎক্ষণ পরে সে 'বলিল--কি জানি ভাই, আমার মনে হয় প্রতিদিন আমর যাহা অনুভব করি তাহ! প্রতিদিন লিপিবদ্ধ করিতে গেলে তাহার যথাযথ পরিমাণ ধাকে 'না। আমাদের অনেক সুথদ্ুঃখ, অনেক রাগদ্ধেষ অকম্মাৎ সামান্ত কারণে গুরুতর হইয়া দেখা দেয়। হয়ত অনেক দিন যাহা অনায়াসে সন্থ করিয়াছি একদিন তাহ! একেবারে অসহ হইয়াছে, যাহা আসলে অপরাধ 'নহে একদিন তাহা আমার নিকটে অপরাধ বলিয়া! প্রতিভাত হইয়াছে, তুচ্ছকারণে হয় ত একদিনকার একট! ছুঃখ আমার কাছে অনেক মহত্তর দুঃখের অপেক্ষ। গুরুতর বলিয়া মনে হইয়াছে, কোন কারণে আমার মন ভাল নাঁই বলিয়া আমর! অনেক সময় অন্তের প্রতি অন্যায় বিচার করিয়াছি, তাহার মধ্যে যেটুকু অপরিমিত, যেটুকু অন্তায়, যেটুকু অসত্য তাহা কালক্রমে আমাদের মন হইতে দূর হইয়া যায়--এইবূপে ক্রমশই জীবনের বাড়াবাড়িগুলি চুকিয়া গিয়া জীবনের মোটামুটিটুকু টিকিয়! যায়, 'মেইটেই আমার প্রকৃত আমাত্ব। তাহ! ছাঁড়া আমাদের মনে অনেক কথা অর্দধস্ফুট আকারে আসে যায় মিলায়, তাহাদের সবগুলিকে অতিস্ফুট করিয়া তুলিলে মনের সৌকুমার্ধ্য নষ্ট হইয়া! যায়। ডায়্ারি রাখিতে গেলে একটা কৃত্রিম উপায়ে আমরা জীবনের প্রতি তুচ্ছতাকে বৃহৎ করিয়া তুলি, এবং অনেক কচি কথাকে জোর করিয়া ফুটাইতে গিয়া ছিঁড়িয়া স্বথব! বিকৃত করিয়! ফেলি। সহসা আোতস্বিনীর চৈতন্ত হইল-_-কথাটা! সে অনেকক্ষণ ধরিয়া এবং কিছু আবেগের সহিত বলিয়াছে, অমনি তাহার কর্ণমূল আরক্ত হইয়া উঠিল--সমুখ ঈষৎ ফিরাইয়া কহিল-_কি জানি, আমি ঠিক বলিতে. পাৰি 1, আমি ঠিক বুঝিয্াছি কি না কে জানে । গঞ্চতৃত। ১৪৩ দীপ্তি কথন কোন বিষয়ে তিলমাত্র ইতস্তত করে না--সে একটা প্রবল উত্তর দিতে উদ্যত হইয়াছে দেখিয়া আমি কহিলাম--তুমি ঠিক বুঝিয়াছ। আমিও এ কথা বলিতে যাইতেছিলাম, কিন্ত অমন ভাল করির! বলিতে পারিতাম কি ন! সন্দেহ । শ্রীমতী দীপ্তির এই কথা মনে রাখা উচিত, বাঁড়িতে গেলে ছাঁড়িতে হয়। অঞ্জন করিতে গেলে ব্যয় করিতে হয়। জীবন হইতে গ্রতিদিন অনেক ভুলিয়া, অনেক ফেলিয়া, অনেক বিলাইয়া তবে আমরা অগ্রনর হইতে পারি। প্রত্যেক কথা, প্রত্যেক ভাব, প্রত্যেক ঘটনার উপর যে ব্যক্তি বুক দিয়া চাপিয়া পড়ে সে অতি হতভাগ্য ! দীপ্তি মৌখিক হান্ত হাসিয়া করযোড়ে কহিল--আমার ঘাট হইয়াছে তোমাকে ডায়ারি লিখিতে বলিরধছিলাম, এমন কাঁজ আর কখন করিব না। সমীর বিচলিত হইয়া কহিল--মমন কথা বলিতে আছে! পৃথিবীতে অপরাধ স্বীকার কর। মহীভ্রম। আমরা মনে করি দোষ স্বীকার করিলে বিচারক দৌষ কম করিয়া দেখে, তাহা নহে; অন্ত লোককে বিচার করিবার এবং ভতসনা করিবার সুখ একটা! ছুর্লভ হ্থখ, তুমি নিজের দোষ নিজে বতই বাড়াইর়া বল না৷ কেন, কঠিন বিচারক সেটাকে ততই চাপিয়া ধরিয়। সুখ পায়। আমি কোন্‌ পথ অবলম্বন করিৰ ভাবিতে- ছিলাম, এখন স্থির করিতেছি আমি ডায়ারি লিখিব। আমি কহিলাম--আমিও প্রস্তুত আছি। কিন্তু আমার নিজের কথা লিখিব না। এমন কথা৷ লিখিব যাঁহ। আমাঁদের সকলের। এই আমর! যে নব কথ' প্রতিদিন আলোচনা করি-_ ৮ আ্রোতন্বিনী কিঞ্চিৎ ভীত হইয়া উঠিল। সমীর করজোড়ে কহিল-__ পদৌহাই তোমার, সব কথা যদি লেখায় ওঠে, তবে বাড়ি হইতে কথা মুখস্থ করিয়া আসিয়া! বলিব, এবং বলিতে বলিতে যদি হঠাৎ মাৰখানে ১৪৪ বিচিত্র প্রবন্ধ | েসপপসপীপা সপাটিপাসপাস্পিশাস্টিলাপলাপপাপািপাশিপলিীাসিপাসি পাপা শাশপীিতািশাটি শাস্পীি পি টতাসিশী পি ভুলিয়া যাই, তবে আবার বাড়ি গিয়! দেখিয়া আসিতে হইবে । তাহাতে ফল হইবে এই যে, কথা বিস্তর কমিবে এবং পরিশ্রম বিস্তর বাঁড়িবে। যদি খুব ঠিক সত্য কথা লেখ, তবে তোমার সঙ্গ হইতে নাম কাটাইয়া আমি চলিলাম। আমি কহিলাম--আরে ন1, সত্যের অনুরোধ পালন করিব না, বন্ধুর অন্থুরোধই রাখিব। তোমরা কিছু ভাবিও না, আমি তোমাদের মুখে কথা! বানাইয়া দিব। ক্ষিতি বিশাল চক্ষু প্রসারিত করিয়া কহিল - সে যে আরো ভয়ানক । আমি বেশ দেখিতেছি তোমার হাতে লেখনী পড়িলে বত স্ব কুযুক্তি আমার সুখে দিবে আর তাহার অকাট্য উত্তর নিজের মুখ দিয়া বাহির করিবে। আমি কহিলাম-_মুখে যাহার কাছে তর্কে হারি, লিখিয়া তাহার প্রতিশৌধ না নিলে চলে না। আমি আগে থাঁকিতেই বলিয়| রাখিতেছি, তোমার কাছে যত উপদ্রব এবং পরাভব সম্থ করিয়াছি এবারে তাহার প্রতিফল দিব। সর্বসহিষণ ক্ষিতি সন্তষ্টচিত্তে কহিল-_-তথাস্ত । ব্যোম কোন কথ। না বলি! ক্ষণকালের জন্য ঈষৎ হাঁদিল, তাছার' সুগভীর অর্থ আমি এ পর্য্যস্ত বুঝিতে পারি নাই। পৌন্দধ্যের সম্বন্ধ । বর্ধীয় নদী ছাঁপিয়া ক্ষেতের মধ্যে জল প্রবেশ করিয়াছে । আমাদের বোট অর্ধমগ্জ ধানের উপর দিয়া সর সরু শব্দ করিতে করিতে চলিয়াছে। অদূরে উচ্চভূমিতে একটা! প্রাচীরবেষ্িত একতাঁলা কোটা বাড়ি এবুং দুই চাঁরিটি টিনের ছাঁদবিশিষ্ট কুটীর, কলা কাঠাল আম বাঁশঝাড় এবং বৃহৎ বাধানে। অশথগাছের মধ্য দিয়া দেখা যাইতেছে । পঞ্চতৃত। ১৪৫ সেখান হইতে একট! সরু সুরের সানাই এবং গোটাকতক ঢীক- ঢোলের শব্দ শোনা গেল। সানাই অত্যন্ত বেস্থরে একটা মেঠো রাগিণীর আরম্ভ অংশ বারশ্বার ফিরিয়া ফিরিয়া নিুর ভাবে বাজাইতেছে এবং ঢাকচোলগুলা যেন অকন্মাৎ বিনা কারণে ক্ষেপিয়! উঠিয়। বাধুরাজা লগ্ডভও করিতে উদ্যত হইয়াছে। শ্রোতশ্িনী মনে করিল নিকটে কোথাও বুঝি একটা বিবাহ আছে। একান্ত কৌতুহলভরে বাতায়ন হইতে মুখ বাহির করিয়া তরুদমাচ্ছন্ন তীরের দিকে উৎসুক দৃষ্টি চালনা করিল। আমি ঘাটে বাধা নৌকার মাঝিকে জিজ্ঞাসা করিলাম, কি রে, বাজন! কিসের? সে কহিল, আজ জমিদারের পুণ্যাহ । পুণ্যাহ বলিতে বিবাহ বুঝায় না শুনিয়া ক্রোভস্বিনী কিছু ক্ষুপ্ন হইল। সে এ তরুস্থারাঘন গ্রাম্য পথটার মধ্যে কোন এক জায়গায় মযূরপংখীতে একটি চন্দনচর্চিত অজাতশ্শ্র নব বর অথবা লজ্জানগ্ডিতা রক্তাশ্ববা! নববধূকে দেখিবার প্রত্যাশা করিয়াছিল। আমি কহিলাম--পুণ্যাহ অর্থে জমিদারী বৎসরের আরম্ত দিন। আজ গ্রজীরা ঘাহার যেমন ইচ্ছা কিছু কিছু খাজনা লইয়া কাছারি-ঘরে টোৌপর-পরা বরবেশধারী নাঁয়েবের সম্ুখে আনিয়া উপস্থিত করিবে। সে টাক] দে দিন গণনা করিবার নিয়ম নাই। অর্থাৎ খাজন| দেনা-পাওনা যেন কেবলমাত্র স্বেচ্ছাকৃত একটা আনন্দের কাজ । ইহার মধ্যে একদিকে নীচ লোভ অপর দ্িকে হীন ভয় নাই। প্রকৃতিতে তরুলতা যেমন আনন্দ-মহোৎসবে বসন্তকে পুষ্পাঞ্জলি দেয় এবং বসন্ত তাহা সঞ্চয়-ইচ্ছুয় গণন। করিয়া লয় না সেইরূপ ভাবটা আর কি। দীপ্তি কহিল, কাজটা ত খাজনা আদার, তাহার মধ্যে আবার বান্না” বাগ্ভ কেন ? ক্ষিতি কহিল, ছাগশিশুকে যখন বলিদান দিতে লইয়া:বায় তখন ১৩ ১৪৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । শসপাসপিস্িপাসিপা স্পা সর্প সপ সলাত মাসপানপান্পিস ৯০১ পাসপিসিপশ্রিিসপিসপাপাসিপাপািস্পিস্পিম্পাসপাশিিপাস্পি তপাস্পিস্পিসিপাস্পিসপিস্পিস্পিসিসিলাপাসিপািসপিস্পসিপািলিী সলাত পপি পি অপি সিলসিলা কি তাহাকে মালা পরাইয়া বাজনা বাজায় না? আজ খাজনা-দেবীর নিকটে বলিদানের বাগ্য বাজিতেছে । আমি কহিলাম, সে হিসাবে দেখিতে পার বটে, কিন্তু বলি যদি দিতেই হয় তবে নিতান্ত পশুর মত পশ্তহত্যা না করিঘ়্। উহার মধ্যে যতট| পারা যায় উচ্চভাব রাখাই ভাল! ক্ষিতি কহিল, আমি ত বলি যেটার যাহা সত্য ভাব তাহাই রক্ষা করা ভাল; অনেক সময়ে নীচকাঁজের মধ্যে উচ্চভাৰ আরোপ করিয়া উচ্চভাবকে নীচ করা হয়। আমি কহিলাম, ভাবের স্তা মিথ্যা অনেকটা ভাবনার উপরে নির্ভর করে। আদি একভাবে এই বর্ষার পরিপূর্ণ নদীটিকে দেখিতেছি আর প্র জেলে আর একভাবে দেখিতেছে, আমার ভাব যে একচুল মিথ্যা এ কথ আঁমি স্বীকার করিতে পারি না। সমীর কহিল__অনেকের কাছে ভাবের সত্য মিথ্যা ওজনদরে পরিমাপ হয়। যেটা! যে পরিমাণে মোটা সেটা সেই পরিমাণে সত্য। সৌন্দর্যের অপেক্ষা ধুলি সতা, স্পেহের অপেক্ষা স্বার্থ সতা, প্রেমের অপেক্ষা ক্ষুধা সত্য । আমি কহিলাম, কিন্ত তবু চিরকাল মানুষ এই সমস্ত ওজনে-ভারি মোঁটা জিনিষকে একেবারে অস্বীকার করিতে চেষ্টা করিতেছে । ধূলিকে আবৃত করে, স্বার্থকে লজ্জা দেয়, ক্ষুধাকে অন্তরালে নির্বাসিত করিয়া! ক্াথে। মলিনতা। পৃথিবীতে বনুকালের আদিম স্থষ্টি; ধুলিজগ্রালের অপেক্ষা প্রাচীন পদার্থ মেলাই কঠিন); তাই বলিয়৷ সেইটেই সব চেয়ে সত্য হইল, আর অন্তর-অন্তঃপুরের যে লক্ষমীূপিণী গৃহিণী আপি তাহাকে ক্রমাগত ধৌত করিতে চেষ্টা করিতেছে তাহাকেই কি মিথ্যা বলিয়! উড়াইয়। দিতে হইবে? ক্ষিতি কহিল, তোমরা ভাই এত ভয় পাঁইতেছ কেন? আমি পঞ্চতৃত। ১৪৭ তোমাদের সেই অন্তঃপুরের ভিত্তিতলে ডাইনামাইটু লাগাইতে আদি নাই। কিন্তু একটু ঠাণ্ডা হইয়া বল দেখি পুণ্যাহের দিন এ বেস্গুরো নানাইটা বাঁজাইয়া পৃথিবীর কি সংশোধন করা হয়! সঙ্গীতকলা ত নহেই। সমীর কহিল, ও আর কিছুই নহে একটা! সুর ধরাইয়া দেওয়!। ধবতমরের বিবিধ পদস্থলন এবং ছন্দঃপতনের পর পুনর্ধার সমের কাছে আমির একবার ধুম্ায় আনিয়া ফেলা । সংসারের স্বার্থকোলাহলের মধ্যে মাঝে মাঝে একটা পঞ্চম সুর সংযোগ করিয়া দিলে নিদেন ক্ষণকালের জন্ত পৃথিবীর শ্রী ফিরিয়া যাঁয়, হঠাৎ হাটের মধ্যে গৃহের শোভা আমিরা৷ আবিভূতি হয়, কেনাব্চোর উপর ভালবাসার স্ি্ৃষট চন্দ্রাোলোকের স্তার নিপতিত হইয়া তাহার শুষ্ক কঠোরতা দূর করিয়া দেয়। যাহা হইর! থাকে পৃথিবীতে তাহা চীৎকার ম্বরে হইতেছে, আর, যাহা হওয়া উচিত তাহা! মাঝে মাঝে এক এক দিন আসিয়া মাঝখাঁনে বপিয়া স্থকোমল সুন্দর স্ুরে সর দিতেছে, এবং তখনকার মত সমস্ত চীৎকারস্বর নরম হইর1 আসিয়া সেই সুরের সহিত আপনাকে মিলাইয়া লইতেছে-_পুণ্যাহ সেই সঙ্গীতের দিন। আমি কহিলাম, উৎসবমীত্রই তাই। মানুষ গ্রতিদিন যে ভাবে কাজ করে এক একদিন তাহার উদ্টাভাবে আপনাকে সারি লইতে চেষ্টা করে! প্রতিদিন উপার্জন করে একদিন খরচ করে, প্রতিদিন দ্বার রুদ্ধ করিয়া রাখে একদিন দ্বার উন্ুক্ত করিয়া দেয়, প্রতিদিন গৃচের মধ্যে আমিই গৃহকর্তা, আর একদিন আমি সকলের সেবার নিধুক্ত। * সেই দিন শুভদিন, আননের দিন, সেই দিনই উৎসব । সেই দিন সন্বংসরের আদর্শ। সে দিন ফুলের মালা, ক্টকের প্রদীপ, শোভন ভূষণ। সেদিন দুরে একটি বাঁশি বাজিয়া বলিতে থাকে, আজিকার এই স্তুরই যথার্থ সুর, আর সমস্তই বেশ্ুরা। বুঝিতে পারি আমরা ১৪৮ বিচিত্র গ্রবন্ধ। ট্রলি স্টিট মানুষে মানুষে হৃদয়ে হৃদয়ে মিলিত হইয়া আনন্দ করিতে আদিয়াছিলীম কিন্ত প্রতিদিনের দৈন্তবশতঃ তাহ! পরিয়। উঠি না )-_-যে দিন পারি সেই দিনই প্রধান দিন। সনীর কহিল, সংসারে দৈন্তের শেষ নাই। সেদিক হইতে দেখিতে গেলে মানবজীবনটা অত্যন্ত শরীর্শশৃগ্ শ্রাহীনরূপে চক্ষে পড়ে। মানবাত্মা জিনিবটা যতই উচ্চ হউক্‌ না কেন ছুইবেলা ছুই মুষ্টি তুল সংগ্রহ করিতেই হইবে, একথণ্ড বন্ত্র না হইলে সে মাটিতে মিশাইয়া যায়। এদিকে আপনাকে অবিনাণী অনন্ত বলিরা বিখান করে, ওদিকে যে দিন নম্তের ডিবাট! হারাইর| যার সে দিন আকাশ বিদীর্ণ করিয়া ফেলে। যেমন করিপ্পাই হোক, প্রতদিন তাহাকে আহারবিহার কেনাবেচা দরদান মারাদারি ঠেলঠেলি করিতেই হয়-সে জন্ত সে লঙ্জিত। এই কারণে সে এই শুষ্ক ধুলিময়্ লৌকাকীর্ণ হাটবাঁজারের ইতরতা। ঢাকিবার, জন্য সর্বদা প্ররান পাত্র । আহারে বিহারে আদানে প্রদানে আত্ম আপনার সৌন্দর্্যবিভা বিস্তার করিবাঁর চেষ্টা করিতে থাকে। সে আপনার আবগ্ঠকের মহিত আপনার মহত্ব সুন্দর সামগ্জন্ত সাধন করির। লইতে চার। আমি কহিলাম, ভাহারই প্রমাণ এই পুণ্যাঁহের কাখি। একজনের ভূমি, আর একজন তাহারই মুল্য দিতেছে, এই শুষ্ক চুক্তির মধ্যে লক্গিত্ত মাঁনবাগ্ৰ। একটি ভাবের সৌনর্দ্য গ্রয়োগ করিতে চাহে । উভয়ের মধ্যে একট আক্মীর সম্পর্ক বাধিয়া দিতে ইচ্ছা করে। বুঝাইতে চাহে ইহা, স্টুক্তি নহে, ইহার মধ্যে একট প্রেমের স্বাধীনতা আছে; রাগ্জা প্রজা ভাঁবের সম্বন্ধ, আদানপ্রদান হৃদয়ের কর্তব্য। খাজনার টাকার সহিত " ঝনাগরাগিণীর কোন যোগ নাই, খাতাঞ্চিখান! নহবৎ বাঁজাইবার স্থান নহে, কিন্তু যেখানেই ভাবের সম্পর্ক আসিয়া দীড়াইল 'অমনি সেখানেই বাশি তাহাকে আহ্বান করে, রাগিণী তাহাকে প্রকাশ করে, সৌন্দর্য তাহার পঞ্চভৃত। ১৪৯ পাস সহচর। গ্রামের বাশি যথাপাধ্য প্রকাশ করিতে চেষ্টা! করিতেছে আঙ্ আমাদের পুণ্যদিন, আমাদের রাজাপ্রজার মিলন। জমিদারী কাছারিতেও মানবায্া আপন প্রবেশপথ নির্মাণের চেষ্টা করিতেছে, 'সেখানেও একখানা ভাবের আসন পাতিয়! রাখিয়াছে। শ্লোতস্বিনী আপনার মনে ভাবিতে ভাবিতে কহিল, আমার বোধ হয় ইহাতে যে কেবল সংসারের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে তাহা নহ্চে, যথার্থ ছুঃখভার লাঘব করে। সংসারে উন্চনীচতা যখন আছেই, স্ট্টিলোপ ব্যতীত কখনই যখন তাহা পংস হইবার নহে, তখন উচ্চ এবং নীচের মধ্যে একটা অবিচ্ছিন্ন সম্বন্ধ থাকিলে উচ্চত্বার ভার বহন কর! সহজ হয় । চরণের পক্ষে দেহভাঁর বহন করা সহজ ; বিচ্ছিন্ন বাহিরের বোঝাই বোঝা । উপগা প্রন্বোগ পূর্বক একট! কথা ভাল করিয়া বলিবাশীত্র আত- স্বিনীর ল্জা উপস্থিত হয়, থেন একটা অপরাধ করিয়াছে । অনেকে অন্যের ভার চুরি করিয়া নিজের বলিনা চালাইতে এরূপ কুষ্ঠিত হয় না। ব্যোম কহিল, যেখানে একটা পরাভব অবগত স্বীকার করিতে হইবে সেখানে মান্য আপনার হীনতা-দুঃখ দূর করিবার জন্ত একটা ভাবের সম্পর্ক পাঁতাইয়া লয়। কেবল মানুষের কাঁছে বলিয়া নয়, সর্বত্রই । পৃথিবীতে প্রথম আগমন করিয়া মানুষ যখন দাঁবাগ্সি ঝটিকা বন্তার সহিত কিছুতেই পারিয়। উঠিল না, পর্বত যখন শিবের প্রহরী নন্দীর স্তায় তর্জনী দিয়া পথরোধ পূর্বক নীরবে নীলাকাঁশ স্পর্শ করিয়া ধীড়াইয়। রহিল, আকাশ যখন স্পর্শাতীত অবিচল মহিমায় অমোঘ ইচ্ছাবলে কখন বৃষ্টি কখন বজ্র বর্ষণ করিতে লাগিল, তখন মানুষ তাহাদের সহিত দেবতা পাতাইয়া বসিল। নহিলে চিরনিবাঁসভূমি প্রক্কৃতির সহিত কিছুতেই মানুষের সন্ধিস্থাপন হইত না।' অজ্ঞাতশক্তি প্রকৃতিকে যখন সে ভক্তিভাবে পরিপূর্ণ করিয়া! ফেলিল তখনই মাঁনবাসত্মা! ক্তাহীর মধ্যে গৌরবের সহিত বাঁস করিতে পারিল। ১৫৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । ক্ষিতি কহিল, মানবাত্ঁ কোন মতে আপনার গৌরব রক্ষা করিবার জন্য নানাপ্রকার কৌশল করিয়! থাকে সন্দেহ নাই। রাজা যখন যথেচ্ছাচার করে, কিছুতেই তাহার হস্ত হইতে নিষ্কৃতি নাই ; তখন:প্রজা তাহাকে দেবতা গড়িয়া হীনতাদুঃখ বিস্মৃত হইবার চেষ্টা করে। পুরুষ যখন সবল এবং একাধিপত্য করিতে সক্ষম তখন অসহায় স্ত্রী তাহাকে দেবতা দাড় করাইরা তাহার স্বার্থপর নিষ্ুর অত্যাচার কথধ্চিৎ গৌরবের সহিত বহন করিতে চেষ্টা করে । এ কথা স্বীকার করি বটে মানুষের যদি এইরূপ ভাবের দ্বারা অভাব ঢাকিবার ক্ষমতা না থাকিত তবে এতদিনে নে পশুর অধম হইয়! যাইত। শ্রোভাস্বনী ঈষৎ ব্যখিতভাবে কহিল, মানুষ যে কেবল অগত্যা! এইরূপ আত্মপ্রতারণা করে তাহা নহে। যেখানে আমরা কোনরূপে অভিভূত নাহ বরং আমরাই যেখানে সবল পক্ষ সেখানেও আজ্মীয়তা স্বাপনের একটা চেষ্টা দেখিতে পাওয়া যার। গাভীকে আমাদের দেশের লোক মা বলিয়া ভগবতী বলিয়া পুজা করে কেন? দে ত অসহায় পশুমাত্র; পীড়ন করিলে তাড়না! করিলে তাহার হইয়া ছু'কথা বলিবার কেহ নাই। আমরা বলিষ্ঠ, দে দুর্বল, আমরা মান, সে পশ্ত; কিন্ত আমাদের দেই শ্রেষ্ঠতাই আমরা গোপন করিবার চেষ্টা করিতেছি । যখন তাহার নিকট হইতে উপকার গ্রহণ করিতেছি তখন থে সেটা বলপৃর্বক করিতেছি, কেবল আমরা সক্ষম এবং সে নিরুপায় বলিয়াই করিতেছি, আমাদের অন্তরাত্মা সেকথা স্বীকার করিতে চাহে ন।। দে এই উপকারিণী পরম ধৈর্যবতী প্রশান্ত পশুমাতাকে মা বলিয়! তবেই ইহার ছুগ্ধ পান করিয়া যথার্থ তৃপ্তি অনুভব করে; মানুষের সহিত পশুর একটি ভাবের সম্পর্ক, একটি সৌন্দর্যের সম্বন্ধ স্থাপন করিয়া তবেই তাহার স্থজনচেষ্টা বিশ্রাম লাভ করে। ব্যোম গভীরভাবে কহিল তুমি একটা খুব বড় কথা কহিয়াছ।, পঞ্চতৃত। ১৫১ শুনিয়া শ্রোতম্বিনী চমকিন্বা উঠিল। এমন ছৃষধপ্ম কখন্‌ করিল সে জানিতে পারে নাই। এই অজ্ঞানক্কত অপরাধের জন্ঠ সলজ্জ সম্কুচিত- ভাবে সে নীরবে মার্জনা প্রার্থনা করিল। ব্যোম কহিল, এঁ ধে আন্ম'র স্বজনচেষ্টার কথা উল্লেখ করিয়াছ উহার সম্বন্ধে অনেক কথা আছে । সাকডুষ|! ঘেমন মাঝখানে থাকিয়া চারিদিকে জাল প্রসারিত করিতে থাকে, আমাদের কেন্দ্রবাপী আত্মা সেইরূপ চারিধিকের সহিত আম্মীরতা-বন্ধন স্থাপনের জন্গ ব্যস্ত আছে; সে ক্রমাগতই বিসবৃশকে সদৃশ, দূরকে নিকট, পরকে আপনার করিতেছে। বসিরা বদরা আত্মপরের মধো অহ সেত নিম্মীণ করিতেছে । এঁষে আমরা যাহাকে নৌন্দর্যা বলি সেটা আাতার নিজের স্টি। সৌন্দর্য্য আম্মার সহিত জড়ের ম'ঝণানকার সেহ। বস্তু কেবল পিগমাত্র। আমরা তাহা হইতে আহার গ্রহণ করি, তাহাতে বাদ করি, তাহার নিকট হঃতে মাঘাত৭ গ্রাপ্ু হই। তাহাকে যদি পরু বলিয়া দেখিতাম তবে বস্তনষ্ীর মত এসন পর আরকি আছে! কিন্তু আত্মার কার্য্য আত্মার করা! নে মাঝখানে একটি সৌন্দর্য পাতাইয়! বসিল। সে যখন জড়কে বলিল সুন্দর, তখন সেও জড়ের অন্রে প্রবেশ করিল, ৯11 জড়ও তাঁভার অন্তরে মাশ্বয় গ্রহণ করিল, সেদিন বড়ই পুলকের সর হুইল। এই নেতুনিম্মীণকার্ম্য এখনো চলিতেছে । কবির প্রধান গৌরব ইহাই । পৃথিবীতে চারিদিকের সহিত সে আমাদের পুরাতন সম্বন্ধ দুঢ ও নব নব নম্বন্ধ আবিষ্কার করিতেছে। প্রতিদিন পর-পৃথি- বীকে আপনার, এবং জড়-পৃগিবীকে শ্াস্মীর বাসযোগ্য করিতেছে 'বলা বালা, প্রচলিত ভাষায় যাহাঁকে জড় বলে আমিও তাহাকে জড় বলিতেছি । জড়ের জড়ত্ব সম্বন্ধে আমার মতামত ব্যক্ত করিতে বসিলে উপস্থিত সভায় সচেতন পদার্থের মধো আমি একমাত্র অবশিষ্ট থাকিব। সমীর ব্যোমের কথায় বিশেষ মনোযোগ না করিয়া কহিল, ১৫২ বিচিত্র প্রবন্ধ । ভা পিপাসা পালি লাস বাসার তাপস পারা লাসিপাসিপাসটিতীস্পিসপিপাসিপাসিপস্পিসিসিস ভিপাসিপাউতাস্পিসপাসলিসি লাস লাপাস্ি৫৯০ শ্রোতস্বিনী কেবল গাভীর দৃষ্টান্ত দিয়াছেন, কিন্তু আমাদের দেশে এ সম্বন্ধে দৃষ্টাস্তের অভাব নাই । সেদিন যখন দেখিলাম এক ব্যক্তি বৌ তাতিয়া-পুড়িরা আপিয়া মাথা হইতে একটা! কেরোসিন তেলের শুন্য টিনপাত্র কুলে নামাইয়া মা! গো বলিয়৷ জলে ঝাপ দিয়! পড়িল, মনে বড় একটু লাগিল। এই যে স্নিগ্ধ স্ন্দর স্থগভীর জলরাশি সুমি কলস্বরে ছুই তীরকে স্তনদান করিয়া চলির়াছে ইহারই শীতল জ্রোড়ে তাপিত শরীর সমর্পণ করিয়| দিয়া ইহাকে ম| বলিয়া আহ্বান করা, অন্তরের এমন সুমধুর উচ্ছাস আর কি আছে! এই ফলশন্যনুন্দরা বসুন্ধরা হইতে পতৃপিতামহ-সেবিত আছন্মপরিচিত বাস্তগুহ পর্যন্ত যখন স্নেহসজীব আত্মীরূপে দেখা দেয় তখন জীবন অত্যন্ত উর্বর সুন্দর হইয়৷ উঠে। তখন জগতের সঙ্গে সুগভীর ধোগনাধন হর; জড় হইতে জস্ত এবং জক্ক হইতে মানুষ পর্য্যন্ত যে একটি অবিচ্ছেছ্ঘ এক্য আছে এ কথা আমাদের কাছে অত্যভুত বোধ হয় না) কারণ, বিজ্ঞান এ কথার আভাস দিবার পূর্বে আমর অন্তর হইতে এ কথা জানির়াছিলাম) পগুত আপিয়া আমাদের জ্ঞাতিসন্বন্ধের কুলজি বাহির করিবার পূর্বেই আমরা! নাড়ির টানে সন্ধত্র ঘরকন্না পাতিয়! বসিয়াছিলাম । আমাদের ভাষার ণথ্যাঙ্ক” শের প্রতিশব্দ নাই বলিয়া কোন কোন মুরোপীয় পণ্ডিত সন্দেহ করেন আমাদের কৃতজ্ঞতা নাই। কিন্তু আমি তাহার সম্পূর্ণ বিপরীত দেখিতে পাই । কৃতজ্ঞতা স্বীকার করিবার জন্ আমাদের অন্তর যেন লালায়িত হইয়া আছে। জন্তর নিকট হইতে যাহা পাই জড়ের নিকট হইতে যাহা পাই তাহাকে ও আমরা স্নেহ দয়া উপকার জ্ঞান করিয়! প্রতিদান দিবার জন্য ব্যগ্র হই। যে জাতির লাঠিয়াল আপনার লাঠিকে, ছাত্র আপনার গ্রস্থকে এবং শিল্পী আপনার ঘন্ত্রকে কৃতজ্ঞতা অর্পণ লালসায় মনে মনে জীবন্ত করিয়া তোলে, একটা বিশেষ শবের অভাবে সে জাতিকে অকুতজ্ঞ বল। যায় না। পঞ্চতৃত । ১৫৩ আমি কহিলাম, বলা যাইতে পারে। কারণ, আমরা কৃতজ্ঞতার সীমা লঙ্ঘন করিয়া চলিয়৷ গিয়্াছি। আমরা থে পরস্পরের নিকট অনেকটা পরিমাণে সাহায্য অসঙ্কোচে গ্রহণ করি অকৃতজ্ঞতা তাহার কারণ নহে, পরস্পরের মধ্যে স্বাতত্ত্যতীবের অপেক্ষারুত অভাবই তাহার প্রধান কারণ। ভিক্ষুক এবং দাতা, অতিথি এবং গৃহস্থ, আশ্রিত এবং আশ্রয়দাত।, প্রভু এবং ভৃত্যের সন্বন্ধ যেন একটা স্বভাবিক সন্বন্ধ। সুতরাং সেস্থলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশপুর্বক খণমুক্ত হইবার কথা কাহারও মনে উদয় হয় না। ব্যোম কহিল, বিলাতী হিনাবের কৃতজ্ঞতা আমাদের দেবতাদের প্রতিও নাই। যুরোপীয় ঘখন বলে থ্যান্ক, গড তখন তাহার অর্থ এই, ঈশ্বর যখন মনোষোগরপুর্বক আমার একটা উপকার করিয়া দিলেন তখন সে উপকারট৷ স্বীকার না করিয়! বর্ধরের মত চলিরা যাইতে পারি না। আমাদের দেবতাকে আমর! কৃতজ্ঞতা দিতে পারি না, কারণ, কৃতজ্ঞতা দিলে তাহাকে অল্প দেওয়া হয়, তাহাকে ফাঁকি দেওয়া হয়। তাহাকে বল! হয়, ভোমার কাজ তুমি করিলে, আমার কর্তবাও আমি সারির দিয়া গেলাম । বরঞ্চ স্নেহের একপ্রকার অকৃতজ্্রতা আছে, কারণ, শ্নেহের দাবীর অন্ত নাই। সেই ম্নেহের অকৃতজ্ঞতাঁও স্বাতদ্তরযের কৃতজ্ঞতা অপেক্ষা গভীরতর মধুরতর। রামপ্রসাদের গান আছে “তোমায় মা মা বলে' আর ডাকিব না, আমায় দিয়েছ দিতেছ কত যন্ত্রণা 1” এই উদার অক্ৃতজ্ঞত! কোন যুরোগীয় ভাষায় তর্জম! হইতে পারে না 1 ক্ষিতি কটাক্ষপহকারে কহিল, যুরোপীয়দের প্রতি আমাদের যে অকৃতজ্ঞতা, তাহারও বোধ হয় একটা গভীর এবং উদ্দার কারণ কিছু থাকিতে পারে। জড়প্রককতির সহিত আতম্মীয়দম্পর্ক স্থাপন সম্বন্ধে যে কথাগুলি হইল ভাহা সম্ভবত অত্যন্ত সুন্দর; এবং গভীর যে, তাহার ১৫৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । িিমপস্বপিপপসসসিলবাসিসি পাপা পাস্মিপিসিতাসিপসনপািশা, এম্পলািপািলসিলািপািপাসিতাসিপািনাস্দিলািপাসিস্টিসিপীস্পিস্দিলসসিপসটিপাসিতাস্পি আর সন্দেহ নাই, : কারণ, এপর্যন্ত আমি সম্পূর্ণ তলাইয়৷ উঠিতে পারি নাই। সকলেই ত একে একে বলিলেন যে, আমরাই প্রকৃতির সহিত ভাবের সম্পর্ক পাতাইয়া বসিয়াছি আর যুরোপ তাহার সহিত দূরের লোকের মত বাবহার করে কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, যদি যুরোপীর সাহিত্য ইংরাজি কাব্য আমাদের না জানা থাঁকিত তবে আজিকাঁর সভায় এ আলোচনা কি সম্ভব হইত? এবং যিনি ইংরাঁজি কখনো পড়েন নাই তিনি কি শেষ পর্যন্ত ইহার মন্রগ্রহণ করিতে পারিবেন ? আমি কহিলাম, তাহার একটু কারণ আছে। প্ররুতির সহিত আমাদের যেন ভাইবোনের সম্পর্ক এবং উংরাজ ভাবুকের যেন ল্লীপুক্ষষের সম্পর্ক ।॥ আমরা ন্ন্মীবধি আত্বীর, আমরা স্বভাবতই এক । আর ইংরাজ, গররুতির বাহির ভইতে-অন্তরে গ্রবেশ করিছেছে। সে গ্রথমে প্রকৃতিকে জড় বলিয়া জানিত, হঠাৎ একদিন যেন যৌবনা রস্তে তাহার প্রতি ৃট্টিক্ষেপ কৰিয়া তাহার অনির্বচনীর অপরিমের আধাত্মিক ঘৌনদর্য্য আবিষার করিরাঁছে। আঁমরা আবিষ্কার করি নাই, কারণ আমর! সন্দেহও করি নাই, প্রশ্নও করি নাই । আত্ম! অন্য আম্মার সংঘর্ষে তবেই আপনাকে সম্পূর্ণদপে অন্থভব করিতে পারে, তবেই সে মিলনের আধ্যাম্মিকতা পরিপূর্ণমাত্রায় মন্থিত হইয়। উঠে। একাকার হইয়া থাকা কিছু না থাকার ঠিক পরেই। কোন কবি লিখিয়াছেন, ঈশ্বর আপনারই পিত-অংশ এবং মাতৃ- ংশকে- স্্রীপুরুঘরূপে পৃথিবীতে ভাগ করিয়া দিয়াছেন ; সেই ছই বিচ্ছিন্ন অংশ এক হইবার জন্য পরস্পরের প্রতি এমন অনিবার্য আনন্দে আকুষ্ট 'হইতেছে। কিন্তু এই বিচ্ছেদটি না হঈলে পরস্পরের মধ্যে এমন প্রগাঢ় পরিচয় হইত ন!। এ্রক্য অপেক্ষা মিলনেই আধ্যাত্মি- কতা অধিক। আমর] পৃথিবীকে নদীকে মা বলি, আমরা ছায়াময় বট অশ্বথকে পঞ্চভৃত। ১৫৫ পোসিপিস্পিপস্পাস্নাসিপসসিপাসিসসপিস্পিস্পিসপাস্পিসি উপাস্পিপাস্পিিল্স্পিসপিসিনলাদি বাপ্পা পি পাসপপাস্পিপ সি সনপাসিপসমশসিস্সিপারিি পূজা করি, আমরা প্রস্তরপাযাণকে মজীব করিয়৷ দেখি, কিন্ত আত্মার মধ্যে তাহার আধ্যাত্মিকতা অনুভব করি নাঁ। আমর! তাহাতে মনঃকল্সিত মুত্তি আরোপ করি, 'আমরা তাহার নিকট স্ুখসম্পদ সফলতা প্রার্থনা! করি। কিন্তু আধ্যাত্মিক সম্পর্ক কেব্লমাত্র সৌন্ধ্য কেবলমাত্র আনন্দের সম্পর্ক, তাহা সুবিধা অসুবিধা সঞ্চয় অপচয়ের সম্পর্ক নহে। ন্নেহসৌনদর্য্যগ্রবাহিনী জাহুবী যখন আত্মার আনন্দ দান করে তখনই মে আধ্যাত্মিক; কিন্তু বখনই তাহাকে হক্তিবিশেষে নিবদ্ধ করিরা তাহীর নিকট হইতে ইহকাল অথবা পরকালের কোন বিশেষ সুবিধা প্রার্থনা করি তাহ! সৌনদ্াহ হীন মোহ, অন্ধ অজ্ঞানত] মাত্র। তখনি আমরা দেবতাকে পুত্তলিকা করিরা দিই। ইহকানলের সম্পদ এবং পরকালের পুণ্য, ছে জাহুবি, আমি তোমার নিকট টাহি না এবং চা(হলেও পাইব না, কিন্তু শৈশবকাল হইতে জীবনের কতদিন সুধ্যোদর ও ক্ষর্যান্তে, কষ্ঃপক্ষের অদ্ধ১ক্রীলোকে, ঘনবর্ষার মেঘগ্তামল মর্দ্যাহ্ে আমার অন্তরাক্মাকে যে এক অবর্ণনীয় অলৌকিক পুলকে পরিপূর্ণ করিম দিরাছ সেই আনার ছুর্লভ জীবনের আনন্দসঞ্চয়- গুলি থেন জন্মজন্মান্তরে অক্ষর হইয়া থাকে ; পৃথিবী হইতে সমস্ত জাবন যে নিরুপম সৌন্দর্য চয়ন করিতে পাঁঠিরাছি বাইধার সমর যেন একখানি পুর্শশতদলের মত সেট হাতে করিয়া লইয়া যাইতে পারি এবং যদি আমার প্রিয়তমের সহিত সাক্ষাৎ হয় তবে তাহার করপল্পবৰে সমর্পণ করিয়। দিয়! একটিবারের মানবজন্ম কৃতার্থ করিতে পারি। নরনারী। সমীর এক সমস্ত! উত্থাপিত করিলেন, তিনি বলিলেন -. ইংরাজি সাহিত্যে গগ্ঠ অথবা পদ্য কাব্যে নায়ক এবং নায়িক। উভয়েরই মাহাত্ম্য পরিস্ফুট হইতে দেখা যায়। ডেস্ডিমোনার নিকট ওথেলো এবং ইয়াগো ১৫৬ বিচিত্র প্রবন্ধ | শাপলা লাস্পসপিস্চিপাস্পিসলাস্িীসি পেপাল লাস্ট পিপাসা পাপা কিছুমাত্র হীনপ্রত নহে, ক্লিয়োপাটা' আপনার শ্যামল ব্ধিম বন্ধনজালে আ্যণ্টনিকে আচ্ছন্ন করিয়! ফেলিয়াছে বটে, কিন্তু তথাপি লতাপাশ- বিজড়িত ভগ্নজয়ন্তত্তের শ্ায় আ্যান্টনির উচ্চতা সর্কদমক্ষে দৃশ্তমান রহিযাছে। লামার্মুরের নারিকা আপনার সকরুণ, সরল স্বকুমার সৌনদর্যো যতই আমাদের মনোহরণ করুক না কেন, রেভ নৃম্ব/ডের বিষাঁদ- ঘনঘোর নায়কের নিকট হইতে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া লইতে পারে না। কিন্তু বাংল! সাহিত্যে দেখা যায় নায়িকারই প্রীধান্ । কুন্দনন্দিনী এবং সথ্ধ্যমুখীর নিকট নগেন্ত্ নান হইয়| আছে, রোহিণী এবং ভ্রমরের নিকট গোবিনদলাল অৃশ্ঠ প্রায়, জ্যোতিত্্য়ী কপালকুগুলার পার্থ নবকুমার ক্ষীণতম উপগ্রহের স্তায়। প্রাচীন বাংল! কাব্যেও দেখ ।-- বিদ্ানগুন্দরের মধ্যে সজীব মৃত্তি যদি কাহারও থাকে তবে দে কেবল বিগ্কার ও মা'লনীর, সুন্দর চরিত্রে পদার্থের লেশমাত্র নাই। কবিকস্কণচণ্তীর মধ্যে কেবন কুল্লরা এবং খুল্পনা একটু নড়িয়া বেড়ায়, নতুবা ব্যাধটা! একটা বিকৃত বৃহৎ স্থাণুমাত্র এবং ধনপতি ও তাহার পুত্র কোন কাজের নহে। বঙ্গপাহিত্যে পুরুষ মহাদেবের স্তায় নিশ্চলভাবে ধূলিশরান এবং রমণী তাহীর বক্ষের উপর জাগ্রত জীবস্তুভাবে বিরাজমান । ইহার কারণ কি? | সমীরের এই প্রশ্নের উত্তর শুনিবার জন্ত শ্রোতস্থিনী অত্ন্ত কৌতুহলী হইয়া উঠিলেন এবং দীপ্তি নিতান্ত অমনোযোগের ভাণ করিয়া টেবিলের উপর একটা গ্রন্থ খুলিয়! তাহার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া রাখিলেন। * ক্ষিতি কহিলেন, তুমি বঙ্ধিম বাবুর যে কয়েকথানি উপন্ধাসের উল্লেখ করিয়াছ সবগুলিই মানস প্রধান, কার্ধ্যপ্রধান নহে) মানসজগতে স্ত্রী লোকের প্রভাব অধিক, কার্য্যজগতে পুরুষের 'প্রতৃত্ব। যেখাঁনে কেবল- মাত্র হৃদয়বৃত্তির কণা সেখানে পুরুষ স্ত্রীলোকের সহিত পারিয়া উঠিবে “কেন? কাধ্যক্ষেত্রেই তাহার চরিত্রের যথার্থ বিকাশ হয়। পঞ্চভূত। ১৫৭. দীপ্তি আর থাকিতে পারিল না- গ্রন্থ ফেলিয়া এবং ওদানীস্তের ভাণ পরিহার করিয়া বলিয়া উঠিল-_-কেন? ছুর্গেশনন্দিনীতে বিমলার চরিত্র কি কারধ্যেই বিকশিত হয় নাই? এমন নৈপুণ্য, এমন তৎপরতা, এমন অধ্যবসাঘ়্ উক্ত উপন্তাসের কয়জন নায়ক দেখাইতে পারিয়াছে ! আনন্মমঠ ত কাধ্য প্রধান উপন্তাস। সত্যানন্দ, জীবানন্দ, ভবানন্দ প্রনৃতি সন্তানসম্প্রনায় তাহাতে কাজ করিয়াছে বটে, কিন্তু তাহ! কবির বর্ণন। মাত্র, যদি কাহারও চরিত্রের মধ্যে যথার্থ কাঁধ্যকারিতা পরিস্ফুট হইয়া থাকে তাহা শাস্তির । দেবীচৌধুরাণীতে কে কর্রীত্বপদ লইয়াছে ? রমণী। কিন্ধু সেকি অন্তঃপুরের কত্রীত্ব? নহে। সমীর কহিলেন, ভাই ক্ষিতি, তর্কশান্ত্রের সরল রেখার ছার! সমস্ত জিনিষকে পরিপাটিরূপে শ্রেণীবিভক্ত করা বাঁয় না। সতরঞ্চ ফলকেই ঠিক লাল কান রডের সমান চক কাটিয়া ঘর আকিয়। দেওয়া যায়, কারণ, তাহা নিজ্জীব কাষ্ঠমূত্তির রঙ্গভূমি মাত্র; কিন্তু মনুষ্যচরিত্র বড় দিধা জিনিষ নহে) তুমি ঘুক্তিবলে ভাবপ্রধান কর্ধপ্রধান প্রত্থতি তাহার ফেমনই অকাট্য সীমা নির্ণয় করিয়া দেও না কেন, বিপুল সংদারের বিচিত্র কাধ্যক্ষেত্রে সমন্তই উলট্পালট হয়া ঘাত়। সমাজের জৌহকটাহের নিম্নে যদি জীবনের অগ্নি না জলিত, তবে মন্থুয্যের শ্রেণীবিভাগ ঠিক সমন অটনভাবে থাকিত। কিন্তু জীবনশিখা যখন প্রদীপ হইয়া উঠে, তখন টগ্বগ্‌ করিপ্না সদন্ত মানবচরিত্র ফুটিতে থাকে, তখন নবনৰ বিম্ময়নক বৈচিত্র্যের আর সীম| থাকে না। সাহিত্য সেই পরিবর্ভ্যমান জগতের চঞ্চল গ্রতিবিষ্ব। তাহাকে সমালে'চনশান্ত্েরে বিশেষণ দয়া বাধিবার চেষ্টা মিথ্যা। হৃদয়-বৃত্তিতে স্ত্রীলোকই শ্রেষ্ঠ এমন কেহ লিখিয়! পড়িয়া দিতে পারে না। ওথেলো ত মানসপ্রধান নাটক, কিন্তু তাহাতে নায়কের হৃদয়াবেগের প্রবলতা কি প্রচণ্ড! কিং লিয়ারে হৃদয়ের. ঝটিক। কি ভয়ঙ্কর! ১৫৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । িশাস্পিসটনসিীসিলাসপাসসিপািলা সিস্ট পি বাসটি পা পাশা পাস পাসিসপিসমিলিসপস ব্যোম সহসা অধীর হইয়া বলিয়া উঠিলেন, আহা, তোমরা বুথা তর্ক করিতেছ । যদি গভীরভাবে চিন্তা করিয়া দেখ, 'তবে দেখিবে কার্ধ্যই সত্রীলোকের। কার্ধ্যক্ষেত্র ব্যতীত স্ত্রীলোকের অন্থাত্র স্থান নাই। যথার্থ পুরুষ যোগী, উদাসীন, নির্জনবাঁসী। ক্যাল্ডিয়ার মরুক্ষেত্রের মধ্যে পড়িয়া! পড়িরা মেষপাল পুরুষ যখন একাকী উর্ধনেত্রে নিশীথগগণের গ্রহতারকার গতিবিধি নির্ণয় করিত, তখন সে কি সুখ পাইত। কোন্‌ নারী এমন অকাজে কালক্ষেপ করিতে পারে? যে জ্ঞান কোন কার্ষ্যে লাগিবে না কোন নারী তাহার জন্য জীবন ব্যয় করে? যেধ্যান কেবলমাত্র সংসারনিপ্মক্ত আত্মার বিশুদ্ধ আনন্দজনক, কোন্‌ রমণীর কাঁছে তাহার মূল্য আছে ? ক্ষিতির কথামত পুরুষ যদি যগাঁর্থ কার্ধ্যণীল হইভ, তবে মন্ুধা সমাজের এমন উন্নতি হইত না তবে একটি নৃতন তত্ব একটি নুতন ভাব বাহির হইত নাঁ। নিজ্জানের মধ্যে, অবসরের মধ্যে জ্ঞানের গ্রকীশ, ভাবের আবির্ভাব । যথার্থ পুরুষ সর্পরদাই সেই নির্লিপ্ত নির্জনতার মধো থাকে । কার্যবীর নেপোলিয়ানও কখনই আপনার কারের মধ্যে সংলিপ্ত হইর! থাকিতেন না; তিনি যখন যেখানেই থাকুন একট মহা-নির্জনে আপন ভাবাকাশের দ্বার। বেষ্টিত হইয়! থাঁকিতেন-_ তিনি সর্বদাই আপনার একটা মস্ত আইডিয়ার দ্বারা পরিরক্ষিত হইয়া তুমুল কার্ধাক্ষেত্রের মাঝখানেও বিজনবাস যাপন করিতেন। ভীম্মত কুরুক্ষেত্র-খুদ্দের একজন নায়ক কিন্তু সেই ভীষণ জন-সংঘাতের মধ্যেও তাহার মত একক প্রাণী আর কে ছিল! তিনি কি কাজ করিতেছিলেন, না ধ্বান করিতেছিলেন ? শ্ত্রীলোকই যথার্থ কাজ করে। সে ও তাহার কাঁজের মাঝখানে কোন বাবধান নাই। সে একেবারে কাজের মধ্যে লিপ্ত জড়িত। সেই যথার্থ লোকালয়ে বাস করে, সংসার রক্ষা করে। স্ত্রীলোকই যথার্থ সম্পূর্ণরূপে সঙ্গদান করিতে পারে, তাহার যেন অব্যবহিত স্পর্শ পাওয়া যায়, সে স্বতন্ত্র হইয়া থাকে ন]। পঞ্চভূত। ১৫৯ ৬ পা লা্পাসপাশ্পিসিলাসিিসসিপািরাি পিসিতে পি পিপি পিপাসা ৮ ৯ পিপিপি পান্টি পাপা পাপা সস্িলািপসপিসিপাসিশীকপিি স্পািপাছি পাপা বাসস লাস্ট পাস পাপ দীপ্তি কহিল, তোমার সমস্ত স্ষ্টিছাড়া কথা--কিছুই বুঝিবার জো নাই । মেয়েরা যে, কাজ করিতে পারে না এ কথা আমি বল না, তোমরা তাহাদের কাজ করিতে দাও কই? ব্যোম কহিলেন, স্ত্রীলোকেরা আপনার কর্মনবন্ধনে আপনি বদ্ধ হইয়া পড়িয়াছে। জ্বলন্ত অঙ্গার যেমন আপনার ভম্ম আপনি সঞ্চয় করে, নারী তেমনি আপনার স্তর পাকার কার্ধযাবশেষের দ্বারা আপনাকে নিহিত করিয়া ফেলে__-(মেই তাহার অগ্তঃপুর--তাতার চারিদিকে কোন অবসর নাই। তাহাকে যদি ভম্বমুক্ত করিয়া বহিঃসংমারের কার্যরাশির মধ্যে নিক্ষেপ করা বার তবে কি কম কাণ্ড হয়! পুরুষের সাধ্য কি তেমন দ্রুতবেগে তেমন তুমুল ব্যাপার করিয়। তুলিতে ! পুরুষের কাজ করিতে বিলম্ব হর ) সে এবং তাহার কাধ্যের মাঝখানে একটা দীর্ঘ পথ থাকে, সে পথ বিস্তর চিন্তার দ্বারা আকীর্ণ। রমণী যদ একবার বহিবিপ্লুবে যোগ দেয়, নিমেষের মধ্যে সমস্ত ধুধু করিয়া উঠে। এই প্রলরকাঁরিণী কাঁধ্যশক্তিকে সংসার বাধিরা রাখিয়াছে, এই অগ্নিতে কেবল শয়নগৃহের সন্ধ্যাদীপ জ'লতেছে, থাতাত্ প্রাণীর শীতি নিবারণ ও ক্ষুধার্ত প্রাণীর অন্ন প্রস্থত হইভেছে। হদি আমাদের সাহত্যে এই সুন্দরী বহি শিখাগুলির তেজ দীপামান হইয়া থাকে তবে তাহা লইরা এত তর্ক কিসের জন্য ! আমি কহলাম আমা:দর সাহিত্যে স্ত্রীলোক যে প্রাধান্য লাভ করিয়াছে তাহার পপ্রধান কারণ, আমাদের দেশের স্ত্রীলোক আমাদের দেশের পুরুষের অপেক্ষা অনেক শ্রেষ্ঠ । ) আোতন্বিনীর মুখ ঈষৎ রক্তিম এবং সহাস্য হইয়া উঠিল। দীপ্তি কহিল, এ আবার তোমার বাঁড়াবাড়ি। বুঝিলাম দীপ্তির ইচ্ছা আমাকে প্রতিবাদ করিয়া স্বজাতির গুণগান বেশী করিয়। শুনিয়া লইবে। আমি তাহাকে সে কথা বলিলাম, এবং ১৬৬ বিচিত্র প্রবন্ধ | খা তাপিসি লাটিসিতাি া্ি পাি াসি সসি্টিসটিল এ পিপি পািপািিন্পাক্ণা সপ সপাসপিস্পিসিপসিসিপাস্পিসিা সিপাসপাসপাস্পাস্পা স্পিসপিস্পিসটিসসি কহিলাম স্ত্রীজাতি স্তৃতিবাক্য শুনিতে অত্যন্ত ভালবাদে । দীপ্তি সবলে মাঁথ নাড়ির; কহিল, কখনই ন1। শ্রোতস্বিনী মুগ্ুভাবে কহিল_সে কথা সত্য। আপ্রয় বাক্য আমাদের কাছে অত্যন্ত অধিক অপ্রিয় এবং প্রিয় বাক্য আমাদের কাছে বড় বেশী মধুর। আোতদ্বিনী রমণী হইলেও সত্য কথা স্বীকার করিতে কুগ্ঠিত হয় না।, আন কহিলান, তাহার একটু কারণ আছে। গ্রন্থকারদের “মধ্যে কবি এবং গুণীবের মধ্যে গায়কগণ বিশেষন্ধপে স্তৃতি মিষ্টান্ন প্রয়। আসল কথা, মনোহরণ কর যাহাদের কাজ, গ্রশংসাই তাহাদের কৃতকার্দ্যত! পরিমাপের একমাত্র উপার। অন্ত সমস্ত কার্যফলের নানারূপ প্রত্যক্ষ প্রনাণ আছে, স্ততিবাদলাভ ছাড়া মনোরপ্রনের আর কোন প্রাণ নাই । সেই জগ্ত গারক প্রত্যেকবার মনের কাছে আদিন্বা বাহবা! প্রত্যাশ। করে। সেই জন্ত অনাদর গুণীনাত্রের কাছে এত অধিক অঙ্গীতিকর। সশীর কাঁহলেন_কেবন তাহাই নব, নিরুতৎ্সাহ মনোহরণকারধ্যের একটি গ্রধান অন্তরান্ন। শ্রোতার মনকে অগ্রনর দেখিলে তবেই গায়কের মন আপনার সনস্ত ক্ষমতা বিকশিত করিতে পারে। অতএব, স্তৃতিবাদ শুন্ধবে তাহার পুত্রক্কার তাহ। নহে, তাহার কার্ব্যবারনের একট গ্রধান অঙ্গ । আনি কহিলাম, স্ত্রীলোকেরও প্রধ/ন কার্ধ্য আনন্দদান করা। তাহার সমস্ত অন্তিহ্কে সঙ্গাত ও কবিতার সায় সম্পূর্ণ সৌন্দ্যনর করিয়া তুলিলে তবে তাহার জীবনের উন্দেগ্ত সাধিত হপ্ন। সেই জন্তই স্ত্রীলোক, স্ততিবাদে বিশেষ আনন্দলাভ করে। কেবল অহঙ্কারপরিতৃপ্তির জন্ নহে; তাহাতে দে আপনার জীবনের সার্থকতা অনুভব করে। ক্রি, অসম্পূর্ণত' দেখাইলে একেবারে তাহাদের মর্মবের মুলে গিরা আঘাত. করে। এই জন্ত লোকনিন্দা স্ত্রীলোকের নিকট বড় ভয়ানক । স্পাস্াস্পাসিপিসপাস্পাস্প্শিতাসিলস্পিলাপাস্পাস্দিতিস্পিপীসিপাসিপাসিসপাসসপপাসপাসাসপসপা স্পা সপ পিসি ক্ষিতি কহিলেন-তুমি যাহা বলিলে দিব্য কবিত্ব করিয়া বলিলে, পুনিতে বেশ লাগিল, কিন্তু আসল কথাটা! এই য়ে, স্ত্রীলোকের কার্যের পরিসর সন্ধীর্ণ। বৃহৎ দেশে ও বুহৎকালে তাহার স্থান নাই। উপস্থিত- মত শ্বামী পুত্র আত্মীয়-স্বজন প্রাতিবেশীদিগকে সন্তুষ্ট ও পরিভপ্ত করিতে পারিলেই তাহার কর্তব্য সাধিত হয়। যাহার জীবনের কাধ্যক্ষেত্র দূরদেশ ও দূরকালে বিস্তীর্ণ, যাহার কর্মের ফলাফল সকল সময় আণ্ত প্রত্যক্ষগোচর নহে, নিকটের লোকের ও বর্তমান কালের নিন্দাস্তরতির উপর তাহার তেমন একান্ত নির্ভর নহে, সুদূর আশা ও বৃহৎ কক্পনা, অনাদর উপেক্ষা ও নিন্দার মধ্যেও তাহাকে অবি5লিত বল প্রদান করিতে পারে। লোকনিন্দা, লোকস্তরতি, সৌভাগাগর্ষধ এবং মান-অভিমানে স্্রীলোককে 'ঘে এমন বিচলিত করিয়া তোলে তাহার প্রধান কারণ, জীবন লইয়া তাহাদের নগদ কারুবার, তাহাদের সমুদায় লাভলোকসাঁন বর্তমানে ; হাতে হাতে যে ফলপ্রাপ্ত হর তাহাই তাহাদের একমাত্র পাওনা ; এই জন্য তাহারা “কিছু কষাকষি করিয়া আদায় করিতে চায়, এক কানাকড়ি ছাড়িতে চায় না। দীপ্তি বিরক্ত হইয়। ঘুরোপ ও আমেরিকার বড় বড় বিশ্বহিতৈষিণী রমণীর দৃষ্টান্ত অন্বেষণ করিতে লাগিলেন। শ্রোতস্বিনী কহিলেন, বৃহত্ব ও মহত্ব নকল সময়ে এক নহে । আমরা বৃহতক্ষেত্রে কাধ্য করি না বলিয়। আমাদের কাধ্যের গৌরব অন্ন এ কথা আমি কিছুতেই মনে করিতে পারি না। পেশী, ম্বায়ুঃ অস্থিচম্্ম বুহৎ স্থান অধিকার করে, র্শস্থানটুকু অতি ক্ষুদ্র এবং নিভূত। আমরা সমস্ত মানবসমাজের সেই' মর্কেন্দ্রে বিরাজ করি। পুরুষদেবতাগণ বৃষ মহিষ প্রভৃতি বলবান পণুবাহন আশ্রয় করিয়া ভ্রমণ করেন, জ্রীদেবীগণ হৃদয়-শতদলবাঁসিনী, তাহার একটি বিকশিত ঞ্ুব সৌন্দর্য্যের মাঝখানে পরিপূর্ণ মহিমায় সমাসীন। পৃথিবীতে যদি পুনজন্মলাভ করি তবে আমি যেন পুনরায় ১১ ১৩২, বিচিত্র প্রবন্ধ পে্পাস্পিসসপিসপিস্পসি পাস্পাস্পিস্সপিস্পিসিস্পাস্পিসাস্ স্পিস্পিসপাসসি সা নারী হইয়া জন্মগ্রহণ করি, যেন ভিথারি না হইয়া অন্নপূর্ণা হই। একবার ভাবিয়া দেখ, সমস্ত মানবসংসারের মধ্যে প্রতি দিবসের রোগশোক, ক্ষুধাশ্রান্তি কত বৃহ, প্রতিমুহ্র্তে কর্মচক্রোতক্ষিপ্ত ধুলিরাশি কত স্তুপাকার হইগ্না উঠিতেছে ; প্রতি গৃহের রক্ষাকার্ধয কত অসীমগ্রীতিপাধ্য ; বদি কোন প্রসন্নমৃত্তি, প্রফুলমুখী, ধৈর্য্যময়ী লোকবংসলা দেবী প্রতিদিবসের শিয়রে বাস করিয়া তাহার তপ্ত ললাটে স্সিগ্বম্পর্শ দান করেন, আপনার কাঁধ্যকুশল সুন্বর হস্তের দ্বারা প্রত্যেক মুহূর্ত হইতে তাহার মলিনতা দূর করেন এবং প্রত্যেক গৃহমধ্যে প্রবেশ করিয়া অশ্রান্ত শ্নেহে তাহার কল্যাণ ও শাস্তি বিধান করিতে থাকেন, তবে তাহার কা্যস্থল সঙ্কীর্ণ বলির! তাহার মহিমা কে অস্বীকার করিতে পারে? বদি সেই লক্ষমীমুন্তির 'আদর্শখানি হৃদয়ের মধ্যে উজ্জ্বল করির। রাখি, তবে নারীজন্মের প্রতি আর অনাদর জন্মিতে পারে না। ইহার পর আমরা সকলেই কিছুক্ষণ চুপ করিয়া রহিলাম। এই অকন্মাৎ নিস্তব্ধতার শ্োতান্বনী অত্যন্ত লজ্জিত হইয়া উঠিয়া আমাকে বলিলেন, তুমি আমাদের দেশের স্ত্রীলোকের কথা কি বলিতেছিলে-- মাঝে হইতে অন্ত তর্ক আসিয়া সে কথা চাপ। পড়িয়া গেল। আমি কহিলাম_-আমি বলিতেছিলামঃ আমাদের দেশের স্ত্রীলোকের আমাদের পুরুষের চেয়ে অনেক শ্রেষ্ঠ। ক্ষিতি কহিলেন, তাহার প্রমাণ? « আমি কহিলাঁম, গ্রমীণ হাতে হাতে। প্রমাণ ঘরে ঘরে। প্রমাণ | অন্তরের মধ্যে । পশ্চিমে ভ্রমণ করিবার সময় কোন কোন নদী দেখা যায়, যাহার অধিকাঁংশে তপ্ত শুষ্ক বালুকা ধুধু করিতেছে-__কেবল একপার্খ দিয়! শ্টিকম্বচ্ছসলিল! শ্লিঞ্ধ নদীটি অতি নত্রমধুর শোতে প্রবাহিত হইয়া যাইতেছে। সেইযুদস্ত £দেখিলে আমাদের সমাজ মনে পঞ্চভূত। ১৬৩ সপাস্পিস্পিস্টন্ল স্পা পিপিপি? পড়ে । আমরা অকর্মণ্য নিক্ষল নিশ্চল বানুকারাশি স্তপাকার হইয়া পড়িয়৷ আছি, প্রত্যেক সমীরশ্বাসে হৃছ করিয়! উড়িয়া যাইভেছি এবং থে কোন কাত্তিস্তন্ত নির্মাণ করিবার চেষ্ট| করিতেছি তাহাই ছুই দিনে ধসিয় ধসিয়া পড়িয়া! যাইতেছে । আর আমাদের বাঁমপার্থে আমাদের রমণীগণ নিক্পপথ দিয়া বিনম্র সেবিকার মত আপনাকে সঙ্কুচিত করিয়া স্বচ্ছ সুধাক্রোতে প্রবাহিত হইয়া চলিতেছে । তাহাদের এক মুহূর্ত বিরাম নাই। তাহাদের গতি, তাহাদের প্রীতি, তাহাদের সমস্তজীবন এক ফ্ুব লক্ষ্য ধরিয়া অগ্রপর হইতেছে । আমরা লক্ষ্যহীন, এ্ক্যহীন, সহস্র পদতলে দলিত হইয়াও মিলিত হইতে অক্ষম । যে দিকে জলস্রোত, যেদিকে আমাদের নারীগণ, কেবল দেইদিকে সমস্ত শোভা, ছায়া এবং সফলতা, এবং ঘে দিকে আমরা, সেদিকে কেবল মক্রঠাকঠিকা, বিপুল শূন্ততা এবং দগ্ধ দাশ্তবৃত্তি। সমীর তুমি কিবল? ননীর স্রোতদ্বিনী ও দীপ্বির প্রতি কটাক্ষপাত করির। হাপিন। কহি- লেন-£অগ্তককার সভার শিগ্েদের অনার ত। স্বীকার করিবার দুই) মুষ্টি- নতী বাঝ। বর্কনান। মানি তাহাবের নাম করিতে চাহি না। বিশ্ব" নংসারের মনো বাঙালী পুক্কনের মানর কেবন শাপন অন্তঃপুরের মন্যে। সেখানে তিনি কেবননাত্র প্রহ্ নহেন, তিনি দেবত।। আমরা বে দেবত। নহি, তন ও মৃত্তিকার পুন্তলিকা মাত্র, সে কথ! আমাদের উপাপক- দের নিকট প্রকাশ করিবার প্রয়োজন কিভাই? এ বেআনাদের মুগ্ধ বিশ্বস্ত তক্তট আপন হৃনরকুঞ্ধের গনুবয় বিকশিত সুন্দর পু?" সোনার থালে সাজাই্স| আমাদের চরণতলে আনিম্বা উপস্থিত করিননাছে, ও কোথায় ফিরাইয়া দিব? আমাদিগকে দেবসিংহ।সনে বসাইয়া এ ষে চিন্নব্রতখারিণী সেবিকাটি আপন নিভৃত নিত্য প্রেমের সন্ধাদীপট লইয়। আমাদের এই গৌরবহীন মুখের চহুর্দিকে অনন্ত অহৃপ্তিভরে ১৩৪ বিচিত্র প্রবন্ধ সাসটিপসমিপাস্িপািলাস্িত মসলা লাস পাসপাসপিসিলানপাসপাসপিসপস্মিপসিপাসসি শত সহশ্রবার প্রদক্ষিণ করাইয়া আরতি করিতেছে, উহার কাছে যদি খুব উচ্চ হইয়া না বসিয়া রহিলাম, নীরবে পুজা না গ্রহণ করিলাম তবে উহাদেরই বা কোথায় সুখ আর আমাদেরই বা কোথায় সম্মান ! যখন ছোট ছিল তখন মাটির পুতুল লইয়। এমনিভাবে খেলা করিত যেন তাহার প্রাণ আছে, যখন বড় হইল তখন মান্ুুষপুতুল লইয়া এমনি ভাবে পুজা! করিতে লাগিল যেন তাহার দেবত্ব আছে--তখন যদি কেহ তাহার খেলার পুতুল ভাঙিয়া দিত তবে কি বালিক কাদিত না, এখন যদি কেহ ইহার পুজার পুতুল ভাঙিয়া দেয় তবে কি রমণী ব্যথিত হয় না? যেখানে মনুষ্যত্বের যথার্থ গৌরব আছে সেখানে মনুষ্যত্ব বিনা ছদ্মবেশে সন্মান আকর্ষণ করিতে পারে, বেখানে মনুষ্যত্বের অভাব সেখানে দেবত্বের আয়োজন করিতে হয়। পৃথিবীতে কোথাও যাহাদের প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা নাই তাহার! কি সামান্য মানবভাঁবে স্ত্রীর নিকট সম্মান প্রত্যাশা করিতে পারে? কিন্ত আমরা ঘে এক একটি দেবতা, সেইজন্য এমন সুন্দর সুকুমার হৃদয়গুলি লইয়া অসক্ষোচে আপনার পঙ্কিল চরণের পাঁদপীঠ নিম্মীণ করিতে পারিয়াছি। দীপ্তি কহিলেন, যাহার বথার্থ মনুষ্যত্ব আছে, সে মান্ধুষ হইয়! দেবতার পূজা গ্রহণ করিতে লঙ্জা অনুভব করে এবং যদি পুজা পায় তবে আপনাকে সেই পুজার যোগ্য করিতে চেষ্টা করে। কিন্তু বাংলা দেশে দেখা যায়, পুরুষসম্প্রদায় আপন দেবত্ব লইয়া নিলজ্জভাবে আস্ফালন করে। যাহার যোগ্যতা যত অল্প তাহার আড়ম্বর তত বেশী। আজকাল ্ত্ীর্দিগকে পতিমাহাত্ম্য পতিপুজ। শিখাইবার জন্ত পুরুষগণ কায়মনোবাক্যে লাগিয়াছেন। আজকাল নৈবেগ্ঠের পরিমাণ কিঞ্চিৎ কমিয়া আদিতেছে বলিয়। তাহাদের আশঙ্কা জন্মিতেছে। কিন্তু পত্রীদিগকে পুজা করিতে শিখানো অপেক্ষা পতিদ্িগকে দেবতা হইতে শিখাইলে কাঁজে লাগিত। পতিদেবপুজা হা হইতেছে বলিয়া! ধাহারা৷ আধুনিক স্ত্রীলোকদিগকে পঞ্চভৃত। ১৬৫ পরিহাম করেন, তাহাদের যদি লেশমাত্র রসবোধ থাকিত তবে সে বিদ্ধপ ফিরিয়া আসিয়া তাহাদের নিজেকে বিদ্ধ করিত! হায় হায়, বাঙালীর মেয়ে পূর্বজন্মে কত পুণ্যই করিয়াছিল তাই এমন দেবলোকে আসিয়া জন্মগ্রহণ করিয়াছে ! কিবা দেবতার শ্রী! কিবা দেবতার মাহাত্ম্য । স্রোতম্বিনীর পক্ষে ক্রমে অসহ্‌ হইয়| আসিল। তিনি মাথা নাড়িয়া গন্ভীরভাবে বলিলেন_-তোমর! উত্তরোত্তর সুর এম্নি নিখাদে চড়াইতেছ যে, আমাদের স্তবগানের মধ্যে যে মাধুর্যযটুকু ছিল তাহা ক্রমেই চলিয়া যাইতেছে । এ কথা যদি ব! সত্য হয় যে, আমর! তোমাদের ঘতটা বাড়াই তোমরা তাহার যোগ্য নহ, তোমরাও কি আমাদিগকে অযথারপে বাঁড়াইয়া তুলিতেছ না? তোমরা যদি দেবতা ন! হও, আমরাও দেবী নহি। আমর! ষদি উভয়েই আপোষের দেবদেবী হই, তবে আর ঝগড়। করিবার প্রয়োজন কি ? তাণ্ছাঁড়। আমাদের ত সকল গুণ নাই-হ্ৃদয়- মাহাজ্মো যদি আমরা! শ্রেষ্ঠ হই, মনোঁমাহায্ম্যে ত তোমরা বড়। আমি কহিলাম--মধুর কণ্ম্বরে এই স্নিগ্ধ কথাগুলি বলিয়া তুমি বড় ভাল করিলে, নতুবা দীপ্তির বাক্যবাণবর্ষণের পর সত্যকথা বলা দুঃসাধ্য হইয়া উঠিত। দেবি, তোমরা কেবল কবিতার মধ্যে দেবী, মন্দিরের মধ্যে আমরা দেবতা । দেবতার ভোগ যাহা কিছু সে আমাদের, আর তোমাদের জন্ত কেবল মনুুসংহিতা হইতে দুইখানি কিন্বা আড়াইথানি মাত্র মন্ত্র আছে। তোমরা আমাদের এমনি দেবতা যে, তোমরা যে স্থখস্বাস্থ্যসম্পদের অধিকারী এ কথা মুখে উচ্চারণ করিলে হাস্তাম্পদ হইতে হয়। সমগ্র পৃথিবী আমাদের, অবশিষ্ট- ভাগ তোমাদের; আহারের বেলা! আমরা, উচ্ছিষ্টের বেলা তোমরা । প্রকৃতির শোভা, মুক্ত বাধু, স্বাস্থ্যকর ভ্রমণ আমাদের এবং ছুলভ মাঁনবজন্ম ধারণ করিয়া কেবল গৃহের কোণ, রোগের শয্যা এবং রাতায়নের প্রান্ত তোমাদের ! আমরা দেবতা হইয়া! সমস্ত পদসেব! পাই ১৬৬ বিচিত্র প্রবন্ধ শাপলা সপন লালসিপাস্িলাি পা পাস পো পাস উ পপি পাসিঠাউি পরা পাসটিলাসিপাসিপাসিপাসিপাসি পা এবং তোমরা দেবী হইয়া! সমস্ত পদপীড়ন সহ কর-_প্রণিধান করিয়! দেখিলে এ দুই দেবত্বের মধ্যে প্রভেদ লক্ষিত 'হইবে। সমীরণ কহিলেন, বঙ্গসাহিত্যে স্ত্রীচরিত্রের প্রাধান্, তাহার কারণ, বঙ্গসমাজে স্ত্রীলোকের গুাধান্। আমি কহিলাম, বঙ্গদেশে পুরুষের কোন কাজ নাই। এদেশে গাহস্থ্য ছাড়া আর কিছু নাই, সেই গৃহ্গঠন এবং গৃহবিচ্ছেদ স্রীলোকেই করিয়া থাকে । আমাদের দেশে ভাল মন্দ সমস্ত শক্তি স্ীলোকের হাতে; আমাদের রমণীরা সেই শক্তি চিরকাঁল চালনা করিয়া আসিয়াছে । একটি ক্ষুদ্র ছিপছিপে তকৃতকে ্টমনোৌকা যেমন বৃহৎ বোঝাইভরা গাঁধাবোটটাকে শ্রোতের অনুকূলে ও প্রতিকূলে টানিয় লইয়! চলে, তেমনি আমাদের দেশের গৃহিণী, লেকিলৌকিকতা৷ আত্মীয় কুটুম্বিতাপরিপূর্ণ বৃহৎসংসার এবং স্বামী নামক একটি চলংশক্তিরহিত অনাবশ্বীক বোঝা পশ্চাতে টানিয়! লইয়া আসিয়াছে । অন্তদেশে পুরুষেরা সন্ধি বিগ্রহ রাজ্যচালন! প্রভৃতি বড় বড় পুরুষোচিত্ত কার্যে বহুকাল ব্যাপৃত থাকিয়া নারীদের হইতে শ্বতন্ত্র একটি প্রকৃতি গঠিত করিয়া তোলে। আমাদের দেশে পুরুষের! গৃহপালিত, মাতৃলালিত, পত্রীচাঁলিত । কোন বৃহত্ভাব, বৃহৎকাঁধ্য, বুহতক্ষেত্রের মধ্যে তাহাদের জীবনের বিকাশ হয় নাই; অথচ স্বাধীনতার পীড়ন, দাসত্বের হীনতা, দুর্বলতার লাঞ্ছনা তাহাদিগকে নতশিরে সহ্য করিতে হইয়াছে । তাহাদিগকে পুরুষের কোন কর্তব্য করিতে হয় নাই এবং কাপুরুষের সমস্ত অপমান বহিতে হৃইয়াছে। সৌভাগ্যক্রমে স্ত্রীলোককে কখনো বাহিরে গিয়া কর্তব্য খুঁজিতে হয় না, তরুশাখায় ফলপুণ্পের মত কর্তব্য তাহার হাতে আপনি আপিয়া উপস্থিত হয়। সে যখনি ভাল বাসিতে আরম্ভ করে» তখনি তাহার কর্তব্য আরম্ত হয়; তথান তাহার চিন্তা, বিবেচনা, যুক্তি, কার্য, তাহার সমস্ত চিত্তবৃত্তি সজাগ হইয়া! উঠে) তাহার সমস্ত চরিত্র পঞ্চতৃত। ১৬৭ পপর পাপী সপাসসটিপিলা সপ লাস প ৯৩৯ ০ ৯ ৮৯ পতি পিছ পঁত উত্তিন্ন হইয়া উঠিতে থাকে | বাহিরের কোন রাষ্ট্রবিপ্লব তাহার কার্যে ব্যাঘাত করে না, তাহার গৌরবের হাঁস করে না, জাতীয় অধীনতার মধ্যেও তাহার তেজ রক্ষিত হয়। শ্োতশ্বিনীর দিকে ফিরিয়া কহিলাম, আজ আমরা একটি নুতন শিক্ষা এবং বিদেশী ইতিহাস হইতে পুরুষকারের নৃতন আদর্শ প্রাপ্ত হইয়! বাহিরের কর্ধক্ষেত্রের দিকে ধাবিত হইতে চেষ্টা করিতেছি । কিন্ত ভিজা কাষ্ঠ জলে না, মরিচা-ধর! চাকা চলেনা ; যত জলে তাহার চেয়ে ধোঁয়া বেশী হয়, যত চলে তার চেয়ে শব বেণী করে। আমরা চিরদিন অবম্মণ্যভাবে কেবল দলাদলি, কানাকানি করিয়াছি, ভোমর! চিরকাল তোমাদের কাঁজ করিয়া আসিয়াছ। এইজন্য চরিত্র বলিয়া তোমাদের একটা নিজের জিনিষ আছে, একটা পাত্র আছে । নিজের জিনিষ না থাকিলে পরের জিনিষ গ্রহণ করা খায় না, এবং গ্রহণ করিয়া! আপনা করা যায় না। এইজন্ত এখনো আমাদের ভার তোমাদিগকে লইতে হইবে। আমাদিগকে কার্ষ্য নিয়োগ করিতে, আমাদের বাহাড়ম্বর দুর করিতে, আমাদের আতিশয্য হাস করিতে, আমাদের মিথ্যা দর্প চূর্ণ করিতে, আমাদের বিশ্বাপ সগীব রাখিতে এবং চতুষ্ার্শবন্তী দেশকালের সহিত আমাদের সামঞ্জানাধন করাইয়া দিতে হইবে। এক কথায়, দেশের সমুদায় গাধাবোটগুলিকে এখনো! তোমাদের জিম্মায় লইতে হইবে। ইহারা একটু একটু বাক্যবাযুর পাল উড়াইতে শিখিয়াছে বলিয়া যে মস্ত হইয়াছে তাহা মনে করিয়ো না- ইহাদের মধ্যে একটা আত্মশক্তি, একটা আত্মসম্মান, 'একটা গ্ুনিরমিত তেজের আবশ্তক ৷ গলায় সাহেবী “টাই” এবং পৃষ্ঠে সাহেবের থাব্ড়া আমাদের পক্ষে সম্মানকর নহে, কখনো সুমিষ্ট কখনো তীত্রকণ্ঠে এই শিক্ষা তৌমরা না দিলে আর উপায় দেখি না। এই পোষা পণডর গলার চকচকে শিকলটি কাটিয়া দাও এবং ইহার দীর্ঘ কর্ণটি ধরিয়া পস্পানসতাসিতিস্পস্িপিসিসিলা, সপক্াস্পামপসি লাপাত্তা সিলামপাািপীকছিশ ১৬৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । 1৯ সপ পর পিস তন্মধ্যে এই মন্ত্রট প্রবেশ করাইয়া দাও যে, অন্নব্যপ্রন যেমন আহার করিবার পক্ষেই পবিত্র কিন্তু কপালে মাথায় লেপিয়া অন্নশালী বলিয়া পরিচয় দিবার পক্ষে অপবিভ্র, ,শিক্ষা তেমনি গায়ে মাথায় মাথি- বার নহে, জীর্ণ করিয়া মনের উন্নতিনাধন করিবার এবং কাজে খাটাইবার। ্‌ শ্রোতশ্বিনী আর কিছু না বলিয়৷ সরৃতঙ্ঞ শ্নেহদৃষ্টির ঘারা আমার ললাট স্পর্শ করিয়া গৃহকার্ষ্যে চলিয়া গেল। পল্লিগ্রামে | এখন ভাদ্রমাসে চতুর্দিক জলমগ্র- কেবল ধান্তক্ষেত্রের মাথাগুলি অগ্লই জাগিয়া আছে। বহুদূরে দুরে এক একখান তরুবেষ্টিত গ্রাম উচ্চভূমিতে দ্বীপের মত দেখা যাইতেছে । এখানকার মানুষগুলি এমনি অন্্রক্ত ভক্তম্বভাব এমনি সরল বিশ্বীস- পরায়ণ যে, মনে হয় আডাম ও .উভ জ্ঞানবুক্ষের ফল খাইবার পূর্বেই ইহাদের বংশের আদিপুরুষকে জন্মদান করিয়াছিলেন । সেইজন্ঠ সয়- তান যদি ইহাদের ঘরে আসিয়া প্রবেশ করে তাহাকেও ইহারা শিশুর মত বিশ্বাস করে এবং মান্ত অতিথির মত নিজের আহারের অংশ দিয়া সেবা করিয়া থাকে । এই মানুষগুলির স্নিগ্ধ হাদয়াশ্রমে যখন বাস করিতেছি এমন সময়ে আমাদের পঞ্চভৃত-সভার কোন একটি সভ্য আমাকে কতকগুলি খবরের কাগজের টুকরা কাটিয়া পাঠাইয়! দিলেন। পৃথিবী যে ঘুরিতেছে স্থির হইয়া নাই তাহাই স্মরণ করাইয়া! দেওয়া তাহার উদ্দেন্ত । তিনি লগ্ন হইতে প্যারিম হইতে গুটিকণডক সংবাদের ঘূর্ণাবাতাস সংগ্রহ করিয়া ডাকযোগে এই জলনিমগ্ শ্ামন্নুকোমল ধান্তক্ষেত্রের মধ্যে পাঠাইয়া দ্বিয়াছেন। পঞ্চভূত। ১৬৯ সি পািতা একপ্রকার ভালই করিয়াছেম। কাগজগুলি পড়িয়৷ আমার অমেক কথা মনে উদয় হইল, যাহা কলিকাতায় থাকিলে আমার ভালরূপ হৃদয়ঙ্গম হইত না। আমি ভাবিতে লাগিলাম, এখানকার 'এই যে সমস্ত নিরক্ষর নির্বোধ চাষাভৃষার দল--থিওরিতে আমি ইহাদিগকে অসভ্য বর্ধর বলিয়! অবজ্ঞা করি, কিন্ত কাছে আসিয়া প্রকৃতপক্ষে আমি ইহাদিগকে আত্মীয়ের মত ভালবাসি, এবং ইহাঁও দেখিয়াছি আমার অন্তঃকরণ গোপনে ইহাদের প্রতি একটি শ্রদ্ধা প্রকাশ করে। কিন্ত লগ্ন প্যারিসের সহিত তুলনা করিলে ইহারা কোথায় গিয়া পড়ে ! কোথায় সে শিল্প, কোথায় সে সাহিত্য, কোথায় সে রাজনীতি ! দেশের জন্ত প্রাণ দেওয়৷ দুরে থাক্‌ দেশ কাহাকে বলে তাহাও ইহারা জানে না । এ সমস্ত কথ। সম্পূর্ণরূপে পর্যালোচনা করিয়াও আমার মনের মধ্যে একটি দৈববাণী ধ্বনিত হইতে লাগিল--তবু এই নির্বোধ সরল মানুষগুলি কেবল ভালবাসা নহে, শ্রদ্ধার যোগ্য । কেম আমি ইহাদিগকে শ্রদ্ধা করি তাই ভাবিয়া দেখিতেছিলাম। দেখিলাম ইহাদের মধ্যে যে একটি সরল বিশ্বাসের ভাব আছে তা অত্যন্ত বহুমুল্য। এমন কি তাহাই মনুষ্যত্বের চিরসাধনার ধন। যদি মনের ভিতরকা'র কথা খুলিয়া বলিতে হয় তবে এ কথা স্বীকার করিব আমার কাছে তাহা অপেক্ষা মনোহর আর কিছু নাই। সেই সরলতাটুকু চলিয়া! গেলে সভ্যতার সমস্ত সৌন্দধ্যটুকু চলিয়া যায়। কারণ স্বাস্থ্য চলিয়া যাঁয়। সরলতাই মনুষ্য-প্রকৃতির স্বাস্থ্য । যতটুকু আহার করা যায় ততটুকু পরিপাক হইলে শরীরের স্বাস্থারক্ষা হয়। মসলা দেওয়া ঘ্বৃতপক স্থু্বাছ চর্ধাচোষ্যলেহা পদার্থকে স্বাস্থ্য বলেনা। ১৭৯ বিচিত্র প্রবন্ধ সমস্ত জ্ঞান ও বিশ্বাসকে সম্পূর্ণ পরিপাক করিয়া স্বভাবের সহিত একীভূত করিয়া লওয়ার অবস্থীকেই বলে সরলতা, তাহাই মানসিক ত্বাস্থা। বিবিধ জ্ঞান ও বিচিত্র মতামতকে মনের স্বাস্থ্য বলে না। এখানকার এই নির্বোধ গ্রাম্য লোকেরা যে সকল জ্ঞান ও বিশ্বাস লইয়া! সংসারযাত্রা নির্বাহ করে সে সমস্তই ইহাদের প্রকৃতির সহিত এক হইয়া মিশিয়া গেছে। যেমন নিংশ্বীসপ্রশ্বী রক্তচলাচল আমাদের হাতে নাই তেমনি এ সমস্ত মতামত রাখা না রাখা তাহাদের হাতে নাই। তাহারা যাহা কিছু জানে যাঁছা কিছু বিশ্বাস করে নিতান্তই সহজে জানে ও সহজে বিশ্বাস করে। সেই জন্য তাঁহাদের জ্রানের সহিত বিশ্বীসের সহিত কাজের সহিত মানুষের সহিত এক হইয়া গিয়াছে । একটা উদাহরণ দিই। অতিথি ঘরে আদিলে ইহারা তাহাকে কিছুতেই ফিরায় না। আন্তরিক ভক্তির সহিত অক্ষুপ্ন মনে তাহার সেবা করে। সেজন্ত কোন গ্ষতিকে ক্ষতি কোন ক্লেশকে রেশ বলিয়া তাহাদের মনে উদয় হয় না। আমিও আতিথাকে কিয়ৎপরিমাণে ধর্ম বলিয়া জানি কিন্তু তাহাও জ্ঞানে জানি বিশ্বাসে জানি ন7া। অতিথি দেখিবামাত্র আমার সমস্ত চিত্বৃত্তি তৎক্ষণাৎ তৎপর হইয়া আতিথ্যের দিকে ধাবমান হয় না। মনের মধ্যে নানারূপ তর্ক ও বিচার করিয়া থাঁকি। এ সম্বন্ধে কোন বিশ্বাস আমার প্রকৃতির সহিত এক হইয়া যায় নাই। কিন্তু স্বভাবের ভিন্ন ভিন্ন অংশের মধ্যে অবিচ্ছেদ্য এক্যই মনুষ্যাত্বের চরম লক্ষ্য। নিয়তম জীবশ্রেণীর মধ্যে দেখা যায় তাহাদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ- ছেদন করিলেও, তাহাদিগকে ছুই চারি অংশে বিভক্ত করিলেও কোন ক্ষতিবৃদ্ধি হয় না, কিন্তু জীবগণ যতই উন্নতিলাত করিয়াছে ততই তাহাদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে ঘনিষ্ঠতর পক্য স্থাপিত হইয়াছে। মানবস্বভাবের মধ্যেও জ্ঞান বিশ্বাস ও কার্য্ের বিচ্ছিন্নতা উন্নতির নিযপর্যযায়গত। তিনের মধ্যে অভেদ সংযৌগই চরম উন্নতি । পঞ্চভৃত। ১৭১ পসস্পাসদপাশ। কিন্তু যেখানে জ্ঞান বিশ্বাস কার্ষ্যের বৈচিত্র্য নাই সেখানে এই প্রক্য অপেক্ষাকৃত সুলভ । ফুলের পক্ষে সুন্দর হওয়া যত সহজ জীবশরীরের পক্ষে তত নহে। জীবদেহের বিবিধ কার্য্যোপযোগী বিচিত্র অঙ্গ প্রত্যঙ্গ- সমাবেশের মধ্যে তেমন নিখুৎ সম্পূর্ণতি। বড় হুর্লভ। জন্তর্দের অপেক্ষা মানধু- যের মধ্যে সপ্পূর্ণতা আরো দুর্লত। মানসিক প্রকৃতি সম্বন্ধেও এ কথা খাটে। আমার এই ক্ষুদ্র গ্রামের চাষাদের গ্রকৃতির মধ্যে যে একটি এক্য দেখা যায় তাহার মধ্যে বৃহত্ব জটিলতা কিছুই নাই। এই ধরাগ্রান্তে ধান্তক্ষেত্রের মধ্যে সামান্ত গুটিকতক অভাব মোচন করিয়া জীবনধারণ করিতে অধিক দর্শন বিজ্ঞান সমাজতত্বের প্রয়োজন হয় না। যে গুটিকয়েক আদিম পরিবার-নীতি গ্রাম-নীতি এবং প্রজানীতির আবশ্তক, সে কয়েকটি অতি সহজেই মানুষের জীবনের সহিত মিশিয়া অখণ্ড জীবস্তভাব ধারণ করিতে পারে। তবু ক্ষুদ্র হইলেও ইহার মধ্যে যে একটি সৌন্দধধ্য আছে তাহ! চিন্তকে আকর্ষণ না করিয়৷ থাকিতে পারে না, এবং এই সৌন্দর্যটুকু অশিক্ষিত কষুত্র গ্রামের মধ্য হইতে পন্মের স্ঠায় উত্ভিন্ন হইয়া উঠিয়া সমস্ত গর্বিত সভ্যনমাজকে একটি আদর্শ দেখাইতেছে। সেই জন্ত লগ্ডন প্যারিসের তুমুল সভ্যতা-কোলাহল দুর হইতে সংবাদপত্রযোগে কাণে আসিয়া বাজিলেও আমার গ্রামটি আমার হৃদয়ের মধ্যে অগ্ঠ প্রধান স্থান অধিকার ফারয়াছে। আমার নানাচিস্তাবিক্ষিপ্ত চিত্তের কাছে এই ছোট পল্লিটি তানপুরের সরল সুরের মত একটি নিত্য আদর্শ উপস্থিত করিয়াছে । সে বলিতেছে আমি মহৎ নহি বিস্ময়জনক নহি, কিন্ত আমি ছোটর মধ্যে সম্পূর্ণ সুতরাং অন্য সমস্ত অভাব সত্বেও আমার যে একটি মাধুর্যা আছে তাহা স্বীকার করিতেই হইবে । আমি ছোট বলিয়! তুচ্ছ কিন্তু সম্পূর্ণ বলিয়। হ্ন্দর এবং এই সৌন্দর্য্য তোমাদের জীবনের আদর্শ । ১৭২ বিচিত্র প্রবন্ধ । অনেকে আমার কথায় হাস্ত সম্বরণ করিতে পারিবেন না কিন্তু তবু আমার বলা উচিত এই মুঢ় চাষাদের সষমাহীন মুখের মধ্যে আমি একটি সৌন্দধ্য অনুভব করি যাহা রমণীর সৌনর্য্যের মত। আমি নিজেই তাহাতে বিস্মিত হইয়াছি এবং চিন্তা করিয়াছি এ সৌনাধ্য কিসের। আমার মনে তাহার একটা উত্তরও উদয় হুইয়াছে। যাহার প্রকৃতি কোন একটি বিশেষ স্থায়ী ভাবকে অবলম্বন করিয়া থাকে, তাহার মুখে সেই ভাব ক্রমশঃ একটি স্থায়ী লাবণ্য অস্কিত করিয়৷ দেয়। আমার এই গ্রাম্য লৌোকসকল জন্মাবধি কতকগুলি স্থিরভাবের প্রতি স্থির দৃষ্টি বন্ধ করিয়া রাখিয়াছে, সেই কারণে সেই ভাবগুলি ইহাদের দৃষ্টিতে আপনাকে অঙ্কিত করিয়া দিবার স্থুদীর্ঘ অবসর পাইয়াছে। সেই জন্য ইহাদের দৃষ্টিতে একটি সকরুণ ধৈর্য ইহাদের মুখে একটি নির্ভর- পরায়ণ বসলভাব স্থিররূপে প্রকাশ পাইতেছে। যাহারা সকল বিশ্বাসকেই প্রশ্ন করে এবং নাঁনা বিপরীত ভাঁবকে পরখ করিয়া দেখে তাহাদের মুখে একটা বুদ্ধির তীব্রতা এবং সন্ধানপরতাঁর পটুত্ব প্রকাশ পায় কিন্তু ভাবের গভীর স্নিগ্ধ সৌন্দর্য হইতে সে অনেক তফাঁৎ। | আমি যে ক্ষুদ্র নদীটিতে নৌকা লইয়া আছি ইহাতে আোত নাই বলিলেও হয়, সেই জন্য এই নদী কুমুদে কহুলারে পদ্মে শৈবাঁলে সমাচ্ছন্ন হইয়া আছে। সেইরূপ একটা স্থায়িত্বের অবলম্বন না পাইলে ভাঁব- সৌন্দর্য্য ও গভীরভাবে বদ্ধমূল হইয়া আপনাঁকে বিকশিত করিবার অবসর পায় না। | প্রাচীন যুরোপ নব্য আমেরিকার প্রধান অভাব অনুভব করে সেই ভাবের। তাহার ওজ্জল্য আছে, চাঞ্চল্য আছে, কাঠিন্ আছে কিন্তু ভাবের গভীরতা নাই। সে বড়ই বেশিমাত্রায় নুতন, তাহাতে ভার পঞ্চভূত | ১৭৩ অন্মাইবার সময় পায় নাই। এখনে! সে সত্যতা মানুষের সহিত মিশ্রিত হইয়! গিয়! মানুষের হৃদয়ের দ্বার! অনুরঞ্জিত হইয়া উঠে নাই। প্রাচীন মুরোপের ছিদ্রে ছিদ্রে কোণে কোণে অনেক শ্তামল পুরাতন ভাব অঙ্কুরিত হইয়া তাহাকে বিচিত্র লাঁবণ্যে মণ্ডিত করিয়াছে, আমেরিকার সেই লীবণ্যট নাই। বহুম্থৃতি জনপ্রবাদ বিশ্বী ও সংস্কারের হ্থারা এখনো! তাহাতে মানব জীবনের রঙ ধরিয়া! যায় নাই। আমার এই চাঁষাদের মুখে অন্তপ্রকৃতির সেই রঙ ধরিয়া গেছে। দারল্যের সেই পুরাতন শ্রীটুকু সকলকে দেখাইবার জন্য আমার বড় একটি আকাজ্ষা হইতেছে। কিন্তু সেই শ্রী এতই সুকুমার যে, কেহ যদি বলেন দেখিলাম না এবং কেহ যদি হস্ত করেন তবে তাহা! নির্দেশ করিয়া দেওয়! আমার ক্ষমতার অতীত। এই খবরের কগজের টুক্রাগুলা। পড়িতেছি আর আমার মনে হই- তেছে, যে" বাইবেলে লেখা আছে, যে নম সেই পৃথিবীর অধিকার প্রাপ্ু হইবে। আমি যে নমতাটুকু এখানে দেঁখিতেছি ইহার একটি স্বর্গীয় অধিকার আছে। পৃথিবীতে সৌন্দর্যের অপেক্ষা নর আর কিছু নাই সে বলের দ্বারা কোন কাজ করিতে চার মা--একসময় পৃথিবী তাহারই হইবে। এই যে গ্রামবাসিনী সুন্দরী সরলতা আজ একটি নগরবাসী নবসভ্যতার পোঁষাপুত্রের মন অতর্কিতভাবে হরণ করিয়া লইতেছে এককালে সে এই সমস্ত সভ্যতার রাজরাণী হইয়া বসিবে। এখনো হয় ত তার অনেক বিলম্ব আছে কিন্তু অবশেষে সভ্যতা সরলতার সহিত বদি সম্মিলিত ন! হয় তবে সে আপনার পরিপূর্ণতার আদর্শ হইতে ভ্রষ্ট হইবে। পূর্বেই বলিরাছি, স্থায়িত্বের উপর ভাবসৌনর্য্ের নির্ভর। পুরাতন স্বৃতির যে সৌন্দর্য্য তাহ! কেবল অপ্রাপ্যতা নিবন্ধন নহে) হৃদয় বহুকাল তাহার উপর বাঁ করিতে পায় বলিয়া সহত্র সজীব কল্পনা সুত্র প্রসারিত করিয়৷ তাহাকে আপনার সহিত একীকৃত করিতে পারে, সেই কারণেই ১৭৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । ্পান্পাস্পিস্িসিাস্পাস্পস্পস্পিসসটিপাসপিন্পসিপাস্িলাস্সি তাহার মাধুধ্য। পুরাতন গৃহ, পুরাতন দেব্মন্দিরের প্রধান সৌন্দর্য্যের কারণ এই যে, বহুকালের স্থায়িত্ববশতঃ তাহারা মানুষের সহিত অত্যন্ত ংযুক্ত হইয়া গেছে, তাহার! অবিশ্রাম মানবহদয়ের সংশ্রবে সর্বাংশে সচেতন হইয়া উঠিয়াছে - সমাজের সহিত তাহাদের সর্ধপ্রকার বিচ্ছেদ দুর হইরা তাহারা সমাজের অঙ্গ হইয়া গেছে, এই এঁক্যেই তাহাদের সৌন্ধ্য । মানবসমাজে স্ত্রীলোক সর্বাপেক্ষা পুরাতন ; পুকষ নানা কার্য্য নানা অবস্থা! নানা পরিবর্তনের মধ্যে সর্বদাই চঞ্চলভাবে প্রবাহিত হইয়া আসিতেছে; স্ত্রীলোক স্থায়ীভাবে কেবলি জননী এবং পত্বীরূপে বিরাজ করিতেছে, কোন বিগ্রবেই তাহাকে বিক্ষিপ্ত করে নাই; এই জন্য সমাজের মর্মবের মধ্যে নারী এমন সুন্দরবূপে সংহতরূপে মিশ্রিত হইয়৷ গেছে; কেবল তাহাই নহে, সেই জন্য সে তাহার ভাবের সহিত কাজের সহিত শক্তির সহিত সবস্থুদ্দ এমন সম্পূর্ণ এক হইয়া গেছে__ এই ছল সর্ধাঙ্গীন প্রক্যলাঁভ করিবার জন্য তাহার দীর্ঘ অবসর ছিল। সেইরূপ ঘখন দীর্ঘকালের স্থাঘিত্ব আশ্রয় করিয়া তর্ক যুক্তি জান ক্রমশঃ সংস্কারে বিশ্বাসে আসিয়। পরিণত হয় তখনই তাহার সৌন্দর্য্য ফুটিতে থাকে । তখন সে স্থির হইয়া দীড়ায় এবং ভিতরে যে সকল জীবনের বীজ থাকে সেইগুলি মানুষের বহুদিনের আনন্দালোকে ও অশ্রু" জলবর্ষণে অদ্কুরিত হইয়া! তাহাকে আচ্ছন্ন করিয়! ফেলে । যুরোপে সম্প্রতি থে এক নবসভ্যতার যুগ আবিভূতি হইগ্নাছে এ যুগে ক্রমাগতই নব নব জ্ঞান বিজ্ঞান মতামত স্তুপাঁকার হইয়া! উঠিয়াছে; তত্ত্ব উপকরণসামগ্্রীতে একেবারে স্থানাভাব হইয়া দীড়াইয়াছে। অবিশ্রাম চাঁঞ্চল্যে কিছুই পুরীতন হইতে পাইতেছে না । কিন্তু, দেখিতেছি এই সমস্ত আয়োজনের মধ্যে মানবহৃদয় কেবলই ক্রন্দন করিতেছে। তাহার কারণ মানবহদয় যতক্ষণ এই বিপুল সভ্যতান্ত পের মধ্যে পঞ্চতৃত। ১৭৫ এ এপি পসপিসপিসাসপািিসসপাি সপ সপাসিপন্লসপাস্পািশাসিসপাসপিস্টিাপাস্পীসপিসপিসপ পিসি পসপাম্পাসপিস্পিস্পিনপাস্পিস্পিসিপিশিপলািপাসপাসিপা পিটিসি সিপাপাসিপাপপাপাস্সিপা সা একটি সুন্দর পীক্য স্থাপন করিতে না পারিবে ততক্ষণ কখনই ইহার মধ্যে আরামে ঘরকরা পাতিয় প্রতিষ্ঠিত হইতে পারিবে না। ততক্ষণ সে কেবল অস্থির অশান্ত হইয়া বেড়াইবে। আর সমস্তই জড়” হইয়াছে, কেবল এখনে! স্থায়ী দৌনর্ধ্য, এখনো নবসভ্যতার রাজলক্ষমী আসিয়া দাঁড়ান নাই। জ্ঞান বিশ্বাস ও কার্য পরম্পরকে কেবলি পীড়ন করি- তেছে_্ীক্যলাভের জন্য নহে, জয়লাভের জন্য পরস্পরের মধ্যে সংগ্রাম বাঁধিয়া গিয়াছে । কেবল যে প্রাচীন স্মৃতির মধ্যে সৌন্দর্য্য তাহা নহে, নবীন আশার মধ্যেও সৌন্দর্য্য, কিন্ত দুর্ভাগ্যক্রমে ঘুরোপের নৃতন সম্যতার মধ্যে এখনে। আশার সঞ্চার হয় নাই। বুদ্ধ যুরোগ অনেকবার অনেক আশায় প্রতারিত হইয়াছে; যে সকল উপায়ের উপর তাহার বড় বিশ্বাম ছিল সেস্মস্ত একে একে বার্থ হইতে দেখিরাছে। ফরাসী বিপ্লবকে একটা বৃহৎ চেষ্টার বৃথা পরিণাম বলিয়া' অনেকে মনে করে। এক সময় লৌকে মনে করিয়াছিল আপামর সাধারণকে ভোট দিতে দিলেই পৃথিবীর অধি- কাংশ অনঙ্গল দূৰ হইবে--এখন সকলে ভোট দিতেছে অথচ অধিকাংশ ক্ামল্গল বিদার লইবার জন্য কোনরূপ ব্যস্ততা দেখাইতেছে না । কখনো! বা লোকে আশ! করিয়াছিল স্টেটের দার মানুষের সকল দুর্দশা মোচন হইতে পারে, এখন আবার পণ্তিতেরা আশঙ্কা করিতেছেন স্টেটের দ্বার! ছর্দিশা! মোচনের চেষ্টা করিলে হিতে বিপরীত হইবারুই সন্তাবন1। কয়লার থনি কাপড়ের কল এবং বিজ্ঞানশান্ত্রের উপর কাহীরও কাহারও কিছু কিছু বিশ্বাস হয় কিন্তু তাহীতেও দ্বিধা ঘোঁচে না) অনেক বড় বু 'লোক বলিতেছেন কলের দ্বারা মানুষের পূর্ণতা সাধন হয় না। আধুনিক যুরোগ বলে, আশা করিয়ো না, বিশ্বাস করিয়ে! না, কেবল পরীক্ষা কর। নবীন সভ্যত| যেন এক বৃদ্ধ পতিকে বিবাহ করিয়াছে, তাহার সমৃদ্ধি আছে কিন্ত যৌবন নাই, দে আপনার সহস্র পূর্ব অভিজ্ঞতার দার ১৭৬ বিচিত্র গ্রবন্ধ | ৭৯সপো্সিসমিপাসিপাস্িণ হপস্িসপীপিসদিাসাসসি জীর্ণ। উভয়ের মধ্যে ভালরূপ প্রণয় হইতেছে না গৃহের মধ্যে কেবল অশাস্তি। এই সমস্ত আলোচনা করিয়া আমি এই পলীর ক্ষুদ্র সম্পূর্ণতার সৌনদর্ধ্য দ্বিগুণ আনন্দে সম্তোগ করিতেছি । তাই বলিয়া আমি এমন অন্ধ নহি, যে, যুরোপীয় সভ্যতীর মর্যাদা বুঝি না। প্রভেদের মধ্যে পক্যই ীক্যের পুর্ণ আদর্শ, বৈচিত্র্যের মধ্যে ধীক্যই সৌনধ্যের প্রধান কারণ । সম্প্রতি যুরোপে সেই প্রভেদের যুগ পড়িয়াছে, তাই বিচ্ছেদ বৈষম্য। যখন একের যুগ আদিবে তখন এই বৃহৎ স্তপের মধ্যে অনেক বরিয়া গিয়া পরিপাক প্রাপ্ত হইয়া একখানি সমগ্র সুন্দর সভ্যতা দাড়াইয়া যাইবে । ক্ষুদ্ধ পরিণামের মধ্যে পরিসমাপ্তি লাভ করিয়া সন্তষ্টভাবে থাকার মধ্যে একটি শান্তি সৌন্দর্য্য ও নির্ভয়তা আছে সন্দেহ নাই--মার, যাহারা মনুধ্য প্রকৃতিকে ক্ষুদ্র এক্য হইতে মুক্তি দিয়া বিপুল বিস্তারের দিকে লইয়া যায় তাহারা অনেক অশাস্তি অনেক বিদ্ব- বিপদ সহ করে, বিপ্লবের রণক্ষেত্রের মধ্যে তাহাদিগকে অশ্রান্ত সংগ্রাম করিতে হয়-কিন্ধ তাহারাই পৃথিবীর মধ্যে বার এবং তাহারা ঘুদ্ধে পতিত হইলেও অক্ষয় স্বর্গ লাভ করে। এই বীর্য এবং মৌন্দধ্যের মিলনেই যথার্থ সম্পূর্ণতা। উভয়ের বিচ্ছেদে অর্ধসভ্যতা | | আমি এই পল্লীপ্রান্তে বসিয়া আমার সাদাসিধা তানপুরার চারটি তারের গুটিচারেক সুন্দর সুরসন্সিশ্রণের সহিত মিলাইয়া যুরোপীয়্ সভাতাকে বলিতেছি, তোমার স্থুর এখনে ঠিক মিলিল না এবং তাঁন- পুরাটিকেও বলিতে হয় তোমার এ গুটিকয়েক স্থুরের পুনঃ পুনঃ বঙ্কার- কেও পরিপূর্ণ সঙ্গীত জ্ঞান করিয়া সন্তষ্ট হওয়া যায় না। বরঞ্চ আজিকার এঁ বিচিত্র বিশৃঙ্খল স্বরূসমষ্টি কাল প্রতিভার প্রভাবে মহা সঙ্গীতে পরিণত. হইয়া! উঠিতে পারে, কিন্তু হায়, তোমার এঁ কয়েকটি তারের মধ্যে হইতে, মহৎ মৃত্তিমান সঙ্গীত বাহির করা ছুঃসাধ্য ! পঞ্চভৃত। ১৭৭ মন্গুষ্য। শ্রোতশ্বিনী প্রাতঃকালে আমার বৃহৎ খাতাটি হাতে করিয়া আনিয়] কহিল--এ সব তুমি কি লিখিয়াছ ? আমি যে সকল কথা কম্মিনকালে বলি নাই তুমি আমার মুখে কেন বসাইয়াছ? আমি কহিলা'ম, তাহাতে দোঁষ কি হইয়াছে ? শ্রোতন্বিনী কহিল--এমন করিয়া আমি কখনও কথা কহি না এবং কহিতে পারি না। যদি তুমি আমার মুখে এমন কথা দিতে, যাহা আমি বলি বা না বলি আমার পক্ষে বলা সম্ভব, তাহা হইলে আমি এমন লজ্জিত হইতাম না। কিন্তু এ যেন তুমি একখানা বই লিখিয়া আমার নাঁমে চালাইতেছ । আমি কহিলাম--তুমি আমাঁদের কাছে কতট' বলিয়াছ তাহ তুমি কি করিয়া বুঝিবে ? তুমি যতটা! বল, তাহার সহিত, তোমাকে যতট৷ জানি ছুই মিশিয়া অনেকখানি হইয়া উঠে। তোমার সমস্ত জীবনের দ্বারা তোমার কথাগুলি ভরিয়৷ উঠে। তোমার সেই অব্যক্ত উহ্য কথাখুলিত, বাদ দিতে পারি না। স্রোতস্থিনী চুপ করিয়া রহিল। জানি না, বুঝিল কি না বুঝিল। বোধ হয় বুঝিল, কিন্তু তথাপি আবার কহিলাম-__তুমি জীবস্ত বর্তমান, প্রতিক্ষণে নব নব ভাবে আপনাকে ব্যক্ত করিতেছ-_তুমি যে আছ, তুমি, যে সতা, তুমি যে সুন্দর, এ বিশ্বীস উদ্রেক করিবার জন্ত তোমাকে কোন্‌ চেষ্টাই করিতে হইতেছে না-_কিস্তু লেখায় সেই প্রথম সত্যটুকু প্রমাণ করিবার জন্ত অনেক উপায় অবলম্বন এবং অনেক বাক্য ব্যয় করিতে হয়। নতুবা প্রত্যক্ষের সহিত অপ্রত্যক্ষ সমকক্ষত৷ রক্ষা করিতে পারিবে কেন ? তুমি যে মনে করিতেছ আমি তোমাকে বেশি বলাইয়াছি তাহ! ঠিক নহে --আমি বরং তোমাকে সংক্ষেপ করিয়া লইয়াছি-_তোমার লক্ষ লক্ষ ১২ ১৭৮ বিচিত্র প্রবন্ধ: কথা, লক্ষ লক্ষ কাজ, চিরবিচিত্র আকারইঙ্গিতের কেবল মাত্র সারসংগ্রহ করিয়া লইতে হইরাছে। নহিলে তুমি যে কথাটি আমার কাছে বলিয়াছ ঠিক দেই কথাটি আমি আর কাহারো কর্ণগোচর করাইতে পারিতাম না লোকে ঢের কম শুনিত এবং ভূল গুনিত। আোতঙ্ষিনী দক্ষিণ পার্থ ঈষৎ মুখ ফিরাইয়া একটা বহি খুলিয়া! তাহার পাতী। উল্টাইতে উণ্টাইতে কহিল-_তুমি আমাকে স্নেহ কর বলিয়! আমাকে যতখানি দেখ আমিত বাস্তবিক ততখানি নহি। আমি কহিলাম--আমার কি এত স্বেহে আছে যে, তুমি বাস্তবিক যতখানি আমি তোমাকে ততথানি দেখিতে পাইব? একটি মানুষের সমস্ত কে ইয়ন্ত। করিতে পারে, ঈশ্বরের মত কাহার স্নেহ! ক্ষিতি ত একবারে অস্থির হইয়! উঠিল, কহিল--এ আবার তুমি কি কথা তুলিলে? স্রোতস্বিনী তোমাকে এক ভাবে প্রশ্ন জিজ্ঞাস! করিলেন, তুমি আর একভাঁবে তাঁহার উত্তর দিলে। আমি কহিলাম, জানি। কিন্তু কখাবার্তীয়, এমন অসংলগ্ন উত্তর প্রত্যুত্তর হইয়া থাকে। মন এমন একপ্রকার দাহা পদার্থ যে, ঠিক যেখানে প্রশ্নন্ফুলিঙ্গ পড়িল সেখানে কিছু না হইয়া হয় ত দশ হাত দূরে আর এক জায়গায় দপ্‌ করিয়া জলিয়া উঠে। নির্ধাচিত কমিটিতে বাহিরের লৌকের প্রবেশ নিষেধ, কিন্তু বৃহৎ উৎসবের স্থলে যে আসে তাহাকেই ডাকিয়া বসানে! যায় _-আঁমাঁদের কথোপকথনসভা:সেই উৎসব- সভা) সেখানে যদ্দি একটা! অসংলগ্ন কথা অনাহৃত আসিয়া উপস্থিত হয়, তবে তৎক্ষণাৎ তাহাকে আস্মুন মশায় বসুন বলিয়! আহ্বান করিয়া হাম্ত- মুখে তাহার পরিচয় না লইলে উৎসবের উদারতা দুর হয়। ক্ষিতি কহিল, ঘাট হইয়াছে, তবে তাই কর, কি বলিতেছিলে বল। ক উচ্চারণমাত্র কৃষ্ণকে ম্মরণ করিয়া! গ্রহনাদ কীদিয়া উঠে, তাহার আর বর্ণমাল। শেখা হয় না) একটা প্রশ্ন শুনিবামাত্র যদি আর একটা উত্তর পঞ্চতৃত। ১৭৯. শপাস্সিপাস্পিিস্সিিসি পিপাসা পাস পাস্পিস্টিলাি স্পা পলিসি তোমার মনে উঠে তবে ত কোন কথাই এক পা অগ্রসর হয় না । কিন্ত প্রহলাদ-জাতীয় লৌককে নিজের খেয়াল অনুসারে চলিতে দেওয়াই ভাল, যাহা মনে আসে বল। আমি কহিলাম- আমি বলিতেছিলাম, যাহাকে আমর! ভালবাসি কেবল তাহারই মধ্যে আমরা অনন্তের পরিচয় পাই। এমন কি, জীবের মধ্যে অনস্তকে অনুভব করারই অন্ত নাম ভালবাষা। প্ররুতির মধ্যে অনুভব করার নাম সৌন্দর্য সম্ভোগ । ইহা হইতে মনে পড়িল, সমস্ত বৈষ্ণব ধর্মের মধ্যে এই গভীর তত্বটি নিহিত রহিয়াছে । ক্ষিতি মনে মনে ভাবিল--কি সর্বনাশ! আবার তত্বকথ! কোথা হইতে আসিয়া! পড়িল! শ্োতশ্বিনী এবং দীপ্তিও যে, তত্বকথা শুনিবার জন্য অতিশয় লালায়িত তাহা নহে__কিস্তু একটা কথা যখন মনের অন্ধ- কারের ভিতর হইতে হঠাৎ লাফাইয়া ওঠে তখন তাহার পশ্চাৎ পশ্চাং শেষ পর্য্যস্ত ধাবিত হওয়া ভাব-শিকারীর একটা চিরাভ্যন্ত কাজ। নিজের কথা নিজের আয়ত্ব করিবার জন্য বকিয়া যাই, লোকে মনে করে অন্তকে তত্বোপদেশ দিতে বসিয়াছি। আমি কহিলাম-বৈঞ্কবধন্ম পৃথিবীর সমস্ত প্রেম-সম্পর্কের মধ্যে ঈশ্বরকে অনুভব করিতে চেষ্টা করিয়াছে । যখন দেখিয়াছে মা আপনার সন্তানের মধ্যে আনন্দের আর অবধি পায় না, সমস্ত হৃদয়খানি মুহূর্তে মুহূর্তে ভাজে ভীজে খুলিয়া ও ক্ষুদ্র মানবাঙ্কুরটিকে সম্পূর্ণ বেষ্টন করিয়া শেষ করিতে পারে না, তখন আপনার সন্তানের মধ্যে আপনার ঈশ্বরকে উপাসনা করিয়াছে । যখন দেখিয়াছে প্রভুর জন্য দাস আপনার প্রাণ দেয়, বন্ধুর জন্য বন্ধু আপনার স্বার্থ বিসর্জন করে, প্রিয়তম এবং প্রিয়তম! পরস্পরের নিকট আপনার সমস্ত আত্মাকে সমর্পণ করিবার জন্ত ব্যাকুল হুইয়৷ উঠে তখন এই সমস্ত পরমপ্রেমের মধ্যে একটা সীমাতীত লৌকা- তীত পরশ্ব্ধ্য অনুভব করিয়াছে । ১৮০ বিচিত্র প্রবন্ধ । শাসিত বাসপািপাসপাস্িলাসপলিসটাসিপাসলাস্সিসাসপাস্পা সপ্ন ক্ষিতি কহিল, সীমার মধ্যে অসীম, প্রেমের মধ্যে অনন্ত এ সব কথা৷ যতই বেশি শুনি ততই বেশি ছুর্কোধ হইয়া! পড়ে । প্রথম প্রথম মনে, হইত যেন কিছু কিছু বুঝতে পারিতেছি বা, এখন দেখিতেছি অনস্ত অসীম. প্রভৃতি শববগুলা স্ত,পাকার হইয়া বুঝিবার পথ বন্ধ করিয়া দাড়াইয়াছে। আমি কহিলাম, ভাষ| ভূমির মত। তাহাতে একই শস্য ক্রমাগত ব্পন করিলে তাহার উৎপাদিকা শক্তি নষ্ট হইয়া যায়। “অনন্ত” এবং “অসীম” শবটা আজকাল সব্ধবদা ব্যবহারে জীর্ণ হইয়া পড়িয়াছে, এই জন্ যথার্থ একট! কথা বলিবার না থাকিলে ও দুটা! শব ব্যবহার করা উচিত হয় না। মাতৃভাষার প্রতি একটু দয়ামারা করা কর্তৃব্য। ক্ষিতি কহিল--ভাষার প্রতি তোমার ত যথেষ্ট সদয় আচরণ দেখ . যাইতেছে ন।। সমীর এতক্ষণ আমার থাতাটি পড়িতেছিল, শেষ করিয়৷ কহিল, একি করিয়াছ? তোমার ডায়ারির এই লোকগুলা কি মানুষ না যথার্থই ভূত? ইহারা দেখিতেছি কেবল বড় বড় ভাল ভাল কথাই, বলে কিন্ত ইহাদের আকার আয়তন কোথায় গেল? আমি বিষগ্নমুখে কহিলাম- কেন বল দেখি? সমীর কহিল--তুমি মনে করিয়াছ, আত্রের অপেক্ষা আমসত্ত ভাল__ তাহাতে সমস্ত আঠি আশ আবরণ এবং জলীয় অংশ পরিহার করা যায়__ কিন্তু তাহার সেই লোভন গন্ধ, সেই শোভন আকার কোথায়? তুমি কেবল আমার সারটুকু লৌককে দিবে, আমার মান্ষটুকু কোথায় গেল? আ্বামার বেবাক্‌ বাজে কথাগুলো তুমি বাজেয়াপ্ত করিয়া যে একটি নিরেট ুস্তি দাড় করাইয়াছ তাহতে দত্তস্ফুট করা দুঃসাধ্য । আমি কেবল ছুই চারিটি চিন্তাশীল লোকের কাছে বাহবা পাইতে চাহি না, আমি সাধারণ লোকের মধ্যে বাঁচিয়।৷ থাকিতে চাহি। আমি কহিলাম-_সে জন্ত কি করিতে হইবে? পঞ্চভৃত। ১৮১ পাপ সিস্পাসিপাাসিলাস্পাসিশপাপিস্পস্পিস্পস্পিস্পি্পিস্সস্সপিসপিপাাসপস্িপিসপসপসিপাসপস্পিসপিস্পাসসিশা পাম্পি সমীর কহিল--সে আমি কিজানি! আমি কেবল আপত্তি জানা- ইয়া রাখিলীম । আমার যেমন সার আছে তেমনি আমার শ্বাদ আছে; সারাংশ মানুষের পক্ষে আবশ্তক হইতে পারে কিন্তু স্বাদ মানুষের নিকট প্রিয় । আমাকে উপলক্ষ করিয়। মানুষ কতক গুলো মত কিন্ব! তর্ক আহরণ করিবে এমন ইচ্ছ! করি না, আমি চাই মানুষ আমাকে আপনার লৌক বলিয়া চিনিয়া লইবে। এই ভ্রমসন্কুল সাধের মানবজন্ম ত্যাগ করিয়া একটা মাপিক পত্রের নির্ভুল প্রবন্ধ আকারে জন্মগ্রহণ করিতে আমার প্রবৃত্তি হয় না। আমি দার্শনিক তত্ব নই, আমি ছাপার বহি নই, তর্কের শুযুক্তি অথবা কুযুক্তি নই, আমার বন্ধুরা, আমার আত্মী- যঘ্নেরা মামীকে সন্বদা যাহা বলিয়া! জানেন, আমি তাহাই । ব্যোম এতক্ষণ একটা চৌকিতে ঠেসান দিয়া আর একট! চৌকির উপর পা ছুটা তুলিয়া অটল প্রশান্থভাবে বসিয়া ছিল। সে হঠাৎ বলিল _ তর্ক বল, তব বল, সিদ্ধান্ত এবং উপসংহারেই তাহাদের চরম গতি, সমাপ্তিতেই তাঁহাদের প্রধান গৌরব । কিন্ত মানুষ স্বতন্ত্রজীতীয় পদার্থ-_ অমরতা! অসমাপ্তিই তাহার সর্ধপ্রধান যাথার্থ্য। বিশ্রামহীন গতিই তাহার প্রধান লক্ষণ । অমরতীকে কে সংক্ষিপ্ত করিবে, গতির সারাংশ কে দিতে পারে? ভাল ভাল পাকা কথাগুলি যাঁদ অতি অনায়াঁসভাবে মানুষের মুখে বসাইয়। দাও তবে ভ্রম হয় তাহার মনের যেন একটা গতিবৃদ্ধি নাই-- তাহার যতদূর হইবার শেষ হইয়া গেছে। চেষ্টা ভ্রম অসম্পূর্ণতা পুনকুক্তি যদিও আপাততঃ দারিদ্রের মত দেখিতে হয় কিন্তু মানুষের প্রধান ধশবধ্য তাহার দ্বারা প্রমাণ হয়। তাহার দ্বারা চিন্তার একটা গতি একট জীবন নির্দেশ করিয়া দেয়। মানুষের কথাবার্তা চরিত্রের মধ্যে কীচা রংটুকু, অসমান্তির কোমলতা দুর্বলতাটুকু না রাখিয়া দিলে তাহীকে একেবারে সাঙ্গ করিয়া ছোট করিয়া ফেলা হয়। তাহার অন্ত পার্বেধ পালা একেবারে সুচিপত্রেই সারিয়! দেওয়া হয়। সমীর কহিল-_মান্ুষের ব্যক্ত করিবার ক্ষমতা অতিশয় অন্প--এই জন্ত প্রকাশের সঙ্গে নির্দেশ, ভাষার সঙ্গে ভঙ্গী, ভাবের সহিত ভাবনা যোগ করিয়! দিতে হয়। কেবল রথ নহে রথের মধ্যে তাহার গতি সঞ্চারিত করিয়া দিতে হয়; যদি একটা মানুষকে উপস্থিত কর তাহাঁকে খাড়া দীড় করাইয়! কতকগুলি কলে-্াটা কথা কহাইয়া গেলেই হইবে না, তাহাকে চালাইতে হইবে, তাহাকে স্থান পরিবর্তন করাইতে হইবে, তাহার অত্যন্ত বৃহত্ব বুঝাইবার জন্ তাহাকে অসমাপগ্ুভাবেই দেখাইতে হইবে। আমি কহিলাম, সেইটাই ত কঠিন। কথা শেষ করিয়া বুঝাইতে হইবে এখনে। শেষ হয় নাই, কথার মধ্যে সেই উদ্যত ভঙ্গীটি দেওয়া! বিষম ব্যাঁপার। আোতস্বিনী কহিল-__এই জন্যই সাহিত্যে বহুকাল ধরিয়া একটা তর্ক চলিয়া আসিতেছে যে, বলিবার বিষয়টা বেশি, না, বলিবার ভঙ্গীটা! বেশি। আমি এ কথাট! লইয়া অনেকবার ভাবিরাছি, ভাল বুঝিতে পারি না। আমার মনে হয় তর্কের খেয়াল অগ্ুসারে যখন যেটাকে প্রাধান্ত দেওয়! যায় তখন সেইটাই প্রধান হইয়া উঠে। ব্যোম মাথাঁট! কড়িকাঁঠের দিকে তুলিয়া বলিতে লাগিল--সাহিত্যে বিষয়টা শ্রেষ্ঠ, না, ভঙ্গীটা শ্রেষ্ঠ ইহা বিচার করিতে হইলে আমি দেখি কোন্টা অধিক রহস্তময়। বিষয়টা দেহ, ভঙ্গীটা জীবন। দেহটা বর্তম।নেই সমাপ্ত, জীবনটা একটা! চঞ্চল অসমাপ্তি তাহার সঙ্গে লাগিয়া আছে, তাহাকে বৃহৎ ভবিষ্যতের দিকে বহন করিয়! লইয়া চলিয়াছে, সে ' যতথানি দৃপ্তমান তাহ! অতিক্রম করিয়াও তাহার সহিত অনেকখানি আঁশাপুর্ণ নব নব সন্তাবনা জুড়িয়! রাখিয়াছে। যতটুকু বিষয়রূপে প্রকাশ করিলে ততট্কু জড় দেহ মাত্র, ততটুকু সীমাবদ্ধ, যতটুকু ভঙ্গীর দ্বারা তাহার মধ্যে সঞ্চার করিয়া দিলে তাহাই জীবন, তাহাতেই তাহার বৃদ্ধি- শক্তি তাহার চলৎশক্ভি সুচন। করিয়! দেয়। পঞ্চভূত । ১৮৩ পাস পাপা অপ পো্পিা সমীর কহিল_-সাহিত্যের খ্ষয়মাত্রই অতি পুরাতন, আকার গ্রহণ করিয়া সে নূতন হইয়। উঠে। শ্রোতশ্বিনী কহিল-_ আমার মনে হয় মানুষের পক্ষেও এ একই কথা। এক একজন মানুষ এমন একটি মনের আকৃতি লইয়! প্রকাশ পায় যে, তাহার দিকে চাহিয়া আমরা পুরাতন মনুষ্যত্বের যেন একটা নৃতন বিস্তার আবিষ্কার করি। দীপ্তি কহিল- মনের এবং চরিত্রের সেঈ আকৃতিটাই আমাদের ষ্টাইল। সেইটের দ্বারাই আমরা পরস্পরের নিকট প্রচলিত পরিচিত পরীক্ষিত হইতেছি। আমি এক একবার ভাবি আমার ষ্টাইলটা কি রকমের ! সমালোচকেরা যাহাকে প্রাপ্তল বলে তাহা নহে সমীর কহিল -- কিন্ত ওজস্বী বটে। তুমি যে আকৃতির কথ কহিলে, যেটা বিশেষরূপে আমাদের আপনার, আমিও তাহারই কথ! বলিতে- ছিলাম। চিন্তার সঙ্গে সঙ্গে চেহারাথান। যাহাতে বজায় থাকে আমি সেই অনুরোধ করিতেছিলাম। দীপ্তি ঈষৎ হাসিয়া কহিল--কিস্তু চেহারা সকলের সমান নহে, অতএব অন্থুরৌধ করিবার পুর্বে বিশেষ বিবেচন! করা আবশ্তক। কোন চেহারায় বা! প্রকাশ করে, কোন চেহারায় বা গোপন করে। হীরকের জ্যোতি হীরকের মধ্যে স্বতই প্রকাশমান, তাহার আলো বাহির করিবার জন্ত তাহার চেহারা ভাঙিয়া ফেলিতে হয় না, কিন্তু তৃণকে দগ্ধ করিয়া ফেলিলে তবেই তাঁহার আলোটুকু বাঁহির হয়। আমাদের মত ক্ষুদ্রপ্রাণীর মুখে এ বিলাপ শোভা পাঁয় না, যে, সাহিত্যে আমাদের চেহার! বয় থাকিতেছে ন1। কেহ কেহ আছে কেবল যাহার অস্তিত্ব আমাদের কাছে একটি নূতন শিক্ষা, নৃতন আনন্দ! সে যেমনটি তাহাকে তেমনি অবিকল রক্ষা করিতে পাঁরিলেই যথেষ্ট। কেহ বা আছে যাহাকে ছাড়াইয়া ফেলিয়া ভিতর হইতে শীস বাহির করিতে হয়। শীসটুকু যদি বাঁহির পাপা পিসি পাপ মি ৯ ০৮৩ সা স্পা পপাসপা্পিসিলা সপ সততা ১৮৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । পাদ পিসি বা পালা বাসস পাপা পাস প্লাস হয় তবে সেইজন্তই কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত, কারণ, তাহাই বা কয়জন লোকের আছে এব কয়জন বাহির করিয়! দিতে পারে ! সমীর হাস্তমুখে কহিল, মাপ করিবেন দীপ্তি, আমি যে তৃণ এমন দীনতা আমি কখনও স্বপ্নেও অন্থভৰ করি না। বরঞ্চ অনেক সময় ভিতরদিকে চাহিলে আপনাকে খনির হীরক বলিয়া অনুমান হয়। এখন কেবল চিনিয়৷ লইতে পারে এমন একটা জহরীর প্রত্যাশায় বসিয়া আছি। ক্রমে যত দিন যাইতেছে তত আমার বিশ্বাস হইতেছে, পৃথিবীতে জহরের তত অভাব নাই যত জহরীর। তরুণ বরসে সংসারে মান্য চোখে পড়িত না_মনে হইত যথার্থ মাহষগুলা উপন্থাস নাটক এবং মহাকাব্যেই আশ্রয় লইয়াছে, সংসারে কেবল একটিমাত্র অংশিষ্ট আছে। এখন দেখিতে পাই লোকালয়ে মানুষ ঢের আছে কিন্তু “ভোলা মন, ও ভোলা মন, মানুষ কেন চিন্লি না!” ভোলা মন, এই সংসারের মাঝখানে একবার প্রবেশ করিয়া দেখ্‌, এই মানবহৃদয়ের ভীড়ের মধ্যে ! সভান্থলে যাহারা কথা কাহতে পারে না, সেখানে তাহারা কথা কহিবে, লোকসমাজে যাহারা এক প্রান্তে উপেক্ষিত হয় সেখানে তাহাদের এক নৃতন গৌরব প্রকাশিত হইবে, পৃথিবীতে যাহাদিগকে অনাবশ্যক বোধ হয় সেখানে দেখিব তাহাদেরই সরল প্রেম, অবিশ্রাম সেবা, আত্মবিস্থৃত আত্মবিসঙ্জনের উপরে পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত হইয়া রহিয়াছে । ভীম্ম দ্রোগ ভীমাজ্জুন মহা- কাব্যের নায়ক, কিন্তু আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুরুক্ষেত্রের মধ্যে তাহাদের আত্মীর স্বগাতি মাছে, সেই আত্মীয়তা কোন্‌ নব দ্বৈপায়ন আবিষ্কার করিবে এবং প্রকাশ করিবে! আমি কহিলাম-- না করিলে কী এমন আসে যায়! মানুষ পরস্পরকে না যদি চিনিবে তবে পরস্পরকে এত ভালবাসে কি করিয়া ! একটি যুবক তাহার জন্মস্থান ও আত্মীয়বর্গ হইতে বহুদূরে ছু-দশ টাকা! বেতনে ঠিকা ুহুরীগিরি করিত। আমি তাহার প্রতু ছিলাম, কিন্তু প্রায় তাহার ্ী পঞ্চভৃত। ১৮৫ অন্তিত্বও অবগত ছিলাম না-_-সে এত সামান্ত লোক ছিল! একদিন রাত্রে সহসা তাহার ওলাউঠা হইল। আমার শয়নগৃহ হইতে শুনিতে পাইলাম সে “পিসিমা” পপিসিমা” করিয়া কাতরম্বরে কীদিতেছে। তখন সহসা তাহার গৌরবহীন ক্ষুদ্র জীবনটি আমার নিকট কতখানি বৃহৎ হইয়! দেখা দিল! দেই যে একটা অজ্ঞাত অখ্যাত মুর্খ নির্বোধ লোক বসিয়৷ বসিয়া ঈষৎ গ্রীবা হেলাইয়া কলম খাঁড়া করিয়া ধরিয়া এক মনে নকল করিয়! যাইত, তাহাকে তাহার পিনিমা আপন নিঃসন্তান বৈধব্যের সমস্ত সঞ্চিত্ স্নেহরাশি দিয়া মানুষ করিয়াছেন। সন্ধ্যাবেলার শ্রান্তদে:হ শূন্ত বাসায় ফিরিয়া যখন সে স্বহস্তে উনান ধরাইয়া পাক চড়াইত, যতক্ষণ অন্ন টগ্বগ্‌ করিয়া না ফুটিয়া উঠিত ততক্ষণ কম্পিত অগ্রিশিখার দিকে একটুষ্টে চাহিয়া সেকি সেই দুরকুটারবাসিনী শ্নেহশালনী কল্যাণময়ী পিসিমার কথ ভাবত না? এক দিন যে তাহার নকলে হুল হইল, ঠিকে মিল হইল না, তাহার উচ্চতন কর্মচারার নিকট সে লাঞ্চিত হইল, সে দিন কি সকালের চিঠিতে তাহার পিসিনার পড়ার সংবাদ পায় নাই? এই নগণ্য লোকটার প্রতিদিনের মঙ্গণ-বার্তার জন্ত একটি শ্নেহপরিপুর্ণ পবিত্র হৃদয়ে কি সামান্য উৎকণ্ঠা ছিল! এই দরিদ্র যুবকের প্রবাপবামের সহিত কি কম করুণ কাতরতা উদ্বেগ জড়িত হইয়া ছিল! সহসা সেই রাত্রে এই নির্বাণপ্রায় কষদ্র গ্রাণশিখা এক অমূল্য মহিমায় আমার নিকটে দীপ্যমান হইয়া উঠিল। সমস্ত রাত্রি জাগিয়া তাহার সেবা শুশীষ! করিলাম কিন্ত পিসিমার ধনকে পিসিমার নিকট ফিরাইয়। দিতে পারিলামনা_ আমার সেই ঠিকা মুহুরির মৃত্যু হইল। ভীম্ম দ্রোণ ভীমাজ্জুন খুব মহৎ তথাপি এই লোকটিরও মূল্য অল্প নহে। তাহার মূল্য কোন কবি অনুমান করে নাই, কোন পাঠক স্বীকার করে নাই, তাই বলিয়া সে মূল্য পৃথিবীতে অনাবিদ্কৃত ছিল না -একাটি জীবন আপনাকে তাহার জন্ত একান্ত উৎসর্গ করিয়াছিল- কিন্তু খোরাক-পোষাঁকসমেত ১৮৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । সিম্পল পাস পাস পা লৌকটার বেতন ছিল আট টাকা, তাহাঁও বারোমাঁস নহে। মহত্ব আপনার জ্যোতিতে আপনি প্রকাশিত হইয়া উঠে আর আমাদের মত দীপ্তিহীন ছোট ছোট লোকদিগকে বাহিরের প্রেমের আলোকে প্রকাশ করিতে হয় ;_-পিসিমার ভালবাস! দিয়া দেখিলে আমরা সহ] দীপ্যমান হইয়। উঠি। যেখানে অন্ধকারে কাহাকেও দেখা যাইতেছিল না, সেখানে প্রেমের আলোক ফেলিলে সহস! দেখ৷ যায় মানুষে পরিপূর্ণ োতঙ্বিনী দয়ান্নিদ্ধ মুখে কহিল__তোমাঁর এ বিদেশী যুহুরির কথা তোমার কাছে পূর্বে শুনিয়াছি। জানি না, উহার কথা শুনিয়া কেন আমাদের হিন্দুস্থানী বেহারা নীহরকে মনে পড়ে। সম্প্রতি ছুটি শিশু- সন্তান রাখিয়া তাহার স্ত্রী মরিয়া! গিয়াছে । এখন সে কাজ কর্ম করে, ছুপরবেল৷ বসিয়া পাখা টানে, কিন্তু এমন শুষ্ষ শীর্ণ ভগ্গ লক্ষমীছাড়ার মত হইয়া গেছে ! তাশাকে ঘখনই দেখি কষ্ট হয়__কিন্তু সে কষ্ট যেন ইহার একলার জন্য নহে__আমি ঠিক বুঝাইতে পারি না, কিন্ত মনে হয় যেন সমস্ত মানবের জন্য একটা! বেদন! অনুভূত হইতে থাকে । আমি কহিলাম--তাঁহার কারণ, সমস্ত মানুষই ভালবাসে এবং বিরহ বিচ্ছেদ মৃত্যুর দ্বারা পীড়িত ও ভীত। তোমার এ পাখাওয়ালা বিষগমুখে ভৃত্যের আনন্দহাঁরা সমস্ত পৃথিবীবাসী মানুষের বিষাদ অস্কিত হইয়! রহিয়াছে। আোতন্বিনী কহিল-_কেবল তাহাই নয়। মনে হয়, পৃথিবীতে যত ভুঃখ তত দয়! কোথায় আছে? কত দুঃখ আছে যেখানে মানুষের *সাত্বন1! কোনকালে প্রবেশও করে না, অথচ কত জারগ! আছে যেখানে ভালবাসার অনীবশ্যক অতিবৃষ্টি হইয়া যায়। যখন দেখি আমার এ বেহাঁরা ধৈর্য্যসহকাঁরে মুকভাবে পাখা টানিয়! যাইতেছে, ছেলে ছুটো উঠানে গড়াইতেছে, পড়িয়।৷ গিয়া! চীৎকারপূর্ব্বক কীদিরা উঠিতেছে, বাপ মুখ ফিরাইয়। কারণ জানিবার চেষ্টা করিতেছে, পাখ৷ ছাড়িয়া ১৮৭ উঠিয়া যাইতে পাঁরিতেছে না) জীবনে আনন্দ অন্ন অথচ পেটের জালা কম নহে, জীবনে বত বড় ছুর্ঘটনা ঘটুক ছুই মুষ্টি অন্নের জন্য নিয়মিত কাঁজ চালাইতেই হইবে, কোন ক্রটি হইলে কেহ মাপ করিবে নাঁ_ যখন ভাবিয়া দেখি এমন অসংখ্য লোক আছে যাহাদের ছুঃখ কষ্ট যাহাদের মনুষ্যত্ব আমাদের কাঁছে যেন অনাবিষ্কৃত ; যাহাঁদিগকে আমর! কেবল ব্যবহারে লাগাই এবং বেতন দিই, স্নেহ দিই না সান্ত্বনা দিই না, শ্রদ্ধা দিই না তখন বাস্তবিকই মনে হয় পৃথিবীর অনেকখানি যেন নিবিড় অন্ধকারে আবৃত, আমাদের দৃষ্টির একেবারে অগোচির। কিন্তু সেই অজ্ঞাতনাম! দীপ্তিহীন দেশের লোকেরাও ভালবাসে এবং ভালবাসার যোগ্য । আমার মনে হয়, যাভাদের মহিমা নাই, যাহারা একটা অস্বচ্ছ আবরণের মধ্যে বন্ধ হইয়া আপনাকে ভালরূপ বাক্ত করিতে পারে না, এমন কি, নিজেকেও ভান্রূপ চেনে না, মুকমুগ্ধভাবে সুখদুঃখবেদনা সহ করে, তাহাদিগকে মানবরধপে প্রকাশ করা, তাহাদিগকে আমাদের আত্মীকরূপে পরিচিত করাইয়া! দেওয়া, তাহাদের উপরে কাব্যের আলোক নিক্ষেপ করা আমাদের এখনকার কবিদের কর্তৃবা । ক্ষিতি কহিল-__পূর্বকালে এক সময়ে সকল বিষয়ে প্রবলতার আদর কিছু অধিক ছিলি । তখন মনুষ্যপমাজ অনেকটা অসহায় অরক্ষিত ছিল; যে প্রতিভাশালী, যে ক্ষমতাশালী দেইই তখনকার সমস্ত স্থান অধিকার করিয়া লইত। এখন সভ্যতার সুশাসনে সুশুঙ্খলায় বিদ্বিপদ দূর হইয়| গ্রবলতার অত্যধিক মর্ধ্যাদ। হাঁস হইয়া! গিয়াছে । এখন অকৃতি অক্ষমেরাও সংসারের খুব একটা! বৃহৎ অংশের শরিক হইয়া দাড়াই্ছে। এখনকার কাব্য উপন্তাসও ভীন্মন্দ্রোণকে ছাড়িয়া এই সমস্ত মুকজাতির ভাষা এই সমস্ত ভন্মাচ্ছন্ন অঙ্গারের মালোৌক প্রকাশ করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছে। সমীর কহিল, নবোদিত সাহিত্যস্থর্য্যের আলোক প্রথমে অত্যুচ্চ ১৮৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । পিপিপি পর্কবতশিখরের উপরেই পতিত হইয়াছিল, এখন ক্রমে নিম্ববন্তী উপত্যকার মধ্যে প্রসারিত হইয়া ক্ষুদ্র দরিদ্র কুটীরগুলিকেও প্রকাঁশমান করিয়া তুলিতেছে। মন। এই বে মধ্যাহ্‌ কালে নদীর ধারে পাড়াায়ের একটি একতালা! ঘরে বসিয়া আছি; টিকৃটিকি ঘরের কোণে টিকৃটিকৃ করিতেছে; দেয়ালে পাখা টানিবার ছিদ্রের মধ্যে এক ঘোড়া চড়,ই; পাখী বাসা তৈরি করিবার অভিপ্রায় বাহির হইতে কুটা সংগ্রহ করিয়া কিচমিচ, শবে মহাব্যস্তভাবে ক্রমাগত যাভীয়াত করিতেছে; নদীর মধ্যে নৌকা ভাসিয়া চলিয়াছে__ উচ্চতটের অন্তরালে নীলাকাশে তাহাদের মাস্বল এবং ক্দীত পালের কিয়দংশ দেখা যাইতেছে ; বাঁতাসট স্িগ্$, আঁকাঁশটি পরিষ্কার, পরপারের অতি দূরতীররেখা হইতে আর আমার বারান্দার সম্মুখবর্তী বেড়া দেওয়া ছোট বাগানটি পর্যন্ত উজ্জল রৌদ্রে একখণ্ড ছবির মত দেখাইতেছে ;--এইত বেশ আছি; মায়ের কোলের মধ্যে সন্তান যেমন একটি উত্ধাপ, একটি আরাম, একট স্নেহ পায়, তেমনি এই পুরাতন প্রকৃতির কোল ঘেসিয়া বসিয়া একটি জীবনপূর্ণ আদরপূর্ণ মৃদু উত্তাপ চতুদ্দিক হইতে আমার সর্বার্গে প্রবেশ করিতেছে । তবে এই ভাবে থাকিয়! গেলে ক্ষতি কি? কাগজ কলম লইয়া বসিবার জন্ত কে তোমাকে খোচাইতেছিল? কোন বিষয়ে তোমার কি মত, কিসে তোমার সম্মতি বা অসম্মতি সে কথা লইয়! হঠাৎ ধুমধাম করিয়া কোমর বাঁধিয়া বনিবার কি দরকার ছিল? ই দেখ, মাঠের মাঝথানে, কোথাও কিছু নাই, একটা ঘূর্ণা বাতাস খানিকটা ধুলা এবং শুকৃনে! পাতার 'ওড়ন! উড়াইয়! কেমন চমৎকার ভাবে ঘুরিয়। নাচিয়া গেল! পদাঙ্গুলি- মাত্রের উপর ভর করিয়া দীর্ঘ সরল হইয়া কেমন ভঙ্গীটি করিয়া মুহূর্ত" পঞ্চভৃত। ১৮৯ পাপী শিশাশিশীশীপীস্পিীসি কাল দীড়াইল, তাহার পর হুম্হাস্‌ করিয়া সমস্ত উড়াইয়া ছড়াইয়া দিয়া কোথায় চলিয়া! গেল তাহার ঠিকানা নাই। সম্বল ত ভারি ! গোটাকতক থড়কুটা ধুলাবালি সুবিধামত যাহা! হাতের কাছে আমে তাহাই লইয়! বেশ একটু ভাবভঙ্ী করিয়া কেমন একটি খেলা খেলিয়া লইল! এমনি করিয়া জনহীন মধ্যাহে সমস্ত মাঠময় নাচিয়৷ বেড়ায়। ন] আছে তাহার কোন উদ্দেগ্ত, না আছে তাহার কেহ দর্শক! না আঁছে তাহার মত, না আছে তাহার তত্ব ; না আছে সমাজ এবং ইতিহাস সম্বন্ধে অতি সমীচীন উপদ্দেশ! পৃথিবীতে যাহা কিছু সর্বাপেক্ষা অনাবশ্তক, সেই সমস্ত বিস্থৃত পরিত্যক্ত পদীর্ঘগুলির মধ্যে একটি উত্তপ্ত ফুৎকার দিয়া তাহা[দগকে মুহুর্তকালের জন্য জীবিত জাগ্রত সুন্দর করিয়া তোলে! অম্নি যদি অত্যন্ত সহজে এক নিঃশ্বীসে কতকগুল! যাহাতাহ৷ খাড়া করিয়া সুন্দর করিয়া ঘুরাইয়া৷ উড়াইয়৷ লাঠিম খেলাইয়া চলিয়া যাইতে পারিতাম। অননি অবলীলাক্রমে স্থজন করিতাম, অমনি ফুঁদিয় ভাঁড়িরা ফেলিতাম! চিন্তা নাই, চেষ্টা নাই, লক্ষ্য নাই; শুধু একটা নৃত্যের আনন্দ, শুধু একটা সৌন্দর্য্যের আবেগ, শুধু একটা জীবনের বূর্ণী! অবারিত প্রান্তর, অনাবৃত আকাশ, পরিব্যাপ্ত কুষ্যালোক,__-তাহারই মাঝথানে মুঠা মুঠা ধুলি লইয়া ইন্্রজাল নির্মাণ করা, থে কেবল ক্ষ্যাপা হৃদয়ের উদার উল্লাসে । এ হইলে ত বুঝা! যা়। কিন্তু বসিয়া বিয়া পাথরের উপর পাথর চাপাইয়া! গলৃঘন্ম হইয়া! কতকগুলা নিশ্চল মতামত উচ্চ করিয়া তোলা! তাহার মধ্যে না আছে গতি, না আছে প্রীতি, না আছে প্রাণ ! কেবল্প একট৷ কঠিন কীর্তি। তাহাকে কেহ বাই করিয়া দেখে, কেহ বাপ দিয়! ঠেলে--যোগ্যত। যেমনি থাক্‌ ! কিন্তু ইচ্ছা! করিলেও এ কাজে ক্ষান্ত হইতে পাঁরি কই! সভ্যতার: খাতিরে মানুষ মন নামক আপনার এক অংশকে অপরিমিত প্রশ্রয় পি ১৯৩, বিচিত্র প্রবন্ধ । সাপ সিসি নি সপ বাসি পাস্টিশিপাসাসটিসিসিস সি সপাস্পাসপাসপিসটসট পিসি সপ সপসমপর্সসমিসস দিয়া অত্যত্ত বাড়াই তুলিয়াছে, এখন, তুমি দি তাহাকে ছাড়িতে চাও সে তোমাকে ছাড়ে না। লিখিতে লিখিতে আমি বাহিরে চাহিয়! দেখিতেছি এ একটি লোক রৌদ্র নিবারণের জন্য মাথায় একটি চাদর চাপাইয়া দক্ষিণ হ্তে শাল- পাতের ঠোঙায় খানিকট! দহি লইয়া রন্ধনশাল! অভিমুখে চলিয়াছে। ওটি আমার ভূত্য, নাম, নারায়ণ সিং। দিব্য হষ্পুষ্ট, নিশ্চিত প্রফুল্প- চিন্ত। উপযুক্ত সারপ্রাপ্ত পর্য্যাপ্ত-পল্লবপূর্ণ মস্থণ চিক্ণ কাঠাল-গাছটির মত। এইরূপ মানুষ এই বহিঃপ্রককতির সহিত ঠিক মিশ খায়। প্রকৃতি এবং ইহার মাঝখানে বড় একটা বিচ্ছেদচিহ্ন নাই। এই জীবধাত্রী শ্তশীলিনী বৃহৎ বন্ুন্ধরার অল্গসংলগ্ন হইয়া এ লোকটি বেশ সহজে বাস করিতেছে, ইহার নিজের মধ্যে নিজের তিলমাত্র বিরোধ বিসম্বাদ নাই । এ গাছটি যেমন শিকড় হইতে পল্লবাগ্র পধ্যস্ত কেবল একটি আতাগাছ হইয়া উঠিয়াছে, তাহার আর কিছুর জন্য কোন মাথাব্যথা নাই, আমার সৃষ্টপুষ্ট নারায়ণ সিংটি তেমনি আস্ভোপাস্ত কেবলমাত্র একখানি আস্ত নারায়ণ সিং। কোন কৌতুকপ্রিয় শিশু-দেবতা যদি দুষ্টামি করিয়া এ আতা-গাছটির মাঝখানে কেবল একটি ফৌটা মন ফেলিয়া দেয় ! তবে এ সরস শ্যামল দাক-জীবনের মধ্যে কি এক বিষম উপদ্রব বাঁধিয়া যাঁয়! তবে চিন্তায় উহার চিকণ সবুজ পাতাগুলি ভূর্জপত্রের মত পাঁওুবর্ণ হইয়া যায়, এবং গুড়ি হইতে প্রশাখা পর্যন্ত বৃদ্ধের ললাঁটের মত কুঞ্চিত হইয়া আঁসে। তখন বসুস্তকালে আর কি অমন ছুই চারিদিনের মধ্যে সর্ধাঙ্গ কচিপাতায় পুলকিত হইয়া উঠে, বর্ধাশেষে & গুটি-অণকা গোল গোল গুচ্ছ গুচ্ছ ফলে এত্যেক শাখা ভরিয়া যায়। তখন সমস্ত দিন একপায়ের উপর দীড়াইয়া ধঁড়াইস্া ভাঁবিতে থাকে আমার কেবল কতকগুলা পাঁতা হইল কেন, পাখা হইল নাকেন? প্রাণপণে সিধ হইয়া এত উচু হইয়া ঈাড়াইয়া পঞ্চৃত। ১৯১, পে এস্পিস্পিসিসিপাসিপাসিলাশপািলসলাসিপাসিপাসিপ্পিিত তা এস পাপিসিপাস্িপ সি এ আছি, শুবু কেন যথেষ্ট পরিমাণে দেখিতে পাইতেছি না? এ দিগন্তের পরপারে কি আছে? এ আকাশের তারাগুলি যে গাছের শাখায় ফুটিয়া আছে দে গাছে কেমন করিয়৷ নাগাল পাইব? আমি কোথা হইতে আসিলাম, কোথায় যাইব, এ কথা যতক্ষণ না স্থির হইবে ততক্ষণ আমি পাতা ঝরাইয়া, ডাল শুকাইয়া, কাঠ হইয়া দাঁড়াইয়া ধ্যান করিতে থাকিব। আমি আছি অথব! আমি নাই, অথবা আমি আছিও বটে নাইও বটে, এ প্রশ্নের যতক্ষণ মীমাংসা না হয় ততক্ষণ আমার জীবনে কোন সুখ নাঁই। দীর্ঘ বর্ষার পর যে দিন প্রাতঃকালে প্রথম স্র্ধ্য ওঠে, সে দিন আমার মজ্জীর মধ্যে যে একটি পুলক সঞ্চার হয় সেটা আমি ঠিক কেমন করিয়া প্রকাশ করিব, এবং শীতাস্তে ফান্তনের মাঝামাবি যে দিন হঠাৎ সায়ংকালে একটা দক্ষিণের বাতাস উঠে, সে দিন ইচ্ছা করে__কি ইচ্ছা করে কে আমাকে বুঝাইয়া দিবে! এই সমস্ত কাণ্ড! গেল বেচারার ফুল ফোটানো, রসশস্তপুর্ণ আঁতাফল পাঁকানো। যাহা আছে তাহা অপেক্ষা বেশি হইবার চেষ্টা করিয়া, যে রকম আছে আর একরকম হইবার ইচ্ছ। করিয়া, না হয় এদিক, না হয় ওদিক। অবশেষে একদিন হঠাৎ অন্তর্বেদনায় গুড়ি হইতে অগ্রশাখা পথ্যন্ত বিদীর্ণ হইয়া বাহির হয়, একটা সাময়িক পত্রের প্রবন্ধ, একটা সমালোচনা, আরণ্যসমীজ সমন্ধে একটা অসাময়িক তত্বোপদেশ। তাহার মধ্যে নী থাকে সেই পল্পবমর্শার, না থাকে সেই ছায়া, না থাকে সর্বা্গব্যাপ্ত সরস সম্পূর্ণতা। যদি কোন প্রবল সয়তান সরীস্থপের মত লুকাইয়া মাটির নীচে প্রবেশু করিয়া, শত লক্ষ আকাঁ-বীকা শিকড়ের ভিতর দিয়া পৃথিবীর সমস্ত তরুলতা তৃণগুল্সের মধ্যে মনংসঞ্চার করিয়া দেয় তাহা হইলে পৃথিবীতে কোথায় জুড়াইবার স্বানথাকে! ভাগ্যে বাগানে আসিয়৷ পাখীর গানের মধ্যে কোন অর্থ পাওয়া যায় না এবং অক্ষরহীন সবুজ পত্রের পরিবর্তে ৫৯ পস্পিস্পিসিতিসিপসিপিপসপাসপাদিলা সাসপিস্টিিপাশিলাস্পিসিপক্পাসিলাসিপিস্পাস্পিসিবাদ সাসটিতা পালি ১৯২ বিচিত্র প্রবন্ধ । ক ২৮১ ০২৮৯ পপসিতপিসিপিসিপসপিসসএ১পসপসিপ টিপা শী পসিপসপসিত১ পাসপোর্ট পি পা পি পাটি পাপ সি পাপসপিপসসি্িাট সন প শাখায় শাখায় ও₹ হেতবণ মাসিকগর, সংবান্পর এবং বিজ্ঞাপন বালিতে দেখা যায় না! ভাগ্যে 'গাছেদের মধ্যে চিন্তাশীলতা নাই! ভাগ্যে ধুতুরাগাছ কামিনীগাছকে সমালোচনা করিয়া বলে না, তোমার ফুলের কোমলতা আছে, কিন্ত ওজস্বিতা নাই এবং কুলফল কাঠালকে বলে না, তুমি আপনাকে বড় মনে কর কিন্ত আমি তৌমা অপেক্ষা কুম্মাগুকে ঢের উচ্চ আসন দিই! কদলি বলেনা, আমি সর্বাপেক্ষা অল্পমূল্যে সর্বাপেক্ষা বৃহৎপত্র প্রচার করি, এবং কটু তাহার প্রতিযোগিতা করিয়া তদপেক্ষা সুলভ মুল্যে তদপেক্ষা বৃহতপত্রের আয়োজন করে না! পু তর্কতাড়িত চিন্তাতাপিত বক্ততাশ্রান্ত মানুষ উদার উন্মুক্ত আকাশের চিন্তা-রেখাহীন জ্যোতির্দয় প্রশত্ত ললাট দেখিয়া, অরণ্যের ভাষাহীন মন্দর ও তরঙ্গের অর্থহীন কলধ্বনি শুনিয়া, এই মনোবিহীন অগাধ প্রশান্ত প্রকৃতির মধ্যে অবগাহন করিয়া তবে কতকটা স্নিগ্ধ ও সংযত হইয়! আছে। এ একটুখানি মনঃস্ফলিঙ্গের দাহ নিবৃত্ত করিবার জন্য এই অনন্ত প্রসারিত অমনঃসমুদ্রের প্রশান্ত নীলাম্বরাশির আবশ্তক হইয়া পড়িয়াছে। আসল কথা পূর্বেই বলিয়াছি, আমাদের ভিতরকার সমস্ত সামগ্রস্ত নষ্ট করিয়। আমাদের মনটা অত্যন্ত বৃহৎ হইয়া পড়িয়াছে। তাহাকে কোথাও আর কুলাইয়! উঠিতেছে না! খাইবার, পরিবার, জীবনধারণ করিবার, স্থুখে স্বচ্ছন্দে থাকিবার পক্ষে যতখানি আবশ্তক, মনটা তাহার অপেক্ষা ঢের বেশি বড় হইয়া পড়িয়াছে। এইজন্থ, প্রয়োজনীয় সমস্ত কাঁজ সারিয়া ফেলিয়াও চতুর্দিকে অনেকখানি মন বাকি থাকে । কাজেই সে বিয়া বসিয়া ডায়ারি লেখে, তর্ক করে, সংবাদপত্রের সংবাদদাতা হয়, যাহাকে সহজে বৌঝা! যায় তাঁহাকে কঠিন করিয়৷ তুলে, যাহাকে এক- ভাবে বোঝ। উচিত তাহাকে আর একভাবে দীড় করায়, যাহা কোন কালে. পঞ্চভূত । ১৯৩ এপ সি নপস্টিসটিাসিল সি 5 ০ পপ আঙ্কল অপ্পো পো পাপ সস লাস্ট পপি সি লিস্ট পপসিতসিল ৯৫৯৩ ৯ পিস্পিসিপিসপাসপিসপাসসি তাপস কিছুতেই বোঝ! যায় না, অন্ঠ সমস্ত ফেলিয়৷ তাহা লইয়াই লাগিয়া থাকে, এমন কি, এ সকল অপেক্ষাও অনেক গুরুতর গহিত কাধ্য করে । কিন্ত আমার এ অনতিসভ্য নারায়ণ সিংহের মনটি উহার শরীরের মাপে; উহার আবশ্তকের গারে গায়ে ঠিক ফিট করিয়া লাগিয়া আছে। উহার মনটি উহার জীবনকে শীতাতপ, অসুখ অস্বাস্থ্য এবং লজ্জা হইতে রক্ষা করে কিন্তু বখন-তখন উনপঞ্চাশ বাদুবেগে চতুর্দিকে উড়ু উড়, করেনা । এক আধটা কোতামের ছিদ্র দিয়া বাহিরের চোরা-হাওয়া উহার মানস আবরণের ভিতরে প্রবেশ করিয়া তাহাকে যে কখনও একটু আধটু স্ফীত করিয়৷ তোলে না তাহা বলিতে পারি না, কিন্তু ততটুকু মনশ্চাঞ্চল্য তাহার জীবনের স্বাস্থ্যের পক্ষেই বিশেষ আবশ্যক । অথগতা । দীপ্তি কহিল, সত্য কথা বলতেছি আমার ত মনে হয় আজকাল প্রকৃতির স্তুব লইয়া তোমর1 সকলে কিছু বাড়াবাড়ি আরম্ত করিয়াছ। আমি কহিলাম, দেবি, আর কাহারো স্তব বুঝি তোমাদের গায়ে সহে না। দীপ্তি কহিল, যখন স্তব ছাড়া আর বেশী কিছু পাওয়া যায় ন৷ তখন ওটার অপব্যর় দেখিতে পারি না! সমীর অত্যন্ত বিনমমনোহর হান্তে গ্রীঝ আনমিত করিয়া কহিল, ভগবতি, প্রকৃতির স্তব এবং তোমাদের স্তবে বড় একটা প্রভেদ নাই") ইহা বোধ হয় লক্ষ্য করিয়া দেখিয়া থাকিবে, যাহারা প্রকৃতির স্তব গান রচন| করিয়! থাকে তাহারা তোমাদেরই মন্দিরের প্রধান পুজারী। দীর্তি অভিমানভরে কহিল, অর্থাৎ যাহার! জড়ের উপাসনা করে ভাহারাই আমাদের ভক্ত। ১৪৯৪ বিচিত্র প্রবন্ধ। পোস্ট িপসিস্শিস পাপা পপ সম্িসপসরস সমীর কছিল, এতবড় ভুলটা বুঝিলে কাজেই একটা স্থুদীর্ঘ কৈফিয়ত দিতে হয়। আমাদের ভূত-সভার বর্তমান সভাপতি শ্রদ্ধাম্পদ শ্রীযুক্ত তৃতনাঁথ বাবু তার ভায়ারিতে মন নামক একটা ছুরন্ত পদার্থের উপদ্রবের কথা বর্ণনা করিয়া যে একটি প্রবন্ধ লিখিয়াছেন, মে তোমর1 সকলেই পাঠ করিয়াছ। আমি তাহার নিচেই গুটিকতক কথ! লিখিয়! রাখিয়াছি, যদ্দি সভ্যগণ অনুমতি করেন তবে পাঠ করি-_ আমার মনের ভাবটা তাহাতে পরিষ্কার হইবে। ক্ষিতি করজোড়ে কহিল, দেখ ভাঁই সমীরণ, লেখক এবং পাঠকে যে সম্পর্ক সেইটেই শ্াভাবিক সম্পর্ক_তুমি ইচ্ছা! করিয়া লিখিলে আমি ইচ্ছা করিয়া পড়িলাম, কোন পক্ষে কিছু বলিবার রহিল না ! যেন থাপের সহিত তরবারী মিলিয়! গেল। কিন্তু তরবারি যদি অনিচ্ছুক অস্থিচর্্ের মধ্যে সেই প্রকার সুগভীর আত্মীরতা স্থাপনে প্রবৃত্ত হয় তবে সেটা তেমন বেশ ম্বাভাবিক এবং মনোহররূপে সম্পন্ন হয় না। লেখক এবং শ্রোতার সম্পর্কটাও সেইরূপ অন্বাভাবিক অসদৃশ। হে চত্ুরানন, পাপের যেমন শান্তিই বিধান কর যেন আরজন্মে ডাক্তারের ঘোড়া, মাতালের স্ত্রী এবং গ্রবন্ধলেখকের বন্ধু হইয়া জন্মগ্রহণ না করি! ব্যোম একট পরিহাস করিতে চেষ্টা করিল, কহিল, একে ত বন্ধু অর্থেই বন্ধন তাহার উপরে প্রবন্ধ-বন্ধন হইলে ফাসের উপর ফাস হয় গণ্ুদ্যোপরি বিক্ষোটকং। দীপ্তি কহিল, হাসিবার জন্য দুইটি বৎসর সময় প্রার্থনা করি) ইতি- যধ্যে পাঁণিনি, অমরকোধ এবং ধাতুপাঠ আয়ত্ত করিয়া! লইতে হইবে। গুনিয়। ব্যোম অত্যন্ত কৌতুক লাভ করিল। হাসিতে হাসিতে কহিল বড় চমৎকার বলিয়াছ ; আঁমার একট! গল্প মনে পড়িতেছে ;-- আোতম্বিনী কহিল, তোমর! সমীরের লেখাটা! আজ আর শুনিতে দিত না দেখিতেছি। সমীর, তুমি পড়, উহাদের কথায় কর্ণপাত করিও না! পঞ্চভৃত। ১৯৫ পোস্পাস্পিসসপাসসিসপিপ শোতম্বিনীর আদেশের বিরুদ্ধে কেহ আর আপত্তি করিল না। এমন কি, স্বয়ং ক্ষিতি শেল্ফের উপর হইতে ভায়ারির থাতাটি পাড়িয়া আনিল এবং নিতান্ত নিরীহ নিরুপায়ের মত সংযত হইয়া বসিয়। রছিল। সমীর পড়িতে লাগিল মানুষকে বাধ্য হইয়া পদে পদে মনের সাহায্য লইতে হয় এইজন্ ভিতরে ভিতরে আমরা সেটাকে দেখিতে পারি না। মন আমাদের অনেক উপকার করে কিন্তু তাহার স্বভাব এমনই যে, আমাদের সঙ্গে কিছুতেই সে সম্পূর্ণ মিলিয়া মিশিয়া থাকিতে পারে না। সর্ব্বনা থিটুথিট করে, পরামর্শ দেয়, উপদেশ দিতে আসে, সকল কাজেই হস্তক্ষেপ করে। সে ধেন একজন বাহিরের লোক ঘরের হুইয়! পড়িয়াছে __ভাঁহাকে ত্যাগ করাও কঠিন, তাহাকে ভালবাসা দুঃসাধ্য । সেযেন অনেকটা! বাঙালির দেশে ইংরাজের গবর্ণমেন্টের মত। আমাদের সরল দিশি রকমের, ভাব, আর তাহার জটিল বিদেশী রকমের আইন। উপকার করে কিচ্ আত্মীয় মনে করে না। সেও আমাদের বুঝিতে পারে না, আমরাও তাঁহাকে বুঝিতে পারি না । আমাদের যে- সকল স্বাভাবিক সহজ ক্ষমতা ছিল তাহার শিক্ষায় সে গুলি নষ্ট হইয়া গেছে এখন উঠিতে বসিতে তাহার সাঁহাধ্য ব্যতীত আর চলে না। ইংরাঁজের সহিত আমাদের মনের আরও কতকগুলি মিল। এতকাল পে আমাদের মধ্যে বান করিতেছে তবু সে বামনা হইল না, তবু নে সর্বদা উড়, উড, করে। যেন কোন সুযোগে একটা ফর্লো পাইলেই মহাসমুদ্রপারে তাহার জবাতূমিতে পাড়ি দিতে পারিলেই বাচে। সব চেয়ে আশ্চর্য সাদৃণ্ত এই যে, তুমি যতই তাহার কাছে নরম হইবে, যতই “যো ছছুর খোদাবনদ” বলিয়া হাত জোড় করিবে ততই তাহার প্রতাপ বাড়িয়া উঠিবে, আর তুমি যদি ফস্‌ করিয়! হাতের আন্তিন গুটাইয়া ঘুষি উ*চাইতে পার, থুষ্টান শাস্্ের অনুশাসন অগ্রাহ করিয়া চড়টার পরিবর্তে চাপড়টা প্রয়োগ করিতে পাঁর তবে সে জল হইয়! যাইবে। ১৯৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । পর পালাবার মনের উপর আমাদের বিদ্বেষ এতই গভীর যে, যে কাজে তাহার হাত কম দেখা যায় তাহাকেই আমরা সব চেয়ে অধিক প্রশংসা করি। নীতিগ্রন্থে হঠকারিতার নিন্দা আছে বটে কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তাহার প্রতি আমাদের আস্তরিক অনুরাগ দেখিতে পাই। যে ব্যক্তি অত্যন্ত বিবেচনা- পূর্বক অগ্রপশ্চাৎ্ ভাবিয়া অতি সতর্কভাবে কাজ করে, তাহাকে আমর! ভালবাসি না কিন্তু যে ব্যক্তি সব্বদা নিশ্চিন্ত, অম্লান বদনে বেফাঁস কথা বলিয়া বসে এবং অবলীলাক্রমে বেয়াড়। কাজ করিয়া ফেলে লোকে তাহাকে ভালবাসে । যে ব্যক্তি ভবিষ্যতের হিসাব করিয়া বড় সাবধানে অর্থসঞ্চয় করে, লোৌকে খণের আবশ্তক হইলে তাহার নিকট গমন করে এবং তাহাকে মনে মনে অপরাধী করে, আর, যে নির্বোধ নিজের ও পঠিবারের ভবিষ্যৎ শুভাশুভ গণন। মাত্র না করিয়া যাহা পায় তৎক্ষণাৎ মুক্তহস্তে ব্যয় করিয়া বসে, লোকে অগ্রসর হুইয়। তাহাকে খণদান করে এবং সকল সময় পরিশোধের প্রত্যাশা রাখে না। অনেক সময় অবি- বেচনা অর্থাৎ মনোৌবিহীনতাকেই আমরা উদারতা বলি এবং যে মনস্থী হিতাহিত জ্ঞানের অন্ুদেশক্রমে যুক্তির লগ্ন হাতে লইয় অত্যন্ত কঠিন ংকন্পের সহিত নিয়মের চুলচেরা! পথ ধরিয়া চলে তাহাকে লোকে হিসাবী, বিষরী, ফস্কীর্ণমন] প্রভৃতি অপবাদন্থচক কথ! বলিয়া! থাকে । মনটা যে আছে এইটুকু যে ভুলাইতে পারে তাহাকেই বলি মনোহর। মনের বোঝাটা যে অবস্থায় অনুভব করি না, সেই অবস্থাটাকে বলি আনন্দ। নেশ! করিয়া বরং পশুর মত হইয়া যাই, নিজের সর্বনাশ করি সেও স্বীকার তবু কিছু ক্ষণের জন্তে খানার মধ্যে পড়িয়াও সে উল্লাপ সম্বরণ করিতে পারি না । মন যদি যথার্থ আমাদের আত্মীয় হইত এবং আত্মীয়ের মত ব্যবহার করিত তবে কি এমন উপকারী লোকটার প্রতি এতটা দূর অকৃতজ্ঞতার উদয় হইত? বুদ্ধির অপেক্ষা প্রতিভাকে আমর! উচ্চাসন কেন দিই? বুদ্ধি গ্রতি- পালাবার পিপাসা পাপাসমপস্পস্পিসিরাসলাসলাস্ফিপীপসসিপিসিস্মিাস্পিিপাসিপাসপলািপা? পঞ্চভূত। ১৯৭ ৯ পে৯ পাপা লাস পাটি পা পাট পাস শ্পিপসপাসিপা অপর পাপা পাপা সপন পাঁছি পালার পালাল লালা ৬ লস পালি লে লাস বালি লা লাস দিন প্রতিমুহূর্তে আমাদের সহস্র কাজ করিয়া দিতেছে, সে না হইলে আমাদের জীবন রক্ষা করা দ্বঃসাঁধা হইত, আর প্রতিভা কালেভট্রে আমাদের কাজে আসে এবং অনেক সময় অকাজেও আদে। কিন্তু বুদ্ধিটা হইল মনের, তাহাকে পদক্ষেপ গণনা করিয়া চলিতে হয়, আঁর প্রতিভা মনের নিয়মীবলী রক্ষা না করিয়া হাওয়ার মত আসে, কাহারো আহ্বানও মানে না, নিষেধ? অগ্রাহ্থ করে। প্রকৃতির মধ্যে সেই মন নাই এইজন্য প্রকৃতি আমাদের কাছে এমন মনোহর । প্রকৃতিতে একটার ভিতরে আরএকটা নাই । আর্সোলার স্কন্ধে কাচপোক বনিয়া শুষিরা থাইতেছে না। মুত্তিকা হইতে আর এ জ্যোতিঃসিঞ্তি আকাশ পধ্যস্ত তাহার এই প্রকাণ্ড ঘরকন্নার মধ্যে একটা ভিন্নদেণী পরের ছেলে প্রবেশ লাভ করিয়া! দৌরাস্মা করিতেছে না । সে একাকী, অথগুস্পূর্ণ, নিশ্চিন্ত, নিরুদ্ধিগ্ন। তাহার অসীমনীল ললাটে বুদ্ধির রেখামাত্র নাই, কেবল প্রতিভার জ্যোতি চিরদীপ্যমান | যেমন অনায়াসে একটি সর্বাঙ্গসুন্দরী পুষ্পমঞ্জরী বিকশিত হইয়া উঠিতেছে তেমনি অবহেলে একটা দুর্দান্ত ঝড় আসিয়। স্তৃখন্বপ্লের মত সমস্ত ভাঙিয়া দিয়! চলিয়া যাইতেছে । সকলি যেন ইচ্ছায় হইতেছে, চেষ্টায় হইতেছে না। সে ইচ্ছা কখনও আদর করে, কখনও আঘাত করে। কখনে! প্রেযপী অগ্গরীর মত গান করে, কথন ক্ষুধিত রাঁক্ষপীর ন্যায় গর্জন করে। চিন্তাপীড়িত সংশয়াপন্ন মানুষের কাছে এই দ্বিধাশূন্ট অব্যবস্থিত ইচ্ছাঁ- শক্তির বড় একটা প্রচণ্ড আকর্ষণ আছে। রাজভক্তি প্রভৃভক্তি তাহার একটা নিদর্শন । যে রাজ! ইচ্ছা! করিলেই প্রাণ দিতে এবং প্রাণ লইতে পারে তাহার জন্য ধত লোক ইচ্ছা করিয়া প্রাণ দিয়াছে, বর্তমান ষুগের নিয্মমপাঁশবদ্ধ রাঁজার জন্ত এত লোক স্বেচ্ছাপূর্ববক আত্মবিসর্জনে উদ্ভত হয় না। পন দিলা লিপি লা পিএ সিরাপ ২. পাপা পা পাছি ৪৯ পাটি পাশ ঈপপাঠি এন বস লিল ১৯৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । সি পাপা পাবি পাস ৯ পা্িপীসপিস্িপাি লাসিপাসিপাসপাসিপাসিশাসিপাসিপিিাসটি পিস যাহারা মনুষ্যজাতির নেতা হইয়৷ জন্মিয়াছে তাহাদের মন দেখা যায় না। তাহারা কেন, কি ভাবিয়া, কি যুক্তি অনুসারে কি কাঁজ করিতেছে তৎক্ষণাৎ তাহা কিছুই বুঝা যায় না এবং মানুষ নিজের সংশয়-তিমিরাচ্ছন্গ ক্ষুদ্র গহ্বর হইতে বাহির হইয়৷ পতঙ্গের মত ঝাঁকে ঝাঁকে তাহাদের মহত্বশিখার মধ্যে আত্মঘাতী হইয়। ঝাঁপ দেয়। রমণীও প্রকৃতির মত। মন আসিয়া তাহাকে মাঝখান হইতে ছুই ভাগ করিয়া দেয় নাই। সে পুষ্পের নত আগাগোড়া একখানি । এই জন্য তাহার গতিবিধি আচার-ব্যবহার এমন সহজসম্পূর্ণ। এইঅন্ত দ্িধান্দোলিত পুরুষের পক্ষে রমণী “মরণং ফ্ুবং»। প্রকৃতির স্যায় রমণীরও কেবল ইচ্ছাশক্তি-_তাহার মধ্যে যুক্তিতর্ক বিচার আলোচনা কেন-কি-বৃত্ীস্ত নাই । কখনো সে চারিহস্তে অঙ্গ বিতরণ করে, কখনো! সে প্রলয়মৃত্তিতে সংহার করিতে উদ্যত হয়। ভক্তের করজোড়ে বলে, তুমি মহামারা, তুমি ইচ্ছাময়ী, তুমি প্রক্কতি, তুমি শক্তি। সমীর হাঁপ ছাঁড়িবার জন্য একটু থামিবামাত্র ক্ষিতি গম্ভীর মুখ করিয়! কহিল-_বাঃ চমৎকার! কিন্তু তোমার গা ছুঁইয়া বলিতেছি এক বণ যদি বুঝিয়া থাঁকি ! বোধ করি তুমি যাহাকে মন ও বুদ্ধি বলিতেছ প্ররু- তির মত আমার মধ্যেও সে জিনিষটা'র অভাব আছে কিন্তু তৎ্পরিবর্তে প্রতিভার জন্যও কাহারও নিকট হইতে প্রশংসা পাই নাই এবং আকর্ষণ- শক্তিও যে অধিক আছে তাহার কোন প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া যায় ন|। আোতম্বিনী চিন্তান্বিতভাবে কহিল, মন এবং বুদ্ধি শব্দটা যদি তুমি “একই অর্থে ব্যবহার কর আর যদ্দি বল আমরা তাহা। হইতে বঞ্চিত, তবে তোঁমীর সহিত মতের মিল হইল না। সমীর কহিল--আমি যে কথাটা বলিয়াছি তাহা রীতিমত তর্কের ষে'গ্য নহে । প্রথম বর্ষায় পল্মা! যে চরট! গড়িয়া! দিয়া গেল তাহা বাঁলি, তাহার উপরে লীঙল লইয়! পড়িয়া তাহীকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করিলে কোন পঞ্চৃত। ১৯৯ সি ফল পাওয়া যায় না) ক্রমে ক্রমে দুই তিন বর্ষায় স্তরে স্তরে যখন তাহার উপর মাটি পড়িবে তখন সে কর্ষণ সহিবে। আমিও তেমনি চলিতে চলিতে শ্রোতোবেগে একটা! কথাকে কেবল প্রথম ড় করাইলাম মাত্র। হয় ত দ্বিতীয় শোতে একেবারে ভাডিতেও পারে অথবা পলি পড়িয়া উর্করা হইতেও আটক নাই। যাহা হউক আসামীর সমস্ত কথাটা শুনিয়া তার পর বিচাঁর কর! হউক । মানুষের অন্তঃকরণের ছই অংশ আছে। একটা অচেতন, বৃহৎ গুপ্ত এবং নিশ্চেষ্ট, আর একটা সচেতন সক্রিয় চঞ্চল পরিবর্তনীল। যেমন মহাদেশ এবং সমুদ্র । সমুদ্র চঞ্চলভাঁবে যাহা কিছু সঞ্চয় করিতেছে ত্যাগ করিতেছে গোপনতলদেশে তাহাই দৃঢ় নিশ্চল আকারে উত্তরোত্তর রাশীকৃত হইর| উঠিতেছে । সেইরূপ আমাদের চেতনা প্রতিদিন যাহা কিছু আনিতেছে ফেলিতেছে সেই সমস্ত ত্রমে সংস্কার স্থৃতি অভ্যাস আকারে একটি বৃহৎ গোপন আধারে অচেতনভাবে সঞ্চিত হইয়| উতঠি- তেছে। তাহাই আমাদের জীবনের ও চরিত্রের স্থায়ী ভিত্তি। সম্পূর্ণ তলাইয়া তাহার সমস্ত স্তরপর্ষ্যার কেহ আবিষ্কার করিতে পারে নাই। উপর হইতে যতটা দৃশ্তমান হইয়া! উঠে, অথবা আকম্মিক ভূমিকম্পবেগে যে নিগৃঢ় অংশ উদ্ধে উৎক্ষিপ্ত হয় তাহাই আমরা দেখিতে পাই। এই মহাদেশেই শন্ পুষ্প ফল, সৌনার্ধ্য 'ও জীবন অতি সহজে উদ্ভিনন হইয়া উঠে। ইহা দৃশ্ঠতঃ স্থির ও নিক্রিয়, কিন্তু ইহার ভিতরে একটি অনীয়াসনৈপুণ্য একটি গোপন জীবনীশক্তি নিগুঢ়ুভাবে কাজ করিতেছে । সমুদ্র কেবল ফুলিতেছে এবং ছুলিতেছে, বাণিজ্যতরী ভাসাইতেছে এবং ডুবাইতেছে, অনেক আহরণ এবং সংহরণ করিতেছে, তাহার বলের সীম নাই, কিন্তু তাঁহার মধ্যে জীবনীশক্তি ও ধারণীশক্তি নাই, সে কিছুই জন্ম দিতে ও পালন করিতে পারে না! রূপকে যদি কাহারে! আপত্তি না থাকে তবে আমি বলি আমাদের ২০৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । পিপিপি পাস সা স্টপ াসস্মত পসসসসপাি পাস পোস্টাল এই চঞ্চল বহিরংশ পুরুষ, এবং এই বৃহৎ গোপন অচেতন অন্তরংশ নারী। এই স্থিতি এবং গতি সমাজে স্ত্রী ও পুরুষের মধ্যে ভাগ হইয়। গিয়াছে । সমাজের সমস্ত আহরণ, উপার্জন, জ্ঞান ও শিক্ষা স্ত্রীলোকের মধ্যে গিয়া নিশ্চল স্থিতি লাভ করিতেছে । এইজন্ঠ তাঁহার এমন সহজ বুদ্ধি সহজ শোভা অশিক্ষিত পটুতা । মন্ুষ্যসমাজে স্ত্রীলোক বহুকালের রচিত; এইজন্ত তাহার সংস্কীরগুলি এমন দৃঢ় ও পুরাতন, তাহার সকল কর্তব্য এমন চিরাভ্যন্ত সহজসাধ্যের মত হইয়া চলিতেছে ; পুরুষ উপ- স্থিত আবগ্তকের সন্ধানে সময়আোতে অনুক্ষণ পরিবর্তিত হইয়া চলিতেছে কিন্তু সেই সমুদয় চঞ্চল প্রাচীন পরিবর্তনের ইতিহীস স্ত্রীলোকের মধ্যে স্তরে স্তরে নিত্যভাবে সঞ্চিত হইতেছে। পুরষ আংশিক, বিচ্ছিন্ন, সামপ্রস্তবিহীন। আর স্ত্রীলোক এমন একটি সঙ্গীত যাহা সমে আসিয়া সুন্দর স্থগোলভাবে সম্পূর্ণ হইতেছে; তাহাতে উত্তরোত্তর যতই পদ সংযোগ ও নব নব তান যৌজনা কর না কেন, মেই সমটি আসিয়া সমস্তটিকে একটি স্থগোল সম্পূর্ণ গণ্তী দিয়া ঘিরিয়া লয়। মাঝখানে একটি স্থির কেন্ত্র অবলম্বন করিয়া আবর্ত আপনার পরিধিবিস্তার করে, সেই জন্ত হাতের কাছে যাহা আছে তাহ! সে এমন স্থুনিপুণ স্থন্দরভাবে টানিয়া আপনার করিয়া লইতে পারে। এই যে কেন্দ্রটি ইহা বুদ্ধি নহে, ইহা একটি সহজ আকর্ষণ-শক্তি। ইহা একটি এ্রক্যবিনু। মনঃপদার্থটি যেখানে আসিয়া উঁকি মারেন সেখানে এই সুন্দর এক্য শতধা বিক্ষিপ্ত হইয়া যায়। ব্যোম অধীরের মত হইয়! হঠাৎ আরম্ভ করিয়া দিল_-তুমি যাঁহাকে ধ্রক্য বলিতেছ আমি তাহাকে আত্ম বলি; তাহার ধর্মই 'এই, সে পীচট! বস্তকে আপনার চারিদিকে টানিয়া আনিয়া একটা গঠন দিয়া গড়িয়া তোলে; আর যাহাকে মন বলিতেছ সে পাঁচট। বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হইয়া পঞ্চভূত। ২৯১ আপনাকে এবং তাহাদিগকে ভাডিয়া ভাঙিয়া ফেলে । সেই জন্ত আত্ম- 'যোগের প্রধান সোপাঁন হইতেছে মনটাকে অবরুদ্ধ কর! । যোগের সকল তথ্য জানি না', কিন্তু শুন] যায় মোঁগবলে যোগীরা সৃষ্টি করিতে পারিতেন। প্রতিভার স্ষ্টিও সেইরূপ । কবিরা সহজ ক্ষমতী- বলে মনটাকে নিরস্ত করিয়৷ দিয়া অর্দী অচেতনভাবে যেন একটা আত্মার আকর্ষণে ভাব-রস-দৃশ্ট-বর্ণ ধরনি কেমন করিয়া সঞ্চিত করিয়া পুষ্রিত করিয়া জীবনে স্থগঠনে মণ্ডিত করিয়া খাড়া করিয়া তুলেন । বড় বড় লোকের! যে বড় বড় কাজ করেন সেও এই ভাবে! যেখান- কার যেটি সে যেন একটি দৈবশক্তি প্রভাবে আকৃষ্ট হইয়| রেখার রেখায় বর্ণে বর্ণে মিলিয়া বায়, একটি সম্পন্ন সুসম্পূর্ণ কার্যারূপে দ্াড়াইরা যাঁয়। প্রকৃতির সর্ধকনিষ্ঠজাত মন নামক দুরন্ত বালকটি বে একেবারে তিরস্কত বহিষ্কৃত হয় তাহা। নহে, কিন্ত সে তদপেক্ষা উচ্চতর মহত্বর প্রতিভার অমোঘ মায়ামন্ত্ববলে মুগ্ধের মত কাজ করিয়া যায়, মনে হয় সমস্তই যেন যাতে হইতেছে, যেন সমস্ত ঘটনা, যেন বাহ্‌ অবস্থাগুলিও যৌগবলে যথেচ্ছামত যথাস্থানে বিন্যন্ত হইয়া যাইতেছে । গারিবাল্ডি এমনি করিয়! ভাঙাচোরা! ইটালির নূতন করিয়া! প্রতিষ্ঠা: করেন, ওয়াশিংটন অরণাপর্বতবিক্ষিপ্ধ আমেরিকাকে আপনার চারিদিকে ট্রানিয়া আনিয়া একটি সাম্রাজ্যরূপে গড়িয়। দিয়া যান। এই সমস্ত কাধ্য এক একটি যোগনাধন। কবি যেমন কাব্য গঠন করেন, তানসেন যেমন তান লয় ছন্দে এক একটি গান স্থষ্টি করিতেন, রমণী তেমনি আপনার জীবনটি রচনা করিযন! তোলে। তেমনি অচেতনভাবে, তেমনি মায়ামন্ত্রবলে। পিতা পুত্র ভ্রাতা ভগ্মী অতিথি অভ্যাগতকে সুন্দর বন্ধনে বীধিয়া সে আপনার চারিদিকে গঠিত সজ্জিত করিয়া তোলে ;- বিচিত্র উপাদান লইয়। বড় স্থুনিপুণ হস্তে একখানি গৃহ নিম্মীণ করে; কেবল গৃহ কেন, রমণী যেখানে ২৪২ বিচিত্র গ্রবন্। লাখ. পাখপািপাসিপাসিপাসিপাসিপািপাস্টিসিত সপন্টিতিসিস্টিস্পপাপাসিলাসিপিস্পািপাসপশিসিপাস্াসিলাসিলাসিপাসিশাস্পিিপাসিশীসপসিসিপাসপিপশী পানি তা সিপাসিীি, যায় আপনার চারিরিককে একটি দোনধাসত্যমে বাঁধিয়া আনে । নিজের চলাফেরা বেশভূষ! কথা বার্তা আকার ইঙ্গিতকে একটি অনির্বচনীয় গঠন দীন করে। তাহাকে বলে শ্রী। ইহা ত বুদ্ধির কাজ নহে, অনির্দেহ্া গ্রতিভার কাজ, মনের শক্তি নহে, আত্মার অত্রান্ত নিগৃঢ় শক্তি। এই যে ঠিক স্ুরটি ঠিক জারগায় গিয়া লাগে, ঠিক কথাটি ঠিক জায়গায় আসিয়া বসে, ঠিক কাজটি ঠিক সময়ে নিষ্পন্ন হয়, ইহা একটি মহারহস্তময় নিখিল জগংকেন্দ্রভূমি হইতে স্বাভাবিক স্ষটিকধারার ন্যায় উচ্ছসিত উৎস । সেই কেন্ত্রভূমিটিকে অচেতন না বলিয়া অতিচেতন নাম দেওয়া উচিত। প্রকৃতিতে যাহা সৌন্দর্য্য, মহৎ ও গুণী লোকে তাহাই প্রতিভা, এবং নারীতে তাহাই শ্রী, তাহাই নারীত্ব। ইহা! কেবল পান্রভেদে ভিন্ন বিকাঁশ। অতঃপর ব্যোম সমীরের মুখের দিকে চাহিয়! কহিল; তার পরে? তোমার লেখাট। শেষ করিয়া ফেল। সমীর কহিল, আর আবশ্তক কি? আমি যাহা আরম্ভ করিয়াছি তুমি ত তাহা'র একপ্রকার উপসংহার করিয়া দিয়াছ। ক্ষিতি কহিল, কবিরাজ মহাশয় সুরু করিয়াছিলেন, ডাক্তার মহাশয় সাঙ্গ করিয়া গেলেন, এখন আমর! হরি হরি বলিয়া বিদায় হই। মন কি, বুদ্ধি কি, আত্মা কি, সৌন্দর্ধ্য কি এবং প্রতিভাই ব! কাহীকে বলে, এ সকল তত্ব কম্মিন্কীলে বুঝি নাই, কিন্তু বুঝিবার আশা ছিল, আজ সেটুকুও জলাঞ্চলি দিয়া গেলাম । “ পশমের গুটিতে জটা পাঁকা ইয়া গেলে যেমন নত মুখে সতর্ক অঙ্কুলিতে ধীরে ধীরে খুলিতে হয়, ক্রোতশ্থিনী চুপ করিয়া বসিয়।৷ যেন তেমনি ভাবে মনে মনে কথাগুলিকে বহ্যত্বে ছাড়াইতে লাগিল। দীন্তিও মৌনভাবে ছিল) সমীর তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল, কি াবিতেছ ? পঞ্চতৃত। ২৪৩ পাপা দীপ্তি কহিল, বাঙালীর মেয়েদের প্রতিভাবলে বাঙালীর ছেলেদের মত এমন অপরূপ স্থ্টি কি করিয়! হইল তাই ভাবিতেছি। আমি কহিলাম মাটির গুণে কল সময়ে শিব গড়িতে কৃতবার্য্য হওয়া যায় না। গন্ভ ও পদ্য । আমি বলিতেছিলাম--বাঁশির শবে, পুর্ণিমার জ্যোত্নীয়,_- -শ্রীঘক্ত ক্ষিতি আমার এই আকশ্মিক ভাবোচ্ছাসে হীস্তসম্বরণ করিতে ন! পারিয়া কহিলেন- ভ্রাতঃ, করিতেছ কি! এইবেল| সময় থাকিতে ক্ষান্ত হও। কবিতা ছন্দে শুনিতেই ভাল লাগে-_তাহাও সকল সময়ে নহে । কিন্তু সরল গঞ্ধের মধ্যে যদি তোমরা পাঁচজনে পড়িয়া কবিতা মিশাইতে থাক, তবে, তাহ! প্রতিদিনের ব্যবুহাৰের পক্ষে অযোগ্য হইয়া উঠে। বরং দুধে জল মিশাইলে চলে, কিন্তু জলে হুধ মিশাইলে তাহাতে প্রাত্যহিক শ্নান পান চলে না। কবিতার মধ্যে কিয়ৎপরিমাণে গগ্ মিশ্রিত করিলে আমাদের মত গগ্ঘজীবী লোকের পরিপাকের পক্ষে সহজ হয়-_কিস্তু গঞ্ভের মধ্যে কবিত্ব একেবারে অচল ।-- _বাদ্‌! মনের কথা আর নহে। আমার শর-প্রভাতের নবীন ভাবাগ্কুরটি প্রিয় বন্ধু ক্ষিতি তাহার তীক্ষ নিড়ানীর একটি খোঁচায় একে- বারে সমূলে উৎপাটিত করিয়া দিলেন। একটা! তর্কের কথাঁয় সহসা বিরুদ্ধ মত শুনিলে মানুষ তেমন অসহার হইয়া পড়ে না, কিন্তু ভাবের কথায় কেহ মাঝখানে ব্যাঁধাত করিলে বড়ই দুর্বল হইয়। পড়িতে হয়।, কারণ, ভাবের কথায় শ্রোতার সহান্নভৃতির প্রতিই একমাত্র নির্ভর। শ্রোতা, যদি বলিয়! উঠে, কি পাঁগ্লামি করিতেছ, তবে কোন যুক্তিশাস্ত্রে তাহার, কোন উত্তর খু'জিয়া পাওয়া যায় না। | ২৯৪ বিচিত্র প্রবন্ধ | শী পপাস লাসিালা পাস পামপািপাসিপ লস ল ৯৪ ৯ পাপা পপাসিপসিপাসি পিএস প্িপসপাসিপাসিপাসিপা্িপাসপিসিপসিতাছি পাত ৩৯ ৮৯ তই পরলাম পিল পপি উপল ৩৯০ এইজন্য ভাবের কথা পাঁড়িতে হইলে প্রাচীন গুগীরা শ্রোতাদের হাতে- পায়ে ধরিয়া কাজ আরম্ত করিতেন । বলিতেন, *সুধীগন মরালের মত শীর পরিত্যাগ করিয়! ক্ষীর গ্রহণ করেন। নিজের ক্ষমতা প্রীকার করিয়া সভাস্থ লোকের গুণগ্রাহিতাঁর প্রতি একান্ত নির্ভর প্রকাশ করি- তেন। কখনো বা ভবভূতির ন্যায় স্থুমহত দস্তের দ্বারা আরম্ত হইতেই সকলকে অভিভূত করিয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেন । এবং এত করিয়াও ঘরে ফিরিয়া আপনাকে ধিক্কার দিয়া বলিতেন, যে দেশে কাঁচ এবং মাঁণিকের এক দর, সে দেশকে নমস্কার। দেবতার কাছে প্রার্থন। করিতেন “হে চতুন্মুখ, পাপের ফল আর যেমনই দাঁও সহা করিতে প্রস্তত মাছি কিন্ত অরসিকের কাছে রুসর কথা বলা এ কপালে লিখিয়ো না, লিখিয়ে না, লিখিয়ে! না 1” বাস্তবিক, এমন শান্তি আর নাই। জগতে অরদসিক না থাকুক, এত বড় প্রার্থনা দেবতার কাছে করা যায় না, কাঁরণ তাহা হইলে জগতে জনসংখ্য। অত্যান্ত হাঁস হইয়া যাঁয়। অরসিকের দ্বারাই পৃথিবীর অধিকাংশ কার্য্য সম্পন্ন হয়, তাহারা জনসমাঁজের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়; তাহারা না থাকিলে সভা বন্ধ, কমিটি অচল, সংবাদপত্র নীরব, সমালোচনার কোটা একেবারে শৃন্ভ ; এজন্য, তাহাদের প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মান আছে। কিন্তু ঘানিযন্ত্রে শর্ষপ ফেলিলে অজত্রধারে তৈল বাহির হয় বলিয়া তাহার মধ্যে ফুল ফেলিয়া কেহ মধুর প্রত্যাশা করিতে পারে না--অতএব হে চতুন্মুখ, ঘানিতে চিরদিন সংসারে রক্ষা করিও, কিন্তু তাহার মধ্যে ফুল ফেলিয়ো না এবং গুণীজনের হৃৎপিগ নিক্ষেপ করিয়ে! না! শ্রীমতী শ্োতম্িনীর কোমল হৃদয় সর্বদাই আর্তের পক্ষে । তিনি আমার ছুরবস্থায় কিঞ্চিৎ কাতর হইয়া কহিলেন “কেন, গণ্ঠে পদ্যে এতই কি বিচ্ছেদ 1” আমি কহিলাম-_পদ্য অন্তঃপুর, গছ বহির্ভবন। উভয়ের ভিন্ন স্থান ৭০ পা্পিসটিলািনাস্পসপনিিলাসপাস্পিসটাস্পস্পিস্পিসিপাস্পা সাস্পাসপাসিস্পাসিস্পাস্পাস্পিন্পিসিপাস্পাসিপাস্পিস্পিসলাস্পাস্পসিত৯৯৮ কা । ২০৫ ৯৯ কাসিপাসিপিসিল সপ ৯ সিন নির্দিষ্ট আছে। অবলা বাহিরে বিচরণ চিনি তাহার র বিপন ঘটিবেই এমন কোন কথা নাই। কিন্তু যদি কোন রূঢুস্বভাব ব্যক্তি তাহাকে অপমান করে, তবে ক্রন্দন ছাঁড়া তাহার আর কোন অস্ত্র নাই। এইজন্ত অস্তঃপুর তাহার পক্ষে নিরাপদ দুর্গ। পদ্ধ কবিতার সেই অন্তঃপুর। ছন্দের প্রাচীরের মধ্যে সহসা কেহ তাহাকে আক্রমণ করে না। প্রত্যহের এবং প্রত্যেকের ভাষা হইতে স্বতন্ত্র করিয়৷ সে আপনার জন্ত একটি ছুরূহ অথচ সুন্দর সীমা! রচন! করিয়া রাখিয়াছে। আমার হৃদয়ের ভাবটিকে ঘি সেই সীমার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করিতে পারিতাম, তবে ক্ষিতি কেন, কোন ক্ষিতিপতির সাধ্য ছিল না তাহাকে সহসা আসিয়া পরিহাস করিয়া যার! ব্যোম গুড়গুড়ির নল মুখ হইতে নামাইয়া নিমীলিতনেত্রে কহিলেন -আমি এক্যবাদী। একা গঞ্চের দ্বারাই আমাদের সকল আবশ্যক সম্পন্ন হইতে পারিত, মাঝে হইতে পদ্য অদিয়া মানুষের মনোরাজ্যে একটা অনাবশ্তক বিচ্ছেদ আনয়ন করিয়াছে ; কবি নামক একটা স্বতন্ত- | জাতির স্থষ্টি করিয়াছে। সম্প্রাদায়বিশেষের হস্তে যথন সাধারণের সম্প্ডি অপিত হয়, তখন তাহার স্বার্থ হয় যাহাতে সেটা অন্টের অনায়ত্ত হইয়! উঠে। কবিরাও ভাবের চত্ুর্দিকে কঠিন বাধ! নিম্মাণ করিয়া কবিস্ব নামক একটা কৃত্রিম পদার্থ গড়িয়া তুলিয়াছে। কৌশল-বিমুগ্ধ জনসাধারণ বিশ্মর রাখিবার স্থান পার না। এমনি তাহাদের অভ্যাস বিকৃত হইয়া গিয়াছে যে ছন্দ ও মিল আসিয়া ক্রমাগত হাতুড়ি না পিটাইলে তাহাদের হৃদয়ের চৈতন্ত হয় না, স্বাভাবিক সরল ভাষা ত্যাগ করিয়া ভাবকে পাঁচরঙ। ছদ্মবেশ ধারণ করিতে হয়। ভাবের পক্ষে এমন হীনতা আনু কিছুই হইতে পারে না। গদ্টা না কি আধুনিক সৃষ্টি, সেইজনো, সে হঠাৎ-নবাবের মত সর্বদাই পেখম তুলিয়৷ নাচিয়া নাচিয়া বেড়ায়, আমি তাহাকে ছু'চক্ষে দেখিতে পারি ন! এই ৰলিয়া৷ ব্যোম পুনর্ধার গুড় গুড়ি মুখে দিয় টানিতে লাগিলেন । ২৪৬ বিচিত্র গ্রবন্ধ। পাপন শ্রীমতী দীন্তি ব্যোমের প্রতি অবজ্ঞাকটাক্ষপাত করিয়া কহিলেন-- বিজ্ঞানে প্রাকৃতিক নির্বাচন বলিয়া একটা তত্ব বাহির হইয়াছে । সেই প্রাকৃতিক নির্বাচনের নিয়ম কেবল জন্তদের মধ্যে নহে, মানুষের রচনার অধ্যেও খাটে । সেই প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রভাবেই মযূরীর কলাপের আবশ্তক হয় নাই, ময়ূরের গেখম ক্রমে প্রসারিত হইয়াছে। কবিতার পেখমও সেই প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফল, কবিদিগের ষড়যন্ত্র নহে। অসভ্য হইতে সভ্য এমন কোন দেশ আছে যেখানে কবিত্ব স্বভীবতই ছন্দের মধ্যে বিকশিত হইয়া উঠে নাই | শ্রীযুক্ত সমীর এতক্ষণ মৃহুহী স্তমুখে চুপ করিয়া বসিয়! শুনিতেছিলেন। দীপ্তি যখন আমাদের আলোচনায় যোগ দিলেন, তখন তাহার মাথায় একটা! ভাবের উদয় হইল। তিনি একটা স্থষ্টছাড়া কথার অবতারণ! করিলেন। তিনি বলিলেন, কৃত্রিমতাই মন্তৃষ্যের সর্ধপ্রধান গৌরব। মান্গুষ ছাঁড়া আর কাহারো কৃত্রিম হইবার অধিকার নাই। গাছকে আপনার পলব প্রস্তুত করিতে হয ন|, আকাশকে আপনার নীলিমা নির্মাণ করিতে হয় না, ময়ূরের পুচ্ছ প্রকৃতি স্বহস্তে চিত্রিত করিয়! দেন। কেবল মানুনকেই বিধাত! আপনার স্থজন-কার্য্যের আপ্রেন্টিন্‌ করিয়! দিছেন, তাহার প্রতি ছোটথাটে স্ষ্টির ভার দিয়াছেন। সেই কার্যে যে যত দক্ষত| দেখাইয়াছে, দে তত আদর পাইয়াছে। গদ্য গন অপেক্ষা অধিক কৃত্রিম বটে; তাহাতে মানুষের স্থষ্টি বেশী আছে; তাহাতে বেশী রং ফগাইতে হইয়াছে, বেণী যন্ত্র করিতে হইয়াছে । আমাদের মনের মধ্যে ষে বিশ্বকর্মা আছেন, যিনি আমাদের অস্থরের নিভৃত স্থজনকক্ষে বসিয়া নানা গঠন, নান বিস্তাস, নানা প্রপ্নাস, নান! প্রকাশ-চেষ্টায় সর্বদা নিযুক্ত আছেন, পণ্ঠে তীহারই নিপুণ হন্তের কারুকার্য্য অধিক আছে। সেই তাহার প্রধান গৌরব। অকৃত্রিম ভাষ। জলকল্লোলের, অকৃত্রিম ভাষা পল্লব- অর্ধবরের, কিন্তু মন যেখানে আছে সেখানে বহুধত্বরচিত কৃত্রিম ভাষা । পধভৃত। ৪? পি শশা শ্রোতশ্বিনী অবহিত ছাত্রীর মত সমীরের সমস্ত কথা গুনিলেন। তাহার সুন্দর নম্র মুখের উপর একট! যেন নূতন আলোক আসিয়া! পড়িল। অন্যদিন নিজের একটা মত বলিতে যেরূপ ইতস্তত; করিতেন, আজ সেরূপ না করিয়া একেবারে আরম্ত করিলেন, সমীরের কথায় আমার ননে একটা ভাবের উদয় হইয়াছে--আমি ঠিক পরিষার করিয়া বলিতে পারিব কি না জানি না। স্থ্টির যে অংশের সহিত আমাদের হৃদয়ের যোগ- অর্থাৎ, স্ষ্টির যে অংশ শুদ্ধমীত্র আমাদের মনে জ্ঞানসঞ্চার করে না, হৃদয়ে ভাবসঞ্চার করে, যেমন ফুলের সৌন্দর্য্য, পর্বতের মহত্ব,_ সেই অংশে কতই নৈপুণ্য খেলাইতে, কতই রঙ ফলাইতে, কত 'আয়োজন করিতে হইয়াছে; ফুলের প্রত্যেক পাপড়িটিকে কত যত স্থগোল স্থুডোল করিতে হইরাছে, তাহাকে বৃস্তের উপর কেমন সুন্দর বঙ্কিম ভঙ্গীতে দাড় করাইতে হইয়াছে, পর্বতের মাথায় চিরতুষারমুকুট পরাইয়া তাহাকে নীলাকাশের মধ্যে কেমন মহিমার সহিত আসীন করা হইয়াছে, পশ্চিম অমুদ্রতীরের সৃর্ধ্যান্তপটের উপর কত রঙের কত ভুলি গড়িয়াছে। ভূতল হইতে নভস্তল পর্যন্ত কত সাজসজ্জা, কত রংচং, কত ভাবভঙ্গী, তবে আমাদের এই ক্ষুদ্র মান্থষের মন ভুলিয়াছে। ঈশ্বর তীহার রচনায় যেখানে প্রেম, সৌন্দর্য, মহত্ব প্রকাশ করিয়াছেন, সেখাঁনে তাহাকে গুণপন। করিতে হইয়াছে । সেখানে তীাহাকেও ধ্বনি এবং ছন্দ, বর্ণ এবং গন্ধ বন্ুযত্বে বিস্তাস করিতে হইয়াছে। অরণ্যের মধ্যে যে ফুল ফুটাইয়াছেন, তাহাতে কত পাপড়ির অন্ধপ্রাস ব্যবহার করিয়াছেন এবং আকাঁশপটে একটিমাত্র জ্যোভিঃপাত করিতে তাঁহাকে যে কেমন সুনির্দিষ্ট সুংযত ছন্দ রচনা করিতে হইয়াছে _ বিজ্ঞান তাহার পদ ও অক্ষর গণনা করিতেছে । ভাব্প্রকাশ করিতে মীনুষকেও নানা নৈপুণ্য অবলম্বন করিতে হয়। শব্দের মধ্যে সঙ্গীত আনিতে হয়, সৌন্দর্য আনিতে হয়, তবে মনের কথ! মনের মধ্যে গিয়া ২৯৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । প্রবেশ করে। ইহাকে যদি কৃত্রিমতা বল, তবে সমস্ত বিশ্বরচনা ককত্রিম। এই বলিয়া আোতম্িনী আমার মুখের টিকে চাহিয়া যেন সাহাষা প্রার্থনা করিল-_তাহার চোখের ভাবট! এই, আমি কি কতক গুলা বকিয়! গেলাম তাহার ঠিক নাই, তুমি প্রটেকে যদি পার একটু পরিফার করিয়া বল না| এমন সময় ব্যোম হঠাৎ বলিয়া উঠিল, সমস্ত বিশ্বরচনা যে কৃত্রিম এমন মতও আছে। আ্োতস্থবিনী যেটাকে ভাবের প্রকাশ বলিয়া বর্ণন! করিতেছেন, অর্থাৎ দৃপ্ত, শব, গন্ধ ইত্যাদি, সেটা! যে মায়ামাত্র, অর্থাৎ, আমাদের মনের কৃত্রিম রচনা একথ। অপ্রমাণ করা বড় কঠিন। ক্ষিতি মহা বিরক্ত হইয়া উঠিয়। কহিলেন - তোমরা সকলে মিলিয়া, ধান ভানিতে শিবের গান তুলিয়াছ। কথাটা ছিল এই, ভাব প্রকাশের জন্ত পণ্ভের কোন আবন্তক আছে কিনা। তোমরা তাহা! হইতে একেবারে সমুদ্র পার হইয়া স্থষ্টিত্ব, লয়তত্ব, মায়াবাদ প্রভৃতি চোরা- বালির মধ্যে গিয়! উত্তীর্ণ হইয়াছ। আমার বিশ্বাস, ভাবপ্রকাশের জন্ ছন্দের স্থ্টি হয় নাই। ছোট ছেলেরা যেমন ছড়া ভালবাসে, তাহার : ভাবমাধুধ্যের জন্ত নহে _কেবল তাহার ছন্দোবদ্ধ ধ্বনির জন্য, তেমনি অসভ্য অবস্থার অর্থহীন কথার ঝঙ্কারমাত্রই কানে ভাল লাগিত। এই. জন্য অর্থহীন ছড়াই মানুষের সর্বপ্রথম :কবিত্ব। মানুষের এবং জাতির বয়স ক্রমে ষত বাড়িতে থাকে, ততই ছন্দের সঙ্গে অর্থ সংযোগ না করিলে তাহার সম্পূর্ণ তৃপ্তি হয় না। কিন্তু বয়ঃগ্রাপ্ত হইলেও অনেক সময়ে মাঁন্ধষের মধ্যে ছুই একটা গোপন ছায়াময স্থানে বালক-অংশ থাকিয়! যায়; ধ্বনিপ্রিয়তা, ছন্দপ্রিয়তা সেই গুপ্ত বালকের স্বভাব। আমাদের বয়ঃপ্রাপ্ত অংশ অর্থ চাহে, ভাব চাহে; আমাদের অপরিণত অংশ ধ্বনি চাহে, ছন্দ চাহে। দীপ্তি গরীব বক্র করিয়া কহিলেন--ভাগ্যে আমাদের সমস্ত অংশ পরি ৷ ২৯৯ শিপপাপপশাদিশশী ও পীশীপিপা নিশা পিপিপি সপা্পসিপাসিপািপাস্পিিসিলা পা সিটি পিতা লি শা বাঃপ্রাপ্ত হইয়। ওঠে না 1 মানুষের নাবালক ক্ংশটিকে আমি অপ্তরের সহিত ধন্যবাদ দিই, তাহীরই কল্যাণে জগতে যা/ কিছু মিষটত্ব আছে। সমার কহিলেন-__যে ব্যক্তি একেবারে পুরোপুরি পাকিয়া গিয়াছে সেই জগতের জ্যাগী ছেলে । কোন রকমের খেলা, কোন রকমের ছেলেমান্ুধী তাহার পছন্দসই নহে। আমাদের আধুনিক হিন্দুজাতটা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে জ্যাঠা জাত, অত্যন্ত বেশীমাত্রায় পাঁকামি করিয়া থাকে, অথচ নানান্‌ বিষয়ে কাচা । জ্যাঠা ছেলের এবং জ্যাঠা জাতির উন্নতি হওয়া বড় দুরূহ, কারণ, তাহার মনের মধ্যে নম্রতা নাই । আমার এ কথাটা! প্রাইভেট । কোথাও যেন প্রকাশ না হ্য়। আজকাল লোকের মেজাজ ভাল নয়। আমি কহিলাম-যখন কলের জীতা চালাইয়া সহরের রাস্তা মেরামত হয়, তখন কাষ্ঠফলকে লেখা থাকে--কল চলিতেছে সাবধান! আমি ক্ষিতিকে পুর্বে হইতে সাবধান করিয়া দিতেছি আমি কল চালাইব। বাম্পষানকে তিনি দর্ববাপেক্ষা ভয় করেন কিন্তু সেই কল্পনা-বাম্পযোগে গতিবিধিই আমার সহজপাধ্য বোধ হয়। গগ্যপগ্ভের প্রসঙ্গে আমি আর একবার শিবের গান গাহিব। ইচ্ছা হয় শোন।-- গতির মধ্যে খুব একটা পরিমাণ-করা নিয়ম আছে-। পেওুলম নিয়মিত তালে ছুলিরা৷ থাকে । চলিবার সময় মানুষের পা! মাত্রা রক্ষা করিয়া উঠে পড়ে ) এবং সেই সঙ্গে তাহার সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সমান তাল ফেলিয়া গতির সামগ্রস্ত বিধান করিতে থাকে। সমুদ্র-তরঙ্গের মধ্যে একট! প্রকাণ্ড লয় আছে । এবং পৃথিবী এক মহাছন্দে সু্যকে প্রদক্ষিণ , করে__ | ব্যোমচন্ত্র অকল্মাৎ আমাকে কথার মাৰখানে থামাইয়া বলিতে আরম্ত করিলেন--স্থিতিই যথার্থ স্বাধীন, সে আপনার অটল গাভীর বিরাজ করে-_কিন্ত গতিকে প্রতিপদে আপনাকে নিয়মে বাধিয় চলিতে ৷ ১৪ ২১৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । সপ ইলা ০৯ পানি পাস বাই এসিপসিপাসি পাপা পিসি সি পাচ তি উপ িপসি লাপাত্তা নী দিসি লাস পা পিপাসা পার রাস পাসপাসিলী লারা সাতাশ হয়। অথচ সাধারণের মধ্যে একটা ভ্রান্তপংস্কার আছে যে, গতিই স্বাধীনতার যথার্থ স্বরূপ, এবং স্থিতিই বন্ধন। তাহার কারণ, ইচ্ছাই মনের একমাত্র গতি এবং ইচ্ছা অন্ুদারে চলাঁকেই মুঢ় লোকে স্বাধীনতা বলে। কিন্তু আমাদের পগুতেরা জানিতেন, ইচ্ছাই আমাদের সকল গতির কারণ, সকল বন্ধনের মূল; এই জন্ত মুক্তি, অর্থাৎ চরমস্থিতি লাভ করিতে হইলে এ ইচ্ছাটাকে গোড়া-ঘে ষিয়া কাটিয়া ফেলিতে তাহারা বিধান দেন, দেহমনের সর্ব প্রকার গতিরৌধ করাই যোগসাধন । সমীর ব্যোমের পৃষ্ঠে হাত দিয়া সহাস্তে কহিলেন, একটা মানুষ যখন একট! প্রসঙ্গ উখ্থাপন করিয়াছে, তথন মাৰথানে তাহার গতিরোধ করার নাম গোলযোগসাধন। আমি কহিলাম, বৈজ্ঞানিক ক্ষিতির নিকট অবিদিত নাই যে, গতির সহিত গতির, এক কম্পনের সহিত অন্ত কম্পনের ভারী একটা কুটুম্বিত| আছে । সা সুরের তার বাঁজিয়া উঠিলে মা স্থরের তার কীপিয়৷ উঠে। আলোক-তরঙ্গ, উত্তাপ-তরঙ্গ, ধবনি-তরঙ্গ, স্াবু-তরঙ্গ, প্রভৃতি সকলপ্রকার তরঙ্গের মধ্যে এইরূপ একটা আত্মীয়তার বন্ধন আছে। আমাদের চেতনা ও একটা তরঙ্গিত কম্পিত অবস্থা । এইজন্য বিশ্বসংসারের বিচিত্র কম্পনের সহিত তাহার যোগ আছে। ধ্বনি আসিয়৷ তাহার স্নাযুদোলায় দোল দিয়! যায়, আলৌক-রশ্মি আসিয়। তাহার স্নাযুতত্ত্রীতে অলৌকিক অনলি আঘাত করে। তাহার চিরকম্পিত ম্বীযুজাল তাহাঁকে জগতের সমুদয় স্পন্দনের ছন্দে নানাহ্ুত্রে বীধিয়৷ জাগ্রত করিয়। রাখিয়াছে। ' স্বায়ের বৃত্তি, ইংরাজিতে যাহাকে ইমোশন্‌ বলে, তাহা আমাদের হৃদয়ের আবেগ, অর্থাৎ গতি; তাহার সহিতও অন্তান্ত বিশ্বকম্পনের একটা! মহা এক আছে। আলোকের সহিত, বর্ণের সহিত, ধ্বনির সহিত তাহার একটা ম্পন্দনের যোগ, একটা! সুরের মিল আছে। পঞ্চভৃত। ২১১ ২ ০ পািসিািপাি পালমিরা সিল দিসি পোপ লো সসপাসপসিত সপাসিপাসি পাস সলাত ৯০ পিসির এইজন্য সঙ্গীত এমন অব্যবহিতভাবে আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করিতে পারে উভয়ের মধ্যে মিলন হইতে অধিক বিলম্ব হয় না। ঝড়ে এবং সমুদ্রে যেমন মাতামাতি হয়, গাঁনে এবং প্রাণে তেমনি একটি নিবিড় সংঘর্ষ হইতে থাকে । কারণ সঙ্গীত আপনার কম্পন সঞ্চার করিয়া আমাদের সমস্ত অন্তরকে চঞ্চল করিয়া তোলে। একটা অনির্দেশ্ট আবেগে আমাদের প্রাণকে পূর্ব করিয়া দেয়। মন উদাস হইয়৷ যায়। অনেক কবি এই অপরূপ ভাবকে অনন্তের জন্য আঁকাজ্ষ। বলিয়া নাম দিয়! থাকেন। আমিও কখনো কখনে। এমনতর ভাব অনুভব করিয়াছি এবং এমনতর ভাষাও গুয়োগ করিয়া থাকিব। কেবল সঙ্গীত কেন, সন্ধ্যাকাশের নুর্ধ্যাস্তছটাও কতবার আমার অন্তরের মধ্যে অনন্ত বিশ্বজগতের হৃৎ- স্পন্দন সঞ্চারিত করিয়া দিয়াছে ; যে একটি অনির্বচনীয় বৃহৎ সঙ্গীত ধ্বনিত করিয়াছে, তাহার সহিত আমার প্রতিদিনের স্বথছুঃখের কোন ঘোগ নাই, তাহা বিশ্বে্বরের মন্দির প্রদক্ষিণ করিতে করিতে নিখিল চরাঁচটরের সামগান। কেবল সঙ্গীত এবং স্ৃ্ধ্যাস্ত কেন, যখন কোন €প্রম আমাদের সমস্ত অস্তিত্বকে বিচলিত করিয়া তোলে, তখন তাহাও আমাদিগকে সংসারের ক্ষুদ্র বন্ধন হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া অনন্তের সহিত যুক্ত করিয়! দেয়। তাহা একটা৷ বৃহৎ উপাসনার আকার কারণ করে, দেশকালের শিলামুখ বিদীর্ণ করিয়া উৎসের মত অনন্তের দিকে উৎদারিত হইতে থাকে। এইবূপে প্রবল স্পন্দনে আমাদিগকে বিশ্বস্পন্দনের সহিত যুক্ত করিয়া দেয় । বুহৎ সৈন্ত যেমন পরস্পরের নিকট হইতে 'ভাঁবের উন্মত্বত। | আকর্ষণ করিয়া লইয়া একপ্রাণ হইয়া উঠে, তেমনি বিশ্বের কম্পন সৌন্দর্যঘোগে যখন আমাদের হৃদয়ের মধ্যে সঞ্চারিত হয়, তখন আমরা সমস্ত জগতের সহিত একতালে পা! ফেলিতে থাকি, নিখিলের প্রত্যেক ২১৪, বিচি প্রবন্ধ। স্পাসপিসাসি সানা স্পস্ট সপন সিলাসিল ৯.পোসপিসসিপাসিপাসিপ সলিল পিসির সি পারি কম্পমান পরমাণুর তি একলে মিশিপ্না, অনিবার্ধা আবেগে অনন্তের দিকে ধাবিত হই। এই ভাবকে কবিরা কত ভাষায়. কত উপায়ে প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিয়াছেন এবং কত লোকে তাহা কিছুই বুঝিতে পারে নাই--মনে করিয়াছে উহা কবিদের কাব্যকুয়াশা মাত্র । কারণ, ভাষার ত হৃদয়ের সহিত প্রত্যক্ষ যোগ নাই, তাহাকে মস্তিষ্ক ভে করিয়া অগ্তরে প্রবেশ করিতে হয়। সে দূতমাত্র, হ্বদয়ের থাস্মহলে তাহার অধিকার নাই, আম্‌ দরবারে আমিয়া সে আপনার বার্তা জানাইয়া যায় মাত্র। তাহাকে বুঝিতে, অর্থ করিতে অনেকটা সময় যায়। কিন্তু সঙ্গীত একেবারে এক হঙ্গিতেই হৃদয়কে আলিঙ্গন করিয়া ধরে। এইজন্ত কবিরা ভাবার সন্গে সঙ্গে একটা সঙ্গীত নিযুক্ত করিয়া! দেন। সে আপন মার়াম্পর্শে হৃরয়ের দ্বার মুক্ত করির৷ দেয়। ছন্দে এবং ধ্বনিতে যখন হৃদয় স্বতই বিচলিত হইর। উঠে, তখন ভাষার কাধ্য অনেক সহজ হইয়া আসে। দুরে যখন বাশি বানিতেছে, পুষ্পকানন যখন চোখের সম্মুথে বিকশিত হইয়। উঠিরাছে, তখন প্রেমের কথার অর্থ কত সহজে বোর! যার । পৌন্দরধ্য বেমন মুহুর্তের মধো হ্বনরের সহিত ভাবের পরিচয় সাধন করিতে পারে এমন আর কেহ নয়। স্থর এবং তাল, ছন্দ এবং ধ্বনি, সঙ্গীতের দুই অংশ । গ্রীকরা “জ্যোতিষ্ষম গুলীর সঙ্গীত” বলিয়া একট! কথা বলিয়! গিয়াছেন, সেক্স পিয়রেও তাহার উল্লেখ আছে। তাহার কারণ পূর্বেই বলিয়াছি যে, একট! গতির সঙ্গে আর একটা গতির বড় নিকট-সম্বন্ধ । অনন্ত আকাশ জুড়িয়া ন্্্্াগ্রহতারা তালে তালে নৃত্য করিয়া চলিয়াছে। তাহার, বিশ্বর্যাপী মহা! সঙ্গীতটি যেন কানে শোন। যায় না, চোখে দেখা যায় । ছন্দ.সঙ্দীতের একটা রূপ । কবিতায় সেই ছন্দ এবং ধ্বনি ছুই মিলিত ভাবকে কম্পান্বিত এবং সজীব করিয়া! তোলে, বাহিরের ভাষাকেও হাদ- পঞ্চভৃত। ২১৩ যের ধন করিয়া দেয়। যদি কৃত্রিম কিছু হয় ত ভাষাই কৃত্রিম, সৌন্দর্য্য রুত্রিম নহে। ভাষা মানুষের, সৌন্দধ্য সমন্ত জগতের এবং জগতের স্ষ্টিকর্তার। শ্রীমতী শ্রোতস্বিনী আনন্দোজ্জলমুখে কহিলেন-_নাট্যাভিনয়ে আমা- দের হৃদয় বিচলিত করিবার অনেকগুলি উপকরণ একত্রে বর্তমান থাকে । সঙ্গীত, আলোক, দুশ্ঠপট, সুন্দর সাজসজ্জা সকলে মিলিয়া নানা দিক হইতে আমাদের চিত্রকে আঘাত করিয়া চঞ্চল করে, তাহার মধ্যে একটা মবিশাম ভাবসশ্রোত নানা মূর্তি ধারণ করিয়া নানা কার্ধ্যরূপে প্রবাঠিত হষ্টয়া চলে--শামাদের মনটা নাট্য প্রবাহের মধ্যে একেবারে নিরুপায় হইয়া আয্মবিপঙ্জন করে এবং দ্রতবেগে ভাসিয়া চলিয়া যায়। অভিনয়- স্থলে দেখা যায়, ভিন্ন ভিন্ন আর্টের মধ্যে কতটা সহযোগিতা আছে, দেখানে সঙ্গীত, সাহিতা, চিত্রবিদ্ঠা এবং নাট্যকলা এক উদ্দেশ্বনাধনের জন্ঠ সম্মিলিত হয়, বোধ হয় এমন আর কোথাও দেখা যায় না । কাবোর তাতৎপধ্্য | স্বোতস্বিনী আমাকে কহিলেন, কচ-দেবধানীসংবাদ সম্বন্ধে তুমি যে কবিতা লিখিয়াছ তাহ! তোমার মুখে শুনিতে ইচ্ছা করি। শুনিয়া আমি মনে মনে কিঞ্চিত গর্ব অনুভব করিলাম, কিন্তু দর্পহারী মধুস্ছদন তখন সজাগ ছিলেন তাই দীপ্তি অধীর হইয়া! বলিয়া উঠিলেন, তুমি রাগ করিয়ো না, সে কবিতাটার কোন তীৎপর্য্য কিন্বা উদ্দেশ্য আর্মি ত কিছুই বুঝি”ত পারিলাম না। ও লেখাটা ভাল হয় নাই। আমি চুপ করিয়৷ রহিলাম। মনে মনে কহিলাম, আর একটু বিনয়ের সহিত মত প্রকাশ করিলে সংসারের বিশেষ ক্ষতি অথবা! সত্যের বিশেষ অপলাপ হইত না, কারণ, লেখার দোষ থাকাও যেমন আশ্চর্য্য ২১৪ বিচিত্র প্রবন্ধ | সপ পাপা পাস লিপি পি পি ৩৯ ০৯ ০৯ পিপি পাপা তি পা পি সত পাশ লা নহে তেমনি পাঠকের কাব্যবোধশক্তির খর্বতাঁও নিতান্তই অসম্ভব বলিতে পারি না। মুখে বলিলাম, যদিও নিজের রচনা সম্বন্ধে লেখকের মনে অনেক সময়ে অসন্দিপ্ধ মত থাঁকে তথাপি তাহা যে ভ্রান্ত হইতে পারে ইতিহাসে এমন অনেক প্রমীণ আছে-_অপর পক্ষে সমালোচক সম্প্রদায়ও যে সম্পূর্ণ অন্রান্ত নহে ইতিহাসে সে প্রমাণেরও কিছুমাত্র অসার নাই । অতএব কেবল এইটুকু নিঃসংশয়ে বলা! যাইতে পারে যে, আমার এ লেখা ঠিক তোমার মনের মত হয় নাই; সে নিশ্চয় আমার দুর্ভাগ্য -_হয়ত তোমার দুর্ভাগ্যও হইতে পারে। দীপ্তি গম্ভীরমুথে অত্যান্ত সংক্ষেপে কহিলেন, তা+ হইবে !__বলিয়া একখানা বই টানিয়া লইয়া পড়িতে লাগিলেন। ইহার পরে জোতম্বিনী আমাকে সেই কবিত! পড়িরার জন্ত আর দ্বিতীয়বার অনুরোধ করিলেন না। বোম জানালার বাহিরের দিকে দৃষ্টিক্ষেপ করিয়া যেন শুর আঁকাশ- তলবর্ী কোন এক কাল্পনিক পুরুষকে সম্বোধন করিয়! কহিল, যদি তাঁৎপর্যের কথা! বল, তোমার এবারকাঁর কবিতার আঁমি একটা তীঁৎপর্য্য গ্রহণ করিয়াছি। ' ক্ষিতি কহিল, আগে বিষয়টা কি বল দেখি? কবিতাট! পড়! হয় নাই মে কথাটা কৰিবরের ভয়ে এতক্ষণ গোপন করিয়াছিলাম, এখন ফাঁদ করিতে হইল। ব্যোম কহিল, শুক্রাচার্য্যের নিকট হইতে সন্জীবনী বিদ্যা শিখিবার 'নিমিত্ত বৃহস্পতির পুত্র কচকে দেবতার! দৈত্যগুরুয় আশ্রমে প্রেরণ করেন। সেখানে কচ সহতবর্ষ নৃত্যগীতবান্তদ্বার! শুক্রতনয়! দেবযাঁনীর মনোরঞ্জন করিয়! সঞ্জীবনী বিগ্ভালাভ করিলেন । অবশেষে যখন বিদায়ের সময় উপস্থিত হইল তখন দেবযানী. তাহাকে প্রেম জানাইয়া আশ্রম ত্যাগ করিয়া যাইতে নিষেধ করিলেন । দেবযানীর প্রতি অন্তরের আসক্তি- গকতুত, | ২১৫ ৯ পাস্টিপাসি লস্ট? পাপা পাাসিএিপাসিল শিলা সত্বেও কচ চ নিষেধ, না মানিয় দেবলোকে গমন করিলেন। গল্পটুকু এই । মহাভারতের সহিত একটুকুখানি অনৈক্য আছে কিন্তু সে সামান্য । ক্ষিতি কিঞিং কাতর মুখে কহিল-_গন্পটি বারোহাত কীকুড়ের অপেক্ষা বড় হইবে না কিন্তু আশঙ্কা করিতেছি ইহা! হইতে তেরো হাত পরিমাণের তীৎপর্ধ্য বাহির হইয়া পড়িবে । বোম ক্ষিতির কথায় কর্ণপাঁত না করিয়া বলিয়া গেল--কথাটা দেহ এবং আত্মা লইয়া। শুনিয়া সকলেই সশঙ্ক হইয়া উঠিল। ক্ষিতি কহিল, আমি এইবেলা আমার দেহ এবং আত্ম! লইয়া! মানে মাঁনে বিদায় হইলান | সমীর ছুইহাতে তাভার জামাধরিয়া টানির! ব্দাইয়া কহিল, সঙ্কটের সময় আমাদিগকে একলা ফেলি যাঁও কোথায়? , বোম কহিল, জীব স্বর্গ হইতে এই সংসারাঁধ্মে আসিয়াছে | নে এখানকার সুখ দুঃখ বিপদ সম্পদ হইতে শিক্ষা ল!ভ করে। যতদিন ছাত্র অবস্থায় থাকে, ততদিন তাহাকে এই আশ্রমকন্তা দেহটার মন জোগাইয়া চলিতে হয়। মন যোগাইবার অপূর্ব বিগ্ভা সেজানে। দেহের ইন্দ্রিয়" বীণাঁয় সে এমন স্বর্গীয় সঙ্গীত বাজাইতে থাকে, যে, ধরাতলে সৌন্দর্যের নন্দনমরীচিকা। বিস্তারিত হইয়া যাঁয় এবং সমুদর শব গন্ধ স্পর্শ আপন জড়শক্তির যন্ত্রনিয়ম পরিহারপূর্ধক অপরূপ স্বর্গীয় বৃত্যে স্পন্দিত হইতে থাকে । বলিতে বলিতে স্বপ্নাবি্ট শৃন্দৃষ্টি বোম উৎফুল্ল হইয়া 'উঠিল*-- চৌকিতে সরল হইয়৷ উঠিয়া বসিয়া কহিল__ষদি এমনভাবে দেখ, তবে প্রত্যেক মানুষের মধ্যে একটা অনন্তকাঁলীন প্রেমাভিনয় দেখিতে পাইবে । জীব তাঁহার যুঢ় অবোধ শির্ভরপরারণ! সঙ্গিনীটিকে কেমন করিয়া পাগল করিতেছে দেখ। দেহের প্রত্যেক পরমাণুর মধ্যে এমন একটি আকাজ্জার ২৬ বি প্রবন্ধ। পর সস ২৫৯ ০৯ সপ ৯ উকি পিল এসপি নার করিয়া দিতেছে, দেহধর্শের বারা যে যে আকাঙ্ষার র পরিতৃপ্ত নাই। তাহার চক্ষে যে সৌনদ্যা আনিয়া দিতেছে দৃষ্টিপক্তির দারা তাহার সীমা পাওয়া যায় না টি সে বরিভি “জনম অবধি হম রূপ নেহারন্থু নন না তিরপিত ভেল )--তাহার কর্ণে যে সঙ্গীত আনিরা দিতেছে শ্রবণ- শক্তির দ্বারা তাহা আছ রি তে পারে না, তাই সে ব্যাকুল হইয়া বলি- তেছে,_“সোই মধুর বোল শ্রবণহি শুনলু শ্রুতিপথে পরশ না গেল!” আবার এই প্রাণ প্রদীপ্ত মুঢ় সঙ্গিনীটিও লতার নায় সহস্র শাখা প্রশাখা বিস্তার করিয়া প্রেমপ্রতপ্ত স্থকোৌমল আলিঙ্গনপাশে জীবকে আচ্ছন্ন প্রচ্ছন্ন করিয়া ধরে, অল্পে অল্পে তাহাকে মুগ্ধ করিয়া আনে, অশ্রাস্ত বন্ধে ছায়ার মত সঙ্গে থাকিয়া বিবিধ উপচারে তাহার সেবা করে, প্রবামকে যাহাতে প্রবাস জ্ঞান না হয় যাহাতে আতিথ্যের ত্রুটি না হইতে পারে সে জন্ত সর্বদাই সে তাহার চক্ষু কর্ণ হস্ত পদকে সতর্ক কারয়া রাখে । এত ভালবাপার পরে তবু একদিন জীব এই 1চরান্ুগত অনন্যাসক্তা দেহ- লতাকে ধুলিশায়িনী করিয়া দিয়া চলিয়া যায়! বলে, প্রিয়ে, তোমাকে আমি আত্মনির্বিশেষে ভালবাসি, তবু আমি কেবল একটি দীর্ঘনিঃশ্বাসমাত্র ফেলিয়া তোমাকে ত্যাগ করিয়! যাইব ! কায়। তখন তাহার চরণ জড়া- ইয়া বলে “বন্ধু, অবশেষে আজ বদি আমাকে ধুলিতলে ধুলিমুষ্টির মত ফেলিয়। দিয়া চলিরা! ধাইবে, তবে এতদিন তোমার প্রেমে কেন আমাকে এমন মহিমাশালিনী করিয়া তুলিয়াছিলে? হায়, আমি তোমার যোগ্য নই-_কিস্ত তুমি কেন আমার এই প্রাণ প্রদীপদীপ্ত নিভৃত সোনার মন্দিরে একন! রুহস্তান্ধকারনিশীথে অনন্ত সমুদ্র পার হইরা অভিসারে আপিয়াছিলে? আমার কোন্‌ গুণে তোমাকে মুগ্ধ করিয়াছিলাম 1” এই করুণ প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়া এই বিদেশী কোথায় চলিয়া যায় তাহা কেহ জানে না। সেই আজন্মমিলনবন্ধনের অবপান, সেই মাথুরযাত্রার বিদায়ের দিন, সেই কায়ার সহিত কায়াধিরাজের শেষ সম্ভাষণ ২৪৮ সলাত পালাল লি সপ পাস্পািলি ৯ পাসিলাত ০ দা সিপির চল ৯ ৮৯ পি পঞ্চ | ২১৭ ৯.৯ এ উল ল তর অতি লি 5 আপিল ৯ *পাস্িপাসত ৮ল পাস ৯৭০45 ৭55২৮ _ তাহার মত এমন ন শোচনীয় বিরহ ৃ্ত কোন্‌ প্রেমকাব্য বর্ণিত আছে। ক্ষিতির মুখভাব হইতে একটা আপগ্ন পরিহাসের আশঙ্কা করিয়া! ব্যোম কহিল-তোমরা ইহাকে প্রেম বলিয়া মনে কর না) মনে করিতেছ আমি কেবল রূপক অবলম্বনে কথা কহিতেছি। তাহা নহে। জগতে ইহাই সর্বপ্রথম প্রেম, এবং জীবনের সর্বপ্রথম প্রেম সর্বাপেক্ষা যেমন প্রবল হইয়া থাকে জগতের সর্বপ্রথম প্রেমণ্ড সেইরূপ সরল অথচ সেইরূপ প্রবল। এই আদি প্রেম এই দেহের ভালবাসা যখন সংসারে দেখা দিয়াছিল তখনও পৃথিবীতে জলে স্কুলে বিভ'গ হয় নাই-_ সে দিন কোন কবি উপস্থিত ছিল না, কোন এ্ঁতিভীসিক জন্মগ্রহণ করে নাই-কিস্ত সেই দিন এই জলময় পদ্কময় অপরিণত ধরাতলে প্রথম ঘোষিত হইল, যে, এ জগৎ যন্ত্রগত্মাত্র নহে) প্রেম নামক এক অনির্ব»নীয় আনন্দময় বেদনাময় ইচ্ছাশক্তি পক্ষের মধ্য হইতে পক্কজবন জাগ্রত করিয়া তুলিতেছেন-_এবং সেই পঙ্কজবনের উপরে আজ ভা্তর চক্ষে সৌনদর্যযবূপা লক্ষ্মী এবং ভাবরূপা সরস্বতীর অধিষ্ঠান হইয়াছে। ক্ষিতি কহিল- আমাদের প্রত্যেকের ভিতরে, যে, এমন একটা বুহৎ কাব্যকাণ্ড চলিতেছে শুনিয়া পুলকিত হইলাম-কিন্তু সরলা কাঁরাটির প্রতি চঞ্চলস্বভাব আত্মাটার ব্যবহার সন্তোষজনক নহে উহা স্বীকার করিতেই হইবে । আমি একান্ত মনে আশ! করি যেন আশার জীবাত্মা এরূপ চপলতা প্রকাশ না করিয়া! অন্ততঃ কিছু দীর্ঘকাল দেহ- দেবযানীর আশ্রমে স্থায়ীভাবে বাদ করে! তোমরাও দেই আশির্বাদ কর। | সমীর কহিল-ত্রাঁতঃ ব্যোম্‌, তোমার মুখে ত কখনও শান্ত্রবিরুদ্ কথা শুনি নাই। তুমি কেন আজ এমন খুষ্টানের মত কথ। কহিলে? জীবাত্মা স্বর্গ হইতে সংসারাশ্রমে প্রেরিত হইয়া! দেহের সঙ্গ লাভ করিয়! ২১৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । সপন পাস পি ০? শসিশসপাস্পিঈিলসিপিসিতিসিলত পিস তাস ১০8 সুখ দুঃখের মধ্য দিয়া পরিণতি প্রাপ্ত হইতেছে, এ সকল মত ত তোমার পূর্বমতের সহিত মিলিতেছে নাঁ। বোম কহিল--এ সকল কথায় মতের মিল করিবার চেষ্টা করিও না। এ সকল গৌড়াকাঁর কথা লইয়া আমি কোন মতের সহিতই বিবাদ করি না। জীবনযাত্রার ব্যবসায়ে প্রত্যেক জাতিই নিজরাঁজা-গ্রচলিত মুদ্রা লইয়া মূলধন সংগ্রহ করে-_কথাটা এই দেখিতে হইবে, বাবসা চলে কি না। জীব স্ুথছুঃখবিপ্দসম্পদের মধ্যে শিক্ষালাভ করিবার জন্য সংসার-শিক্ষাশালায় প্রেরিত হইয়াছে এই মতটিকে মূলধন করিয়া লইয়া জীবনযাত্র! স্চারুরূপে চলে, অতএব আমার মতে এ মুদ্রাটি মেকি নহে। আঁবার বখন প্রসঙ্গ ক্রমে অবসর উপস্থিত হইবে, তখন দেখায় দিব, যে, আমি যে ব্যাঙ্কনোটটি লইয়া জীবন-বাঁণিজ্যে প্রবৃত্ত হইয়াছি, বিশ্ববিধাতার ব্যাঙ্কে সে নোটও গ্রাহ্ হইয়া থাকে । ক্ষিতি করুণস্বরে কহিল--দোহাই ভাই, তোমার মুখে প্রেমের কথাই যথেষ্ট কঠিন বোধ হয়--অতঃপর বাঁণিজোর কথা যদি অবতারণ কর তবে আমাকেও এখাঁন হইতে অবতারণ করিতে হইবে আমি অত্যন্ত দুর্বল বোধ করিতেছি ! যদ্দি অবসর পাঁই তৰে আমিও একটা! তাৎপর্য্য শুনাইতে পারি। বোম চৌকিতে ঠেসান্‌ দিয়! বদিয়া জান্লার উপর ছুই পা তুলিয়া দিল। ক্ষিতি কহিল, আমি দেখিতেছি এভোলুযুশন থিয়রি অর্থাৎ অভি- ব্যক্তিবাদের মোট কথাটা এই কবিতার মধ্যে রৃহিয় গিয়াছে । সঞ্জীবনী ধবিচ্ভাটার অর্থ, বাচিয়া থাকিবার বিদ্া। সংসারে স্পষ্টই দেখা যাইতেছে একটা লোক সেই বিগ্ভাটা অহরহ অভ্যাস করিতেছে--সহম্র বৎসর কেন, লক্ষ সহস্র বৎসর ধরিয়া। কিন্তু যাহাকে অবলম্বন করিয়া সে সেই বিদ্া অভাঁস করিতেছে সেই প্রাণীবংশের প্রতি তাহার কেবল ক্ষণিক প্রেম দেখা যায়। যেই একটা পরিচ্ছেদ সমাপ্ত হইয়া যায় অমনি শাহ | ১১৯ পাস সি, মাসি পিস চা ৮০০ পি লা পাস ২ শাতািপািসিসিশিশিএিশ সতসিপাসিসিউপামিল সপ পা ৮৯৫৯ তত লিসা ও সিসি তািলাশিল সত সপিলাসসি খাতা তা পা নিষ্ঠুর প্রেমিক চঃ চঞ্চল ল অতিথি তাহাকে অকাতরে ধ্বংসের মুখে (ফেলিয়া দিয়! চলিয়া যাঁয়। পৃথিবীর স্তরে স্তরে এই নির্দয় বিদায়ের বিলাপগান প্রস্তরপটে অঙ্কিত রহিয়াছে ;- দীপ্তি ক্ষিতির কথা শেষ না হইতে হইতেই বিরক্ত হইয়া কহিল-_ তোমর! এমন করিয়া যদি তাৎপর্য্য বাহির করিতে থাক তাহা হইলে তাৎপর্যের সীমা থাঁকে না। কাষ্ঠকে দগ্ধ করিয়! দিয়া অগ্নির বিদায় গ্রহণ, গুটি কাটিয়া ফেলিয়! প্রজাপতির পলায়ন, ফুলকে বিশর্ণ করিয়া ফলের বহিরাগমন, বীজকে বিদীর্ণ করিয়া অস্কুরের উদগম, এমন রাশি রাশি তাৎপর্য পাকার করা যাইতে পারে। ব্যোম গন্তীরভাবে কহিতে লাগিল, ঠিক বটে। ও গুলা তাৎপর্ধয নহে, দৃষ্টান্ত মাত্র । উহাদের ভিতরকার আসল কথাটা এই» সংসার আমর অন্ততঃ ছুই পা ব্যবহার না করিরা চলিতে পারি না। বাম পদ যখন পশ্চাতে আবদ্ধ থাকে দক্ষিণপদ সন্তুখে অগ্রসর হইয়া যায়, আবার দক্ষিণ পন সম্মুখে আবদ্ধ হইলে পর বাম পদ আপন বন্ধন ছেদন করিয়া অগ্রে ধাবিত হয়। আমরা একবার করিয়| আপনাকে বাঁধি, আবার পরক্ষণেই স্ই বন্ধন ছেদন করি। আনাদিগকে ভাল বাদিতেও হইবে এবং সে ভালবাস। কাটিতেও হইবে ;-_সংসারের এই মহত্তম দুঃখ, এবং এই মহত দুঃখের মধ্য দিয়াই আমাদিগকে অগ্রপর হইতে হয়। সমাজ সম্বন্ধেও এ কথ! খাটে ;পু্ভন নিয়ম যখন কালক্রমে প্রাচীন প্রথারূপে আমাদিগকে একস্থানে আবদ্ধ করে তখন সমাজবিপ্রব আসিয়া তাহাকে উৎপাটনপূর্ববক আমাদিগকে মুক্তি দান করে। যে পা লি সে পা পরক্ষণে তুলিয়! লইতে হয় নতুবা চলা হয় না অতএব অগ্রসর হওয়ার মধ্যে পদে পদে বিচ্ছেদবেদনা-ইহা। বিধাতার বিধান । সমীর কহিল-_গন্পটার সর্বশেষে যে একটি অভিশাপ আছে তোমরা কেহ সেটার উল্লেথ কর নাই। কচ যখন বিদ্তা লাঁভ করিয়া দেবযানীর ২২০ বিচি এ খন। | শিস পানি সি কা লা সি সি পরাস্ত সস্তা পাস বি পপি কা ট্রি টি বিচি করি তর করেন তখন ন দেবানী তাহাকে অভিশাপ দিলেন, যে, তুমি যে বিদ্যা শিক্ষা করিলে সে বিষ্ভা অন্যকে শিক্ষা দিতে পারিবে কিন্ত নিজে ব্যবহার করিতে পারিবে না) আমি সেই অভিশাপ- সমেত একটা তাৎপর্যা বাহির করিয়াছি যদি ধের্ধ্য থাকে ত বলি। ক্ষিতি কহিল, ধৈর্য্য থাকিবে কি না পূর্বে হইতে বলতে পারি না। প্রতিজ্ঞা করিয়া বসিয়া শেষে প্রতিজ্ঞ! রক্ষা না হইতেও পারে। তুমিত আরম্ত করিয়া দাও শেষে যদি অবস্থা বুঝিয়া তোমার দয়ার সঞ্চার হয় খামিয়া গেলেই হইবে। সমীর কহিল__ভাঁল করিয়া জীবন ধারণ করিবার বিগ্ভাকে সঞ্জীবনী বিষ্ঠা বলা যাক। মনে করা যাক কোন কবি সেই বি্তা নিজে শিখিয়া অন্তাকে দান করিবার জন্ত জগতে আসিয়াছে । সে তাহার সহজ স্বর্গীয় ক্ষমতায় সংসারকে বিষুগ্ধ করিয়া সংসারের কাছ হইতে সেই বিদ্যা উদ্ধার করিয়া লইল। সেষে সংসারকে ভাল বাসিল না তাহা নহে কিন্তু সংসার যখন তাহাকে বলিল তুমি আমার বন্ধনে ধরা দাঁ9, সে কহিল, ধরা যদি দিই, তোমার আবর্তের মধ যদি আরুট হই তাহা হইলে এ সপ্লীবনী বিদ্ভা আমি শিখাইতে পারিব না; সংসারে সকলের মধো থাকিয়াও আপনাঁকে বিচ্ছিন্ন রাখিতে হইবে। তখন সংসার তাহাকে অভিশীপ দ্রিল, তুমি যে বিগ্কা আমার নিকট হইতে প্রাপ্ত হইয়াছ সে বিষ্তা অন্যকে দান করিতে পারিবে কিন্তু নিজে ব্যবহার করিতে পারিবে না।__সংসারের এই অভিশাপ থাকাতে প্রায়ই দেখিতে পাওয়া যায়, যে, গুরুর শিক্ষা ছাত্রের কাঁজে লাগিতেছে কিন্তু সংসারজ্ঞান নিজের জীবনে ব্যবহার করিতে তিনি বাঁলকের ন্যায় অপটু। তাহার কারণ, নিলিপ্তভীবে বাহির হইতে বিগ্তা শিখিলে বিদ্যাটা ভাল করিয়া পাওয়া যাইতে পারে, কিন্তু সর্বদা কাজের মধ্যে লিপ্ত হইয়া না থাঁকিলে তাহার প্রয়োগ শিক্ষা হয় না। সেই জন্য পুরাকালে ব্রাহ্মণ 2 1 টি ্ » পাশ নি্শাসিশা পারসন সি পা এ ৯ তাস পাস পাস সপ সস্তা সা ৯০৭ ৯ পাসিপপিশপাসলি স্পা পাল সপ) স্পা শপাস্পিিস্পর পিপাসা সিপীপতি পলো সিল সপ সমস্ত ৭ তলা ছিলেন মন্ত্রী, কিন্ত কত রাজ! তাহার মন্ত্রণা কাজে প্রয়োগ করিতেন। তোমরা যে সকল কথা তুলিয়াছিলে সে গুলা বড় বেশি সাধারণ কথা । মনে কর যদি বলা যায়, রামায়ণের তাৎপর্য এই যে, রাজার গৃহে জন্মিয়াও অনেকে ছুঃখ ভোগ করিয়া থাকে, অথবা শকুস্তলার তাৎপর্য এই যে, উপযুক্ত অবসরে স্ত্রী পুরুষের চিত্তে পরম্পরের প্রতি প্রেমের সঞ্চার হওয়া অসম্ভব নহে তবে সেটাকে একটা নৃতন শিক্ষা বা বিশেষ বার্তী বলা যায় না। ত্রোতস্বিনী কিঞিৎ ইতস্তত করিয়া কহিল--আমার ত মনে হয় সেই সকল সাধারণ কথাই কবিতার কথা। রাজগৃহে জন্মগ্রহণ করিয়াও সর্ব প্রকার সুখের সম্তাবন। সত্বেও আমৃত্যুকাল অন;ম ছুঃখ রাঁম ও সীতাকে সঙ্কট হইতে সঙ্কটানুরে ব্যাধের ন্যায় অনুনরণ করিরা ফিরিয়াছে ) সংসারের এই অত্যন্ত সম্ভবপর, মানবাদৃষ্টের এই অত্যন্ত পুরাতন ছুঃখ- কাহিনীতেই পাঠকের চিত্ত আকৃষ্ট এবং আদ্র হইয়াছে । শকুস্তলার প্রেমদৃগ্তের মধ্যে বাস্তবিকই কোন নুতন শিক্ষা বা বিশেষ বারা নাহ কেবল এই নিরতিশয় প্রাচীন এবং সাধারণ কথাটি আছে যে, শু অথবা অশুভ অবসরে প্রেম অলক্ষেতে অনিবাধ্যবেগে আদিরা দৃটবন্ধনে স্ত্রী পুরুষের হৃদয় এক করিয়! দেয়। এই অত্যন্ত সাধারণ কথা থাকাতেই সব্বসাধারণে উহার রসভোগ কর্রির। আসিতেছে । কেহ কেহ বলিতে পারেন দ্রৌপৰীর বস্রহরণের বিশেষ অর্থ এই যে, মুঠ্যু এই জীবজন্ত- তরুলতাতৃণাচ্ছাদ্িত বস্থমতীর বস্ত্র আকর্ষণ করিতেছে কিন্তু বিধাতার, আশীর্ধাদে কোনকালে তাহার বসনাঞ্চলের অন্ত হইতেছে না, চিরদিনই সে প্রাণময় সৌন্দধ্যময় নববস্ত্রে ভূষিত থাকিতেছে। কিন্তু সভাপর্কের যেখানে আমাদের হৃৎপিণ্ডের রক্ত তরঙ্গিত হইয়া উঠিয়াছিল এবং অবশেষে সঙ্কটাপন্ন ভক্তের প্রতি দেবতার কৃপায় দুই চক্ষু অশ্রজলে ২২২ বিচিত্র প্রবন্ধ ০ পাস পাসটিপিস্টপাসিপাসিপিসি সি পাটি তাছিপাসিাস্সি সিপাসসপিসিবাসিপািপিসিলাসি পাপন পাপা লোপ পাসপাপাসিশিাসিাসি পালা প্লাবিত হইয়াছিল সে কি এই নূতন এবং বিশেষ অর্থ গ্রহণ করিয়া? না, অত্যাচারপীড়িত রমণীর লজ্জা ও সেই লঙ্জীনিবারণ নামক অত্য্ত সাধারণ স্বাভাবিক এবং পুরাতন কথায় 1 কচদেব্যানীসংবাদেও মানব- হৃদয়ের এক অতি চিরন্তন এবং সাধারণ বিষাদকাহিনী বিবৃত আছে সেটাকে ধাহারা অকিঞ্চিংকর জ্ঞান করেন এবং বিশেষ তথৃকেই প্রাধান্য দেন তাহার! কাব্যরসের অধিকারী নহেন। সমীর হাসিয়া আমাকে সন্ধোধন করিয়া কহিলেন-শ্রীমতী শ্রোতশ্বিনী আমাদিগকে কাব্যরসের অধিকাঁরসীমা হইতে একেবারে নির্বাসিত করিয়! দিলেন এক্ষণে স্বয়ং কবি কি বিচার করেন একবার শুনা যাক্‌। স্রোতস্বিনী অত্যন্ত লজ্জিত ও অন্নৃতপ্ত হইয়! বারশ্বার এই অপবাদের গ্রতিবাদ করিলেন । আমি কহিলাম,-_-এই পর্য্যন্ত বলিতে পারি যখন কবিতাটা লিখিতে বসিয়াছিলাম তখন কোন অর্থ ই মাথায় ছিল না, তোমাদের কল্যাপে এখন দেখিতেছি লেখাটা বড় নিরর৫থক হয় নাই-_অর্থ অভিধানে কুলাইয়া উঠিতেছে না । কাব্যের একটা গুণ এই যে, কবির রচনাশক্তি পাঠকের রচনাশক্তি উদ্রেক করিয়! দেয়; তখন স্ব স্ব প্রকৃতিঅনুসারে কেহ ব! সৌন্দর্য্য, কেহব! নীতি, কেহবা তত্ব স্থজন করিতে থাকেন। এ যেন আতসবাজীতে আগুন ধরাইয়! দেওয়া__কাব্য সেই অগ্রিশিখা, পাঠকদের মন ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের আতসবাজি। আগুন ধরিবামাত্র কেহব! হাউইয়ের মত একেবারে আকাশে উড়িয়৷ যায়, কেহবা তুবড়ির মত উচ্ছ'সিত হইয়া উঠে, কেহবা বোমার মত আওয়াজ করিতে থাকে। তথাপি মোটের উপর শ্রীমতী আ্োতন্বিনীর সহিত আমার মতবিরোধ দেখিতেছি না। অনেকে বলেন, আঁঠিই ফলের প্রধান অংশ এবং বৈজ্ঞানিক যুক্তির ম্বারা তাহার প্রমাণ করাও যায়। কিন্তু তথাপি পঞ্চভূত। ২২৩ পাস সপাসটি পা ৮৯৩ পাপা পি পাস্পাসিপা পিসি সপ সপতিপরিপসপি সপ সপ সস পাস সপসপিসপসাসির ৯৫ সপািণ উপাসপাসপিসিপাসসপসি ৯স ৬৬৮১০ অনেক রসজ্ঞ রকি ফলের র শট ধাইয তাহার আবি ফেলিয়া দেন। তেমনি কোন কাব্যের মধ্যে দিবা কোন বিশেষ শিক্ষা থাকে তথাপি কাব্যরস্ঞ ব্যক্তি তাহার সম্পূর্ণ কাব্যাংশটুকু লইয়া শিক্ষাংশটুকু ফেলিয়া দিলে কেহ তাহাকে দোষ দিতে পারে না। কিন্তু বাহার! আগ্রহ সহকারে কেবল এ শিক্ষাংশটুকুই বাহির করিতে চাহেন আশীর্বাদ করি তাহারাও সফল হউন এবং স্থখে থাকুন। আনন্দ কাহাকেও বলপুর্ব্বক দেওয়া যায় না। কুস্ুমফুল হইতে কেহবা তাহার রং বাহির করে, কেহবা' তৈলের জন্য তাহার বীজ বাহির করে, কেহ বা মুগ্ধনেত্রে ভাহার শোভ৷ দেখে। কাব্য হইতে কেহবা ইতিহাস আকর্মণ করেন, কেহবা দর্শন উৎপাঁটন করেন, কেহবৰা নীতি, কেহব বিষয় জ্ঞান উদঘাটন করিয় থাকেন--আবার কেহবা কাব্য হইতে কাঁব্য ছাড়া আর কিছুই বাহির করিতে পারেন না-_যিনি যাহ! পাইলেন তাহাই লইয়া সন্তষ্টচিত্তে ঘরে ফিরিতে পারেন-_কাহারও সহিত বিরোধের আবশ্তক দেখি না-_বিরোধে ফলও নাই! | প্রাঞ্তলতা । আ্রোতস্বিনী কোন এক বিখ্যাত ইংরাজ কবির উল্লেখ করিয়া বলি- লেন, কে জানে, তাহার রচনা আমার কাছে ভাল লাগে না। দীপ্তি আরো প্রবলতরভাবে শ্রোতস্বিনীর মত সমর্থন করিলেন। সমীর কখন পারতপক্ষে মেয়েদের কোন কথার স্পষ্ট প্রতিবাদ করে না। তাই সে একটু হাগিয়া ইতস্তত করিয়া কহিল, কিন্তু অনেক বড়' নড় সমালোচিক তাহাকে খুব উচ্চ আসন দিয়া থাকেন। দীপ্থি কহিলেন, আগুন যে পোড়ায় তাহা ভাল করিয়া বুঝিবার জন্য কোন সমালোটচকের সাহাধ্য আবশ্ক করে না_তীহা। নিজের বাম হস্তের ২২৪ সিডি প্রধন্ধ | শগাপাসিপানিলাসিপসি পা পিপাসা সিলসিলা ৯৯৯৫৯ এসপানপস্পিসিপাসিশাি সত শপাশিনিসিলাসিপিপিস্টি পাস্তা শর শিস্টিপাপািতা সিপাস্িপান পাপ কড়ে আঙুলের ডগার দ্বারাও বোঝ! যায়-_ভাল 1 কবিতার ভাল বদি তেমনি অবহেলে না বুরিতে পারি তবে আমি তাহার সমালোচনা পড়া! আবগ্তক বোধ করি না। আগু'নর যে পোড়াইবার ক্ষমতা আছে সমীর তাহা জানিত, এই জন্ত সে চুপ করিয়া রহিল; কিন্তু ব্যোম বেচারার সে সকল বিষয়ে কোনরূপ কাগুজ্ঞান ছিল না এই জন্য সে উচ্চম্বরে আপন স্বগত-উক্তি আরম্ভ করিয়া দিল। নে বলিল-__মান্ুষের মন মানুষকে ছাড়াইয়। চলে, অনেক সময়ে তাহাকে নাগাল পাওয়া যায় না ১--- ক্ষিতি তাহাকে বাধা দিয়া কহিল-ত্রে হাধুগে হনুমানের শত যোজন লাম্গুল শীমান্‌ হস্থমানজীউকে ছাঁড়াইয়া বহুদূর গিরা পৌছিত ;_লাঙ্গু- লের ডগাটুকুতে যদি উদ্চুন বসিত তবে তাহা চুলকাইয়৷ আসিবার জন্ত ঘোড়ার ডাক বসাইতে হইত । মানুষের মন হস্থ্মানের লাঙ্ুলের অপেক্ষাও সুদীর্ঘ, সেই জন্ত এক এক সময়ে মন যেখানে গিয়া পৌছায়, সমালোচকের বোড়ার ডাক ব্যতীত সেখানে হাত পৌছে ন1]। ল্যাজের সঙ্গে মনের গ্রভেদ এই যে, মনটা আগে আগে চলে এবং ল্যাজটা পশ্চাতে পড়িয়! থাকে-এই জন্যই জগতে ল্যাজের এত লাঞ্চনা এবং মনের এত মাহাত্ম্য । ক্ষিতির কথা শেষ হইলে ব্যোম পুনশ্চ আরম্ত করিল-- বিজ্ঞানের উন্দেগ্ত জান, এবং দর্শনের উন্দেশ্ত বোঝ, কিন্তু কাগটি এমনি হইয়! দাড়াইয়।ছে যে, বিজ্ঞানটি জানা এবং দর্শনটি বোঝাই অন্ত সকল জান! এবং অন্ত কল বোঝার অপেক্ষা শক্ত হইয়া উঠিয়াছে ; ইহার জন্ত কত ইন্ুল, কত কেতাব, কত আয়োজন আবগ্তক হইয়াছে ! সাহিতোর উদ্দেন্ত আনন্দ দান করা, সেই আনন্দটি গ্রহণ করাও নিতান্ত সহজ নহে _ তাহার জন্যও বিবিধ প্রকার শিক্ষা এবং সাহায্যের প্রয়োজন । সেই জন্যই বলিতেছিলাম, দেখিতে দেখিতে মন এতটা অগ্রসর হইরা যায়, যে, পঞ্চভৃত। ২২৫ তাহার নাগাল পাইবার জন্য সিঁড়ি লাগাইতে হয়। যদি কেহ অভিমান করিয়া! বলেন, যাহ! বিন! শিক্ষায় না জানা যায় তাহা বিজ্ঞান নহে, যাহা বিনা চেষ্টায় না বোঝা যাঁয় তাহা দর্শন নহে এবং যাহা! বিনা সাধনায় আনন্দ দান না করে তাহা সাহিত্য নহে, তবে কেবল খনার বচন, প্রবাদ বাক্য এবং পাঁচালি অবলম্বন করিয়৷ তাহাকে অনেক পশ্চাতে পড়িয়। থাকিতে হইবে। সমীর কহিল, মানুষের হাতে সব | জিসিফই ক্রমশঃ £ কঠিন হইয়া উঠে। অনভ্যেরা যেমন-তেমন চীৎকার করিয়াই উত্তেজন। অনুভব করে, অথচ আমাদের এমনি গ্রহ, যে, বিশেষ অভ্যাসপাধ্য শিক্ষাসাধ্য সঙ্গীত ব্যতীত আমাদের নখ নাই; আরে! গ্রহ এই, যে, ভাল গান করাও তেমনি শিক্ষাসাধ্য। তাহার ফল হয় এই» যে, এক সময়ে যাহা সাধারণের ছিল, ক্রমেই তাহা সাধকের হইয়া আাদে। চীৎকার সকলেই করিতে পারে, এবং চীৎকার কবিয়া অসভ্য ধারণে সকলেই উদ্ভেজনান্খ অনুভব করে _-কিন্ত গান সকলে করিতে রা না এবং গানে সকলে সুখও পার না কাজেই, সমাজ যতই অগ্রসঞ্ক হব তন্তই আধিকারী এবং অনধিকারী, ট এবং অরসিক এই ছুই ই সমপরয্ের ্টি হইতে থাকে। ক্ষিতি কহিল, মানুষ বেচারাকে এঘনি করিয়া! গড়া হইয়াছে, যে, সে ধতই সহজ উপায় অবলম্বন করিতে চায় ততই ছুরূহতার মধ্যে জড়ী- ভূত হইয়া পড়ে। সে সহজে কাঁজ করিবার জন্য কল তৈরি করে কিন্তু কল জিনিষট। নিজে এক বিষম দুরূহ ব্যাপার ; সে সহজে সমস্ত প্রাৃত- জ্ঞানকে বিধিবদ্ধ করিবার জন্ত বিজ্ঞান স্থষ্টি করে কিন্তু সেই বিজ্ঞানটাই আরত্ত কর! কঠিন কাজ? সুবিচার করিবার সহজ প্রণালী বাহির করিতে গিয়া আইন বাহির হইল, শেষকালে আইনটা ভাল করিয়া বুঝিতেই দীর্ঘ" জীবী লোকের বারে! আনা জীবনদান কর! আবশ্তক হইয়া পড়ে ) সহজে আদান-প্রদান চালাইবার জন্য টাকার স্থষ্টি হইল, শেষকালে টাকার ১৫ ২২৬ বিচিত্র প্রবন্ধ । পোপাস্টিিিস্পিসসসসিবাসি লিসা সলাসিলাসপাি্াসিপাসিশা িশ্পিসিলাস্িসির সিপাসসিপাস্টির উপান প৯ লাস পাপা সস ও পালা, কাছ পাটি সমস্তা এমনি এক সমন্তা হইয়া উঠিয়াছে, যে, মীমাংসা করে কাহার সাধ্য! সমস্ত সহজ করিতে হইবে এই চেষ্টায় মানুষের জানা শোনা ধাওয়া দাওয়া আমোদ প্রমোদ সমস্তই অসম্ভব শক্ত হইয়া উঠিয়াছে। আোতস্বিনী কহিলেন-__সেই হিসাবে কবিতাঁও শক্ত হইয়া উঠিয়াছে। এখন মানুষ খুব স্প্টতঃ ছুইভাগ হইয়া গিয়াছে ; এখন অল্প লোক ধনী এবং অনেকে নির্ধন, অল্প লোকে গুণী এবং অনেক নিওপ; এখন কবিতাও সর্বসাধারণের নহে, তাহা বিশেষ লোকের; মকলি বুঝিলাম। কিন্ত কথাট। এই ষে, আমরা যে বিশেষ কবিতার প্রসঙ্গে এই কথাটা তুলিয়াছি, মে কবিতাটা কোন অংশেই শক্ত নহে ) তাহার মধ্যে এমন কিছুই নাই যাহা আমাদের মত লোৌকও বুঝিতে না পারে-_তাহা! নিতা- স্তই সরল, অতএব তাহা যদি ভাল ন| লাগে তবে সে আমাদের বুঝিবার দোষে নহে। _ ক্ষিতি এবং সমীর ইহার পরে আর কোঁন কথা বলিতে ইচ্ছা করিল না। কিন্তু ব্যোম অল্লান মুখে বলিতে লাগিল-_যাহা সরল তাহাই যে সহজ এমন কোন কথ! নাই। অনেক সময় তাহাই অত্যন্ত কঠিন, কারণ, সে নিজেকে বুঝাইবার জন্য কোনপ্রকার বাঁজে উপাঁয় অবলম্বন করে না,_সে চুপ করিয়া দীড়াইয়া' থাকে , তাহাকে না বুঝিয়া চলিয়া গেলে সে কোনরূপ কৌশল করিয়৷ ফিরিয়! ডাকে না। প্রাঞ্জলতার প্রধান গুণ এই যে, সে একেবারে অব্যবহিত ভাবে মনের সহিত সম্বন্ধ স্থাপন করে-_-তাহার কোন মধ্যস্থ নাই। কিন্তু যে সকল মন মধ্যস্থের সাহায্য ব্যতীত কিছু গ্রহণ করিতে পারে না, যাহাদিগকে ভুলাইয়া৷ আকর্ষণ করিতে হয়, গ্রাঞ্জলতা৷ তাহার্দের নিকট বড়ই দুর্বোধ। কৃঞ্চনগরের কারীগরের রচিত ভিস্তি তাহার সমস্ত রং চং মশক্‌ এবং অঙ্গভঙ্গী দ্বার 'আমাদের ইন্দ্রিয় এবং অভ্যাসের সাহায্যে চট্‌ করিয়া আমাদের মনের মধ্যে প্রবেশ করিতে পারে-_কিন্ত গ্রীক্‌গ্রস্তরযত্তিতে রং চং রকম সকম্‌ পঞ্চতৃত। ২২৭ নাই--তাহ। প্রাঞ্জল এবং সর্বপ্রকার প্রয়াসবিহীন। কিন্তু তাহা বলিয়া সহজ নহে। সে কোনপ্রকার তুচ্ছ বাহ্ৃকৌশল অবলম্বন করে ন| বলিয়াই ভাবসম্পদ তাহার অধিক থাঁকা চাই । দীপ্তি বিশেষ একটু বিরক্ত হইয়া কহিল-_ তোমার গ্রীক্‌ প্রস্তরমূর্তির কথা ছাড়িয়া দাও! ও সম্বন্ধে অনেক কথা শুনিয়াছি এবং বাঁচিয়া থাকিলে আরও অনেক কথা শুনিতে হইবে। ভাল জিনিষের দোঁষ এই, যে,. তাহাকে সর্বদাই পৃথিবীর চোখের সাম্নে থাকিতে হয়, সকলেই তাহার সম্বন্ধে কথ] কহে, তাহার আর পর্দী নাই, আক্র নাই; তাহাকে আর কাহারও আবিষাঁর করিতে হয় না, বুঝিতে হয় না, ভাল করিয়৷ চোখ মেলিয়া তাহার প্রতি তাঁকাইতেও হয় না, কেবল তাঁহার সম্বন্ধে বাঁধি গৎ শুনিতে এবং বলিতে হয়। সুর্যের ষেমন মাঝে মাঝে মেঘগ্রস্ত থাকা উচিত, নতুবা মেঘমুক্ত স্র্য্যের গৌরব বুঝ! যায় না, আমীর বোধ হয় পৃথিবীর বড় বড় খ্যাতির উপরে মাঝে মাঝে সেইরূপ অবহেলার আড়াল পড়া উচিত-_মাঝে মাঝে গ্রীকৃ মুস্তির নিন্দা করা ফেশান্‌ হওয়া ভাল, মাঝে মাঝে সর্বলৌকের নিকট প্রমাণ হওয়া উচিত যে, কালিদান অপেক্ষা চাণক্য বড় কবি। নতুবা আর সহা হয় না। যাহা হউক্‌ ওটা একটা অপ্রাসঙ্গিক কথা । আমার বক্তব্য এই, ষে, অনেক সময়ে ভাবের দাঁরি- দ্াকে আচারের বর্ধরতাঁকে সরলতা। বলিয়া ভ্রম হয়, অনেক সময় প্রকাশ- ক্ষমতার অভাবকে ভাবাধিক্যের পরিচয় বলিয়া কল্পনা! করা হয়-_সে কথাটাও মনে রাখ! কর্তব্য । আমি কহিলাম, কলাবিষ্ঠায় সরলতা উচ্চ অঙ্গের মানসিক উন্নতির সহচর । বর্ধরত! সরলতা নহে । বর্বরতার মাড়ম্বর আয়োজন অত্যন্ত বেশী। সভ্যতা অপেক্ষারূত নিরলঙ্কার। অধিক অলঙ্কার আমাদের দৃষ্টি আক- রণ করে; কিন্তু মনকে প্রতিহত করিয়া দেয়। আমাদের বাংল! ভাষায়! কি খবরের কাগজে, কি উচ্চশ্রেণীর সাহিত্যে সরলতা এবং অপ্রমত্ততার ২২৮ বিচিত্র প্রবন্ধ | অভাব দেখা যাঁয়;-_সকলেই অধিক করিয়া, চীৎকার করিয়া, এবং ভঙ্গিমা করিয়া বলিতে ভালবাসে ; বিনা আড়ম্বরে সত্য কথাটি পরিষ্কার করিয়া বলিতে কাহারও প্রবৃত্তি হয় না; কারণ, সত্য প্রাঞ্জল বেশে আদিলে তাহার গভীরতা এবং 'অসামান্তা আমর! দেখিতে পাই না, ভাবের সৌনর্য্য কৃত্রিম ভূষণে এবং সর্বপ্রকার আতিশয্যে ভারাক্রান্ত হইয়া না "আসিলে আমাদের নিকট তাহাদের মর্ধ্যাদা নষ্ট হয়। সমীর কহিল--সংযম ভদ্রতার একটি প্রধান লক্ষণ। ভদ্রলোকেরা কোন প্রকার গায়ে পড়া আতিশয্য দ্বারা আপন অক্তিত্ব উৎকটভাবে প্রচার করে ন1)-_বিনয় এবং সংযমের দ্বারা তাহারা আপন মর্যাদা রক্ষা করিয়া থাকে । অনেক সময়ে সাধারণ লোকের নিকট সংষত সুমমাহিত ভদ্রতার অপেক্ষা আড়ম্বর এবং আতিশয্যের ভঙ্গিম৷ অধিকতর আকর্ষণজনক হয় কিস্তু সেট! ভদ্রতার ছূর্ভাগ্য নহে সে সাধারণের ভাগ্যদৌষ। সাহিত্যে সংযম এবং আঁচারব্যবহারের সংযম উন্নতির লক্ষণ__-আতিশয্যের দ্বারা দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাই বর্ধরতা। আমি কহিলাম__তরঙ্গঙ্গের অভাবে অনেক সময়ে পরিপূর্ণতাও লোকের দৃষ্টি এড়াইয়া যায়, আবার পরিপূর্ণতার অভাবে অনেক সমদে তরঙ্গতঙ্ছও লৌককে বিচলিত করে, কিন্তু তাই বলিয়। এ ভ্রম যেন কাহারও ন! হয়, যে, পরিপূর্ণতীর প্রাঞ্জলতাই সহজ এবং অগভীরতার ভঙ্গিমাই ছুরূহ। আোতম্বিনীর দিকে ফিরিয়। কহিলাম, উচ্চশ্রেণীর সরল সাহিত। . বুঝা অনেক সময় এই জন্ত কঠিন, যে, মন তাহীকে বুঝিয়া লয় কিন্তু দে আপনাকে বুঝাইতে থাকে ন]। দীপ্তি কহিল, নমস্কার করি_-আজ আমাদের যথেষ্ট শিক্ষা হইয়াছে । আর কথনও উচ্চ অঙ্গের প্ডিতদিগের নিকট উচ্চ অঙ্গের সাহিত্য সম্বন্ধে মত ব্যক্ত করিয়! বর্ধরতা গ্রকাশ করিব না। পঞ্চতৃত। ২২৯ ৯ পাকশী পা পি পা পাপা সি অপাসিপাসস প স্পা সা পািাি৮৯, এ ৯৮৯ পিপিপি পিপলস শোতম্বিনী সেই ইংরাজ কবির নাম করিয়া কহিল, তোমরা যতই তর্ক কর এবং যতই গালি দাও, সে কবির কবিতা আমার কিছুতেই শ্তাল লাগে না। কৌতুকহাম্ত। শীতের সকালে বান্তা দিয়া খেজুররদ হাকিরা যাইতেছে । ভোরের দিককার ঝাপ্সা কুয়াশাটা কাটিয়! গিয়া তরুণ রৌদ্রে দিনের আরস্ত- বেলাটা একটু উপভোগযোগ্য আতপ্ত হইয়া আসিয়াছে। সমীর চা খাইতেছে, ক্ষিতি খবরের কাঁগজ পড়িতেছে এবং ব্যোম মাথার চারি- দিকে একট অত্যন্ত উজ্জল নীলে সবুজে মিশ্রিত গলাবন্ধের পাক জড়াইয়া একট। অসঙ্গত মোটা লাঠি হস্তে সম্প্রতি আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। অদূরে দ্বারের নিকট দাড়াইয়া আোতস্থিনী এবং দীপ্তি পরস্পরের কটিবেষ্টন করিয়া কি-একট। রহস্ত প্রসঙ্গে বারদ্বার হাসিয়া! অস্থির হইতে- ছিল। ক্ষিতি এবং সমীর মনে করিতেছিল এই উৎকট নীলহরিত পশম- রাশিপরিবৃত স্ুখাসীন নিশ্শিন্তচিত্ত ব্যোমই এ হাস্তরসোচ্ছাসের মূল কারণ। এমন সময় অন্যমনস্ক ব্যোমের চিত্তও সেই হাস্তরবে আকৃষ্ট হইল। চৌকিট1 সে আমাদের দিকে ঈষৎ ফিরাইয়া কহিল দুর হইতে একজন পুরুষমানষের হঠাৎ ভ্রম হইতে পারে যে, এ ছুটি সখী বিশেষ কোন একটা, কৌতুককথা অবলম্বন করিয়া হাদিতেছেন, কিন্তু সেট] মায়া। পুক্রুষ- জাতিকে পক্ষপাতী বিধাতা বিনাকৌতুকে হাঁদিবার ক্ষমতা! দেন নাই কিন্তু মেয়েরা হাসে কি জন্ত তাহ দেবা ন জানস্তি কুতো মনুষ্যাঃ। চকৃ- মকি পাথর শ্বভাবত আলোকহীন )--উপযুক্ত সংঘর্ষ প্রাপ্ত হইলে সে ২৩০ বিচিত্র গ্রবন্ধ। স্শাসপাসিপাসটিপািপসিপী স৯৫৯৯৯পোস্িসি লিলা অপি এ সপ পাস পাপা পাস ৯ পাস পাপা সলাত অক্টশবে জ্যোভিঃস্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করে, আর মাণিকের টুক্রা আপ্না | আপনি আলোয় ঠিকরিয়া পড়িতে থাকে, কোন একট! সঙ্গত উপ. লক্ষ্যের অপেক্ষা রাখে না । মেয়েরা অল্প কারণে কাদিতে জানে এবং বিনা কারণে হাসিতে পারে; কারণ ব্যতীত কাধ্য হয় না, জগতের এই কড়া নিয়িমটা কেবল পুরুষের পক্ষেই খাটে ! সমীর নিঃশেষিতপাত্রে দ্বিভীরবার চ1 ঢালিয়া। কহিল, কেবল মেয়েদের হাসি নয়, হাস্থারসটাই আমার কাছে কিছু অসঙ্গত ঠেকে । দুঃখে কীদি, সুখে হাসি এটুকু বুঝিতে বিলম্ব হয় না- কিন্তু কৌতুকে হাদি কেন? কৌতুক তঠিক সুখ নর। মোটা মানুষ চৌকি ভাঙিরা পড়িরা গেলে আমাদের কোন স্থথের কারণ ঘটে এ কথ। বলিতে পারি না কিন্তু কারণ হাসির ঘটে ইহা পরীক্ষিত সত্য । ভাবিয়। দেখিলে ইহার মধ্যে আশ্চর্য্যের বিষয় আছে। ক্ষিতি কহিল-_বক্ষ। কর ভাই! না ভাবিয়া আশ্্ধ্য হইবার বিষয় জগতে যথেষ্ট আছে আগে সেইগুলো৷ শেষ কর তার পরে ভাবিতে সুরু করিয়ো। একজন পাগল তাহার উঠানকে ধুলিশূন্ত করিবার অভি প্রায়ে প্রথমত ঝাটা দিরা আচ্ছা কিয়া ঝাটাইল, তাহাতেও সম্পূর্ণ সন্তোষজনক ফল না পাইয়া কোদাল দিয়া মাট টাচিতে আরন্ত করিল। সে মনে করিয়া- ছিল এই ধুলোম।টির পৃথিবীটাকে সে নিঃশেষে আকাশে ঝাটাইয়৷ ফেলিয়া 'অবশেষে দিব্য একটি পরিষার উঠান পাই্‌বে_বলা বাল্য বিস্তর অধ্যব- সায়েও কৃতকার্য হইতে পারে নাই। ভ্রাতঃ সমীর, তুমি যদি আশ্র্য্যের ,উপরিস্তর ঝাঁটাইঞা অবশেষে গভীরভাবে ভাবির! আশ্চর্য হইতে আরম্ভ কর তবে আমর! বন্ধুগণ বিদায় লই। কাঁলোহ্য়ং নিরবধিঃ, কিন্তু সেই নিরবধি কাল আমাদের হাতে নাই। সমীর হাপিয়া কহিল --ভাই ক্ষিতি, আমার অপেক্ষা ভাবনা তোমা- 'বই বেশি। অনেক ভাবিলে তোমাকেও সৃষ্টির একটা মহাশ্চরধ্য ব্যাপার পঝতৃত। ২৩১ স্পানিলাসিিস্পাসিলাসপিসিপসিলাপসিপাসিরাপাসলাসপাস্পিসিতিসিতিসটিপাসপাদিলা সিলসিলা সিলসিলা লিপি মনে হইতে পারিত কিন্ত আরো টের বেশি না ভাবিলে আমার সহিত তোমার সেই উঠানমার্জনকারী আদর্শটর সাদৃপ্ঠ কল্পনা করিতে পারিতে ন্‌] ক্ষিতি কহিল-মাপ কর ভাই; তুমি আমার অনেক কালের বিশেষ পরিচিত বন্ধু, দেই জন্তই আমার মনে এতটা আশঙ্কার উদর হইয়াছিল । যাহা হউক, কথাটা! এই যে, কৌত্ুকে আমরা হাঁসি কেন। ভারি আন্তর্ধ্য! কিন্তু তাহার পরের প্রশ্ন এই যে, যে কারণেই হউক্‌ হাসি কেন? একটা কিছু ভাল লাশিবার বিষন্ন ঘেই আমাদের সন্গুখে উপস্থিত হইল অমনি আমাদের গলার ভিতর দিয়া একট! অদ্ভুত প্রকারের শব বাহির হইতে লাগিল এাং আমাবের মুখর সমস্ত মাংসণেণী বিকৃত হইয়া সন্ধুখের দগ্কপংক্কি বাহির হইয়া পড়িল_মান্গুযের মত ভদ্র জীবের পক্ষে এমন একটা অপ্যত অসঙ্গত ব্যাপার কি সাগান্য অদ্ভুত এবং অবমান জনক ? যুরোপের ভদ্রলোক ভরের চিহ ছুঃখের চিহব গ্রকাশ করিতে লজ্জা বোধ করেন-_আমরা প্রাচাজাতীয়েরা সভাসমাজে কৌতুকের চিত প্রকাশ করাটাকে নিতান্ত অসংযমের পরিচয় জ্ঞান করি সমীর ক্ষিতিকে কথা শেষ করিতে না দিয়া কহিল তাহার কারণ, আমাদের মতে কৌতুকে আমোদ হন্থুভব করা নিতান্ত অযৌক্তিক উহা! ছেলেমান্ুষেরই উপধুক্ত। এই জন্য কৌতুক রমকে আমাদের প্রবীণ লোকমাত্রেই ছেব্লামী বলিয়া দ্বণা করিয়া থাকেন। একটা গানে শুনিরাছিলাম, ্রীকুঞ্চ নিদ্রাভঙ্গে প্রাতঃকালে হুকাহস্তে ব্বাধিকার কুটারে কিঞ্িং অঙ্গারের প্রার্থনায় আগমন করিয়াছিলেন, শুনিয়া শ্রে।তামাজ্রের হাস্য উদ্রেক করিয়াছিল। কিন্তু হু কা-হস্তে শ্রীকুষ্ণের কল্পনা স্ন্বরও নহে কাহারও পক্ষে আনন্দমজনকও নহে_তবুও যে, আমাদের হাসি ও আমোদের উদয় হয় তাহা অদভূত ও অমূলক নহে তকি? এই জন্য এক্নূপ চাপল্য আমাদের বিজ্ঞ সমাজের অনুমোদিত নহে। ইহা যেন ২৩২ _.. বিচিত্র প্রবন্ধ । স্পা সি পাস্টাস্পসিান্পসপান্পিতাছ লাস্ট বাসস লানপিীদ লাস পাস্তা পাস লাস লাস লো পাছি লি পিটিসি পাত অনেকট! পরিমাণে শারীরিক ) কেবল ্নীয়ুর উত্তেজনা মাত্র। ইহার সহিত আমাদের লৌন্দর্য্যবোধ, বুদ্ধিবৃত্ত, এমন কি স্বার্থবোধেরও যোগ নাই! অতএব অনর্থক সামান্য কারণে ক্ষণকালের জন্য বুদ্ধির এন্ধপ অনিবার্ধ্য পরাভব, স্থৈর্য্যের এরূপ সম্যক্‌ বিচ্যুতি, মনবিশিষ্ট জীবের পক্ষে লজ্জাজনক সন্দেহ নাই। ক্ষিতি একটু ভাবিয়া কহিল, সে কথ! সত্য। কোন অখ্যাতনামা কবি-বিরচিত এই কবিতাটি বোধ হয় জান! আছে__ তৃষার্ত হইয়া চাহিলাম একঘটি জল। তাড়াতাড়ি এনে দিলে আধখথান! বেল ॥ তৃষার্ত ব্যক্তি যখন এক ঘটি জল চাহিতেছে তখন অত্যন্ত তাঁড়াতীড়ি করিয়া আধখাঁনা বেল আনিয়া! দিলে অপরাপর ব্যক্তির তাহাতে আমোদ অনুভব করিবার কোন ধন্মসঙ্গত অথবা যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখা যায় না। ভূষিত ব্যক্তির প্রার্থনামতে তাহাকে একঘটি জল আনিয়া দিলে সমবেদনা - বৃত্তিগ্রভাবে আমর নখ পাই-_কিন্তু তাহাকে হঠাৎ আধখানা বেল আনিয়! দিলে, জানি না কি বৃত্তিপ্রভাবে আমাদের প্রচুর কৌতুক বোঁধ হয়। এই সুখ এবং কৌতুকের মধ্যে যখন শ্রেণীগত প্রভেদ আছে তখন ছুইয়ের ভিন্নবিধ প্রকাশ হওয়! উচিত ছিল। কিন্ত প্রকৃতির গৃহিণী- পনাই এইরূপ-_কোথাও বা! অনাবশ্ঠক অপব্যয়, কোথাও অত্যাবশ্তকের বেলায় টানাটানি ! এক হাসির দ্বার| সুখ এবং কৌতুক ছুটোকে সারিয়া দেওয়া উচিত হয় নাই। ,ব্যোম কহিল--প্ররুতির প্রতি অন্যায় অপবাদ আরোপ হই- তেছে। স্থথে আমরা ন্নিতহীস্ত হাঁসি, কৌতুকে আমরা উচ্চহান্ত হাসিয়া উঠি। একটা আন্দোৌলনজনিত স্থায়ী অপরটি সংঘর্ষজনিত আকম্মিক। সমীর ব্যোমের কথায় কর্ণপাত না করিয়া কহিল, আমোদ এবং পঞ্চভৃত। ২৩৩ পি সপস্টিলাি পপি পাপা সিপা পানিসম্পদ পিপাসা পধপলা্সি পিপাসা উপ সপ্ত সা দলািলা সক সাল পাপ কৌতুক ঠিক সুখ নহে বরঞ্চ তাহা নিয়মাত্রার দুখ । স্বল্প পরিমাধে ছঃখ ও গীড়ন আমাদের চেতনার উপর যে আঘাত করে তাহাতে আমা- দের সুখ হইতেও পারে। প্রতিদিন নিয়মিত সময়ে বিনা কষ্টে আমর! পাঁচকের প্রস্তত অন্ন খাইয়া থাকি তাহাকে আমরা আমোদ বলি না. কিন্তু যেদিন “চড়িভাতি” কর! যায়, সেদিন নিয়ম ভঙ্গ করিয়া কষ্ট স্বীকার করিয়া অসময়ে সম্ভবতঃ অথাগ্ক আহার করি, কিন্তু তাহাকে বলি আমোদ । আমোদের জন্য আমর! ইচ্ছাপূর্ধক যে পরিমাণে কষ্ট ও অশান্তি জাগ্রত করিয়া তুলি তাহাতে আমাদের চেতনশক্তিকে উত্তেজিত করিয়া দেয়। কৌতুকও সেই জাতীর সৃখাবহ ছুঃখ। শ্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধে আমাদের চিরকাল যেরূপ ধারণা আছে তাহাকে হু কাহস্তে রাধিকার কুটারে আনিয়া উপস্থিত করিলে হঠাৎ আমাদের সেই ধারণীয় আঘাত করে। সেই আঘাত ঈষৎ গীড়াজনক 7 কিন্তু সেই পীড়ার পরিমাণ এমন নিয়মিত যে, তাহাতে আমাদিগকে যে পরিমাণে দুঃখ দেয় আমাদের চেতনাকে অকন্মাৎ চঞ্চল করিয়া তুলিয়৷ তদপেক্ষ! অধিক সুখী করে। এই সীমা ঈষৎ অতিক্রম করিলেই কৌতুক প্রকৃত গীড়ায় পরিণত হইয়া উঠে। যদ্দি যথার্থ ভক্তির কীর্তনের মাঝখানে কোন রসিকতা বাযুগ্রস্ত ছোকর! হঠাৎ শ্রীকৃষ্ণের এ তাভ্রকূটধুমপিপাস্থতার গান গাহিত তবে তাহাতে কৌতুক বোধ হইত না; কারণ, আঘাতটা এত গুরুতর হইত যে তৎক্ষণাৎ তাহা উদ্যত মুষ্টি আকার ধারণ করিয়! উক্ত রসিক ব্যক্তির ৃষ্ঠাভিমুখে প্রবল প্রতিঘাতস্বর্ূপে ধাবিত হইত। অতএব, আমার মতে কৌতুক _ চেতনাকে পীড়ন ; আমোদও তাই। এই ন্ত প্রকৃত আননের'প্রকাঁশ ন্মিতহান্ত এবং আমোদ ও কৌতুকের প্রকাশ উচ্চহান্ত ) __সেহাস্ত যেন হঠাৎ একটা দ্রুত আঘাতের পীড়নবেগে সশবে উদ্ধে উদশীর্ণ হইয়া উঠে। ক্ষিতি কহিল, তোমরা যখন একটা মনের মত থিওরির সঙ্গে একটা ২৩৪ বিচিত্র প্রবন্ধ। পোস্পিসসপাস্পি সপ সপস্পিস্পস্পিসপাস্পিসপস্পাসপাস্পিসপিসটসমি পাস সপ সপসপসিলাস্লি স্পা সিপাস্পিস্মিপান্পস্টপাসিসিপাস্প সপাস্পাসি পিপাসা সর্প উল পা৯তিসলাসিলাসিলস৯ির ৯ তাতিলাসিপাসিলাছ এ ছি পাজি লা এসসি পি পিতা মনের মত উপমা জুড়িয়া দিতে পার, তখন আননে আর সত্যাস্য জ্ঞান থাকে না। ইহা সকলেরই জানা আছে কৌতুকে যে কেবল আমরা উচ্চহান্ত হাদি তাহা নহে মৃদহান্ত ও হাসি, এমন কি, মনে মনেও হাসিয়া থাকি। কিন্তু ওটা! একটা! অবীস্তর কথা। আসল কথা এই যে, কৌতুক আমাদের চিত্তের উত্তেজনার কারণ; এবং চিত্তের অনতি- প্রবল উত্তে্না আমাদের পক্ষে মুখজনক । আমাদের অগ্তরে বাহিরে * একটি স্থুক্তিপঙ্গত নিয়মশূঙ্খনার আধিপত্য; সমস্তুই চি্াভ্যন্ত, চির- প্রত্যাশিত) এই স্ুনির়মিত যুক্তিরাজ্যের সমভূমিমধ্যে যখন আমাদের চিত্ত অবাধে গরবাহিত হইতে থাকে তখন তাহাকে বিশেধরূপে অনুভব করিতে পারি না_ইতিমধ্যে হঠাৎ সেই চারিদিকের যথাযোগ্যতা ও যথাপরিমিততার মধ্যে বদি একটা অনঙ্গত ব্যাপারের অবতারণা হয় তবে আমাদের চিত্তপ্রবাহ অকম্মাৎ বাধা পাইয়া ছুনিবার হাস্ততরঙ্গে বিক্ষুন্ধ হইয়! উঠে। সেই বাধা সুখের নহে, সৌন্দর্যের নহে, সুবিধার নহে, তেমনি আবার অনতিদ্ঃখের ৪ নহে দেই জন্ত কৌতুকের সেই বিশ্তুদধ অমিশ্র উত্তেছ্নায় আমাদের আমোদ বোধ হয়। আমি কহিলাঘ, অনুভবক্রিয়ামাত্রই সুখের, যদি না তাহার সহিত কোন গুরুতর ছুঃথভয় ও স্বার্থহানি মিশ্রত থাকে । এমন কি, ভর পাইতেও সুখ আছে যদি তাহার সহিত বাস্তাবক ভয়ের কোন কারণ জড়িত না থাকে । ছেলেরা ভূতের গন্প শুনিতে একট| বিষম আকর্ষণ অনুভব করে, কারণ, হৃত্কম্পের উত্তেজনায় আমাদের যে টিন্ুচাঞ্চল্য জন্মে তাহাতেও আনন্দ আছে। রামায়ণে সীতাবিয়োগে রামের দুঃখে আমরা দুঃখিত হই, ওথেলোর অমূলক অস্থরা আমাদিগকে পীড়িত করে, ছুহিভার কৃতদ্রতাশরবিন্ধ উন্মাদ লিয়রের মর্দ্যাতনার আমরা বাথা বোধ করি--কিন্তু সেই ছুঃখগীড়া বেদনা উদ্রেক করিতে না পারিলে সে কল কাব্য আমাদের নিকট তুচ্ছ হইত। বরঞ্চ দুঃখের কাঁব্যকে আমর! পঞ্চভূত। ২৩৫ সাস্পিাস্পিস্পিপপিপী সিটি স্থখের কাব্য অপেক্ষা অধিক সমাদর করি; কারণ, ছুঃখান্ছভবে আমাদের চিত্তে অর্ধিকতর আন্দৌলন উপস্থিত করে। কৌতুক মনের মধ্যে হঠাৎ আঘাত করিয়৷ আমাদের সাধারণ অনুভবক্রিয়া জাগ্রত করিয়া দেয়। এইজন্ত অনেক রসিক লোক হঠাৎ শরীরে একটা আঘাত করাকে পরিহাস জ্ঞান করেন) অনেকে গালিকে ঠাট্র।র স্বরূপে ব্যবহার করিরা থাকেন; বাদরবরে কর্ণমদ্দন এবং অস্ঠান্ত পীড়ননৈপুণ্যকে বঙ্গনীমগ্তিনীগণ এক শ্রেণীর হাস্তরন বলিয়া স্থির করির়াছেন ;_হঠাৎ উংকট বোমার আওরাঞঙ্জ করা আমাদের দেশে উত্নবের অঙ্গ এবং কর্ণবধিরকর খোল- করতালের দ্বার৷ চিন্তকে ধূমপাড়িত মৌচাকের মৌমাছির মত একান্ত উদ্ভান্ত করিরা ভক্তিরসের অবতারণা করা হয়। ক্ষিতি কহিল, বন্ধুগণ, ন্গান্ত হও! কথাটা একগ্রকার শেষ হইয়াছে। যতটুকু পাড়নে সুখ বোধ হয় ভাহা ভোনর। অতিক্রম করিয়াছ, এক্ষণে দুঃখ ক্রমে প্রবন হইরা উঠিতেছে। আমরা বেশ বুঝিয়াছি, থে, কমেডির হান্ত এবং ট্যাজেডির অঞ্জন ছুঃথের তারতম্যের উপর নির্ভর করে, ব্যোম কহিল-যেমন বরফের উপর প্রথন রৌদ্র পড়িলে তাহা বিকৃঝিক্‌ করিতে থাকে এবং বৌদ্রের তাপ বাড়িয়া উঠিলে তাহা গলিয়া পড়ে । তুমি কতক গুলি গ্রহন ও ট্টা্ডে দি নাম কর আমি তাহা হইতে প্রমাণ করিয়া দিতেছি-_- এমন সময় দীপ্তি ও শ্রোতস্বিনী হাসিতে হাসিতে আিয়। উপস্থিত হইলেন। দীপ্তি কহিলেন_তোমরা কি প্রমাণ করিবার জন্য উদ্যত হইয়াছ? ॥ ক্ষিতি কহিল, আমরা প্রমাণ 005 যে, তোমরা এতক্ষণ বিনা কারণে হাসিতেছিলে। গুনিয় দীপ্ি আোতম্বিনীর মুখের দিকে চাহিলেন, আোতন্থিনী ২৩৬ 9555 পাপা পালি সপ স্পস্পিাসিপা সা সিল লাস পাত, পিপিপি িপাসিলাসি পিসি আস্উিপীস্টিপা সটিপস্টিতীসসিপাসিসপিপিি পিপলস, ০ সা নীতির মুখের দিকে চাহিলেন এবং উত্তরে পুনরায় কলকঠে হাসির উঠিলেন। ব্যোম কহিল, আমি প্রমাণ করিতে যাইতেছিলাম, যে, কমেডিতে পরের অল্প পীড়া দেখিয়৷ আমরা হাসি এবং ট্র্যাজেডিতে পরের অধিক পীড়া দেখিয়া আমর! কীদি। দীপ্তি ও শ্রোতম্বিনীর সুমিষ্ট সন্মিলিত হাস্তরবে পুনশ্চ গৃহ কৃজিত হইয়া উঠিল, এবং অনর্থক হাস্য উদ্রেকের জন্ত উভয়ে উভয়কে দোষী করিয়া পরস্পরকে তর্জন পূর্বক হাসিতে হা'িতে সলজ্জভাবে ছুই সী হইতে প্রস্থান করিলেন। পুরুষ সভ্যগণ এই অকারণ হাস্যোঙ্ছসদৃত্তে স্মিতমুখে অবাকৃ হইয়া রহিল। কেবল সমীর কহিল, ব্যোম, বেল] অনেক হইয়াছে, এখন তোমার এ বিচিত্রবর্ণের নাগপাশ বন্ধনটা খুলিয়া ফেলিলে স্বাস্থ্যহানির সম্তাবন। দেখি না । ক্ষিতি ব্যোমের লাঠিগাছটি "তুলিয়া অনেকক্ষণ মনোযোগের সহিত নিরীক্ষণ করিয়া কহিল, ব্যোম, তোমার এই গদাখাঁনি কি কমেডির বিষয়, না, ট্র্যাজেডির উপকরণ ? কৌতুকহাস্তের মাত্রা । সেদিনকার ডায়ারিতে কৌতুকহান্ত সম্বন্ধে আমাদের আলোচনা পাঠ করিয়া শ্রীমতী দী্তি লিথিয়া পাঠাইয়াছেন,_-“একদিন প্রাতঃকাঁলে শ্োতস্বিনীতে আমাতে মিলিয়! হাঁসিয়াছিলাম। ধন্য সেই প্রাতঃকাল এবং ধন্ট দুই সথীর হস্ত! জগৎস্থষ্টি অবধি এমন চাপল্য অনেক রমণীই প্রকাঁশ করিয়াছে--এবং ইতিহাসে তাহার ফলাফল ভালমন্দ নাঁনা পঞ্চভৃত। ২৩৭ পাসপোর্ট উস পি পা পিপাসা প্লাস" আকারে স্থায়ী হইয়াছে । নারীর হাঁসি অকারণ হইতে পারে কিন্ত তাহা অনেক মন্দাক্রাস্তা, উপেন্ত্রব্া, এমন কি, শার্দুলবিক্রীড়িতচ্ছন্, অনেক ত্রিপদী, চতুষ্পদী এবং চতুদ্দশপদীর আদ্িকারণ হইয়াছে, এইবূপ গুনা যায়। রমণী তরলস্বভাবব্শতঃ অনর্থক হাসে, মাঝের হইতে তাহা দেখিয়। অনেক পুরুষ অনর্থক কীদে, অনেক পুরুষ ছন্দ মিলাইতে বসে, অনেক পুরুষ গলায় দড়ি দিয় মরে--আবাঁর এইবার দেখিলাম নারীর হান্তে প্রবীণ ফিলজফরের মাথায় নবীন ফিলজফি বিকশিত হইয়া উঠে ! কিন্তু সত্য কথা বলিতেছি, তত্ব নির্ণয় অপেক্ষ। পূর্বোক্ত তিন প্রকারের অবস্থাটাঃআমরা পছন্দ করি।” এই বলিয়া সেদিন আমরা হাস্ত সম্বন্ধে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়া- ছিলাম শ্রীমতী দীপ্তি তাহাকে ধুক্তিহীন অপ্রামাণ্য বলিয়া প্রমাণ করিয়া- ছেন। আমার প্রথম কথা এই যে, আমাদের মেদিনকার তত্বের মধ্যে, ষে,. যুক্তির প্রাবন্য ছিল ন1 সে জন্য শ্রীমতী দীপ্তির রাগ করা উচিত হয় না। কারন, নারীহান্তে পৃথিবীতে ধত প্রকার অনর্থপাঁত করে তাহার মধ্যে বুদ্ধিমানের বুদ্ধিভ্রংশও একটি। যে অবস্থায় আমাদের ফিলজফি প্রলাপ হইয়া উঠ্িয়াছিল সে অবস্থায় নিশ্চয়ই মনে করিলেই কবিতা লিখিতেও পারিতাম, এবং গলায় দড়ি দেওয়াও অসম্ভব হইত না। দ্বিতীয় কথ! এই যে, তাহাদের হান্ত হইতে আমরা তত্ব বাহির করিব এ কথা তীহারা যেমন কল্পনা করেন নাই, আমার্দের তত্ব হইতে তাহার! যে যুক্তি বাহির করিতে বসিবেন তাহা ও আমরা কল্পনা করি নাই। * নিউটন আজন্ম সত্যান্বেষণের পর বলিয়াছেন আমি গ্ঞানসমুদ্রের কুলে কেবল স্থড়ি কুড়াইয়াছি; আমরা চার বুদ্ধিমানে ক্ষণকালের কথোপ- কথনে নুড়ি কুড়াইবার তরসাও রাখি না--আমরা বালির ঘর বীধি-: মাত্র। এ খেলাটার উপলক্ষ্য করিয়া জ্ঞানসমূদ্র হইতে থানিকট! সমুদ্রের সপনপাসসিল সা ২৩৮ বিচিত্র প্রধন্ধ। পাটি সিলসিলা পাপা পাপাম্পিস্পাসিস্সি হাওর খাইয়৷ আসা আমাদের উদ্দেশ্ত । রত্ব জাই আদি না, খানিকটা! স্বাস্থ্য লইয়া আসি, তাহার পর সে বালির ঘর ভাঙে কি থাকে তাহাতে কাহারও কোন ক্ষতিবৃদ্ধি নাই। রত্ব অপেক্ষা স্বাস্থ্য যে কম বন্ুমূল্য আমি তাহা মনে করি না। রত্ব অনেক সময় ঝুঁটা প্রমাণ হয়, কিন্ত স্াস্থ্যকে স্বাস্থ্য ছাড় আর কিছু বলিবার জো নাই। আমরা পাঞ্চভৌতিক সভার পাঁচ ভূতে মিলিয়া এ পর্য্স্ত একটা কানাকড়ি দাঁমের দিদ্ধান্তও সংগ্রহ করিতে পারিয়াছি কি না সন্দেহ, কিন্তু, তবু ফতবার আমাদের সভা বদিয়াছে আমরা শৃন্ত হস্তে ফিরির! আসিলেও আমাদের সমস্ত মনের মধ্যে যে সবেগে রক্ত সশালন হইয়াছে, এবং সে জন্ত আনন্দ এবং আরোগ্য লাভ করিয়াছি তাহাতে সন্দেহ মাত্র নাই। গড়ের মাঠে এক ছটাক শস্ত জন্মে না, তবু অতটা জমি অনাবশ্তক নহে। আমাদের পাঞ্চভৌতিক সভাও আমাদের পাঁচজনের গড়ের মাঠ, এখানে সত্যের শস্তলাভ করিতে আমি না, সত্যের আনন্দলাঁভ করিতে মিলি । সেইজন্য এ সভায় কোন কথার পূরা মীমাংসা! না হইলেও ক্ষতি নাই, সত্যের কিয়দংশ পাইলেও আমাদের চলে । এমন কি, সত্যক্ষেত্র গভীর- রূপে কর্ষণ না করিয়া তাহার উপর দিয়! লঘু পদে চলিয়া যাঁওয়াই আমা- দের উদ্দেশ । আর একদিক হইতে আর এক রকমের তুলন! দিলে কথাটা পরিষ্কার হইতে পারে। রোগের সময় ডাক্তারের ওষধ উপকারী কিন্তু আত্মীয়ের সেবাটা বড় আরামের । জন্ান্‌ পণ্ডিতের কেতাবে তত্জ্ঞানের যে সকল চরম সিদ্ধান্ত আছে তাহাকে ধের বটিকা বলতে পার কিন্তু মানসিক শুশ্বষা তাহার মধ্যে নাই। পাঞ্চভৌতিক সভায় আমরা যে ভাবে সত্যালোচনা করিয়। থাকি তাহাকে রোগের চিকিৎসা বলা না যাক, তাহাকে রোগীর গুএ্ষা বলা যাইতে পারে। পঞ্চভূত। ২৩৯ ১২৮ দশসিপাসিপাশিলাস্পািশাসপিসিপোসিপাসিপািপ শসা পাপা পাস লাস, তা পাপা পাপিপছি সিস্ট, আর অধিক তুলনা প্রয়োগ করিব না। মোট কথা এই, সেদিন আমরা চার বুদ্ধিমানে মিলিয়। হাঁসি সম্বন্ধে যে সকল কথা তুলিয়াছিলাম তাহীর কোনটাই শেষ কথা নহে! যদি শেষ কথার দিকে যাইবার চেষ্টা করিতাঁম তাহা হইলে কথোপকথনসভার প্রধান নিয়ম লঙ্ঘন করা হইত। কথোপকথনসভার একটি প্রধান নিরম-সহজে এবং দ্রুতবেগে অগ্রসর হওয়া। অর্থাৎ মানসিক পায়চারি করা ! আমাদের যদি পদতল না খাকিত, ছুই পা যদি দুটো! তীক্ষাগ্র শলাকার মত হইত, তাঁহা হইলে মাটির ভিতর দিকে সুগভীর ভাবে প্রবেশ করার সুবিধা হইত কিন্তু এব পা অগ্রসর হওয়া সহজ হইত না। কথোপকথনসমীজে আমরা যদি প্রত্যেক কথার অংশকে শেষপর্যন্ত তলাইবার চেষ্টা করিতাম তাহ! হইলে একটা জায়গাতেই এমন নিরুপাঁয় ভাবে বিদ্ধ হইয়! পড়! যাইত, যে, আর চলাফেরার উপায় থাকিত না। এক একবার 'এমন অবস্থা হয়, চলিতে চলিতে হঠাৎ কাঁদার মধ্যে গিয়া পড়ি; সেখানে যেখানেই পা ফেলি হাটু পর্যন্ত বসিয়া যায়, চলা দায় হইয়াউঠে। এমন সকল বিষয় আছে যাহাতে প্রত্তিপদে গভীরতার দিকে তলাইয়া যাইতে হয়) কথোঁপকথনকালে সেই সকল অনিশ্চিত, সন্দেহতরল বি্ষিয়ে পদার্পণ না করাই ভাল। সে সব জমি বাযুসেবী পর্যাটনকারীদের উপযোগী নহে, কৃষী যাহাদের ব্যবসায় তাহাদের পক্ষেই ভাল। যাহা হউক, সে দিন মোটের উপরে আমর প্রশ্নটা এই তুলিয়াছিলাম, যে, যেমন দুঃখের কালা, তেমনি স্ুগের হাসি আছে-_কিন্তু মাঝে হইতে কৌতুকের হাসিটা কোথা হইতে আসিল? কৌতুক জিনিষটা কিছু রহস্যময় । জন্তরাও সুখ দুঃখ অন্ুভৰ করে কিন্ত কৌতুক অনুভব করে না। অলঙ্কারশান্ত্রে যে ক'টা রসের উল্লেখ আছে সব রসই জন্ধদের অপরিণত অপরিস্দুট সাহিত্যের মধ্যে আছে কেব্ল হাঁস্যরসটা! ২৪১ বিচিত্র পগ্রবন্ধ। লাস্পিস্দিাসপাস্পিসিতসসপাস্টিস্টিল তা সি সিসি পাম্পি সিম্পল সিপাসউিপিসটিল নাই। হয় ত বানরের প্রক্কতির মধ্যে এই রদের কথঞ্চিং আভাদ দেখা বায়, কিন্ত বানরের সহিত মানুষের আরও অনেক বিষয়েই রি আছে। যাহ! অসঙ্গত তাহাতে মানুষের ছুঃখ পাওয়া উচিত ছিল, হাদি রি বার কোন অর্থই নাই। পশ্চাতে যখন চৌকি নাই তখন চৌকিতে বসিতেছি মনে করিয়া কেহ যদি মাটিতে পড়িয়া যায় তবে তাহাতে দর্শক- বুন্দের স্থখানুভব করিবার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখা যায় না। এমন একট! উদাহরণ কেন, কৌতুকঘাত্রেরই মধ্যে একটা পদার্থ আছে যাহাতে মানুষের সুখ না হইয়া! দুঃখ হওয়। উচিত! আমর! কথায় কথায় সেদিন ইহার একটা কারণ নির্দেশ করিয়া ছিলাম! আমর! বলিম়্াছিলাম, কৌতুকের হাসি এবং আমোদের হাদি একজাতীর-_উভয় হাপ্যের মধ্যেই একট প্রবলতা আছে। ভাই আমাদের সন্দেহ হইয়াছিল, যে, হয় ত আমোদ এবং কৌতুকের মধ্যে একটা প্রকৃতিগত সাৃম্ত আছে) সেইটে বাহির করিতে পারিলেই কৌতুকহান্তের রহস্য ভেদ হইতে পারে! সাধারণভাবের স্ুথের সহিত আমোদের একটা প্রভেদ আছে । নিরমভঙ্গে যে একটু পীড়া আছে সেই পীড়াটুকু না থাকিলে আমোন হইতে পারে না। আমোদ জিনিষট| নিত্যনৈমিত্তিক সহজ নিয়মসঙ্গত নহে; তাহা মাঝে মাঝে এক একদিনের ? তাহাতে প্রয়াসের আবশ্যক 1 সেই গীড়ন এবং: প্ররাসের সংঘর্ষে মনের যে একটা উত্তেজন। হয় সেই উত্তেজনাই আমোদের প্রধান উপকরণ। আমরা বলিয়াছিলাম কৌতুকের মধ্যেও নিয়মতঙ্গজনিত একটা পীড়। আছে ; সেই পীড়াট। অনতি অধিকমাত্রায় ন৷ গেলে আমাদের মনে যে একট! স্থুখকর উত্তেজনার উদ্রেক করে, মেই আকন্মিক উত্তেজনা ক, আঘাতে আমরা হাসিয়া উঠি। যাহ! সুসঙ্গত তাহা চিরদিনের নিয়মমন্ত, পঞ্চভূত | ২৪১ যাহা অসঙ্গত তাহ! ক্ষণকালের নিম্নমভঙ্গ । যেখানে যাহী হওয়। উচিত সেখানে তাহা হইলে তাহাতে আমাদের মনের কোন উত্তেজনা নাই, হঠাৎ, না হইলে কিম্বা আর একরূপ হইলে সেই আকন্মিক অনতি প্রবল উৎপীড়নে মনট1 একটা! বিশেষ চেতনা অনুভব করিয়া সুখ পাঁয় এবং আমরা হাসিয়া উঠি । সেদিন আমরা এই পর্যন্ত গিয়াছিলাম-_আর বেশীদুর যাই নাই। কিন্তু তাই বলিয়া আর যে যাওয়া যায় না তাহা নহে। আরও বলিবার কথা আছে। শ্রীমতী দীপ্তি প্রশ্ন করিয়াছেন, যে, আমাঁদের চার পণ্ডিতের সিদ্ধান্ত যদি সত্য হয় তবে চলিতে চলিতে হঠাৎ অন্প হুচটু খাইলে কিম্বা রাস্তায় যাইতে অকন্মাৎ অল্পমাত্রায় দুর্গন্ধ নাকে আসিলে আমাদের হাসি পাওয়া, অন্তত, উত্তেজনীজনিত স্থুখ অনুভব করা উচিত । এ প্রশ্নের দ্বারা আমাদের মীমাংসা খণ্ডিত হইতেছে না, সীমাবদ্ধ হইতেছে মাত্র। ইহাতে কেবল এইটুকু দেখা যাইতেছে যে পীড়নমাত্রেই কৌতুকজনক উত্তেভন! জন্মায় না; অতএব, এক্ষণে দেখা আবশ্তক, কৌতুক-পীড়নের বিশেষ উপকরণটা কি। জড়গ্রকৃতির মধ্যে করুণরসও নাই, হাস্যরসও নাই। একটা বড় পাথর ছোট পাথরকে গুঁড়াইয়া ফেলিলেও আমাদের চোখে জল আসে না, এবং সমতলক্ষেত্রের মধ্যে চলিতে চলিতে হঠাৎ একট! খাপছাড়া গিরি- শৃঙ্গ দেখিতে পাইলে তাহাতে আমাদের হাসি পায় না। নদী নিবরি পর্বত সমুদ্রের মধ্যে মাঝে মাঝে আকনম্সিক অসামঞ্জস্য দেখিতে পাওয়া যায়, তাহা বাধাঁজনক, বিরক্তিজনক, পীড়াজনক হইতে পারে, কিন্তু কোন স্থানেই কৌতুকজনক হয় না। সচেতন পদার্থসন্বন্ধীয _খাপছাড়া ব্যাপার ব্যতীত শুদ্ধ জড়পদার্থে আমাদের হাসি আনিতে পারে না। ১৬ ২৪২. বিচিত্র ্ | পা্পাস্টিপাসটিপাসিপসিপাস্পাপস্সিাপাসিপাসিপিসপিসপসিপাছি পাসপসিপাসিপি পিসি পা এসিপাসিপসপাসপা সস পিপিপি, কেন, তাহা ঠিক করিয়া বলা শক্ত কিন্ত আলোচনা | করিয়া দেখিতে দৌষ নাই। আমাদের ভাষায় কৌতুক এবং কৌতুহল শবের অর্থের যোগ আছে। সংস্কৃত সাহিত্যে অনেক স্থলে একই অর্থে বিকল্পে উভয় শব্দেরই প্রয়োগ হইয়া থাকে। ইহা হইতে অনুমান করি, কৌতুহলবৃত্তির সহিত কৌতুকের বিশেষ সম্বন্ধ আছে। কৌতুহলের একটা প্রধান অঙ্গ নূতনত্বের লালসা__কৌতুকেরও একটা প্রধান উপাদান নূতনত্ব। অসঙ্গতের মধ্যে যেমন নিছক বিশুদ্ধ নুতনত্ব আছে সঙ্গতের মধ্যে তেমন নাই। কিন্তু প্রকৃত অসঙ্গতি ইচ্ছাশত্তির সহিত জড়িত, তাহা জড় পদার্থের মধ্যে নাই। আমি যদি পরিষ্কার পথে চলিতে চলিতে হঠাৎ ছুর্গন্ধ পাই তবে আমি নিশ্চয় জানি, নিকটে কোথায় এক জায়গায় ছুর্ণন্ধ বস্তু আছে তাই এইরূপ ঘটিল; ইহাতে কোনরূপ নিয়মের ব্যতিক্রম নাই, ইহা] অব্ন্তাবী। জড়গ্রকৃতিতে যে যে কারণে যাহা হইতেছে তাহা ছাড়া আর কিছু হইবার জে! নাই, ইহা! নিশ্চয় । কিন্তু পথে চলিতে চলিতে যদি হঠাৎ দেখি একজন মান্য বৃদ্ধ ব্যক্তি থেম্টা নাচ নাঁচিতেছে, তবে সেটা প্রকৃতই অসঙ্গত ঠেকে ; কার্ণ, তাহা অনিবার্য নিয়মসঙ্গত নহে। আমরা বুদ্ধের নিকট কিছুতেই এরূপ আচরণ প্রত্যাশা! করি না, কারণ, সে ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন লোক; সে ইচ্ছা করিয়া নাচিতেছে ; ইচ্ছা করিলে ন! নাচিতে পাঁরিত। জড়ের নাকি নিজের ইচ্ছামত কিছু হয় না এই জন্য জড়ের পক্ষে কিছুই অসঙ্গত কৌতুকাঁবহ হইতে পারে না। এই জন্য অনপেক্ষিত হুঁচট বা দুর্গন্ধ হাস্জনক নহে। চায়ের চামচ যদি দৈবাৎ চায়ের পেয়ালা হইতে চ্যুত হইয়া দোয়াতের কালির মধ্যে পড়িয়া! যায় তবে সেটা চামচের পক্ষে হীস্যকর নহে-_ভীরাকর্ষণের নিয়ম তাহার লঙ্ঘন করিবার জো নাই) পঞ্চভৃত। ২৪৩ এর্পাস্পিসপাসিপািসিাসিত৯িপসপীসি পাপন পাস্িপসিপাসিপাসিপাসপিস্পিস্পাস্পিস্পিসিপ উলাসপসপাসিপানিসি্ালিসিএসি পরই দা কিন্তু অনামনম্ক লেখক যি তাহার চায়ের চামচ দোয়াতের মধ্যে ডুবাইরা চা খাইবার চেষ্টা করেন তবে সেটা কৌতুকের বিষয় বটে। ধর্মনীতি যেমন জড়ে নাই, অসঙ্গতিও সেইরূপ জড়ে নাই। মনঃপদার্থ প্রবেশ করিয়া যেখানে দ্বিধা জন্মাইর! দিয়াছে সেইখানেই উচিত এবং অনুচিত, সঙ্গত এবং অদ্ভুত। কৌতুহল জিনিষটা অনেক স্থলে নিষ্ঠুর; কৌতুকের মধ্যেও তে আছে। সিরাজন্দৌলা দুইজনের দাড়িতে দাড়িতে বাধিয়! উভয়ের নাকে নন্ত পুরিয়! দিতেন এইরূপ প্রবাদ শুনা যায়__উভয়ে হাচিতে আন্ত করিত তখন সিরাঁজদৌলা আমোদ অনুভব করিতেন। ইহার মধ্যে অসঙ্গতি কোন্খানে? নাকে নস্য দিলে ত হাচি আসিবারই কথা। কিন্তু এখানেও ইচ্ছার সহিত কাধ্যের অসঙ্গতি । যাহাদের নাকে নস্য দেওয়। হইতেছে তাহাদের ইচ্ছা নয় বে তাহার! হাচে, কারণ, হাচিলেই তাহাদের দাড়িতে অকম্মাৎ টান পড়িবে কিন্তু তথাপি তাহাদিগকে হাচি- তেই হইতেছে । এইরূপ ইচ্ছার সহিত অবস্থার অগঙ্গতি, উদ্দেশ্রের মহিত উপায়ের অসঙ্গতি, কথার সহিত কার্ের অগঙ্গতি, এগুলোর মধ্য নিষ্টরতা আছে। অনেক সমর আমরা যাঁহাকে লইরা হাসি নে নিজের অবস্থাকে হাস্যের বিষয় জ্ঞান করে না। এই জন্যই পাঁঞ্চভৌতিক সভায় ব্যোম বলিয়া- ছিলেন, যে, কমেডি এবং উ্যাজেডি কেবল পাঁড়নের মাত্রীভেদ | কমে- ডিতে যতটুকু নিষ্ঠুরত। প্রকাশ হয় তাহাতে আমাদের হাসি পায় এবং টযাজেডিতে যতদুর পর্যন্ত যার তাহাতে আমাদের চোখে জল আসছে গর্দভের নিকট অনেক টাইটীনিয়। অপুর্ব মোহব্শতঃ যে 'আত্মবিমর্জন করিয়া! থাকে তা মাত্রাভেদে এবং পাত্রভেদে মন্মরভেৰী শেকের কারণ হইয়া উঠে। অসঙ্গতি কমেডিরও বিষয়, অসঙ্গতি ট্যাজেডিরও বিষয় । কমেডিতেও ২৪৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । পিসি সিসি িিসলিপ লাস বাসিতাসি পাসিপািপীসিপাসিবাস্পািসিলাসপাি পাসপাস্পিিস্ি পাপাসপীস্মপিসিলাসিপাসিপাসিপাসিলাসিপাস্পাস্পিসি ইচ্ছার সহিত অবস্থার অদন্গতি প্রকাশ গায়। ফল্াফ উনিও সরবাসিনী রঙ্গিনীর প্রেমলালসায় বিশ্বস্তচিত্বে অগ্রসর হইলেন, কিন্তু ুর্ীতির এক- শেষ লাভ করিয়া বাহির হইয়া আসিলেন;_ রামচন্দ্র যখন রাবণ বধ করিয়া, বনবাস--প্রতিজ্ঞাপুরণ করিয়া, রাজ্ো ফিরিয়া আসিয়া দাম্পত্া সখের চরমশিখরে আরোহণ করিয়াছেন এমন সময় অকন্মাৎ বিনা মে বভ্রাঘাত হইল, গর্ভবতী মীতাকে অরণ্যে নির্বাঘিত করিতে বাধ্য হই- লেন। উভয় স্কুলেই আশার সহিত ফলের, ইচ্ছার সহিত অবস্থার অস- নতি প্রকাশ পাইতেছে। অতএব স্পট দেখা যাইতেছে, অসঙ্গতি ছুই শ্রেণীর আছে; একটা হাম্যজনক, আর একটা ছুঃখজনক | বিরক্তি জনক, বিশ্বয়্নক, রোষজনককে ও আমরা শেষ শ্রেণীতে ফেলিতেছি। অর্থাৎ অপঙ্গতি খন আমাদের মনের অনতিগভীর স্তরে আঘাত করে তথনই আমাদের কৌতুক বোধ হয়, গভীরতর স্তরে আঘাত করিলে আমাদের দুঃখ বোধ হয়। শিকারী যখন অনেকক্ষণ অনেক তাঁক করিয়া হংসত্রমে একটা দূরস্থ শ্বেত পদার্থের প্রতি গুলি বর্ষণ করে এবং ছুঁটিয়া কাছে গিয়! দেখে সেটা ছিন্ন বন্ড, তখন তাহার দেই নৈরাস্তরে আমাদের হাসি পায়; কিন্তু কোন লৌক যাহাকে আপন জীবনের পরম পদার্থ মনে করিয়! একাগ্রচিন্তে একান্ত চেষ্টায় আজন্মকাল তাহার অন্ুপরণ করিয়াছে এবং অবশেষে দিদ্ধকাম হইয়| তাহাকে হাতে লইয়া দেখিয়াছে দে তুচ্ছ প্রবঞ্চনীমীত্র, তখন তাহার দেই নৈরাস্তে অন্তঃকরণ ব্যথিত হয়। স্কুল কথাটা এই যে, অসঙ্গতির তার অল্পে অন্নে চড়াইতে চড়াইতে বিশ্ময় ক্রমে হাস্যে এবং হাস্য ক্রমে অশ্রজলে পরিণত হইতে থাকে। পঞ্চভৃত। ২৪৫ পস্পিসপস্পাস্পিস্পিসিপসপস্সিপাসিল পোলা সিসিক সা সৌন্দর্য সম্বন্ধে সন্তোষ । দীপ্তি এবং শোতম্িনী উপস্থিত ছিলেন না,--কেবল আমরা চাঁরি জন ছিলাম। সমীর বলিল, দেখ দেদিনকার সেই কৌতুকহাঁস্যের প্রসঙ্গে আমার একটা কথ| মনে উদয় হইয়াছে । অধিকাংশ কৌতুক আমাদের মনে একটা কিছু অদ্ভুত ছবি আনয়ন করে এবং তাহাতেই আমাদের হাদি পায়। কিন্তু যাহারা স্বভাবতই ছবি দেখিতে পায় না, যাহাদের বুদ্ধি ত্যাবষ্ট্যাক্ট, বিষয়ের মধ্যে ভ্রমণ করিয়া থাকে কৌতুক তাহাদিগকে সহস! বিচলিত করিতে পারে না। ক্ষিতি কহিল, প্রথমত: তোমার কথাটা স্পষ্ট বুঝা গেল না, দ্বিতীযতঃ আযাবষ্টযাক্ট, শবটা ইংরাজি । সমীর কহিল, প্রথম অপরাধটা খণ্ডন করিবার চেষ্টা] করিতেছি কিন্ত দ্বিতীয় অপরাধ হইতে নিষ্কৃতির উপায় দেখি না, অভএব স্থধীগণকে ওটা নিজগুণে মার্জনা করিতে হইবে । আঁমি বলিতেছিলাম, যাহারা ভ্রব্য- টাকে সম্পূর্ণ বাদ দিয়া তাহার গুণটাকে অনায়াসে গ্রহণ করিতে পারে তাহার! স্বভাঁবত হাস্তরস-র্দিক হয় না। ক্ষিতি মাথা নাঁড়িয়া কহিল, উদ্ী, এখনো পরিষ্কার হইল না । সমীর কহিল, একটা উদীহরণ দিই। প্রথমতঃ দেখ, আমাদের সাহিত্যে কোন সুন্দরীর বর্ণনাকালে ব্যক্তিবিশেষের ছবি আকিবুর দিকে লক্ষ্য নাই; মেরু দাড়িম্ব কদস্ব বিশ্ব প্রস্ৃতি হইতে কতকগুলি গুণ বিচ্ছিন্ন করিয়া লইয়! তাহারই তালিকা দেওয়া হয় এবং সুনারী- মাত্রেরই প্রতি তাহার আরোপ হইয়া থাকে । আমরা ছবির মত স্পষ্ট করিয়া কিছু দেখি ন! এবং ছবি আঁকি না_সেই জন্য কৌতুকের একটি ২৪৬ বিচিত্র প্রবন্ধ প্রধান অঙ্গ হইতে আমরা বঞ্চিত। আমাদের প্রাচীন কাব্য প্রশংসা- চ্ছলে গজেন্দ্রগমনের সহিত শ্ুন্বরীর চলনের তুলন! হইয়া থাকে । এ তুলন[টি অগ্ঠদেশীর মাহিত্যে নিশ্চরই হাস্তকর বলিয়। গণ্য হইত,কিন্তু এমন একটা! অদ্ভুত তুলনা আমাদের দেশে উদ্ভূত এবং সাধারণের মধে! প্রচা- রিত হইল কেন? তাহার প্রধান কারণ, আমাদের দেশের লোকেরা দ্রব্য হইতে তাহার গুণট| অনায়াসে বিশ্লিষ্ট করিয়া লইতে পারে। ইচ্ছা" মত হাতি হইতে হাতির সমস্তটাই লোপ করিয়া দিয়া কেবলমাত্র তাহার মন্দগমনটুকু বাহির করিতে পারে, এই জন্য ধোড়প্রী সুন্দরীর প্রতি যখন গজেন্দরগমন আরোপ করে তখন নেই বুহদীকার জন্তটাকে একে- বারেই দেখিতে পায় না। যখন একটা সুন্দর বস্তুর সৌন্দর্য্য বর্ণনা করা কবির উদ্দেশ্ত হয় তখন সুন্দর উপমা নির্ধাচন করা আবশ্ঠক ; কারণ, উপমা'র কেবল সাদৃগ্ত অংশ নহে অগ্তান্ত অংশও আমাদের মনে উদর না হইয়া থাকিতে পারে ন। | সেই জন্ত হাতির শুড়ের সহিত স্ত্রীলোকের হাত পায়ের তুলনা করা সানান্ত ছুঃসাহদিকতা নহে। কিন্তু আমাদের দেশের পাঠক এ তুলনায় হাসিল না বিরক্ত হইল না; তাহার কারণ, হাতির শুড় হইতে কেবল তাহার গোলত্বটুকু লইরা আর সমস্তই আমরা বাদ দিতে পারি, আমাদের সেই আশ্চর্য্য ক্ষমতাটি আছে। গৃধিনীর সহিত কানের কি সাদৃশ্ত আছে বলিতে পারি না, আমার তছ্‌পযুক্ত কল্পনাশক্তি নাই; কিন্ত সুন্দর মুখের ছুই পাশে ছুই গৃধিনী ঝুলিতেছে মনে করিয়া হাঁসি পায় না কল্পনাশক্তির এত অপাড়তাও আমার নাই। বোধ কনি নব্য শিক্ষায় আমাদের না হাসিবার স্বাভাবিক ক্ষমতা বিরত হইয়৷ যাওয়াতেই এনপ দুর্ঘটনা ঘটে। ক্ষিতি কহিল,_-আমাদের দেশের কাব্যে নারীদেহের বর্ণনায় যেখানে উচ্চতা বা গেলতা বুঝাইবার আবশ্তক হইয়াছে সেখানে কবিরা অনায়াসে গম্ভীর মুখে সুমের এবং মেদিনীর অবতারণা করিয়াছেন, তাহার কারণ, পঞ্চভূত। ২৪৭ ৭ পপি পাস লাসিপাসটিলিসটিশীিলািরিসপাসপিী সাত ৯ পাসিপাস্িলাস ৯ লাসপাসপিসপা্িপাসপািাসিপছিিপাসিত৯পাসসিিলাসিপসি পাস, আযাব ্্যাক্টের দেশে পরিমাণবিচারের অবশ্ঠকত| নাই ; গোরুর পিঠের কুঁজও উচ্চ, কাঞ্চনজজ্বার শিখরও উচ্চ অতএব আ্াব স্টান্ট, উচ্চতাটুকু- মাত্র ধরিতে গেলে গোকুর পিঠের কুঁজের সহিত কাঞ্চনজজ্ঘার তুলনা করা যাইতে পারে? কিন্তু বে হতভাগ্য কাঞ্চনজজ্ঘার উপমা *গুনিবামাত্র করনাপটে হিমালরের শিখর চিত্রিত দেখিতে পার, যে বেচারা গিরিচুড়া হইতে আলগোছে কেব্ন তাছগার উচ্চতাঁটুকু লইয়া বাকি আর সমস্তই আড়াল রা পারে না, তাহার পক্ষে বড়ই মুদ্ষিল। ভাই সশীর, তোমার আজিকার এই কাট! ঠিক মননে লাগিতেছে_ প্রতিবাদ না করিতে পারির়া অতান্ত দুঃখিত আছি । ব্যোম কহিল, কিছু প্রতিবাদ করিবার নাই তাহা বণিতে পারি না। সমীরের মতট! কিঞ্চিৎ পারবর্ভিত আকারে বলা আবশ্তটক। আসল কথাটা এই- আমরা অন্র্জগতনিহারী। বাতিরর জগৎ আমাদের নিকট প্রবল নহে। আমরা যাহা মনের দধো গড়িন। তুলি বাহিরের জগৎ তাহার গ্রতিবাদ করিলে পে প্রতিবাদ গ্রাহথহই করি শা। যেমন ধূমক্তের লঘু রর কোন এহের পথে আমিরা পড়িলে তাহার পুচ্ছেরই ক্ষতি হইতে পারে কিন্তু গ্রহ অগ্রতিহতভাবে অনায়াসে চলি! যার, নেননি নি সহিত আমাদের অন্তর্গতের রীতিমত সংঘাত কোন কালে হর না রা বহুজংটাই হঠিরা বান। যাহাদের কাছে হাতিটা ত্যন্ত প্রত্যক্ষ প্রবল সত্য, তাহারা গজেন্দ্রগমানের উপমা গজেন্রটাকে বেমা- লুম ঝাদ দিয়া কেবল গমনটুকুকে রাখিতে পারে না। গ্েন্্র বিপুল দেহ বিস্তার পুর্ধক অটলভাবে কাব্যের পথ রোধ করিয়া দড়াইয়া থ [কে। কিন্ত আমাদের কাছে গজ বল, গজেন্্র বল, কিছুই কিছু নয়। সে আমাঁদের কাছে এত অধিক জাঙজল্যমান নহে, যে, তাহীর গমনটুকু রাখিতে হইলে তাহাকে স্থুদ্ধ পুষিতে হইবে। ক্ষিতি কহিল, আমর! অন্তরের বাশের কেল্লা! বাধিয়! তীতুমীরের ২৪৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । শাপলার সলাসিী ভপা্পা সাসপান্পিসপিসপাসটিলাসিলিসিলাস্পিপ সপ পা মত বহিঃ প্রকৃতির সমস্ত “গোল! খা ডালা”-_-সেই জন্ গজেন্দ্র বল, সুমের বল, মেদিনী বল কিছুতেই আমাদিগকে হ্ঠাইতে পারে না। কাব্যে কেন, জ্ঞানরাজ্যেও আমরা বহিজ গংকে খাতিরমাত্র করি না। একটা সহজ উদ্দাহরণ মনে পড়িতেছে। আমাদের সাত সুর ভিন্ন ভিন্ন পণ্ু- পক্ষীর কণ্ঠস্বর হইতে প্রাপ্ত, ভারতবর্ষীপন সঙ্গীত শাস্ত্রে এই প্রবাদ বহুকাল চলিয়৷ আসিতেছে-_এ পধ্যস্ত আমাদের ওন্তাদদের মনে এ সম্বন্ধে কোন সন্দেহমাত্র উদয় হয় নাই, অথচ বহিজগৎ হইতে প্রতিদিনই তাহার প্রতিবাদ আমাদের কানে আসিতেছে । স্বরমালার প্রথম স্তুরটা যে গাধার স্থুর হইতে চুরি এরূপ পরমাশ্চর্ধ্য কল্পনা কেমন করিষ্তাঠ যে কোন স্ুরজ্ঞ ব্যক্তির মনে উদয় হইল তাহ! আমাদের পক্ষে স্থির কর! দুরূহ । ব্যোম কহিল, গ্রীকদিগের নিকট .বহিজগৎ বাম্পবৎ মরীচিকাবৎ ছিল না, তাহ প্রত্যক্ষ জাজল্যমান ছিল, এই জন্য অত্যন্ত যত্বুসহকারে তাহাদিগকে মনের স্থুষ্টির সহিত বাহিরের স্থষ্টির সামঞ্জস্ত রক্ষা করিতে হুইত। কোন বিষয়ে পরিমাণ লঙ্ঘন হইলে বাহিরের জগৎ আপন মাপকাঠি লইয়া তাহাদিগকে লজ্জা দিত। সেই জন্য তাহারা আপন দেবদেবীর মৃত্তি স্থন্দর এবং স্বাভাবিক করিয়া গড়িতে বাধ্য হইয়াছিলেন _নতুবা জাগতিক স্ষ্টির সহিত তাহাদের মনের স্থষ্টির একটা গ্রবল সংঘাত বাধিয়! তাহাদের ভক্তির ও আনন্দের ব্যাঘাত করিত। আমাদের সে ভাবনা নাই। আঁমর। আমাদের দেবতাঁকে যে মুত্তিই দিই না কেন আমাদের কল্পনার সহিত বা বহিজগতের সহিত তাহার কোন বিরোধ ঘটে না। মুধিকবাহন চতুভূজ একদস্ত লম্বোদর গজানন মুত্তি আমাদের নিকট হাম্তজনক নহে, কারণ, আমরা সেই মূর্তিকে আমাদের মনের ভাবের মধ্যে দেখি, বাহিরের জগতের সহিত, চারিদিকের সত্যের সহিত তাহীর তুলন! করি না । কারণ, বাঁহিরের জগৎ আমাদের নিকট তেমন প্রবল নহে, প্রত্যক্ষ সত্য আমাদের নিকট তেমন সুদ নহে, আমরা পিতা পাম্পি পা পাসিসপিপাস্িশসি পাস সিপািপাস্পিসপস্সপাসপাসপি ১৩০ লাস লাসিপাসিাসিপিসছি পপি ১৪ ্ যেকোন একটা উপলক্ষ্য অবলম্বন করিয়া নিজের মনের ভারতে জাগ্রত করিয়া রাখিতে পারি। সমীর কহিল,--যেটাকে উপলক্ষ্য করিয়া আমর! প্রেম বা ভক্তির উপভোগ অথবা! সাধনা করিয়া থাকি, সেই উপলক্ষ্যটাকে সম্পূর্ণতা বা স্বাভাবিকতায় ভূষিত করিয়া তোল! আমরা অনাবশ্তক মনে করি। আমরা সন্মুখে একটা কুগঠিত মুত্তি দেখিয়াও মনে তাহাকে সুন্দর বলিয়! অন্নুভব করিতে পারি। মানুষের ঘননীলবর্ণ আমাদের নিকট স্বভাবত স্থন্দর মনে না হইতে পারে, অথচ ঘননীলবর্ণে চিত্রিত কৃষ্ণের মুস্তিকে সুন্দর বলিয়া ধারণা করিতে আমাদিগকে কিছুমাত্র প্রয়াস পাইতে হয় না। বহির্জগতের আদর্শকে যাহার! নিজের স্বেচ্ছামতে লোপ করিতে জানে না, তাহারা মনের সৌনর্ধাভাবকে মুদ্তি দিতে গেলে কখনই কোন অস্বাভাবিকতা! বা অসৌন্দর্যের সমাবেশ করিতে পারে না। গ্রীকদের চক্ষে এই নীলবর্ণ অত্যন্ত অধিক পীড়। উৎপাদন করিত। ব্যোম কহিল, আমাদের ভারতবধ্ধীয় প্রকৃতির এই বিশেষত্বটি উচ্চ- অঙ্গের কলাবিগ্ভার ব্যাঘাত করিতে পারে কিন্তু ইহার একটু স্ববিধাও আছে। ভক্তি শ্নেহ প্রেম, এমন কি, সৌন্দর্্ভোগের জন্য আমাদিগকে বাহিরের দাসত্ব করিতে হয় না, সুবিধা স্থযোগের প্রতীক্ষা করিয়া বসিয়! খাকিতে হয় না। আমাদের দেশে স্ত্রী স্বামীকে দেবতা বলিয়া পূজ। করে-_কিন্তু সেই ভক্তিভাব উদ্রেক করিবার জন্য স্বামীর দেবত্ব বা মহত্ব থাকিবার কোন আবশ্তক করে না; এমন কি ঘেরতর পশুত্ব থাকিলেও পুজার ব্যাঘাত হয় না। তাহারা একদিকে স্বামীকে মানুষভাবে লা্না গঞ্জনা করিতে পারে আবার অন্তদিকে দেবতাভাবে পুজাও করিয়া থাকে । একটাতে অন্যটা অভিভূত হয় না। কারণ, আমাদের মনোৌজগতের সহিত বাহাজগতের সংঘাত তেমন প্রবল নহে। সমীর কহিল, কেবল স্বামীদেবতা কেন, পৌরাণিক দেবদ্েবী ২৫০ বিচিত্র প্রবন্ধ | সম্বন্ধেও আমাদের মনের এইরূপ দুই বিরোধী ভাব আছে তাহারা পরম্পর পরস্পরকে দূরীকৃত করিতে পারে না। আমাদের দেবতাদের সম্বন্ধে যে সকল শান্ত্রকাহিনী ও জনপ্রবাদ প্রচলিত আছে তাহা আমাদের ধর্ববুদ্ধির উচ্চ আদর্শনঙ্গত নহে, এমন কি, আমাদের সাহিত্যে, আমাদের সঙ্গীতে, সেই সকল দেবকুত্মার উল্লেখ করিয়া! বিস্তর তিরস্কার ও পরিহাসও আছে-_কিন্তু বাঙ্গ ও ভতননা করি বলিয়া যে ভক্তি করি না তাহা নহে। গ্াভীকে জন্ত বলিয়া জানি, তাহার বুদ্ধিবিবেচনার প্রতিও কটাক্ষপাত করিরা থাকি, ক্ষেতের মধ্যে প্রবেশ করিলে লাঠিহাতে তাহাকে তাড়াও করি, গোয়ালঘরে তাহাকে এক হাটু গোময় পক্ষের মধো দাড় করাইয়া রাখি। কিন্তু ভগবতী বলিরা ভক্তি করিবার সমর সেসব কথা মনেও উদয় হয়না! ক্ষিতি কহিল, আবার দেখ, আমর চিরকাল বেহ্ুরো লোককে গাধার সহিত তুলনা করিয়া আসিতেছি অথচ বলিতেছি গাধাই আমা- দিগকে গ্রথম সুর ধর।ইর। দিয়াছে । যখন এটা বলি তখন ওটা মনে আনি না, যখন ওটা বলি তখন এটা মনে আনি না। ইহা আমাদের একটা বিশেষ ক্ষমতা, সন্দেহ নাই, কিন্তু এই বিশেষ ক্ষমতাঁবশত ব্যোম যে সুবিধার উল্লেখ করিতেছেন আমি তাহাকে সুবিধা মনে করি না! কাঙ্সনিক স্থ্টি বিস্তার করিতে পারি বলিয়! অর্থলাভ, জ্ঞানলাভ এবং সৌন্দর্য্য ভোগ স্ধন্ধে আমাদের একটা গুঁদাসীন্তজড়িত সন্তোষের ভাৰ আছে। আমাদের বিশেষ কিছু আবশ্তক নাই ৷ যুরোগীয়েরা তাহাদের বৈজ্ঞানিক অনুমানকে কঠিন প্রমাণের দ্বারা সহঅবার করিয়া পরীক্ষা করিয়া দেখেন তথাপি তাহাদের সন্দেহ মিটিতে চায় না--আমরা মনের মধ্যে যদ্দি বেশ একটা সঙ্গত এবং সুগঠিত মত খাড়া করিতে পারি তবে তাহার সুসঙ্গতি এবং স্থুমাই আমাদের নিকট সর্বোৎকৃষ্ট প্রমাণ বলিয়। গণ্য হয়, তাহাকে বহির্জগতে পরীক্ষা করিয়া দেখ! বাহুল্য বো টা । ৫১ পাপা সিপাসিসস * ০ ৯ পান্দপা্মিপা সা সিরাপ পাপা সিলাসাপাস্মিশ সপ পস্পিসিপাসিপাসপিস্লি পিসি পাসপাপাসি ৮৯ সিপসিলিসিপাসিলা সি পাপন পাস পাপ পি পাল অ্াি সলাত টর্সিি ভ্ঞনবৃ্তি সম্বন্ধে যেমন, রতি সম্বন্ধে ্ সেইবূপ। আমরা সৌনদর্্রসের চষ্চ| করিতে চাই, কিন্তু সে জন্ত অতি যত্্পহকারে মনের আদর্শকে বাহিরে মুত্তিমান করিয়া তোলা আবশ্তক বোধ করি না- যেমন- তেমন একটা-কিছু হইলেই সন্ত্ট থাকি,_-এমন কি, আলঙ্কারিক অত্যুক্তি অনুসরণ করিয়া একটা বিরুত মুক্তি খাড়া করিয়া তুলি এবং সেই অনঙ্কত বিরূপ বিসদ্বশ বাপারকে মনে মনে আপন ইচ্ছামত ভাবে পরিণত করিয়া তাহীতেই পরিতৃপ্ত হই; আপন দেবতাকে, আপন সৌন্দর্যের আদর্শকে প্রক্ৃতরূপে সুন্দর করিয়া তুলিবার চেষ্টা করি না। ভক্তিরসের চর্চ। করিতে চাই, কিন্তু বথার্থ ভক্তির পাত্র অন্বেষণ করিবার কোন মাবগ্তকতা বোধ করি না-অপাত্রে ভক্তি করির়াও আমরা সন্তোষে থাকি । সেই জন্য আমরা বলি গুরুদেব আমাদের পুজনীয়, এ কথা বলি নাবে বিনি পুজনীর তিনি আমাদের গুরু। হয়ত গুরু আমার কানে যে মন্ত্র দিয়াছেন তাহার অর্থ তিনি কিছুই বুঝেন না, হয়ত এ আনার দিথ্যা মকদ্দনার গ্রধান মিথ্যা সাক্ষী তথাপি র পদধুলি আমার শিরোধার্ধা--একপ মত গ্রহণ করিলে ভর্তির জন্ত রে জনকে খুজিতে হয় না, দিব্য আরামে ভক্তি করা ঘায়। সনীর কহিল--শিক্ষার প্রভাবে আমাদের মধ্যে ইহার বাতিক্রম ঘটিতেছে। বঙ্কিমের কুষ্চচরিত্র তাহার একটি উদ্াহরণ। বঙ্কিম কৃষ্চকে পুজা করিবার এবং কুঞ্চপূগজ! প্রচার করিবার পূর্বে কৃষ্ণকে নিশ্ধন করিয়। তুলিবার চে করিরাছেন। এমন কি, কঞ্চের চরিত্রে অনৈপর্ণিক যাহা কিছু ছিল তাহাও তিন বর্জীন করিয়-* ছেন। তিনি কৃষ্ণকে তাহার নিজের উচ্চতম আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। তিনি একথা বলেন নাই যে, দেবতার কোন কিছুতেই দোষ নাই, তেনীয়ানের পক্ষে সমস্ত মার্জনীয়। তিনি এক নূতন অসন্তোষের স্বত্রপাত করিয়াছেন ;--তিনি পূজা বিতরণের ২৫২ বিচিত্র প্রবন্ধ । পুর্ব্ব প্রাণপণ চেষ্টায় দেবতাকে অন্বেষণ করিয়াছেন ও হাতের কাছে যাহাকে পাইয়াছেন তাহাকেই নমৌনমঃ করিয়া সন্তষ্ট হন নাই। ক্ষিতি কহিল-_এই অসস্তোষটি ন! থাকাতে বহুকাল হইতে আমাদের সমাজে দেবতাকে দেবতা হইবার, পুজ্যকে উন্নত হইবার, মৃর্তিকে ভাবের অনুরূপ হইবার প্রয়োজন হয় নাই। ব্রাহ্ষণকে দেবতা! বলিয়া জানি, সেই জন্য বিন! চেষ্টায় তিনি পুজা প্রাপ্ত হন, এবং আমাদেরও ভক্তিবৃন্তি অতি অনায়াসে চরিতার্থ হয়। স্বামীকে দেবতা বলিলে স্ত্রীর ভক্তি পাইবার জন্ট স্বামীর কিছুমাত্র যোগ্যতালাভের আবশ্যক হয় না, এবং স্্রীকেও যথার্থ ভক্তির যোগ্য স্বামী “অভাবে অসন্তোষ অনুভব করিতে হয় না। দৌন্দর্য অনুভব করিবার জন্য সুন্দর জিনিষের আবশ্যকতা নাই, ভক্তি বিতরণ করিবার জন্য ভক্তিভীজনের প্রয়োজন নাই এরূপ পরমসস্তোষের অবস্থাকে আমি শ্রবিধা মনে করি না। ইহাতে কেবল সমাজের দীনতা, শ্রী-হীনতা এবং অবনতি ঘটিতে থাকে । বহির্জগৎ্টাকে উত্তরোত্তর বিলুপ্ত করিয়া দিয়া মনৌজগৎকেই সর্ধপ্রাধান্য দিতে গেলে 'যে ডালে বসিয়া! আছি সেই ডাঁলকেই কুঠারাঘাত করা হয়। ভদ্রতার আদর্শ ] শ্রোততস্বিনী কহিল, দেখ, বাঁড়িতে ক্রিয়াকর্ম আছে, তোমরা ব্যোমকে /একটু ভদ্রবেশ পরিয়া আদিতে বলিয়ো। শুনিয়া আমরা সকলে হাসিতে লাগিলাম।. দীর্তি একটু রাগ করিয়া বলিল-_না, হাসিবার কথা নয়; তোমর1 ব্যোমকে সাবধান করিয়! 'দাঁও ন। বলিয়৷ সে ভদ্রসমাজে এমন উন্মাদের মত সাজ করিয়া আসে। এ সকল বিষয়ে একটু সামাজিক শাসন থাঁকা দরকার । 4 পঞ্চতৃত। ২৫৩ সস পাপা পাপ সিসি সাসপিসিপাসাস্ত ৬৫৯৫৯ পা 5১ পাসপাসপসপিপসপা্সি পাস সিপাসিসটিপাসাসিসিসিসিপািপাছিতা ছিলি পালিত সমীর কথাটাকে ফলাইয়া তুলিবার অভিপ্রায়ে জিজ্ঞাসা করিল__ কেন দরকার ? দীন্তি কহিল-_কাব্যরাঁজ্যে কবির শাঁদন যেমন কঠিন ; কৰি যেমন ছন্দের কোন শৈথিল্য, মিলের কোন ক্রি, শব্দের কোন বূঢ়তা মার্জনা করিতে চাহে না,_আমাদের আচার ব্যবহার বসন ভূষণ সম্বন্ধে সমাঁজ- পুরুষের শাসন তেমনি কঠিন হওয়। উচিত, নতুবা সমগ্র সমাজের ছন্দ এবং সৌন্দর্য্য কখনই রক্ষা হইতে পারে না। ক্ষিতি কহিল, ব্যোম বেচারা যদি মানুষ না হইয়া শব্দ হইত, তাহা হইলে এ কথা নিশ্চয় বলিতে পারি ভট্টিকাব্যেও তাহার স্থান হইত না) নিঃসন্দেহ তাহাকে মুগ্ধবোধের সুত্র অবলম্বন করিয়া বাস কবিতে হইত। আমি কহিলান, সমাজকে সুন্দর, স্ুশিষ্ট, সুশৃঙ্খল করিয়া তোল! আমাদের সকলেরই কর্তব্য দে কথা মানি কিন্তু অন্যমনস্ক ব্যোম বেচার! সে কর্তব্য বিস্বৃত হইয়া দীর্ঘ পদবিক্ষেপে যখন চলিয়া যায় তখন তাহাকে মন্দ লাগে না। দীপ্তি কহিল--ভাল কাপড় পরিলে তাহাকে আরও ভাল লাগিত। ক্ষিতি কহিল--স্ত্য বল দেখি, ভাল কাপড় পরিলে ব্যোমকে কি ভাঁল দেখাইত ? হাতীর যদি ঠিক মযুরের মত পেখম্‌ হয় তাহা! হইলে কি তাহার পৌন্দধ্য বুদ্ধি হয়; আবার ময়ূরের পক্ষেও হাতীর লেজ শৌভ। পায় না-তেমনি তোমাদের ব্যোমকে সমীরের পোষাঁকে মানাক়্ না, আবার সমীর যদ্দি ব্যোমের পোষাক পরিয়া আসে উহাকে ঘরে চকিতে দেওয়া যায় না। সমীর কহিল, আসল কথা, বেশভূষা! আচার ব্যবহারের স্বলন যেখানে শৈথিল্য, অজ্ঞতা ও জড়ত্ব সুচনা করে সেইথানেই তাহা কদধ্য দেখিতে হয়। সেই জন্ত আমাদের বাঙালীপমাজ এমন শ্রীবিহীন। লক্ষমীছাঁড়া, যেমন সমাজছাড়া তেমনি বাঁঙালীদমাজ যেন পৃীসমাজের বাহিরে ।, ২৫৪ বিচিত্র প্রবন্ধ । হিনদুস্থানীর সেলামের মত বাঁডালীর কোন সাধারণ অভিবাদন নাই। তাহার কারণ, বাঙালী কেবল ঘরের ছেলে, কেবল গ্রামের লোক; সে কেবল আপনার গৃহসম্পর্ক এবং গ্রামসম্পর্ক জানে» সাধারণ পৃথিবীর সহিত তাহার কোন সম্পর্ক নাই--এ জন্য অপরিচিত সমাজে সে কৌন শিষ্টাচারের নিয়ম খুঁজিয়া পায় না। একজন হিন্দু স্থানী ইংরাজকেই হৌক্‌ আর চীনেম্যান্‌কেই হৌক্‌ ভদ্রতাস্থলে সকলকেই সেলাম করিতে পারে আমরা সেস্থলে নমস্কার করিতেও পারি না, আমর! সেখানে বর্ধর। বাঙালী স্ত্রীলোক যথে্ট আবুত নহে এবং সর্ধদাই অদন্বত-_তাহার কারণ, সে ঘরেই আছে) এই জন্ত ভাঙ্গুর শ্বশুর সম্পর্কীয় গৃহগচলিত যে সকল কৃত্রিম লজ্জা! তাহ! তাহার প্রচুর পরিমাণেই আছে কিন্তু সাধারণ ভদ্রসদাজসঙ্গত লজ্জ! সম্বন্ধে তাহার সম্পূর্ণ শৈথিল্য দেখা যায়। গায়ে কাপড় রাখা বা না রাখার বিষয়ে বাঙালী পুরুষদেরও অপর্যাপ্ত ওদাসীন্ত , চিরকাল অধিকাংশ সময় আত্বীরসমাজে বিচরণ করিয়া এ সন্বন্ধে একটা অবহেলা তাহার মনে দৃঢ় বদ্ধমুন হইয়া গিয়াছে। অতএব বাঙালীর বেশভৃষা চাঁলচলনের অভাবে একটা অপন্িমিত আলশ্ত, শৈথিল্য, স্বেন্ছাচার ও আত্মসম্মীনের অভাব প্রকাঁশ পার স্থতরাং তাহা যে বিশুদ্ধ বর্ধরত। তাহাতে আর সন্দেহ নাই। আমি কহিলাম_কিন্তু সে জন্ত আমরা লজ্জিত নহি। যেমন রোৌগ- বিশেষে মানুষ যাহা খাঁর তাহাই শরীরের মধ্যে শর্কর। হইয়া উঠে তেমনি আমাদের দেশের ভাল মন্দ সমস্তই আশ্যধ্য মানসিক বিকার বশত; কেবল অতিমিষ্ট অহঙ্কারের বিষয়েই পরিণত হইতেছে । আমর বলিয়া থাকি আমাদের সভ্যতা আধ্যাত্মিক সভ্যতা, অশনবসনগত সভ্যতা নহে, সেই জন্তই এই সকল জড় বিষয়ে আমাদের এত অনীসক্তি। সমীর কহিল, উচ্চতম বিষয়ে সর্ধদা লক্ষ্য স্থির রাখাতে নিয়তম ধ পঞ্চভৃত। ২৫৫ ... ৯ উিপাটপিসিপসিপটিপাস প্পিপাখিপালাশি ও সপ পপাসিপাস্পিসিপিস্পাস্পাসিপস্প স্পাসপান্পিসপাস্পিন্পিস্পিসপিস্পিসাস্পািস্পাস্পিসিপাস্পাস্পাসপিশপাশিপাাস্পাশিপাসিপাশীপাসি, বিষয়ে ধাহাদের বিস্বৃতি ও ওদাসীন্ত জন্মে তাহাদের সম্বন্ধে নিন্দার কথা কাহারও মনেও আসে না। সকল সত্যসমাজেই এরূপ এক সম্প্রদায়ের লোক সমাজের বিরল উচ্চশিখরে বাঁ করিয়া থাকেন। অতীত ভারতবর্ষে অধ্যয়ন-অধ্যাপনশীল ব্রাহ্মণ এই শ্রেণীভুক্ত ছিলেন ;-তাহার! গে ক্ষত্রিয় বৈশ্রের স্তায় সাঁজসজ্জা ও কাঁজ কর্মে নিরত থাকিবেন এমন কেহ আশা করিত না। যুরোপেও সে অন্প্রদায়ের লোক ছিল এবং এখনও আছে। মধ্যযুগের আচাধ্যদের কথা ছাঁড়িরা দেওয়া যাক্‌ আধুনিক ঘুরোপেও ন্যাউনের মত লোক বদি নিতান্ত হাল্‌ ফেশানের সান্ধ্যবেশ না পরিয়াও নিমন্ত্রণে যান এবং লৌকিকতার সমস্ত নিয়ম অক্ষরে অক্গরে পালন না করেন তথাঁপি সমাঁজ তাহাকে শাসন করে না, উপহাস,করিতেও সাহন করে ন1। সর্ধাদেশে সর্বকালেই স্বশ্পসংখ্যক মহাস্মা লোকসমাজের মধ্যে থাকিয়া ও সমাজের বাহিরে থাকেন, নতুবা ভারা কাজ করিতে গারেন না এবং সমাজ তাহাদের নিকট হইতে সামাজিকতার ক্ষুদ্র শুক্কগুলি আদায় করিতে নিরস্ত থাকে। কিন্ত আশ্চর্যের বিষয় এই, যে বাংলা দেশে, কেবল কতকগুলি লোক নহে, আমর! দেশস্ুদ্ধ সকলেই সকলপ্রকার স্বভাববৈচিত্র্য ভুলিয়া সেই সমাজাতীত আধ্যাত্মিক শিখরে অবহেলে চড়িয়া বসিয়া আছি। আমরা টিলা কাপড় এবং অত্যন্ত টিলা আদবকায়দা লইয়া দিব্য আরামে ছুটি ভোগ করিতেছি,আমরা যেমন করিয়াই থাকি আর যেমন করিয়াই চলি তাহীতে কাহারও সমালোচনা করিবার কোন অধিকার নাই-- কারণ আমরা উত্তম মধ্যম অপম সকলেই থাটে! ধুতি ও ময়লা ঢাদর্‌ পরিয়। নিগুণ তরঙ্গে লয় পাইবার জন্ট প্রস্তত হইয়া বসিয়া আছি। হেনকালে ব্যোম তাহার বৃহৎ লগুড়খানি হাতে করিয়া আসিয়! উপস্থিত। তাহার বেশ অন্তদিনের অপেক্ষাও অদ্ভুত) তাহার কারণ, আজ ক্রিয়াকর্ম্ের বাঁড়ি বলিয়াই তাহার প্রাত্যহিক বেশের উপরে বিশেষ ২৫৬ | বিচিত্র প্রবন্ধ লাম্পাস্প্পিস্পস্পিস্পিরী পাস লা বাস্টিপামিপা সিপাসিপাস্পাস্মাসদিস্মলসশরসিপাসপসসিপসি পিসি করিয়া একখান! অনির্দিষ্ট-আকৃতি চাপকান গোছের পদার্থ চাপাইয! আসিয়াছে ; তাহার আশপাশ হইতে ভিতরকা'র অনঙ্গত কাপড়গুলার প্রান্ত স্পষ্ট দেখা যাইতেছে ;- দেখিয়া আমাদের হাস্য সম্বরণ করা ছুঃসান্য হইয়া উঠিল এবং দীপ্তি ও জ্পেতম্বিনীর মনে যথেষ্ট অবজ্ঞার উদয় হইল। | | ব্যোম জিজ্ঞাসা করিল, তোমাদের কি বিষয়ে আলাপ হইতেছে? সমীর আমাদের আলোচনার কিন্বদংশ সংক্ষেপে বলিয়া কহিল, আমর! দেশস্ুদ্ধ সকলেই বৈরাগ্যে “ভেক” ধারণ করিয়াছি । ব্যোম কহিল, বৈরাগ্য ব্যতীত কোন বৃহৎ কর্ম হইতেই পারে না। আলোকের সহিত যেমন ছায়া, কর্মের সহিত তেমনি বৈরাগ্য নিরত সংযুক্ত হইয়া আছে। যাহার যে পরিমাণে বৈরাগ্যে অধিকার পৃথিবীতে সে সেই পরিমাণে কাজ করিতে পারে। ক্ষিতি কহিল, সেইজন্য পৃথিবীন্ুদ্ধ লোক যখন সুখের প্রত্যাশায় সহস্র চেষ্টায় নিযুক্ত ছিল তখন বৈরাগী ডাক্ুয়িন্‌ সংসারের সহত্র চেষ্টা পরিত্যাগ করিয়া কেবল প্রমাণ করিতেছিলেন, যে, মানুষের আদিপুরুষ বানর ছিল। এই সমাচারটি আহরণ করিতে ডারুয়িনকে অনেক বৈরাগ্য সাধন করিতে হইয়াছিল । ব্যোম কহিল, বহুতর আমক্তি হইতে গারিবাল্ডি যদি আপনাকে স্বাধীন করিতে ন। পারিতেন তবে ইটালীকেও তিনি স্বাধীন করিতে পারিতেন না। যে সকল জাতি কন্মিষ্ঠ জাতি তাহারাই যথার্থ বৈরাগ্য জানে। যাহারা জ্ঞান লাভের জন্ত জীবন ও জীবনের সমস্ত আরাম, তুচ্ছ করিয়া মেরুপ্রদেশের হিমশীতল মৃত্যুশালার তুষাররুদ্ধ কঠিন দ্বারদেশে বারম্বার আঘাত করিতে ধাবিত হইতেছে,_যাহার! ধর্ম বিতরণের জন্য নরমাংসতূকৃ রাক্ষমের দেশে চিরনির্বাসন বহন করিতেছে, _ যাহার! মাতৃভূমির আহ্বানে মুহূর্তকালের মধ্যেই ধনজনযৌবনের পঞ্চভৃত । ২৫৭ সপাস্পাসিসসিাসপসলা সপিস্পিশাসপাসপপাসপিপাসপাশিপা সপাসপসিপীসপসপাস, পা পিপিপি পাপা সি ০ রশ পানী, .প পাস্িপিস্পিসপসিপাসপস্পিীসটপস্িলীী পাপা পি সিপ্িপাসিপান্াসপপা সা ৯০৯ পাস ০৭, পাপা নুখশয্যা হইতে গাত্রোথান করিয়া দুঃসহ ক্লেশ এবং অতি নিষ্ঠুর মৃ্্ুর মধ্যে ঝাঁপ দিয়া পড়ে তাহারাই জানে যথার্থ বৈরাগ্য কাহাকে বলে। আর আমাদের এই কর্মহীন শ্রীহীন নিশ্চেষ্ট নিজ্জীব বৈরাগ্য কেবল অধঃপর্ধতত জাতির মুচ্ছাবস্থামাত্র-উহা জড়ত্ব, উহা অহঙ্কারের বিষ নহে। ক্ষিতি কহিল, আমাদের এই মুচ্ছাবস্থাকে আমরা আধ্যাম্মিক “দশী” পাওয়ার অবস্থা মনে করিয়া নিজের প্রতি নিজে ভক্তিতে বিহ্বল হইয়া বসিয়া আছি। ব্যোম কহিল--কন্মীকে কম্ম্ের কঠিন নিয়ম মানিয়া চলিতে হয়, সেই জন্তই মে আপন কর্মের নিয়মপালনউপলক্ষ্যে সমাজের অনেক ছোট কর্তব্য উপেক্ষা করিতে পারে--কিন্তু অকর্মমণ্যের সে অধিকার থাকিতে পারে না। যে লোক তাড়াতাড়ি আপিসে বাহির হইতেছে তাহার নিকটে সমাজ সুদীর্ঘ সুসম্পূর্ণ শিষ্টালাপ প্রত্যাশা করে না। ইংরাজ মালা যখন গায়ের কোর্তী খুলিরা হাতের আস্তিন গুটাইয়া বাগানের কাজ করে তখন তাহাকে দেখিয়া তাহার অভিজাতবংশায়া প্রভুমহিলার লজ্জা পাইবার কোন কারণ নাই। কিন্তু আমরা ব্থন কোন কাজ নাই কম্ম নাই, দীর্ঘ দিন রাজপথপার্থে নিজের গৃহদ্বারপ্রান্তে স্থূল বর্তল উদর উদবাটিত করিয়া! হাটুর উপর কাপড় গুটাইয়া নির্োধের মত তামাক টানি, তখন “বিশ্বজগতের সম্মুখে কোন্‌ মহৎ বৈরাগ্যের, কোন্‌ উন্নত আধ্যাত্মিকতার দৌহাই দিয়া এই কুত্রী। বর্ধরতা প্রকাশ করিয়া থাকি! যে বৈরাগ্যের সঙ্গে কোন মহত্বর সচেষ্ট সাধনা সংযুক্ত নাই তাহা অসভ্যতার নামান্তর মাত্র। ব্যোমের মুখে এই সকল কথ শুনিয়া শ্রোতম্বিনী আশ্চধ্য হ্ইয়। গেল। কিছুক্ষণ চুপ করিয়! থাকিয়৷ বলিল, আমরা সকল ভত্্রলোকেই যতদিন না আপন ভন্ত্রতা রক্ষার কর্তব্য সর্বদা মনে রাখিয়া আপনা- নল ২৫৮ বিচিত্র প্রবন্ধ । শা দিগকে বেশে ব্যবহারে বাসস্থানে সব্মতোভাবে ভদ্র করিয়া রাখবার চেষ্টা করিব ততদিন আমরা আত্মসম্মীন লাভ করিব না এবং পরের নিকট সম্মান প্রাপ্ত হইব না। আমরা নিজের মূল্য নিজে অত্যন্ত কমাইয়া দিয়াছি। টি ক্ষিতি কহিল, সে মূল্য বাড়াইতে হইলে এদিকে" বেতন বৃদ্ধি করিতে হয়, সেটা প্রভৃদের হাতে। দীপ্তি কহিল, বেতন বুদ্ধি নহে চেতন বৃদ্ধির আবশ্তক । আমাদের দেশের ধনীরাও যে অশোভনভাবে থাকে সেটা কেবল জড়তা এবং মুঠতাবশতঃ, অর্থের অভাবে নহে। যাহার টাকা আছে সে মনে করে জুড়ি গাড়ি না হইলে তাহার এশ্বধ্য প্রমাণ হর না, কিন্তু তাহার অন্তঃ- পুরে প্রবেশ করিলে দেখা যায় যে, তাহা ভদ্রলোকের গোশালারও অযোগ্য । অহঙ্কারের পক্ষে যে আয়োজন আবশ্তক তাহার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আছে কিন্তু আত্মসন্মানের জঙ্ত, স্বাস্থ্যশোভার জন্ত ধাহা৷ আবশ্তক তাহার বেলায় আনাদের টাকা কুলার না। আমাদের মেয়েরা এ কথা মনেও করে না, যে, সৌন্দধ্যবুদ্ধির জন্য যতটুকু অলঙ্কার আবগ্তক তাহার অধিক পরিয়া ধনগর্ব প্রকাশ করিতে যাওয়া ইতরজনোচিত অভদ্রতা,__ এবং সেই অহঙ্কারতৃপ্ডির জন্ত টাকার অভাব হয় না, কিন্তু প্রাঙ্গণপূর্ণ আবর্জনা এবং শঙ্ননগৃহভিত্তির তৈলকজ্জলমর মলিনতা মোঁচনের জন্ত তাহাদের কিছুমাত্র সত্বরতা নাই। টাকার অভাঁব নহে, আমাদের দেশে যথার্থ ভদ্রতার আদর্শ এখনো প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। _ আ্রোতস্বিনী কহিল-- তাহার প্রধান কারণ. আমরা অলম। টাকা থাকিলেই বড়মানুধী করা! যায়, টাকা না! থাঁকিলেও ধার করিয়! নবাবী করা চলে, কিন্তু ভদ্র হইতে গেলে আঁলস্ত অবহেল! বিসর্জন করিতে হয়-- সর্বদা আপনাকে উন্নত সামাজিক আদর্শের উপযোগী করিয়া প্রস্তত রাখিতে হয়, নিয়ম স্বীকার করিয়া আত্মবিসর্জন করিতে হয়। পঞ্চতৃত। ২৫৯ ক্ষিতি কহিল, কিন্ত আমরা মনে করি আমরা স্বভাবের শিশু-_-অত- এব অত্যন্ত সরল !-_ধুলায় কাদায় নগ্নতায়, সর্বপ্রকার নিয়মহীনতায় আমাদের কোন লজ্জা নাই ;--আমাদের সকলই অকুত্রিম এবং সকলই আধ্যাত্মিক! অপূর্বব রামায়ণ । বাড়িতে একট! শুতকাধ্য ছিল, তাই বিকালের দিকে অদুরবন্তী মঞ্চের উপর হইতে বাঁরোয়] রাগিণীতে নহবৎ বাজিতেছিল। ব্যোম অনেকক্ষণ মুদ্রিত চক্ষে থাকিয়। হঠাৎ চক্ষু খুলিয়া বলিতে আরম্ত করিলঃ_ আমাদের এই সকল দেণীয় রাগিণীর মধ্যে একট! পরিব্যাপ্ত মৃত্যু- শোকের ভাব আছে; স্ুুরগুলি কাদিয়া কাদিয়। বলিতেছে সংসারে কিছুই স্থায়ী হয় না। সংসারে সকলি অস্থায়ী, এ কথাটা সংসারীর পক্ষে নূতন নহে, প্রিয়ও নহে, ইহা একটা অটল কঠিন সত্য; কিন্তু তবু এটা বাশির মুখে শুনিতে এত ভাল লগিতেছে কেন? কারণ, বাশিতে জগতের এই অর্ব[পেক্ষা স্থকঠোৌর সত্যটাকে সর্বাপেক্ষা সুমধুর করিয়া বলিতেছে -_-মনে হইতেছে মৃত্যুটা এই রাগিণীর মত সকরুণ বটে কিন্তু এই রাগি- ণীর মতই সুন্বর। জগৎ সংসারের বক্ষের উপরে সন্ধাপেক্ষা গুরুতম যে জগন্দল পাথরটা চাপিয়া আছে এই গানের স্থুরে সেইটাকে কি এক মন্ত্বলে লঘু করিয়া দিতেছে । একজনের হ্বদরকুহর হইতে উচ্ছসিত হইয়া উঠিলে যে বেদনা চীৎকার হইয়া বাজিয়া উঠিত, ক্রন্দন হইয়া ফাটিয়। পড়িত, বাশি তাহাই সমস্ত জগতের মুখ হইতে ধ্বনিত করিয়া তুলিয়া এমন অগাধকরুণাপুর্ণ অথচ অত্যন্ত সান্তবনাময় রাগিণীর নটি করিতেছে। দীপ্তি এবং শ্োতম্বিনী আতিথোর কাজ সারিয়৷ সবেমাত্র আসিয়। ২৬, বিচিত্র প্রবন্ধ । বসিয়াছিল, এমন সময় আজিকার এই মঙ্গলকার্ধ্যের দিনে ব্যোমের মুখে ৃত্যুসন্ন্ীয় আলোচনায় অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া উঠিয়া গেল। ব্যোম তাহাদের বিরক্তি না বুঝিতে পারিয়া অবিচলিত অস্্লানমুখে বলিয়া যাইতে লাগিল। নহবৎটা বেশ লাগিতেছিল আমরা আর সে দিন বড় তর্ক করিলাম না। ব্যোম কহিল, আজিকার এই বাশি গুনিতে শুনিতে একটা কথা বিশেষ করিয়া আমার মনে উদয় হইতেছে ।-- প্রত্যেক কবিতার মধ্যে একটি বিশেষ রস থাকে--অলঙ্কার শাস্ত্রে যাহাকে আদি করুণ শান্তি নামক ভিন্ন ভিশন নামে ভাগ করিয়াছে--আমার মনে হইতেছে, জগৎ- রচনাকে যদি কাব্যহিসাবে দেখা যায় তবে মৃত্যুই তাহার সেই প্রধান রূস, মৃত্যুই তাহাকে যথার্থ কবিত্ব অপ্পণ করিয়াছে । যদি মৃত্যু না থাকিত, জগতের যেখানকার যাহা তাহা চিরকাল সেখানেই বদি অবিরুৃতভাবে দীড়াইয়া থাকিত, তবে জগতটা একটা চিরস্থায়ী সমাধিমন্দিরের মত অত্যন্ত সঙ্ধীর্ণ, অত্যন্ত কঠিন, অত্যন্ত বদ্ধ হইয়া রহিত । এই অনন্ত নিশ্চ- লতার চিরস্থায়ী ভার বহন করা প্রাণীদের পক্ষে বড় ছুরূহ হইত। মৃত্যু এই অস্তিত্বের ভীষণ ভারকে সর্বদা লঘু করিয়া রাখিয়াছে, এবং জগৎকে বিচরণ করিবার অপীম ক্ষেত্র দিয়াছে । যেদিকে মৃত্যু সেই দিকেই জগতের অসীমতা । একে, থাহা প্রত্যক্ষ, যাহা বর্তমান, তাহা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত প্রবল,আবার তাহাই যদি চিরস্থায়ী হইত তবে তাহার একেশ্বর দৌরাত্ম্যের আর শেষ থাকিত না_ তবে তাহার উপরে আর আপীল চলিত কোথায় ? তবে কে নির্দেশ করিয়! দিত ইহার বাহিরেও অসীমতা আছে? অনস্তের ভার এ জগৎ কেমন করিয়া বহন করিত মৃত্যু্ষদি সেই অনস্তকে আপনার চিরপ্রবাহে নিত্যকাল ভাসমান করিয়া না রাখিত ? , সমীর কহিল, মরিতে না হইলে বীচিয়া থাকবার কোন মধ্যাদাই ঠা | ২৬১ পাপা ০ লাস পাপা - শ্পাস্সিি্িপাসসি্াছি পাট পিপাসা পিপাসিপাসসিশা পিসি ২০২ টিপস স্পা পা স্পিসিপািপপাসিলাটিপী পিসি লিসানি থাকিত ৭ না। এখন জগৎসুদ্ধ লোক যাহাকে অবজ্ঞা করে সেও মৃত্যু আছে বলিয়াই জীবনের গৌরবে গৌরবান্বিত। ক্ষিতি কহিল, আমি সে জ্ট বেশি চিন্তিত নহি) আমার মতে মৃত্যুর অভাবে কোন বিষয়ে কোথাও দাঁড়ি দিবার জো! থাকিত না সেইটাই সব চেয়ে চিন্তার কারণ। সে অবস্থায় ব্যোম যদি অদ্বৈততত্থ সম্বন্ধে আলোচনা উত্থাপন করিত কেহ জোড়হাতি করিয়া এ কথা বলিতে পারিত না, যে ভাই এখন আর সময় নাই অতএব ক্ষান্ত হও। মৃত্যু না থাকিলে অব- সরের অন্ত থাকিত না। এখন মানুষ নিদেন সাত আট বৎসর বয়সে অধ্যয়ন আরম্ত করিয়! পঁচিশ বত্দর বয়সের মধ্যে কলেজের ডিগ্রি লইয়া অথবা দিব্য ফেল্‌ করিয়া নিশ্চিন্ত হয়; তখন কোন বিশেষ বয়সে আর্ত করারও কারণ থাকিত না, কোন বিশেষ বয়সে শেষ করিবারও তাড়া থাকিত না। সকলপ্রকার কাজকর্ম ও জীবনযাত্রার কমা, সেমি-কোলন্‌, ঈাড়ি একেবারেই উঠিয়া যাইত। ব্যোম এ সকল কথায় যথেষ্ট কর্ণপাত না করিয়া নিজের চিন্তাসথত্র অনুসরণ করিয়া বলিয়া গেল £-_আমাদের স্বর্গ, আমাদের পুণ্য, আমাদের অমরতা৷ সব মৃত্যুর পারে। পৃথিবীতে বিচার নাই, মনে করি স্থবিচার মৃত্যুর পরে) পৃথিবীতে প্রাণপণ বাসনা নিষ্ষল হয়, আশা করি সফলতা মৃত্যুর কল্পতরুতলে । জগতের আর সকল দিকেই কঠিন স্থুল বস্তরাশি আমাদের মানস আদর্শকে প্রতিহত করে, জগতের যে সীমায় যৃত্যু, যেখানে সমস্ত বস্তর অবসান, সেইখানেই আমাদের প্রিয়তম প্রবলতম বাসনার, আমাদের শুচিতম সুন্দরতম কল্পনার কোন প্রতিবন্ধক * নাই । আমাদের শিব শ্শীনবাসী_আমাদের সর্কোচ্চ মঙ্গলের আদর্শ যৃত্যুনিকেতনে। মুলতান বারোয় শেষ করিয়া হু্ধ্যাস্তকালের স্বর্ণীভ অন্ধকারের মধ্যে নহবতে পৃরবী বাঁজিতে লাগিল। সমীর বলিল-_মান্থয মৃত্যুর পারে ২৬২ বিচিত্র প্রবন্ধ) কল্পলোকে থে সকল আঁশ! আকাজ্াকে নির্বাসিত করিয়া দিয়াছে, এই বাঁশির স্থুরে সেই সকল চিরাশ্রসজল হৃদয়ের ধনগুলিকে পুনর্বার মন্ুষুলোকে ফিরাইয়া আনিতেছে। সাহিত্য সঙ্গীত এবং সমস্ত ললিত কলা, মন্ুষাহৃদয়ের সমস্ত নিত্য পনার্থকে ইহজীবনের মাঝখানেই প্রতিষ্ঠিত করিতেছে । বলিতেছে, পৃথিবীকে স্বর্ণ, বাস্তবকে সুন্দর এবং এই ক্ষণিক জীবনকেই অমর জানিতে হইবে । আমাদের সমস্ত প্রেমকে পৃথিবী হইতে প্রত্যাহরণ করিয়া! মৃত্যুর পারে পাঠাইয়া দিব, না এই পৃথিবীতেই রাখিব ইহা লইয়াই তর্ক। বৈরাগ্যধর্ম বলিতেছে, পরকালের মধ্যেই প্রকৃত প্রেমের স্থান__সাহিতা এবং ললিতকলা বলিতেছে, ইহলৌকেই আমরা তাহার স্থান দেখাইয়া দিতেছি । ক্ষিতি কহিল, এই প্রসঙ্গে আমি এক অপুর্ব ব্রামায়ণ কথা বলিয়া সভা ভঙ্গ করিতে ইচ্ছা করি। রাজা রামচন্্র-_ অর্থাৎ মান্ষ__গ্রীতি নামক সীতাকে নানা বাক্ষসের হাত হইতে রক্ষা করিয়া আনিয়া নিজের অযোধ্যাপুরীতে পরমস্্খে বাস করিতেছিলেন। এমন সনয় কতকগুলি ধশ্মণাস্ত্র দল বাঁধিয়া এই প্রেমের নামে কলঙ্ক রটনা করিয়া দরিল। বলিল, উনি অনিত্য পদার্থের সহিত একত্র বাঁস করিয়াছেন উহাকে পরিত্যাগ করিতে হইবে। বাস্তবিক অনিত্যের ঘরে রুদ্ধ থাকিয়াঁও এই দেবাংশজাত রাজকুমারীকে যে কলঙ্ক স্পর্শ করিতে পারে নাই সে কথা এখন কে প্রমান করিবে? এক, অগ্নি- পরীক্ষা আছে, দে তদেখা হইয়াছে---অগ্নিতে ইহাকে নষ্ট না করিয়া আরও উজ্জল করিয়া দিয়াছে । তবু শাস্ত্রের কানাকানিতে অবশেষে এই রাজ! প্রেমকে এক দিন মৃত্যু-তমসার তীরে নির্বাসিত করিয়া! দিলেন। ইতিমধ্যে মহাকবি এবং তাহার শিষ্যবৃন্দের আশ্রয়ে থাকিয়া! এই অনাথিনী, কুশ এবং লব, কাব্য এবং ললিতকল! নামক যুগল সন্তান প্রসব করিয়াছেন । সেই ছুটি শিশুই কবির কাছে রাগিণী. শিক্ষা করিয়া রাঁজসতায় আজ পঞ্চভৃত। ২৬৩ তাহাদের পরিত্যক্তা জননীর যশোগান করিতে আসিয়াছে । এই নবীন গায়কের গানে বিরহী রাজার চিত্ত চঞ্চল এবং তাহার চক্ষু অশ্রুসিক্ত হইয়া উঠিয়াছে। এখনও উত্তরকাঁও সম্পূর্ণ শেষ নাই। এখনো! দেখিবার আছে জয় হয়-ত্যাগপ্রচাঁরক প্রবীন বৈরাগ্যধর্মের, না, প্রেমমঙ্গলগীয়ক ছুটি অমর শিশুর ? বৈজ্ঞানিক কৌতুহল। বিজ্ঞানের আদিম উৎপত্তি এবং চরমলক্ষ্য লইরা ব্যোম এবং ক্ষিতির মধ্যে মহা তর্ক বাধিয়! গিয়াছিল ৷ তদ্্‌পলক্ষে বোম কহিল-_ যদিও আমাদের কৌতৃহলবৃন্তি হতেই বিজ্ঞানের উৎপত্তি, তথাপি, 'আমমার বিশ্বাস, আমাদের বৌতভূহলটা ঠিক বিজ্ঞানের তল্লীস করিতে বাহির হয় নাই ; বরঞ্চ তাহার আকাজ্জাটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক । সে খু'ঁজিতে যায় পরশ পাথর, বাহির হইয়া পড়ে একটা! প্রাচীন জীবের জীর্ণ বদধানষ্ঠ ) সে চায় আলাদিনের মাশ্চর্ধ্য গ্রদীপ, পায় দেশালাইয়ের বাক্স । আল্কিমিটাই তাহার মনোগত উদ্দেন্ত, কেমিষ্ী তাহার অপ্রার্থিত সিদ্ধি । আাষ্্লজির জন্ত সে আকাশ ঘিরিয়। জাল ফেলে কিন্তু হাতে উঠিয়া আসে আ্যাষ্ট্রনমি। সে নিয়ম খুজে না, সে কার্যকারণশৃঙ্খলের নব নব অঙ্গুরী গণনা করিতে চায় না; সে খোজে নিয়মের বিচ্ছেদ ; সে মনে করে কোন্‌ সময়ে এক জায়গায় আসিয়া হঠাৎ দেখিতে পাইবে, সেখানে কার্ধ্যকারণের অনন্ত পুনরুক্তি নাই । সে চায় অদ্ভুত- পূর্ব নৃতনত্ব_কিন্তু বৃদ্ধ বিজ্ঞান নিঃশব্বে তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিয়া তাহার সমস্ত নৃতনকে পুরাতন করিয়া দেয়, তাহার ইন্্রধনুকে পর্কলা- বিচ্ছুরিত বর্ণমালার পরিবর্ধিত সংস্করণ, এবং পৃথিবীর গতিকে পরকতাল- ফলপতনের সমশ্রেণীয় বলিয়া প্রমাণ করে। ২৩৪ পু বিচিত্র প্রবন্ধ যে নিয়ম আমাদের ধুলিকণার মধ্যে, অনন্ত আকাশ ও অনন্ত কালের সর্ধতই সেই এক নিয়ম প্রসারিত; এই আবিষ্কারটি লইয়া আমরা আজকাল আনন্দ ও বিশ্ব গ্রকাশ করিয়া থাকি । কিন্তু এই আনন্দ এই বিস্ময় মানুষের যথার্থ স্বাভাবিক নহে; সে অনন্ত আকাশে জ্যোতিষ্করাজোর মধ্যে যখন অন্ুপন্ধানদূত প্রেরণ করিয়াছিল তখন বড় আশা করিয়াছিল, যে, প্র জ্যোতিন্ময় অন্ধকারময় ধামে পুলিকণার নিয়ম নাই, সেখানে অত্যাশ্র্যা একটা স্বর্গায় অনিয়মের উৎসব, কিন্তু এখন দেখিতেছে এ চন্দ্রস্র্ধা গ্রহনক্ষত্র, এ সপ্ুর্ষিমগ্ডল, এ অশ্বিনী ভরণী রুত্তিকা আমাদের এই দলিকণারই জোষ্ঠ কনিষ্ঠ সহোদর সভোদরা। এই নৃতন তথ্যটি লইয়া আমরা ঘে আনন্দ প্রকাশ করি, তাহা আমাদের একটা নৃতন কৃত্রিম অভ্যাস, তাহা মামাদের মাদিম প্রকৃতিগত নচে। সমীর কতিল, সে কথা বড় মিথ্যা নহে। পরশপাথর এবং আলা" দিনের প্রদীপের প্রতি প্ররুতিস্থ মান্ুযমাত্রেরই একটা নিগুঢ আকর্ষণ আঁছে। ছেলেবেলায় কথামালার এক গল্প পড়িয়াছিলাম যে, কোন রুষক মরিবাঁর সময় তাহার পুত্রকে বলিয়া গিয়াছিল, যে, মমুক ক্ষেত্রে তোমার জন্য আমি গুপুধন রাখিয়া গেলাম । সে বেচারা বিস্তর খুড়িয়া গুপ্তধন পাইল না কিস্ত প্রচুর খননের গুণে দে জমিতে এ শশ্ত জন্মিল যে, তাহার আর অভাব রিল না। বাঁলক-প্রকৃতি বালকশাত্রেরই এ গল্পটি পড়িয়া কই বোধ হইয়া থাঁকে। চাষ করিয়া শস্ত ত পৃথিবী্দ্ধ সকল চাষাই পাইতেছে কিন্তু গুপ্তধনটা গুপ্ত বলিয়াই পাঁয় না; তাহা বিশ্বব্যাপী নিয়মের একটা ব্যভিচার, তাহা আকশ্মিক, সেইজন্তই তাহা শ্বভাঁবতঃ মানুষের কাছে এত বেশি প্রার্থনীয়; কথামালা যাহাই বলুন, রুষকের পুত্র তাহার পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হয় নাই সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। বৈজ্ঞানিক নিক্বমের প্রতি অবজ্ঞা মানুষের পক্ষে কত স্বাভাবিক আমরা প্রতিদিনই তাহার প্রমাণ পাই। ষেডাক্তার নিপুণ চিকিৎসার পঞ্চভূত ২৬৫ ৯৮ িশিপাশিসপিপাসশপিশিপিস্পিসিপাসিসপিসপাসিস্পিসিিপাসিলপী সিম্পল রসি পাটি লা পালন পা লালা সিপাসি লাক পাসমি সলিল সপাসিপাসমপাপ দ্বারা অনেক রোগীর আরে! [গ্য করিয়া থাকেন তাহার সম্বন্ধে আমরা বলি লোকটার “হাতধশ” আছে; শান্ত্রনঙ্গত চিকিৎসার নিয়মে ডাক্তার রোগ আরাম করিতেছে একথাঁয় আমাদের আন্তরিক তৃপ্তি নাই) উহার মধ্যে সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রমস্থরূপ একটা রহস্ত আরোপ করিয়া তবে আমরা সন্ধষ্ট থাঁকি। আমি কহিলাম, তাহার কারণ এই যে, নিয়ম অনন্ত কাল ও অনন্ত দেশে গ্রনারিত হইলেও তাহা সীমাবদ্ধ, সে আপন চিহ্িত রেখা হইতে অণু-পরিমাণ ইতস্তত করিতে পারে না, সেইজন্তই তাহার নাম নিয়ম এবং দেই জন্যই মানুষের কল্পনাকে দে পীড়া দের়। শান্ত্রসঙ্গত চিকিৎ- সার কাছে আমর! অধিক আশা করিতে পারি না-এমন রোগ আছে হা চিকিৎসার অসাধ্য ; কিন্তু এপর্যন্ত হাতিঘশ নামক একটা রহশ্তময় ব্যাপাঁরের ঠিক সীমা নির্ণর হয় নাই ; এই জন্ত সে আমাদের আশাকে কল্পনাকে কোথাও কঠিন বাঁধা দেয় না। এই জন্যই ডাক্তারি এষধের চেয়ে অবধৌতিক উষধের আকর্ষণ অধিক | তাহার ফল যে কতদূর পর্যন্ত হইতে পারে ততসম্বন্ধে আমাদের প্রত্যাশা সীমাবদ্ধ নহে। মান্থুষের যত অভিজ্ঞতা! বৃদ্ধি হইতে থাকে, অমোঘ নিয়মের লৌহপ্রাচীরে যতই সে আঘাত প্রাপ্ত হয়, ততই মানুষ নিজের স্বাভাবিক অনন্ত আশাকে সীমাবদ্ধ করিয়া আনে, কৌতুহলবৃত্তির স্বাভাবিক নৃতনত্বের আকাজ্ষা সংযত করিয়া আনে, নিয়মকে রাঁজপদে প্রতিষ্ঠিত করে, এবং প্রথমে অনিচ্ছাক্রমে পরে অভ্যাসক্রমে তাহার প্রতি একটা রাঁজভক্তির উদ্রেক করিয়া তোলে । ব্যোম কহিল__কিস্তু সে ভক্তি যথার্থ অন্তরের ভক্তি নহে, তাহা কাজ আদায়ের ভক্তি । যখন নিতান্ত নিশ্চয় জান] যায় যে জগৎকার্ধ্য অপরিবর্তনীয় নিয়মে বদ্ধ, তখন কাজেই পেটের দায়ে তাহার নিকট ঘাড় হেট করিতে হয়;--তখন বিজ্ঞানের বাহিরে অনিশ্চয়ের হস্তে আত্মসমর্পণ করিতে সাহস হয় না। তখন মাঁছুলি তাগা জলপড়া প্রভৃ- ২৬৬ বিচিত্র প্রবন্ধ | তিকে গ্রহণ করিতে হইলে ইলেক্টি,সিটি, ম্যাগ্সেটিজ্ম্‌, হিপ্নটিজ্ম্‌ প্রভৃতি বিজ্ঞানের জাল মার্কা দেখাইয়৷ আপনাকে ভূলাইতে হয়। আমরা নিয়ম অপেক্ষা অনিয়মকে যে ভালবাসি তাহার একটা গোড়ার কারণ আছে । আমাদের নিজের মধ্যে এক জায়গা আমরা নিয়মের- বিচ্ছেদ দেখিতে পাই । আমাদের ইচ্ছাশক্তি সকল নিয়মের বাতিরে - সে স্বাধীন ; অন্তঃ আমরা সেইরূপ অন্থভব করি। আমাদের অন্তর- প্রকৃতিগত সেই স্বাধীনতার সাৃশ্ঠ বাহ প্রকৃতির মধ্যে উপলন্ধি করিতে ্বভীবতই আমাদের আনন্দ হয়। ইচ্ছার প্রতি ইচ্ভার আকর্ষণ অত্যন্ত প্রবল;--ইম্ছার সহিত যে দান আমর! প্রাপ্ত হই, সে দান আমাদের কাছে অধিকতর প্রিয়; সেব। যতই পাই তাহার সহিত ইচ্ছার যোগ না থাঁকিলে তাহ! আমাদের নিকট রুচিকর বোধ হয় না। দেই জন্য, যখন জীনিতাঁম যে, ইন্দ আমাদিগকে বুষ্টি দিতেছেন, মরুৎ আমাদিগকে বাধু জৌগাইতেছেন, অগ্নি আমাদিগকে দীপ্তি দান করিতেছেন, তখন সেই জ্ঞানের মধো আমাদের একটা আন্তরিক তৃপ্তি ছিল; এখন জানি বৌদ্- বৃষ্টিবাযুর মধো ইচ্ছা অনিচ্ছা নাই, ভাহারা যোগ্য অযোগা প্রিয় অপ্রিয় বিচার না করিয়া! নির্বরিকারে যথানিয়মে কাজ করে; আকাশে জলীয় অণু শীতল বাযুসংযোৌগে সংহত হইলেই সাধুর পবিত্র মন্তকে বর্ষিত হইয়া সর্দি উৎপাদন করিবে এবং অগাধুর কুম্মাগুমঞ্চে জলসিঞ্চন করিতে কুন্ঠিত হইবে ন|)_ বিজ্ঞান আলোচিনা করিতে করিতে ইহা আমাদের ক্রমে একরূপ সহ হইয়া আপে, কিন্তু বস্ততঃ ইহা আমাদের ভালই লাগে না। ; আমি কহিলাম _পূর্কে আমরা যেখানে স্বাধীন ইচ্ছার কর্তৃত্ব অন্থমান করিয়াছিলাম, এখন সেখানে নিয়মের অন্ধ শাসন দেখিতে পাই, সেই জন্য বিজ্ঞান আলোচনা করিলে জগৎকে নিরানন্দ ইচ্ছাসম্পর্কবিহীন বলিয়! মনে হয়। কিন্তু ইচ্ছা এবং আনন্দ যতক্ষণ আমার অন্তরে আছে, ততক্ষণ জগতের অন্তরতর অন্থরতম স্থানে তাহাকে প্রতিষঠিত না জানিলে পঞ্চভূত । ২৬৭, পাপীস্সিপাসটি ৬ পসপপাসিপিস্পাশিপাসিশিশীপাশিপসি শাসিত পটীপীিপাস্টিপাপিশীসিপািাসিলাসি পিসি সিপিবি? আমাদের অন্তরতম প্রকৃতির প্রতি ব্যভিচার কর! হয়। আমাদের মধ্যে সমস্ত বিশ্বনিয়মের যে একটি ব্যতিক্রম আছে, জগতে কোথাও তাহার একটা মূল শাদর্শ নাই, ইহা! আমাদের অন্তরাত্মা স্বীকার করিতে চাহে না। এই জন্ত আমাদের ইচ্ছা একট! বিশ্ব-ইচ্ছার, আমাদের প্রেম একট! বিশ্বপ্রেমের নিগুঢ় অপেক্ষা না রাখিয়া বাচিতে পারে না। সমীর কহিল-_জড় প্রক্কৃতির সর্ধত্রই নিয়মের প্রাচীর চীন দেশের প্রাচীরের অপেক্ষা দৃঢ় প্রশস্ত ও অন্রভেদী ; হঠাৎ মানব-প্রকৃতির মধ্যে একটা ক্ষুদ্র ছিদ্র বাহির হইরাছে, সেইখানে চক্ষু দিয়াই আমরা এক আশ্চর্য আবিষ্কার করিয়াছি, দেখিয়াছি প্রাচীরের পরপারে এক অনন্ত অনিয়ম রহিয়াছে ; এই ছিদ্রপথে তাহার সহিত আমাদের যোগ; সেইখান হইতেই সমস্ত সৌন্দর্য স্বাধীনত। প্রেম আনন্দ প্রবাহিত হইয়। আসিতেছে । দেই জন্ত এই সৌন্বধ্য ও প্রেমকে কোন বিজ্ঞানের নিমমে বাধিতে পারিল না। এমন সময়ে শ্রোতস্বিনী গৃহে প্রবেশ কির সমীবকে কহিল, সেদিন দীপ্তির পিয়ানো বাঁজাইবার স্বরলিপি বইথাঁনা তোমরা এত করিয়া খুঁজিতেছিলে, সেটার কি দশা হইয়াছে জান ? সমীর কহিল, না। শোতম্বিনী কহিল, রাত্রে ইছুরে তাহা কুটি কুটি করিয়া কাটিয়া পিয়ানোর তারের মধ্যে ছড়াইয়। রাখিয়াছে। এরূপ অনাবশ্তক ক্ষতি করিবার ত কোন উদ্দেগ্ত খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। সমীর কহিল--উক্ত ইন্দুরটি বোধ করি ইন্দুরবংশে একটি বিষ্কশষ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈজ্ঞানিক | বিস্তর গবেষণায় সে বাজনার বহির সহিত বাজনার তারের একটা সম্বন্ধ অনুমান করিতে পারিয়াছে। এখন সমস্ত রাত ধরিয়! পরীক্ষা চালাইতেছে। বিচিত্র এক্যতানপূর্ণ সঙ্গীতের আশ্চর্য্য রহস্ত ভেদ করিবার চেষ্টা করিতেছে । তীক্ষ দস্তাগ্রভাগ দ্বারা বাজনার, ২৬৮ বিচিত্র গ্রবন্ধ । বহির ক্রমাগত বিশ্লেষণ করিতেছে, পিয়ানোর তারের সহিত তাহাকে নানাভাবে একত্র করিয়া দেখিতেছে। এখন বাজনার বই কাটিতে সুরু করিয়াছে, ক্রমে বাজনার তাঁর কাটিবে, কাঠ কাটিবে, বাঁজনাঁটাঁকে শত- ছিদ্র করিয়া সেই ছিদ্র পথে আপন সুক্ষ নাঁসিকা 'ও চঞ্চল কৌতুহল প্রবেশ করাইয়া দিবে- মাঝে হইতে সঙ্গীতও ততই উত্তরোত্তর সুদুর- পরাহত হইবে । আমার মনে এই তর্ক উদয় হইতেছে যে, ইনদুরকুলতিলক যে উপায় অবলম্বন করিয়াছে তাহাতে তাঁর এবং কাগজের উপাদানসম্বন্ধে নৃতন তত্ব আবিদ্লত হইতে পারে কিন্তু উত্ত কাগজের সহিত উত্ত তারের যথার্থ যে সম্বন্ধ তাহ! কি শত সহজ বংসরেও বাহির হইবে? অবশেষে কি সংশয়পরায়ণ নব্য উন্দূরদিগের মনে এইরূপ একটা বিতর্ক উপস্থিত হইবে না যে, কাগজ কেবল কাগজ মাত্র, এবং তার কেবল তাঁর; কোন জ্ঞানবান জীবকর্তৃক উহ্চাদের মধ্যে যে একটা আনন্দজনক উদ্দেশ্ঠবন্ধন বন্ধ হইয়াছে তাহা কেবল প্রাচীন ইনুরদিগের যুক্তিহীন সংস্কার; সেই কারের কেবল একটা এই শুভফল দেখা যাইতেছে যে তাঁহারই প্রবর্তনায় অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইয়া তার এবং কাগজের আপেক্ষিক কঠিনতা সম্বন্ধে অনেক পরীক্ষা সম্পন্ন হইয়াছে। কিন্তু এক এক দিন গহ্বরের গভীরতলে দন্তচালন কার্ষ্যে নিষুক্ত থাকিয়া মাঝে মাঝে অপূর্ব সঙ্গীতধ্বনি কর্ণকৃহরে প্রবেশ করে এবং অন্তঃকরণকে ক্ষণকাঁলের জন্ত মোহাবিষ্ট করিয়! দেয়। সেটা! ব্যাপারটা কি? ১২৯৯--১৩০৩। জলপথে। ১৬ই জুন, ১৮৯১। যমুনা ।_এখন পাল তুলে যমুনার মধ্যে দিয়ে চলেছি। বীধারে মাঠে গোরু চরচে, দক্ষিণধারে কুল দেখা যাচ্ছে না। নদীর তীব্র স্রোতে তীর থেকে ক্রমাগতই ঝুপ্বুপ্‌ করে মাটি খসে গড়চে। এই প্রকাণ্ড নদীর মধ্যে আমাদের বোট ছাড়া আৰ দ্বিতীর একটি নৌকো দেখা যাচ্চে না; কেবলি বাতাম হৃহু করচে'আর জলের থল্খল শব গুনচি। কান সন্ধ্যার সময় চরের উপর বোট লাগিরেছিলুম। নদীটি ছোট-_ যমুনার একটি শাখা । এক পারে জনশূন্য শাদা বালি, আর এক পারে সবুজ শস্ক্ষেত্র এবং বহুদূরে একটি গ্রাম । ক্রমে যখন অন্ধকারে গাছ- পালা কুটার সমস্ত একাকার হয়ে এল কেবলমাত্র জলের রেখায় এবং তটের রেখায় একটা গ্রতেদ দেখা যাচ্ছিল তখন মনে হচ্ছিল এ সমস্তই যেন ছেলেবেলার রূপকথার জগং। তখন এই বৈজ্ঞানিক জগৎ সম্পূর্ণ গড়ে উঠেনি ; অল্পদিনমাত্র স্থষ্টি আরন্ত হয়েছে; গ্রদোষের অন্ধকারে এবং একটি ভীতিবিশ্ময়জড়িত স্তব্ধতায় সমস্ত বিশ্ব আচ্ছন্ন ; তখন সাতমমুদ্র তেরো নদীর পারে মায়াপুরে পরমাসুন্দরী রাজকন্া চিরতন্দ্রায় অচেতন) তখন রাজপুত্র এবং পান্রের পুত্র তেপান্তর মাঠে একট! অসম্ভব উদ্দোশ্ঠ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্চে। এ যেন তখনকার দেই অতি দূরবর্তী অর্ধচেতর্মীয় মোহাবিষ্ট মায়ামিশ্রিত বিশ্বৃত জগতের একটি নিস্তব্ধ নদীতীর। আর মনে করা৷ যেতে পারে আমিই সেই রাজপুত্র, একটা অসম্তবের প্রত্যাশায় নধ্যারাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্চি। এই ছোটো নদীটি সেই তেরোনদীর মধ্যে একটা নদী--এখনো সাত মমুদ্র বাকি, আছে$ এখনো অনেক দুর, ২৭০ বিচিত্র প্রবন্ধ । অনেক ঘটনা, অনেক অন্বেষণ বাকি ; এখনো কত অজ্ঞাত নদীতীরে, কত অপরিচিত সমুদ্রসীমীয় কত ক্ষীণচন্ত্রীলোকিত অনাগত রাত্রি অপেক্ষা করে আছে! তার পরে হয় ত অনেক ভ্রমণ, অনেক রোদন, অনেক বেদেনের পর হঠাৎ একদিন আমার কথাটি ফুরোলো, নটে শাকটি মুড়োলো-_হঠাৎ মনে হবে এতক্ষণ একটা গল্প চলছিল--সেই রূপকথার স্থথদুঃখ নিয়ে হাস্ছিলুম কীদছিলুম-_এখন গল্প ফুরিয়েছে, এখন অনেক রাত্রি, এখন ছোট ছেলের ঘুমোবার সময়। ১৯শে জুন, ১৮৯১ যমুনা ।__কাল পনেরো মিনিট বাইরে বদ্তে না বদ্তে পশ্চিমে ঘোর মেঘ করে এল- খুব কালো, গাঢ়, আলুথানু রকমের মেঘ-_তাঁরি মাঝে মাঝে চোরা আলো পড়ে রাঙা হয়ে উঠেছে। ছুটো একটা নৌকা তাড়াতাড়ি খোলা যমুনা থেকে এই ছোট নদীর মধ্যে প্রবেশ করে দড়িদড়া নোঙর দিয়ে মাটিকে আকৃড়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বম্ল। যারা মাঠে শস্ত কাঁটুতে এসেছিল তারা মাথায় এক এক বোঝা শশ্ত নিয়ে বাড়ির দিকে ছুটে চলেছে ; গোরুও ছুটেছে, পিছনে পিছনে লেজ নেড়ে নেড়ে বাছুর তাদের সঙ্গ রাখ্বার চেষ্টা করচে। খানিক বাদে একাট আক্রোশের গর্জন শোন! গেল - কতকগুলো ছিন্নভিন্ন মেঘ ভগ্মপদূতের মত সুর পশ্চিম থেকে উদ্নশ্বাসে ছুটে এল-_তার পরে বিছ্যৎ বর ঝড় বৃষ্টি সমস্ত এক সঙ্গে এসে পড়ে খুব একটা তুর্কিনাচন নাচতে আরম্ভ করে দিলে,_বাশগাছ গুনে হাউ হাউ শব্দে একবার পুর্বে একবার পশ্চিমে লুটিয়ে লুটরে পড়তে লাগল,_খ্ড় যেন সৌ। মো৷ শবে সাপুড়ের মত বাঁশি বাজাতে লাগল আর জলের ঢেউগলো৷ তিন লক্ষ সাপের মত ফণা তুলে তালে তালে নৃত্য আরম্ভ করে দিলে। বজ্রের শব আর থামে না-- আকাশের কোন্থানে একট! আস্ত জগৎ যেন ভেঙে টুরমার হয়ে যাঁচ্চে। ২০শে জুন।॥ ১৮৯১। যমুনা ।__কাল সন্ধ্যার সমস নৌকো! ছেড়ে দিজুম। আকাশে মেঘ ছিল ন।)-টাদ উঠেছিল, অন্ন অল্প হাওয়। তে | ২৭১ এম সত ৯৯৮৯, শ্শিতিপাসিল উপ সাল পাপা ভাসি সিমলা সপ ও পি নিচ্ছিল ঝুপ্‌: ঝুপ্‌ দাড় ৫ ফেলে, শ্রোতের মুখে ছোট নদীটির ম মধ্যে ভেসে বাওয়া যাচ্ছিল। তখন অন্থান্ত সমস্ত নৌকে| ডাঙায় কাছি বেঁধে পাল গুটিয়ে চন্্রানোকে স্তব্ধ হয়ে নিদ্রা দিচ্ছিল। অবশেষে ছোট নদাটা যেখানে যমুনার মধ্যে গিয়ে পড়েছে তারি কাছে একটা নিরাপদ স্থানে নৌকো। বীধলে। এরকম স্থানে যেমন আপদ থাকে না তেমনি হাওয়াও থাকে না তাই মাঝিকে বল্ুম ওপারে চল্‌। ওপারে উচু পাড় নেই_জলে স্থলে সমান-_এমন কি, ধানের ক্ষেতের উপর এক হাটু জল উঠেচে। মাঝি গার হয়ে নৌকো বাধ্‌লে। তখন পিছন- দিকের আকাশে একটু বিদ্যুৎ চিকাঁমকু করতে আরম্ভ করেচে। বিছানায় টুকে জানালার কাছে মুখ রেখে ক্ষেতের দিকে চেয়ে আছি এমন সমর রব উঠ্ল-_ঝড় আস্চে। কাছি ফেল্‌, নোঙর ফেল্‌, এ কর্‌ মে কর্‌ করতে করতেই ঝড় ছুটে এল। মাৰি থেকে থেকে বল্তে লাগ্ল, ভর কোরো নঃ ভাই, আল্লার নাম কর, আল্লা মালেক । বোটের ছুই পাশের পরদা বাতাদে আছাড় খেয়ে থেয়ে শব্ষ করতে লাগ্ল-- বোটটা যেন একটা শিক্লি-বাঁধা পাখীর মত পাখা ঝাপ্টে ঝট্পটু ঝটপট করছিল। ঝড়টা থেকে থেকে চীহি টীহি শব্দ করে একটা বিপর্ধ্যয় চীলের মত হঠাৎ এসে পড়ে বোটের ঝুটি ধরে ছে মেরে ছিড়ে নিয়ে যেতে চায়_ বোটটা অমনি সশবে ধড়ফড় করে ওঠে। হাওয়া খেতে চেয়েছিলুম হাঁওয়াটা কিছু বেশি খাইয়ে দিলে_যাকে বলে আশাতিরিক্ত । যেন কে ঠাট্টা করে বল্ছিল, হাওয়া! খেয়ে নাও পরে কিঞ্চিৎ জল খাওয়াব তাঁর পরে এমনি পেট ভরে উঠবে যে ভবিষ্যে আর জলযোগের আবগ্তক হবে না। ২৭শে জুন। ১৮৯২। কাল বিকেলের দিকে এমনি করে এল আমার ভয় হল। এমনতর রাগী চেহারার মেঘ আমি কখনো দেখেছি বলে মনে হয় না। গাঁ নীল মেঘ দিগন্তের কাছে একেবারে থাকে ২৭২ গে প্রবন্ধ । প্পাস্লিসতাসিপীসিলাসসিপা ভিলা দিলি সত সসপনপিছি ২ সিল স্পা পা পাক্পা্দিলা পাপ সি পাসপাসিিপাসিপাস্িপাসপসি সাপ সপ সিসি সি শাসিত সিসি পািপাসসিপাপাসপাস্িপানদিাস্িপা্পাসিপসিপাসাস্িসিপাসিলসিপাসিপাসিলিতি ০ থাকে কনে উদ্নেছে__ একটা প্রকাণ্ড হিংশ্র দৈত্যের কোষস্ষীত গৌফ- জোড়াটার মত। এই ঘননীলের ঠিক পাশেই দিগন্তের সব শেষে ছিন্ন মেঘের ভিতর থেকে একটা! টকটকে রক্তবর্ণ আভা বেরচ্চে। একটা 'আকাশব্যাপী প্রকাণ্ড অলৌকিক “বাইসন্গ মোষ যেন ক্ষেপে উঠে রাঙা চোথ ছুটে! পাকিয়ে, ঘাড়ের নীল কেশরগুলে! ফুলিয়ে বাকাভাবে মাথাট! নীচু করে দীড়িয়েচে, এখনি পৃথিবীকে শূর্গাঘাত করতে আর্ত করে দেবে,_-এবং এই আসন সঙ্কটের সময় পৃথিবীর সমস্ত শশ্তক্ষেত আর গাছের পাতা হী হী করচে-জলের উপরিতল শিউরে শিউরে উঠচে, কাকগুলো অশান্তভাবে কাকা করে ডাকৃতে ভাকৃতে বাসার দিকে উড়ে চলেছে । ২২শে জুলাই । ৯৮৯২ | গৌরী ।_-নদীর কি রোখ্‌! যেন লেজ- দৌলানো, কেশর-ফোলানো, ঘাড়-বাকানে৷ তাজা বুনো ঘোড়ার মত। এ ত তবু গৌরীনদী-_এখানথেকে এখনি পদ্মায় গিয়ে পড়ব । সে মেম্বে বোধ হয় ক্ষেপে নেচে বেরিয়ে চলেছে, সে আর কিছুর মধ্যেই থাকতে টায় না। মাঝি বল্ছিল নতুন বর্ষায় পদ্মায় খুব “ধার” হয়েছে। ধারই বটে। তীব্র স্রোত ষেন চকচকে খড্গের মত-_-পাংলা ইম্পাতের মত একেবারে কেটে চলে যায়। প্রাচীন ব্রিটনবাপিদের যুদ্ধরথের চাকায় যেমন কুঠার বাধা থাকৃত পল্মার জ্রুতগামী বিজয়রথের দুই চাকায় তেমনি খরধার শ্োত শাণিত কুঠারের মত বাঁধা-_ছুইধারের তীর একেবারে অবহেলায় ছারথার করে দিয়ে চলেচে। ॥ ঈই ভিসেম্বর। ১৮৯২। পল্ম!।__আোতের মুখে বোট চল্চে তার উপরে পাল পেয়েছে, দুপরবেলাকার রৌদ্রে শীতের দিনট! ঈষৎ তেতে উঠেছে । পদ্মায় নৌকে। নেই, নদীর নীল এবং দুরদিগন্তের নীলিমার মাঝ- খানে বালির চরের হল্দে রং একটি রেখার মত আক রয়েচে,--জল কেবল, উত্তরে বাতাসে খুব অল্প চিকৃচিক্‌ করে কাপচে--ঢেউ নেই। অনেক- জলপথে। ১৭৩ দিন রোগভোঁগের পরে শরীরটা শিথিল দুর্ধল অবস্থায় আছে। এই শীতশীর্ণ নদীর মত আমার সমস্ত অস্তিত্ব যেন মুদ্বরৌদ্রে পড়ে অলসভাঁবে ঝিকৃঝিকি করচে এবং আনমনে লিখে যাচ্চি। প্রতিবার কলকাতা ছাড়বার আগে ভয় হয় পদ্মা বুঝি পুরাণো হয়ে গেছে; কিন্ত যখনি বোট ভাসিয়ে দ্রিই, চারিদিকে জল কুলকুন করে উঠে, চারিদিকে একটা! দোলন কম্পন আলোক আকাশ, একটা স্থকোমল নীল বিস্তৃতি, একটি লুনবীন শ্তামল বনরেখা, বর্ণনৃত্যসঙ্গাতসৌন্দর্যের একটি নিত্য উৎসব উদঘাটিত হয়ে যার তখন হৃদয় আবার নতুন করে অভিভূত হয়। এই পৃথিবীর সঙ্গে কতদিনের চেনাশোন1! বহুুগপূর্বে যখন তরুণী পৃথিবী সমুদ্রন্নান থেকে সবে মাথা তুলে উঠে সেদিনকার নবীন সৃ্্যকে বন্দন! করচেন তখন আমি এই পৃথিবীর নূতন মাটিতে কোথা থেকে এক প্রথম জীবনোচ্ছ'সে গাছ হয়ে পল্লাবত হয়ে উঠেছিলুম। তখন আমি এই পৃথিবীতে আমার সর্ধাঙ্গ দিয়ে প্রথম সুর্ধযালৌক পান করেছিলুম, অন্ধজীবনের গুট়পুলকে নীলাম্বরতলে আন্দোলিত হয়ে উঠেছিলুম। মুঢ আনন্দে আমার ফুল ফুট্ত, নবপল্পবে ডাল ছেয়ে যেত, বর্ষার মেঘের ঘননীল ছায়া আমার সমস্ত পাতীগুলিকে পরিচিত করতলের মত স্পর্শ করত। তাঁর পরেও নব নব যুগে এই পৃথিবীর মাটিতে আমি জন্মোছ । আমরা ছুজনে একলা যুখোমুখি করে বলেই আমাদের পরিচয় অল্প অল্প মনে পড়ে। আমার বসুন্ধরা এখন “বৌদ্রগীত হিরণ্য অঞ্চল” গায়ের উপর টেনে এঁ নদীতীরের শদ্যক্ষেত্রে বসে আছেন, আমি তার পায়ের কাছে এসে বসেচি। বহু ছেলের মা যেমন অর্ধমনস্ক নিশ্চল সহিষ্ণু" ভাবে আপন শিশুদের আনাগোনার প্রতি তেমন দৃক্‌পাত করেন না তেমনি আমা'র পৃথিবী এই ছুপরবেলায় এ আকাশপ্রাস্তের দিকে চেয়ে বু আদিমকালের কথা ভাবচেন_আমার দিকে তেমন লক্ষ্য করচেন না--আর আমি কেবল অবিশ্রাম বকে যাচ্চি। ১৮ ২৭৪ বিচিত্র প্রবন্ধ শদীিপাসিপাসিপসিপিসপিসির কত ২ সপ ৯৩ ১৪ই অগষ্ট। ১৮৯৪ । পদ্মা ।-কাল খানিক রাত্রে জলের শবে ঘুম ভেঙে গেল। নদীর মধ্যে হঠাৎ একটা কল্লোল এবং চঞ্চলত] উপ- স্থিত হয়েছে । আকম্মিক অতিথির মত কোথা থেকে বিনা এতেলায় একটা নূতন জলের আোত এসে পড়েছে । এরকম প্রায়ই মাঝে মাঝে ঘটে। হঠাৎ দেখি নদী ছল্ছল্‌ কল্কল্‌ করে জেগে উঠে ভার হৃৎ- পিগ্ডের আক্ষেপ বেড়ে উঠেছে । বোটের তক্তার উপরে পা রাখলে স্পষ্ট বোঝা! যায় তার নীচে দিয়ে কত রকমের বিচিত্র গতি অবিশ্রাম চল্চে--খানিকটা৷ কীপচে, খানিকটা টল্চে, খানিকটা ফুল্চে, খানিকটা! টান্চে, খানিকটা আছাড় মারচে। ঠিক যেন গানি পৃথিবীর নাড়ি টিপে তার বেগ অনুভব করচি। রাত্রে ঘুম ভেঙে জানলার ধারে বসে রইলুম__- একট! ঝাপসা আলোয় উতলা নদীকে আরো যেন পাগলের মত দেখা- চ্ছিল। একট খুব জলজলে মস্ত তারার প্রতিবি্ব দীর্ঘতর হয়ে জলের মধ্যে অনেক দূর পর্যযস্ত একটা জালাময় বিদ্ধ বেদনার মত থর্‌ থর করে কাপছিল। ছুই নিদ্রীচ্ছন্ন তীরের মাঝখান দিয়ে একটা নিদ্রাহীন জাধীরত৷ ভরপুর বেগে একেবারে নিরুদ্দেশ হয়ে চলেছে । অদ্ধেক রাত্রে এইরকম দৃষ্তের মধ্যে জেগে বসে থাক্‌লে দিনের বেলাকার লোকসংসর্গের জগৎটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। হয়ে যায় । আবার আজ সকালে সেই গভীর রাত্রের জগৎ দূরবর্তী হয়ে গেছে। মানুষের পক্ষে ছুটোই সত্য অথচ দুটোই স্বতন্ত্। দিনের জগৎটা যেন যুরোপীর সঙ্গীত-স্থুরে বেস্ুরে খণ্ডে ংশে মিলে একট! প্রবহমান প্রকাণ্ড হার্মনির জটলা । আর রাত্রের জগংটা আমাদের ভারতবর্ষের সঙ্গীত-_একটি বিশুদ্ধ করুণ গম্ভীর রাঁগিণী। দুটোই আমাদের বিচলিত করে অথচ ছুটোই পরম্পরবিরোধী। কি কর! যাবে! প্রকৃতির গোড়ায় যে একটা দ্বিধা আছে ; রাজা এবং রাণীর মত সমস্ত বিভক্ত। দিন এবং রাত্রি, বিচিত্র এবং অথও, পরিব্যক্ত এবং অনস্ত। আমর! ভারতবর্ষের লোক রাত্রের রাজত্বে আছি, আমরা অথণ্ড